#প্রেম_প্রার্থনা
#তামান্না_আঁখি
পর্ব-৫
” তুই ও ত চারুরে কত মারছস। তখন খারাপ লাগে নাই?”
মায়ের কথায় রবিন চোখ খুলল।বলল-
“বাপের কাছ থাইকা মার খাওয়া আর আমার কাছ থেকে মার খাওয়া কি এক? চারু তার বাপ রে খুব ভালবাসে।”
রুবিনা বেগম ছেলের কথা শুনে আবারো হাসলেন। হেসে বললেন-
“শোন বাপ, মেয়েরা সবার কাছ থেকে আঘাত সহ্য কর্তে পারে। কিন্তু নিজের বাপ আর স্বামীর কাছ থেকে কোনো আঘাত ই সহ্য করতে পারে না। হোক সেটা শারীরিক বা মানসিক।”
রবিন তার মায়ের দিকে পাশ ফিরে তাকাল। তারপর আচমকা প্রশ্ন করল-
“তোমারে কি বাবা কোনোদিন মারছে মা?”
রুবিনা বেগম প্রশ্ন শুনে থতমত খেলেন। এই পাগল ছেলে কিসব প্রশ্ন করছে।
“এসব কি কস পাগল ছেলে।”
রবিন উঠে বসল।মায়ের হাত ধরে বলল–
“নানা বেচে থাকলে ত তোমারে জিগাইত তোমার সংসার নিয়া। তুমি ত আমারে বাপ ডাকো মা। আমারে কও ? ”
রবিনের কর্মকান্ডে হাসি পেল রুবিনার। আজকের ঘটনা তার শক্ত খোলসের ছেলের নরম মনে দাগ কেটেছে। তিনি তার ছেলের হাত ধরে বললেন–
“না রে বাপ। তোর বাবা আমারে অনেক ভালবাসে। গায়ে হাত তুলার প্রশ্ন ই আসে না।”
তখনি বসার ঘরে ঢুকছিলেন শাখাওয়াত তালুকদার। নিজের স্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে উনি হা হয়ে গেলেন। গায়ে হাত তুলবেন মানে? এই প্রসংগ কই থেকে আসল। তিনি ঘরে ঢুকে সোফায় বসতে বসতে বললেন-
“মা ছেলে মিল্লা আমার নামে কিসব অপবাদ দিতাছো?”
রুবিনা আর রবিন দুইজনেই তার দিকে তাকাল। রুবিনা হাসি ধরে রেখেই বলল-
“তোমার পাগল ছেলে আমারে জিগায়তাছে তুমি ঠিক ঠাক আমার যত্ন নেও কিনা নাকি আমারে অত্যাচার কর।”
শাখাওয়াত তাচ্ছিল্য হেসে বললেন-
“হাহ!! অত্যাচারিত ত হইতাছি আমি। সেই প্রথম দিন থাইকাই। ”
তার পর রবিনের দিকে তাকিয়ে নিজের বুকে কয়েক বার হাত দিয়ে থাপড়ে বলল-
“আসল অত্যাচারিত আমি। তোমার বাপ শাখাওয়াত তালুকদার। নিজের ছেলে মেয়ে গুলার নাম গুলা পর্যন্ত নিজের নামের অক্ষরে রাখতে পারলাম না। আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা যে সৈয়দ বাড়ির মেয়েরে অত্যাচার করবাম।”
রবিন নীরব হয়ে বসে রইল। বাবার এসব কথায় তার বিশেষ উৎসাহ নেই। রুবিনা বেগম মুখ ঝামটা দিয়ে উঠে গিয়ে পানি এনে স্বামীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে আবারো মুখ ঝামটা দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলেন। স্ত্রীর কাছে দুই দুই বার মুখ ঝামটা খেয়ে আহত হলেন শাখাওয়াত তালুকদার। কি মেয়ে বিয়ে করলেন তিনি, তার জন্য মনে কোনো প্রেম নেই দরদ নেই। তিনি কত রোমান্টিক পুরুষ আর তার কিনা এমন বউ। সারাদিন পর বাড়ি ফিরেছে কোথায় প্রেমময় চোখে তার দিকে তাকাবে তা না মুখ ঝামটা দিল। তাও আবার দুই দুই বার। ছেলে টা হয়েছে মায়ের মত। রসকষহীন। ২২ বছর বয়সে এসেও তার মনে কোনো প্রেম নেই। আরে এমন সময়ে উনি কত রোমান্টিক ছিলেন। কত প্রেম কাব্য রচনা করেছেন আর তার ছেলে কিনা হল এমন। উলটা মেয়েদের দৌড়ানি দেয়। তিনি হতাশ ভাবে শ্বাস ফেললেন।
রবিন গলা খাকারি দিয়ে বাবার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করল। সফল ও হল। শাখাওয়াত তালুকদার ধ্যান ভেংগে তার দিকে তাকাল। রবিন দুই হাটুর উপর দুই হাত রেখে ঝুঁকে মাথা নিচু করে বলল–
“শাহীন্না রে আমার পছন্দ না। ওরে যেন আর দলে না দেখি। ”
শাখাওয়াত তালুকদারের মুখ চোখ কুচকে গেল। তিনি খ্যাক করে উঠলেন-
“শাহীন রে তাড়াইলে দলের কাজ করব কেডা? তোমারে ত কোনো কাজে পাওয়া যায় না। শহরে গিয়া পইড়া থাকো। বাপের রাজনীতির ত কোনো খবর রাখো না।”
“আমি শহরে এম্নে এম্নে থাকি না। পড়াশোনা করি।”
“চুপ করো। পড়াশোনা কি আমরা করসি না? তোমার দাদা ওই আমলের বি এ পাশ।। তারপর ও কি রাজনৈতিক জীবনে কোনো কমতি রাখছে? ”
“আমি গ্র্যাজুয়েশন কম্পলিট কইরা দলে ঢুকব ইন শা আল্লাহ।”
শাখাওয়াত তালুকদার কিছুটা শান্ত হলেন। কিন্তু দমে গেলেন না। তিনি শক্ত গলায় বলেন-
“শাহীন আমার কাজে লাগে। দলের জন্য একটা ছেলের দরকার। আর তুমি আজ যা করসো এখন আর নতুন কইরা ঝামেলা বাড়াইয়ো না।”
রবিন তার বাবার রাগের কারন বুঝলো। রাগ করলে তার বাবা তাকে তুমি করে ডাকে।। আজ দুপুরের দলের মিটিং এ সে অনেক পুরনো সদস্যদের সাথে তর্ক করেছে। তাদের দূর্নীতি র অনেক প্রমান তুলে ধরেছিল। শাখাওয়াত তালুকদারের পরে অনেক বেগ পেতে হয়েছে তাদের মন রক্ষা করতে। রবিন বসা থেকে উঠতে উঠতে বলল-
“আচ্ছা ঠিকাছে। তাহলে খেয়াল রাইখেন দলের ভাবমূর্তি যেন নষ্ট না হয়।”
বলেই সে দোতলায় তার ঘরে চলে গেল। শাখাওয়াত তালুকদার বিরস মুখেই ছেলের যাওয়া দেখলেন। মনে মনে ফোড়ন কাটলেন-
“হুহহ। দলের ভাবমূর্তি!! দলে যোগ দেস না আবার দলের ভাবমূর্তি নিয়া উপদেশ দেস। দাদার স্বভাব পাইছস হারা*জাদা। ”
__________
চারু দুরুদুরু বুকে ধীর পায়ে বারান্দা দিয়ে হেঁটে তার বড় বাবার ঘরের সামনে এসে দাঁড়াল। ঘরের দরজা লাগানো। চারু মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। ভেতরে ঢুকার সাহস হচ্ছে না তার। কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে সে দরজায় নক করল। ভেতর থেকে শব্দ এল-
“চারু? আয়।”
চারু দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল। শাহজাহান আলী আরামকেদারায় চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে শুয়ে আছেন। হাতের ইশারায় চারুকে কাছে ডাকলেন। চারু কাছে গিয়ে দাঁড়াল। শাহজাহান আলী চেয়ার দেখিয়ে বললেন
“বস”
চারু চেয়ারে বসল না। হাঁটু গেড়ে তার বড় বাবার পায়ের কাছে বসল। শাখাওয়াত আলী চোখ খুলে চারুর দিকে তাকালেন। বল্লেন-
“মন টা কি খারাপ মা?”
চারু মাথা নেড়ে জানাল তার মন খারাপ না।
“শরীরের ব্যথা কমছে?”
চারু শব্দ করল-
“হু”
“তরে আমি কেন মা ডাকি জানস?”
চারু দুই পাশে মাথা নেড়ে না জানাল। তার পর মাথা রাখল তার বড় বাবার উড়ুতে। শাখাওয়াত আলী চারুর মাথায় হাত বুলাতে লাগল। বললেন-
“আমার মায়ের নাম ছিল লতাবানু। অনেক দুঃখিনী ছিল আমার মা। ছোট ঘরের মেয়ে ছিল। এত বড় বাড়িতে বিয়ে হইছিল ঠিক ই কিন্তু দিন কাটছে অবহেলায়। ছোট ঘরের মেয়ে বইলা সবাই তারে কষ্ট দিত। সব সহ্য করত আমার মা। মা র পেটে যখন বাচ্চা আসল সবাই আশা কইরা ছিল একটা ছেলে হইব। কিন্তু সবার আশা ভঙ্গ কইরা জন্ম নিল মেয়ে সন্তান,আমার আপা। মায়ের কষ্ট কমার চেয়ে বাড়ল। আমার বাবা নিরুপায় ছিল। ভালবেসে বিয়ে কইরা আনছিল মা রে। কেউ মানতে চায় নাই। আমার দাদা বংশের সম্মানের কথা চিন্তা কইরা মাইনা নিছিল।”
চারুর চোখ থেকে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল শাহজাহান আলীর পাজামার উপর। তিনি আবার বলতে লাগলেন-
“তারপর জন্ম নিলাম আমি। আমার আপা আর আমি পিঠাপিঠি ভাই বোন। মা আমার নাম রাখল শাহজাহান। সম্রাট শাহজাহান এর নামের সাথে মিলায়া। আমি তার ছোট্ট রাজ্যের রাজা হইয়া জন্মাইলাম। আমার জন্মের পর মায়ের কিছু টা সুখ হইছিল কিন্তু বেশিদিন টিকে নাই। আমার দাদি ছোট ঘরের মেয়ে বইলা তারে কখনোই গ্রহন করে নাই। ”
চারু কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছে। কষ্টে তার বুক ভেঙ্গে আসছে। শাহজাহান আলী বলতে থাকলেন-
“একবার হইছে কি আমার বয়স তখন ৭,ইস্কুলে যাই। জামান তখন মায়ের পেটে। মা এর শরির খারাপ। সকাল থেকে বমি,কোনো খাওয়া নাই। বিকালের দিকে মা খাওয়ার জন্য ঘর থেকে বাইর হইল। কিন্তু রান্নাঘরে কোনো খাবার নাই। মা রান্নাঘরের পাশের ঘরে যেখানে চাল ডাল সব্জি রাখা হয় সেখানে গিয়া গুড় মুড়ি আনার সময় মুড়ির টিনে কাপড়ে মোড়ানো দুইটা সোনার বালা পাইল। সেই বালা জোড়া নিয়া দাদীর ঘরের দিকে রওয়ানা দিল। কিন্তু শরীর সায় দিল না, তাই আবার নিজের ঘরে ফিইরা গিয়া বালা জোড়া বালিশের নিচে রাইখা ঘুমায় গেল। ”
শাহজাহান আলীর গলা ধরে এল। তিনি দুই তিন বার গলা ঝাড়লেন-
“মা রে বালা জোড়া হাতে কইরা ঘরে ঢুকতে বাড়ির কাজের মহিলা দেইখা ফেললো। সে গিয়া আমার দাদীরে বলল। আমার মা তখনো দুর্বল শরীর নিয়া ঘরে ঘুমায়া আছে। সন্ধ্যায় বাড়ির সব পুরুষ ফিরলে আমার দাদী চিৎকার কইরা সবাইরে ঘটনা জানাইল। মা তখন সবে ঘুম থেকে উইঠা আমারে কোলে নিয়ে বসছে। দাদী আমার বাপ রে কি বুঝাইল জানি না। আমার বাপ আইসা আমারে টাইনা মা র কোল থাইকা নামাইয়া মা রে টাইনা সদর ঘরে নিয়া গেল। আমিও পিছু পিছু গেলাম। মা যাইতেই দাদী তেইড়া আইসা জিগাইল-
” আমার বালা জোড়া কই লুকাইছস ফকিন্নির ঝি? জনমে চৌক্ষে দেখস নাই এইসব?”
আমার মা যেন আকাশ থেকে পড়ল। পরে আবার তার মনে হইল বিকালে বালা জোড়া পাওয়ার কথা। সে কিছু কইব তার আগেই আমার দাদী কাজের মহিলা রে আদেশ করল মা র ঘর থাইকা বালা জোড়া আনতে। বালা জোড়া আইনা দাদীর হাতে দেয়া হইল। দাদী বালা জোড়া হাতে নিয়া বাবার দিকে তাকায় চিল্লায়া কইল-
“শেষে এক চুন্নিরে ঘরে তুলছস? আমার একমাত্র পোলা কি কামডা করল রে!”
দাদীর কান্না দেইখা আমার বাপ কিছু না জাইনাই আমার মা রে সবার সামনে চোর সাব্যস্ত কইরা চড় বসায়া দিল। আমার মা যতই সবাই রে বুঝাইতে চাইল যে সে বালা জোড়া ফিরত দিতে চাইছিল কেউই শুনল না, বুঝল না আমার মা রে।”
চারু কষ্ট করেও কান্না আটকাতে পারল না। ফুপিয়ে উঠল। শাহজাহান আলী চারুর মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। আবারো বললেন-
“আমি আমার মা রে অনেক বার কাঁদতে দেখছি কিন্তু ওইদিন কাঁদে নাই আমার মা। ওইদিনের পর থাইকা আর কোনো দিন ই কাঁদে নাই। ওইদিন ঘরে আইসা আমারে বুকে জড়ায়া কইছিল আমি মরলে এই বাড়ির ত্রিসীমানায় আমার কবর দিস না। তোর বাপের পাশেও না। আমার দাদী মরনের সময় আমার মা মোরগ জবাই কইরা খাইছিল। আমার বাপ মরার সময় ও মা রে কাঁদতে দেখি নাই। হয়ত অভিমান জমছিল। যারে ভালবাইসা ঘর বাঁধছিল সে ই কিনা অবিশ্বাস কইরা চোর অপবাদ দিল।
মা যেদিন মারা গেল আগের দিন ডাইকা আমারে কইল –
“তোর বাপের কবরের পাশে আমারে কবর দিস। আমার আলমারিতে কিছু গয়না আর টাকা আছে গয়না গুলা তোদের তিন ভাইয়ের বউ এর আর আমার ছেড়িডারে তোরা তিন ভাই গয়না গড়ায়া দিস। টাকা গুলা তোর বাপের জন্য সদকা দিস। মানুষটার কবরে যেন আল্লাহ রহমত দান করে। ”
ওইদিন বাবার প্রতি মা র ভালবাসা আমি টের পাইছিলাম।”
শাহজাহান আলী চারুর দিকে দেখলেন। চারু ফুপিয়ে কাঁদছে। কান্নার দাপটে শরির কাঁপছে। শাহজাহান আলী বললেন-
“তুই যেদিন জন্মাইলি ওইদিন আমি উঠানে রোদে বইসা ছিলাম। ডিসেম্বরের শীতের সকাল। তোরে কাঁথায় মুড়ায়া আইনা আমার কোলে দিল। তোর ছোট্ট মুখ টার দিকে তাকায়া মনে হইল আমি লতাবানুরে দেখতাছি।তখনি তর নাম রাখলাম চারুলতা। আমার আরেকটা মা তুই।”
চারু কান্না ভেজা চোখে তার বড় বাবা র দিকে মাথা তুলে তাকাল। শাহজাহান আলী সোজা হয়ে বসলেন। চারুর মাথায় হাত রেখেই বল্লেন-
“আমার এক মা যখন মার খাইল আমি উপস্থিত থাইকা কিছু করতে পারি নাই। আজকেও আমার সামনে আমার আরেক মা মার খাইল। আমি ফিরাইতে পারি নাই। আমারে মাফ কইরা দে মা।”
চারু তার বড় বাবার হাত মুঠোয় নিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে দিল। শাহজাহান আলী হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে দেখলেন চারুর কান্না। কেমন মাথা নেড়ে নেড়ে কাঁদছে। লতাবানুও ত এভাবেই কাঁদত।
সাজেদা খাতুন স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে আসছিলেন। দরজায় আসতেই চাচা ভাতিজির কান্ড দেখে তিনি স্তব্ধ হয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে গেলেন।
——–
রাত দুইটা বাজে। চারুর গা কাঁপিয়ে জ্বর এল। ডাক্তার ডেকে ওষুধ খাওয়ানো হল তাকে। রাজিয়া বেগম বকলেন কিছুক্ষন। ভর সন্ধ্যাবেলায় এত গুলো আইস্ক্রিম খাওয়ার কি দরকার ছিল। শাহজাহান আলী চারুর ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাজেদা বেগম জোর করে তাকে ঘরে পাঠালেন। এখন চারুর মাথায় জল পট্টি দিচ্ছেন রাজিয়া বেগম। চারুর পা দুটো কোলে নিয়ে সরিষার তেল ডলছেন সাজেদা বেগম। ফারহানা চেয়ারে বসে নাক কুচকে তাকিয়ে আছে চারুর দিকে। কি বেয়াদব মেয়ে! এত করে বলল একটা আইস্ক্রিম খেয়ে বাকি গুলা ফ্রিজে তুলে রাখি, কিছুতেই শুনল না। তাকে আর রনি কে দুটো দিয়ে সব গুলো খেল। আর এখন জ্বর বাধাইল। বেয়ান্তাইজ্জা মেয়ে!!
মাঝ রাতে চারুর ঘরের দরজা টা ক্যাঁচ শব্দ করে আস্তে আস্তে খুলে গেল। চারু ঘুমিয়ে গেছে তাই সাজেদা বেগম চলে গিয়েছিলেন। রাজিয়া বেগম চারুর সাথেই ঘুমিয়েছিলেন। এখন উঠে বাথরুমে গিয়েছেন।
চারু আধবোজা চোখে তাকাল দরজার দিকে। বাইরের আধো আলোতে একটা পুরুষ অবয়ব দেখল। অবয়বটি তার চেনা লাগছে। আস্তে আস্তে অবয়বটি হেটে এসে চেয়ার নিয়ে তার বিছানার পাশে বসল। গায়ের কড়া গন্ধ এসে চারুর নাকে ধাক্কা খেল। নিমিষেই সে অচেনা আগন্তুক কে চিনে ফেলল। একটু পরে খসখসে পুরুষালি হাতের ছোয়া টের পেল কপালে। চারু কিছু বলতে চাইল পারল না।জ্বরের ঘোর নিয়েই সে চেয়ে রইল। আগন্তুক টি তার জ্বরে তপ্ত হওয়া হাত টি নিয়ে বুকে চেপে ধরল।
চলবে