সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা** writer : Akash khan পার্ট : ১২

0
305

**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**

writer : Akash khan

পার্ট : ১২

**এদিকে আমি কলেজ থেকে সোজা বেরিয়ে নদীর পাড় চলে আসি,,।আর সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত একা বসে থাকি,,।এর ভিতর অধরা বেশ কয়েক বার কল দিছে,, কিন্তু আমি কল রিসিভ করি নি,,।আজ নিজেকে সত্যি খুব একা মনে হচ্ছে,,।এতিম হয়েও এতদিন খুব একটা মা বাবার কথা মনে পড়ে নি। কিন্তু আজকে অনেক মনে হচ্ছে,,।জানিনা বাড়িতে গেলে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে,,।তারা হয়তো ভাববে এতদিন তাদের ঘরে খেয়ে পড়ে তাদের সাথে আমি বেঈমানি করছি,,।হয়তো আজকেই আমাকে তাদের বাসা থেকে বের করে দিবে,,।এরকম নানান চিন্তা করতে করতে প্রায় রাত হয়ে গেছে,,।তাই ভাবছি বাড়িতে যাই,,যা আছে কপালে তাই হবে,,,।আর আমি বাড়িতে এসে দেখি বাড়ির পরিবেশটা বেশ শান্ত লাগছে,,,।আমি তখন চুপচাপ আমার রুমে চলে যাই,,,।আর আমি আমার রুমে আসার একটু পরেই আয়ান মানে আমার ছোট নবাব এসে বলল,,,,,

আয়ান : ভাইয়া এতখন তুমি কোথায় ছিলে,,,,,?সেই কখন থেকে তুমাকে খোজতাছি,,,,

আমি : আমি একটু বাহিরে ছিলাম ছোট নবাব,,,,।তুমি কেন খোজতেছিলে আমাকে,,,,?(হেসে বললাম)

আয়ান : আব্বু তোমাকে ডাকতেছে,,,বলছে তুমি বাসায় আসলে আব্বুর সাথে দেখা করতে,,,

**আয়ানের কথা শুনেই মনের ভিতর একটা অজানা ভয় কাজ করতে লাগলো,,।জানিনা এখন বড় আব্বুর সামনে আমাকে কোন পরিস্থিতির সামনের পড়তে হয়,,।তবে কেন জানি মনে হচ্ছে আমার জন্য খারাপ কিছুই অপেক্ষা করছে,,।তখন মনে মনে চিন্তা করলাম যা আছে কপালে তাই হবে,,এত ভেবে লাভ নাই,,দেখি গিয়ে কী হয়,,।আর আল্লাহ যা করেন মানুষের ভালোর জন্যই করেন,,,।এসব নানান চিন্তা করে আমি আয়ানকে বললাম,,,,

আমি : ছোট নবাব তুমি গিয়ে বড় আব্বুকে বল,, শুভ্র ভাইয়া এক্ষনি আসতেছে,,,(হেসে বললাম)

আয়ান : আচ্ছা,, তাহলে তুমি তাড়াতাড়ি আসো,, আমি গেলাম,,,

**কথাটা বলেই আয়ান আমার রুম থেকে বেরিয়ে যায়,,আর আমি দপ করে বিছানায় বসে পড়ি,,।আসলে অতিরিক্ত চিন্তায় মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে,,।কোন কিছু তেমন ভালো লাগছে না,,।তারপর আমি ওয়াস রুমে গিয়ে হাত মুখে পানি দিয়ে নিজেকে একটু ফ্রেস করি নেই,,।তারপর আস্তে আস্তে বড় আব্বুর রুমের গিয়ে যেতে থাকি,,।আমি যতই বড় আব্বুর রুমের দিকে অগ্রসর হতে থাকি আমার বুকের ভিতর ততই দরফর করতে থাকে,,।তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বড় আব্বুর রুমে প্রবেশ করি আমি,,।সেখানে গিয়ে দেখি বড় আব্বু ও বড় আম্মু তারা দুজন একসাথে খাটের ওপর বসে আছে,,।তখন আমি তাদের সামনে যেতেই,,বড় আব্বু বলল,,,

বড় আব্বু : শুভ্র কলেজ থেকে গিয়ে সারাদিন কোথায় ছিলি,,,(সাভাবিক ভাবেই বলল)

আমি : বড় আব্বু কোথাও যাই নি,,এই তো নদীর পাড় বসে ছিলাম,,,,(ভিত কন্ঠে বললাম)

**আমার কথা শুনে বড় আব্বু কিছুখন চুপ করে থাকে,,।কারো মুখে কোন কথা নাই এর মাঝে অধরাও আমাদের মাঝে এসে যোগ দেয়,,,,।তখন বড় আব্বু বলল,,,,

বড় আব্বু : শুভ্র ছোট বেলা থেকে তোকে নিজের চোখের সামনে বড় হতে দেখেছি,,।তোর বাবা -মা মারা যাওয়ার পর তোকে আমরা আমাদের কাছেই রেখে দেই,,।হতে পারিস তুই আমাদের বাড়ির চাকরের ছেলে,, কিন্তু তোকে আমরা সবসময় নিজের সন্তানের মত মানুষ করছি,,, কোন কিছুর অভাব তোকে আমরা বুঝতে দেই নি,,।আর এতদিন তুই আমাদের সেই কাজের সঠিক মুল্য দিছিস,,কখনো এমন কাজ করিস নাই যেটার জন্য আমাদের বাড়ির কোন বদনাম হয়,,।আসা করি এখনো তোকে আমি যা জিঙ্গাসা করবো তুই তার সঠিক উত্তর দিবি,,কোন প্রকার মিথ্যার আশ্রয় নিবি না,,,(খুব নরম সুরে বলল)

**আব্বুর কথা শুনেই আমার চোখের কোনে নোনা পানি জমে যায়,,।আসলেই তো বাবা মা মারা যাওয়ার পর তারা আমাকে যে ভাবে মানুষ করছে সেটা হয় তো আমার নিজের বাবা মাও করতে পারতো না,,।আজকাল গৃহ কর্মীর ওপর মানুষ অমানবিক নির্যাতন করে,,সেখানে তারা মানবতার দার খুলে দিছে,,।আমাকে আপন করে নিছে নিজের সন্তারের মত,,।তখন আমি বললাম,,,

আমি : হুম বড় আব্বু বলেন,,আপনি কী জানতে চান,,,আমি সত্যিটাই বলবো,,,,,

বড় আব্বু : তোর কী অধরার সাথে কোন সম্পর্ক আছে,,মানে তোরা একে অপরকে কী ভালবাসিস,,,(সরাসরি বলল)

**বড় আব্বুর কথা শুনে আমি কিছুখন চুপ থাকি,,।তারপর আমি একবার অধরার দিকে তাকাই,,তখন দেখি অধরা আমার দিকে চাতক পাখির মত তাকিয়ে আছে,,আমি কী বলি সেটা শুনার জন্য,তবে অধরার চোখে বুঝতে পারছি অধরা চাইছে আমি যেন এটাই যে আমি অধরাকে ভালবাসি,,।তখন আমি বললাম,,,,

আমি : না বড় আব্বু,,, অধরার আপুর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই,,।আমি ছোট বেলা থেকে তাকে যেমনটা ভেবে আসছি আজও ঠিক তাই ভাবি,,।এতে ওনি আমাকে নিয়ে যাই ভাবুক না কেন,,,,?(সরাসরি বললাম)

**এদিকে শুভ্রের কথাটা শুনে অধরার মনে অনেকটা আঘাত লাগে,,। কারণ যাকে পাওয়ার জন্য সবার সাথে একাই এত লড়ছে সেই যদি তাকে ভাল না বাসে আর সবার সামনে না করে দেয় তখন খারাপ লাগাটাই সাভাবিক,,।কিন্তু অধরাও এত সহজে হেরে যাওয়ার মেয়ে না,,।তাই শুভ্রের কথা শুনে যতটা কষ্ট পাইছে তার বেশি রাগ হচ্ছে,,এখন ইচ্ছে করছে সবার সামনে গিয়ে এক ঘুসিতে নাকটা ফাটিয়ে দিতে,,।কিন্তু অনেক কষ্টে নিজের রাগটা কন্ট্রোল করছে অধরা,,।তখন বড় আব্বু বলল,,,,,

বড় আব্বু : তার মানে কী তুই অন্তরাকে পছন্দ করিস,,,,,?

আমি : না বড় আব্বু অন্তরার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই,,আর আজ যেটা হইছে তার জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি যদিও এটার মাঝে আমার কোন দোষ নাই,,,,(মলিন কন্ঠে বললাম)

বড় আব্বু : আমি অন্তরাকে কথা দিছি তুমি যদি রাজি থাকো,, তাহলে আমি অন্তরার পরিবারের সাথে কথা বলবো,,,,।এখন তুমার কী মতামত,,,,

**বড় আব্বুর কথা শুনে অধরা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,হয়তো আমি কী বলি সেটা জানার জন্য,,,। তখন আমি বললাম,,,

আমি : অন্তরাকে আমি ভালবাসি না এটা সত্যি কথা,,তবে আপনি যদি বলেন তাকে বিয়ে করতে তাহলে আমি রাজি আছি,,।কারণ আপনাদের জন্য আমি সব করতে পারি আর এটাতো সামান্য একটা বিয়ে মাত্র,,,

**আমি কথাটা বলার সাথে সাথে আমার গালে ঠা,,স ঠা,,স করে দুইটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় অধরা,,।আর আমার শার্টের কলার ধরে চিৎকার করে বলতে থাকে,,,

অধরা : ঐ কুত্তা তোর সাহস কী করে হয় অন্য মেয়েকে বিয়ে করার কথা বলার,,।তুই জানিস না আমি তোকে ভালবাসি তাহলে তুই কোন সাহসে ঐ অন্তরাকে বিয়ে করার কথা বলিস,,,,,(চিৎকার করে বলল)

আমি : কিন্তু আমি আপনাকে ভালবাসি না,,।আপনার একজনের ভালবাসা পাওয়ার জন্য আমি আপনার পুরো পরিবারের সাথে বিশ্বাস ঘাতগতা করতে পারবো না,,।আর তাই আপনার আব্বু যা বলবে আমি তাই করতে রাজি,,,(রাগী কন্ঠে বললাম)

**অধরার এমন রাগ আর কথা বলা দেখে অধরার আব্বু আম্মু চুপ করে বসে দেখতে থাকে কী হয়,,তখন অধরা আবার বলল,,,

অধরা : আমি এত কিছু জানি না,,শুভ্রকে আমি সেই ছোট বেলা থেকে পছন্দ করি,,। ওর জন্য কলেজে নিজের নামে বদনাম করছি,,।সবাই আমাকে আড়ালে গুন্ডি বলে ডাকে বদরাগী বলে ডাকে শুধু ওর জন্য,,কারণ শুধু ওকে নিজের করে পেতে সবার সাথে বাজে ব্যবহার করছি,,।আর আজ যদি কেউ আমার সেই ভালবাসা অন্যকে দিয়ে আসতে চায় তাহলে ভালো হবে না বলে দিলাম,,।যদি আমার ভালবাসা কারো মেনে নিতে কষ্ট হয় তাহলে আমি আমার ভালবাসাকে সাথে নিয়ে এখান থেকে দুরে কোথাও চলে যাবো,,।তবুও আমি শুভ্রকে হারাতে পারবো না,,।আর তুই কান খোলে শুনে রাখ শুভ্র,,,,, তুই আমাকে ভালবাসবি কী না বাসবি সেটা তোর বেপার,,কিন্তু আমি তোকে ভালবাসি আর তুই না চাইলেও সারাজীবন আমার সাথেই থাকতে হবে,,।আর এর মাঝে যদি কেউ বাধা হয়ে দাড়ায়,,, তাহলে তোকে আগে নিজের হাতে খুন করবো তারপর নিজেকে শেষ করে দিবো তবুও তোকে অন্যে কারো হতে দিবো না,,এখন যে যা করতে পারে করে নেক,,,(চিৎকার করে বলল)

**তারপর কথাটা শেষ করেই অধরা কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমার শার্টের ধরে টানতে টানতে নিজের রুমের দিকে নিতেছে আর আমাকে বলতেছে,,,,

অধরা : কী ভাবছিস,,আব্বুর সামনে যা খুশী তাই বলবি,,আর আমি আব্বুর ভয়ে কিছু বলবো না,,।আয় আমার সাথে,,খুব বিয়ে করার শখ তোর তাই না,,আজ তোর বিয়ের শখ আমি মিটিয়ে দিবো,,,(খুব জাজালো কন্ঠে বলল)

**অধরা আমাকে কলার ধরে টেনে রুমে নিয়ে যাচ্ছে,, আর আমি মনে মনে চিন্তা করছি বড় আব্বু কেমন মানুষ,, তার এই গুন্ডি রাক্ষসী মেয়েটা তার সামনে চিৎকার করে কতগুলো কথা বলল,,।অথচ তিনি মুখে কলোপ এটে বসে ছিলেন একটা কথাও বলেন নি,,মাঝ খান থেকে আমি তার এই বাঘানী মেয়ের শিকার হয়ে গেলাম,,।জানি না,,আজকে প্রাণে বেঁচে ফিরি কী না,,যদি বেঁচে ফিরি তাহলে আপনাদের মিষ্টি খাওয়াবো পাঠকরা,,,

**আপনার হয়তো ভাবছেন অধরার আব্বু,, আম্মু অধরার এমন ব্যবহারে তারা কোন রিয়েক্ট কেন করলো না,,।তাহলে চলুন জেনে আসি ভিতরের কাহিনী,,,। অধরা,, শুভ্রকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসার পরই অধরার আব্বু আম্মু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে থাকে,,।কারণ অধরার আব্বু আম্মু আগে থেকেই মনে মনে চাইতো অধরাকে শুভ্রের সাথে বিয়ে দিতে,,।কিন্তু এতে অধরা রাজি হয় কিনা এটা নিয়ে তারা একটু চিন্তায় ছিল,,তবে এখন তারা নিশ্চিত যে অধরা শুভ্রকে ভালবাসে,,।কারণ অধরা তাদের একমাত্র মেয়ে,, তারা কখনোই চায় না,,অধরা তাদের ছেড়ে দুরে কোথাও চলে যাক,,আর শুভ্রকেও তারা নিজের ছেলের মত ভালবাসে,,তাই তারা মনে মনে চিন্তা করে তাদের দুজনকে বিয়ে দিয়ে এক করে দিয়ে নিজেদের কাছেই রেখে দিবে,,।

**এদিকে অধরা আমাকে টেনে তার রুমে নিয়ে আসে,,।আর আমাকে রুমে এনে একটা ধাক্কা মেরে ওর বিছানায় ফেলে দিয়ে রুমে দরজাটা বন্ধ করে দেয়,,।অধরা দরজা বন্ধ করে আমার দিকে রাগে ফুসতে ফুসতে এগিয়ে আসতে থাকে,,।তখন আমি বললাম,,,

আমি : *******চলবে***** ,

এমন আব্বু আম্মু থাকলে তো কোন কথাই নাই,,
তবে আগামী পর্বে দেখতে পারবেন, এই ছোট ছেলেটার কি অবস্থা করে, ডাইনিটা 😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here