** সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**
writer :Akash khan
পার্ট : ৫
**কথাটা বলেই অধরা আমার হাত ধরে টেনে কলেজের বাহিরে নিয়ে আসে,,। তারপর সে নিজেই একটা রিকশা ডেকে সেটাতে আমাকে হাত ধরে টেনে তুলে,,,।সারা রাস্তা আমার হাত শক্ত করে ধরে রাখে যেন আমি পালাতে না পারি,,,।সারা রাস্তা বির বির করে কী যেন বলতে বলতে বাসার সামনে আসে,,,।রিকশা থেকে নেমেই আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে অধরা নিজের রুমে নিয়ে যায়,,,।আর অধরা আমাকে তার রুমে নিয়ে,,ভয়ংকর রাগী একটা ভাব নিয়ে বলল,,,
অধরা : তুই আমার সাথে মিথ্যা বলার সাহস কোথায় পেলি,,,,,(রাগে চিৎকার করে বলল)
**অধরার এমন ভয়ংকর রাগী চেহারা দেখে আমি যেন কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছি,,আর মনে মনে বলছি এই বুঝি বাগীনির হাতে আমার জীবনটা গেলো,,,।তবুও নিজেকে বাঁচানোর জন্য বললাম,,,
আমি : আপু আমি আপনার সাথে কী মিথ্যা বললাম,,,( নরম সুরে বললাম)
**আমি কথাটা বলার সাথে সাথে অধরা আমার গালে ঠা,,,,,স, ঠা,,,,স,ঠা,,,,,স, ঠা,,,,স করে চারটা চড় মারে,,,।আর তারপর আমার শার্টের কলার চেপে ধরে নিজের মুখটা আমার মুখের সামনে এনে রাগী কন্ঠে বলল,,,,
অধরা : তুই আমার সাথে কী মিথ্যা বলছিস তুই জানিস না,,।কাল রাতে তুই অন্তরার সাথে ফোনে কথা বলে আমাকে মিথ্যা বললি কোন সাহসে যে তুই শিমুলের সাথে কথা বলছিস,,,।তোকে আমি বার বার মানা করছি যে তুই কোন মেয়ের সাথে কথা বলবি না,, তাহলে কোন সাহসে তুই অন্তরার সাথে কথা বললি,,(রাগে আমার কলার ঝাকাতে ঝাকাতে বলল)
**অধরা আমার গালে এত জুরে চড় গুলো মারলো যে আমার চোখ দিয়ে মুহূর্তেই পানি চলে আসে,,। আর তখন আমি কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বললাম,,,,
আমি : আপু প্লিজ বিশ্বাস করেন,, আমি কখনো জানতাম না এটা আপনার বান্ধুবী অন্তরা আপুর নাম্বার ছিল,,।যদি জানতাম তাহলে কখনোই আমি আপনার কথা অমান্য করে অন্তরা আপুর সাথে ফোনে কথা বলতাম না,,,।(কথাটা বলেই নিষশব্দে কেঁদে দিলাম)
অধরা : তাহলেই তুই পরে কথা বললি কেন,,,? আর আমার সাথে মিথ্যা বললি কেন,,,? তুই জানিস না আমি মিথ্যা বলা পছন্দ করি না,,,(রাগী কন্ঠে বলল)
আমি : আমি যখন কল রিসিভ করার পর বুঝতে পারি এটা অন্তরা আপুর নাম্বার তখন বাধ্য হয়ে কথা বলছিলাম,,।কারণ তখন যদি ওনার মুখের ওপর কলটা কেটে দিতাম তাহলে ওনি কষ্ট পেতেন,,তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে কথা বলছিলাম,,।আর আমি জানি আপনি আমার কোন মেয়ে মানুষের সাথে কথা বলা পছন্দ করেন না,,,তাই সে ভয়ে আপনার সাথে মিথ্যা বলছিলাম,,,।দয়া করে আমাকে মাফ করে দেন।আমি কখনো আর কোন মেয়ের সাথে কথা বলবো না,,,,(নিচের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললাম)
**আমার কথা শুনে অধরা আমার শার্টের কর্লারটা ছেড়ে দেয়,,,।আর তখন অধরা আমাকে বলল,,,
অধরা : শুভ্র,, আমি সবার কাছ থেকে সব কথা শুনতে পারি,, কিন্তু তোর কাছ থেকে মিথ্যা কথাটা একদম শুনতে পারি না,,, সেটা তুই কেন বুঝিস না,,।তুই কোন মেয়ের সাথে কথা বললে আমি সহ্য করতে পারি না সেটা কেন বুঝিস না,,।তুই যদি কোন মেয়ের দিকে তাকাস তাহলে আমার মাথা ঠিক থাকে না,,এটা কেন বুঝিস না,,।তাই তোকে আবারও বলছি কখনো এমন কোন কাজ করবি না,,যেটার জন্য আমি আমার রাগটা কন্ট্রোল করতে না পারি,,।আমার সব বান্ধুবীকে সবসময় নিজের বোনের মত দেখবি অন্য কিছু যাতে তোর মাথায় না আসে,,।যদি কোন দিন আমি ভুল করেও শুনি তুই কোন মেয়ের সাথে অন্যকোন সম্পর্কে জড়াস তাহলে তোকে আমি নিজের হাতে খুন করবো সেটা তুই মাথায় রাখিস,,,(রাগী কন্ঠে বলল)
আমি : ঠিক আছে,,আপু এমন কিছু কোন দিন আপনি শুনবেন না,,।আর অন্তরা আপুকে তো নিজের বোনের নজরে দেখি,, যেমনটা আপনাকে দেখি নিজের বোনের নজরে,,,,,(ভিত কন্ঠে বললাম)
**কথাটা বলে মনে হয় আমি কোন বড় ধরনের ভুল করে ফেলছি,,।কারণ কথাটা বলার সাথে সাথে অধরা হাত দিয়ে আমার মুখে টিপে ধরে,,,।আর নিজের মুখটা আমার মুখের সামনে এনে গম্ভীর কন্ঠে বলল,,,,
অধরা : আমি তোর নিজের বোন মানে,,,? আমি কী তোর মায়ের পেটের বোন নাকি যে তুই আমাকে নিজের বোন মনে করিস,,।এই সব আবাল মার্কা কথা যদি আরেক বার আমার সামনে বলিস,, তাহলে মেরে তোর মুখ ভেঙ্গে দিবো কুত্তা কোথাকার,,,।আজ থেকে পৃথিবীর সব মেয়ে তোর নিজের মায়ের পেটের বোন, শুধু আমি ছাড়া,,,।সবাইকে আপু বলে ডাকবি,,, কিন্তু আমাকে আপু ডাকবি না,,,।বুঝলি,,( দমক দিয়ে বলল)
**অধরার কথা শুনে আমি মুহূর্তেই বোকা বনে যাই,,।এই মেয়ে বলে কী,,পৃথিবীর সবাই নাকি আমার মায়ের পেটের বোন শুধু ওনি ছাড়া,,,। সবাইকে আপু ডাকলেও তাকে নাকি তাকে আপু ডাকা যাবে না,,তাহলে তাকে কী বলে ডাকবো,,।তখন আমি বললাম,,,,
আমি : আপনাকে তো ছোট বেলা থেকেই আপু ডেকে আসছি,,তাহলে এখন আপু ডাকবো না কেন,,,? আর আপনাকে যদি আপু বলে না ডাকি তাহলে কী বলে ডাকবো,,,,?(তার চোখের দিকে তাকিয়ে নরম সুরে বললাম)
**আমার কথা শুনে অধরা মনে মনে বলল,,(তুই আমাকে বউ বলে ডাকবি,,জান, কলিজা আর কত নাম আছে সেগুলো বলে আদর করে ডাকতে পারিস না,,।কুত্তাটাকে ইচ্ছে করে গলা টিপে মেরে ফেলি,,।ওরে যে এত ভালবাসি সব সময় চোখে চোখে রাখি সেটা বুঝে না,,।সামনে আসলে শুধু আপু আপু করে হারামি কোথাকার,,,,)
**অধরা আপুর এমন চুপ করে থাকা দেখে আমি বললাম,,,
আমি : আপু কী হল বলেন,,,,?
**আমার কথা শুনে মনে হয় অধরা ভাবনার জগত থেকে বাস্তবে ফিরে আসে,,।তখন অধরা বলল,,,
অধরা : এখন থেকে কথায় কথায় আমাকে আপু বলে ডাকবি না,,।দরকার পড়লে নাম ধরে ডাকবি,,না হয় অন্যকিছু বলে ডাকবি,,,। আপু বলে ডাকলে তোর ভালো হবে না বলে দিলাম,,,,যা এখন রুমে গিয়ে রেস্ট কর,,আর আমি ডাকলেই আমার রুমে আসবি,,,(রাগী কন্ঠে বলল)
**অধরা কথা শুনে আমি তার রুম থেকে বেরিয় আসি,,।আর মনে মনে বলতে থাকি,, এই মেয়ে নিশ্চিত পাগল হয়ে গেছে,,।নাহলে আমাকে কেন বললো যে তার নাম ধরে ডাকতে,,।এটা কী কখনো সম্ভব নাকি,,আমি জীবনেও পারবো না তার নাম ধরে ডাকতে,,।এতে যা হবার হবে,,।আমি যখন এসব চিন্তা করে আমার রুমের দিকে যাচ্ছি,, ঠিক তখনিই অধরার আম্মু যাকে আমি বড় আম্মু বলে ডাকি,, তিনি বললেন,,
বড় আম্মু : কিরে শুভ্র তোরা এত তারাতারি বাসায় চলে আসলি যে,,,,(অভাক হয়ে বলল)
**বড় আম্মুর কথা শুনে আমি চিন্তায় পড়ে যাই,,কী বলবো ভেবে পাচ্ছি না,,।তখন আমি বললাম,,,
আমি : বড় আম্মু আজকে নাকি কলেজে কোন ক্লাস হবে না,,।কলেজে কিসের একটা মিটিং আছে তাই কলেজ ছুটি দিয়ে দিছে,,,,(মিথ্যা বললাম যাতে কিছু বুঝতে না পারে,,,,)
**তখন হঠাৎ করেই বড় আমার গালে হাত দিয়ে বলল,,,
বড় আম্মু : শুভ্র তোর গালে এই দাগ কিসের,,,।দেখে মনে হয় কেউ তোকে চড় দিছে তোর দুই গালে। আর তার হাতের ছাপ তোর এখনো গালে রয়ে গেছে,,,।সত্যি করে বল কার এত বড় সাহস যে তোর গালে এমন ভাবে থাপ্পর দিছে,,,(রাগে গিয়ে বলল)
**আসলে আমি তাদের নিজের ছেলে না হতে পারি,,কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা আমার গায়ে কখনো হাত তুলে নি,,।তাই আমার গালে এমন চড়ের দাগ দেখে বড় আম্মু রেগে যায়,,।এখন যদি আমি বলি যে অধরা আপু আমাকে এমন ভাবে চড় দিছে তাহলে বড় আম্মু গিয়ে অধরাকে বকা দিবে,,।আর কখনোই চাই না আমার জন্য অধরা বকা খাক,,,।তখন আমি বললাম,,,
আমি : আসলে বড় আম্মু তুমি যেমন ভাবছো ঠিক তা না,,।সকাল থেকে আমার এলার্জির সমস্যা হচ্ছে। মুখটা কেমন জানি চুলকাইতে,,,।তাই হয়তো মুখে চুলকানোর কারণে দাগ পরে গেছে,,।নাহলে আমাকে আবার কে মারবে,,,(হাসি মুখে বললাম)
বড় আম্মু : কিন্তু দেখে তো মনে হয় না,,এটা এলর্জির দাগ,,। মনে হয় হচ্ছে কেউ তোকে মারছে,,।সত্যি করে বল আমাকে কে মারছে তোকে,,,(দমক দিয়ে বলল)
আমি : বড় আম্মু তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছো,,আমাকে কেউ মারি নি,,।আমি এখন গিয়ে গোসল করলেই দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে,,,।আমি এখন রুমে যাই,,( হেসে বললাম)
বড় আম্মু : আাচ্ছা যা,,।রুমে গিয়ে রেস্ট কর,,,
**তারপর আমি সেখান থেকে দ্রুত রুমে চলে আসি,,।নাহলে বড় আম্মু ঠিকি বোঝে যাবে যে আমার গালের দাগ গুলো চড় মারার দাগ ছিল,,।আমি রুমে এসে সারাসরি চলে যাই গোসল করতে,,।গোসল করে রুমে এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ো দেখি সত্যি আমার দুই গালে এখনো অধরার হাতের চড় দাগ রয়ে গেছে,,।গুন্ডিটার হাতে এত শক্তি যে আরেকটু জোরে মারলে হয়তো আমার দাঁত পরে যেত,,,।
**তারপর আমি একটু রেস্ট নেওয়ার জন্য বিছানায় সুয়ে পড়ে,,,।কিন্তু বিছানায় সুয়ার পর কখন যে আমি ঘুমিয়ে পরি সেটা নিজেও জানি না,,।আমি যখন গভীর ঘুমে মগ্ন তখন হঠাৎ ঘুমের মাঝে আমি অনুভব করি কে যেন আমার গালে নরম হাতের কমল পর্স্শ দিয়ে আমার গালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,,।এটাকে আমি এতটা আমলে না নিয়ে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করি,,।কিন্তু না আস্তে আস্তে সেই নরম হাতের ছোয়াটা যেন আরো বাড়তে লাগলো,,।আমার গালে হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে আমার চুলে আস্তে আস্তে বিলি কেটে দিচ্ছে,,,। আর এতখনে আমার ঘুমটাও ভেঙ্গে যায়,,।আমি যখন চোখ খুলি দেখার জন্য সেই মানুষটাকে,, যে কে আমার এত যত্ন করে আদর দিচ্ছে,,।আর চোখটা খোলে আমি যাকে দেখলাম,,তাকে দেখে আমি অভাক হয়ে যাই,,।
**কারণ সেই মানুষ টি হল*
******চলবে******