নব_প্রেমের_সূচনা #Sumaiya_Akter_Bristy #পর্ব_২৮

0
340

#নব_প্রেমের_সূচনা
#Sumaiya_Akter_Bristy
#পর্ব_২৮

সমুদ্র ও আরভী একে অপরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই। সমুদ্রের চোখে এক অন্য রকম চাহনি। যে চাহনিতে স্পষ্ট নয় সমুদ্রের ভেতরকার প্রতিক্রিয়া। আর আরভীর চোখে যা স্পষ্ট তা হলো ক্রোধ। ক্রোধে মুখমণ্ডল খানিকটা রক্তিম বর্ণ ধারন করে আছে।

আরভী এবার চিৎকার করে বলে উঠলো,”বাইরে এতো লোক থাকতে সমুদ্র ভেতরে এলো কিভাবে? ফায়াজ বাকিদের ভেতরে আসতে বলো।”

আরভীর আদেশ অনুসারে ফায়াজ ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় বাকিদের ডেকে আনার জন্য।
ফায়াজ বের হতেই সমুদ্র বললো,”লাভ নেই কোনো, সবগুলোর হাড়গোড় ভেঙ্গে তবেই এসেছি।”

সমুদ্র এখনো আরভীর দিকে বন্দুক ধরে আছে। একবার বন্দুকের দিকে তাকিয়ে আরভী শান্ত স্বরে বললো,”আপনি আমার কোনো ক্ষতি করেন নি। উল্টো বাঁচিয়েছেন একবার। তাই আপনার সাথে আমি আপাতত ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছি না। চলে যান এখান থেকে।”

“নিজের ভাইকে নিয়ে তবেই যাবো।”

“তা তো সম্ভব নয় সমুদ্র মুনতাসিন। আজ যে আপনার ভাইকে মরতেই হবে।” বলে আরভী উল্টো ঘুরলো মিনহাজকে আক্রমণ করার জন্য। সমুদ্রের রিভলবার দেখে আরভীর ভয় করছে না। প্রয়োজনে আজ মৃত্যুকে বরণ করে নিবে আরভী। তবুও মিনহাজের অস্তিত্ব এই পৃথিবী থেকে মুছে দিয়ে তবেই ক্ষান্ত হবে।

আরভী সময় ব্যায় না করে মিনহাজের বুক বরাবর ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে। কিন্তু ছুড়িটি মিনহাজের মাংসপেশিকে স্পর্শ করার আগ মুহূর্তে সমুদ্র দ্রুত গতিতে আরভীর হাত ধরে ফেলে। আরভীর ধারালো ছুড়ি ও মিনহাজের বুকের মধ্যকার দূরত্ব অতি সামান্য। প্রায় ছুই ছুই অবস্থায় রয়েছে।

আরভী পরবর্তীতে কিছু করে উঠার পূর্বেই সমুদ্র নিজের জোর খাটিয়ে আরভীর হাত ধরে ছুড়ির হাতটি আরভীর গলার কাছে নিয়ে আসে। ফলস্বরূপ ছুড়িটা গিয়ে আরভীর গলায় ঠেকে। অতঃপর আরভীর আরেক হাত ধরে মিনহাজের থেকে আস্তে আস্তে সরিয়ে আনে।

এসবের মাঝেই এ ঘরে আবার ফায়াজ উপস্থিত হয়। হাঁপাতে হাঁপাতে কিছু বলতে নিয়েও থেমে যায়। এইরকম একটা পরিস্থিতি দেখে নিজের রিভলবার বের করে সমুদ্রের দিকে ধরে। তা দেখে সমুদ্র ক্রোধান্বিত স্বরে বলে উঠে,”মিনহাজকে মুক্ত কর ফায়াজ। অন্যথায় তোমার আরভী আপুর কিছু হয়ে গেলে তার জন্য আমি দায়ী থাকবো না। তুমি বলতে পারবে না আমি তোমাকে ওয়ার্ন করি নি।”

মিনহাজ এতোক্ষণ নির্বাক হয়ে সবটা দেখছিলো। সমুদ্র যে আরভীকে কিছু করবে না তা মিনহাজ বেশ ভালো করেই জানে। কেন যেনো আজ বুকের ভেতরটায় মারাত্মক ভাবে চিনচিন ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে। শব্দগুলো সব গলায় আটকে আসছে। মনে হচ্ছে মুখ থেকে আরেকটা শব্দ বের হলেই এতো দিন ধরে গোপন করে রাখা অনুভূতিরা বেড়িয়ে আসবে।

ফায়াজকে এখনো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সমুদ্র আরভীর হাত আরেকটু চেপে ধরে। তা দেখে ফায়াজ বলে উঠে,”করছি, আমি উনাকে মুক্ত করে দিচ্ছি।”

কথাটি বলে ফায়াজ মিনহাজের দিকে এগিয়ে যায়। আর সমুদ্র আরভীকে নিয়ে একপাশে গিয়ে দাঁড়ায়। আরভী নড়াচড়া করে নানা চাবে চেষ্টা করছে সমুদ্রের হাত থেকে মুক্তি লাভের আশায়। কিন্তু সমুদ্রের শক্তির সাথে কিছুতেই পেরে উঠছে না। যা দেখে সমুদ্র শব্দ করে হেসে বলে উঠে,”এই শক্তি আর দলবল নিয়ে আপনি এসেছেন মিনহাজকে মারতে? সিরিয়াসলি ললনা? আপনি এমন কাঁচা কাজ করবেন আমি কল্পনাও করতে পারি নি।”

“আর আমি কল্পনা করতে পারি নি আপনিও নাহিদ চৌধুরীর মতোই একজন হবেন। যদিও আপনাকে আমার সন্দেহ হতো। কিন্তু এতোটাও না।”

“আমি নাহিদ চৌধুরীর মতো নই ললনা। আমি সাধারণ একজন মানুষ।” কথাটি বলে সমুদ্র আরভীর হাত কিছুটা হালকা করে ধরে যেনো ছুড়িতে আরভীর গলার চামড়া কেটে না যায়।

আরভী চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সমুদ্রের হাত হালকা হয়ে আসতে দেখে। এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে হবে। নয়লে এতোদিন ধরে যে পরিকল্পনা আরভী করেছে তা নষ্ট হয়ে যাবে।

মিনহাজকে যে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে তা প্রায় খোলা হয়ে গেছে। আর এটা দেখে আরভী রাগে ফুসছে। মিনহাজকে এভাবে হাতের নাগালে পেয়েও কিছু করতে না পারলে এই আফসোস আরভীর সারা জীবন থেকে যাবে।

তাই আরভী এই মূহুর্তে সুযোগের সন্ধান করছে। সমুদ্রের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে কিভাবে মিনহাজকে শেষ করবে তার ছক মনে মনে সাজিয়ে নিচ্ছে।

এদিকে সমুদ্র আরভীকে শান্ত হতে দেখে গলা থেকে আরভীর হাত নিচে নামিয়ে ধরে আছে। আর আরভী এটারই সুযোগ নিয়েছে। পায়ে পরিহিত পেন্সিল হিল দিয়ে সমুদ্রের পায়ে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে পারা দেয়। সমুদ্র বুঝতে পারে নি আরভী এমন কিছু একটা করবে। ফলস্বরূপ ব্যাথায় সমুদ্রের হাত কিছুটা আলগা হয়ে আসে।

সমুদ্রের হাত আলগা হয়ে আসার সাথে সাথে আরভী সমুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে মিনহাজের দিকে এগিয়ে যায়।

সমুদ্র আরভীর চাল বুঝতে পেরে পায়ের ব্যাথা ভুলে দ্রুত আরভীকে আবার থামাতে যায়। এদিকে আরভীর মাথায় কেবল একটা বাক্য ঘুরছে। হেমন্তকে শাস্তি দিতে হবে।

সমুদ্র দ্রুত বেগে আরভীকে পাকরাও করে হেচকা টানে নিজের দিকে নিয়ে আসে। কিন্তু অসাবধানতার বসে আরভীর যে হাতে ছুড়ি ছিলো সে হাত সমুদ্রের উদরের বাম পাশে গিয়ে ঠেকে। সঙ্গে সঙ্গে সেই স্হান থেকে লাল বর্ণের তরল পদার্থ নির্গত হতে থাকে। আরভী বুঝতে পারে নি এমন কিছু হবে। যখন আরভীর চোখ সমুদ্রের উদরের ডান পাশে যায় আরভী আঁতকে উঠে। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সমুদ্রের দিকে। সমুদ্রকে আহত করার কোনো ইচ্ছে আরভীর ছিলো না। আরভী ভেবেছিলো সমুদ্রের সাথে পরে বুঝে নিবে সবটা।

সমুদ্র আঘাত পেয়েও টু শব্দ টুকু করলো না। এই ব্যাথা মুখ বুঝে সহ্য করে আরভীকে শক্ত করে ধরে রাখলো।

মিনহাজ রশির বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে আরভীর সামনে এসে দাঁড়ালে আরভী পাগলের মতো করে চিৎকারের স্বরে বললো,”সমুদ্র আমাকে ছেড়ে দিন। নয়তো আপনাকে শেষ করতেও আমি দ্বিধাবোধ করবো না।”

সমুদ্র কিছু বলবে তার আগেই মিনহাজ বলে উঠলো,”আমরা সবসময় যেমনটা চোখের সামনে দেখি তেমনটা সবসময় হয় না। দৃশ্যের আড়ালেও অনেক কিছু থেকে যায়। আর একপক্ষ থেকে জেনে সব ধোয়াশা পরিষ্কার হয় না। এই ধোয়াশা পরিষ্কারের জন্য প্রয়োজন উভয়পক্ষ হতে সত্যিটা জানা।”

“চুপ থাকুন আপনি। একদম চুপ। আপনার কোনো কথা আমি শুনতে চাই না। এখন ভালোমানুষি দেখানো হচ্ছে আমার সামনে? আপনি যদি কিছু না করেই থাকেন তাহলে সেদিনের পর পালালেন কেন? এন্ড ফোর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন, আপনার বাবা নাহিদ চৌধুরী নিজ মুখে স্বীকার করেছেন আপনি উনার কথায় সবকিছু করেছেন।” ক্রোধান্বিত স্বরে বলে আরভী।

“আমি বলছি না আমি নির্দোষ। কিন্তু এসবের সাথে সমুদ্র জড়িত নয়। ও তোমাকে ভালোবাসে। ওর জন্যই তুমি এখনো বেঁচে আছো। ও সবসময় আড়াল হতে বাবার থেকে সব খবর নিয়ে বাবার পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিতো। তোমাকে পথ থেকে সরানোর ভুলভাল পরিকল্পনা দিতো ও। তারপর নিজেই সেসব থেকে তোমাকে রক্ষা করতো।”

“মিনহাজ থাম। চলে যা এখন। আমি এদিকটায় দেখছি।” মিনহাজকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে সমুদ্র কথাটি বললো।

“যাচ্ছি। তবে শুনে রাখো। আমি তোমাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি সমুদ্রের ভালোবাসায় কোনো খাদ নেই। ও সত্যিই তোমাকে ভালোবাসে। আমি ওর চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি।”

“ভালোবাসার সংজ্ঞা আপনি জানেন তো হেমন্ত? উপস সরি, মিনহাজ। আরে আমি কাকে কি বলছি? এখানে এক প্রতারক আরেক প্রতারকের হয়ে কথা বলছে। গ্রেট!” তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো আরভী।

“তোমার মাথা ঠিক নেই এখন। সময় নাও। সবকিছু জানো। তারপর সিদ্ধান্ত নাও। আসি আমি। বিকেলে আমার ফ্লাইট। তারপর আমি আর বাবা সারাজীবনের জন্য এই দেশ ছেড়ে চলে যাবো। আশা করছি আর কখনো দেখা হবে না। আমার আর বাবার শাস্তি না হয় রবের উপর ছেড়ে দাও।” বলে মিনহাজ বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে। আর আরভী জোরাজোরি করতে থাকে সমুদ্রের হাত থেকে মুক্তি লাভের আশায়। মিনহাজ এতো সহজে ছাড় পেয়ে যাবে তা মানতে পারছে না আরভী।

এদিকে সমুদ্র আরভীকে নিজের বাম উদরের সামনে এনে রেখেছিলো বিধায় এই ক্ষত মিনহাজ বা ফায়াজের চোখে পড়ে নি এখন পর্যন্ত।

মিনহাজ চলে যাওয়ার পর যেনো আরভীর পাগলামো বেড়ে গেছে। সমুদ্রের হাত থেকে ছুটার জন্য একনাগাড়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফায়াজ চুপচাপ এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সুযোগ বুঝে সমুদ্রকে শুট করে আরভীকে সমুদ্রের হাত থেকে ছাড়াবে কিনা তাই ভাবছে।
অপরদিকে সমুদ্র ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়ছে। রক্তে উদরের বামপাশের শার্ট ভিজে রক্ত এবার নিচে গড়িয়ে পড়ছে। সমুদ্র তখন গাড়িতেই চাবি রেখে এসেছিলো। হয়তো এতোক্ষনে মিনহাজ অনেক দূরে চলে গেছে। এই ভেবে সমুদ্র আরভীকে ছেড়ে নিচে বসে পড়ে।

আরভীকে ছাড়তে দেখে ফায়াজ রিভলবার সমুদ্রের দিকে ধরে। কিন্তু সমুদ্রকে এরকম রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে রিভলবার আবার নামিয়ে নেয়।

আরভী সমুদ্রের সামনে বসে সমুদ্রের শার্টের কলার টেনে ধরে। সমুদ্রের চোখে চোখ রেখে রাশভারী কন্ঠে বলে উঠে,”আপনার জন্য আমি আমার বাবার খুনিদের শেষ করতে পারি নি। তাদের ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞা করেও পারি নি তাদের ধ্বংস করতে। এবার তাদের হয়ে আপনাকে মরতে হবে।”

শেষোক্ত কথাটি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বলে আরভী।

আরভীর কথা শেষ হতেই সমুদ্র আরভীর ডান গালে কষে এক থাপ্পড় মারে। আরভী সহ ফায়াজ অবাক হয়ে যায়। যেখানে এই থাপ্পড়টা সমুদ্রের গালে পড়ার কথা ছিলো সেখানে থাপ্পড়টা পড়লো আরভীর গালে।

“ও ম্যাডাম, রাস্তার সস্তা আশিক ভেবেছেন আমাকে? আপনার মনে হয় আমি আপনার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবো? যদি এমন মনে হয় তাহলে একটা কথা ভালোভাবে জেনে রাখুন, আপনার প্রেমে আমি শতশত মানুষকে মারতে প্রস্তুত তবে নিজে মরতে নয়। না আপনি আমার হবেন, না আমি আপনাকে অন্য কারো হতে দিবো। যদি মরতেই হয় তবে আগে আপনাকে মারবো।”

আরভী গালে হাত দিয়ে বসে আছে। রাগে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে শুরু করেছে। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে এই কান্না ও ক্রোধ নিবারনের জন্য সামান্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সমুদ্র এবার ফ্লোরে শুয়ে চোখ যুগল বন্ধ করে বললো,”মিনহাজ ঠিক বলেছে ফায়াজ। ললনাকে পাগলের ডক্টর দেখানো প্রয়োজন। কেননা আমি প্রথম এসে দেখেছিলাম ললনা একদম শান্ত হয়ে ছিলো। যেখানে ললনার তখন ক্রোধে গর্জে উঠার কথা। আর একটু আগে হুট করে আগ্নেয়গিরির মতো বিস্ফোরিত হলো। পাগলামো করলো, আমাকে রক্তাক্ত করলো। এখন আবার চুপ করে রাগে কান্না করছে।”

প্রতিত্তোরে কেউ কিছু বললো না। পরিবেশ একদম শান্ত দেখে সমুদ্র চোখ মেলে বললো,”আমাকে হসপিটালে নিয়ে যাবে নাকি এখন ললনাকে খুন করে আমিও চিরনিদ্রায় যাবো?”

“আপু কি করবো?” ফায়াজ বিভ্রান্ত হয়ে আরভীকে প্রশ্ন করলো।

“হসপিটালে নিয়ে চলো। উনাকে বেঁচে থাকতে হবে। অনেক কিছু দেখানোর বাকি যে।” কোনো রকমে প্রতিত্তোরে বললো আরভী।

——-

ফায়াজ গাড়ি চালাচ্ছে। আর পেছনে আরভী ও সমুদ্র বসে আছে। সমুদ্র বসে আছে বললে ভুল হবে। গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে সিটের উপর এক পা তুলে হাটু ভাজ করে শুয়ে আছে। আর একধ্যানে আরভীর দিকে তাকিয়ে আছে।
অপরদিকে আরভী জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে। সমুদ্রের প্রতি রাগটা ক্ষণে ক্ষণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ সমুদ্রের জন্যই এতো বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে। এর মাশুল তো সমুদ্রকে দিতেই হবে।

আরভীকে চিন্তায় মগ্ন দেখে সমুদ্র শান্ত স্বরে বললো,”ললনা কিছু সত্যি আপনাকে জানানো প্রয়োজন।”

“প্রতারকের কোনো কথা আমি বিশ্বাস করি না। আর না শুনতে ইচ্ছুক।” সমুদ্রের দিকে না তাকিয়েই প্রতিত্তোরে বললো আরভী।

“আপনি তবে কানে তুলো গুজে বসে থাকুন। অনেক কষ্ট হচ্ছে। ব্যাথা করছে বামদিকটায়। এখন না বললে শান্তি পাবো না। ধ্যান অন্যদিকে ডাইভার্ট করলে হয়তো কিছুটা ব্যাথা ভুলে থাকা সম্ভব।”

আরভী চুপ করে রইলো। কোনো প্রতিত্তোর করলো না। তা দেখে সমুদ্র আবার বলতে শুরু করলো,”আপনার মনে আছে একবার আপনার গাড়ি ব্লাস্ট হয়েছিলো? সেদিন কিন্তু আমি জেনে বুঝেই আপনার গাড়ির টায়ার পাঞ্চাল করেছিলাম।”

“ধন্যবাদ। সেদিন আপনি আমাকে বাঁচিয়ে ছিলেন আর আজ আমি আপনাকে বাঁচাবো। হিসাব বরাবর।”

“সেদিন হসপিটাল থেকে সাংবাদিক অরুনের থেকে আড়াল হতেই পেছনের গেট দিয়ে বের হয়েছিলাম। কারন অরুন জানতো আমি কে।”

“সন্দেহ হয়েছিলো আপনার উপর।”

“নির্বাচনের আগে আপনার উপর দুবার আক্রমণ করা হয়েছিলো। কিন্তু ওরা আপনার কাছে পৌছানোর আগেই সব গুলোকে আমি আর তন্ময় মিলে মেরে হাড়গোড় ভেঙ্গে দিয়েছিলাম।”

“এসব বলে সহানুভূতি অর্জন করতে চাচ্ছেন?” বলে সমুদ্রের দিকে তাকালো আরভী। আরভীর চোখে এখনো পানি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

সমুদ্র আরভীর চোখে পানি দেখে আরভীর প্রশ্নের উত্তর দিলো না। চুপ করে চোখ বুঝে শুয়ে রইলো। মনে হচ্ছে বামপাশটা ধীরেধীরে আসাড় হয়ে আসছে।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here