#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_26
ইশা সারা অফিস ইশানকে খুজে বেড়াছে। ইশানকে না দেখতে পেয়ে ইশা পাগল হয়ে যাচ্ছে। কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না? ইশা ইশানকে খুজতে খুজতে ক্লান্ত হয়ে চেয়ারে বসে পড়ে। ভাঙ্গা গলায় বলা শুরু করে।
–ইশান বাবা তুই কোথায় চলে গেলি আমাকে ছেড়ে? একবার ও কি ভাবলি না তোর মাম্মাম এর কথা। তোকে ছাড়া কি করে থাকবো। নাহ দেরি করলে চলবে না ইশানকে আমায় খুজে বের করতে হবে। কিন্তু আমি একা কি করে খুজব ইশানকে? না জানি ও কোথায় চলে গেছে? ভাইয়া ভাইয়াকে কি জানাবো ইশানকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না যে…. নাহ থাক আমি নিজেই আমার ছেলেকে খুজে বের করবো। কারো সাহায্য আমি নেবো না।
এদিকে….
জিসানের পাশে দাঁড়িয়ে আছে ইশান আর বাড়ির সবাই জিসান আর ইশানের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জিসান সবার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে।
–কি হলো মা এভাবে তাকিয়ে আছো কেন তোমরা সকলে?
সালিহা বেগম অবিশ্বাস্য গলায় বলে।
–না মানে তুই ফোনে কিসব বললি আমার নাতি নিয়ে আসছিস!
–হে নিয়ে এসেছি তো এই যে তোমার নাতি।
ইশানকে দেখিয়ে কথাটা বলে জিসান। সালিহা বেগম একই স্বরে বলে।
–আমি ঠিক বুঝতে পারছি না জিসান ও আমার নাতি কি করে হয়?
জিসান ভাবলেশহীন ভাবে বলে।
–কেন আমার ছেলে মানে তোমার নাতি হয় না।
–হে হয় কিন্তু ভাইয়া তুমি বিয়ে করলে কবে? আর কাকে বা বিয়ে করেছো আমাদের না জানিয়ে।
জিসার কথা শুনে সালিহা বেগম চোখ চোখ বড় বড় করে বলেন।
–জিসান বাবা তুই বিয়ে করেছিস আমাদেরকে না জানিয়ে আর আমি তোর বিয়ে দেওয়ার জন্য কত মেয়ে খুজে বেড়াছি।
জিসান মায়ের কথা শুনে ভ্রু কুচকে বলে।
–কিহ তুমি আমাকে আবার বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে খুজছিলে?
সালিহা বেগম কাচুমাচু হয়ে বলে।
–না মানে আমি আসলে…
–হইছে হইছে আর না মানে আসলে করতে হবে না তোমার নাতি এসেছে এই বাড়িতে প্রথম আদর যত্ন করবে না।
–হে হে হে আমার নাতি এসেছে আর আমি আদর করবো না তা কি করে হয় কিন্তু
সালিহা বেগম জিসানের দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলে ইশান কোলে তুলে এনে সোফাতে বসিয়ে আদুরে স্বরে বলে।
–তোমার নাম কি দাদু ভাই?
–ইশান।
–ও মা কত সুন্দর নাম আমার দাদু ভাইয়ের।
–আমার পাপা রেখেছে এই নামটা মাম্মাম বলেছে।
স–তোমার মাম্মাম কোথায়??
–মাম্মাম তো অফিসে আমি বাবা আঙ্গেলের সাথে এখানে খেলতে এসেছি।
সালিহা বেগম অবাক হয়ে বলেন।
–বাবা আঙ্গেল এই বাবা আঙ্গেল কে?
জিসান এর মাঝে বলে।
–মা তোমাকে পরে আমি সব বুঝিয়ে বলছি।
–জিসান তুই কি কিছু ছুলুকাচ্ছিস আমাদের কাছ থেকে? কি লুকাছিস তুই?
জিসান উচ্চ স্বরে ডাকে।
—আসমা!
–হে ভাইজান।
–ইশানের সাথে তুই খেলা কর গিয়ে।
–আচ্ছা।
জিসান ইশানের কাছে গিয়ে বসে ইশানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে।
–ইশান বাবা তুমি এখন ওই আন্টি’টার সাথে খেলা করো গিয়। আমি একটু পরে আসছি তোমার কাছে।
–ঠিক আছে।
ওরা চলে যেতেই সালিহা বেগম বলেন।
–জিসান তুই কি লুকাচ্ছিস আমাদের কাছ থেকে বলতো আর ইশানের মা কে? ও কি সত্যি আমার নাতি।
–হে মা ও এই বংশের ছেলে আমার রক্ত ওর শরীরের বইছে। মা তুমি আর কিছু ক্ষন অপেক্ষা কর সব কিছু তুমি বুঝে যাবে।
জিসান এই এক বাক্যের কথাটা বলে উপরে চলে যায় আর ওদিকে ইশা কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না।
–ইশান তুই কোথায় চলে গেলি আমাকে ছেড়ে এখন তোকে আমি কোথায় খুজবো কোথায়? বাবা মাকে কি জানাবো না না এমনি ওনারা অসুস্থ যদি জানে ইশানকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে আরও টেনশন করবে তখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে। কিন্তু আমি ইশানকে কোথায় খুজবো সারা অফিস খুজা হয়ে গেছে কিন্তু কোথাও নেই ইশান। তাহলে কি ভাইয়া ওকে কোথায় নিয়ে গেছে কিন্তু তা কি করে হবে ওনি তো এখন নিজের অফিসে হয়তো। ইশানকে কি কেউ কিডন্যাপ করেছে কিন্তু কিডন্যাপ করলে তো এতক্ষনে মুক্তিপনের জন্য কল দিতো কেউ নাতো কেউ।
হঠাৎ করেই ইশার ফোনে একটা কল আসে। ইশা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে আউট নাম্বার থেকে ফোন ইশা তাড়াতাড়ি করে ফোনটা পিক করে বলে।
–হ্যালো! কে বলছেন?
–হ্যালো! মাম্মাম আমি ইশান।
–ইশান তুমি কোথায় বাবা? কোথায় চলে গেছো মাম্মামকে না বলে।
–মাম্মাম আমি বাবা আঙ্গেলের বাসায় এসেছি।
–বাবা আঙ্গেল…. বাবাআঙ্গেল কে ইশান? আর তুমি কোথায় আছো এখন?
–মাম্মাম তোমাকে আমি একটা ঠিকানা দিছি তুমি তাড়াতাড়ি এখানে চলে আসো কেমন।
–ইশান ইশান আমার কথাটা শুনো…. ফোনটা কেটে দিলো।
ইশার ফোনে সাথে সাথে একটা মেসেজ আসে। ইশা মেসেজটা চেক করে দেখে একটা ঠিকানা দেওয়া ইশা ঠিকানাটা ভালো করে চেক না করেই তাড়াতাড়ি করে অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে বলে।
–ড্রাইভার তাড়াতাড়ি চলো।
–ম্যাডাম কোথায় যাবো??
–এই যে এই ঠিকানাতে যেতে হবে।
ফোনে মেসেজটা ড্রাইভারকে দেখিয়ে বলে।
–ওকে ম্যাডাম।
–বাবা আমার ইশান তো দেখি কত সুন্দর করে কথা বলতে পারে।
–হুম।
–দেখতে হবে না ছেলেটা কার?
জিসান বাকা হেঁসে মনে মনে বলে।
–এবার দেখি মিসেস ইশা চৌধুরী তুই কি করে পালিয়ে যাস আমার কাছ থেকে। তোকে তো আমার খাঁচায় এখন আমি বন্দি করেই ছাড়বো।
_______
ইশা তাড়াতাড়ি করে বাড়ির গেইটের সামনে আসে। ইশা বাড়িটার দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে। ইশা বাড়িটার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। পাঁচ বছর পর ইশা আবারো এই চৌধুরী বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
–ইশান ইশান কি তাহলে ওনার সাথে এখানে এসেছে? না না আমি ভেতরে যেতে পারবো না ভিতরে গেলে যে আমাকে নিয়ে একটা বেজাল শুরু হবে। রুহি আপু আমাকে দেখলে ওনার সাথে হয়তো ঝগড়া হবে। কিন্তু ভেতরে না গিয়েও তো উপায় নেই ইশানকে গিয়ে আনতে হবে। যে যাই বলুক আমাকে আজ এই বাড়ির ভিতরে যেতেই হবে অন্তত ছেলেটার জন্য।
#চলবে