ফানাহ্ 🖤 #পর্বসংখ্যা_৫৭ #হুমাইরা_হাসান | প্রথমাংশ |

0
679

#ফানাহ্ 🖤
#পর্বসংখ্যা_৫৭
#হুমাইরা_হাসান
| প্রথমাংশ |
_____________

– তোকে একটা কথা বলা হয়নি

– কী কথা?

মোহরের ভাঙা ভাঙা গলার স্বরটা ভীষণ ক্লান্ত শোনালো। মুখের দিকে চাইতেও বুকটা মুচড়ে উঠছে মিথিলার। এতবড় একটা সত্য উন্মোচনে ওর যতটা না কষ্ট হয়নি তার চেয়ে শতগুণ হচ্ছে বোনের বিধ্বস্ত অবস্থাটায়। বুকভর্তি শ্বাস টেনে ধীমি গলায় বলল,

– এর আগে দুই তিনবার আমার বাড়িতে তল্লাশি করিয়েছে। ইফাজকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যখন ছিলাম ফিরে এসে দেখি বাড়ি ঘরের যা তা অবস্থা, এক একটা জিনিস উলটে পালটে রেখেছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো চোর চোট্টা কিন্তু ঘরে আমার যে গয়না কয়েক হাজার ক্যাশ টাকা ছিলো তার একটাও এদিক ওদিক হয়নি। খুব অবাক হয়েছিলাম যে চোর এসে সারা বাড়ি লণ্ডভণ্ড করলো অথচ একটা টাকার নোট ও সরালো না! পরে অবশ্য ও নিয়ে আর মাথা ঘামায়নি৷ তার প্রায় মাস খানেক পর রাতে হুট করে দরজা ধাক্কানোর শব্দে তোর ভাইয়া গিয়ে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে কতগুলো মানুষ ঢুকে পড়লো। চেহারা বেশ ভূষায় চোর মনে হয়নি, তবে মুখ নাক সব ঢাকা ছিলো গামছায়। এসেই রি’ভলবার বের করে বলছিলো ‘ বাঁচতে চাস তো পেনড্রাইভটা দিয়ে দে ’ কোন পেনড্রাইভের কথা বলছে তার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারিনি আমরা। হাজার বার করে বললেও ওরা মানতে চাইনি।সারা বাড়ি ঘর উলট পালট করেও যখন ওদের কাঙ্ক্ষিত জিনিসটা পেলোনা তখন কিছু না বলেই চলে গেছে। যাওয়ার আগে বলে গেছে যদি কোনো ভাবে পুলিশে এসব ব্যাপার জিডি বা ইনফর্ম করতে যাই তাহলে জানে মে’রে ফেলবে। ইফাজ তবুও থানায় যেতে চেয়েছিল আমিই দেইনি। তুই তো জানিস আমি এসব ব্যাপারে কত ভয় পাই। যা হওয়ার হয়েছে আমাদের তো ক্ষতি হয়নি তাই আর ওকে আমি যেতে দেইনি। কী দরকার যেয়ে চেয়ে বিপদ ডাকার। আর তোর শ্বশুরবাড়িতেও তখন ওই শ্রীতমার সাথে তাথইয়ের বরের সম্পর্ক নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এমনিতেই তোর উপর চাপ ছিল তাই আর আমি এসব বলে তোকে চিন্তায় ফেলতে চাইনি, যা হওয়ার হয়েই তো গেছে আমরা ভালো আছি এই ভেবেই ওসব মন থেকে সরিয়ে ফেলেছিলাম। এখন বুঝতে পারছি ওরা কিসের পেনড্রাইভের কথা বলছিল।

মোহর বিস্মিত হলো না নাইবা হলো হতবাক। যেন সবকিছু সয়ে গেছে ওর, চুপচাপ বসে রইলো। তামাটে বর্ণের মুখটা বেজায় রকম ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে যেন রক্তহীন একটা শরীর, বুকটা কেঁপে উঠলো মিথিলার। এইতো দিন দুয়েক আগেও এসেছিল মোহর, তখন চেহারা জুড়ে ছিল মোহনীয়তা, ঔজ্জ্বল্য আর স্নিগ্ধতার প্রলেপ একদিনের ব্যবধানে এ কী অবস্থা হলো মোহরের!

– তোর কোনো ভুল হচ্ছে না তো পুতুল? একটু ভালো করে ভাব না, মেহরাজ ভীষণ ভালোবাসেন তোকে। সে এরকম…

– বুবু, ওই নামটা নিস না আর প্লিজ! সবটা নিজের চোখেই তো দেখলি! বাবার মুখের কথা আর আমার নিজ চোখে দেখা কী ভুল? তবুও, তবুও আমি চেয়েছিলাম সবটা ভুল হয়ে যাক শুধু রুদ্ধ নামটাই সত্য থাকুক। কিন্তু কী হলো! সে তো নিজের মুখে সবটা স্বীকার করে নিলো। আমি যখন চলে আসছিলাম বারবার চেয়েছি, বাড়ির চৌহদ্দি পার হওয়ার আগ পর্যন্ত চেয়েছি রুদ্ধ আসুক, আমার হাতটা ধরে বলুক, এসব মিথ্যে শুধু সে আর তার ভালোবাসাই সত্য। অথচ হলো কী! আমাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়ে নিঃশব্দে সে বুঝিয়ে দিলো ভুল ছিলাম আমি, মিথ্যে ছিল সবই, নিষ্ঠুর আমার নিয়তি।

মোহরের হাতের উপর রাখা হাতটা কেঁপে উঠলো মিথিলার। মোহরের যান্ত্রিক গলায় বলা কথাগুলোর মধ্যে কতটা যন্ত্রণা, কতটা বিধ্বংসী চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থা চেপে আছে তার ন্যূনতম আন্দাজটাও কি ও করতে পারলো! কী করে সইছে মেয়েটা! মিথিলার দুষ্কর ভাবনার মাঝেই মোহর উঠে দাঁড়াল, ঘরের দিকে এগোতে নিলে পেছল থেকে বলল মিথিলা,

– কোথায় যাচ্ছিস?

– হসপিটাল যেতে হবে।

– তোর শরীর টা তো ভালো নেই। একটু রেস্ট..

– শরীর নাহয় রেস্ট করে ভালো করা যাবে কিন্তু জীবনটা!

মিথিলার মুখটা চুপষে গেলো। এ প্রশ্নের উত্তর ওর জানা নেই। মোহর স্মিত হাসলো, দীর্ঘ পলক ফেলে বলল,

– অরণ্যে রোদন না করি।

বলে ঘরের দিকে গেলো। মিনিট কয়েক বাদেই বের হওয়ার প্রস্তুতি নিলে মিথিলা বলল,

– কী করতে চাচ্ছিস তুই?

মোহর চুলগুলো হাত খোপা করে নিয়ে ওড়না জড়িয়ে নিলো মাথায়। মিথিলার দিকে তাকিয়ে বলল,

– জানি না, সত্যিই জানি না আমি কী করবো।

মিথিলা রয়েসয়ে ঢোক গিলল বার দুয়েক। ঝুমু কে কোল থেকে নামিয়ে সোফাতে বসিয়ে ফের এগিয়ে এলো মোহরের কাছে, ওর হাতটা ধরে বলল,

– বাবার প্রাণটা যে এই করতেই গেছে তা তো জানিসই। মাও নেই। শুধু আছি আমি তুই আর এই দুজনের ছোট্ট একটা পরিবার। ওরা বাবার মতো পুলিশ অফিসার কে মা’রতে পারলে আমরা কিছুই না।

মোহর শুরুতেই বুঝলো বুবুর কথার মর্মার্থ। তবুও মিথিলা নিজের কথার বিস্তর ব্যাখ্যা খাটিয়ে বলল,

– বাবার আগেও অনেকেই চেষ্টা করেছিলো ওদের মূল পর্যন্ত পৌঁছাতে, পারেনি তো। অনেক বড় বড় মানুষের হাত আছে এসবে সেখানে আমার তোর মতো মানুষ গুলোকে ওরা একহাতে গেলে দেবে। যা হারানোর সব তো হারিয়েই ফেলেছি যেটুকু আছে এও হারিয়ে ফেললে বাঁচবো কি নিয়ে রে পুতুল!

মোহর চোখ তুলে তাকালো বোনের অশ্রুভরা চোখের দিকে। পরিবার, আপনজন হারানোর আতঙ্কে মিথিলার দুঃশ্চিতার বেঁরিবাধ টার দৃঢ়তা খুব করে বুঝতে পারছে, মিথিলা সদা সর্বদাই মায়ের মতো সহজ সরল নরম মনের। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর ভয় পায়৷ আর মোহর পেয়েছে বাবার মতোই গাম্ভীর্য আর দৃঢ় মনোবল। তবুও আজ বুবুর মুখভরা আতঙ্কের বলিরেখা গুলো ওর বুকটাও কাঁপাচ্ছে। ভুল তো বলেনি মিথিলা! মোহর নাহয় সব হারানো নিঃস্ব, কিন্তু ওর বুবু তো নয়! ওর বুবুর একটা পরিবার আছে একমাত্র মেয়ে আর স্বামী নামক বহুমূল্য অলংকার আছে। যে হার হামেশা ওর সাথে ছিলো আছে, যাকে ছাড়া ওর বুবুর একটা বেলাও চলে না। মোহরের কোনো পদক্ষেপের জন্য যদি ওদের কোনো ক্ষতি হয়ে যায়!
তবুও মুখভর্তি নির্বিকার চিত্তে তাকালো বাঁয়ের সোফাটাতে বসে ছোট শরীরের ভালোবাসার চেহারাটাকে। নিটোল শরীরে লাল টুকটুকে একটা ফ্রক পড়নে। ঝুমু দেখতে একদম ওর বাবার মতো হলেও গায়ের গৌড়বর্ণটা মেয়েছে হুবহু মায়ের ন্যায়। চোখ তুলে তাকালো দেওয়ালটার বুকে ঝুলিয়ে রাখা তিন তিনটা হাসি হাসি মুখের দিকে। এই ছোট্ট ঘর, গুটি কয়েক সদস্য আর আবহ সবটাই খুব যত্নপূর্ণ ভালোবাসায় গড়া। ওর বুবু আর ইফাজ ভাইয়ের একে অপরের পরিশ্রুতিতে অর্ধযুগের ভালোবাসার ফলন। এসবের একটা কোণ যদি ধষে পড়ে ওরা কেও ই তো সইতে পারবেনা!

কলিং বেলের ধাতব শব্দটা কানে বাজতেই নীরবতা ভঙ্গুর হলো। মিথিলা চোখের ইশারায় নিজে দেখছে বলে এগিয়ে দরজা খুলে দিলো।

– আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া । আসুন না, ভেতরে আসুন।

মিথিলার অতিব শ্রদ্ধাশীল আচরণে ভ্রুদ্বয় কুঁচকে নিলো মোহর। ইফাজ অনেক আগেই বেরিয়েছে তবে এই সকালে কে এলো! তৎক্ষনাৎ মোহরের কৌতূহলকে প্রশান্ত করে ঘরে ঢুকলো বিনয়ী হাসিমিশ্রিত একটা সুদর্শন মুখ।

– স্যার আপনি?

আগন্তুকের আগেই মিথিলা উত্তর করলো,

– আমি ডেকেছি।

বলে মোহরের অতীব জিজ্ঞাংসু চোখের প্রত্যুত্তরে মিথিলা নিজেই বলল,

– একা একা যাতায়াত করার কোনো প্রয়োজন নেই। আজ থেকে ফায়াজ ভাইয়ার সাথেই তুই যাবি। এ তল্লাটে এখন ভাইকে ছাড়া আর কাওকে পাচ্ছিনা ভরসাযোগ্য।

শেষোক্ত কথাটুকু বেশ গুরুগম্ভীর মুখাবয়বে বলল মিথিলা। ফায়াজ এখনো নিশ্চুপ। চশমার আড়ালের কৃষ্ণাভ চোখ দু’টো শুধু চেয়ে আছে মোহরের মুখের দিকে। তাতে যেনো হাজারো কৌতূহল, উদ্বিগ্নতা, তৎপরতার খেই ছুটেছে। মোহর কী বলবে ভেবে পায় না, বুবু এমন একটা কাজ করবে আগে জানলে কখনোই সম্মতি দিতো না।

– আর আগেও তো ফায়াজ ভাইয়ের সাথেই কতো আসা-যাওয়া করেছিস। এখন করতে তো অসুবিধে নেই?

– আগের আর এখনকার সময় এক নেই মিথিলা। এখন সময়, পরিস্থিতি, সম্পর্ক সবই পালটেছে।

তন্মধ্যে ফায়াজের বলা প্রথম বাক্যটা শুনে মোহর নিরুত্তর থাকলেও মিথিলা তীব্র প্রতিবাদী ভাবে বলল,

– পরিস্থিতি যেমনই থাকুক সম্পর্ক আর আপনজন তো বদলে যায় না। আপনি আমাদের জন্য আগে যা ছিলেন এখনো তাই ই আছেন ভাইয়া। হয়তো যোগাযোগ কমেছে বিশ্বস্ততা না। আর এখন আর সেই পরিস্থিতি ও নেই। মোহরের ওই বাড়িতে..

– বুবু!

কথার মাঝখানটাতেই মোহর তীব্র উৎকণ্ঠিত স্বরে চুপ করিয়ে দিলো মিথিলাকে, যেনো এ বিষয়ে ফায়াজকে জানাতে ভীষণ নারাজ। ফায়াজ প্রথমত মিথিলার এমন আকস্মিক তলবে যতটা না কৌতূহলী ছিলো এখানে এসে মোহরের মুখাবয়ব আর কথাবার্তা শুনে কেমন সন্দেহের সৃষ্টি হলো ওর মনে। বিব্রতবোধ নিয়েই বলল,

– আব্… কিছু হয়েছে কী? মানে খুব আপত্তি না থাকলে আমাকে বলা যায় না?

– কোনো আপত্তি নেই ভাইয়া। আমিই বলছি

বেশ শক্ত গলায় উত্তর করলো মিথিলা। মোহরের নাকচ ইশারাবার্তাকে উপেক্ষা করে সবটাই খুলে বলল ফায়াজকে। যদিও ফায়াজকে সবটা ভেঙেচূড়ে বলার প্রয়োজন হয়নি। কেননা ওর সম্পর্ক এ বাড়ির সাথে বহুদিন। মাহবুব শিকদারের নিখোঁজ হওয়া,মৃত্যু সবটাই জানা। আর তার চেয়েও বড় কথা মাহবুবের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দেহের তাড়নায় মোহর থানায় জিডি অ্যাপ্লিকেশন সবই করেছিল স্পেশাল তদন্তের জন্য। আর সেই সময়টাতে ফায়াজ একচেটিয়া সাহায্য করে গেছে নিঃস্বার্থভাবে। তাই পরের বিষয় টুকু ফায়াজের কাছে গোপন রাখার কোনো হেতু আছে বলে মিথিলার মনে হয় না।
আরও কিছুক্ষণ কথাবার্তা সেরে মোহর অগত্যা ফায়াজের সাথেই বের হলো। মিথিলা বেশ কড়াকড়ি ভাবে বলে দিয়েছে একা চলাফেরা না করতে। আর ফায়াজের কান অব্দি যখন এ খবর পৌঁছেছে ও আর একটুও একা ছাড়বে না।

•••

– পরশু’র আগের রাত। দশটার মধ্যে খাওয়া দাওয়ার পর্ব চুকিয়ে সবাইকে নিজেদের স্থানে ঢুকিয়ে এগারোটার মধ্যেই সব যে যার জাগায় ফিরেছে। কয়েদিরা সব ঘুমানোর পর ঠিক রাত বারোটা বিশ মিনিটে পুরো পুলিশ স্টেশনের ইলেক্ট্রিসিটি কানেকশন কাট-অফ হয়েছে ঠিক দশ মিনিট পর রি-কানেক্ট হয়। আর নোমান ওই দশ মিনিটের মধ্যেই থানা থেকে পালিয়েছে।
রাতে ব্যাপারটাকে কেও আমলে না নিলেও সকালেই নোমানের মিসিং হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ইলেক্ট্রিসিটির এই ইনফরমেশন আমি কয়েদীদের থেকেই নিয়েছি। থানায় তখন নাইট গার্ড আর কয়েকজন হাবিলদার ছাড়া অফিসারেরা ছিলো না।

দীর্ঘ একটা ব্যাখ্যা দিয়ে ফাইলটা বন্ধ করে এগিয়ে রাখলো কাঁচের টেবলটার সামনে। মেহরাজ চোখ বন্ধ করেই বলল,

– ছিলো। ওখানে অফিসার নয়, অফিসারের বাপ ছিলো। সবার ঘুম আর সাজানো লোডশেডিং এর সুযোগ নিয়ে নোমান কে বের করেছে।

পৃথক পিঠ সোজা করে বসলো। ফাইলের দুই তিনটা কাগল উল্টে বলল,

– আমারও এমনটাই মনে হয়। তবে ডিউটিরত যতগুলো অফিসার ওই থানায় আছে আমি সকলের পারসোনাল ডেটা কালেক্ট করেছি ওই মুহূর্তে একজন অফিসার বিশেষ রিজনে লিভ নিয়ে শহরের বাহিরে ছিলো, আর যারা শহরে ছিলো তারা বাড়িতেই। আর তা প্রমাণ’সহ।

– এটাই প্লাস পয়েন্ট। সাপ ও মরলো লাঠিও ভাঙলো না। বুঝিস নাই ব্যাপার টা?

এতক্ষণে চোখ দুটি মেলে প্রসারিত নয়নে তাকালো মেহরাজ। অফিসের নিজের একান্ত ব্যক্তিগত কেবনটাতে মুখোমুখি বসে দুজন। পৃথক মেহরাজের ছোট্ট লাইনটার বিস্তর ব্যখ্যা উপলব্ধি করে মনে মনেই অপ্রকটভাবে ছকটা মিলিয়ে বলল,

– তার মানে থানার বাইরের কেও করেছে। যার হাত অনেক লম্বা।

– শুধু লম্বা না, অনেক ফ্লেক্সিবল ও। এদিক ওদিক সবদিকেই ঘোরানো হয় ওই হাত।

.
.
.
চলমান

#হীডিং : বিলম্বিত হওয়ার কারণে দুঃখিত। রাতে আরেকটা পর্ব পাচ্ছেন! রেসপন্স কমে যাচ্ছে, স্পেসিফিক কোনো খামতি হচ্ছে গল্পে?

#Humu_❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here