#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_8
–বস আমাদের সত্যি ভুল হয়ে গেছে। আমার বুঝতে পারি নাই যে একটা মেয়ে কম পড়ে যাবে।
–চুপ এক দম চুপ! আমার কাছে কোন সাহসে ক্ষমা চাস তুই। তোকে আমি সাফসাফ বলে দিয়েছিলাম আমার ১০০টা মেয়ে লাগবে আর তুই এখন আমাকে এসে বলছিস একটা মেয়ে কম পড়ে গেছে। কালকের মাঝে আমার মেয়েগুলোকে দেশের বাইরে পাঠাতে হবে আর একটা মেয়ে নাই। বুঝতে পারছিস তোর কি অবস্থা করতে পারি আমি এখন।
–বস সত্যি আমার ভুল হয়ে গেছে আর এমনটা হবে না। এবারের মতো মাফ করে দেন।
–এ বারের মতো তকে ক্ষমা করলাম। আধঘন্টার সময় দিলাম এই আধঘন্টার মাঝে একটা মেয়েকে আমার চাই। আধঘন্টা পর আমি যেন এসে দেখতে পাই একশোটা মেয়েকে এক করা হয়েছে।
–ওকে বস।
____
এদিকে ইশা দাঁড়িয়ে আছে একটা পার্কে। ইশা অনেক যাবত ধরে লক্ষ্য করছে কতো গুলো লোক ওকে ফলো করছে। ইশাও আর লোক গুলোর দিকে না তাকিয়ে অন্য দিকে মুখ করে তাকিয়ে থাকে।
হঠাৎ করেই ইশার সামনে একটা কালো গাড়ি এসে দাঁড়ায়। ইশা ভীষন ভয় পেয়ে গিয়ে দু কদম পিছিয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে বলে।
–কারা আপনারা?
–ম্যাডাম ভয় পাবেন না আমার আসলে….
লোকটা এই কথাটা বলেই ইশার মুখে রুমাল চেপে ধরে। আর ইশার চোখে নেমে আসে অন্ধকার। ইশাকে গাড়িতে তুলে নেয় তাড়াতাড়ি করে।
____
অন্য দিকে জিসা জিসানের ঘরে গিয়ে দেখে ইশা নেই। জিসা সারা বাড়ি খুজে কিন্তু কোথাও ইশাকে পায় না। জিসা তাড়াতাড়ি করে মাকে গিয়ে বলে।
–মা এবার কি হবে ইশা আপু কোথায় গেল কাউকে কিছু না বলে আর কখনেই বা ঘর থেকে।
–ও এতো গার্ডদের চোখ এড়িয়ে বের হলো কি করে??
–মা আমার খুব ভয় হচ্ছে ভাইয়াকে এই খবরটা জানানো দরকার।
সালিহা বেগম জিসানকে ফোন দেয় কিন্তু জিসান ফোন ধরে না।
–কি হলো মা ভাইয়া কল ধরছে না।
–নাহ।
–মা তুমি ট্রাই করতে থাকো।
_____
এদিকে জিসান খুব ব্যস্ত হয়ে কাজ করছে আর সামনে থাকা কালো পোশাক পরিহিত লোকগুলোকে বলছে।
–আমাদের যে করেই হোক সব মেয়েদেরকে উদ্ধার করতে হবে। গোপন সূত্রে জানা গেছেওরা কালকে সকালেই মেয়েগুলোকে পাচার করবে। তাই আজকে রাতেই আমাদেরকে যা করার করতে হবে।
–ইয়েশ স্যার….
–পুলিশরা ড্রেস পড়ে আসবেন না কারন ওরা যদি বুঝতে পারে ওদেরকে পুলিশ খুজছে তো ওরা সর্তক হয়ে যেতে পারে।
এমন সময় একজন এসে জিসানকে উদ্দেশ্য করে বলে।
–স্যার আপনার ফোন বাজছে অনেক ক্ষন ধরে।
–আমি এখন ব্যস্ত আছি বলে দাও।
–স্যার বাড়ি থেকে ফোন করছে।
–বাড়ি থেকে ( ইশুর কিছু হয় নি তো) ঠিক আছে ফোনটা দাও আমাকে।
জিসান তাড়াতাড়ি করে কল বেক করে।
–হ্যাল! মা বলো।
–জিসান তুই ফোন ধরছিলি না কেন? কখন থেকে তোকে কল করছি।
–আরে মা কি হয়েছে? সেটা আগে বলো।
–জিসান ইশাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জিসান উত্তেজিত কন্ঠে বলে।
–কিহ? কি বলছো কি মা তুমি?
–হে জিসান সারা বাড়ি খুজেছি কিন্তু কোথাও ইশা নেই।
–ছাদে খুজেছো?
–হে খুজেছি।
–ওকে আর তোমার এক পাও বাড়ি থেকে বের হবে না আর বাবা কোথায়?
–তোর বাবা তো অফিসে।
–বাবাকে ফোন করে বলে দাও অফিস থেকে যেন বের না হয়।
–কেন জিসা? কি হয়েছে?
–আমি তোমাকে যা করতে বলেছি তাই করো। পরে তোমাকে আমি সব খুলে বলবো।
–ঠিক আছে।
জিসানের মেজাজটা চরম সীমায় পৌঁছে গেছে ইশার উপরে। এখন যদি ইশা জিসানের সামনে থাকতো তো ইশার কপালে শনি ছিলো। জিসান মনে মনে বলে।
–এতো কঁড়া গার্ডের মাঝেও ও কি করে বাড়ি থেকে বের হলো কি করে?
–স্যার এনি প্রবলেম।
–না না কোনো প্রবলেম হয় নি আমাকে এখন একটু বাড়িতে যেতে হবে।
#Nusrat_Jahan_Bristy
–কিন্তু স্যার আপনি চলে গেলে কি করে হবে….
জিসান মনে মনে বলে।
–সত্যিই তো আমি চলে গেলে কি করে হব? এখানে এত বড় এক জামেলার মধ্যে আছি আর এক জামেলা বাধিয়ে ফেললি তুই ইশা। কাজটা তুই ঠিক করলি না ইশা এক দম না।
জিসান তাড়াতাড়ি করে গার্ডদের মাঝে এক জনকে কল করে।
–এসব ক? তোমারা সবাই কোথায় ছিলে আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম বাড়ি থেকে যেন একটা মাছিও না বের হয় আর ইশা কি করে বের হলো বাড়ি থেকে।
–স্যার আমরা আসলে…
–জাস্ট সেটআপ আর একটা কথাও বলবে না।
–সরি স্যার।
–সিসি টিভিতে গিয়ে দেখো ইশা কি করে বাড়ি থেকে বের হলো আর আমাকে এর একটা কপি তাড়াতাড়ি আমার ফোনে পাঠাও।
–ওকে স্যার
জিসান দাঁতে দাঁত চেপে মনে মনে আওড়ায়।
–ইশা তোকে একবার শুধু হাতের কাছে পাই তারপর তোর পা ভেঙ্গে বাড়িতে বসিয়ে রাখবো।
জিসানের ফোনে ভিডিওটা আসতেই জিসান ভিডিওটা ওপেন করে সব দেখে ইশা কি করে বাড়ি থেকে বের হয়। জিসান ভিডিও দেখে নিজের ফোনটা জোরে একটা আছার মারে। সবাই জিসানের এমন কান্ড দেখে আবাক হয়ে যায়। এসব দেখে সাঈদ বলে।
–ভাইয়া কি হলো?
সাঈদ জিসানের সব কাজের পার্টনার। ও সবসময় জিসানকে হেল্প করে আর জিসানকে ভাই বলে ডাকে।
জিসান বাঁজখই কন্ঠে বলে।
–ইশা বাড়ি থেকে বের হয়েছে সাঈদ।
–কি বলছো কি ভাইয়া ভাবি কি করে পালাতে পারলো এত গার্ড থাকার পরেও।
জিসান চিৎকার করে বলে।
–ওকে আমি এত বার না করার পরেও ও বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাহস পেলো কি করে?
–ভাইয়া তুমি শান্ত হও প্লিজ।
–কি করে শান্ত থাকবো তুই বল! এখানে একটা প্রবলেম তার উপর ইশা এক প্রবলেম বাধিয়ে বসলো।
–ভাইয়া আমি এখানে সব সামলে নিবো তুমি ভাবিকে খুজো গিয়ে।
–যদি ওকে ওই পাচারকারীরা ধরে ফেলে তো।
–ভাইয়া তুমি এত চিন্তা করো না তুমি যাও এখন।
জিসান আর কিছু না ভেবে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায় ইশাকে খুজতে।
____
এদিকে ইশাকে একটা ঘরে হাত পা বেঁধে রাখা হয়েছে। চুল গুলো মুখের উপর এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। যার কারণে ইশার মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।
–জোগার করতে পেরেছো একটা মেয়ে।
–হে বস….
–কোথায় রেখেছো মেয়েটাকে?
–এই তো বস হাত পা বেঁধে বন্ধ করে রেখেছি।
ঘরের দরজা খুলে লোক গুলো ঘরের ভিতরে ডুকতেই সব মেয়েরা ভয়ে এক কোনে বসে যায়। তাদের বস ইশাকে এভাবে বাঁধা অবস্থায় দেখে বলে।
–একি এভাবে বেঁধে রেখেছো কেন মেয়েটাকে?
–আসলে বস মেয়েটার একটু বেশি তেজ তাই বেঁধে রেখেছি।
–আহা! এভাবে কেন বেঁধে রেখেছো তাড়াতাড়ি খুলে দাও কষ্ট হচ্ছে তো মেয়েটার। সব মেয়েদেরকে অক্ষত অবস্থায় পাচার করতে হবে বুঝতে পেরেছো আর ওর তেজটা আমিও একটু দেখতে চাই।
–ইয়েস বস আমি বাঁধন খুলে দিছি।
লোকটা ইশার হাত পায়ের মুখের বাঁধন খুলে দেয়। ইশা চোখ তুলে তাকিয়ে যা দেখে তাতে ইশার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। নিজের উপর রাগ উঠছে এখন। ইশার সাথে লোকটাও ইশাকে দেখে ভীষন ভাবে শক খায়।
আর এদিকে জিসান সারা শহর খুজে বেরিয়েছে ইশাকে কিন্তু ইশার কোনো চিহ্ন পর্যন্ত পেলো না। জিসান ভেবেই নিয়েছে যে ইশাকেও ওই পাচারকারীরা কিডন্যাপ করেছে। এমন সময় সাঈদের কল আসে। জিসান কল ধরতেই সাঈদ বলে।
–ভাইয়া পেয়েছো ভাবিকে।
–নাহ সাঈদ পাই নি আমার মাথা কাজ করছে না। আমি কি করবো এখন।
–ভাইয়া আমার সন্দেহ হচ্ছে ও কিছু করে নাই তো।
জিসান হঠাৎ করেই রেগে বলে।
–যদি ও আমার ইশুর কোনো ক্ষতি করে তো ওকে আমি জানে মেরে ফেলবো।
–ভাইয়া তুমি শান্ত হও আমাদের তাড়াতাড়ি কিছু করতে হবে ভাবির সাথে আরও অনেক মেয়ের প্রান জড়িয়ে আছে।
–আমি থাকতে ইশুর গায়ে একটা আছরও কেউ কাটতে পারবে না।
#চলবে