সে_প্রেমিক_নয় #Mehek_Enayya(লেখিকা) #পর্ব ৩৭

0
290

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ৩৭

কিছুক্ষন রিং হতেই কল রিসিভ করে ওপর পাশের জন। আনাবিয়া হালকা কেশে গলা ঠিক করে নেয়। বাঁকা হেসে বলে,

-আমার সাথে এতই যখন কথা বলার ইচ্ছে তাহলে সামনা সামনি এসেও বলতে পারেন এমপি সাহেব!

তপ্ত নিঃশাস ছাড়ে ইরান। আনাবিয়াকে পরীক্ষা করতে এই ব্যবস্থা করেছিল ইরান। সে দেখতে চেয়েছিল আনাবিয়া কী ইসরাফকে বিশ্বাস করে? ইসরাফকে পেয়ে কী সত্যি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে! তবে আনাবিয়া এতো জলদি তার পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেবে একটুও ভাবেনি ইরান।
ইরানকে চুপ থাকতে দেখে আনাবিয়া বলে,

-আপনি কী ভাবেন নিজেকে নিজে? অনেক বেশি চতুর? নাকি আমাকে অনেক বেশি বোকা ভাবেন? ইরান শেখের বাসায় এভাবে একজন অচেনা মেয়ে ঢুকে আমার রুম পর্যন্ত আসতে পারবে এটা ইম্পসিবল! আমি তো মেয়েকে দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম এটা আপনারই কাজ। প্লিজ আমাকে বোকা ভাবা বন্ধ করুন। এই আনাবিয়া আপনার চোখের ফাঁক দিয়ে উড়ে যাবে। বুঝলেন?

আনাবিয়ার কথা শুনে ইরান নির্বাক। এতো কিছুর পরও একটা মেয়ে কিভাবে পালানোর কথা বলতে পারে! এতো সাহস কিভাবে পায়! ইরান গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

-এতো কথা কিভাবে বলো তুমি? ওয়েট ওয়েট তুমি না ফরেইনার? এতো ইজিলি বাংলা বলতে অসুবিধা হয় না তোমার?

-রঙের আলাপ পারতে কল দিয়েছিলেন?

-হোয়াট ইস রঙের আলাপ? আর কল আমি নয় তুমিই দিয়েছ।

-ইউ ব্লা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

আনাবিয়া আর কথা শেষ করতে পারে না তার আগেই দৌড়ে ওয়াশরুম চলে যায়। গরগর করে বমি করে দেয়। অস্থির হয়ে কাশতে থাকে। ইরান সেই শব্দ শুনতে পেয়ে বিচলিত হয়ে পরে। কল কেটে দ্রুত আনাবিয়ার রুমে চলে আসে। বমি করে ক্লান্ত হয়ে দেয়াল ধরে দাঁড়িয়ে কাশছে আনাবিয়া। ইরান ওয়াশরুমে প্রবেশ করে এক হাতের সাহায্যে জড়িয়ে ধরে আনাবিয়াকে। আনাবিয়া তেমন রাগ দেখালো না। ভালোভাবে দাঁড়ানোর সামর্থ নেই এখন তার আর না জেদ করার জন্য শরীরে জোর আছে। ইরান পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে দেয় আনাবিয়ার। তারপর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রুমের ভিতরে নিয়ে আসে। পিছনের বালিশ দিয়ে বসায় আনাবিয়াকে। আনাবিয়ার গালে হাত দিয়ে চিন্তিত হয়ে বলে,

-হটাৎ বমি কেনো হলো? কিছু করেছো নিজের সাথে? উল্টাপাল্টা কিছু খেয়েছো? সত্যি করে বলো আনাবিয়া?

-আমার মরার সখ নেই।

-আমি ডক্টরকে আসতে বলছি। অসুস্থ শরীর নিয়ে অবহেলা না করাই ভালো।

-না। আমি ঠিক আছি ডাক্তারের প্রয়োজন নেই।

-হ্যাঁ দেখছি আমি ঠিক আছো!

ইরান ফোন বের করে তাজীবকে কল দেওয়ার উদ্দেশ্যে। আনাবিয়া হতভম্ব হয়ে পরে। গলা শুকিয়ে যায় তার। কোনোরকম ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে বলে,

-আমি বললাম না আমি সুস্থ! প্লিজ বাড়াবাড়ি বন্ধ করুন। আমি ঘুমাবো বের হন রুম থেকে।

ইরান পাত্তা দেয় না আনাবিয়ার কথায়। তাজীবকে কল দিয়ে ব্যস্ত স্বরে বলে,

-তাজীব দ্রুত,,,,,,

ইরানের কথা সম্পূর্ণ করতে দেয় না আনাবিয়া। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ইরান ফোন। ফোন মেঝেতে পরে দুই ভাগ হয়ে যায়। ইরান অগ্নি দৃষ্টিতে আনাবিয়ার পানে তাকায়। আনাবিয়া টানটান হয়ে বলে,

-আই এম ওকে নাও ইউ ক্যান গো।

-যাবো না আমি রুম থেকে দেখি কিভাবে বের করো তুমি আমাকে!

-ইউ টু মাচ ডিসগাস্টিং।

_____________________

শেখ বাড়িতে ডায়নিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করছে তনুসফা আর রাকিয়া। তনুসফা ক্ষনে ক্ষনে ইসরাফের রুমের দিকে তাকাচ্ছে। রাকিয়া মেয়েকে চিন্তিত হতে দেখে জিজ্ঞেস করে,

-তনুসফা জেসিকা ভালো আছে তো?

-হ্যাঁ আম্মা অনেক ভালো আছে।

-তাহলে তোর শরীর কী অনেক খারাপ লাগছে আজকে?

-না তেমন কিছু নয়।

-তবে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেনো তোকে? কোনো সমস্যা কী?

-না আম্মা কোনো সমস্যা নেই।

রাকিয়া আর প্রশ্ন করে না। তনুসফা সত্যি চিন্তিত আজ। আর তার চিন্তিত হওয়ার কারণ ইসরাফ। গতকাল রাত দুইটার সময় পানি নিতে ড্রইংরুমে এসেছিল তনুসফা। তখন অন্ধকারে সে ইসরাফকে চোরের মতো নিজের রুমে যেতে দেখতে পায়। অবাক হওয়ার বিষয় হলো ইসরাফ হুইলচেয়ারে বসে নয় স্বাভাবিক ভাবে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিল! তনুসফার মতে ইসরাফ কোনো বড় ষড়যন্ত্র করছে। এখানে সবার সামনে অকেজো হওয়ার নাটক করছে অথচ সে সম্পূর্ণ সুস্থ।

-আম্মা ইসরাফকে নাস্তা দিয়েছ?

-না। ও মাত্রই ঘুম থেকে উঠলো।

-ওহ। দেও আমি ওকে নাস্তা দিয়ে আসি।

-ঠিক আছে যা।

তনুসফা খাবারের ট্রে নিয়ে ইসরাফের রুমে প্রবেশ করে। বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে আছে ইসরাফ। হটাৎ করে তনুসফার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। মনে মনে হাসি দিয়ে এগিয়ে যায়।

-আপা আজ আপনি নাস্তা নিয়ে আসলেন!

-হ্যাঁ। তোমার সাথে কথা বলতে এলাম। একা একা রুমের ভিতর বসে থাকতে হয়তো অনেক বোরিং লাগে তাই না?

-ঐ আর কী।

তনুসফা ট্রে রাখার সময় ইচ্ছে করে গরম স্যুপের পেয়ালেটা ইসরাফের পায়ের ওপর ফেলে দেয়। স্যুপ গুলো ইসরাফের পায়ে পরে আর কাঁচের পেয়ালে নিচে পরার সাথে সাথেই চুর্ণবিচুর্ণ হয়ে যায়। গরম সহ্য করতে না পেরে বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায় ইসরাফ। ইসরাফের চিৎকারে রাকিয়া ও ভৃত্যরা দৌড়ে আসে। আকস্মিক ইসরাফের মনে পরে যায় নিজের অস্তিত্বের কথা। তনুসফা কঠিন চোখে ইসরাফের দিকে তাকিয়ে আছে। রাকিয়া ইসরাফকে দেখে খুশিতে কেঁদে দেয়। ইসরাফকে জড়িয়ে ধরে বলে,

-বাবা তুই ঠিক হয়ে গিয়েছিস! আল্লাহ তোমার লাখ লাখ শুকরিয়া আমার ছেলেকে তুমি সুস্থ করে দিয়েছ।

ইসরাফ কোনোরকম নাটক করে পা ধরে ব্যাথা পাওয়ার ভান করে। বিছানায় বসে মৃদু হেসে বলে,

-আম্মা আপনার দোয়া চমৎকার করে দিলো! পা ঠিক হয়ে গিয়েছে আমার।

-এখন ঠিক হয়েছে না আগের থেকেই ঠিক ছিল ইসরাফ?

তনুসফার কথা শুনে চোখ ছোট ছোট করে তার দিকে তাকায় ইসরাফ। স্বাভাবিক ভাবেই বলে,

-আপা আপনিও না! ডাক্তার কী বলেছিল শুনেন নি? এটা চমৎকার। আমি কখন ভাবিনি এই পায়ে ভর দিয়ে আমি দাঁড়াতে পারব!

-যাক। তুমি ঠিক হয়েছো এটাই অনেক। আম্মা ইরানকে বলে দিও ইসরাফের কথা।

রাকিয়া ইসরাফের পা পরিষ্কার করে দিচ্ছিল। তনুসফার কথায় মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে,

-বলবো কিন্তু এখন নয়। শুভ কাজে বাধা দিতে চাচ্ছি না।

-ওহ হ্যাঁ ইরান তো এখন রাস্তা মেরামতের আরম্ভতে গিয়েছে।

-ভালোভাবে ওর কাজ সম্পূর্ণ হোক তারপরই এই সুখবরটা দিয়ে দেবো।

-ঠিক আছে।

____________________

কাজ শেষ করে অফিসে আসে ইরান। দ্রুত পায়ে নিজ ক্যাবিনের উদ্দেশ্যে পা চালাচ্ছে। তাজীব হাঁটতে হাঁটতে ইরানকে আজকের মিটিংয়ের বর্ণনা দিচ্ছে। স্টাফ মেয়েরা আড়চোখে ইরানকে দেখছে। কিছু বলার সাহস নেই তাঁদের তাই চোখের দেখায়ই মনকে শান্ত করে। ক্যাবিনে এসে চেয়ারে বসে ইরান বলে,

-কাম অন তাজীব আগে নিঃশাস নেও তারপর বলো।

-স্যার বাসা থেকে কল এসেছে।

-আই সি। তুমি কল ধরো।

ইরানের কথা মতো কল রিসিভ করে কানে দেয় তাজীব। এক মিনিটের মতো কথা বলেই কল কেটে দেয়। মুহূর্তেই তার মুখে চিন্তার ছাপ দেখা যায়। ইরান গম্ভীর মুখে জিজ্ঞেস করে,

-কী বললো?

-স্যার ম্যাম মুখ ধোয়ার সময় ওয়াশরুমে অজ্ঞান হয়ে পরে গিয়েছিল। শিখা ও আরো কয়েকজন মিলে ম্যামের জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে। ১৫ মিনিট হয়ে গিয়েছে এখনও জ্ঞান ফিরছে না ম্যামের। আপনাকে আর্জেন্টলি বাসায় যেতে বলেছে।

ইরান অস্থির হয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। ফোন পকেটে ভরতে ভরতে বলে,

-আজকের মিটিং ক্যান্সাল করো। আর ডাক্তারকে আসতে বলো কুইকলি।

-ইয়েস স্যার।



বড় বড় পা ফেলে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ইরান। সে রুমে আসতেই ভৃত্যরা এক এক করে বেরিয়ে যায়। এতক্ষনে ডাক্তারও চলে এসেছে। তাজীব ডাক্তারকে রুমে নিয়ে আসে। ইরান মুখ ছোট করে রুমের বাহিরে যেয়ে দাঁড়ায়। আনাবিয়ার এই অবস্থার কারণে নিজেকে দোষারোপ করছে ইরান। ইরানের মতে আজ তার জন্যই আনাবিয়ার অসুস্থ হয়ে পরেছে। সে অবহেলা করেছে আনাবিয়াকে, ঠিক মতো খেয়াল রাখেনি তার। কিছুদিন আগে এতো বড় আঘাত পেয়েছিল তখনও সে আনাবিয়ার পাশে থাকেনি, যত্ন করেনি। স্বামী হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মনে করে ইরান। কপালে হাত দিয়ে অনুতপ্ত স্বরে বলে,

-তাজীব আজ আমার জন্যই তোমার ম্যামের এই অবস্থা। আমি যদি তার সঠিক ভাবে যত্ন করতাম তাহলে সে এতো অসুস্থ হয়ে পরতো না। সব আমার দোষ। ব্যর্থ স্বামী আমি।

-স্যার চিন্তা করবেন না ম্যামের তেমন কিছু হবে না সে সুস্থ হয়ে যাবে।

-তোমার কথাই জেনো হয়।

মিনিটখানেক পর রুম থেকে বেরিয়ে আসে ডাক্তার। মুখে মুচকি মুচকি হাসি তার। ইরান আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করে,

-ডাক্তার আমার ওয়াইফ?

-চিন্তার কোনো বিষয় নেই মিস্টার ইরান। বরং সুখবর আপনি বাবা হতে চলেছেন। মিসেস শেখ প্র্যাগনেন্ট।

ডাক্তারের কথায় রোবট হয়ে যায় ইরান। মুখে একরাশ বিস্ময়। তাজীব খুশি হয়ে যায়। কিন্তু ইরানকে এইরকম অস্বাভাবিক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকায়। মৃদু স্বরে বলে,

-স্যার,

ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে ইরান এখন তার কেমন ব্যবহার করা দরকার বুঝতে পারছে না ইরান। যখন খুশি আর কষ্ট মিলে যায় তখন পরিস্থিতি বুঝি এইরকমই হয়! ইরান মস্তিক থেকে সকল খারাপ চিন্তা দূর করে শুধু নিজের আগামী সন্তানকে নিয়ে ভাবতে থাকে। খুশিতে চকচকে উঠে তার মুখশ্রী। বড় একটি হাসি দিয়ে বলে,

-আমার ওয়াইফ এমনে ঠিক আছে তো ডাক্তার?

-ঠিক আছে কিন্তু তার রক্ত শূন্যতা আছে যেটা ভবিৎষতে বেবি ও মার ক্ষতি করতে পারে। যদি তাকে হসপিটালে নিয়ে গিয়ে সকল টেস্টগুলো করিয়ে ফেলেন তাহলে ভালো হয়।

-আমি নিয়ে যাবো হসপিটালে। অনেক ধন্যবাদ ডাক্তার।

-ঠিক ভাবে যত্ন নেওয়া অবশ্যক।

-জি ডক্টর।

ডাক্তার চলে যায়। তাজীব ডাক্তারকে এগিয়ে দিয়ে আসতে যায়। ইরান রুমের ভিতরে ঢুকে দেখে আনাবিয়া ঘুমিয়ে আছে। ধীরেধীরে আনাবিয়ার পাশে বসে পরে সে। আনাবিয়ার গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে তার দিকে। গভীর চুম্বন একে দেয় আনাবিয়ার ললাটে।

-আমি জানি আনাবিয়া তুমি এটা আগেই জানতে তাও আমাকে বলোনি। তোমার এতো ঘৃণা আমি সয্য করতে পারছি না একদম! আম্মা ঠিক বলতো আমার কিসমত আসলেই খারাপ তাইতো সম্পূর্ণ দোষ না করেও তোমার কাছে একমাত্র অপরাধী আমিই!

-স্যার আসবো।

তাজীবের কণ্ঠস্বর শুনে নড়েচড়ে বসে ইরান। শান্ত কণ্ঠে বলে,

-এসো তাজীব।

-স্যার ডাক্তার ম্যামকে এখন এক্সট্রা মেডিসিন নিতে না করেছে। স্পেশালি বেশি পাওয়ারের মেডিসিন একদমই খাওয়া যাবে না।

-ঠিক আছে।

-স্যার একটা কথা বলি মাইন্ড করবেন না?

-তোমার কোনো কথায় আমি মাইন্ড করি? বলো?

তাজীব মেয়েদের মতো লজ্জা পাওয়ার ভান করে ইরানের দিকে তাকায়। আমতা আমতা করে বলে,

-স্যার কিছুক্ষন আগে আপনি বললেন না ম্যামের অসুস্থের কারণ আপনিই? আপনারই সব দোষ? আপনার এই কথাটা সত্যি ছিল স্যার! আপনার জন্যেই তো ম্যাম এখন থেকে সবসময় অসুস্থ থাকবে।

তাজীবের কথায় ইরান ভেবছেঁকা খেয়ে যায়। অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাজীবের দিয়ে তাকায়। চোখ গরম করে কিছু বলতে যাবে তার আগে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় তাজীব। তাজীবের কান্ড দেখে শব্দ করে হেসে দেয় ইরান। আজ অনেকদিন পর হয়তো মন খুলে হাসছে সে।

🌸

পাক্কা দুই ঘন্টা পর ঘুম ভাঙে আনাবিয়া। ডাক্তার তখন তাকে একটা ইনজেকশন দিয়েছিল সেটার দরুণ সে এতক্ষন ঘুমে বিভোর ছিল। আরমোড়া দিয়ে উঠে বসতেই চমকে যায় আনাবিয়া। রুম ভর্তি খাবার, বাচ্চাদের খেলনা, আনাবিয়ার জন্য অনেক গুলো টি-শার্ট আরো কিছু সিম্পল ড্রেস, বাচ্চাদের ড্রেস। একপাশে ছেলে বেবির আরেক পাশে মেয়ে বেবির। বিছানার বরাবর স্মুখীন একটা কেউট বেবির ছবি ঝুঁলানো হয়েছে। তার পাশেই ইরান আনাবিয়ার অনেক গুলো ছবি। আনাবিয়া বিস্মিত হয়ে পাশে ফিরতে দেখে তার পাশে বিশাল বড় একটি টেডিবিয়ার। আচমকা টেডিবিয়ারকে দেখে ভয় পেয়ে একটু সরে যায়। হটাৎ সে অনুভব করে পিছনেও কিছু একটা আছে। আনাবিয়া মনে মনে ভাবে এটাও হয়তো টেডিবিয়ার। বিরক্ত হয়ে ওপর পাশে ফিরতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় তার। গোলগোল চোখ করে সামনে শুয়িত ব্যক্তিতে দেখতে থাকে আনাবিয়া।

-এভাবে তাকিয়ে থেকো না ডিয়ার। হয়তো তুমি নতুন করে প্রেমে পরে যাবে নয়তো আমি নতুন করে পাগল প্রেমিক হয়ে যাবো।

মাথার নিচে দুই হাত দিয়ে আয়েস করে শুয়ে আছে ইরান। দৃষ্টি তার আনাবিয়াতেই নিবদ্ধ। আনাবিয়া বুকে থু থু দিয়ে রুক্ষ কণ্ঠে বলে,

-এখানে কী করছেন আপনি? এখন অফিস রেখে আমাকে পাহারা দেওয়া শুরু করেছেন নাকি?

-সুন্দর ওয়াইফ রেখে অফিসে মন বসে না ডিয়ার।

ন্যাকামো করে কথাটা বলে ইরান। আনাবিয়া কপাল কুঁচকে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

-পাগল যখন হয়েছেন পাবনায় গিয়ে ভর্তি হন। এখানে পাগলদের দাম নেই।

-এখন যার জন্য পাগল হয়েছি সেই পারবে আমাকে সুস্থ করতে।

-রাব্বিশ!

-আমার কথা তোমার কাছে রাব্বিশ লাগলেও তোমার এই তেঁতো কথা গুলো আমার কাছে কিন্তু ভীষণ এট্রাক্টিভ লাগে মাই উট বি বেবির বিউটিফুল মাম্মি।

>>>চলবে।
(আসসালামু ওলাইকুম। আজকে ব্যস্ত থাকায় রি-চেক করতে পারিনি। ভুলক্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ। 💞🙂)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here