সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা** writer : Akash khan পার্ট : ১০

0
287

**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**

writer : Akash khan

পার্ট : ১০

**এখন দিন যতই যাচ্ছে অধরার আমার ওপর অধিকার দেখানোটাও ততটাই বাড়ছে । আর আমিও যতটুকু সম্ভব অধরার কাছ থেকে পালিয়ে চলার চেষ্টা করি,,, কিন্তু মাঝে মাঝে সেটা আর হয়ে ওঠে না,কোন না কোন ভাবে অধরা আমাকে ধরেই ফেলে আর এক বাড়িতে থেকে কতখন আর একজনের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ানো যায়,,,।আর এদিকে কলেজে ইদানিং তৈরী হইছে নতুন আরেক জামেলা,,।কারণ অধরার আপুর বান্ধুবী অন্তরা আপুর হাবভাব খুব একটা ভালো লাগছে না,,। প্রয়োজন ছাড়াই দিনে দশবার কল দেয়,,কলেজে গেলে ইচ্ছে করেই গায়ে পড়ে কথা বলতে আসে,,। যদি তাকে এড়িয়ে চলি,,তাহলে বিভিন্ন ভাবে ইমোশোনাল ব্লেকমেইল করে,। এদিকে অন্তরা আপুর বিষয়টা আমার জন্য যেমন বিরক্তির কারণ হয়ে আছে যেটা আমি মুখে বলতে পারি না,,অন্যদিকে অধরাও অন্তরার বিষয়টা নিয়ে দিন কে দিন বেশ রেগে যাচ্ছে,,। এখন শুধু ভয় কোন দিন জানি অধরার এই ভয়ংকর রাগের সামনে আমার নাহয় অন্তরা আপুর পড়তে হয় সেটাই ভাবছি,,,,।আজকে কলেজে এসে আমি আমার বন্ধুদের সাথে মাঠে বসে গল্প করছি এমন সময় পিছন থেকে অন্তরা আপু এসে আমাকে বলল,,,,

অন্তরা : শুভ্র কেমন আছো,,,,?(হেসে বলল)

আমি : এই তো আপু ভালো আছি,,আপনি কেমন আছেন,,,(মুখে হাসির ভাব নিয়ে বললাম)

অন্তরা : আমিও ভালো আছি,,।তা আমার সাথে একটু আসো তো,,,,তুমার সাথে আমার কিছু কথা আছে,,,,

আমি : কী কথা আপু এখানেই বলেন সমস্যা নাই ওরা সবাই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড,,,,,

অন্তরা : সব কথা সবার সামনে বলা যায় না,,।তুমি আসো আমার সাথে,,কথাটা খুব জরুরি,,,

আমি : ঠিক আছে চলেন,,,,

**তারপর আমি অন্তরা আপুর পিছু পিছু যেতে থাকি,,আর অন্তরা আপু আমাকে নিয়ে আমাদের কলেজের পাশে একটা বাগান আছে সেটার কাছে চলে যায়,,,।এখন আমার মনে মনে ভয় হতে থাকে এই কথা যদি অধরা আপু জানতে পারে যে আমি অন্তরা আপুর সাথে বাগানে আসছি তাহলে আমাকে খুন করতে হয়তো দ্বিতীয় বার ভাববে না,,।তাই আমি শুধু বার বার এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছিলাম অধরা আবার এদিকে আসে নাকি,,,,।আমার এরকম এদিক ওদিক তাকানো দেখে অন্তরা আপু বলল,,,,

অন্তরা : শুভ্র তুমি অধরার ভয়ে এমন করছো নাকি,,,,যে অধরা এসে আমাদের দেখে নিবে,,,,?

আমি : আসলে আপু আপনি তো জানেন আমার কোন মেয়ের সাথে কথা বা কোথায় যাওয়া অধরা আপু একদম পছন্দ করে না,,তাই একটু ভয় লাগছে,,

অন্তরা : তুমি চিন্তা কর না,,আমি তুমার কাছে আসি সময় দেখছি অধরা ক্লাসে বসে কী যেন নোট করছে,,। আমি যে তুমার কাছে আসছি অধরা বুঝতে পারবে না,,,(মুসকি হেসে বলল)

আমি : আচ্ছা আপু আপনি কী বলবেন তারাতারি বলেন,,একটু পরে আমার আবার ক্লাস শুরু হবে,,,,

অন্তরা : শুভ্র,, আমি যে সবসময় তুমার আশে পাশে থাকি সেটা কী তুমি বুঝো,,,,?

আমি : আপনার কথাটা ঠিক বুঝলাম না,,, যা বলার বুঝিয়ে বলুন,,,,

অন্তরা : শুভ্র,, তুমাকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিন থেকেই তুমাকে আমার ভালো লাগে,,,।তারপর অধরার আমার বান্ধুবী হওয়ায় তুমার সাথে প্রায় টুকটাক কথা হতো,,তখন তুমার কথা বলা,,,মায়াবী চোখের চাওয়া সবকিছু যেন আমার রাতের ঘুম কেড়ে নিছে,,।সত্যি কথা বলতে তুমাকে নিয়ে আমার ভাবতে ভালো লাগে,,।তুমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে,,তার জন্য ইচ্ছে করেই তুমাকে বার বার কল দেই,,,,,।শুভ্র আমি তুমার পাশে সবসময় থাকতে চাই,,,।আমাকে কী সেই সুযোগটা দিবে,,,,,(আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল)

**অন্তরা আপুর কথা শুনেই বুঝতে পারলাম ওনি আসলে কী বলতে চাইছে,,,।তবু বুঝেও না বুঝার মত করে বললাম,,,,

আমি : আপু আপনি কী বলতে চাইছেন সরাসরি বলেন,,,আপনার এরকম রহস্যময় কথা আমি বুঝতে পারছি না,,,,

অন্তরা : শুভ্র আমি জানি না,,তুমি কী সত্যিই আমার কথা বুঝতে পারছো না,,নাকি বুঝেও না বুঝার অভিনয় করছো,,,।তবে তুমি যাই কর আমি আজ আমার মনের কথাটা তুমাকে বলবো,,,।শুভ্র আমি তুমার একাকিত্ত জীবনের অংশিদার হতে চাই,,,।আমি তুমাকে অনেক অনেক,,,,,,,,,,,

অধরা : ভালবাসি,,,, তাই তো বলবি,,,অন্তরা (রাগে গরগড় করতে করতে বলল)

**অন্তরা আপু তার কথাটা শেষ করার আগেই কোথায় থেকে যেন অধরা আমাদের পিছন দিয়ে এসে এই কথাটা বলে ওঠে,,। আর অধরার গলার আওয়াজ শুনে আমি আর অন্তরা দুজনেই অনেকটা ভয় পাই,,,।আমি যখন অধরার দিকে তাকাই তখন ভয়টা আরও বেড়ে যায়,,,।কারণ অধরার ফর্সা সুন্দর মুখটা রাগে লাল হয়ে গেছে,,,চোখ গুলো রক্তিম বর্ণ দারণ করে আছে,,।অধরা আমার কাছে এসে বলল,,,

অধরা : তুই ক্লাস রেখে এখানে এসে কী করছিস,,,(রাগী কন্ঠে বলল)

**তখন পাশে থেকে অন্তরা আপু বলল,,,,

অন্তরা : অধরা,, শুভ্রকে কিছু বলিস না,,ওকে আমিই এখানে নিয়ে আসছি,,,,

অধরা : অন্তরা তোকে আমি আগেই মানা করছিলাম,,তুই যেন শুভ্রের আশে পাশে না আসিস তাহলে আজ এটা কেন করলি,,,,(রাগী কন্ঠে বলল)

অন্তরা : অধরা তুই হয়তো এতদিনে বুঝতে পারছিস আমি কেন শুভ্রের সাথে এমন করি,,।আর একজন মানুষকে তো আর ভালবাসা কোন অন্যায় না।তাহলে শুভ্রকে আমি ভালবাসতে পারবো না কেন,,,,আমি শুভ্রকে ভালবাসি আর এই কথাটা বলার জন্যই এখানে নিয়ে আসছি,,,তুই প্লিজ আমাদের মাঝে নাক গলাস না,,,,,,(একটু কঠিন কন্ঠে বলল)

**অন্তরার কথা শুনে আমার বুকের ভিতর দরফর করতে শুরু করলো,,।কারণ একে তো অধরা রাগে লাল হয়ে আছে,,কখন কী করে বসে তার কোন ঠিক নাই এর মাঝে অন্তরা যে কথা বলল খোদাই জানে অধরা এখন কী করে,,,।

**অন্যদিকে,, অন্তরার কথা শুনে অধরার পায়ের রক্ত মাথায় ওঠে যায়,,।যেখানে অধরা শুভ্রকে কোন মেয়ে ভালবাসবে তো দুরের কথা চোখ তুলে তাকালেও ঐ মেয়ের খবর করে ছেড়ে দেয়। সেখানে অন্তরা বলছে শুভ্র কে ভালবাসে আবার বলে তাদের মাঝে নাক না গলাতে,,।তখন অধরা নিজের রাগটা একটু কন্ট্রোল করে বলল,,,,

অধরা : তোদের প্রেমের মাঝে আমার নাক গলানোর কোন দরকার নাই,,,।কিন্তু তুই আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দে,,তাহলেই আমি তোদের মাঝ খান থেকে চলে যাবো,,,,(গম্ভীর কন্ঠে বলল)

অন্তরা : হুম বল কী কথা বলবি,,,,,?

অধরা : আচ্ছা ধর,, একজন মানুষকে তুই অনেক দিন ভালবেসে আসতেছিস,,,তাকে নিজের করে পেতে অনেক কষ্ট করছিস,,,প্রতিটা মুহূর্ত তার পিছনে ছায়ার মত পড়ে থাকিস,,,।তাকে ছাড়া তুই জীবনে অন্য কিছুই ভাবতে পারিস না,,।আর তোর সেই ভালবাসার মানুষটাকে যদি কেউ কেড়ে নিতে চায় তাহলে তুই কী করবি,,,,(গম্ভীর কন্ঠে বলল)

**অধরার কথা শুনে আমার মনের ভিতর একটা ভয় কাজ করতে থাকে,,,। মনে হচ্ছে বড় কোন বিপদ আসতেছে,,আর অধরাই বা কেন অন্তরাকে এমন প্রশ্ন করলো,,,।মাথায় কিছুই আসছে না,।আমি যখন এসব চিন্তায় ব্যস্ত তখন অন্তরা বলল,,,

অন্তরা : আমি যাকে এমন ভালবাসবো তাকে যদি কেউ আমার কাছ থেকে কেড়ে চায় তাহলে তাকে আমি খুন করবো,,,,(গম্ভীর কন্ঠে বলল)

***অন্তরা এই কথাটা বলে যে কত বড় ভুল করছে সেটা ও নিজেও জানে না,,।আর অধরাও মনে মনে এটাই চাইছিল যে অন্তরা এমন কিছু বলোক,,,।তখন অধরা একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বলল,,,,

অধরা : সে মেয়েটি যদি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড হয় তাহলে তুই কী করবি,,,,

অন্তরা : বেস্ট হইছে তো কী হইছে ভালবাসার জন্য নিজের আপন বোনকেও ছাড় দিবো না,,সেখানে বেস্ট ফ্রেন্ড তো অনেক দুরের কথা,,,,,,

**এই কথাটা বলার সাথে সাথে অধরা সোজা গিয়ে অন্তরার মুখ খুব শক্ত করে চেপে ধরে,,,।আর রাগে গরগড় করতে করতে বলল,,,,

অধরা : কুত্তার বাচ্চা তাহলে তোর সাহস কী করে হল শুভ্রকে ভালবাসার কথা বলার,,।তোকে আমি হাজার বার নিষেধ করছি শুভ্রের কাছে না আসতে,,।আর তুই আমার চোখ ফাকি দিয়ে আমার ভালবাসাকে তুই নিজের করে নিচ্ছিস,,।আর তুই ভাবলি কেমন করে আমি তা হতে দিবো,,,,(অনেক রেগে বলল)

**অধরা যখন অন্তরাকে খুব শক্ত করে মুখ চেপে ধরে তখন আমি গিয়ে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে থাকি,,।কিন্তু অধরার অন্তরাকে এমন ভাবেই ধরছে যে আমি কোন মতেই তাকে সড়াতে পারছি না,,।তখন অন্তরা বলল,,,

অন্তরা : অধরা আমাকে ছাড় আমি ব্যাথা পাচ্ছি,,। কেন তুই আমাকে মারছিস,,,।ছাড় আমাকে প্লিজ ছাড়,,(খুব কষ্ট করে বলল)

অধরা : কেন,,, একটু আগে তুই না বললি তাকে তুই খুন করবি,,,তাহলে এখন কেন তোকে ছাড়তে বলছিস,,তোকে তো আজকে সারাজীবনের ভালবাসার সাধ মিটিয়ে দিবো,,।এতদিন শুধু আমার ভালোটা দেখছিস,,,আকজে একটু রাগটাও দেখে যা,,,

**কথাটা বলেই অধরা অন্তরাকে একের একের থাপ্পর মারতে থাকে,,,। আর চিৎকার করে বলতে থাকে,,,

অধরা : তোর সাহস কী করে হয় আমার শুভ্রের দিকে চোখ তুলে দেখার,,।ঠা,,,স,,,ঠাস,,,যাকে সেই ছোট বেলা থেকে মনে মনে ভালবেসে আসছি তোর সাহস কী করে হয় তুই ওকে ভালবাসার কথা বলার,,।যাকে নিয়ে আমি ঘর বাধার স্বপ্ন দেখি প্রতি রাতে,,তোর সাহস কী করে হয়,,, আমার সেই স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে দেওয়ার,,,,,(এরকম আরো অনেক কথা বলতে থাকে আর অন্তরাকে একের পর এক থাপ্পড় মারতে থাকে,,।)

**এদিকে বার বার চেষ্টা করেও অধরাকে থামাতে পারছি,না,।কাছে গেলেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়,,,।আর এদিকে সারা কলেজ ছড়িয়ে পরে অধরা অন্তরাকে মারছে,,।তখন কয়েক জন টিচার আর মেডাম সহ অনেক ছাত্র ছাত্রী এখানে এসে জমা হয়ে যায়,,।আর তখন মেডাম নিজে গিয়ে অধরার হাত থেকে অন্তরাকে রক্ষা করে,,।তবে মেডামরা যতখনে অন্তরাকে উদ্দার করে অধরার হাত থেকে ততখন অধরা অন্তরাকে মেরে নাক মুখ ফাটিয়ে ফেলে,,।নাক দিয়ে মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে,,,,।

**তারপর অন্তরাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করে আনা হয়,,আর আমাকে সহ অধরা আর অন্তরাকে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুমে ডাকা হয়,,,।অন্যদিকে অন্তরার পরিবার খবর পেয়ে কলেজে চলে আসে,,,আর এদিকে প্রিন্সিপ্যাল স্যার নিজে অধরার আব্বুকে কল দিয়ে কলেজে আসতে বলে,,।অধরার আব্বু যেহেতু এখানকার বেশ সুনামধন্য চেয়ারম্যান তাই তার এখানে একটা আলাদা নাম ডাক আছে,,।যদি ছোর খাটো কোন বিষয় হতো তাহলে স্যার অধরার আব্বুকে কখনো ডাকতেন না,,।কিন্তু অধরা অন্তরাকে এমন ভাবে মারছে যে বলার মত না,,।তাই তাকে বাধ্য হয়ে ওনাকে আসতে বলতে হয়,,নাহলে অন্তরার পরিবার নাকি অধরার বিরুদ্ধে মালমা করবে,,,।আর কিছুখন পরেই অধরার আব্বু সহ সবাই গিয়ে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুমে গিয়ে সবাই এক হয়,,,।তখন প্রিন্সিপ্যাল স্যার অধরাকে জিঙ্গাসা করে কেন অন্তরাকে মারছে।তখন অধরা বলল,,,

অধরা : **********চলবে*******

হায়রে ভালোবাসা কত মজা লাগে, ২ টা আপু একজনের জন্য এমন মারামারি করে , এদিকে তো আমি সিঙ্গেল ছিলাম একজন তো আমার কাছে আসতে পারতেন আপু,,,, যানি না আপনারা আবার আমার কথা কি ভাবে নিবেন, মনের কথা মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে আর কি,,, 😁😜🙊

👉গল্পের শেষটা কি, কষ্টের দিব ? সবার মতামত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here