#ভালোবাসার_ফোড়ন_২
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৩০
ক্লাস শেষ হবার পর বাইরে এসে দেখি নিতি দাঁড়িয়ে আছে। তার দুই পাশে টিনা আর আনিকা। দেখে মনে হচ্ছে আমার জন্য’ই অপেক্ষা করছিলো তারা। ইতি আমার হাত ধরে পাশ দিয়ে যেতে নেবো তখনই নিতি আমার হাত টা ধরে ফেলল। আমি চমকে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। কিছু একটা তো হবেই আজ মনে হচ্ছে। নিতি আমাকে টেনে নিয়ে গেল খালি ক্লাসরুমে। আমি খাবড়ে গেলাম। ইতি যদিও আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলো কিন্তু তারা তাকে আটকে দিল। টিনা তাকে ধরে বাইরে নিয়ে গেল।
আমি খালি ক্লাসরুমে একা দাঁড়ানো। ক্লাসরুমটা যে শুধু খালি তা না তার সাথে বদ্ধ! দিনের বেলায় ও পুরো অন্ধকার এই ক্লাসরুম। আনিকা ক্লাসরুমের লাইট জ্বালিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। নিতি হেটে আমার সামনে এসে দাঁড়াল। আমি একটা শুকনো ঢোক গিললাম। হুট করেই নিতি আমার হাত টা ধরে মুচরে দিয়ে বলে,
“সেদিন আহি তোমার এই হাত টা ধরে ছিলো না।
“আপু লাগছে আমার।
“লাগুক! দেখো কি কষ্ট হয়, তখন এর চেয়ে বেশি কষ্ট আমি পেয়েছিলাম।
“এটা কি আমার দোষ! আহিয়ান ধরেছে আমার হাত। আমি কি উনাকে বলেছিলাম আমার হাত ধরতে।
নিতি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকায়। অতঃপর আমার গাল দুটো চেপে ধরে বলে,
“ভালোই তো তর্ক করছিস দেখছি। তা এতোদিন কোথায়ও ছিল এসব। আগে তো কখনো বলিস নি একদিন আহিয়ান তো হাত টা ধরল আর এই সাহস পেয়ে গেলি।
খুব লাগছিল কিন্তু ছটফট করছিলাম না। কারন ছটফট করলেই ব্যাথা আরো লাগবে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথা শুনছি। নিতি একসময় বিরক্ত হয়ে আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিল। আমি মেঝেতে বসে পড়ে গেলাম। নিতি আনিকা কে বলল আমাকে দরজা বন্ধ করে চলে যেতে।
আমি উঠে দরজার কাছে যাবার আগেই দরজা বন্ধ করে দিল। আমি কিছুক্ষণ দরজা ধাক্কালাম আর চিৎকার দিলাম। কিছুতেই কিছু হলো না। পুরো ভার্সিটি এখন ছুটি মানুষ না থাকাই স্বাভাবিক। যা আছে তাও নিচতলায়। আমার আওয়াজ এখান থেকে না শুনতে পাওয়া অসম্ভব কিছু না। কিছুক্ষণ দরজা বাড়ি দিতে লাগলাম।
একসময় হাঁফিয়ে বসে পড়লাম। আচ্ছা ইতি কোথাও? সেও কি চলে গেল নাকি। আমি লেট হচ্ছি। টিউশনি তে যেতে হবে আজ দেরি করলে রিনু’র মা আমায় ছেড়ে কথা বলবে না। গলা শুকিয়ে আসছে। মজার ব্যাপার হলো এতো বড় ঘরে একা থাকতে আমার বিন্দুমাত্র ভয় লাগছে না। ভয় লাগছে শুধু রিনু’র মা কে।
ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে ঢক ঢক করে পানি খেলাম। হঠাৎ মনে হলো দরজার কাছে কেউ এলো। সে দরজা খুলছে। আমি নিজেকে সামলিয়ে দরজার দিকে তাকালাম। কে জানে এখন কয়টা বাজে। দেরি হয়ে গেলে সর্বনাশ করেছে।
দরজা খুলতেই আহিয়ান কে দেখতে পেলাম। তাকে দেখেই দৌড়ে তার কাছে গেলাম। সে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সেদিকে পাত্তা না দিয়ে তার হাত ধরলাম। মানে তার হাতের ঘড়ি দেখার জন্য। দেখলাম সময় বেশি নেই যেতে লাগবে ৪০ মিনিট আছে ২০ মিনিট। আমি তার মুখের দিকে একবার তাকালাম। অবাক হচ্ছে না বিরক্ত হচ্ছে বোঝা দায়। কিন্তু এখন বোঝাবোঝির সময় নেই। আমি কোন কথা না বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম। দ্রুত হাঁটছি। খানিকক্ষণ বাদেই টের পেলাম উনিও আমার পাশে পাশে হাঁটছেন। হাঁটতে হাঁটতে বাইরে এসে পড়লাম। দেখলাম ইতি আর আকাশ ভাইয়া কে একসাথে। দুজন”কেই বিচলিত লাগছে।
আমাকে দেখে তারা আমাকে জিজ্ঞেস করছে ঠিক আছি কি না। নিতি আমাকে কিছু বলেছি কি না। আমি স্বাভাবিক ভাবেই উওর দিলাম না। একবার তাকালাম আহিয়ান’র দিকে। সে শুধু তাকিয়েই আছে কিছু জিজ্ঞেস করছে না। এটা খুব অস্বাভাবিক! যেখানে সবার এতো কৌতুহল সেখানে কেন উনি এতো নিশ্চুপ বুঝতে পারছি না।
যত তাড়াতাড়ি পারি তাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম। হাঁটতে হাঁটতে মেইন রোডের কাছাকাছি চলে এসেছে। এই মেইন রোডের পর আরো ২০ মিনিট হাঁটা লাগবে কিন্তু আমি অনুমান করছি ১০ মিনিটের বেশি সময় আর নেই। যদিও এই সময়টা আমি অর্ণ কে পড়িয়ে বের হতাম কিন্তু এখন সবকিছুই উলোটপালোট হয়ে গেছে। সেটা আমার ক্লাসের জন্য’ই। সময় আবারো ঠিক করতে হবে। রাতের বেলায় মোটেও অর্ণ কে পড়ানো উচিত হবে না।
এসব ভাবতে ভাবতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি হঠাৎ করেই সামনে একটা বাইক এসে থামল। এটা যে আহিয়ান নিঃসন্দেহে সেটা আমি বলতে পারি। আহিয়ান আমাকে ইশারা করে বাইকে বসতে বলল। আমারো মনে হলো এটা বেশ ভালো হবে দ্রুত পৌঁছাতে পারব।
চড়ে গেলাম উনার বাইকে। উনি মোটামোটি ভালো গতিতেই গাড়ি চালাচ্ছে। আমি উনার ঘাড়ে দু হাত রাখলাম । উনাকে পথ বলছিলাম আমি। একবার ডানে একবার বামে। উনি এখনো কিছুই জিজ্ঞেস করে নি আমায়।
রিনুর বাসার সামনে এসে থেমে গেলেন। আমি হেলমেট টা রেখে একটা বলি,
“থ্যাংকু!
বলেই যেতে নিবো তখনই আহিয়ান আমার হাত টা ধরে ফেলল। আমি ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকালাম। উনি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন,
“এখনো ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড বাকি।
“হুম! তা কি জিজ্ঞেস করবেন? কেন আপনার ঘড়ি থেকে এতো তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলাম, নাকি নিতি কি বলেছে এইসব। যদি এইসব’ই হয় তাহলে..
বলার আগেই উনি নিজের হেলমেট খুলে বললেন,
“আমি জানি তুমি কেন এতো তাড়াহুড়ো করে চলে এলে। নিতি তোমাকে কিছুই বলে নি। বললে ছেড়ে দিত আটকে রাখতো না। যাই হোক অন্ধকার ঘরে তুমি মোটেও ভয় পাও। শুধু আশায় ছিলে কখন আমি আসবো আর দরজা খুলবো। কারন তুমি জানতে আমি এসেই দরজাটা খুলবো। শুধু সময় গুনছিলে আর কিছু না তাই তো!
উনি যা বললেন তা যে সত্যি এটা আমি অস্বীকার করতে পারবো না। মনে মনে বেশ অবাক হলেও উনার সামনে স্বাভাবিক ভাবেই বলি,
“তাহলে হাত টা ধরে আছেন কেন?
“খেয়েছ কিছু?
“না বাসায় গিয়ে খাবো।
“বাসায় যাবে কখন?
“মনে হচ্ছে সন্ধ্যার দিকে।
“আইসক্রিমের দোকানের গলিটাতে..
“হ্যাঁ
অতঃপর আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,
“নাও তোমার সময় শেষ চলে যাও!
আমি চলে যেতে নিবো উনি আবারো আমার হাত ধরলেন। বিরক্ত মুখে তাকালাম। উনি আমার হাতে কিছু একটা রেখে চলে গেলেন। তাকিয়ে দেখি একটা বিস্কিট এর প্যাকেট। এটা দেখে কেন জানি অজান্তেই মুখে হাসি ফুটল। সময় নষ্ট না করে দ্রুত চলে গেলাম!
.
রিনু কে পড়ানোর পর রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আর বিস্কিট খাচ্ছি। রিনু’র বাসা থেকে তোহা’র বাসা এতোটাও দূরে না, কাছেই তবে তিহান আর অর্ণ’র বাসাটাই খুব দূরে।
রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আর ভাবছি, রিনু’র মা আজ বেশ অদ্ভুত ভাবে তাকালেন আমার দিকে না, বিরক্ত চোখে না। সন্দেহের চোখে! খানিকটা কৌতুহলী দৃষ্টিও বলা যেতে পারে তবে এটার কাহিনী টা কি?
অর্ণ কে পড়িয়ে বাসা থেকে বের হতেই দেখি আহিয়ান বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,
“পাক্কা ১০ মিনিট লেট তুমি!
“১০ মিনিট লেট করে আসলে ১০ মিনিট লেট করেই যেতে হবে।
“হুম বসো!
আমি উনার বাইকে চড়ে বসলাম। উনি বাইক চালাতে শুরু করলেন। আমি উনাকে বলি,
“আপনি বলেছিলেন আজ চাচা’র সাথে কথা বলাবেন!
“হুম বলো, ফোন এনেছি।
“ফোনটা কখন হাত ছাড়া করেন আপনি? সারাদিন তো হাতের নিয়ে গুঁতাগুঁতি করেন।
“ফোন কি গুঁতাগুঁতি করার জিনিস নাকি।
“তা না হলে আপনি কি করেন?
“দেখো বাইক চালানোর সময় ঝগড়া করো না। নাহলে শেষে তুমি আমি দুজনেই এক্সিডেন্ট করে উপরে চলে যাবো। তবে তুমি তো আগে থেকেই ভুতনি তাহলে এখানে কি হবে জানো!
“ইদানিং খুব বেশি কথা বলছেন না আপনি।
“তোমার এটা মনে হয়।
“তা নয় তো কি? আগে তো কথাই বলতেন না সবসময় চুপচাপ থাকতেন। ১০ টা কথা বললে একটা কথা বলতেন।
“সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে কথাটা শুনে!
“এখানে এটার যুক্তি কি?
“এর মানে হলো ভুতনি তোমার সঙ্গে থেকে আমি বাচাল হয়ে গেছি।
“আমি বলতে চান আমি বাচাল!
“একটু আগেই তো তুমি বললে তুমি নাকি একসাথে ১০ টা কথা বলো। আর এটা তো বাচাল রাই করে!
“অপমান করছেন।
“সেদিন তুমি ও তো করলে। আজ না হয় আমিও করলাম। শোধ হয়ে গেল।
“আচ্ছা তাহলে আপনি শোধ নিলেন।
“মোটেও না। এটা এমন কোন ব্যাপার না যে শোধ নিতে হবে।
“বেশি কথা না বলে মন দিয়ে বাইক চালান। বাসায় যেতে হবে।
“এখন রান্না করবে বাসায় গিয়ে!
“হুম! কেন এখন কি দাওয়াত চাইবেন।
“এক কাপ চায়ের জন্য যা কথা শোনালে এরপর আর..
“আচ্ছা আজকে যাবার সময় একটু দোকানে নামিয়ে দিয়েন চা পাতা আর বিস্কিট কিনে নিবো।
“রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাই তোমাকে?
“না!
“কেন?
“ওখানকার খাবার আমি খেতে পারি না। অস্তিত্ব লাগে! বাসায় চলুন।
উনি আর কথা বাড়ালেন না। সোজা বাসার সামনে এনে থামালেন। আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলি,
“আজ কি চা খাবেন না!
“খাবো তুমি যাও আমি সব কিছু নিয়ে আসছি!
“হুম।
অতঃপর আমি চলে যেতে নিলাম। উপরে একবার তাকিয়ে দেখলাম দাদু দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের একসাথে দেখেছে নিশ্চিত। আমি মাথা নিচু করে সিঁড়িতে উঠতে গেলাম। ব্যাপার কি আমি ঘাবড়ে যাচ্ছি কেন?আমি কি কিছু করেছি। বাইকে করেই তো শুধু এসেছি। এজন্য দাদু কি আমায় খারাপ ভাববে।
ঘরে এসে ঘরটা ঝাট দিলাম। আপু সকালেই বলে গেছিল আজ রাতে আর আসবে না। নাইট ডিউটি করবে। যাই হোক এই নিয়ে আমার ভাবনা চিন্তা নেই। উনি বেশি হলে আর ১০ মিনিট’ই থাকবেন। এর বেশি কি?
আমি চুলোয় পানি বসিয়ে দিলাম। এর মাঝেই দরজা কেউ বাড়ি দিলো। মাথায় হঠাৎ করেই ব্যাথা করতে লাগলো। অসহ্য ব্যাথা! মনে হচ্ছে কেউ মাথা খেয়ে ফেলছে আমার।
মাথায় হাত দিয়েই দরজা খুললাম। আহিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
“তোমার আবার মাথা ফাটালো কে?
বিরক্ত হয়ে বলি,
“মাথা কেন ফাটাবে, মাথা ব্যাথা করছে।
“ওহ আচ্ছা। এই নাও!
বলেই আমার দিকে দুটো ব্যাগ ধরলেন। অতঃপর ঘরে ঢুকে গেলেন। আমি প্যাকেটে দেখি কিছু চা পাতি, বিস্কিট, দুধ, ডিম, আর কিছু আছে মনে হচ্ছে ভিতরে। আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলি,
“এগুলো কি এনেছেন আপনি।
“কেন চোখ নেই তোমার?
“আছে কিন্তু কেন আনলেন।
“খাবো বলে।
“আপনার বাড়ি থেকে কি বের করে দিয়েছে নাকি এখানে খাবেন।
“বার করে দেয় নি। মা আর বাবা গেছে কুমিল্লা। বাবা অফিসের একটা কাজে সেখানে গেছে। তার সাথে যাবার জন্য ইয়ান জেদ করছিল। আর ইয়ান কে দেখাশোনার জন্য মাও চলে গেছে। কাহিনী দেখলি নিজের ছেলের কথায় ভুলে গেল।
“বাসায় আর কেউ নেই।
“আছে তো। কয়েকজন সার্ভেন্ট আর গার্ড আছে। কিন্তু তবুও পুরো বাড়ি খালি খালি লাগছে।
“কখন গেলো তারা।
“সকালে গেছে।
“তার মানে আপনি দুপুরে কিছু খান নি।
“বিস্কিট খেয়েছিলাম একা একা বাসায় ভালো লাগছিলো না।
“এটা কি এই প্রথমবার হলো নাকি?
“মানে!
“মানে এটাই এমন আরো কয়েকবার হয়েছে তখন কি করেছিলেন!
“আকাশের সাথে ছিলাম।
“হুম বুঝলাম!
বলেই জিনিসপত্র নিয়ে রান্না ঘরে চলে এলাম। উনাকে”হুম বুঝলাম”বললেও আমি কিছুই বুঝতে পারি নি। আগে তো ছিল আকাশ ভাইয়া’র কাছে তাহলে এখন এখানে কেন এলো! এমনেই না কোন মতলব আছে। এভাবেও ছেলে মানুষ কে বিশ্বাস করতে নেই। তবে আইনগত সে আমার স্বামী কিছু হলে তো কেস ও করতে পারবো না।
হঠাৎ করেই কেন জানি গা ছমছম করতে লাগলো। ভাবতেও ভয় এখানে শুধু আমি আর উনি। পুরো ঘর খালি। আমি আস্তে আস্তে করে ঘরের ভিতর উঁকি দিলাম। দেখি উনি রুমে নেই। কি হলো? গেলো কোথায়? হঠাৎ মনে পড়ল হয়তো ওয়াশরুমে গেছেন। তাই হলো কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হলেন উনি। আমার থেকে তোয়ালে নিয়ে মুখ মুছে চুপ করে বিছানায় বসে পড়লেন। অতঃপর ফোনের মাঝে মুখ গুঁজে দিলেন। উনাকে এভাবে থেকে কিছুটা হালকা বোধ হলো। মনের ভিতর থেকে বোঝা নেমে গেল। আমি আবারো রান্না ঘরে এলাম। খানিকক্ষণ বাদে দু কাপ চা আর বিস্কুট নিয়ে রুমে এলাম। এখনো আগের অবস্থায় বসে আছেন উনি।
চা হাতে নিয়ে চুমুক দিলেন। আমি উঠে রান্না ঘরে এলাম ভাত চড়ানোর জন্য। কিছুক্ষণ বাদে ঘরে ফিরে এলাম। উনি বলে উঠলেন,
“তুমি চা খাবে না।
“হুম খাবো।
“ঠান্ডা হলে খাবে না কি? একটু আগে না বললে মাথা ব্যাথা করছে!
“আসছি!
আমি গিয়ে বসলাম। উনি একটা বিস্কিট নিয়ে মুখে দিলেন। আমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে মুখে দিতে যাবো দেখি উনি আমার কাপের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার খাবড়ে গেলাম। কেন জানি মনে হচ্ছে চায়ে কিছু একটা মিশিয়েছেন উনি। উনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন,
“কি হলো? এভাবে তাকিয়ে আছো কেন!
আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি। কি বলবো বুঝতে পারছি না। আজ কেন জানি অদ্ভুত সব চিন্তাভাবনা আমার মন কে অস্থির করছে। কিন্তু কেন? এর আগেও তো উনি একবার এলেন কিন্তু তখন তো এমন কিছু হয় নি। তবে আজ কেন হচ্ছে? আচ্ছা মিতু আর মুন্নি আপু যে রাতে আসবে না এই কারনে কি উনি এমন করছেন। কিন্তু আপু যে আসবেনা সেটা তো উনার জানার কথা না। আমি বলে নি। তাহলে!
“ভুতনি!
“হ্যাঁ..
“কি হলো? এভাবে থম মেরে বসে চায়ের কাপ হাতে আছো কেন?
আমি আনমনে বলে উঠি..
“আমি আপনার চা খাবো!
উনি তখন বিস্কিট মুখে দিচ্ছিলেন। আমার কথা শুনে নিজের মুখে নিজেই কামড় খেলেন। গালে হাত দিয়ে আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন..
#চলবে….