স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর #লেখা_চাঁদনী_ইসলাম #পর্ব_৩৫

0
537

#স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর
#লেখা_চাঁদনী_ইসলাম
#পর্ব_৩৫

সেদিনের পর থেকে নিরুর সঙ্গে আসাদের অনেক দিন আর যোগাযোগ হয়নি।আসাদের পোস্টিং হয়েছে বগুড়ায়,আসাদ দুইদিন পর বগুড়ায় চলে যায়।আসাদ নানা ভাবে চেষ্টা করেছে নিরুর সাথে কথা বলার কিন্তু নিরু আর কথা বলেনি।নিরু আনাস মোল্লাকে কঠোরভাবে বলে দিয়েছে, আসাদ সহ আসাদের পুরো পরিবার যেন নিরুর সামনে আর না আসে।বিশেষ করে আসাদ যেন একদমই না আসে।আসাদরা কেউ এই বাড়িতে এলে নিরু আর এই বাড়িতে থাকবে না। তাই আনাস মোল্লাও বাধ্য হয়ে আসাদকে নিষেধ করেন।

আসাদ বাড়িতেও আর ফোন করে না।দুই একদিন পর পর আজিজুল হকের কাছে ফোন দিয়ে খোঁজ নেই।আমিনা নিজে কল দিলে আসাদ রিসিভ করে দুই একটা কথা বলে কেটে দেয়।সৌখিন জীবনটা এখন কেমন ছন্নছাড়া, বিদঘুটে, একঘেয়েমি হয়ে গেছে।

প্রায় একমাস পর হঠাৎ করে আনাস মোল্লা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে যান।ঘুমের মধ্যে স্ট্রোক করেন।রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দুইদিন পর ঢাকাতে নিয়ে যায়।আনাস মোল্লা নিরুকে ছাড়া ঢাকায় যাবে না। তাই নিরুর চাচা, চাচি, আর নিরু আনাস মোল্লাকে নিয়ে ঢাকায় যায়।অনেক কয়টা পরীক্ষা দেয়, রিপোর্ট পেতে দুইদিন লাগে।এর মধ্যে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়।ট্রেন বন্ধ,হরতালের জন্য বাস ও নেই।এম্বুল্যান্স ভাড়া করবে ভেবে নিরু আর নিরুর চাচা বাইরে আসে।এম্বুল্যান্স ভাড়া করে নিরুকে সামনে দাঁড়াতে বলে, নিরুর চাচা কিছু খাবার কিনতে যায়।
ভাগ্যক্রমে কাজের সূত্রে আসাদ ঢাকাতে এসেছিলো।পথে একজনের এক্সিডেন্ট হওয়াতে আসাদ সহ আসাদের ব্যাচমেট মিলে লোকটাকে মেডিকেলে নিয়ে আসে।ট্রিটমেন্ট করিয়ে ফেরার পথে দূর থেকে নিরুকে দেখতে পেয়ে আসাদ ছুটে আসে।এইভাবে আসাদকে দেখতে পাবে নিরু কল্পনাও করেনি।মনটা চাচ্ছিলো আসাদের বুকে ঝাপিয়ে পড়তে,মনকে বেড়ি দিয়ে নিরু আসাদকে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি এখানে,মামা মামানি ঠিক আছে? ”

আসাদ নিরুকে এইভাবে দেখে হতভম্ব হয়ে গেছে,কথা আটকিয়ে আসছে।তাড়াহুড়ো করে বলল, “ঠিক আছে,তুই ঠিক আছিস? দাদু ভালো আছে?”

“হ্যাঁ ঠিক আছি,দাদুকে চেকআপ করাতে এনেছি।”

“আমাকে মনে পড়ে না তোর?”

“এই পৃথিবীতে যার সাথে আমার একদিন দেখা হয়েছে,তাকেও কখনো ভুলবো না।আর আপনি তো..!”

“তোকে খুব মিস করি নিরু!”

“মনে করতে বলে কে, মনে করেন কেন আমায়?”

আসাদ নিরুর দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল, তারপর চোখে চোখ রেখে বলল, “নিরু বিয়ে করবি না আমাকে?”

নিরু মাথা নিচু করে বলল, “না আসাদ ভাই!এইসব কথা বাদ দেন।চাচা এখনই চলে আসবে।অন্যরকম ভাববে,আপনি চলে যান।”

“আমার কথা মতো তখন বিয়েটা করে রাখলে এমন হতো না।আমাদের এমন দিন আসতো না।আমার কথা কেন শুনলি না তখন নিরু?কেন বিয়েটা করে রাখলি না?”

“একদিকে তখন বিয়ে না করেই ভালো করেছিলাম।এখন তো প্রেমিক হারিয়েছি।প্রেমিক হারিয়েই এতো যন্ত্রণা!বিয়ের পর স্বামী হারিয়ে কত যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো বুঝতে পারছেন আপনি? আল্লাহ তো আমাকে বাঁচতে দিয়েছেন।প্রেমিকের শোকে অর্ধেক শেষ,স্বামীর শোকে অকালে জীবন হারাতাম।এই ভালো না বলেন?”

কথা গুলো বলে নিরু মৃদু হাসলো।নিরুর এই হাসির পিছনের বুকভাঙা কান্নাটা বুঝি আসাদ বুঝে গেল?নিরু অন্যদিকে ফিরে চোখের পানি মুছে মুচকি হেসে জায়গাটা ত্যাগ করলো।একমাত্র বিপদ ছাড়া, এই শহরে নিরু সজ্ঞানে কখনো আর পা দিবে না।

আসাদ নিরুর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলো,সেই ছোট টলোমলো চোখের নিরু এখন এতো কঠিন কথা বলে?
আসাদ অনেকটা অবাক হয়েই নিরুর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলো। পিছু গিয়ে হাতটা হ্যাচকা টেনে বুকের সাথে জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে হলো না।এই শান্ত চোখের নিরুর মুখে ধারালো কথা গুলো চরকির মতো আসাদের মস্তিষ্কে ঘুরতে লাগলো।

নিরু প্রথম বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষা দেয়নি।প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষাটা আনাস মোল্লা জোর করে দিয়ে আনিয়েছেন।এই একটা বছর নিজের শরীর মস্তিষ্ক অকেজো করে ফেলার পথে নেমেছে।

আসাদ তিনমাস পর পাঁচদিনের ছুটিতে বাড়িতে আসে।নিরুকে বোঝানোর জন্য কত রকম ফন্দি আঁটে,একটাও কাজে লাগে না।নিরুকে বোঝানো যায় না।নিরু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় হয়ে আছে।এতো শক্ত হয়ে আছে, কোনভাবে নিরুর সিদ্ধান্ত থেকে নড়ানো যাচ্ছে না।নরম মানুষ শক্ত হয়ে গেলে তাকে বোঝানো খুবই দুষ্কর! এইটা আসাদ ক্ষণে ক্ষণে টের পাচ্ছে।নিজের মায়ের উপর প্রচন্ড রাগ হয়।কিন্তু কিছু বলতে পারে না। রাগটা ভিতরেই মাটি চাপা দিয়ে রাখে।এই রাগ দেখার কেউ নেই,যার জন্য এতো রাগ সেই নিজের নয় এখন।
নিরুর সাথে আসাদের শেষ কথা ছিলো, “আমি আর দুটো দিন আছি নিরু।”
নিরুর বুকের মধ্যে কেঁপে উঠেছিলো।পুরো শরীর অসাড় হয়ে আসছিলো।তারপরও নিজের ব্যাথাটুকু আড়াল করে চুপ করে ছিলো।

তারপর থেকে নিরু নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করে,নিজের সাথে যত অন্যায় করেছে সেগুলো উপলব্ধি করে।নিজের যত্ন নিতে শুরু করে, সব কিছু পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেই।ঘরের জানালা খুলে রোদ বৃষ্টি উপভোগ করে।নতুন করে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়।কালিনারি শেফ কোর্সটির জন্য প্রস্তুতি নেয়।
এইসবের পিছনে আয়েশা মানসিক ভাবে সমর্থন করে গেছে।প্রথম দিকে আসাদের হয়ে বুঝিয়ে যখন নিরুকে কাবু করতে পারেনি,তখন থেকে হাল ছেড়ে নিরুকে মানসিক ভাবে সমর্থন করে এসেছে।

আসাদ এতদিন অপেক্ষা করে ছিলো এইটা ভেবে নিরু হয়তো ফিরবে,নিজে থেকে যোগাযোগ করবে। কিন্তু নিরু কিছুই করলো না।আস্তে আস্তে সব রকম পথ বন্ধ করে দিলো।আসাদের ক্ষমতা নেই রাজশাহী গিয়ে নিরুকে জোড়াজুড়ি করবে।কারণ এই কয় মাসে অসংখ্য বার নিরু বলেছে আসাদ যেদিন তার বাড়ির আশপাশে পা রাখবে, সেদিন নিরুর এই বাড়িতে শেষ দিন হবে।নিরু যতটা শক্ত হয়ে আছে।আসাদ কোনভাবেই মানাতে পারছে না।

এইদিকে আমিনা বেগম আসাদের সামনে কান্নাকাটি করে,বিয়ে করানোর জন্য জোড়াজুড়ি করে।আসাদকে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার ভয় দেখায়।এইগুলো প্রতিনিয়ত চলতেই থাকে।আজিজুল হকের সাথে আমিনার দিন দিন দূরত্ব বাড়ছে।এইসব নিয়েও আসাদের সামনে কান্নাকাটি করে,সংসারটা আসাদের জন্য শেষ হয়ে যাচ্ছে।শত কথা শোনাতে থাকে।আসাদ এই গুলো আর নিতে পারে না।

ছুটিতে বাড়ি না এসে একবারে রাজশাহী নিরুর কাছে যায়।আসাদ ড্রয়িংরুমে কাউকে না পেয়ে সোজা নিরুর ঘরে ঢুকে যায়।আসাদের বোধ বুদ্ধি এখন আর কাজ করে না।আসাদের মনে হয়, ‘দিন দিন মানসিক রোগী হয়ে যাচ্ছে।’
নিরুর ঘরে গিয়ে দেখে নিরু আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বের করছে।আসাদ নিরুর পিছনে দাঁড়িয়ে নিরু বলে ডাকে।নিরু আচমকা আসাদের কন্ঠ শুনে চমকে তাকায়,আসাদকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে কেপে ওঠে।

কাপা কাপা গলায় বলে, “আপনি এখানে?”

“হ্যাঁ আমি এখানে,আমাকে বিয়ে করবি কিনা বল? ক্লান্ত আমি,এতো নাটক,কাহিনি আর নিতে পারছিনা।”

নিরু মনে মনে ভাবে নরম হলে চলবে না।এইটা শেষ করা জরুরি। মাঝে মাঝেই এইসবের মুখোমুখি হতে নিরুর ও আর ভালো লাগে না। একটা মানুষ আর কত নিজেকে আড়াল করবে? যন্ত্রণার ভাগ কেউ নিতে জানে না,শুধু যন্ত্রণা দিতেই জানে।যখনই নিরু নিজেকে বোঝায়, মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় থাকে তখনই শুকানো ঘায়ে ক্ষত করতে আসে।একবার মা আসে,তো আরেকবার ছেলে।
নিজের আম্মুকে রাজি করিয়ে কাছে আসা যায় না? আমিনা বেগম ও নিরুর ঘাড়ে সব চাপিয়ে দিয়েছেন।কি করবি কর,না হলে মর! আবার উনার ছেলেও তাই, সব নিরুই সামলাবে?সব সিদ্ধান্ত নিরুর উপর।নাটকবাজ পরিবার থেকে নিজেকে একবারে গুটিয়ে নেওয়ায় শ্রেয়!

নিরু রাগী স্বরে বলল,” আপনার সাথে নাটক করছে কে?এইসব নিয়ে এখনো কেন পড়ে আছেন? দেশে মেয়ের অভাব পড়েছে?”

“নিরু সামলিয়ে কথা বল।”

“কী সামলিয়ে বলবো?আপনি এখানে কিসের জন্য এসেছেন,আপনাকে এক কথা আর কয়বার বলতে হবে?কানে যায় না আমার কথা,কি শুরু করেছেন?”

নিরুর চিৎকার শুনে আনাস মোল্লা ছুটে এলো,সুমাইয়া স্কুলে গিয়েছে।নিরুর চাচি ছোট ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গেছেন।আনাস মোল্লা নিরুর ঘরে এসে দেখে আসাদ এসেছে।
নিরু আনাস মোল্লাকে দেখে থমকালো না।বরং আরও রাগ নিয়ে আনাস মোল্লার দিকে চোরা ভাবে তাকিয়ে বলল, “দাদু উনাকে বলো তো,সামনে মাসে আমার বিয়ে না? বলো উনাকে তারপর আমাকে মুক্তি দিতে বলো।এতো মানসিক অশান্তি আর নিতে পারছিনা।”

আসাদ আনাস মোল্লার দিকে টলোমলো দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলো।আনাস মোল্লা নিরুর কথায় সায় দিয়ে আসাদকে হ্যাঁ বললেন।আসাদ নিরুর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে টলোমলো চোখ জোড়া নিয়ে নিরুদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো।
আসাদ যেই রাজশাহীতে এসে নিরুর সঙ্গে থেকে প্রাণ ভরে শ্বাস নিতো।আজ সেই শহরেই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।আসাদ ঢাকায় না গিয়ে সোজা বগুড়ায় চলে গেল।

মাস দুয়েকের মধ্যে আসাদ আর বাড়ি যায়নি।একদিন সন্ধ্যায় ডিউটি শেষ করে ফোন নিয়ে বসে ফেসবুকে নিউজ ফিড দেখছিলো।হঠাৎ করে নিউজফিডে সেই চিরচেনা হাসি মুখের নিরুকে হলুদ সাজে দেখে আসাদের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হলো।হাত ফসকে ফোনটা হাত থেকে পড়ে গেল।পুরো শরীর যেন অসাড় হয়ে আসছে।নিজেকে ধাতস্থ করার চেষ্টায় বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।
ফোনটা হাতে নিয়ে আবারও ছবিটা দেখলো। আয়েশা নিরুকে দু’হাতে পিছন থেকে জড়িয়ে আছে, আর নিরু হলুদ সাজে মাথাটা হালকা বাকা করে আয়েশার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি চাহনি দিয়ে হাসছে।এতো সুন্দর ছবি,এতো সুন্দর হাসি।নিরুর মুখে হাসি দেখে তো আসাদের কষ্ট হওয়ার কথা নয়,তাহলে বুকে এতো যন্ত্রণা হচ্ছে কেন?
আসাদের ভিতরটা ফুলে ফেপে চিৎকার করে বলে উঠলো, “আমার নিরুর তো অন্য কারো হওয়ার কথা নয়।”
আসাদ কাপা কাপা হাতে আয়েশার মেসেঞ্জারে মেসেজ লিখলো, “আয়েশা নিরুর কি বিয়ে?”
আসাদের চোখের জল মোবাইলের স্কিনে টপটপ করে পড়ছে।আসাদ অশ্রুসিক্ত চোখে নিরুর হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। পনেরো মিনিট পর আয়েশা ছোট করে একটা রিপ্লাই দিলো, “হ্যাঁ হয়ে গেছে।”

আসাদ বালিশে মুখ গুজে গুমরে কেঁদে উঠলো।
এই যন্ত্রণা কীভাবে সহ্য করবে আসাদ? নিরু কিভাবে পারলো এমনটা করতে?বুকের ভিতরটা এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যাচ্ছে।আসাদ সেনানিবাসের বাইরে গিয়ে ফাঁকা জায়গায় পা মেলিয়ে বসে শব্দ করে কেঁদে ফেললো।আমিনা বেগমকে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে, “আম্মু তুমি খুশি তো?নিরু আর তোমার ছেলের নেই।হারিয়ে গেছে নিরু!হারিয়ে গেছে।”
আসাদ উম্মাদের মতো মুখ চেপে গুমরে কাঁদতে লাগলো।জীবন আমাদের সাথে কেন এমন খেলা খেলায়?

আসাদ আমিনার কাছে ফোন দিয়ে যা মুখে এলো বলে গেল। “এই আম্মু তুমি খুশি তো?নিরুর বিয়ে হয়ে গেছে,আমার নিরু এখন আর আমার নেই।নিরুর আমার বউ হওয়ার কথা ছিলো,অন্যকারো না।সেই নিরুকে কেন অন্যকারো বউ হতে হলো? আমি আজীবনেও তোমাকে ক্ষমা করবো না আম্মু।”

আসাদ ফোনটা বুকে জড়িয়ে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে পরলো।চোখে জল নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল, “নিরু এই চোখের জল তোর টলোমলো স্বচ্ছ চোখে মানাতো,যেই জলটুকু শুধু আমার জন্য ছিলো।সেই জলটুকুতে তোকে খুব মানাতো।তুই কী দেখতে পাচ্ছিস না,এই যন্ত্রণার জল তোর আসাদ ভাইয়ের চোখে বেমানান।তুই কী দেখতে পাচ্ছিস না নিরু?”
জীবনে মাত্রাতিরিক্ত সুখ পেয়ে গেলে, জীবনের সবচেয়ে দামী জিনিসটাই বুঝি হারাতে হয়?

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here