#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_9
–রাহুল তুমি এখানে?
রাহুল অন্য লোকদের ইশারা করে বলে সব মেয়েদেরকে অন্য রুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ঘর ফাঁকা হতেই রাহুলে বাকা হাসি দিয়ে বলে।
–আরে মিসেস জিসান চৌধুরী আপনি এখানে আর আমি আপনাকে ওখানে সব জায়গাতে খুজে এসেছি কিন্তু কোথাও পাই নি। আর কোথায় বা পাবো বলুন আপনাকে তো আমার লোকেরা যে তুলে নিয়ে এসেছে। শুধু শুধু আমার সময়টা নষ্ট হলো আপনাকে খুজতে গিয়ে।
ইশা অবাক হয়ে বলে।
–তুমি তুমি কি করে জানলে আমি মিসেস জিসান চৌধুরী হয়ে গেছি।
–আরে জান আমি সব জানি। কি বলতো তোমাদের বাড়িতে আমার একজন লোক আছে যে গার্ড সেঁজে আছে।
–আর এসব মেয়ে তুমি পাচার করো?
-হে করি তো ঠিক যেমন তোমাকে করবো।
ইশা চোখ মুখ খিচে বলে।
–ছিহ রাহুল ছিহ তুমি এতটা নিচ যে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকেও ছাড়লে না।
রাহুল ইশার কথাটা শুনে হাসতে থাকে ইশা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিকে। রাহুল হাসি থামিয়ে ইশার হাত চেপে ধরে বলে।
–কি বললে তুমি ভালোবাসার মানুষ। কে আমার ভালোবাাসার মানুষ। তুমি আমি তোমাকে ভালবাসি তুমি ভাবলে কি করে। আমি তোমার মতো একটা থার্ড ক্লাস মেয়েকে ভালোবাসাবো।
–কি করছো কি রাহুল হাতটা ছাড়ো ব্যাথা লাগছে আমার
–ওপস সরি। ব্যাথা লাগছে ঠিক আছে ছেড়ে দিছি।
ইশা চিৎকার করে বলে।
–তার মানে তুমি আমাকে ভালোবাসা না এতো দিন অভিনয় করেছো আমার সাথে।
–শিসসসসসস। আস্তে কথা বলো জান এভাবে এত জোরে চিৎকার করো না। হে আমি তোমার সাথে অভিনয় করেছি এখন তুমি কি করব? আমার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিবে।
–কেন করেছো তুমি আমার সাথে এমনটা কেন?
–আচ্ছা বলেই দেই তোমার সাথে কেন এমনটা করছি? কি বলতো তোমার মাঝে না কিছু একটা আছে তাই তো তোমার দিকে এত আকর্ষণ করে আমাকে। সব ছেলেরা তোমার দিকে খারাপ নজর দিত কিন্তু জিসান তোমাকে সবসময় আগলে রাখতে। কিন্তু আমাকে পারেনি আমি তোমার সামনে বোকা সেজে থাকতাম আর এটা হলো আমার আসল রুপ আর রইলো ভালোবাসা তোমাকে ভালবাসি না আমি।
রাহুল ইশার কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলে।
–আমি তো তোমার শরীরটা কে ভালোবাসি শুধু শরীরটাকে। তোমার মতো আরও অনেক মেয়ে আছে আমার জীবনে। তোমাকে আমি বলেছিলাম না তুমি আমার জীবনে প্রথম নারী সেটা মিথ্যা কথা। আমার জীবনে তোমার আগে কত নারী গেছে।সেটার হিসাব আমার জানা নাই কি করবো বলো সব মেয়েরা আমার জন্য পাগল কিন্তু তুমি সব মেয়েদের মতো না তোমার কাছে আমি যত যেতে চাইতাম তুমি আমাকে ততো ইগনোর করতে। কিন্তু আজকে তুমি আমার হাত থেকে কোথায় পালাবে সোনা।
রাহুলের কথা গুলো শুনে ইশার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়।
–তার মানে ভাইয়া আমাকে যা বলেছে সব সত্যি। তুমি খুব খা’রা’প রাহুল খুব আমি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি ভাইয়ার কথাটা না শুনে।
–হা হা হা… ভুল যখন করেছো তার মাশুল তো তোমাকে দিতে হবে সোনা। যাক গে সে সব কথা তোমাকে যখন হাতের কাছে পেয়েছি তো দেরি কেন।
হাত দুটো বাঁড়িয়ে বলে।
— কাছে এসো আর আমি জানি জিসান তোমাকে এখনও ছোঁয়েও পর্যন্ত দেখে নাই।
রাহুলকে ইশা থা’প্প’র মরার জন্য হাত তুলতেই রাহুল ইশার ধরে ঘুড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়ে।
–এক দম এই কাজটাই করার চেষ্টা করো না সোনা।
রাহুলের কাছ থেকে ইশা নিজেকে ছাড়ার জন্য চেষ্টা করতে করতে বলে।
–ছাড় বলছি আমায় তোর ছোঁয়াতে আমার গা ঘিনঘিন করছে।
–কেন সোনা আগে তো তোমার হাত ধরলে এমন করতে না।
–তোমার মতো জা’নো’য়া’রে’র ছোঁয়াতে সব মেয়েদেরই গা ঘিনঘিন করবে।
–তাই বুঝি সোনা।
–ছাড় বলছি ভাইয়া যদি একবার জানতে পারে তুমি আমাকে তুলে নিয়ে এসেছো তো তোমার খবর করে ছাড়বো বলে দিলাম।
–তাই বুঝি সোনা ঠিক আছে দেখা যাক তোমার ভাইয়া এখানে আসতে পারে কি না।
–আমার ভাইয়া আসবেই এখানে তার ইশাকে বাচাতে।
–এতো বিশ্বাস তোমার ভাইয়া উপর ঠিক আছে বিশ্বাস থাকা ভলো
রাহুল ইশাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানাতে ফেলে দিয়ে বলে।
–জান তাহলে শুরু করা যাক।
–রাহুল আমার কাছে আসবে না বলে দিলাম। এর ফল কিন্তু ভালো হবে না বলে দিলাম।
–দেখা যাবে এর ফল কি হয়। আগে তো এই কাজটাই শেষ করি। ভাবতেই পারি নি তোমাকে এভাবে কাছে পেয়ে যাবো। এক টিলে দুই পাখি মা’রা হলো।
রাহুল ইশার উপরে শুয়ে পড়ে। ইশা নিজেকে বাচানোর জন্য খাটের পাশের টেবিল থেকে ফুলদানিটা নিয়ে রাহুলের মাথায় আঘাত করতে রাহুল দু হাত দিয়ে নিজের মাথা চঁপে ধরে। আরএই সুযোগে ইশাও ঘর থেকে বের হয়ে যায়। রাহুল নিজের মাথা চেপে ধরে বলে।
–কাজটা তুমি ঠিক করলে ইশা তুমি। এর ফল তোমাকে ভোগতে হবে।
ইশা ঘর থেকে বের হয়ে আলমারির পেছনে লুকিয়ে পড়ে। রাহুল ঘর থেকে বেরিয়ে ইশাকে খুজতে থাকে।
–ইশা বেইবি কোথায় তুমি তাড়াতাড়ি বের হয় সোনা। আমি যে আর পারছি না তোমাকে ছাড়া থাকতে। আমি কিন্তু তোমাকে খুজে বের করে ফেলবো সোনা তাই তাড়াতাড়ি বের হও।
ইশা মুখ চেপে ধরে বসে আছে আর এদিকে রাহুল খুজে যাচ্ছে ইশাকে।
অন্য দিকে জিসান ইশাকে খুজেই যাচ্ছে কিন্তু হদিস পাচ্ছে না ইশার। সাঈদ জিসানকে বলে।
–ভাইয়া রাহুলের ফোনের লোকেশনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি রাহুল কোথায় মেয়েদেরকে লুকিয়ে রেখেছে.।
–কাকে ফোন করেছিলো জানতে পেরেছিস?
–না ভাইয়া জাস্ট ৫ সেকেন্ডের জন্য ওর ফোন খোলেছিলো।
–ঠিক আছে তাড়াতাড়ি বের হতে আমাদের।
______
চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার জিসান তার দলবল নিয়ে গভীর এক জঙ্গলের ভেতরে ডুকেছে।
–ভাইয়া জঙ্গলে একটা পোড়া বাড়ি আছে যেখানে ওই রাহুল সব মেয়েদেরকে রেখেছে।
জিসান আর সবাই ধীরে ধীরে হেটে যাচ্ছে। জিসান হাটার সময় জুতার চাপে কিছু একটা টাস করে ভেঙ্গে যায়। জিসান নিজের পা সরিয়ে দেখে একটা লাল কাচের চুড়ি। জিসান চুড়িটা হাতে নিয়ে দেখে ইশার চুড়ি।
–ইশুর চুড়ি তার মানে আমরা ঠিক জায়গাতে হাটছি। আর ইশা তার চিহ্ন রেখে গেছে যাতে আমি খুব সহজে ওকে খুজে বের করতে পারি।
জিসান তাড়াতাড়ি করে হাটতে থাকে কিছু দুর যেতেই একটা পোড়া বাড়ি দেখতে পায়। জিসান সবাইকে অর্ডার দিয়ে বলে।
–সবাই বাড়ির চারিদিকে ঘেড়ে পেলো যাতে কেউ পালাতে না পারে। তবে খুব সাবধানে অনেকের প্রাণ নির্ভর করছে আমাদের উপরে।
___ইয়েস স্যার….
–আমি বাড়ির ভেতরে ডুকছি।
–ভাইয়া দাঁড়াও তুমি একা বাড়ির ভিতরে যেতে পারো না। জানি না কোথায় কোন বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
জিসান চিন্তিত স্বরে বলে।
–ভেতরে আমার জানটা আছে সাঈদ আর আমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো তুই ভাবলি কি করে।
–ভাইয়া! কিন্তু ওরা খুব ডেঞ্জারাস।
–জানি আমি কিন্তু আমাকে ভেতরে যেতেই হবে। জানি না ওই রাহুল হা’রা’মি’র বাচ্চা আমার ইশুকে কি অবস্থায় রেখেছে।
–তাহলে আমিও তোমার সাথে যাবো ভাইয়া। আমি তোমাকে একা যেতে দিতে পারি না।
–নাহ সাঈদ তুই এখানে থাক কোন বিপদ হলে আমি তোকে ডাকবো।
–কিন্তু ভাইয়া।
–কোনো কিন্তু না।
জিসান বাড়ির ভিতরে আস্তে আস্তে করে ডুকে।
#চলবে___