#প্রেম_প্রার্থনা
#তামান্না_আঁখি
#পর্ব-১৫
রানি আবিষ্টের মতো তুহিনের পিছু পিছু ছুটছে। তুহিন টেনে রানিকে একটা দোকানের আড়ালে নিয়ে গেলো। মুখ বাড়িয়ে আশেপাশে দেখলো আক্রমনকারী কেউ পিছু নিলো কিনা। তেমন কাউকে দেখতে না পেয়ে নিশ্চিন্ত হলো।মুখ ঘুরিয়ে তার বাম হাত আকড়ে ধরে রাখা রানির দিকে তাকালো। বিধ্বস্ত হয়ে আছে মেয়েটা। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে মেয়েটার, চুল এলোমেলো, ঘামে ভিজে আছে সর্বাঙ্গ। তুহিন রানির দিকে পুরোপুরি ফিরলো। হতবিহ্বল রানির দুই বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে বললো-
“রানি! রানি! আমার দিকে তাকাও!”
রানি সামনে থেকে চোখ সরিয়ে তুহিনের দিকে তাকালো।তুহিন বললো-
“এখান থেকে বাইর হওয়া লাগব। আমরা মেলার পিছনের গেট দিয়া বাইর হইবাম। তুমি দৌড়তে পারবা তো?”
রানি কান্নাভেজা কন্ঠে বলল-
“চারু,ভাইয়া ওদের ছাড়া আমি যাইতাম না।”
“ওদের কিছু হইত না।আমি যতক্ষন মেলায় আছি তোমার ভাইরে কেউ কিছু করতো না। ”
বলেই রানিকে টেনে পাশের আরেকটা দোকানে নিয়ে গেলো।সেখান থেকে একটা বোরকা বের করে রানিকে পড়িয়ে দিলো।সাথে একটা ওড়না দিয়ে ভালো করে রানির মাথা ঢেকে দিলো যাতে মুখ না দেখা যায়। তারপর দোকান থেকে বের হলো।
রবিন সহ তার চারপাশে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলো চারুর দৌড়ে আসা। চারু কাছাকাছি আসতেই রবিনের সামনে থাকা দুইটা ছেলে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে জায়গা থেকে সরে গেলো ।চারু সেই ফাঁক দিয়ে রবিনের কাছে চলে এলো। এসেই বাঁশ সামনে ধরে চিৎকার করে ঘুরতে লাগলো। এমন অবস্থা দেখে রবিন হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো নিচে। চারুর দিকে তাকিয়ে দেখলো চারু তার মাথার উপরে বাঁশ সামনে ধরে চারপাশে ঘুরছে। আশেপাশে আক্রমণ করতে আসা ছেলেগুলো বাঁশের বাড়ি খাওয়ার ভয়ে দূরে সরে গেলো কিছুটা। তারাও অবাক হয়ে গেছে এই ঘটনায়।
রবিন চারুর থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালো চোখ পড়লো সেখানে লিমন মারামারি করছে কয়েক্টার সাথে। তারপর হঠাৎ করে চোখ পড়লো অন্য পাশে। সেখানে দেখলো তুহিনকে। সে একটা বোরকা পরিহিত মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে পিছনের গেটে যাচ্ছে। মেয়েটার মুখ না দেখেও রবিন বুঝতে পারলো মেয়েটা রানি।তুহিন রবিনের দিকে তাকিয়ে হাতের ইশারায় পিছনের গেটে আসতে বলে রানিকে টেনে নিয়ে চলে গেলো।
রবিন মাথার উপরে তাকিয়ে দেখলো চারু ক্লান্ত হয়ে এদিক ওদিক বাঁশ দিয়ে আঘাত করছে, যদিও সেই আঘাত কারো গায়েই লাগছে না।রবিন বসা থেকেই চারুর হাত ধরে থামিয়ে সেই বাঁশ হাত নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। বাঁশ উঁচু করে আঘাত করলো রাম*দা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটা ছেলের দিকে। গুলি লাগা হাতটা ব্যথায় চিন চিন করে উঠলো। রবিন দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলো। চারপাশে ঘুরে আরো কতগুলো আঘাত করলো।এলোপাথাড়ি বাঁশের আঘাতে ছেলেগুলো ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও থেমে গেলো না তারাও আঘাত করতে উদ্যত হলো।
লিমন চিৎকার করে রবিনকে বললো –
“ভাই, দলের লোকেরা গেটে আইসা পড়ছে। অনেক বড় হাংগামা হইব। তুমি চারুরের নিয়া মেলা থাইকা বের হও।”
রবিন থেমে গিয়ে আশেপাশে পরখ করলো, আক্রমনকারীরা চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকলেও কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়েছে। সবাই ই অ*স্ত্র হাতে ওত পেতে আছে আঘাত করার জন্য । সে লিমনের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলো। লিমন তাকে আঘাত করতে আসা ছেলেটিকে লাথি মেরে দূরে সরিয়ে রবিনকে ঘিরে থাকা কয়েকটা ছেলের উপর চড়াও হলো।
ফাঁক পেয়ে রবিন চারুর হাত ধরে দৌড় দিলো। আর কিছুটা সময় তারপরেই তার দলের লোকেরা চলে আসবে, সাহায্য করবে লিমন কে। সে চারুকে টেনে দৌড়ে সামনে আগালো। চারু তীব্র উত্তেজনায় কাঁপছে। সে যে এমন সাহসিকতা দেখাবে তা সে স্বপ্নেও ভাবে নি। এমন পরিস্থিতিতেও সে কোনোদিন পড়ে নি। সব মিলিয়ে তার অবস্থা অনেক করুণ।
তুহিন রানিকে নিয়ে পিছনের গেট পার হলো। এই গেটে তার লোকজন আছে। সজল এক্টা ভ্যানের আছে দাঁড়িয়ে ছিল তুহিনকে দেখেই এগিয়ে এসে ভ্যানের কাছে নিয়ে গেলো।ভ্যানে অনেক মহিলা বসে আছে। রানি বোরকা পরিহিত অবস্থায় ফারহানা কে দেখলো রনিকে কোলে নিয়ে বসে আছে।সে দৌড়ে গিয়ে জডিয়ে ধরলো তাদের। ফারহানা রানিকে জিজ্ঞেস করলো –
“চারু কই রানি?”
তুহিন এগিয়ে এসে বললো-
“চারু রবিনের সাথে আছে।আর কিছুক্ষনের মাঝে ওরাও আইসা পড়ব। তোমরা যাও।”
বলেই রানিকে ফারহানার পাশে বসিয়ে দিল।রানি কান্না করে দিয়ে বললো-
“আমি ভাইয়া আর চারুরে ছাড়া যাব না।”
ফারহানা আর রনিও তাল মিলালো রানির সাথে।তারাও চারু আর রবিন কে রেখে যাবে না।তুহিন গলার স্বর নামিয়ে বললো –
“আমি থাকতে চারু আর রবিনের কিছু হইত না।তোমরা যাও, নয়ত আরো বিপদ বাড়ব।”
তুহিন ভ্যান ওয়ালাকে তাড়া দিলো। সজল উঠে বসলো ভ্যানে। ওদের সবার দায়িত্ব সজলের কাছে দিয়ে তুহিন মেলার দিকে দৌড় দিলো। ভ্যান ছেড়ে দিলো। রানি কান্না ভেজা চোখে তুহিনের দৌড়ে যাওয়া দেখলো।সে মনের কোণে তুহিনের জন্য কিছুটা চিন্তা অনুভব করলো।
রবিন চারুকে নিয়ে দৌড়ে মেলার গেটের বাইরে আসলো। পিছনে কতগুলো ছেলে দৌড়ে আসছে আক্রমণ করতে। লিমনের একার পক্ষে সবাইকে আটকে রাখা সম্ভব হয় নি। মেলার বাইরে এসেই তুহিনের মুখোমুখি হলো। সে জানে আজ যা হচ্ছে তুহিনের বাবার আদেশেই হচ্ছে। কিন্তু সে এটাও জানে তুহিন ক্ষতি করবে না। সে জিজ্ঞেস করলো-
“রানি কই? ”
“রানি, ফারহানা, রনি রে আমি সজলের সাথে পাঠায় দিছি।ওরা নিরাপদেই তালুলদার বাড়ি চইলা যাইব।”
তারপর একটা সাইকেল দেখিয়ে বলল-
“তুই চারুরের নিয়া যা। ক্ষেতের মাঝখান দিয়া যা, তাড়াতাড়ি হইব।আমি এই দিক টা দেখতাছি।”
রবিন চলে যেতে নিয়ে ঘুরে তাকালো। তুহিনের কাঁধে হাত রেখে বলল-
“তোর এই উপকারের কথা আমি কোনোদিন ভুলব না।”
তুহিন রবিনের কাঁধ চাপড়ে দিয়ে বলল-
“তাড়াতাড়ি যা।দেরি করিস না।”
রবিন সাইকেলে উঠে বসল।চারুকে পিছনের সিটে বসিয়ে সাইকেলে প্যাডেল মারল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। দুই দলের লোকেরা এখন মারা*মারিতে জড়িয়ে যাবে।অনেক বড় হাংগামা হবে। চারু আছে তার সাথে, সে নিজেও আহত। এইখানে থাকা মানে আরো বড় বিপদ। সে ক্লান্ত শরিরে আহত হাত নিয়ে সাইকেলে টান দিয়ে রাস্তা থেকে মাঠে নেমে পড়ল।
শাখাওয়াত তালুকদার লোকবলসহ মেলার গেটে এসে গাড়ি থেকে নামলেন। গেট দিয়ে ঢুকতেই তার মাথা ঘুরে গেলো।চারপাশে মারা*মারি, র*ক্তার*ক্তি অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে তার পরিবারের মানুষগুলা কোথায় আছে? কি করছে? তিনি আর ভাবতে পারলেন না। তার বুকের ভেতর টা কাঁপছে। তিনি তার সাথের লোকজন নিয়ে সামনে আগালেন। একটু আগাতেই দেখলেন লিমনকে। এক জনের কাঁধে ভর দিয়ে এদিকেই আসছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে তার শরির। গু*লি লেগেছে তার পায়ে, শরিরের বিভিন্ন জায়গায় রাম*দার কোপ ও পড়েছে। শাখাওয়াত তালুকদার ছুটে গেলেন সেদিকে। লিমনের দিকে প্রশ্ন ছুড়লেন-
“লিমন রবিন কই? রানি চারু ওরা সবাই কই?”
“ওরা সবাই নিরাপদে আছে কাকা। মেলার পিছনের গেট দিয়া রবিন ভাই সবাইরে নিয়া বাইর হইয়া গেছে।”
শাখাওয়াত তালুকদার তাড়াতাড়ি লিমনকে নিয়ে যেতে বললেন। তার চিকিৎসা দরকার। কিছুক্ষন পরেই জামশেদ মজুমদারের গাড়ি এসে থামলো মেলায়। তখন মারা*মারি অনেকটাই কমে এসেছে। দুই দলের লোক ই আহত অবস্থায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। শাখাওয়াত তালুকদার মুখোমুখি হলেন জামশেদ মজুমদারের।
__________
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে অনেক আগেই। রোদ পড়ে এসেছে। চারদিকে একটা ক্লান্ত ক্লান্ত পরিবেশ । সেই পরিবেশে আওয়াজ তুলে মাঠের মাঝখান দিয়ে ছুটে যাচ্ছে একটা সাইকেল। সামনে চালকের আসনে বসা একটি আহত যুবক । পিছনে বসা ষোড়শী কিশোরীটি আকড়ে ধরে আছে যুবকটির কোমড়ের শার্ট। যুবকটির হাতের ক্ষত স্থানটি কিশোরীর ওড়নার ছেড়া অংশ দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। র*ক্ত বন্ধ হলেও পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয় নি। এখনো হালকা র*ক্ত চুইয়্র চুইয়ে পড়ছে। এমন পরিবেশে দুটি ছেলেমেয়ের এমন সাইকেল ভ্রমন রোমাঞ্চকর হতে পারতো কিন্তু এখন তা দুজনের জন্য একটি ভয়ংকর দিনের সাক্ষী হয়ে গেলো।
রবিনের সারা শরির ভেংগে আসছে। যতবার সাইকেলে প্যাডেল দিচ্ছে ততবার ই শরিরে যন্ত্রনার স্রোত বয়ে যাচ্ছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। কিন্তু তার থামলে চলবে না।পিছনে দূর থেকে অনেকগুলো বাইকের শব্দ ভেসে আসছে। তার থামলে চলবে না।তার নিজের জন্য চিন্তা নেই, কিন্তু চারু আছে তার সাথে। তার কিছু হয়ে গেলে এই নির্জন জংগলের মাঠে অসম্মানিত হবে চারু। সে সাইকেল টা জংগলের দিকে নিয়ে গেলো।জংগলের কাছে গিয়ে নেমে পড়লো। চারুকে নামিয়ে দিয়ে সাইকেল রেখে চারুর হাত ধরে জংগলে প্রবেশ করলো।
চারুর ভয় অনেকটাই কমে এসেছে। যত সময় ধরে সাইকেলে রবিনের পিছনে বসে ছিলো ততক্ষন অন্যরকম এক ভালো লাগা মনে জায়গা করে নিয়েছিলো।তার মনে হচ্ছিল এমন করে সারাজীবন তারা সাইকেলে ঘুরে বেড়ালে কেমন হয়?
রবিন চারুর হাত ধরে জংগলের একটু ভিতরে ঢুকে একটা ঝোপের পাশে লুকালো। দুজনেই ঝোপের আড়ালে বসে পড়লো। নজর রাখলো জংগলের বাইরে মাঠের দিকে। মিনিট দশেক পরেই চার- পাঁচ টা বাইক এসে থামলো জংগলের কাছ ঘেষে। বাইক থেকে নেমে দাঁড়ালো একদল ছেলে। প্রত্যেকের হাতেই অ*স্ত্র। তারা আশেপাশে তাকিয়ে রবিন আর চারুকে খুজলো। একটু সামনে এগিয়ে রবিনের সাইকেল টা পেলো জংগলের পাশে। দলের নেতা গোছের ছেলেটা সবাইকে জংগলে ঢুকতে আদেশ করলো।
রবিন ঝোপের আড়াল থেকে বুঝলো অবস্থা সুবিধার না।ছেলেগুলো জংগলে ঢুকে ওদের কে খুজলেই পেয়ে যাবে। সে চারুর হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। জংগল টা পেরোলেই ওদের গ্রাম। সে চারুকে টেনে ক্লান্ত শরিরে ই দৌড়াতে লাগলো।
ছেলেগুলো জংগলে ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে খুজলো। হুট করে একজনের চোখ গেল নিচে মাটির দিকে। সেখানে ফোটা ফোটা রক্ত। সেই রক্তের দাগ ধরে তারা ঝোপের কাছে এলো। সেখানেও অনেকখানি রক্ত পড়ে থাকতে দেখলো। ঝোপ ছাড়িয়ে সাম্নের দিকে আরো রক্তের ফোঁটা দেখলো।তারা বুঝে গেল যে রবিন আর চারু এই পথেই গিয়েছে। তারাও ছুটে গেল সেদিকে।
রবিন চারুকে নিয়ে ছুটছে প্রাণপণে। চারু বার বার পড়ে যাচ্ছে, রবিন টেনে তুলছে তাকে। দুজনের ই বিধ্বস্ত অবস্থা। রবিন একটু থেমে একটা গাছের সাথে এক হাত ঠেকিয়ে বড় বড় দম নিয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে চারুর দিকে চাইলো। মেয়েটা কাতর চোখে চেয়ে আছে তার দিকে। রবিন বড় একটা দম নিয়ে আবারো ছুটে চললো সাম্নের দিকে।যে করেই হোক এই জংগল পার হতে হবে।
আরো অনেকটা ছুটার পর আহত রবিন হাঁটু ভেংগে মাটিতে পড়ে গেলো। চারু রবিনকে আগলে ধরে কেঁদে দিলো। একটা গাছের গায়ে হেলান দিয়ে বসালো রবিনকে। হাতের ক্ষত থেকে রক্ত ঝড়ছে অবিরাম। ঘামে র*ক্তে ভিজে আছে শ্যাম মুখখানা। শেষ বিকেলের আলোতে রবিনকে চারুর মায়াবী কোনো রাজপুত্র মনে হলো যে কিনা যুদ্ধে আহত হয়ে জীবনবাজি রেখে ছুটছে চারুকে রক্ষা করতে। চারু মৃদুভাবে ডাকলো-
“রবিন ভাই।”
রবিন চোখ খুলে তাকালো। চোখের সামনে ভাসলো চারুর কান্নারত মুখ। রবিন শুকনো ঢোক গিললো। তৃষ্ঞায় তার বুক ফেটে যাচ্ছে। সারা শরির যন্ত্রনায় মুচড়ে উঠছে। রবিন উঠে দাঁড়াতে চাইলো কিন্তু পারলো না। চারদিকে সন্ধ্যা নামছে। অন্ধকার হয়ে এলে ওদের জীবনেও অন্ধকার নেমে আসবে। সে চারুকে ডাকলো –
“চারু।”
চারু এগিয়ে আসলো। বলল-
“বলো রবিন ভাই।”
রবিন হাত তুলে আংগুল ইশারা করে সাম্নের দিকে দেখালো। মুখে বললো –
“এই সোজা বরাবর সাম্নের দিকে আর কিছুক্ষন গেলেই গ্রামের রাস্তা। তুই দৌড়াতে পারবি না?”
“পারব। তুমি উঠো।আমি তোমারে ধইরা নিয়া যাইতে পারবাম।”
রবিন পা ছড়িয়ে শরির ছেড়ে দিয়ে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসলো।বলল-
” আমার পক্ষে আর যাওয়া সম্ভব না চারু। তোর একাই বাকি রাস্তা যাওয়া লাগব।”
চারু ডুকরে কেঁদে উঠলো। দুইপাশে মাথা নেড়ে বলল-
“আমি তোমারে ছাড়া যাইতাম না। আমি তোমার সাথে এইনেই থাকবাম।”
” অবুঝ হইস না চারু। আমার কথা শোন। অনেক জোরে দৌড়াবি। সোজা, নাক বরাবর।”
চারু রবিনের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো। হাউ মাউ করে কেঁদে ফেললো। রবিনের শার্ট আকড়ে ধরলো সে। সে কিছুতেই যাবে না রবিনকে ছেড়ে। রবিন মৃদু হাসলো। প্রকৃতিতে সন্ধ্যা নেমেছে, পিছনে অস্ত্রধারী শত্রু আর এখানে আহত সে এক কান্নারত অবুঝ বালিকাকে বুকে নিয়ে অন্ধকার জংগলে বসে আছে। কি রোমাঞ্চকর!!!
চলবে