#অরুর_সংসার
#পর্ব-২০
#লেখিকা-নিশিকথা
________________
বান্দরবান জেলা শহর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবান ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের নাম।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় এক হাজার ছয়শ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র থেকে সাঙ্গু নদী এবং দূরের বান্দরবান শহর দেখা যায়।
এছাড়া এখানে সব ঋতুতেই হাত বাড়িয়ে মেঘ ছোঁয়া যায়…..আর সেই মেঘ ই ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেকছে অরু……….. অরু যেন মুগ্ধ এখানে এসে…..নীলাচলের অপার সৌন্দর্যময় পরিবেশের মাঝে যে অরু মিশে যাচ্ছে…….. অরুর পরনেও আজ নীল রং এর লং ফ্রক…….. অরুকে যে প্রকৃতি কন্যা লাগছে এই প্রকৃতির মাঝে….
অয়ন অরুর কিছু ছবি এর ই মাঝে ক্যামেরাবন্দী করে নিয়েছে…….
এখন সূর্য অস্ত যাবার পালা……. অরু দাড়িয়ে আছে নীলাচল থেকে সূর্য অস্ত যাবার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করবে বলে। তখন ই নিজের হাতে কারো স্পর্ষ পেল অরু…
-কেমন লাগছে অরু?
– যে দিকে দু’চোখ যায় সেদিকেই সবুজ ও নীল আকাশের হাতছানি। চারপাশে সবুজ পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকা-বাঁকা রাস্তা চলে গেছে দূর-দূরান্তে। কত সুন্দর ♥♥
-হুম বলেছিলাম না।আমার অনেক পছন্দের জায়গা এটা…
এখন তো বর্ষাকাল চলে গেছে… নীলাচলের সৌন্দর্যে ভিন্নতা এনে দেয় বর্ষা মৌসুমে। এসময় কখনো রোদ্দুর কখনো বৃষ্টির পরশ আমাদের মত ভ্রমণপিয়াসুদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি আনে….
-তাই♥♥♥♥
-হুম!… তাকাও ওদিকে সূর্য অস্ত যাচ্ছে……
(অয়ন আর অরু মুগ্ধ নয়নে সূর্য অস্ত যাবার দৃশ্য দেখছে….. সাদ পিছনের থেকে প্রকৃতির এই অপরুপ দৃশ্য সহ অরু অয়নের হাত ধরে দাড়িয়ে সেটা উপভোগের মোমেন্ট ক্যামেরাবন্দি করে দিল এই ফাকে…. )
-এখানে আর কি কি আছে?
– ‘ঝুলন্ত নীলা’ ‘নীহারিকা’ ও ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট নামে কিছু স্পট আছে । কাল আবার ঘুরাবো । এখন চল রিসোর্টে……
-ঠিক আছে….
(অয়ন,অরু,মৌ আর সাদ মিলে চেক ইন করলো
নীলাচল নীলাম্বরী রিসোর্টে………. অরু রিসোর্টের ভিতরে ঢুকে অবাক নজরে দেখছে , অনেক সুন্দর রিসোর্ট টা…..
অরু অয়ন আর সাজ মৌ বিলাসবহুল ২টা রুম নিল। অয়ন রুমের ঢুকে দেখলো তার বউ ফুলদানীর ফুলের মাঝে ডুবে আছে
-কি করছো
-দেখেন কি ফ্রেশ ফুল
-হুম
(অয়ন অরুর কাছে এসে পিছন থেকে অরুকে জড়িয়ে ধরলো….)
-অরু
-হু
-শাওয়ার নেই চল একসাথে
-কি??
-জ্বি
-না না
-কেন
-না
-হ্যা
(অয়ন অরুকে নিয়ে ওয়াশরুমে গেল….)
♥
♥♥
♥♥♥
♥♥
♥
মৌ শাওয়ার থেকে বের হয়ে দেখলো সাদ খাটে চার হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে……
-এই শুনো না
-জী বল
-প্রব্লেম হয়ে গেছে
-কি?
-খুব প্রেমপ্রেম ফিল হচ্ছে
-কি? এতো অনেক বড় প্রব্লেম
-তা বলছে কি
-প্রেমনেশা চড়ে বসেছে বুঝি???
-হু
-আসো নেশা কাটিয়ে দেই
(সাদ মৌ এর হাত দরে নিজের উপর ফেললো)
-কি দেখছো
-না ভাবছি
-কি?
-এই যে সেদিন আম্মার কথা মত বিয়ে না করলে আজ পচতাতে হত
-তাই বুঝি?
-হু
-আমি তো পচতাচ্ছি
-কেন??
-তোমায় বিয়ে করে!!
-কি????
-হা তা নিয়তো কি?
-মৌ……..!!!
– হুম বল
-আরো পচতাতে হবে তাহলে…রাজি তো?
-রাজি
(দুজনে ভালবাসার সাগরে আবার ডুব দিল)
.
…
.
<সাদ আর মৌ এর বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়েছিল..... সাদের সারা দুনিয়ায় তার মা বাদে কেউ ছিল না। বাবা ছোট বেলায় ই মারা গিয়েছেল।।। ভাই বলতে তার অয়ন ই।ভাই বন্ধু সব। অহনা আর আরোহীকে বোন ভাবে সাদ। বিয়েটা অয়নদের বাড়ীতেইই হয়েছিল সাদ আর মৌ এর।২ বছর হয়েছে তাদের বিয়ের। সাদের মা অনেক অসুস্থ ছিলেন বেশ কিছু বছর ধরে... সাদের মায়ের ই শেষ ইচ্ছা ছিল ছেলের সংসার দেখে যাবার... তাই ই সাদ রাজি হয়েছিল বিয়ে তে... মৌ এর ও বয়ষ বেশী না।সাদ দের থেকে আর্থিক সচ্ছল পরিবারের মেয়ে ছিল সে।মৌ এর বাবা সাদের বাবার ক্লোজ বন্ধু ছিল। সেখান থেকেই আদরের একমাত্র মেয়েকে সাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন মৌ এর বাবা... তবে মৌ সাদের বাড়ীতে লক্ষি হয়েই এসেছিল ২বছর আগে।মৌ আসার পর সাদ কে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি।দিনের পর দিন উন্নিতির চরম শিখরে পৌছায়েছি সাদ মৌ এর হাত ধরে।সাদের মা গত বছর ই ইন্তেকাল করেছিলেন। তবে তিনি মৌ এর উপর সন্তুষ্ট ছিলেন। মৌ তাকে ১টা বছর ধরে অনেক সেবা যত্ন করেছিল। মৌ এর বিহেভিয়ারে সাদ বা তার মায়ের কখনো এটা ফিল হয় নি যে বড়লোক বাপের বাড়ী থেকে এসে মৌ এর এখানে কষ্ট হচ্ছে।।।। বিয়ের প্রথম রাতে মৌ অনেক ভয় পাচ্ছিল যে অচেনা অজানা একজন মানুষ কেমন হবে না হবে... তবে সাদ প্রথম রাত থেকেই মৌকে সব দিক থেকে ইজি করে নিয়েছিল...... কোন প্রকার ফিজিকালি বা মেন্টালি চাপ সে মৌ কে দেয় নি।মৌ কে সে সময় দিয়েছিল তাকে এবং এই সংসারকে মেনে নেবার জন্য আর এর ই মাঝে সা নিজেকেও সময় দিয়েছিল.... আস্তে আস্তে তাদের মাঝে ভালবাসা হয়... দুজনের সম্মতিতেই শুরু হয়েছিল তাদের ছোট্ট সুখের সংসার....... ♥এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় যে তারা সুখী দম্পতি.... ♥ তাদের ছোট্ট সংসারে সুখের কমতি নেই ♥ অয়ন বারান্দায় দাড়িয়ে নীলাচলের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করছে...... আজ ভরা পূর্ণিমা রাত.... আজকের রাত টা নীলাচলে উপভোগ করবার জন্যই দিনক্ষন হিসাব করে এসে অয়ন আর সাদ কারন এমন একটা জোৎস্না রাতে নীলাচলের সৌন্দর্য দেখা না হলে নীলাচলের সৌন্দর্য অবলোকনে অপূর্ণতা রয়েই যেত।আর এখন তো তারা একা নয় বরং তাদের জীবনসঙ্গিনীরা তাদের পাশে আছে..... অরু পিছনে এসে দাড়িয়ে আছে। অয়নের সামনে যাবে সেই সাহস তার নেই!! লজ্জায় তো সে চোখ ই তুলতে পারছে না... একটু আগে অয়ন ওসব কি করলো তার সাথে!! অরুর তো বুকের মধ্যে কেউ যেন হাতুরি পিটাচ্ছিল........আর এখন লজ্জায় তার হাল বেহাল...... -ওখানে দাড়িয়ে না থেকে এদিকে এসো অরু অয়নের কথা শুনে সোজা হয়ে দাড়ালো.... (কি করবে এখন সে...যাবে কি যাবে না? ) -কি হল এসো... (অরু ধীর পায়ে অয়নের কাছে যেয়ে দাড়ালো... অয়ন অরুকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো!... অরুকে সামনে ফিরিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো অরুকে.... ) -আজ ভরা পূর্ণমার রাত -হুম -এক দিকে ভরা পূর্ণামা তার উপর আমরা নীলাচলে..... বলেছিলাম না রাতে পাহাড়ের কোলে মেঘের ঘুমিয়ে পড়া, নীরব প্রকৃতিতে বাতাসের তোড়ে কলাপাতায় ফড়ফড় শব্দ। ঝিঁঝিঁ, তক্ষকসহ নানা পতঙ্গের ছন্দবদ্ধ সুর। খানিকটা অন্ধকার, খানিকটা নীরবতা, চাঁদ-তারা, মেঘের সঙ্গে রাত..... অরু.....? অরু ফিল করতে পারছো এসব?? -হ্যা স্পস্টভাবে -একারণে রিসোর্টের এই রুমটাই নিলাম....... এর আগেও এসেছি এখানে বন্ধুদের সাথে, একা থেকেছি রাতে....... আজ তুমি আছো..... আমার রাত টা স্পেশাল করবার দায়িত্ব কিন্তু তোমার..... -হু?????? -হ্যা........ করবে তো আমার এই রাতকে স্পেশাল??? -হুম (কিন্তু অরু জানেনা তার স্বামিকে কিভাবে সে খুশি রাখবে?) . .. . রাতে ডিনারের সময় সবাই এক হল। ডিনার শেষে ৪ জনের বাইরে বসে আড্ড দিচ্ছে। এখানে অনেক টুরিস্ট রয়েছে... সবাই একে অপরের সাথে মজা করছে..... কেউ গানের কলি খেলছে তো কেউ ডান্স করছে।।।। সাদের একটা গুন আছে সে অনেক সুন্দর গান করে সাথে গিটার ও বাজাতে পারে....... -সাদ ওই দেখ গিটার। নিয়ে আয়। একটা গান ধর -আরে না এখন না -কেন না! প্লিজ ইয়ার -ওগো ভাইয়া যখন বলছে গাও না.... -ওকে সাদ গিটার নিয়ে সুর তুলল........... চাঁদ কেন, আসে না আমার ঘরে ? চাঁদ কেন - আসেনা আমার ঘরে ? """""""""""""""""""" সে অভিমানিনী, আজও তো বলেনি, অভিমানিনী, আজও তো বলেনি ! আসবে কি না সে ফিরে ? ও চাঁদ কেন - আসেনা আমার ঘরে চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে ? দিন যায় রাত যায়, বয়ে যায় সময় ম্লান মুখ তার, আজও সেই ! চোখ চায়, মন চায় , তবু ভাঙ্গা হৃদয় সবই আছে চাঁদ শুধু নেই ... মেঘেরা যদি গিয়েছে দূরে সরে চাঁদ কেন - আসেনা আমার ঘরে ? জোয়ার ভাঁটায় চাঁদ আসে চাঁদ যায় আলো করে আঙ্গিনা সবার , আমি আছি ভরসায় - ঘোর আমানিশায় কাটে কেন যে এ আঁধার ? ভালবাসায় গুমরে কেদে মরে, চাঁদ তবু আসেনা আমার ঘরে । ও চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে ! চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে ? সে অভিমানিনী আজও তো বলেনি, অভিমানিনী আজও তো বলেনি আসবে কি না সে ফিরে ? ও চাঁদ কেন ... অসাধারণ কন্ঠ সাদের। অরু, অয়ন , মৌ সহ আশেপাশে সবাই মুগ্ধ হয়ে শুনেছিল সাদের গান... ♥ ♥♥ ♥♥♥ -আপু -হুম বল -না কিছুনা (অরু ভেবে পাচ্ছেনা কি করবে সে তার স্বামির আজকের রাতকে স্পেশাল করতে...) . রাত তখন বাজে ১ টা।অয়ন প্রচুর সিগারেট টানে। এইতো বর্তমানে ৪ টা শেষ করলো। -অরু -হু -আমি সিগারেট টেনে সেই মুখে তোমাকে কিস করলে তোমার খারাপ লাগে না? -হু।বমি এসে যায় -বাধা দেও না কেন? -সেই অধিকার যে নেই -হুম বাধে দিলেও বুঝি আমি শুনতাম??? (অরু মাথা নিচু করে ফেলল... আর কিছু বলল না সে) -কি ভাবলে?? -কি নিয়ে -কি করবে আজ রাত আমার জন্য? -আমি অনেক ভেবেছি!! -তো?? -কিছু পাই নি। (অরুর চোখে পানি টলমল করছে) -এই তুমি কান্নাকাটি করবা না...যাও.... গতকাল রাতে যে ড্রেসটা লুকিয়ে রেখেছিলে ওটা পরে নেও। -জ্বি???? - জ্বি -কিন্তু -আমি ই জানিয়েছিলাম -ছি -ওয়াট???? -ওই কাপড় পরা আর না পরা এক ই। এসব নায়িকাদের জামা।আর এসব ফিল্ম এ পরে।আমি কি নায়িকা? -যাও -হু (অরু মাথা নিচু করে ভিতরে চলে গেল) ♥♥♥ ♥♥ ♥ রাত ১:৩০ অয়ন রুমে এলো। রুমে এসে অরুকে দেখে হেসে দিক অয়ন... অরু নাইটি তার সাথে ম্যাচিং করে ব্লাক পায়জামা আর ওড়না পরেছে....... -এই - জ্বি -কি হাল করেছো নিজের? -কেন এটা আগে টুকরো কাপড় ছিল এখন আমি জামা বানিয়েছি -হুম।বানিয়েছো তো রণবীর সিং এর মত জামা -হ্যা???? -হা হা হা হা (অয়নের হাসি থামছেই না...অরুর নিজেকে কেমন যেন জোকার মনে হল... অরু কেঁদেই দিল -অরু!! - ............. -অরু কাঁদছ কেন? আজব - .............. -সরি - .............. - সরি তো প্লিজ কেঁদো না (অয়ন অরুর চোখের পানি মুছে অরুর কপালে ভালবাসার পরশ বুলিয়ে দিল...... অয়ন অরুর গাল দুই হাতে ধরে অরুর ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিল.... ৫ মিনিট ওভাবেই ছিল তারা....... এরপর অয়ন অরুর ওড়না টা ফেলে নিয়ে অরুকে নিয়ে খাটে শুয়ে পরলো..... <এরপর যা হয়েছে তাদের মাঝে আপনারা তো জানেন ই>
….
……
….
আজ কাল আরোহীর মন মেজাজ ভাল না….কি করবে সে???
যেদিন থেকে অনিক জেনেছে আরোহী সন্তান সম্ভবা সেদিন থেকে আরোহীকে কোন কাজ ই করতে দেয় না অনিক। আর অনিক বাসায় না থাকলে তার পারসোনার সেক্রেটারি রুশা তাকে কোন কাজ করতে দেয় না।আরোহী কিছু করতে গেলেই রুশা তার বাবাকে ফোন করে বলে দেয়!!!
আরোহীর ফোন বেজে উঠলো….
-হ্যালো
-কি করছো?
-তোমার মাথা
-তাই নাকি?
-হু
-কি হয়েছে আমার বাবুদের আম্মুটার মন খারাপ কেন?
-তো কি করবো বল?? কোন কাজকাম নেই। সারাদিন খাও আর ঘুমাও!
ইদানিং তো তোমার মেয়েও নিজের কাজ নিজে করে…আমায় ডাকে না…আজকাল আর আমাকে তোমাদের প্রয়োজন নেই
-হুম বুঝলাম অনেক রেগে গেছেন…….
-হুম
-যদি আজ বিকালে রুশা আর আপনাকে নিয়ে ঘুরতে যাই???
-কোথায়??
-বল কোথায় যাবে??
-আচ্ছা আগে বাসায় আসো ভেবে বলছিম
-ওকে বাবুদের আম্মু
-হু বাবুদের আব্বু
…..
……..
…..
সকালে নীলাম্বরী থেকে চেক আউট করে ৪ জনে বের হল নীলাচল ভ্রমনে…..
.
অরু অয়ন আর সাদ মৌ হাতে হাত ধরে এক এক করে প্রতিটা স্পট ঘুরে বেড়ালো এক এক করে।
অনেক ছবি উঠালো তারা…
দিনভর পাখ-পাখালির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত জায়গাটির আশপাশের পাহাড়ের ঢালুতে দেখতে পাওয়া যায় তঞ্চঙ্গ্যা, বম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রাম।….
.
পাহাড়ি গ্রাম ও আদিবাসীদের জীবনযাত্রা দেখতে সবাই মিলে হেঁটে গেক পাহাড়ের পাদদেশে।
সাদ বলল…..
-সাবধান, বর্ষায় পাহাড়ি উঁচু-নিচু রাস্তা বেশ বিপদজনক আর জঙ্গলে বিষাক্ত সাপের আনাগোনা আছে…
(সাদের কথায় অরু আর মৌ কিছুটা ভয় পেয়ে আর আগালো না….)
অয়ন বলল……
-ভয় পেয়ো না…. সাপ বা বন্যপ্রাণী দেখলে উত্যক্ত করবে না তহলে বিপদ এছাড়া ওরা ঝামেলা করে না
মৌ বলল….
-না থাক ভাইয়া আমরা যাব না ওদিক
(অরু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল).
নীলাচলে শুভ্রনীলা,‘ঝুলন্ত নীলা’, ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন পয়েন্ট’ নামে পর্যটকদের জন্য আকর্ষনীয় বিশ্রামাগার রয়েছে। শুভ্রনীলায় নাস্তা করে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে
অরু, অয়ন, সাদ,আর মৌ মিলে প্রতিটা জায়গায় গিয়ে এক এক বেলা রেস্ট নিয়েছে ও খাওয়াদাওয়া করেছে …….
ভ্যালেন্টাইন পয়েন্টে গিয়ে দুপুরে লাঞ্চ করলো সবাই।
সেখানে বিশ্রাম নিল।
-নীলাচলকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বললে ভুল হবে না..
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬শ’ ফুট উঁচু এই জায়গায় বর্ষা, শরৎ কি হেমন্ত— তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ।
নীলাচল থেকে সমগ্র বান্দরবান শহর একনজরে দেখা যায়। মেঘমুক্ত আকাশে কক্সবাজারর সমুদ্রসৈকতের অপুর্ব দৃশ্য নীলাচল থেকে পর্যটকেরা উপভোগ করতে পারে।অরু যেন মন ভরে সব দৃশ্য দেখে নিচ্ছে এই সময় ই…..আর অয়ন প্রতি মোমেন্টে অরুর মেমোরি ক্যাপচারে ব্যস্ত….. অয়নের ভাল লাগছে অরুকে এত খুশি দেখে… ভাল লাগছে যে সে কাউকে ঘুরতে নিয়ে এসে এত খুশি করতে পেরেছে…. নীলাচলে বাড়তি আকর্ষণ হল এখানকার নীল রং এর রিসোর্ট।
নাম নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট।
সাধারণ পর্যটকদের জন্য এ জায়গায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুমতি আছে। তবে বাইরে থেকে আসা টুরিস্ট রাত কাটাতে পারে….
অরু, অয়ন,মৌ আরক সাদ লাঞ্চ এর পর সেখানে গিয়ে সময় কাটায় সন্ধার আগ পর্যন্ত…. পরে অয়ন সিদ্ধান্ত নেয় যে রাত টা এখানেই কাটিয়ে
যাবে…
চলবে…..