#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_6
রাতে জিসান বাড়ি ফিরতেই সালিহা বেগম সব খুলে বলে ইশা যে সারাটা দিন ছাদে বসে আছে। এই কথাটা শুনে জিসানের মেজাজটা এক দম গরম হয়ে যায়।
–মা তুমি আমাকে এই কথাটা এখন বলছো আমাকে।
–তুই ফোন বাড়িতে রেখে গেছিস আর তোর অফিসের ফোনেও লাইন পাচ্ছিলাম না।
জিসান আর কিছু না বলেই দৌঁড়ে ছাদের উপরে উঠে দেখে ইশা হাটু ভাজ করে হাটুর উপরে দু হাত রেখে মুখ নিচু করে বসে আছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে নিচে পড়ে আছে ইশার চুল অনেক লম্বা কোমর ছাড়িয়ে একে বারে। যার কারণে মেঝেতে চুল লেগে আছে।
–এসব কি ইশা তুই সারাটা দিন নাকি এখানে ছিলি আর এভাবে এখানে বসে থাকার মানে কি? আমার উপর রা’গ করে নিজেকে কেন কষ্ট দিচ্ছিস তুই?
ইশা কোনো উত্তর দিছে না জিসানের কথায়! ইশা কোনো উত্তর না দেওয়াতে জিসানের রা’গটা যেন আরও বেড়ে যায়। এতো টুকু মেয়ের এতো জেদ।
–কি হলো আমি তোকে কিছু বলছি তো?
ইশার কোনো রেসপন্স না দেখে জিসান হাটু ভেঙ্গে ইশার সামনে বসে ইশাকে ছুতেই ইশার মাথাটা হেলে নিচে পড়ার আগেই সাথে সাথে জিসান মাথাটা ধরে ফেলে। জিসান ইশার এমন অবস্থা দেখে কিছুটা ভ’য় পেয়ে যায়। তাড়াতাড়ি করে ইশাকে কোলে তুলে নিয়ে জিসান নিজের ঘরে এনে ইশাকে শুয়েই দেয়।
ইশার এমন অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি করে ইশার কাছে আসে সবাই। সালিহা বেগম ইশার পাশে এসে বসে বলে।
–ইশা মা কি হয়েছে তোর?
সালিহা বেগম জিসান দিকে ফিরে বলেন।
–জিসান তাড়াতাড়ি ডক্টরকে কল কর।
জিসানও তাড়াতাড়ি করে ডক্টরকে কল করে আসতে বলে।
একটু পরেই ডক্টর চলে আসে আর ইশাকে চেকাপ করা শুরু করে। ফ্যামিলি ডক্টর হওয়ার জন্যই তাড়াতাড়ি করে চলে ডক্টর। ইশাকে চেক করে ডক্টর বলেন।
–আমি ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি একটু পরেই জ্ঞান ফিরে আসবে আর দুর্বলতার কারণে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তাই ওর খাওয়া দাওয়াতে একটু খেয়াল রাখতে হবে। আজকে মনে হয় একটু পানিও খায়নি তাই জ্ঞান ফিরতেই ওকে সুপ খাইয়ে দিবেন।
জিসান বলল।
–ওকে আঙ্গেল আমি খেয়াল রাখবো।
–ঠিক আছে আমি তাহলে আসি আর তেমন চিন্তা করার কারন নেই ভালো করে খাওয়া দাওয়া করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
–মা তুমি গিয়ে আসমাকে বলো ইশুর জন্য তাড়াতাড়ি করে সুপ বানাতে।
–তুই ডিনার করবি না…
–করবো আগে ইশুকে খাইয়ে নেই তারপর।
সালিহা বেগম জিসানের কাঁধে হাত রেখে বলেন।
–চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।
–হুম।
জিসা বলল।
–মা চলো আমারা নিচে যাই…
–হুম চল।
জিসান ইশার পাশে গিয়ে বসে ইশার হাত ধরে হাতের উপরে একটা কি’স করে। জিসান তো এমনটা চায় নি ইশাকে নিজের ভালবাসা দিয়ে সারা জীবন আগলে রাখতে চেয়েছিল কিন্তু এই অবুঝ মেয়েটা সেটা বুঝে না। জিসান মৃদু স্বরে বলে।
–কেন তুই বুঝতে চাইছিস না তোকে ছাড়া যে আমি বাচবো না। প্রথম দেখাতেই তোকে নিজের মনে জায়গা করে নিয়েছি। তোর কষ্ট যে আমি সহ্য করতে পারি না আর তুই যাকে ভালোবাসিস ওই রাহুল কু*রা বাচ্চা ও তোকে দিয়ে আমার সব কিছু কেঁড়ে নিতে চায়। তুই যখন এসব জানতে পারবি তখন তুই সবটা বুঝতে পারবি কে ঠিক আর কে ভুল।
জিসানের চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। জিসান আরও কিছুক্ষন ইশার পাশে বসে থাকে। আসমা দরজা নক ঘরে ডুকে বকে।
–ভাই জান ইশা আপার সুপ।
–এখানে রেখে যায়।
______
জিসান ফ্রেস হয়ে সোফাতে বসে ইশার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। প্রায় এক ঘন্টা পরে ইশার জ্ঞান ফিরে। সামনে দিকে তাকাতেই দেখে জিসান তার মুখোমুখি বসে আছে। ইশার জ্ঞান ফিরা দেখে জিসান তাড়াতাড়ি করে ইশার কাছে যায়। ইশা জিসানকে এক বার দেখে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।জিসান ইশাকে আস্তে আস্তে করে বসিয়ে দিয়ে বলে।
–কষ্ট হচ্ছে ইশু বেশি পানি খাবি দাঁড়া আমি পানি আনছি।
জিসান ইশাকে পানি দেয় ইশাও কোনো কথা না বলে এক টানে পানিটা খেয়ে নেয়। জিসান ইশার মুখের সামনে সুপটা ধরতেই ইশা মুখটা অন্য দিকে ফিরিয়ে নেয়। জিসান তা দেখে বলে।
–কি হলো খা।
–খাবো না আমি।
—কেন???
–এমনি।
–এমনি মানে কি সারাটা দিন কিছু খাস নাই তো এখন খাবি না কেন? একটু আগে তো জ্ঞান হারিয়ে ছিলি এখন কি আবার জ্ঞান হারানো ইচ্ছা আছে নাকি তোর।
–আমি জ্ঞান হারালে তোমার কি?
জিসান যথাসম্ভব নিজের রা’গটা কন্ট্রোল রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু মেয়েটা যেন উঠেপড়ে লেগেছে জিসানকে রাগানোর জন্য। জিসান চোখ বন্ধ করে জিরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলে।
–ইশা বেশি বকবক করিস না চুপচাপ খা বলছি আর তুই যদি না খেতে চাস তাহলে কিন্তু আমার জানা আছে তোকে কি করে খাওয়ানো যায়।
ইশা জিসানের কথা শুনে জলদি বলে।
–না না আমি খাবো। [যা হিটলার জোর করে মুখে টেলে দিবে এই সুপটা তার যে খেয়ে নেই পেটেও ক্ষুধা লেগেছে অনেক]
–গুড গার্ল হা কর।
জিসান ইশাকে খাইয়ে দিছে আর ইশাও চুপচাপ খাচ্ছে। খাওয়া শেষ হওয়ার পর জিসান বলে।
–শাড়িটা যে সকালে পড়েছিস এখনও তো চেইন্জ করিস নাই এখন চুপচাপ গিয়ে ফ্রেস হয়ে ঘুমাবি।
–হুম।
ইশাও বাধ্য মেয়ের মতো চলে যায় ফ্রেস হতে আর জিসান নিচে চলে যায় ডিনার করার জন্য। জিসান ডিনার করে ঘরে ডুকতেই ইশাকে দেখে একটা বড় ধরনের ক্রাস খায়।
#চলবে