স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর #লেখা_চাঁদনী_ইসলাম #পর্ব_৪৪

0
586

#স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর
#লেখা_চাঁদনী_ইসলাম
#পর্ব_৪৪

আসাদ বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে,মেধাক্রম অনুসারে পছন্দের ক্যাডার পেয়েছে।আজিজুর হকের ইচ্ছে ছিলো আসাদ পুলিশে আসুক,আসাদের ছোট থেকে ইচ্ছে ছিলো আর্মিতে যাবে।কিন্তু এস এস সি বা এইচ এস সি পরেই আসাদ চাকরিতে যাবে এইটা আজিজুর হক মানেনি।আজিজুর হকের কথা ছিলো পড়াশোনা শেষ করতে হবে তারপর অন্যকিছু,তাই আসাদ পড়াশোনায় গুরুত্ব দিয়ে এসেছে।এস আই এর মাঠের আগেই আর্মিতে জেসিও অফিসারের সার্কুলার পাওয়াতে আবেদন করে ,টিকেও গেছিলো।কিন্তু বাবার স্বপ্নটাও আসাদ মাথায় রেখেছিলো।নিজের লক্ষ্য অনুযায়ী এগিয়েছে।আসাদ পুলিশ ক্যাডারে সপ্তম হয়ে এসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ (এএসপি) হিসেবে গত সপ্তাহে যোগদান করেছে।
ভাগ্যক্রমে প্রথম পোস্টিং সীতাকুণ্ডতেই হয়েছে।এইটার জন্যই আসাদ অনেক বেশি খুশি।এমনটা আশা করেনি,বেশি আশা রাখলে বিফলে যায় বলে আসাদ প্রথম পোস্টিং যে সীতাকুণ্ডে হতে পারে ভেবেও দেখেনি।নিরু আসাদ দুজনেই ভীষণ খুশি।এতো যন্ত্রণার পর যে এমন সুখ আসবে দুজনের মধ্যেই অভাবনীয় ছিলো।

আজিজুর হক গত মাসে রিটায়ার করেছেন।আজিজুর হক আমিনা বেগম দুজনেই সীতাকুণ্ডে নিরুর কাছে চলে এসেছেন।
নিরু বেশ কিছুদিন থেকে আসাদের সাথে রেস্তোরাঁর বিষয়ে পরিকল্পনা করছে। দুজনেই নতুন কিছু করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছে।

মাসখানেক পর একদিন দুপুরে আসাদ ভাত ঘুম দেওয়ার পর,বিকেলে ঘুম থেকে উঠে দেখে নিরু পাশে নেই।আসাদ ঘুম থেকে উঠে আগে ফোন খোঁজে,ফোন হাতে নিয়ে দেখে চারটা পঁয়ত্রিশ বাজে।সময় দেখার পর-ই আসাদের হাতের তালুর দিকে দৃষ্টি পড়ে।পুরো হাতের তালুতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা,
“ইশ!এতো সুন্দর ইয়াং মানুষটা কত তাড়াতাড়ি-ই না বাবা হয়ে গেল।
হেই মিস্টার,”You are going to be a Father”

আসাদ ফোনটা রেখে এক নজরে হাতের তালুর দিকে তাকিয়েই আছে,চোখের পলক পড়ছে না। বুকের ভিতরটায় অদ্ভুত এক প্রশান্তি বয়ে চলেছে।আসাদ বিছানা থেকে নেমে নিরুকে উচ্চস্বরে ডাকছে।নিরুর কোন সাড়াশব্দ নেই।পুরো বাড়ি আসাদ নিরুকে খুঁজে পেল না।নিচে ড্রয়িংরুমেও নেই।রেস্তোরাঁয় গেছে ভেবে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলো।ফোনটাও রুমে রেখে এসেছিলো।ফোন নিতে রুমের দিকে আর গেল না।বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো।
সকালের দিকে আজিজুর হক আর আমিনা বের হয়েছেন।নিরুর কয়দিন থেকেই শরীরটা খারাপ লাগছিলো।প্রেগন্যান্সি টেস্ট করবে বলে করা হচ্ছিলো না। আজ দুপুরের পর টেস্ট করে ফেললো।নিরু বাড়ির সামনের দিকের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো।আসাদকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে দেখে উপর থেকেই নিরু কিছুটা উচু স্বরে বললো, “এই আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
আসাদ উপরের দিকে তাকিয়ে নিরুকে দেখে দ্রুত পায়ে উপরের দিকে গেল।আসাদ নিরুর কাছে গিয়ে নিরুকে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।অনেকক্ষণ নিরুকে জড়িয়ে ধরে কোন কথা বলতে পারলো না। নিরু নিজেকে একটু আলগা করে নিয়ে আসাদের দিকে ফিরলো।আসাদের মুখটা নিজের দু’হাতের মধ্যে নিয়ে আসাদের দিকে চোখ রেখে বলল, “খুশি নন আপনি?”
আসাদ নিরুকে বুকের সাথে জাপটে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।নিরু আসাদের অনুভূতি বুঝতে পেরে আসাদের পিঠে হাত রাখলো।আসাদকে স্বাভাবিক করার জন্য ঠাট্টার স্বরে বলল,

“কি একটা অবস্থা দেখেন তো,এই মুহূর্তে লজ্জা পেয়ে আপনার বুকে আমি মুখ লুকাবো কিনা,এইদিকে আপনিই মুখ লুকাচ্ছেন।”

আসাদ নাক টেনে নিরুকে আলগা করে বলল, “আমি লজ্জা পাচ্ছিনা,এই অনুভূতিটা আমি তোকে বোঝাতে পারবো না।সৃষ্টিকর্তা আমার সব শান্তি তোর মাঝেই রেখেছে।এতো সুখ নিরু,তোকে জীবনে না পেলে এতো সুখ আমি কোথায় পেতাম।আমি বাবা হবো,এই অনুভূতিটা কাউকে বোঝাতে পারবো না।”

“ইশ!মনে হচ্ছে উনি একাই বাবা হচ্ছেন,আমি কিছু হচ্ছি না।”

আসাদ নিরুর কপালে গাঢ় করে একটা চুমু খেলো।তারপর বলল, “তুই আমার সন্তানের মা,আমার পুরো পৃথিবীটাই তো তুই।”

এতো সুন্দর ইয়াং মানুষটা কত শিঘ্রই না বাবা হয়ে গেল।লোকে বুড়ো বলবে তো।”

আসাদ হেসে বলল, “বাবা হওয়ার পর আরও ইয়াং হবো দেখিস।আর কে বলেছে এতো শিঘ্রই, আমার একটা ক্লাসমেট মেয়ের বিয়ে দিবে বুঝলি।সেই তুলনায় কতটা পিছিয়ে পড়েছি।”

আসাদ ফ্লোরে বসে নিরুর পেটের কাছে মাথা রাখলো।নিরু আসাদের চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলল, “আপনি এতো পাগল কেন?”

“তুই প্রতিটা মুহূর্ত আমাকে পাগল করে রাখিস।তুই বিহীন মুহূর্ত গুলো খুবই ভয়াবহ নিরু।”

“আমি বিহীন একটা মুহূর্ত আপনাকে আর কাটাতে হবে না। ঠিক এইভাবেই গলা ধরে আজীবন ঝুলবো, আর আপনাকে জ্বালাতে থাকবো।”

“কি চায় তোর বল তো।আমাকে যেই উপহার দিয়েছিস,সেই উপহারের কাছে তোকে যা দেবো সব নগন্য, তারপরও কিছু একটা বল।”

“যার জীবনে আসাদ আছে, সেই জীবনে কি বাহ্যিক কিছু আর চাওয়ার থাকতে পারে? শুধু আমি না আপনিও আমাকে সবচেয়ে বড় উপহারটা দিয়েছেন।আপনি নিজেকেই পুরোটা দিয়ে দিয়েছেন। আমি আর কি চাইবো,শুধু আজন্ম ভালবাসা চাই!”

“এই ভালবাসাটা না দিতে পারলে আমিই তো শান্তি পাবো না,পুরো শেষ হয়ে যাবো।আম্মুদের জানিয়েছিস?”

“উহু!এখনো জানানো হয়নি।কীভাবে বলবো ভাবছি,লজ্জা লাগছে খুব।”

আসাদ ফোনটা এনে আমিনা বেগমের কাছে ফোন দিলো।আমিনা কল ধরতেই আসাদ বলল, “তোমাদের অপেক্ষার অবসান ঘটেছে আম্মু, ফাইনালি তোমাদের খেলার নতুন সঙ্গী আসছে।”

আমিনা বেগম উচ্ছ্বাস নিয়ে বললেন, “সত্য বলতেছিস বাবু,তোর তো সব সময় মজা করা লাগে।নিরুকে ফোনটা দে, আমরা এখনই বাড়িতে আসছি।”

“তোমার বউমার কাছে ফোন দিচ্ছি,আর এতো তাড়াহুড়ো করে আসতে হবে না।তোমার বউমা ঠিক আছে।আর আমি বাড়িতেই আছি।”

নিরু ফোন নিয়ে বলল, “মামানি বলো।”

“বাবু সত্য বলছে রে নিরু।”

“হ্যাঁ মামানি কিছুক্ষণ আগেই টেস্ট করলাম।তোমাকে সেদিন বললাম না শরীর খারাপ লাগছে।তুমি টেস্ট করাতে বললে।”

“আমরা এখনই বাসায় আসছি মা।তোর মামা ভীষণ খুশি, আমার পাশ থেকেই শুনছে।”

আমিনার পাশ থেকে আজিজুর হক ও কথা বললেন।এবং দ্রুত বাড়ি চলে আসছেন বললেন।আসাদ হওয়ার পর আমিনার মেজর অপা’রেশন হয়েছিলো।দ্বিতীয় বার কনসিভ করতে পারেনি।বাড়িতে ছোট একটা সদস্য আসছে।তার উপর আসাদের সন্তান, আমিনা আজিজুর হক দুজনেই ভীষণ খুশি।

পুরো বাড়ি জুড়ে আনন্দ খুশি,নিরুকে এখন আর কেউ রেস্তোরাঁয় বসতে দেয় না।আনাস মোল্লা আজিজুর হক মিলেই রেস্তোরাঁ দেখাশোনা করছেন।বাহারি বাহারির বর প্রথম দিনের মতোই দায়িত্ব পালন করছে।নিরু মাঝে মাঝে দেখতে আসে।ঘুরেফিরে দেখে,আসাদ সাথে করে নিয়ে আসে।এইভাবেই দিন গুলো যাচ্ছে।

রাকিব সীতাকুণ্ডে আসছে দশদিনের জন্য বন্ধুরা মিলে ক্যাম্পিং করবে।আসাদকে ছুটি নিয়ে রাখতে বলেছে।আসাদ সীতাকুণ্ডেই থাকে তাই ছুটির খুব একটা প্রয়োজন হয় না।তাই ছুটি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
রাকিব আসার আগে আসাদ ছুটি ও পেয়ে যায়। নিরুর প্রেগন্যান্সির আট মাস পার হয়ে গেছে।কিছুদিন পর নিরুর জন্মদিন,আসাদের অনেক দিনের পরিকল্পনা নিরুর পছন্দের সুপ্তধারা ঝর্ণার চূড়ায় উঠে নিরুকে চিৎকার করে উইশ করবে।নিরু একদিন এই চূড়ায় উঠতে চেয়েছিলো।কিন্তু আসাদ নিরুকে উঠায়নি।উপর স্টিমে উঠা ঝুঁ’কি হয়ে যায়।আসাদ একা অনেক কয়বার উঠেছে।কিন্তু নিরুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চায় না।তাই নিরুকে এবার চমকিয়ে দিবে।ক্যাম্পিং করা হবে নিরুকে চমকিয়েও দেওয়া হবে।
বন্ধুরা মিলে গতকাল যাবে, আসাদ ব্যাগ গুছিয়ে নেই।ব্যাগে কিছু মোমবাতি আর প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো নিয়ে নেই।কিছু ভিডিও ক্লিপ দিবে নিরুকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য,
পাঁচজন বন্ধু মিলে সুপ্তধারার উদ্দেশ্য রওনা দেয়।আসাদ প্রথমে ক্যাম্পিংয়ে যেতে রাজি ছিলো না।রাকিবের জোড়াজুড়ি তারপর নিরুর সায় দেওয়াতেই আসাদ সিদ্ধান্ত বদলায়।নিরু এক প্রকার জোর করে,কেননা কর্ম সুত্রে বন্ধু গুলো একেক জন একেক জায়গায়, চেষ্টা করলেও সব সময় এক হতে পারে না।আসাদ সব সময় নিজের কর্মে ব্যস্ত থাকে।যেটুকু সময় পায় নিরুর পিছনে সময় দেয়।এই দুই মিলিয়েই সময় গড়িয়ে যাচ্ছে।আজিজুর হক আমিনা বেগম সবাই নিরুর সাথে আছে বলেই আসাদ নিশ্চিত হয়ে বের হয়েছে।

সময় গুলো ভীষণ খারাপ যাচ্ছে,অকারণে মুহূর্ত গুলো বিষাক্ত লাগছে।চারপাশটা কেমন শূন্য যেন।নিরুর মনে হচ্ছে পৃথিবীটা কোথাও জানি থমকে আছে।আসাদের ফোনে সারাদিন কল দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু কল যাচ্ছে না।নিরু ম্যাসেঞ্জারে ঢুকে রাকিবের আইডি এক্টিভ দেখে রাকিবের কাছে মেসেজ পাঠালো।কিছু সময় পর রাকিব একটা ভাঙা মোবাইলের ছবি পাঠায়।মোবাইলের স্কিনটা দেখার মতো নেই।ভেঙে চুরে একাকার হয়ে গেছে।মোবাইলটা চিনতে নিরুর এক সেকেন্ড সময় লাগেনি।নিরুর বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে।কাপা কাপা হাতে মেসেজ টাইপ করার সময় রাকিবের দেওয়া একটা মেসেজ এলো। “আপু আসাদ খুব বাজে ভাবে আঘাত পেয়েছে।আসাদ আর নেই।”

নিরু রান্নাঘরে ছিলো,মেসেজটা দ্বিতীয় বার দেখার মতো সুযোগ আর হয়নি।নিরু মামানি বলে চিল্লিয়ে উঠে মাথা ঘুরে পড়ে যায়।কেবিনেটের সাথে মাথায় সজোরে আঘাত লাগে, প্রচুর র’ক্তক্ষরণ হয়।আমিনা রান্না ঘরে এসে দেখেন নিরু ফ্লোরে পড়ে আছে।সাদা ফ্লোর র’ক্তে মাখামাখি হয়ে আছে।আমিনা চিল্লিয়ে উঠে আজিজুর হককে ডাকেন।তারপর নিরুকে নিয়ে কাছের-ই একটা হসপিটালে ভর্তি করেন।

নিরু আট ঘন্টা পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরে,কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান ফিরলেও কথা বলতে পারছিলো না।কাঁপুনি উঠে আবার জ্ঞান হারাচ্ছিলো।আনাস মোল্লা, আজিজুর হক, আমিনা বেগম খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন।নিরুকে নিয়ে শহরের বড় হুসপিটালে ভর্তি করান।হঠাৎ করে নিরুর শরীরের এমন অবস্থা দেখে সবাই ঘাবড়ে যায়।ডক্টরে জানায় বাচ্চাটার অবস্থাও সংকটজনক প্রচুর র’ক্তপাত হয়েছে।নিরু খুবই ভয়ানক ভাবে আ’ঘাত পেয়েছে।

নিরুর আট ঘন্টা পর পুরোপুরি জ্ঞান ফিরলে আঁতকে উঠে আমিনার দিকে তাকিয়ে আসাদ বলে শব্দ করে কেঁদে উঠে।আমিনা নিরুর পাশে নিরুর মাথায় হাত রেখেই বসে ছিলেন।নিরুর আঁতকে উঠায় আমিনাও ভয় পেয়ে যান।চিৎকার করে আজিজুর হক ও আসাদকে ডাকেন।আসাদ আগেই দৌড়ে আসে।দৌড়ে আসতে গিয়ে বেকায়দায় দেওয়ালের কার্নিশে লেগে আসাদের কপালে ক্ষত হয়।ছাপ ছাপ র’ক্ত দেখা যায়।নিরু আসাদকে সামনে দেখে আসাদের দিকে তাকিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে। আসাদ নিরুর কাছে গিয়ে নিরুর মাথায় হাত রাখে,আসাদের চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে।নিরু জলে ভরা টলমলে চোখ দু’টো নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আসাদকে জিজ্ঞেস করল,

“আপনি ঠিক আছেন?”

“আমি ঠিক আছি নিরু,তুই এই অবস্থায় রান্না ঘরে কেন গেছিলি?তোকে আমি কতবার সাবধান করে গেলাম।”

“আপনার কোথায় লেগেছে,আপনি কি সত্যি আমার সামনে!”

“তুই ঠিক আছিস? কিসব বলছিস আমার কোথায় লাগবে,নিরু আমি পুরো ঠিক আছি।”

নিরু যন্ত্রণায় নিজের পেট চেপে ধরে।প্রচুর র’ক্তক্ষরণ হওয়ায় কিছুক্ষণের মধ্যে নিরুর অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে যায়।নিরুর শরীর আস্তে আস্তে নিস্তেজ হতে থাকে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here