চন্দ্রকলা #লামিয়া_ইসলাম #পর্ব_৪

0
306

#চন্দ্রকলা
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_৩/৪

-খারাপ কিছু ঘটেছে বেপারী বাড়িতে।

-কি হয়েছে?

-হবু বৌমা নাকি হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। কিছুতেই জ্ঞান ফিরছে না।

-তাহলে সামিরাকে ওই বাড়িতে পাঠাও। ও গিয়ে দেখে আসুক। কি হয়েছে?

ছেলে সাফোয়ানের কথা শুনে শিরিন বেগম তার ভাইজি ডা.সামিরাকে চন্দ্রের বাড়িতে পাঠালো। সামিরার সাথে সাহেদ ও গেলো। সামিরা আর সাহেদ বেপারী বাড়িতে ঢুকতেই দেখলো চন্দ্রের রুমের সামনে অনেক ভিড়। সামিরা ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পেলো শাহনাজ চন্দ্রের মুখে পানির ছিটা দিচ্ছে।

-আম্নেরা কারা? চিনলাম না তো। না বইলাই মাইয়া মানুষ ভরা ঘরে একটা পোলা মানুষ সহ ঢুইকা পড়লেন।

-আমরা জমিদার বাড়ি থেকে এসেছি। আমি শিরিন বেগমের ভাইজি সামিরা। আর ও জমিদার বাড়ির ছোট ছেলে সাহেদ। এবার নিশ্চয়ই আমাদের পরিচয় পেয়েছেন।

-বরযাত্রী কি এইর মধ্যেই আইয়া পরসে?

-না। আমি আপনাদের বাড়ি চিনি না তাই সাহেদ আমাকে নিয়ে এসেছে। আমি একজন ডাক্তার। চন্দ্রর কি হয়েছে দেখতে এসেছি।সামনে থেকে সরুন। আর রুম থেকে সবাই বের হোন তাড়াতাড়ি।

সামিরা একজন ডাক্তার এই কথা শুনেই রিমা আর রাহেলা বানুর মনে কামড় দিয়ে উঠলো। তারা ভয় পেতে লাগলো কেউ যদি তাঁদের করা নিকৃষ্ট কাজের কথা জেনে যায়। একে একে সবাইকে বের করে দিয়ে সামিরা চন্দ্রের হাতের পালস পরীক্ষা করলো। তার সাথে আনা ডাক্তারি ব্যাগ থেকে প্রেসার মেশিন বের করে প্রেসার মাপলো। তারপর ব্যাগ থেকে একটা ইনজেকশন বের করে চন্দ্রের শরীরে পুশ করলো।

-চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। ও হয়তো বিয়ে নিয়ে চিন্তায় ছিল। তাই প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। একটা ইনজেকশন দিয়েছি। কিছুক্ষনের মধ্যেই জ্ঞান চলে আসবে। আর প্রেসার ও লো। হয়তো তার জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। কিছুক্ষন রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে। আমি এখানেই আছি। দরকার পড়লে আমাকে ডাকবেন।

চন্দ্র ঠিক আছে শুনেই সাহেদ ফোনে করে সাফোয়ানকে জানাতে গেলো। আর সামিরা চন্দ্রের ঘর থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে চন্দ্রদের পুকুরপাড়ে গেলো।

——————————–

-মা। তোমার হবু বৌমা ঠিক আছে। লো প্রেসারের জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো। আর কিছুই না।

– আলহামদুলিল্লাহ। তোদের বিয়ে ঠিকমতো সম্পন্ন হলে আমি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বো। আর বৌমার নাম একটা গরু সদকা দিবো। এখন যা যা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। জুমার নামাজ পরে বেপারী বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিবি।

সাফোয়ান তার মায়ের কথায় সায় জানিয়ে চলে গেলো। শিরিন বেগম বধূ বরণের জন্য জিনিসপত্র নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো।

চন্দ্রের শুধুমাত্র প্রেসার লো হওয়ার জন্য অজ্ঞান হয়ে গেছে শুনে রিমা আর রাহেলা বানু যেন চমকে গেলো। তারা একে অপরের দিকে অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকালো। রাহেলা বানু রিমাকে টেনে তার ঘরে নিয়ে এলো।

-এই তুই ঠিকমতো আনছিলি কীটনাশকের বোতলটা। না অন্য বোতল লইয়া আইসোস।

-আমি ঠিক বোতলটাই আনছিলাম। জানিনা ওই কিভাবে বাইচ্চা গেলো। চলো মা এখন অন্যভাবে চেষ্টা করি ওরে মারার।

-পাগল হইসোস।অহন আর কিছুই করার যাইবো না। দেহস নাই ওর শশুর বাড়ির লোক আইয়া পড়ছে। ওই মাইয়াডা নাহি ডাক্তার। এখন কিছু করলে ধরা খাইয়া যামু। এখন ওই টাহাডা লইয়াই খুশি থাহোন লাগবো।

সামিরা পুকুর পাড়ে একটা সিঁড়ির ওপর বসে আছে। হঠাৎ করে সে বুঝতে পারলো তার পিছে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সে তাকাতেই দেখলো সাহেদ তার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে।

-তুই এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?

-না দেখলাম তুমি একা এভাবে বসে আছো। তাই তোমাকে সঙ্গ দিতে আসলাম।

– দেখ সাহেদ তুই যা চাচ্ছিস টা কখনো সম্ভব না। আমি তোর থেকে বয়সে ২ বছরের বড়। আমাদের পরিবার বা সমাজ কখনো এই সম্পর্ক মানবে না। তাই শুধু শুধু ঝামেলা করিস না।

-কেন মানবে না? আমি তো তোমাকে প্রেম করতে বলছি না। তুমি বললে কালই তোমাকে আমি বিয়ে করবো। আমি সাহেদ চৌধুরী একবার যা বলি আমি তাই করি।

সামিরা বুঝতে পারলো সে সাহেদকে যতই বলুক সাহেদ ওর কথা শুনবে না। গত ৩ বছরে ও অনেক বার সাহেদ কে বলেছে কিন্তু কোনো লাভ নেই। সাহেদ তার কথায় অনড়। তাই সে অগত্যা সেখান থেকে উঠে চলে গেলো। আর সাহেদ তার ভগ্ন হৃদয় নিয়ে পুকুরে ঢিল ছুড়ে তার দুঃখ বিলাস করতে লাগলো।

দুপুর তিন টায় বরযাত্রী এসে চন্দ্রদের বাড়িতে পৌছালো। ইতোমধ্যেই চন্দ্রের জ্ঞান ফিরেছে। চন্দ্রের জ্ঞান ফিরতেই অনিমা চন্দ্রকে আবার পরিপাটি করে দিলো। বিকাল তিন টায় ১০ লক্ষ ১ টাকা দেনমোহর ধার্য করে চন্দ্র জমিদার সাফোয়ান চৌধুরীর সাথে চিরজীবনের বাঁধনে বাধা পড়লো। বিদায় বেলায় চন্দ্র তার বাবার কাছে গেলো। তার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই তার বাবা কিরকম যেন করছে। এমন করছে যেন কিছু বলার চেষ্টা করছে।

#চন্দ্রকলা
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_৪

-সাফোয়ান চৌধুরীর ভাষ্যমতে আপনাকে নাকি সর্বপ্রথম লাশের পাশে দেখা গিয়েছিলো। যতদূর জানি আপনি আজকেই এ বাড়িতে নতুন এসেছেন। তাহলে এই বাড়ি সম্পর্কে আপনি সেরকম কিছুই জানেন না।কিন্তু এত রাতে আপনি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কেন?

-সামিরা আপা আমাকে আমাকে রুমে রেখে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে আমি হঠাৎ করে ঘুমিয়ে যাই। হঠাৎ করে একটা শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আর রুম থেকে বের হতেই দেখি আমার পায়ের সামনে কারো লাশ পরে আছে। তারপরে আমার আর কিছুই মনে নেই।

-ঠিক আছে। আপনি এখন আসতে পারেন।

আরো বেশ কিছু তদন্ত করার পর পুলিশ অফিসার সোফা থেকে উঠে সাফোয়ানের কাছে এগিয়ে এসে বললো,

-চৌধুরী সাহেব আমার আজকের কাজ শেষ। আমি আজ চলে যাচ্ছি। তবে দরকার পড়লে আবার আসবো। আর যতদিন না তদন্ত শেষ হয় আপনারা কেউ শহরের বাহিরে যাবেন না।

-জি অবশ্যই।

রাত তখন প্রায় চার টা বাজে। পুলিশ পরিক্ষা নিরীক্ষা করে যাওয়ার পর শিরিন বেগম কাজের লোকদের দিয়ে দোতলার করিডোর ভালো করে পরিষ্কার করিয়েছে। পরিষ্কার করতে বেশ অনেকক্ষন সময় লেগেছে। তারপর সে সামিরাকে দিয়ে আবার চন্দ্রকে সাফোয়ানের রুমে পাঠিয়েছে। সামিরা তবে চন্দ্রকে রুমে রেখে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। সাফোয়ান এসে চন্দ্রকে ওভাবে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কপাল কুঁচকে বললো,

-এখানে কি করছিস এখনো?

-তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলা। দাদি তোমাকে কিছু কথা বলতে বলেছে। অবশ্য ফুফিই কথাগুলো দাদিকে দিয়ে আমাকে বলিয়েছে

-তো বল। এভাবে আমতা আমতা করছিস কেন?

-আসলে তোমাদের পরিবারের অভিশাপ সম্পর্কে তো জানোই। পাঁচ বছর ধরে অনেক ঝামেলার পরে অবশেষে তোমার বিয়ে হয়েছে। তাই ফুপি যত দ্রুত সম্ভব চৌধুরী পরিবারের উত্তরাধিকারী দেখতে চায়। তাই আজই যেন ভাবি আর তুমি……

-আর বলা লাগবে না। বুঝতে পেরেছি। তুই যা এখন।

——————————–

নিস্তব্ধ রাত। আশেপাশে কোনো শব্দ নেই। কিন্তু হঠাৎই চন্দ্রকলার তীরে এক মানবমূর্তিকে দেখা গেলো। সে একটা বস্তা নিয়ে নদীর দিকে যাচ্ছে। বস্তাটা অনেক ভারী। তাই তার বহন করতে কষ্ট হচ্ছে। বস্তাটা টেনে হিচড়ে সে নদীর পারে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেললো। বস্তাটা ফেলার পর সে তার পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো। সিগারেটটা ধরিয়ে দুই টান দিয়ে মানবমূর্তিটি বলতে লাগলো,

– বিশ বছর পুরানো খেলা আবার শুরু হয়েছে। এ এক মরণ খেলা। যার শেষ শুধু একজনই করতে পারবে।

সাফোয়ান রুমে এসে দেখলো রুম কিছুটা অন্ধকার হয়ে আছে। সে বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো এক অতি সুন্দরী মানবী বসে আছে। যার মাথায় ঘোমটা দেয়া। সামনের চুলগুলো কিছুটা এলোমেলো হয়ে আছে। সাফোয়ানকে বিছানার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে চন্দ্র নিজের হাত দিয়ে বিছানার চাদর খামচে ধরে। সাফোয়ান চন্দ্রের পাশে এসে বসে পকেট থেকে একটা খাম বের করে চন্দ্রের হাতে দিয়ে বলে,

-এই নাও তোমার মোহরানা।

-আমি নিয়ে কি করবো আপনার কাছেই রাখুন।

-ঠিক আছে। তোমার যখন লাগবে তখন নিয়ে নিও। তোমার নাম কি?

-চন্দ্র

-উহু একদম না। তোমার নাম মিসেস চন্দ্র সাফোয়ান চৌধুরী। তবে আমি তোমাকে চন্দ্রিমা বলে ডাকবো।

-জি।

-চন্দ্রিমা তুমি কিসে পড়ছো এখন ?

-এইচএসি পাশ করেছি আগের বছর।

-উহু আমি জিজ্ঞেস করেছি তুমি এখন কিসে পড়ছো?

-আমি আর কোথাও ভর্তি হইনি।

-কেন?

-আমার মা বলে মেয়েরা যারা বেশি পরে তারা নাকি ভালো বৌ হতে পারেনা।

-ওহ।শোনো চন্দ্রিমা,আমার মা হয়তো এখন উত্তরাধিকারী চাইবে। কিন্তু আমি তা চাইনা। আজ হোক কাল হোক আমাদের মধ্যেই শারীরিক সম্পর্ক হবে। কিন্তু আমি চাই তুমি আমার সাথে সহজ হও আরো। আমাদের মধ্যে প্রেম হোক,ভালোবাসা হোক ।ভালোবাসা ছাড়া কোনো মিলন হোক তা আমি চাই না।

সাফোয়ানের কথা শুনে চন্দ্রর ইচ্ছে করছে মাটি ফাঁক করে ভিতরে ঢুকে যেতে। সে লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। সে শুধু সাফোয়ানের কথার সাথে তাল মিলিয়ে মাথা দুলিয়ে যাচ্ছে।

-ঠিক আছে। অনেক রাত হয়ে গেছে। এখন ঘুমাও।

চন্দ্র শুয়ে পড়লে সাফোয়ান লাইট নিভিয়ে এসে চন্দ্রের ওপর পাশে শুয়ে পড়লো।

ক্লান্ত থাকার কারণে সাফোয়ান অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলো। কিন্তু হঠাৎ করেই তার তার বুঁকের বাম পাশে ধারালো কিছু বিধছে। তাই সে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো চন্দ্র তার বুকে শুয়ে আছে। আর তার কানের দুলের হুক ই তার বুকে লাগছে বার বার। তাই সে সন্তোপর্ণে চন্দ্রর কানের দুলটা খুলে বিছানার পাশে বেড সাইড টেবিলে রেখে দেয়।

—————————-

চন্দ্রর যখন ঘুম ভাঙলো তখন সকাল ৮টা। চন্দ্র ঘুম থেকে উঠে দেখলো পাশে সাফোয়ান নেই। চন্দ্র কখনো নিজের বাড়িতে এত দেরিতে উঠতো না। তাই সে কিছুটা ভয় পেলো যে হয়তো তার শাশুড়ি মা তাকে কিছু বলবে। তাই সে তড়িঘড়ি করে আলমারি থেকে একটা শাড়ী বের করলো। কাল সামিরা তাকে বলেছিলো এই আলমারির সব শাড়ি তার। চন্দ্র গোসল করে একটা সিল্কের মেরুন শাড়ী পরে বের হয়ে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে লাগলো। হঠাৎ তার নজর তার কানের দিকে গেলো। সে দেখলো তার কানে পড়া স্বর্নের দুলটা নেই। সে এইদিক ঐদিক খুঁজতে লাগলো।হঠাৎ তার নজর গেলো বেড সাইড টেবিলের উপর। সে কানের দুলটা হাতে নিয়ে চিন্তা করতে থাকলো এটা এখানে কিভাবে আসলো। সে তো কানের দুল খুলে ঘুমাইনি। আর মধ্যেই সামিরা দরজা ঠেলে রুমে ঢুকলো।

-বাহ তুমি ফ্রেশ হয়ে গিয়েছো। ভালোই হয়েছে। নিচে চলো নাস্তা করতে।

-আমি কি বেশি দেরি করে উঠেছি।

-আরে নাহ। কাল তো অনেক রাতে ঘুমিয়েছো। ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হবেই।

চন্দ্র নিচে আসতেই দেখলো ড্রয়িং রুম ভরা লোকজন। কাল বাড়িতে সেরকম কেউ ছিল না। হয়তো দুই দিন পরেই বৌভাতের অনুষ্ঠান তার জন্যই সবাই এসেছে। কিন্তু সে এইদিক ঐদিক তাকিয়েও কোথাও সাফোয়ানকে দেখতে পেলো না।শিরিন বেগম তাকে নিচে নামতে দেখেই তার দিকে এগিয়ে এসো বললো,

-এসো এসো তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। শিরিন বেগম একে একে চন্দ্রকে সাফোয়ানের নানী আর মামার পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।

সাফোয়ানের নানী একটা বক্স বের করলো তার ব্যাগ থেকে। সেখান থেকে দুইটা মোটা বালা বের করে চন্দ্রের হাতে পরিয়ে দিলো। তারপর চন্দ্রকে তার পাশে বসিয়ে বললো,

– ওমাগো নাতবৌ তো চান্দের লাহান সুন্দার।ওই শিরু কই থেইক্কা এই চান্দের মতো মুখ খানা খুঁইজা আনলি।

সবাই বসে কথা বলছিলো ঠিক তখনি সদর দরজা থেকে হন্তদন্ত হয়ে সাহিল কে ঢুকতে দেখা গেলো।

-বড় মা,বড় মা। কোথায় তুমি?

– কি হয়েছে তুই এভাবে হাপাচ্ছিস কেন।

– বড় মা সর্বনাশ হয়ে গেছে। সাফোয়ান ভাই সকালে যে গাড়িটা নিয়ে শহরের দিকে গিয়েছিলো। সেই গাড়িটার নাকি খুব ভয়ানকভাবে এক্সিডেন্ট হয়েছে। আমার বন্ধু নাকি আসার সময় গাড়িটাকে পানি থেকে উঠাতে দেখেছে।আমি সাফোয়ান ভাইকে কল করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ফোন বন্ধ বলছে।

বিয়ে বাড়ির পরিবেশ নিমিষেই শোকে পরিণত হলো। শিরিন বেগম ধপ করে মাথায় হাত সোফায় বসে পড়লো। বিয়ের পরের দিনই স্বামীর এত বড় এক্সিডেন্টের কথা শুনে চন্দ্র যেন স্তব্ধ হয়ে গেলো।
এই সব হইচই এর মধ্যেই হঠাৎ করে দেখা গেলো সদর দরজা দিয়ে সাফোয়ান বাড়িতে ঢুকছে। মানুষটাকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় দেখে চন্দ্র আর শিরিন বেগম যেন তাঁদের দেহে প্রাণ ফিরে ফেলো। সাফোয়ানকে দেখেই সাহিল তার কাছে দৌড়ে গিয়ে বললো,

– ভাই তুমি এখানে। তুমি না কালো গাড়িটা নিয়ে শহরে গিয়েছিলে। আর তোমার ফোন বন্ধ কেন।

-আরেহ শান্ত হ তুই কি হয়েছে। কালো গাড়িটা নিয়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি থানায় নেমে যাই কিছু কাজের জন্য। আর ইন্সপেক্টরই আমাকে তার জিপে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। রাতে ফোনে চার্জ দেয়া হয় নি তাই ফোনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু কি হয়েছে? সবাইকে এরকম চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?

-তোর গাড়িটা এক্সিডেন্ট করেছে। খুব বাজে ভাবে।

-কি বলিস? আমাকে এখনই যেতে হবে। আল্লাহ জানে ড্রাইভার এখন কি অবস্থায় আছে।

-তোর আর এখন যাওয়া লাগবে না ভাই। তুই রেস্ট নে। আমি আর সাহেদ যাচ্ছি।

সাফোয়ানকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে আর সাহেদ এক্সিডেন্ট স্পটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।

চলবে……গল্পের পর্ব মিস করতে না চাইলে অবশ্যই পেইজটি ফলো করে রাখবেন তাহলে পর্ব দেওয়া মাত্র আপনে নোটিফিকেশন পাবেন ।👉 জুবেল আহমদ

এছাড়াও গ্রুপে পাবেন।
👉 সাহিত্যের ছোঁয়া

👉 পেন্সিল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here