স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর #লেখা_চাঁদনী_ইসলাম #পর্ব_১৫

0
656

#স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর
#লেখা_চাঁদনী_ইসলাম
#পর্ব_১৫

সদ্য প্রেমে পড়ার মতো সুন্দর অনুভূতি আর কিছু কি হতে পারে?মনের মধ্যে যে অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম হয় এই অনুভূতিটা কোন কিছুর সঙ্গে মিলানো যায় না।এই অনুভূতিটা খুব যতনে শুধু বুকের মধ্যে রোপণ হয়।বুক জুড়ে তিরতিরে এক শীতল হাওয়া বয়ে চলে।সেই সুন্দর অনুভূতিটাই যদি তাসের ঘরের মতো মুহূর্তেই ভেঙে গুড়িয়ে যায়।তাও সেইটা যদি কিশোরী মনের সাথে হয় সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তটা কাউকে বোঝানো যায় না।সদ্য ফোটা গোলাপের মতোই তরতাজা এক অনুভূতির জন্ম হয়।সেই অনুভূতিটা আলগোছে পুষে রাখে হৃদয় সনে,আর সেই সদ্য জন্মানো প্রেমঘন মনে যখন বৈশাখী ঝড় নেমে লণ্ডভণ্ড করে দেয় তখন ঠিক ভুল বিচার করার মতো মানসিকতা থাকে না। কিশোরী নিরুর ঠিক ভুল বিচার করার মতো ক্ষমতা নেই।যখন যেমন মনে এসেছে ভেবেছে সেইটাই করেছে।হুটহাট রাগ করেছে অভিমান জমিয়ে বুক ব্যাথার পাল্লা ভারি করেছে।যখন যা মনে এসেছে সেইটাকেই প্রশয় দিয়েছে।যেমন আজ নিরু ছাদ থেকে নিচে গিয়েই মামার সাথে কথাবার্তা বলে তার ছোট চাচাকে মামানির ফোন থেকে কল দিলো।নিরু চাচার ওখানে গিয়ে কয়দিন থাকবে এইটা বলে দ্রুত নিতে আসতে বলল।সকালের দিকে নিরুর চাচা কল করেছিলো সীতাকুণ্ডে আসছে একটা কাজে,নিরুকে সঙ্গে নিয়ে যাবে বলছিলো।আর দশদিন পরেই নিরুর ফুপির মেয়ে আয়েশার বিয়ে ওই জন্য অগ্রিম নিয়ে যেতে চাচ্ছিলো।আসাদ আসছে বলে নিরু সকালে যেতে রাজি হয়নি।কিন্তু এখন নিরু আর একটা মিনিট আসাদের সামনে থাকতে পারবে না।তাই রাতের বাসেই রওনা দেবে।তাই চাচাকে কল করে আসতে বলল।নিরু ব্যাগ গোছাচ্ছিলো তখন আমিনা বেগম নিরুর ঘরে এলেন,

“সকালেও বললি কয়দিন পর যাবি।আর হঠাৎ এখন যেতে চাচ্ছিস।তোর কি কিছু হয়েছে?”

“না মামানি দাদু দিদা সবাই চলে এসেছে।হঠাৎ করে সবাইকে মিস করছি। ”

“আমার কথা মনে পড়বে না বুঝি?”

নিরু মামানির গলা জড়িয়ে ধরে গালে গাল ঠেকালো।তারপর বলল, “তুমি তো সব সময় আমার সাথেই মিশে থাকো।তোমাকে আবার মনে পড়ার কি আছে?”

“মেয়ে তো দেখছি বড় হয়ে গেছে। অনেক কথা শিখে গেছে।”

” তোমার মেয়ে তো আমি।”

“হ্যাঁ এবার ছাড়।সন্ধ্যা হয়ে এলো গোছগাছ কতটুকু হলো,সব নিয়েছিস?”

“সব না নিলেও তোমরা তো বিয়ের আগে যাচ্ছোই। কিছু বাদ থাকলে জানাবো নিয়ে যেও।”

“হঠাৎ করে চলে যাচ্ছিস।বিয়ের জন্য শপিং করবি না?”

“আমার তো সব আছেই।”

“আছে তো কি হয়েছে।এখন তো মার্কেটে যাওয়ার ও সময় নেই।কিভাবে কিনে দিই বল দেখি।”

“তোমাকে ওইসব ভাবতে হবে না। দরকার হলে দাদু কিনে দেবে।”

” তা বললে হয়।আমার মেয়ের জিনিস অন্যদের আশায় ফেলে রাখবো কেন? সবাই নতুন কিছু পড়বে।”

“আমার তো অনেক নতুন জামাকাপড় আছে মামানি।ভাজ ও ভাঙা হয়নি।”

” ওতো পাকনামি করতে হবে না। আমি টাকা দিচ্ছি।চাচির সাথে দুই একদিনের মধ্যে গিয়ে কেনাকাটা করে নিবি।”

“ওইসব আমি পারবো না মামানি।দেখো ওনারা বলবে না আমি টাকার মানুষ হয়ে গেছি।শপিং করতে গিয়ে ওনাদের হাতে টাকা দিচ্ছি।”

“আমার মেয়েটা এতো বড় কবে হলো?”

“অনেক আগেই হয়েছে তুমি দেখোনি।”

নিরুর কথায় আমিনা বেগম হো হো করে হেসে উঠলেন। “আচ্ছা নিরু শোন তোকে কিছু করতে হবে না।আমরা তো হলুদের আগের দিন যাবো।আমি কিনে নিয়ে যাবো।”

“আমি তো বললামই লাগবে না মামানি।”

“লাগে কি লাগেনা আমি দেখবো।কিছু গোছানোর থাকলে বল গুছিয়ে দিই।”

“সব গোছানো শেষ মামানি।”

“রান্না ঘরে গিয়ে তো দেখলাম দুপুরের খাবারটাও খাসনি।এবার কোথায় মারবো বল?”

“মনেই তো ছিলো না।”

“তা মনে থাকবে কেন?দ্রুত খেয়ে নে।”

“খিদে নেই মামানি।”

“মাইর না খেতে চাইলে আমার আগে আগে গিয়ে খেতে বস।”

ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও ভাত নিয়ে বসতে হলো।নিরুর যে পানি ও গলায় আটকে আসছে।এইটা কিভাবে বোঝাবে মামানিকে।দুই লোকমা ভাত মুখে নিয়ে আর খেতো পারলো না।বাসে উঠে গা গোলাবে বলে নিরু না খেয়ে উঠে পরল।

নিরুর রাগ অভিমানের কারণ আসাদের অজানা। নিরুর রাগ ভাঙানোর পরিকল্পনা করে ছাদ থেকে বাইরে গেছিলো।আসাদ মনে মনে ভেবে নিলো যা হয় হবে আজকেই মনের কথা জানিয়ে দেবে।কিছু চকলেট ফুল আর আইসক্রিম নিয়ে আসাদ সন্ধ্যার পর বাসায় এলো।কিন্তু আসাদ জানে না আসাদের জন্য কি বিষন্ন মুহূর্ত অপেক্ষা করছিলো।আসাদের হাতে ফুল চকলেট আইসক্রিম দেখে আমিনা বেগম জিজ্ঞেস করলেন, “এই গুলো কি করবি?”

আসাদ বলল, “বন্ধুরা দিলো আম্মু।”

মিথ্যা বলে আসাদ নিজেই নিজের জিব কাটল।মানুষ প্রেমে পড়লে এই দশা হয় বুঝি?জায়গায় দাঁড়িয়ে মিথ্যা বলে ফেলল।কোন কিছু মনেই হলো না। আসাদ ওই গুলো নিজের ঘরে রেখে ড্রয়িংরুমে এসে সোফায় শরীর এলিয়ে দিয়ে বসল।আমিনা বেগম ও পাশে এসে বসলেন, “তোর কী শরীর খারাপ লাগছে? ”

“ঘুম ঘুম লাগছে আম্মু।মনে হচ্ছে কতদিন ঘুমাইনি।”

“এখন তো কোন কাজ নেই।ঘুমালেই পারিস।”

“অনেক বড় কাজ আছে আম্মু।কাজ শেষ করে তো ঘুমাবো।একবারে কাল দুপুর পর্যন্ত। ”

” এখন আবার কি কাজ?”

“ড্রয়িংরুমে বসে থাকা কাজ,কারো কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছিনা কেন আম্মু? তোমাদের চুপচাপ নিরুবতী কোথায়?এখনো ঘুমাচ্ছে নাকি?”

“বাসাতেই তো নেই। সন্ধ্যার আগে ওর চাচার সঙ্গে গেল।আয়েশার বিয়ে কয়দিন পর। ”

আসাদ আর কিছু বলল না,নিজের ঘরে গিয়ে লাইট বন্ধ করে শুয়ে পরল।আসাদের বুকের মধ্যে অসহনীয় এক যন্ত্রণা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগলো।নিজের মনে শত প্রশ্ন উঁকি দিলেও কোন উত্তর মেলাতে পারলো না। আসাদের ইচ্ছে হলো এখনই রাজশাহী গিয়ে নিরুকে পঁচা গর্তে চুবাতে।মন খারাপটুকু অভিমানে পরিনত হলো।ঘুম ঘুম চোখেও রাতে একটুও ঘুমাতে পারলো না।আসাদের ইচ্ছে হলো আয়েশার কাছে কল দিয়ে নিরুর কথা জিজ্ঞেস করতে,কিন্তু আবারও ভাবলো নিরু তো এখনো পৌছায়নি।অস্থির মনে কত কিছু ভেবে চলল। অস্বাভাবিক সব চিন্তা ভাবনায় রাত পার হলো।নিরুর প্রতি একবার মন খারাপ হলো তো আরেকবার অভিমানে জড়িয়ে রইল।

আসাদের ভেবে রেখেছিলো ছিলো আয়েশার বিয়েতে যাবে না।কিন্তু আয়েশার ফোন পেয়ে আসাদ আর না করতে পারলো না। আসাদ আর আয়েশা এক স্কুল থেকে এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলো।দুজনের ভালো বন্ধুত্ব ও আছে।তাই আয়েশার কথাতে রাজশাহী যেতেই হলো।হলুদের আগের দিন আসাদ বাবা মায়ের সাথে আয়েশাদের বাসায় গেল।নিরুর দাদা বাড়ীর সবাই পাঁচদিন আগে থেকেই চলে এসেছে।পুরো বাসা জুড়ে বিয়ে বাড়ির আমেজ।লাল নীল আলোয় রাস্তা থেকে বাসা পর্যন্ত রঙিন এক সাঁজে সজ্জিত হয়েছে।
আমিনা বেগমকে দেখে নিরু দৌড়ে এলো।এই মানুষটার প্রতি নিরুর অনেক মায়া।মায়ের পরে মামানিকেই নিরু সবচেয়ে বেশি ভালবাসে।এমন কি মামার চেয়েও বেশি ভালবাসে।
আমিনাদের নিয়ে আসা ব্যাগ গুলো নিরু একটা রুমে গিয়ে রাখলো।সারারাত আড্ডা জমালো।আসাদ নিরুর দিকে বার বার তাকাচ্ছিলো।কিন্তু একবারও নিরুকে তাকাতে দেখলো না।এইদিকে নিরু খুব সাবধানে আলগোছে আসাদকে দেখছিলো।যা আসাদ বুঝতে পারেনি।

আমিনা বেগম নিরুর জন্য হলুদে পড়ার জন্য শাড়ি সহ বেশ কিছু ড্রেস এনেছেন।নিরু আগে কখনো শাড়ি পড়েনি।এতদিনে বাসায় কোন বিয়ের অনুষ্ঠান ও হয়নি।আজ প্রথম নিরু শাড়ি পড়বে।আমিনা বেগম নিরুকে শাড়ি পড়িয়ে দিলেন।সবুজ পাড়ের বাসন্তী রঙের শাড়িটা নিরুর শরীরে অসম্ভব রকমের সৌন্দর্য সৃষ্টি করল।নিরুকে কিশোরী থেকে শাড়িতে এক মুহূর্তে নারী করে তুলল।যেন চোখ ফেরানো দায়।সব সময় চোখে দেখা পিচ্চি মেয়েটা এক মুহূর্তে নারীর রুপে ধরা দিলো।আমিনা বেগম মনে মনে আওড়ালেন, “এতো বড় কবে হলো তার সেই ছোট নিরু?সাথে মাশা আল্লাহ বলতেও ভুললেন না।”
মাঝখানে সিঁথি করে গাঁদা ফুলের সঙ্গে একটা গোলাপ ফুলের মালা সিঁথি বরাবর দিয়ে দিলেন।চোখে কাজল আর ঠোঁটে গাঢ় করে লিপস্টিক ও দিয়ে দিলেন।নিরু কখনো সাজে না।আজকের এই সাজে নিরুকে পুরো অপ্সরী করে তুলেছে।আয়নার সামনে যখন নিরু দাঁড়ায় নিজেকে দেখে অবাক হয়ে যায়।নিজের কাছে নিজেকে সুন্দর লাগার মতো সৌন্দর্য আর হয় না।নিরু ভেবে নিলো এখন থেকে মাঝে মাঝে সাজবে আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখবে।নিরু সুখ সুখ এক অনুভূতির সন্ধান পেল।

নিরু হলুদের মঞ্চে গিয়ে আয়েশার পাশে বসল।যাওয়ার পথে আয়েশার ভাই রুমনের সাথে নিরুর ধাক্কা লাগলো।রুমন যেন নিরুকে গিলে খাচ্ছিলো।ওর চোখের ভাষা এতো বিশ্রী। নিরু ওখান থেকে দ্রুত পায়ে মঞ্চের দিকে চলে এসেছে।সেই তখন থেকে নিরু খেয়াল করছে রুমন নিরুর দিকে তাকিয়েই আছে।নিরুর চোখ জোড়া যেই মানুষটিকে খুঁজে চলেছে তার দেখা নেই।কোথায় আছে মানুষটা?
আসাদের এতো লোকজন ভালো লাগছে না।ঘরে বসে গেম খেলছিলো।হলুদ ছোঁয়ানোর জন্য আমিনা বেগম আসাদকে ডাকতে গেল। “হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে এলো।হলুদ ছোঁয়াবি কখন তুই?”

“এখনই শেষ হয়ে যাবে? ”

“না তোর জন্য সারারাত বসে থাকবে।আয়েশা ডাকছে জলদি চল।”

“তুমি যাও আসছি।”

আসাদ মঞ্চের দিকটায় গিয়ে দাঁড়াতেই মাথাটা ঘুরে এলো।নিরু শাড়ি পরেছে?এতক্ষণ কোথায় ছিলো সে? নিজেকে শত শত গালি দিতে ইচ্ছে হলো।করেছে কি নিরু, আসাদকে এইভাবে খুন করার পায়তারা করেছে।আর সে খুন না হয়ে গেমে মজে ছিলো।নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হলো।চোখের পলক ফেলতে পারলো না। কতক্ষণ যে তাকিয়ে রইল আসাদের বোধগম্য হলো না।আমিনার ডাকে হুশ ফিরল, “তাড়াতাড়ি যা।”

আসাদ আয়েশাকে হলুদ ছোঁয়ানোর সময় একবারও নিরুর দিকে তাকালো না।আসাদ জানে নিরুর দিকে তাকালে চোখ ফেরাতে পারবে না। এখানে অনেক মানুষ এতো মানুষের মধ্যে হা করে তাকিয়ে থাকাটা কেমন দেখায়।আসাদ মন ভরে দেখবে আড়ালে দাঁড়িয়ে অনেক অনেক অনেকক্ষণ দেখবে।এখন একবারও তাকাবে না।পুরো পাগল পাগল লাগছে।”পিচ্চিটা এত বড় কবে হলো?”

আসাদ সত্যিই আয়েশাকে হলুদ ছোঁয়ানোর সময় একবারও নিরুর দিকে তাকালো না।সবাই হলুদ ছোঁয়াতে এসে আয়েশার সাথে নিরুদের ও মিষ্টি মুখে দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু আসাদ মিষ্টি দেওয়া দূরে থাক তাকিয়েও দেখলো না।নিরু আসাদের দিকে তাকিয়েই ছিলো।কিন্তু আসাদ তো একবারও তাকে দেখলো না। নিরুর খুব মন খারাপ হলো।তাকে দেখতে কি এতোই বিশ্রী লাগছে? যে তার আসাদ ভাই একবারও তাকালো না।নিরু আড় চোখে অনেকবার তাকালো। তাও আসাদকে একবারও তাকাতে দেখলো না।আয়নায় নিরু নিজেকে দেখেছে অনেক সুন্দর লাগছে।তাহলে কি নিরুর পছন্দ খারাপ?
আসাদ মঞ্চ থেকে নেমে আয়েশার বেশ কয়টা ছবি তুলল।আয়েশাকে ভালো করে তাকাতে বলল।কিন্তু নিরুকে কি একবারও বলতে পারতো না। “নিরু রে এইদিকে তাকা তোকে একটা ছবি তুলে দিই।” আসাদ ভাই কি একবারও বলতে পারতো না? এতো নিষ্ঠুর কেন হলো?
নিরুর আর এখানে বসতে ইচ্ছে হলো না। এখনই শাড়ি খুলে ফেলবে।এমন বিশ্রী সাঁজে আর বসে থাকবে না। যেই সাঁজে তার আসাদ ভাই তাকে দেখে না সেই সাঁজে থাকার তার দরকার নেই।
নিরু একমনেই আবার ভেবে নিলো। “আসাদ ভাই তাকে দেখবে কেন?আসাদ ভাইয়ের দেখার মানুষ তো আছেই।” নিরু ওখান থেকে উঠে এলো।রাত হয়েছে শাড়ি খুলবে।আর ভালো লাগছে না।সব কিছু অসহ্য লাগছে।

আসাদ আড়াল থেকে নিরুকে দেখছিলো।আসাদকে দেখার আগ থেকে তো নিরুর মুখটা হাসি হাসিই ছিলো।এখন এমন লাগছে কেন?আসাদকে দেখেই কি নিরুর হাসি উবে গেল?নিরুর সাথে কথা বলা দরকার।নিরুকে প্যান্ডেল থেকে বের হতে দেখে আসাদ পিছন পিছন গেল।নিরুকে পিছন থেকে বেশ কয়েকবার ডাকল কিন্তু নিরু শুনেও শুনল না।কিছুটা সামনে গিয়ে নিরুকে আর দেখা গেল না।’এই এক মুহূর্তের মধ্যে কোনদিকে গেল নিরু?’
প্যান্ডেলের পাশেই আসাদ নিচু স্বরে বলা কিছু কথার আওয়াজ পেল।আসাদ একটু এগিয়ে গেল।নিরুর কন্ঠ শুনে সামিয়ানা সরিয়ে আসাদ ওইপাশে চলে গেল।

“রুমন ভাই আমার হাতটা ছাড়ুন। আপনি আমাকে কিসের জন্য এইভাবে এখানে টেনে আনলেন?”

“তোমার সাথে কথা আছে অনিমা।”

“আমার হাত ছেড়ে কথা বলুন।”

“তোমার হাতটা খুব নরম।”

নিরু কিছু বলার আগেই আসাদ গিয়ে রুমনের গালে কষে থাপ্পড় দিলো।হ্যাঁচকা টেনে নিরুর হাত ছাড়িয়ে নিলো।আসাদ দাঁতে দাঁত চিবিয়ে নিচু স্বরে কঠিন গলায় বলল, “অনিমার দিকে চোখ তুলেও তাকাবি না।বিয়ে বাড়ি পরিবেশ ন*ষ্ট করলাম না।না হলে এখানেই পুঁ*তে দিতাম।”
নিরুর হাত ধরে আসাদ ওখান থেকে বেরিয়ে এলো।ফাঁকা জায়গায় এসে নিরুর সামনাসামনি দাঁড়িয়ে বলল, “আমার কথা তোর গায়ে লাগে না তাই না? এতো ডাকলাম তাও চলে এলি কেন? ভালো লাগে না আমাকে,না সহ্য করতে পারিস না? লোকের হাত ধরা খুব ভালো লাগে?”

নিরু আড়ষ্ট কণ্ঠে বলল, “আসাদ ভাই!”

“তোর কোন বিষয়ে আমার আর কথা বলার নেই।অনেক বড় হয়ে গেছিস। কাকে হাত ধরতে দিবি সেইটা তোর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।তোর কোন বিষয়ে আমি আসাদ আর নাক গলাবো না যাহ!”

আসাদ চলে যেতে গিয়েও আবার এক পা পিছিয়ে বলল, “আমার অনুভূতি টুকু যেদিন বুঝবি সেদিন আমাকে ডাকিস।তার আগে তোর আশপাশেও ছায়া দেখবি না।আমি আসার আগে যেভাবে হাসি খুশি ছিলি সেইভাবে থাক।”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here