অরুর_সংসার #পর্ব-৬ #লেখিকা-নিশিকথা

0
622

#অরুর_সংসার
#পর্ব-৬
#লেখিকা-নিশিকথা
_________________

অয়ন : মাথা টা খুব ব্যাথা করছে ” চেপে দেও তো
(অরু অবাক)
অয়ন: কি হল?? দেও
(অরু কাপা কাপা হাতে অয়নের মাথায় হাত দিল। চেপে দিচ্ছে ধীরে ধীরে .. আর অয়নের চোখ বন্ধ)
(এরকম আধা ঘন্টা যাওয়ার পর হঠাৎ অয়ন চোখ খুলে তাকালো অরুর দিকে একটা নেশা ভরা চোখে)
অয়ন: হয়েছে আর লাগবে না।কিছুটা রিলিফ লাগছে! আর বাকিটা…..
(অয়ন উঠে বসে অরুর ২গাল ২হাত দিয়ে টাচ করলো….তারপর হুট করে অরুর ঠোটে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিল )
(অরুর চোখ বড়বড় হয়ে গেল )
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
কলিং বেলের আওয়াজে ঘোর কাটলো অয়নের। অরু চোখ কুচকে আছে এখনো! অয়ন হেসে দিল… … … বলল….
অয়ন : আর বাকিটা এই এখন হল..yeah now i feel relief….
(অরু এবার চোখ খুলে মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে)
অয়ন : এই তুমি কিস করতে পারো বা কেন? কেমন করে ঠোট শক্ত করে রাখো!! সব সময় আমি ই দিব নাকি! তুমি আমাকে দিবা না?
অরু: কি??? কি দিব?
অয়ন: (এক ভ্রু উচু করে তাকিয়ে আছে এবার) তোমার মাথা
অরু: (আবার মাথা নিচু করে আছে) মনে হয় বাবা এসেছেন
অয়ন: এসেছেন না এসেছে! অহন এসেছে। যাও দেখে আসো………
অরু দ্রুত উঠে যেতে নিলে অয়ন আবার বলল…
অয়ন: আরেহ ! বেশ দ্রুত হাটতে পারো তো!! আমি তো ভাবছিলাম তোমার পা সবসময় বরফের মত জমে থাকে তাই অত আস্তে হাটো! কিন্তু নাহ!!! আমার কাছে আসতে গেলেই হাতা দ্রুত হয় না শুধু !!!!!!!!
(অরু আর দেরী না করে এক প্রকার দৌড়ে চলে গেল রুম থেকে )
(অয়ন আবার আগের মত শুয়ে চোখ বন্ধ করে থাকলো)
(অরু নিজে নিজের গাল দুটো দুই হাত দিয়ে চেপে নিচে নামছে…কেমন টমেটোর মত লাল হয়ে আছে!!নিচে নেমে দেখলো অহনা নয় বরং আরেকটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে, সাথে একটা ছোট মেয়ে)
সেলিনা বুয়া দরজা খুলে বলল….
সেলিনা : বড় আম্মা যে! কিরাম আছ??? আরে রুশা মা আহো আহো!!
(অরু এবার বুঝলো এটা তার বড় ননদ! মুখে প্রসস্থ হাসি নিয়ে দোড়ে গেল নিচে )
অরু : আসসালামুআলাইকুম আপু! কেমন আছেন?
আরোহী : এইতো! কি খবর?
অরু : ভাল
(হাই! কি নাম। তোমার)
রুশা : লুশা
আরোহী : রুশা
সবাই সোফার ঘরে বসলো!
(আরোহীর মন যে কত খারাপ সেটা যে শুধু আরোহী ই জানে! আজ তার সব থেকে প্রিয় মানুষ টা যে তার গায়ে হাত তুলেছে!..খুব কাঁদতে ইচ্ছা হচ্ছে তার.. কিন্তু উপায় নেই ! এই বাসায় সবাই যে বুঝে যাবে তাহলে!! )
(অরু যে বাসায় নতুন তাই তো সে বুঝতে পারে নি যে আরোহীর *ভাল আছি* কথা টা যে পুরোপুরি মিথ্যা!! “”আরোহী যে ভাল নেই এটা এখনো অরুর অবুঝ মন যে বোঝে নি..আরোহী যে কত চঞ্চল তাও তো জানেনা অরু …অরু তো সেই থেকে রুশার সাথে খেলা করতে ব্যস্ত…………….. )
(আরোহীর আজ দুপুর থেকে খাওয়া হয় নি… এখন খুব দুর্বল লাগছে… )

আরোহী : অরু।।।। কি রান্না হয়েছিল আজ দুপুরে ??
অরু : সেটা তো জানিনা আপু!
আরোহী : মানে? খাওনি তুমি দুপুরে??????
অরু: মাথা নাড়িয়ে না বলল……
আরোহী সেই মিনু,সেলিনাকে ডাকলো

অরু: আপু মানে আমি ই ঘুমায় গেসিলাম।
আরোহী : থাক আর খালাদের হয় সাফাই গাইতে হবে না।আমার ভাল জানা আছে উনাদের স্বভাব….

খালা নিতুন একজন মানুষ বাসায় আছে ভুলেই গেছেন বুঝি! কেন এমন করেন আপনারা? এতদিনের কথা নয় আলাদা ছিল যে বাবা, ভাইয়া আর বোনু বাইরে থাকতো বলে দুপুরে তেমন রান্নাবান্না হত না বাসায়! কিন্তু এখন থেকে নেক্সট যেন এমন না হয়! এখন দ্রুত খাবার দেন আমাদের।

অরু ভাইয়া আজ ও অফিসে গেছে তাই না?

অরু: গিয়েছিলেন কিন্তু ফিরে এসেছেন
আরোহী : তাই? ভাইয়া বাসায়?? আসছি আমি
(বলে আরোহী দৌড়ে উপরে অয়নের রুমে হেল)(অরু এদিকে রুশার সাথে খেলায় মগ্ন! রুশাও যেন অরুকে পেয়ে সেই খুশি। বান্ধুবি বানিয়ে নিয়েছে রুশা অরুকে )

দরজা খোকার শাব্দে অয়ন চোখ খুলে তাকালো…..
আরোহী ভাই এর কাছে যেয়ে বসলো
আরোহী : কেমন আছিস ভাইয়া?
অয়ন: ভালই। কি হয়েছে কেঁদেছিস কেন?
আরোহী : কই? ;
অয়ন : বল কি হয়েছে?
আরোহী : না তো । কে বলেছে?
অয়ন : বুঝি
আরোহী : বেশি বুঝিস তুই ভাইয়া! আচ্ছা অরু যে দুপুর থেকে না খেয়ে আছে!! ওকে খেতে বলিস নি কেন?
অয়ন: না খাওয়া নাকি? জানতাম না।না খেয়ে থাকার কি আছে?
আরোহী : ও কি ইচ্ছা করে না খেয়ে আছে? জানিস না খালা রা কিরকম?!
অয়ন: হুম! খালাদের সংসার তো এটা না…এটা অরুর সংসার! ওকেই সামলাতে হবে।
আরোহী : ও বাসায় নতুন ভাইয়া। সব বুঝতে সময় লাগবে…….
অয়ন: হুম
আরোহী : চল! একসাথে খাবো!
অয়ন : এখন খাবো না।বাবা, অহন আসুক খাবো! তুমি অরুকে নিয়ে খেয়ে নেও।
(আরোহী চলে যেতে নিলে অয়ন বলল……)
অয়ন: বোনু…?? অনিক আসে নি কেন?
(অনিকের কথা শুনে আরোহীর চোখে পানি চলে এলো….. অয়নের দিকে না ফিরেই বলল….)
আরোহী : কাল আসবে। আজ অফিসে কাজ ছিল
অয়ন : আর রুশা?
আরোহী : নিচে। অরুর সাথে খেলছে
অয়ন: আচ্ছা যা আমি আসছি।
(আরোহী বের হতে হতে চোখের পানি মুছে নিল)(অয়ন ঠিক ই বুঝতে পেরেছে যে আরোহী কাঁদছে, ওর ভারী গলা শুনে বুঝেছে…আরোহীর মনিল চেহারাটা অয়নের চোখ এড়ায় নি… তার বোনু টা তো আগের মত প্রাণচঞ্চল নেই! জানতে হবে অয়নের সবটা… )(অয়ন দ্রুত পায়ে গেল বাইরে, আরোহীর সাথে একসাথে নামল। ২জনে নেমে দেখে রুশা অরুর কলে ঘুমিয়ে পড়েছে)
আরোহী কিছু বলতে গেলে অরু হাত দিয়ে হুশশশ ইশারা করলো!
বলল ঘুমাক আপু…আমি ওকে খাইয়ে দিয়েছি

আরোহী হাসলো
অয়ন সিঁড়ি তে দাড়িয়ে অরুকে দেখছে । তারপর কাছে যেয়ে , অরুর কোল থেকে রুশাকে কোলে নিয়ে উপরে চলে গেল…

আরোহী : চল অরু খেয়ে নি আমরা(২ জনে খেতে বসলো)

রাতে অহনা আর বাবা বাসায় ফিরে এলে অয়ন নিচে খেতে এল।
খাবার টেবিলে…..
বাবা :অয়ন বিয়ে টা যে তারাহুরায় হল! পরশু বৌভাত কি ঠিক হবে? নাকি আরো ৪,৫ দিন পিছাবো ? কেউ ই তো তেমন জানে না! ইনফাক্ট তোমার হাসপাতালেও কেউ জানে না! কার্ড করতে তো সময় লাগবে….
অহনা: বাপী কার্ড এর ঝামেলা করার কি আছে? আর কার্ড এর সিস্টেম ওল্ড ফ্যাশান ওও!! দরকার নেই।ইমেইল করলেই তো হয়ে যায়!!
অয়ন: হা বাবা অহন ঠিক বলেছে। আমি আমার বন্ধুদের আর হসপিটালের সবাইকে ইমেইল করে ইনভাইট করে দিব রাতে
অহনা : আমি আমার ফ্রেন্ডদের আর কাজিনদের
বাবা:আমি আত্বীয়স্বজনদের ইমেইল করে দিব তাহলে
অয়ন: বাবা অনিককে আর ওর পরিবারকে ফোন করে বলবে শুধু
বাবা:আচ্ছা
/
//
///
//
/
খাওয়া শেষে সবাই যে যার রুমে চলে গেল। আরোহী আর রুশা আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
অরু ওদের রুমে পানি রেখে রুমে এসে দেখলো অয়ন লেপটপে কাজ করছে! অরুর খুব ভয় করছে! আজ কি হবে?? অয়ন…. অরু নিজের শাড়ির আঁচল হাতে দিয়ে পেঁচাচ্ছে আর খুলছে…
আবার পেঁচাচ্ছে খুলছে! অয়ন কাজের ফাকে একবার অরুকে দেখে নিল।অরু ঠায় দাড়িয়ে আছে এখনো! এই দেখে অয়ন বলল…….
অয়ন: কি অভাবে বোকার মত দাড়িয়ে আছো কেন?

(অরু সাথেসাথে ওয়াশরুমে দৌড়……. )
অয়ন অরুর এই কাণ্ড দেখে বোল্ড!!!
অয়ন কিছুক্ষন অরুর যাওয়ার দিক তাকিয়ে থেকে আবার কাজে মন দিল।।।।।
ইমেইল এ কার্ড সিলেক্ট করে পাঠিয়েছে অহনা।সেটাই ইমেইল করবে এখন অয়ন নিজের ফ্রেন্ড + হাসপাতাল এর সবাইকে!!!
<এখন আমার পাঠকেরা বলেন অয়নের এই ইমেইল টা যখন জয়ার কাছে পৌছোবে তখন কি হবে?????জয়া কি করবে .... >

অয়ন যেই না প্রত্যকের ইমেইলে একসাথে নিমন্ত্রণ এর কার্ড সেট করে সেন্ড দিল সেই সময়ই অরু ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে বের হল।
অয়ন চোখ তুলে তাকাতেই ফ্রিজেড হয়ে গেল।।।।।।।।অরুকে দেখলে অয়নের মাথা ঠিক থাকে না।কামনা জাগে খুব হারে…. কামনার তারনা মাথায় চেপে বসে অয়নের! না আর কোন মেয়েকে দেখলে অয়নের এই ফিল আসে না। অয়নের কামনার একমাত্র সূত্র অরু।
হ্যা এখন ই সময়, এখন অয়নের আবার অরুকে চাই একান্ত নিজের করে।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥
অরু চুপ করে যেয়ে খাটে বসলো!
অয়ন: অরু
অরু : জ্বি।।।।
অয়ন : এদিকে এসো
অরু : …….. ……..
অয়ন : কি হল??? এসো…
♦অরু ধীর পায়ে অয়নের কাছে গেল♦
♦অয়ন লেপটপ টা সাইডে রেখে অরুর হাত ধরে টানা দিয়ে নিজের কোলে বসালো.. ♦

অয়ন: তুমি আমাকে দেখে বা আমার কাছে আসলে এত ভয় পাও কেন ??
অরু : …………
♦অয়ন অরুকে কোলে করে উঠে দারালো… অরুকে নিয়ে বিছানায় দুকে আগালো … … ♦
♥♥♥♥
♥♥♥♥
♥♥♥♥
♥♥♥♥

/
//
///
//
/
ডিনার শেষ করে নিজের রুমে গেল জয়া! মন টা এমনি ই ভাল না,অয়নের সাথে আজ সময় পায় নি সে… গত ৩ দিন ধরে কিছুই যেন ঠিক হচ্ছে না তার জীবনে!কেমন একটা ভয় লাগছে তার! কিসের ভয় সেটা জয়ার নিজের ই জানা নেই… কিন্তু লাগছে… খুব ভয় লাগছে….
রুমি গিয়ে বিছানায় শরীরে এলিয়ে দিল জয়া! ১৫ মিনিটের ন্যাপ নেবার পর চোখ খিললো! একটা প্রেগন্যান্সি কেস এর ব্যাপারে একটু স্টাডি করা লাগবে তার এখন তাই লেপটপ আর ফাইল নিয়ে বসলো জয়া। লাপটপ অপেন করতেই দেখলো ৫০+ ইমেইল। চেক করতে লাগলো হয়া। ২০টা ইমেইলের নিচে যেতেই একটা জায়গায় চোখ আটকে গেল জয়ার!
বিশ্বাস হচ্ছে না জয়ার!।।।।

অয়নের ইমেইল।।।।।।।

চলবে………

Next part পড়ার জন্য আমাকে Follow দিয়ে রাখুন সবাই,
তাছাড়া Next Part খুঁজে পাবেন না!💖💖

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here