#হৃদয়জুড়ে_প্রেয়সীর_আভাস (২)
#পর্ব_১৭
#মোহনা_হক
-‘আপনার ভালোবাসায় কোনো খুঁত বা ত্রুটি নেই। ধরুন হঠাৎ একদিন আপনার ভালোবাসা কোনো এক কারণে হারিয়ে গেলো। তখন আপনার একটু না একটু হলেও কষ্ট লাগবে। তাহলে কেনো অন্যের ভালোবাসা থেকে তাকে আলাদা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন? তখন তাদের কি কষ্ট হয়নি এমপি সাহেব?’
অদ্ভুত চাহনি প্রেয়সীর। আয়াজ কিছুটা থমকে যায় কথাটি শুনে। জিহ্বা দ্বারা অধর ভেজায়। কখনো রুয়াত এটা বলবে ভেবেও দেখেনি। যা কিছু করেছিলো সব ভালোর জন্য করেছে। যেনো ভবিষ্যতে কাউকে কোঁথাও আটকাতে না হয়। পূর্ব পরিকল্পনা করে করেছে। তবে এভাবে যে রুয়াত কথাগুলো বলবে সেটা কখনো কল্পনা করেনি। আয়াজ কিছু একটা ভেবে উত্তর দেয়,
-‘আমি যদি বলি আমি ওদের ভালোর জন্য এটা করেছি। তাহলে তুমি এখন কি বলবে?’
তাচ্ছিল্য হাসে রুয়াত। ভ্রু কুচকে আয়াজ রুয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রেয়সীর আজকের ব্যবহার সত্যি অন্য রকম।
-‘কাউকে কষ্ট দিয়ে কিভাবে ভালো করা যায়? একটু বুঝিয়ে বলবেন?’
ফোনে সময় দেখে আয়াজ। সময় নেই তার হাতে বেশি। কাজে বেরিয়ে পড়তে হবে একটু পরেই। কিন্তু প্রেয়সীর কাছে এসব কাজ তুচ্ছ। কয়েক শত বছর পেরিয়ে যাক সে এখানেই তার কাজ ফেলে রেখে বসে থাকতে পারবে। মানুষের যখন যেটা চায় সেটা কি করতে পারে সব সময়? বাস্তবতার কাছে ঠিকই হেরে যেতে হয়। আয়াজ উঠে দাঁড়ায়। ফোন পকেটে পুড়ে। রুয়াত মাথা তুলে সেই সুদর্শন পুরুষের দিকে তাকায়। এখন মোটামুটি রোদ উঠেছে। যার কারণে মাথা তুলে তাকানোর ফলে কিছুটা চোখ মুখ কুচকে এলো মেয়েটার।
-‘তারা যদি এখন খানিকটা কষ্ট করে পরবর্তী সময়ে এক হয়ে থাকতে তার জন্যই আমি চেষ্টা করেছি। আশাকরি আর তেমন কিছু বোঝার নেই।’
কিছু না বুঝেও রুয়াত মাথা ঝাঁকায়। কথা বাড়াতে মন চাইলো না। কিছু বুঝতেও মন চাচ্ছে না। তবে যখন নিজে ভালোবাসা জিনিসটা বুঝেছে তখন থেকেই নিমির কষ্টগুলো অনুভব করতে পেরেছে। শুধুমাত্র আয়াজের অনুপস্থিত সহ্য হয়নি তার। বারংবার দম বন্ধ হয়ে এসেছিলো। আশেপাশের পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলো তার জন্য। সেখানে কিভাবে নিমি তার ভালোবাসা কে ভুলে গিয়েছে? নিশ্চয়ই মেয়েটার ও কষ্ট হয়েছে ভীষণ। কাউকে বুঝতে দেয়নি। সবকিছু ভেবে দূরে সরে এসেছে। বাবা, মায়ের, পরিবারের মান সম্মানের কথা ভেবে৷ দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে রুয়াতের। আয়াজ রুয়াতের কপাল চেক করে। হালকা গরম হয়ে আছে এখনো।
-‘নাস্তা করার পর মেডিসিন খেয়ে নিও। এখন এখানে বসে থাকবে নাকি ভেতরে যাবে?’
আয়াজ প্রশ্ন করেছে। রুয়াত উত্তর না দিয়ে সে নিজেও প্রশ্ন করে,
-‘কেনো?’
-‘না আমি দিয়ে আসতাম ভেতরে আরকি। যদি না যেতে পারো তাই।’
-‘একা এসেছি একাই যেতে পারবো।’
-‘ঠিক আছে। আমি আসছি।’
রুয়াত দেখলো আয়াজ এখান থেকে চলে গিয়ে আবার বাসার ভেতরে ঢুকেছে। হয়তো বড় মায়ের কাছে বলতে গিয়েছে। কিছু সময় বাদে আয়াজ বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় একবার রুয়াতের দিকে তাকায়। অতঃপর বেরিয়ে পড়ে তার কাজের উদ্দেশ্যে।
(*)
বাগানে অনেক্ক্ষণ যাবত রুয়াত বসেছিলো। মেহরুবা প্রথমে রূহান কে পাঠিয়েছিলো। কিন্তু সে আসেনি। ঠায় বসে ছিলো সেখানে। এরপর মেহরুবা নিজে গিয়ে অনেক জোরাজুরি করার পর নিয়ে আসে। ইনিমা আর নিমি উঠে পড়েছে অনেক আগেই। ঘুম থেকে উঠার পর নিমি সারা বাড়ি তল্লাশি করেও রুয়াত কে খুঁজে পেলো না। মেহরুবা নাস্তা দিয়ে গিয়েছে তিনজন কে। নিমি খাচ্ছে আর কথা বলছে। ইনিমা আর রুয়াত চুপচাপ শুনে যাচ্ছে শুধু। একসময় নিমি চুপ হয়ে যায়। কারণ সে লক্ষ্য করছে যে ইনিমা আর রুয়াত কিছু বলছে না।
-‘কি রে নিমি বন্ধ করেছিস কেনো? কন্টিনিউ কর। আমিও একটু শুনি।’
নিমি পেছন ফিরে আরহামের দিকে তাকায়। কথাটি আরহাম বলেছিলো। মুখ ভেঙচি দিয়ে নিমি দৃষ্টি সামনে ফেরায়। রুয়াত অসুস্থ থাকার পর ও হেসে যাচ্ছে।
-‘মানুষ এতো বকবক করতে পারে সত্যিই নিমি তোকে না দেখলে ভাইয়া বিশ্বাসই করতে পারতাম না। আমার তো মনে হয় বাঁচাল ও এতো কথা বলে না। যতটা তুই বলিস।’
গা হেলিয়ে হাসে আরহাম। নিমি কে জ্বালাতে তার ভালোই লাগে। অল্প কিছু বললেই রেগে যায়। খাবার ছেড়ে নিমি চারপাশে না তাকিয়ে আরহামের পিঠের মাঝ বরাবর ঘু’ষি বসায়।
-‘আমি কথা বললেই যতো সমস্যা তোর। তুই মনেহয় আমার আসল ভাই না। কখনো দেখিনি ভাই বোন কে এভাবে বলে।’
ইনিমা আরহামের থেকে নিমি কে নিয়ে আসে। তখন আরহাম কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইনিমা চোখ রাঙায়। ব্যাস আরহাম চুপ হয়ে যায়। সব সময় ইনিমার জন্য কোনো কথা বলতে পারে না। আরহাম চুপচাপ রুয়াতের পাশে এসে বসে। রুয়াতের দিকে অসহায় চোখে তাকায় সে।
-‘ব্যাথা পেয়েছো বেশি?’
আরহাম না চাইতেও মুচকি হাসে।
-‘না ব্যাথা পাইনি।’
নিমি রাগে ফুসে ওঠে। আবারও মুখ ভেঙচি দেয় আরহাম কে। প্রতিউত্তরে আরহাম কিছু করেনি। মাথা নিচু করে ফোন দেখা শুরু করে।
-‘নিমির এসব আচরণ সত্যিই বিরক্তিকর। ও তোর বড় ভাই না?’
ইনিমার কথায় কর্ণপাত করলো না নিমি। আরহাম মাথা তুলে ইনিমার দিকে তাকায়। আজ যেনো সূর্য পশ্চিম দিকে উঠেছে৷ এই প্রথম ইনিমা আরহামের হয়ে কথা বললো। বিষয়টা অবিশ্বাস্যকর! যে মানুষটি কখনো তার হয়ে কথা বলেনি আজ বলছে শুনে কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। শুকনো কাঁশি দেয়। নিমি বলে ওঠে,
-‘ও যে আমায় সব সময় এগুলো বলে তখন কিছু বলো না কেনো আপু? আমি কি সত্যিই বেশি কথা বলি? আমার তো মনে হয় না। ভাইয়া ইচ্ছে করেই এমন করে।’
ইনিমা বিচার করার বদলে হেসে উঠলো। এই দু ভাই বোনের ঝগড়া কখনো যাবে না। এখন কিছু বললে ঝগড়া তো বন্ধ করবেই না আরও উল্টো পাল্টা কথা বলা শুরু করবে। এতো বড় হয়েছে কিন্তু তাদের পাগলামো গুলো এখনো গেলো না। শেষে ইনিমা চুপ হয়ে যায়।
(*)
শাফী আয়াজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আজকে খবর পাঠিয়েছে তাকে অফিসে একবার আসার জন্য। সেজন্যই আজ সে আয়াজের অফিসে এসেছে। আয়াজ নেই তাই শাফী একটা চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছে। অনেক সময় হয়ে গেলো কিন্তু আয়াজের আসার নাম নেই। তাও বসে বসে শাফী অপেক্ষা করছে। হঠাৎ আয়াজ আসলো। তার পেছন পেছন সাহেদ ও এসেছে। আধ ভেজা পাঞ্জাবীর আয়াজের। শাফী কাচুমাচু হয়ে বসে। টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে আয়াজ বললো,
-‘বেশি অপেক্ষা করিয়েছি কেনো?’
সাথে সাথে শাফী দু’পাশে মাথা নাড়িয়ে বলে-
-‘না স্যার।’
আয়াজ সাহেদের উদ্দেশ্যে বলে-
-‘দু কাপ চা দিতে বলো সাহেদ।’
সাহেদ মাথা নাড়িয়ে চা আনতে চলে যায়। আয়াজ ইশারা করলো শাফী কে তার সামনে এসে বসার জন্য। শাফী কিছু না বলেই আয়াজের সামনে বরাবর চেয়ারে এসে বসে। দু হাত গুঁজে চক্ষুজোড়া ছোট করে আয়াজ শাফীর দিকে তাকায়।
-‘তোমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট দিলো না কিছুদিন আগে?’
-‘জ্বী।’
-‘রেজাল্ট কেমন হয়েছে?’
শাফী অধর মেলে হাসে।
-‘আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়েছে খুব।’
-‘ভালো। তো আর কি খবর তোমার?’
-‘জ্বী ভালো।’
আয়াজ আপন মনে দু পাশে মাথা দুলায়। তার সম্পূর্ণ নজর শাফীর দিকে। কিছু অস্বস্থি বোধ করলো শাফী।
আয়াজ শান্ত স্বরে বলে-
-‘তোমাকে আমি কেনো এখানে ডেকেছি জানো?’
-‘না স্যার।’
-‘তুমি নাকি নিমির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলে?’
কথাটি শুনে শাফী যেনো আকাশ থেকে পড়লো। সে তো কখনো দেখা করতে চায়নি বা যোগাযোগ ও করতে চায়নি নিমির সাথে। বরং আরও চেষ্টা করেছে যাতে কখনো নিমির সাথে যোগাযোগ কিংবা দেখা না করার। এমনকি শেষ বারের জন্য নিমি কে কিছুই বলেনি। সেদিন থেকেই সব ভুলে গিয়েছে সে। নিমির ভালোর জন্য ছেড়ে দিয়েছে তাকে। সব ভুলে গিয়ে নতুন করে জীবন গড়ার প্রত্যাশা করছে।
-‘আমি সেদিনের পর থেকে একবারের জন্যও যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি। আমার বন্ধুর থেকে শুনেছি ওর কাছে নাকি কল দিয়েছিলো। আমি আগেই মানা করে দিয়েছিলাম যাতে নিমি কল দিলে কখনো রিসিভ না করে। সেদিন থেকেই ওর নাম্বার ব্লক করে দিয়েছি। তাহলে কিভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবো বলুন স্যার?’
নিঃশব্দে আয়াজ হাসে।
-‘আমি জানি সব। শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি ঠিক কেমন মানুষ। যাই হোক তোমাকে আমার খুব মনে ধরেছে। নিমি জন্য আমি তোমায় সিলেক্ট করেছি।’
পরপর অবাক হয় শাফী। সে যেনো কথাটি বিশ্বাস করতে পারছে না। আচমকা চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি পড়ে যায়। কিছু বলার ভাষা নেই তার। হাত কাঁপছে রীতিমতো। আয়াজ শাফীর কাঁধে হাত দেয়।
-‘আমি তোমাদের ভালো চেয়েছিলাম। আমি ভেবে রেখেছি যখন তুমি প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন বলবো। আমি নিজেই তোমার বাড়ি প্রস্তাব পাঠাবো। এখন তোমাদের ভালোর জন্য আলাদা করেছিলাম। যাতে পরবর্তী সময়ে তোমরা দু’জন ভালো থাকতে পারো। নিজের সব দিয়ে চেষ্টা করবো তোমাদের এক করে দেওয়ার। নিজের এমন পরিচয় বানাও যেনো আমার পরিবারের প্রতিটি মানুষ নিমির জন্য তোমাকেই ঠিক করে এক দেখাতে। তবে একটা শর্ত তুমি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এসব কিছুই নিমি কে জানাবে না।’
শাফী দু হাত দিয়ে চোখ মুছে। এভাবে যে আবারও তার ভালোবাসা কে ফিরে পাবে কখনো ভেবে দেখেনি। সে তো চেয়েছিলো ভুলে যেতে। বলা আছে পুরুষ মানুষ সহজে কাঁদে না কিন্তু আজ শাফীর ক্ষেত্রে অন্যটা হয়েছে। পুরোনো ভালোবাসা কে নতুন করে ফিরে পাবে শুনে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। আয়াজের এক হাত নিজের মাথায় রাখে। ক্রমাগত ধন্যবাদ দিয়েই চলছে। অনেক কৃজ্ঞতা প্রকাশ করে। আয়াজের শাফীর এরূপ কান্ড দেখে তৃপ্তিমুলক হাসে।
(*)
ক্রলিং বাজতেই ইনিমা ফোনটা রেখে দৌড়ে দরজা খুলে দেয়। নিমির কোলে মাথা রেখের রুয়াত শুয়ে আছে সোফায়। সারাদিন আর জ্বর আসেনি তার। সে এখন পুরোপুরি সুস্থ সে। আয়াজ ফোনে কথা বলতে বলতে ভেতরে ঢুকে। হুড়োহুড়ি করে রুয়াত উঠে বসে। আয়াজ একবার সেদিকটা তাকায়। অতঃপর অগ্রসর হয় নিজের রুমের দিকে।
পরিবারের প্রত্যেক বড় সদস্যরা বসে কথা বলছে। রুয়াত, ইনিমা, নিমি সবার মাঝে নিরব দর্শকের মতো বসে কথা শুনছে। আয়াজ সেই যে বাসায় এসেছে তখন, আর নিচে নামেনি একটি বারের জন্য। মায়া চৌধুরী কে বলেছে সে নাকি কিসব কাজে ব্যস্ত। কথা বলতে বলতে প্রায় রাত বারোটার মতো বেজে যায়। সবাই এক সাথে কথা বলা শুরু করলে আর হুঁশ থাকে না। তেমনি কারোরই খেয়াল নেই খাবারের কথা। যে যার মতো কথা বলেই চলছে। এক পর্যায়ে মায়া চৌধুরী সবাই কে তাড়া দেওয়া শুরু করে। আয়াজ আসেনি তাই মায়া চৌধুরী ইনিমা কে বলে-
-‘আয়াজ কে ডেকে নিয়ে আয় যা। ছেলেটা সে কখন এসেছে। কি কাজ করছে। যা তুই ওকে গিয়ে বল খেতে আসতে নিচে।’
বলেই মায়া চৌধুরী চলে যায়। ইনিমা গেলো না উল্টো রুয়াত কে বলছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সে কোনো মতেই যেতে রাজি নয়। তাও ইনিমা জোর করছে। শেষ পর্যন্ত রুয়াত না পেরে আয়াজ কে ডাকতে গেলো। দরজার সামনে এসেই উঁকি দেয়। বাহির থেকে দেখা যাচ্ছে আয়াজ নেই রুমে। তাই সে আয়াজের অন্য রুমে যায়। যেখানে আয়াজ তার সব পলিটিক্যাল মিটিং কিংবা সব তথ্য, কাজ এখানে করে। ল্যাপটপে খুব মনোযোগ দিয়ে আয়াজ কিছু একটা দেখছে। রুয়াত কিছু না ভেবেই বলে উঠে,
-‘বড় মা ডেকেছে। বলেছে যে এখনই খেতে আসার জন্য নিচে।’
আয়াজ ঘাড় ঘুরিয়ে রুয়াতের দিকে তাকায়।
-‘ভেতরে আসো।’
ধীর পায়ে রুয়াত রুমে প্রবেশ করে। ল্যাপটপটা একপাশে সরিয়ে রাখে। যাতে রুয়াত কিছু না দেখতে পারে। থুতনিতে হাত বুলায়। স্বাভাবিক স্বরে বলে-
-‘জ্বর কমেছে তোমার?’
-‘এখন আর নেই। তাড়াতাড়ি আসুন বড় মা ডাকছে।’
-‘তুমি যাও। আসছি আমি।’
রুয়াত চলে আসে। ল্যাপটপ বন্ধ করে দেয় আয়াজ। অতঃপর নিচে আসে।
(*)
-‘তোরা কি ঘুমিয়ে পড়বি এখনই?’
বিছানা থেকে নেমে ইনিমা কথাটি বলে। রুয়াত আর নিমি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ইনিমার কন্ঠস্বর শুনে রুমে আসে তারা। নিমি বলে-
-‘চলো আজ কোনো ভৌতিক কিছু দেখি টিভিতে। অনেক দিন দেখা হয় না।’
নিমির কথাটি ইনিমার পছন্দ হয়ে গেলো। সেও তাতে সায় দিলো। কিন্তু রুয়াত বলছে দেখবে না। সে নাকি ঘুমোবে। ইনিমা রুয়াতের কোনো কথা না শুনেই তাকে নিয়ে চলে আসে। টিভিতে The Wrong House মুভিটা চালু করে। প্রথম প্রথম ভয় না পেলেও শেষে কিছু ভয়ংকর সিন দেখে চিল্লিয়ে ওঠে তিনজন। সবাই গভীর ঘুমে। আওয়াজ কারো কান পর্যন্ত যায়নি। কিন্তু আয়াজ কাজ করেছিলো দেখে তিনজনের চিৎকার শুনে তাড়াহুড়ো করে নিচে আসে। এসব কান্ড দেখে হুট করেই মাথা গরম হয়ে যায়। ধমকে ওঠে সবাইকে,
-‘রাত দু’টোর সময় নাটক করছো তোমরা? ফাজলামো হচ্ছে? টিভি বন্ধ করে এক্ষুনি এখান থেকে সবাই যাবে। নাহয় আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কোনো শব্দ ছাড়া এখান থেকে চলে যাবে। যাও এক্ষুনি।’
#চলবে….