**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**
writer : Akash khan
পার্ট : ১৩
**আপনার হয়তো ভাবছেন অধরার আব্বু,, আম্মু অধরার এমন ব্যবহারে তারা কোন রিয়েক্ট কেন করলো না,,।তাহলে চলুন জেনে আসি ভিতরের কাহিনী,,,। অধরা,, শুভ্রকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসার পরই অধরার আব্বু আম্মু হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে থাকে,,।কারণ অধরার আব্বু আম্মু আগে থেকেই মনে মনে চাইতো অধরাকে শুভ্রের সাথে বিয়ে দিতে,,।কিন্তু এতে অধরা রাজি হয় কিনা এটা নিয়ে তারা একটু চিন্তায় ছিল,,তবে এখন তারা নিশ্চিত যে অধরা শুভ্রকে ভালবাসে,,।কারণ অধরা তাদের একমাত্র মেয়ে,, তারা কখনোই চায় না,,অধরা তাদের ছেড়ে দুরে কোথাও চলে যাক,,আর শুভ্রকেও তারা নিজের ছেলের মত ভালবাসে,,তাই তারা মনে মনে চিন্তা করে তাদের দুজনকে বিয়ে দিয়ে এক করে দিয়ে নিজেদের কাছেই রেখে দিবে,,।
**এদিকে অধরা আমাকে টেনে তার রুমে নিয়ে আসে,,।আর আমাকে রুমে এনে একটা ধাক্কা মেরে ওর বিছানায় ফেলে দিয়ে রুমের দরজাটা বন্ধ করে দেয়,,।অধরা দরজা বন্ধ করে আমার দিকে রাগে ফুসতে ফুসতে এগিয়ে আসতে থাকে,,।তখন আমি বললাম,,,
আমি : আপু প্লিজ আমাকে কিছু করবেন না,,।আমাকে যেতে দিন,,,প্লিজ,,(মলিন কন্ঠে বললাম)
** আমি কথাটা বলতে বলতে অধরা এসে আমার মুখ টিপে ধরে ,, আর রাগী কন্ঠে বলল,,,
অধরা : আমার কাছে আসলেই তোর খালি যেতে ইচ্ছা হয়,,কেন আমাকে ছেড়ে কোথায় যেতে চাস ঐ অন্তরা শাঁকচুন্নির কাছে,,,(রাগে ফুসতে ফুসতে বলল)
আমি : না আপু,,, আমি অন্তরা আপুর কাছে কেন যাবো,,,।আর আপনি আমাকে সবার সামনে থেকে এভাবে টেনে আনাটা একদম ঠিক হয়নি,,।সবাই এখন আমাদের নিয়ে কী ভাববে,,,,,
**আমি কথাটা বলার সাথে সাথে অধরা আমাকে ঠা,,স ঠাস করে দুইটা থাপ্পড় মারে,,।তারপর রাগী সুরে বলল,,,,
অধরা : কুত্তা আজ বাদে কাল তোর বউ হবো আমি আর তুই বার বার আমাকে আপু ডাকছিস কেন,,? নিজের হবু বউকে আপু ডাকতে তোর লজ্জা করে না,,,,
আমি : এই আপনি কথায় কথায় এত মাড়েন কেন,,,? ইস আপনার হাতে থাপ্পড় খেতে খেতে আমার চাপার দাঁত গুলো নড়ে গেছে,,,(গালে হাত দিয়ে বললাম)
অধরা : আমার কথা না শুনলে তোকে শুধু থাপ্পড় কেন,,, তোকে তো আমি নিজের হাতে খুন করতেও দুইবার ভাববো না,,,(রাগী কন্ঠে বলল)
আমি : ও আল্লাহ আপনার যে জামাই হবে,,তার জীবনে সুখ নামে কোন বস্তু থাকবে না,,,আপনার অত্যাচারে তার জীবনটা পুরা তেজপাতা হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত,,, (একটু মুসকি হেসে বললাম)
**আমার কথা শুনে অধরা আমার শার্টের কলার ধরে টেনে আমার মুখটা তার মুখের কাছে নিয়ে আসে,,আর গম্ভীর সুরে বলল,,,,,
অধরা : আমার জামাই কে হবে মানে কী,,,,? আমার জামাই তো তুই হবি,,আর তেজপাতা করলে তোর জীবনটাই করবো আর ভালবাসায় ভরিয়ে দিলে তোর জীবনটাই দিবো,,,,সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না ,,,
আমি : হইছে আপনার এসব ফালতু কথা রাখেন,, আমাকে যেতে দিন,,,,,(একটু দমক দিয়েয়ে বললাম)
অধরা :কী আমি ফালতু কথা বলি,,? আর তোকে যেই কারণে রুমে নিয়ে আসলাম সেটাই তো হল না তাহলে তোকে কী করে যেতে দেই,,আগে তোর শাস্তিটা দিয়ে নেই,, (একটু হেসে বলল)
**অধরার কথা শুনে একটু ভয় ভয় লাগছে,, জানি না পাগলীটা এখন আবার আমার সাথে কী করে,,।তখন আমি বললাম,,,,
আমি : আমি কী করছি যে আপনি আমাকে শাস্তি দিবেন,,,?(ভিত কন্ঠে বললাম)
অধরা : আমার সামনে দাঁড়িয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার কথা বলাই তোর সবচেয়ে বড় অপরাধ। আর এটার জন্য তোকে শাস্তি পেতেই হবে,,কঠিন শাস্তি (দমক দিয়ে বলল)
আমি : এ্যা বিয়ে কী আমি ইচ্ছে করে করতে চাইছি নাকি যে আমি এটার জন্য শাস্তি পাবো,,।আপনার আব্বুই তো অন্তরাকে বলছে ওদের পরিবারের সাথে কথা বলবে,,সেখানে যদি আমার মতামত চাওয়া হয় তাহলে আমি রাজি না হয়ে কী করবো,,।আর আমি কোন দিন আপনার আব্বু আম্মুর মনে কষ্ট দিতে পারবো না,,,
অধরা : আমি এত কিছু জানি না,,আমি নিয়ে সেই ছোট বেলা থেকে তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে আসছি,, মনে মনে তোকে ভালবেসে আসছি,,।কিন্তু তুই আমার ছোট হবার জন্য মুখ ফোটে বলতে পারি নি,,।আর এখন যখন আমি তোকে বলছি যে আমি তোকে ভালবাসি আর সেটা জানার পরেও যখন তুই অন্যের কথায় বিয়েতে রাজি হয়ে যাস,,তাহলে সেটা তোর জন্য শাস্তি যোগ্য অপরাধ। আর সেটার জন্য তোকে শাস্তি পেতেই হবে নাহলে তোকে এখান থেকে কোথাও যেতে দিবো না,,(রাগী সুরে বলল)
**অধরার কথা শুনে এটা বুঝতে পারলাম এই মেয়ে কিছু একটা না করে আমাকে এখান থেকে ছাড়বে না,,।শাস্তি কিছু না কিছু দিবেই,,।তখন আমি বললাম,,,
আমি : তা কী শাস্তি দিবেন আমাকে,,,? (মলিন কন্ঠে বললাম)
**আমার কথা শুনে অধরা মুসকি হেসে দেয়,,।তারপর আবার হাসিটা আড়াল করে মুখের মাঝে রাগের একটা ভাব নিয়ে বলল,,,,
অধরা : তোর জন্য আজ সারাটা দিন আমি না খেয়ে আছি,,তোকে নিয়ে কত চিন্তা করছি,এখন আমার শরীরটা দূর্বল লাগছে,,।তার জন্য তোর ঐ গোপালী ঠোটের সাধ নিয়ে শরীরটা একটু চাংগা করবো,,।আর যতখন পর্যন্ত আমার সাধ না মিটে ততখন পর্যন্ত তুই কোথাও যেতে পারবি না,,।আর এটাই হল তোর শাস্তি,,
***এমন কথা শুনে এক লাফ দিয়ে অধরার পাশ থেকে ওঠে অন্য পাশে চলে যাই,,।কারণ আমি জানি অধরার যদি একবার সুযোগ পায় তাহলে আমার ঠোটের ১২টা বাজিয়ে ছাড়বে,,আর সেই সুযোগ তাকে কোন ভাবেই দেওয়া যাবে না,,,।তখন আমি বললাম,,,
আমি : না এই শাস্তি আমি মানি না,,।একে তো কোন অন্যায় করি নি তার ওপর আপনার এমন শাস্তি আমি মানতে পারবো না,,।এটা ছাড়া অন্য যে কোন শাস্তি দেন সেটা আমি করবো,,,,,
**আমার কথা শুনে অধরার কিছুখন আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কী যেন ভাবে,,।তারপর মুসকি হেসে বলল,,,
অধরা : এটা ছাড়া আমি যা বলবো সেটা করবি তো,,আর যদি না করিস তাহলে কিন্তু আমার আগের টাই মানতে হবে,,,
আমি : হুম বলেন,,ওটা ছাড়া যা বলবেন তাই করবো,,,?
অধরা : তাহলে আজ সারারাত আমার সামনে এক পায়ে কান ধরে দাড়িয়ে থাকবি,,এটাই তোর শাস্তি,,,
**অধরার কথা শুনে আমি অভাক হয়ে যাই,,,,,কারণ সারারাত এক পায়ে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকা কী করে সম্ভব,, আর আমার জন্য তো একে বারেই অসম্ভব। আমি জানি এটা অধরা ইচ্ছে করে করছে যাতে আমি এটা করতে না পারি আর ও আমার ঠোটের ১২টা বাজাতে পারে,,,।আমিও না ছড় বান্দা রাগ করে বললাম,,
আমি : আচ্ছা ঠিক আছে দরকার পড়লে সারারাত কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকবো,,, তাও আপনার কথা মানবো,,না,,
অধরা : এই নাহল আমার জুনিয়র বর,,একটু রাগ না থাকলে কী চলে নাকি,,।এবার শুরু করো দেখি কেমন জোর আছে,,,(মুসকি হেসে বলল)
**আমি আর কোন কথা না বলে এক পা তুলে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকি,।আর মনে মনে অধরার গুষ্ঠি উদ্ধার করতে থাকি,,রাক্ষসী আমাকে এমন শাস্তি দিচ্ছিস তোর কপালে জামাই মিলবে না,,।তোর ২২ বাচ্চা হবে,,, আরে ধোর বিয়ে না হলে আবার বাচ্চা হবে কোথায় থেকে,,সত্যি এই গুন্ডির অত্যাচারে আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেল,,।আর বড় আব্বু আর বড় আম্মু তারাই বা কেমন,,? আমাকে নাকি তারা অনেক ভালবাসে,, তাহলে কোথায় গেল তাদের ভালবাসা যখন এই গুন্ডি মেয়ে তাদের সামনে থেকে কলার ধরে নিয়ে আসছে,,।তখন তো চুপ করে ছিল,,।আমি যখন মনে মনে সবার ওপর নিজের রাগ জারছি ঠিক তখনি কে যেন দরজায় টুকা দিলো,,,।তখন রুমে ভিতর থেকে অধরা একরাশ বিরক্ত নিয়ে বলল,,,
অধরা : ঐ কে এভাবে বিরক্ত করছে,,,,(রাগ নিয়ে বলল)
**তখন বাহিরে থেকে অধরার আম্মু বলল,,,,
বড় আম্মু : অধরা মা দরজাটা খুল,, তোর সাথে কথা আছে,,,(নরম সুরে বলল)
অধরা : তোমাদের সাথে আমার কোন কথা নাই,,,।তোমরা কেউ আমার সুখ চাও না,,আমি তুমাদের সাথে কথা বলতে চাই না,,চলে আমার রুমের সামনে থেকে,,(রাগ করে বলল)
বড় আম্মু : আরে একবার দরজাটা খুলবি তো,,, আমরা কী বলি আগে সেটা শুন,,, পরে নাহয় আমাদের সাথে রাগ করে থাকবি,,,,,
**বড় আম্মুর কথা শুনে আমি বললাম,,,
আমি : আচ্ছা দরজাটা খুলে দেই,,দেখেন ওনারা কী বলে,,,
অধরা : তুমি একদম কান ছাড়বা না বাবু,,যেভাবেই আছো ঠিক সেভাবেই থাকো,, নাহলে পরে কী হবে বুঝতেই পারছো,,,।আমি গিয়ে দরজা খুলে দিচ্ছি,, ( বেশ রোমান্টিক ভাবেই বলল)
**অধরার কথা শুনে আমি মাথা নিচু করে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকি,,আর অধরা গিয়ে রুমের দরজা খুলে দেয়,,।আর অধরা দরজা খুলার সাথে সাথে বড় আম্মু, বড় আব্বু আর আয়ান রুমে আসে,,।আর তারা সবাই রুমে এসে আমাকে এই অবস্থায় দেখে মিটমিট করে হাসতে থাকে,। তখন বড় আব্বু বলল,,,
বড় আব্বু : শুভ্র কান ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়া,,,,
অধরা : না,, যদি কারো কথা শুনে কান ছেড়ে দিস তাহলে তোর খবর আছে,,শুভ্র।কেউ যেমন আমাদের ভালবাসা মানতে পারছে না,,তাহলে আমাদের মাঝে যেন না আসে,,,(আব্বুকে ইঙ্গিত করে বলল)
**অধরার কথা শুনে অধরার আব্বু আম্মু দুজনেই মুসকি হাসে,,।তখন অধরার আম্মু মিষ্টি হেসে বলল,,,
বড় আম্মু : নিজের হবু জামাইকে কান দরিয়ে রাখতে তোর লজ্জা করছে না,,,,জামাইকে সম্মান আর ভালবাসতে শিখ,,,(হেসে বলল)
**বড় আম্মুর কথা শুনে অধরা যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে,,।কারণ তার আব্বু আম্মু এত সহজে বিষয়টা মেনে নিবে সে কখনো কল্পনাও করতে পারে নি,,।আর এদিকে আমার অবস্থা যায় যায়,।কারণ এই গুন্ডি যদি আমার বউ হয় তাহলে আমি নিশ্চিত ওর হাতেই আমার মৃত্যু অনিবার্য। তখন অধরা বলল,,,
অধরা : আম্মু তুমরা শুভ্রকে মেনে নিছো আমার জন্য,,(খুশি হয়ে বলল)
বড় আম্মু : মেনে নিবো কী আবার,,আমরা তো অনেক আগে থেকে শুভ্র কে তোর জন্য মনে মনে ঠিক করে রেখে ছিলাম,,।কিন্তু তুই এতে রাজী কিনা সেটাই চিন্তা ছিল।আর তোর যেই একরোখা মেজাজ তাই ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারি নাই,,।কিন্তু এখন তুই যেহেতু রাজি তাহলে আমাদের আর আপত্তি কিসের,।,আমার ঘরের মেয়ে ঘরেই থাকবে এতেই আমরা খুশি,,,,(হেসে বলল)
**অধরা ওর আম্মুর কথা শুনে খুশিতে ওর মা বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়,,।তাকে দেখে মনে হচ্ছে আজ সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মেয়ে,,।কিন্তু এদিকে আমার মনে হচ্ছে এতদিন বাচার যতটুকু আসা ছিল সব এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেল,, মনে মনে চিন্তা করছি এই গুন্ডিকে বিয়ে করা আর নিজ ইচ্ছায় গলায় দড়ি দেওয়া সমান কথা,,।তবে মরবো যেহেতু বাঁচার জন্য নাহয় আন্দোলন করেই মরি,,।তখনি আমি বললাম,,,
আমি : বড় আব্বু, বড় আম্মু,, আমি তুমাদের কথায় মরতে রাজি আছি,,,কিন্তু তোমাদের এই গুন্ডি মেয়েকে বিয়ে করতে পারবো না,,,,(ভয়ে ভয়ে বলেই দিলাম কথাটা)
**আমি কথাটা বলেই একবার সবার দিকে তাকাই,,তখন দেখি আমার কথা শুনে অধরার মা বাবা মিটমিট হাসতেছে,,।আর অধরার আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,।তখনি অধরা বলল
অধরা :*******চলবে******
মুথ ফসকে বলে ফেলেছি, এবার কি অবস্থা করে আমি যানি না আগামী পর্বে দেখতে পারবেন, তরে এইটুকু বলবো, ২৪টা বাজাবে আমার, 😐