#ভালোবাসিবো_খুব_যতনে
#Ayrah_Rahman
#part_24
__________________
” তাহরিম কাজ টা কি তুই ঠিক করলি ? কখনো যদি পূর্ণা জানতে পারে এই সকল কিছুর মাস্টার মাইন্ড তুই, সব কিছু র পিছনে তোর হাত তাহলে ক্ষমা করতে পারবে তো তোকে ! ”
রুদ্রের কথায় খানিকটা নড়েচড়ে দাঁড়ালো তাহরিম , শুভ্র রঙের টি শার্ট গায়ে ধুসর রঙের টাউজার পরে ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ করে বুকের উপর দু হাত গুজে এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলো সে , হঠাৎ পিছন থেকে রুদ্রের কন্ঠ শুনতে পেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকালো,
শুভ্র রঙের টি শার্ট আর ব্ল্যাক টাউজার পরে পকেটে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে তাহরিমের দিকেই তাকিয়ে আছে,
তাহরিম হাসলো তবে কোন উত্তর করলো না , তাহরিমের কাছ থেকে আশানুরূপ উত্তর না পেয়ে খানিকটা এগিয়ে গেলো রুদ্র , ছাদের রেলিঙের ভর দিয়ে উঠে বসলো রেলিঙের উপর
” কি হয়েছে তোর ? ”
তাহরিম সামনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেই ছোট করে বলল ,
” বিকেলের আকাশ টা খুব সুন্দর তাই না রুদ্র ? ”
” তুই কি কথা ঘুরাচ্ছিস তাহরিম ? জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে তুই আমাকে কি উত্তর দিস হে ? ”
” কিছু না ”
” পূর্ণ কোথায় ? ”
” ঘুমাচ্ছে ”
কিছু ক্ষন নিরব থেকে মনে মনে প্রশ্নের প্যাটার্ন সাজালো রুদ্র , প্রশ্ন সাজানো শেষে গলা ঝেড়ে বলল ,
” তোদের বিয়ের খবর টা তুই ই ছড়িয়েছিস তাই না ? ”
” হুম ”
তাহরিমের সাবলীল উত্তর , রুদ্র হয়তো এত সহজে স্বীকারুক্তি আশা করে নি তাই কিছু টা থম মেরে বসে থেকে বলল ,
” আমার তো এখন মনে হচ্ছে তোদের বিয়ের কাজ টা ও প্রি প্ল্যানিং ”
তাহরিম আড় চোখে রুদ্রের দিকে তাকালো , রুদ্রের উৎসুক দৃষ্টি তাহরিমের চোখ এড়ালো না , সে ভ্রু বাকিয়ে হাসলো ,
” তোর কি মনে হয় , কাজ টা কি আমার? ”
” হুম , হান্ড্রেড পার্সেন্ট ”
” তাহলে ধরতেই পারিস কাজ টা আমার ”
” কিন্তু কেন? ”
” তুই ভালো করে ই জানিস রুদ্র, তাহরিম তালুকদার কারণ ছাড়া কোন কাজ করে না আমি যা করেছি তার পিছনে অবশ্যই একটা কারণ আছে ”
” হে সেটাই তো জানতো চাচ্ছি , কি কারণে তুই এ কাজ করেছিস ”
” প্রথমত পূর্ণার সেফটি , দ্বিতীয়ত ভালোবাসা ”
রুদ্রর ভ্রু কুচকালো ,
” তুই কি সিউর তুই পূর্ণ কে ভালোবাসিস ? নাকি কয়েকদিন পর তোর এই ভালোবাসা হাওয়া হয়ে যাবে ! ”
” যদি কাউকে দেখার পর হৃদ স্পন্দন খনিকের জন্য থমকে যায় , তাকে দেখতে না পেয়ে যদি ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট রোগ টা দিন কে দিন বাড়তে থাকে , মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যদি তাকে দেখার তীব্র বাসনা জাগে , চোখের ঘুম গুলো অকাতরে বিলিন হয়ে যায় , তার কথা চিন্তা করে যদি একটা নির্ঘুম রাত অবলীলায় পার করা যায়, এই লক্ষন গুলো কে যদি ভালোবাসা মনে হয় তোর তাহলে আমিও বলব ” আই এম ইন লাভ ”
” বাহ্ বেশ বলেছিস তো, এখন তো আমার মনে হচ্ছে তোর মন্ত্রীগীরি ছেড়ে কবি হওয়া দরকার ”
তাহরিম হাসে , রুদ্র লাফ দিয়ে রেলিঙ থেকে নেমে তাহরিমের দিকে কিছু ক্ষন তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হেসে বলল ,
” তো বিয়ে তো করেই নিলি বাসর টা সাজানোর ব্যবস্থা করব নাকি ভাইজান ? ”
তাহরিম ঘাড় বেকিয়ে আড় চোখে রুদ্রের দিকে তাকালো ,
” আমার বাসর নিয়ে তোর এতো মাথা ব্যথা কেন , নিজে তো এখন বুড়ো হয়ে যাচ্ছিস বিয়ে টিয়ে কিছু করছিস না , আবার কথা বলিস , নির্লজ্জ ছেলে ”
রুদ্র অবাক হলো , ভীষণ রকম অবাক হলো ,
” তুই কাকে নির্লজ্জ বলছিস তাহরিম ? , নির্লজ্জের জন্য যদি কেউ অস্কার পেতো তাহলে নিঃসন্দেহে প্রাইজ টা তুই ই পেতি ”
” হুম সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে নিচে চল ”
বলেই গটগট পায়ে নিচে নেমে এলো তাহরিম , রুদ্র তাহরিম এর চলে আসার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে দাঁড়িয়ে আছে , তাহরিমের কোন কারণে কি মন খারাপ ? নাকি কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত ? আর নাকি আমাকে এভয়েড করলো !
” এই সন্ধ্যায় ছাদে একা একা দাঁড়িয়ে থাকা ভালো না, পেত্নি ধরে , তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আয় রুদ্র ”
নিচ থেকে তাহরিমের কন্ঠ শুনতে পেয়ে দ্রুত পা চালালো রুদ্র , এর ব্যবহার দেখে মনে হয় এর সাথে সবসময় ই আমি আঠার মতো লেগে থাকি মধ্যে দিয়ে যে ছ ছটা বছর আমরা আলাদা ছিলাম , মনে হয় ভুলে গেছে ! এই ছেলের থেকে যে আমি বয়সে কত বড় সেটা বেমালুম ভুলে যায় , দু আনার সম্মান ও দেয় না বেদ্দপ ছেলে
সেই দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে এসে বিছানায় গা হেলিয়ে দেওয়া মাত্র ই এক রাশ ঘুম এসে চোখে ভর করেছিলো , চোখ দুটো বন্ধ হতেই আর কিছু টের পায় নি ,
ঘুম ভাঙতে ই কানে ভেসে এলো আজানের ধ্বনি , ভ্রু কুচকে বোঝার চেষ্টা করলাম এটা কোন ওয়াক্তের আজান , বাইরে অনেক টা অন্ধকার হয়ে গেছে , মাগরিবের আজান !
শুয়া থেকে উঠে বসলাম , এমন সময় দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করতে করতে তাহরিম বলল ,
” গুড মর্নিং ”
” গুড ম.. ” বলতে গিয়েও আটকে গেলাম , ভ্রু কুচকে তাকালাম উনার দিকে ,
” এই ভর সন্ধ্যা বেলা আপনার কোন এঙ্গেল এ মর্নিং মনে হচ্ছে ? ”
উনি রিডিং টেবিলে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়াতে দাড়াতে বললেন ,
” তুমি যা ঘুম দিয়েছিলে , কেউ রাতের বেলা ও এত ঘুম ঘুমায় না ”
” তোওও আপনার এতে সমস্যা কি? , আমি কুম্ভকর্ণের মতো ছ মাস ঘুমালেও আমার আফসোস মিটবে না সেখানে এটা তো কম সময় , সে যায় হোক আপনি এই রুমে কি করেন ? ”
” হ্যা হ্যা সেটাই তুমি তো আবার কুম্ভকর্ণের জমজ বোন , মিল তো থাকবেই , আর আমার রুমে আমি আসব না তো কে আসবে শুনি ? ”
আমি চোখ বড়ো বড়ো করে বললাম ,
” এটা আপনার রুম? ”
” তা নয়তো কি ! আমার বাড়িতে আমার রুম থাকবে এটাই তে স্বাভাবিক ”
আমি কিছু একটা চিন্তা করে বললাম ,
” কিন্তু তানজিম যে আমাকে এই রুমে নিয়ে এসে বলল এটা আমার রুম ! ”
আমার কথা শুনে উনি ঠোঁট টিপে হেসে বললেন ,
” খারাপ কি বলেছে ? ভালোই তো বলল ! যেহেতু আমি তোমাকে বিয়ে করেছি সেহেতু তুমি আমার বিয়ে করা বউ , আর বউ তার স্বামীর ঘরে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক ”
আমি কথাটা শুনে কিছুক্ষন চিন্তা করে বললাম ,
” আপনি কোথায় থাকবেন এখন ? ”
” কেন আমার রুমে ”
” তাহলে আমি কোথায় থাকব? ”
” কেন এই রুমে ! ”
আমি কিছু বললাম না , আমার মাথায় চলছে অন্য চিন্তা , তাই কিছু না বলে ফ্রেস হতে চলে গেলাম ,
ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে দেখি রুমে কেউ নেই , তাই কাজ না থাকায় এই রুম টাই ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করেছিলাম ,
রুমটা বেশ অনেক টা বড়, রুমের একপাশে সোফা তার পাশেই একটা ডিভান, একটা রিডিং টেবিল সেখানে বেশ অনেক গুলো মোটা মোটা ইংরেজি বই হয়তো মন্ত্রী সাহেব পড়েন , একটা ড্রেসিং টেবিল আর আলমারি , বুকশেল্ফ । আমি ধীরে ধীরে বুকশেল্ফ এর সামনে গেলাম।
বুকশেল্ফ এর বই গুলো নজরে আসতেই নাক মুখ কুচকে ফেললাম,
এহহে কি আজাইরা মোটা মোটা বইয়ে ভরা এই বুক শেলফ , ময়না তদন্ত করেও মনে হয় বাংলা ভাষা কিংবা উপন্যাস টাইপ কিছু পাওয়া যাবে না , অদ্ভুত , মানুষ এমন রসকসহীন বই কেমনে পড়ে, হাউউ!
” উপর থেকে বিবেচনা করলে সবসময় যে ঠিক হবে এমন তো কোন কথা নেই মিস পূর্ণ ! ”
চলবে …
[ এই যে বাচ্চারা , আমি আগেই বলেছি আমার এক্সাম চলছে কাল রসায়ন পরীক্ষা রেখে তোমাদের জন্য ২-৩ ঘন্টা সময় নিয়ে গল্পের প্লট সাজাই, লিখি তাও তোমরা বলো ছোট হয়েছে , আরো বড় করে লিখবেন, এটা কি ঠিক ? আচ্ছা ঠিক আছে আমার এক্সাম টা শেষ হোক তারপর বড় বড় করে লিখব কেমন? আর কেমন হয়েছে জানাবা ,
হ্যাপি রিডিং ]