#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)
#পর্ব ৩৪
-ডিভোর্স দিলেই সব কিছুর সমাধান হয়ে যায় মা? যদি তুই ইরানকে ভালোবাসিস তাহলে ওকে ছাড়া থাকবি কিভাবে?
-সত্যি বলতে এখন আমার মনে তার প্রতি একটুও ভালোবাসা অবশিষ্ট নেই মম। তোমাকে আমি শাশুড়ি নয় মা ভেবেছি। তাই তোমার সাথে আমার সারাজীবন যোগাযোগ থাকবে।
আনাবিয়া সোফায় বসে ফোন হাতে নিয়ে তাজীবকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-আশা করি যে কাজ আপনাকে দিয়েছি দায়িত্বের সাথে তা পূরণ করবেন।
-ম্যাম?
-প্লিজ আমি আর কিছু শুনতে চাই না।
-জি ম্যাম।
তাজীব চলে যায়। আনাবিয়াকে নিজ হাতে খাইয়ে দেয় রাকিয়া। মনে কালবৈশাখীর ঝড় চলছে তার। ছেলে যতই খারাপ হোক না কেন মায়ের কাছে সে সর্বদা ভালো। রাকিয়াও নিজের ছেলেকে হাসি খুশি দেখতে চায়। ছোটকাল থেকে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে তার ইরান এখন তো একটু সুখ পাওয়ার অধিকার আছে তার!
🌸
তনুসফার সাথে তার অফিসে দেখা করতে এসেছে হাসিব আলী। মেয়েকে হারিয়ে নাজেহাল অবস্থা তার। সামনাসামনি বসে আছে দুইজন। হাসিব আলী দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
-তোমার ভাইয়ের জন্য আজ আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি। এখানে সব দোষ তোমার ছিল তনুসফা।
-আমি সিউর জানি না যে তাহশিয়াকে সত্যি ইরানই মেরেছে! আপনিও সবটা না জেনে ওকে দোষারোপ করতে পারেন না।
-তুমি ওকে ওয়াদা দিয়েছিলে না? কী হলো তোমার ওয়াদার? আমি চাই আমার মেয়ের খুনিকে তুমি শাস্তি দেও নয়তো আমি বড়োসড়ো পদক্ষেপ নেবো।
-ক্ষমা করবেন আমি আর কিছু করতে পারব না। ইরান এখন ভয়ংকর হয়ে গিয়েছে! ওর সাথে গেঞ্জাম করার ইচ্ছে ও শক্তি আমার নেই।
-তুমি এভাবে স্বার্থপর হতে পারো না তনুসফা।
-সবাই আগে নিজ স্বার্থের কথাই ভাবে মন্ত্রী সাহেব। আমি আপনাকে শেষবারের মতো একটা সাহায্য করতে পারি।
-কী?
-ইরানের দুর্বলতা ওর স্ত্রী আনাবিয়া। এবং আপনি আপনার মেয়ে হারিয়েছেন ও আনাবিয়ার জন্যেই। এখন আপনি ইরানের থেকে প্রতিশোধ নিতে চাইলে আনাবিয়ার ওপর আক্রমণ করতে পারেন।
হাসিব আলী চুপচাপ তনুসফার কথা শুনলো। যুক্তি আছে তনুসফার কথায়। তনুসফা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,
-আশা করি আর দরকার হবে না আমাকে। সাবধানে থাকবেন।
_________________🌸
চেকাপ করে বাসায় আসে আনাবিয়া ও রাকিয়া। হসপিটাল থেকে বাসায় আসার পর আনাবিয়ার মনে শান্তি নেই। কিছুক্ষন পর পরই কিসের জেনো ভাবনায় ডুবে যাচ্ছে। রাকিয়া বিষয়টা লক্ষ্য করছে। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস হচ্ছে না তার।
ইরান আজ অফিসে এসেছে। ইরানকে দেখে তাজীব খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। ইরানের কিছু বলার আগেই তাজীব বলে,
-আপনি এসেছেন স্যার! আমি অনেক ভয়ংকর অবস্থায় আছি এখন আমাকে বাঁচান।
-শান্ত হও তাজীব। ফোনে তোমার কথা শুনে আমি নিজেকে আর লুকিয়ে রাখতে পারলাম না তাই এসে পরেছি।
ইরান নিজের চেয়ারে বসে পরে। তাজীব প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে ইরানের দিকে তাকিয়ে বলে,
-স্যার আপনি কোথায় ছিলেন এই কয়দিন?
-ছিলাম এক জায়গায়।
-স্যার তাহশিয়া ম্যামের খবর শুনেছেন?
তাজীবের প্রশ্ন শুনে শব্দ করে হেসে উঠে ইরান তাজীব আহাম্মক বনে তাকিয়ে রইলো ইরানের দিকে।
-শুধু শুনিনি দেখেছিও।
-মানে স্যার আপনি,,,,,,
-এতো মানে মানে করো কেনো তাজীব? তাহশিয়াই আনাবিয়াকে সেদিন পার্সেল পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাহশিয়া একা নয় ওর সাথে আরো একজন আছে।
-তনুসফা ম্যাম?
-সেও ছিল কিন্তু তাহশিয়া চতুর মেয়ে। তনুসফা শেখকে সব বলতো না অনেক কিছু লুকিয়ে রাখতো।
-তাহলে? ওর বাবা?
-হাসালে তাজীব! একজন বাবা তো সর্বদাই মেয়ের সাপোর্ট করবে। কেউ আমাকে বেকুব বানাচ্ছে। বুঝলে তাজীব?
-কে স্যার? বিশ্বাস করুন স্যার আমি এসবের মধ্যে নেই।
-তোমাকে সন্দেহ করার প্রশ্নই আসে না। আমার বাপের র*ক্তই তো আমার বড় শত্রু!
-ইসরাফ স্যার?
ইরান কোনো উত্তর দিলো না। স্মিত হেসে ল্যাপটপ অন করে। সেখানে চোখ স্থির করতেই মুখের ভঙ্গিমা পরিবর্তন হয়ে যায় ইরানের। ল্যাপটপের স্ক্রিনে আনাবিয়াকে দেখা যাচ্ছে। রুমের দরজা লাগিয়ে বিছানায় বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে। অনেক বেশি বিচলিত দেখাচ্ছে আনাবিয়াকে।
ইরান বাসা থেকে যাওয়ার আগে নিজেদের রুমে সিসিক্যামেরা লাগিয়ে গিয়েছিল আনাবিয়ার অগোচরে। এতদিন তার আনাবিয়াকে না দেখে কিভাবে থাকবে তাই এ কাজ করেছিল। এক সপ্তাহে আনাবিয়াকে একবারও হাসতে দেখেনি সে। সবসময় মুখ গম্ভীর করে বসে কিছু একটা ভাবে। হঠাৎ করেই কাশতে থাকে আনাবিয়া। একসময় কাশতে কাশতে বমি চলে আসে তার। তাই দৌড়ে ওয়াশরুম চলে যায়। ইরান সেটা দেখে একটু ঘাবড়ে যায়। রাগী কণ্ঠের তাজীবকে বলে,
-তোমার ম্যাম আজ চেকাপ করতে গিয়েছিল তাজীব?
-জি স্যার আন্টি নিয়ে গিয়েছিল ম্যামকে।
-আমি জাস্ট ভাবতে পারছি না কিভাবে সে এতো বড় ডিসিশন নিলো? ডিভোর্স চাই তো তার? আমার থেকে দূরে যেতে চায় তো? আই স্যয়ার সারাজীবনের জন্য বন্দী করে রাখবো তাকে।
-আজ ম্যামের সাথে দেখা করবেন স্যার?
-হ্যাঁ। তার পাখা কাটতে আমার তার স্মুখীন যেতে হবে।
ইরান নিশ্চুপ হয়ে ফের ল্যাপটপের স্ক্রিনে চোখ স্থির করে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আলমিরা খুলে আনাবিয়া। পরিহিত জামা ভিজে গিয়েছে তার। নতুন একটি জামা নিয়ে পরার জন্য উদ্যত হতেই ইরান ল্যাপটপ বন্ধ করে দেয়। বেচারি আনাবিয়া! সে তো জানেও না ইরান তার প্রত্যেক কর্মকান্ড দৃঢ় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সবসময়। চোখ বন্ধ করে জোরে নিঃশাস নেয় ইরান। তাজীব ইরানকে দেখে আমতা আমতা করে বলে,
-স্যার একটা প্রশ্ন করব?
ইরান চোখ বন্ধ অবস্থায় মাথায় হাত দিয়ে বলে,
-বলো?
-আপনি কী সত্যি ম্যামের বাবা মার খুনি? আমি এটা আগেও আপনার মুখ থেকে শুনেছি তবুও আমার কেনো জানি বিশ্বাস হচ্ছে না স্যার।
-সত্যিটা বিশ্বাস করতে শেখো তাজীব।
কিছুক্ষন নীরবতা কাটিয়ে ইরান তাজীবের দিকে তাকায়। চোখের ইশারায় তাজীবকে চেয়ারে বসতে বলে। তারপর ইরান বলতে শুরু করে,
-তোমার কাছে আমি হলাম খোলা ডায়রি। আমি তোমাকে কতটা বিশ্বাস করি সেটা হয়তো তুমি নিজেও জানো?
-জি স্যার। আমিও সবসময় চেষ্টা করি আপনার বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে এবং সামনেও করব।
-খুশি হলাম। আমার ছোটকালের কথা নিশ্চই শুনেছ? ছোটকাল থেকেই এক জঘন্য ও নোংরা পরিবেশে বড় হয়েছি আমি। ছেলে হয়েছিলাম তাই ফ্যামিলি থেকে একটু আদর পেয়েছি মেয়ে হলে হয়তো তাও পেতাম না। আমার জীবনের উদ্দেশ্য একটাই ছিল যে যে আমার মাকে কষ্ট দিয়েছে তাঁদের ভয়ংকর থেকেও ভয়ংকর অবস্থা করা। আমার বলতেও লজ্জাবোধ হয় যে আমার জন্মদাতা ছিল একজন ধর্ষক। অন্য মেয়েদের প্রতি নেশা ছিল তার অনেক বেশি। অথচ নিজের স্ত্রীর প্রতি কোনো দামই ছিল!
তাজীব নীরব দর্শকের মতো ইরান কথা শুনছে। শেষের কথা গুলো বলার সময় ইরানের গলা মৃদু কেঁপেছিল যেটা তাজীব অনুভব করতে পেরেছে।
-যখন আমার আঠারো বছর বয়স হয় তখন মনে মনে একটা কথাই ভাবতাম যেভাবেই হোক এরফান শেখ ও তার পরিবারকে ধ্বংস করে দেবো আমি। আমার কিছু কর্মকান্ডের এরফান শেখ বুঝে যায় আমি যে তাকে মারার প্ল্যান করছি তাই সে আমাকে দূরে দূরে রাখতো ইসরাফকে বেশি নিজের কাছে রাখতো। এক সম্মেলনে নিজের পরিচয় লুকিয়ে অন্য পার্টির দলের সাথে হাত মেলালাম। তারা শেখ পরিবারকে মারতে চেয়েছিল। আমিও তাঁদের সাহায্য করি। বলতে গেলে সবই আমিই করি। সেদিন বোম ব্লাস্টে মারা যায় এরফান শেখের ভাই, ভাইয়ের বউ, তাঁদের ছেলে এবং এরফান শেখের বাবা। তাঁদের রক্ত দেখে আমার সেদিন উৎসব উৎসব ফিলিংস হয়েছিল। তারা সবাই অনেক জ্বালিয়েছিল আমার মা কে।
-স্যার সেটাই আপনার জীবনের প্রথম খুন?
-নোহ। জেদে বসে সর্বপ্রথম আমি আমার বেস্টফ্রেন্ডকে মেরেছিলাম।
-ধরা পরেননি স্যার?
-নাহ। কিন্তু অনেক ভয় পেয়েছিলাম।
-তারপর?
-তারপর এরফান শেখ অনেক বেশি সন্দেহ করা শুরু করে আমাকে। আমি তখন তাকে মারার পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ফেলি। তার চোখে ভালো ছেলে হওয়ার প্রতিজ্ঞা করি। কারণ আমি চাইছিলাম আগে তার চোখে ভালো হবো যাতে আমার পরিকল্পনা সে বুঝতে না পারে আর ভবিৎষতে আমাকে কেউ সন্দেহ না করে। হয়ে গেলাম তার গোলাম। ইসরাফ ছিল ভীত। মুখে মুখে বড় বড় কথা বললেও রক্ত দেখলেই ভয় পেয়ে যেত সে। এরফান শেখ আমার মতোই ভয়ংকর চালাক ছিল। আমাকে অনেক ভাবে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল তার কাছে। তার জন্য অনেক নির্দোষকে খুন করেছি আমি। নির্বাচনের সময় ওপর দল বেশি পাওয়ারফুল হলেই আমাকে হুকুম করত তাঁদের পথ থেকে সরানোর জন্য। আমিও তাই করতাম। আমার জীবনের শেষ পরীক্ষা ছিল তন্নী ফারুকের খুন করা! আমার পড়াশোনার জন্য কানাডায় পাঠায়। ঠিক তার কয়েক বছর পরই একদিন এরফান শেখ ফোন করে বলে তন্নী ফারুকের কথা। তার কালো ধান্দার অনেক প্রমান নাকি তন্নী ফারুকের কাছে ছিল। সে ভীত হয়ে আমাকে দেশে আসতে বলে। আমি ভাবি দেশে যাবো না এভাবেই তার ধ্বংস হোক। হঠাৎ আমার মনে পরে তার মৃত্যু শুধুই আমার হাতে হবে। তাই তৎক্ষণাৎ দেশে চলে আসি আমি। তন্নী ফারুককে দেখে অনেক ইমপ্রেস হই আমি প্রথম। একজন মহিলা কিভাবে এতো সাহসী হয়! তাকে কয়েকবার সাবধান করি। তবুও সে নিজের কাজে অটল। শেষে আমার রাগ উঠে যায়। একজন মহিলা আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছে! আমাকে! এরফান শেখের কথা ভুলে তখন আমি আমার আত্মসম্মানকে বেশি মর্যাদা দেই। তারপর একদিন পরিকল্পনা করে গাড়ি এক্সিডেন্ট করিয়ে দেই। যেটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল!
তাজীব স্তব্ধ। ইরান চোয়াল শক্ত করে মাথা নিচু করে বসে আছে। তাজীব কপালে ভাঁজ করে প্রশ্ন করে,
-তাহলে ম্যাম কিভাবে জানতো যে এরফান শেখ তার পরিবারের খুন করিয়েছে?
-তোমার ম্যামের কাছে একটা মেমোরি ছিল। যেটায় সেদিন গাড়ি এক্সিডেন্টের সময় ভিডিও করেছিল তন্নী ফারুকের হাসব্যান্ড। সেই মেমোরি পেয়েছিল আনাবিয়ার খালামুনি সে-ই আনাবিয়াকে সেটা দিয়েছে। আর ঐ ভিডিও তে শুধু এরফান শেখ এবং ইসরাফকে দেখা যায় আর তাঁদেরই কণ্ঠস্বর শোনা যায়। বিয়ের প্রথমদিন রাতে আনাবিয়া আমাকে সব বলেছিল। আমিই স্বার্থপরের মতো ওকে হারানোর ভয়ে, নিজের খুশির কথা ভেবে মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছিলাম।
-ভিডিওতে আপনি কেনো ছিলেন না স্যার? আপনারও তো থাকার কথা?
-সৃষ্টিকর্তা জনতো ও আমার কিসমতে আছে তাই সবটা ধোঁয়াশা করে রেখেছিল! আমি গাড়ির পিছনে ছিলাম। ডেথবডি গুলো চেক করে দেখছিলাম কেউ বেঁচে আছে নাকি। তাই ভিডিও তে আমি নেই এবং আমার কোনো কথাও নেই।
-স্যার এখন আপনি কী করবেন? ম্যাম অগ্নির গোলা হয়ে আপনাকে জ্বালিয়ে দেবে।
-দেখি কত জ্বালাতে পারে।
___________________🌸
বেলকনিতে বসে আছে আনাবিয়া। শান্ত দৃষ্টিতে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে সে। ফোন হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। একবার গ্রান্ডমার নাম্বারে কল দিচ্ছে আরেকবার নিজেই কল কেটে দিচ্ছে। নিজের কাজে আনাবিয়া নিজেই বিরক্ত। মনে সাহস জোগাড় করে কল দেয় গ্রান্ডমাকে। কিছুক্ষন রিং হওয়ার পর পরই কল রিসিভ করে গ্রান্ডমা।
-কেমন আছো বাচ্চা? শরীর সুস্থ আছে?
-আমি ভালো নেই গ্রান্ডমা। একটুও ভালো নেই।
আনাবিয়ার অস্থির কণ্ঠস্বর শুনে চিন্তিত হয়ে গ্রান্ডমা বলে,
-হোয়াটস প্রবলেম মাই চাইল্ড?
-গ্রান্ডমা আমি পাগল প্রায়! কী হচ্ছে আমার সাথে এইসব! কিছুই বুঝতে পারছি না আমি। মাথায় শুধু সুই*সাই*ডের কথা ঘোরে আমার।
-চুপ করো এইসব বলো না। শান্ত হও এবং কী হয়েছে সেটা আগে বলো আমাকে?
-ইরান, ইরান-ই মা বাবাকে খুন করেছে গ্রান্ডমা। আমি চাইলেও এই সত্যিকে গ্রহণ করতে পারছি না! এখানে আমি এসেছিলাম প্রতিশোধ নিতে কিন্তু এখন আমি পারছি না নিজের শত্রুকে মারতে।
-আনা শান্ত হও বাচ্চা। এইরকম অবস্থায় এতো বিচলিত হতে নেই। মাথা শান্ত করে ভাবো। ইরান খুনি প্রুফ আছে তোমার কাছে?
-সে নিজেই স্বীকার করেছে।
-তাহলে আর কী করার সত্যিটা মানতে হবে। তুমি যা করবে ভেবে চিন্তে করবে।
-আমি তাকে মারতে পারব না আর না নিজেকে শেষ করতে পারব! আমি ভেবেছি পালিয়ে যাবো এখান থেকে। ইরান আমাকে সহজে ডিভোর্স দিবে না তাই আমার কোনোভাবে পালিয়েই যেতে হবে।
-ঠিক আছে এখানে এসে পড়িও তুমি। আমরা আছি। আর হ্যাঁ নিজের কোনো ক্ষতি করবে না আনা।
-আমি চাইলেও নিজের ক্ষতি করতে পারব না গ্রান্ডমা। আমি,,,,,,,,,,,,,,
-পালিয়ে যাওয়ার শুধু প্ল্যানই করো। কারণ তোমার প্ল্যান সত্যি হতে তো আমি দেবো না আনাবিয়া সাবরিন।
ইরানের কণ্ঠস্বর শুনতেই পিছনে ফিরে তাকায় আনাবিয়া। কল কেটে দেয়। অসম্পূর্ণ কথা অসম্পূর্ণই থেকে যায়। বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় আনাবিয়া। ইরানের মুখে রাগের আভাস যেটা অনেক কষ্টে ইরান লুকিয়ে রাখা চেষ্টা করছে। আনাবিয়া তাচ্ছিল্যের স্বরে বলে,
-অতঃপর গুহা থেকে বেরিয়ে এসেছে শিয়াল! একজন খুনি আমাকে এতো ভয় পাবে আমি একটুও ভাবিনি কিন্তু!
>>>>>চলবে।