খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_১৭ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
507

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_১৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

নিজের কক্ষে গম্ভীর হয়ে বসে আছেন জাফর ইকবাল। মুখশ্রীতে তার বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। পাঁচটা বছর ধরে হেরে যাবার আগুনে জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হচ্ছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে যে করেই হোক তাকে উত্তীর্ণ হতেই হবে। সময় হাতে বেশি নেই। সামনে নিবার্চন এবার সে কিছুতেই বাচ্চা ছেলেটার কাছে হেরে যাবে না৷ তার তিলে তিলে গড়ে তোলা সাম্রাজ্য এইটুকু বাচ্চা ছেলের হাতে চলে গেল। জনগণ তার মাঝে কি পেল? বিশ বছর ধরে সে রাজনীতির সাথে যুক্ত আছে। আর দু’দিন ধরে রাজনীতিতে এসেই ছেলেটা সবার ভিষণ প্রিয় হয়ে উঠল। একবার মনোনয়ন পেয়েই সে উত্তীর্ণ হয়ে গেল। মাঝে মাঝে মুনতাসিমের প্রতি তার ভিষণ ঈর্ষা হয়। এবার তাকে শক্ত হাতে মাঠে নামতে হবে৷ দরকার পড়লে সকলের প্রিয় মুনতাসিকে ধরণীর বুক থেকে মুছে ফেলবে। কাজটা কি এতোই সহজ হবে!

মুনতাসিমের মুখশ্রীতে বিষণ্ণতার ছাপ স্পষ্ট। ধরণীর সকল মানুষের প্রতি ভিষণ অভিযোগ জমেছে। কেন ভালোবাসে না তাকে? সে একটু অসহায়ত্ব দেখিয়েছে বলে, সবাই তাকে অসহায় মনে করবে। এক তরফা কোনো কিছুই হয় না। একটা মানুষকে সে মূল্য দিয়ে যাবে। আর বিপরীত পক্ষের মানুষটা তাকে অবহেলা করে চলে যাবে। ভালো না বাসুক মানুষ হিসেবে সন্মান টুকু তো দিতে পারে। একটা দিন সময় পেয়ে এক পলক দেখার জন্য এসেছিল সে। কাল সকালেই চলে যাবে আর আসবে না। কিন্তু মন তো আর মানে না তাই ছুটে চলে আসে। মুনতাসিম তাইয়ানকে ডেকে বলল,

–যাও আমার জন্য ঘুমের ঔষধ নিয়ে আসো।

–স্যার আপনাকে ডক্টর ঘুমের ঔষধ খেতে নিষেধ করেছে।

–আমি তোমাকে ঔষধ নিয়ে আসতে বলেছি নাকি কে কি বলে বলেছে সটা জানতে চাইছি। তাইয়ানের মস্তক নত হয়ে গেল। কণ্ঠনালি দিয়ে আর কোনো বাক্য উচ্চারিত হলো না। সে নিঃশব্দে কক্ষ ত্যাগ করে ঔষধ আনতে চলে গেল। এটা কি তার নিজের এলাকা যে গিয়ে চাইলেই ঔষধ দিয়ে দিবে। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিল তাইয়ান। তখনই মেহেভীনের সাথে দেখা। মেহেভীন নিম্ন কণ্ঠে বলল,

–কোথায় যাচ্ছেন ভাইয়া?

–স্যারের জন্য ঔষধ নিয়ে আসতে।

–বন্ধু থেকে স্যার হয়ে গেল! আপনার স্যার ভাত না খেয়ে ঔষধ খাবে। মেহেভীনের কথায় নিশ্চুপ হয়ে গেল তাইয়ান। মিথ্যা কথা বলতে তার ভিষণ খারাপ লাগে। সে মাঝে মাঝে অবাক হয়। একই এলাকার মানুষ হয়ে সে কেন মুনতাসিনকে চিনে না। সবাই মুনতাসিমকে এক নামে চিনে। পথেঘাটে তার পোস্টারের ছড়াছড়ি। এই মেয়েটা সবকিছু জেনেশুনে অভিনয় করে নাকি। তবে মেয়েটা যাই করুক না কেনো মেয়েটার জন্য তার স্যার ভালো থাকে। এই কথাটা ভাবতেই বুকটা প্রশান্তিতে ভরে উঠল। অদ্ভুত ভাবে তাইয়ান হেসে মেহেভীনকে বলল,

–স্যার সারাদিন কিছু খাইনি। এখানে এসে আপনার জন্য অপেক্ষা করছিল। আপনি খারাপ ব্যবহার করার কারণে স্যার ভিষণ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ডক্টর স্যারকে ঘুমের ঔষধ খেতে নিষেধ করছে। স্যার যখনই গভীর ভাবে আঘাত হয়। তখনই ঘুমের ঔষধ সেবন করে গভীর নিদ্রায় চলে যায়। মেহেভীনের ভিষণ খারাপ লাগলো তাইয়ানের কথা শুনে। বাসায় এসে সে গভীর ভাবে অনুতপ্ত হয়েছে। মানুষটা এতদিন পর এল তা-ও বিধস্ত অবস্থা। তার উচিৎ ছিল আগে সবকিছু জানা। কিন্তু সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। কোনো পুরুষ স্পর্শ করলেই অতীতে কালো ছায়া তাকে কাবু করে ফেলে। মনের শহরে মিছিল করে বলে সব পুরুষ জাতি এক। সুযোগ পেলেই নারীকে লুফে নেওয়ার চেষ্টা করে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মেহেভীন বলল,

–ঘুমের ঔষধ নিয়ে আসতে যেতে হবে না। আপনাদের বাসায় রান্না হয়েছে।

–না এসেছি সন্ধ্যা বেলায় রান্না কখন করব।

–আপনি আমার সাথে আসুন। আমি রুপাকে বলছি আপনাকে খেতে দিতে। আমি উনার জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছি।

–কিন্তু স্যার যদি রাগ করে।

–সেটা আমি বুঝে নিব। আপনার এত ভাবতে হবে না। কথা গুলো বলেই মেহেভীন নিজের বাসায় গেল। একটা প্লেটে করে খাবার নিয়ে মুনতাসিমের বাসায় গেল। মুনতাসিম বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়েছিল। মেহেভীন কম্পন মিশ্রিত হাতে মুনতাসিমের কাঁধে হাত রাখলো। মুনতাসিম হাত বাড়িয়ে বলল,

–আমার ঔষধ দাও আর এক গ্লাস পানি দেও। মেহেভীন মুনতাসিমের হাতে খাবারের প্লেটটা এগিয়ে দিতেই মুনতাসিম ভার সামলাতে না পেরে ফেলে দিতে চাইলে, মেহেভীন সাথে সাথে ধরে ফেলল। উলটো দিক হয়ে খাবারের প্লেট ধরা যায়। মুনতাসিম রাগান্বিত হয়ে উঠে বসলো। মেহেভীনকে দেখে মুনতাসিম হতভম্ব হয়ে গেল। মুহুর্তের মাঝে মুখটা গম্ভীর করে ফেলল। সে কঠিন গলায় বলল,

–আপনি এখানে কেনো এসেছেন? আপনি আপনার বাসায় ফিরে যান। বলা তো যায় না কখন কোন নরপিশাচের খাদ্য হয়ে যাবেন। একা একা একটা পুরুষের গৃহে আসতে আপনার ভয় করল না।

–খোঁচা দিচ্ছেন। তখন আমি রাগ করে ফেলছি। দু’টো মাস আপনাকে কোথায় কোথায় আমি খুঁজেছি। আমি কি মানুষ না। আমার কি কোনো মূল্য নেই। আপনি এখানে দু’দিনের জন্য আসবেন। আবার না বলে মাসের পর মাস উধাও হয়ে যাবেন। আমার চিন্তা হয় না। আমি ঠিকমতো খেতে পারি না। ঘুমোতে পারি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। এখন এই মুহূর্তে সবগুলো খাবার শেষ করবেন। আমার না শুনলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। আমি আপনার থেকে কোনো কথা শুনতে চাইছি না। চুপচাপ হাত ধুয়ে খেতে বসুন।মেহেভীনের ওপরে যতটুকু রাগ ছিল। তা মেহেভীনের আদুরে শাসনের মধ্যে দিয়ে সব হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। সে এই মেয়েটার ওপরে কিছুতেই রেগে থাকতে পারে না। এই মেয়েটা তার জন্য এতটা অস্থির হয়েছে। তাকে খুঁজেছে ভাবেই বুকটা প্রশান্তিতে ভরে উঠছে। সে মেহেভীনের হৃদয়ে শক্ত ভাবে স্থান দখল করতে পারছে। এটা ভেবেই মুনতাসিমের বুক থেকে পাথর নেমে গেল। কতদিন পর তাকে কেউ কড়া করে শাসন করল। ভালোবাসার শাসন। যা পাবার জন্য মুনতাসিম প্রতিনিয়ত আকুল হয়ে থাকে। সে মেহেভীনের অবস্থা বুঝতে পেরে বলল,

–আর কখনো এমন করব না৷ আমি কিন্তু কালেই চলে যাব। আমার অনেক কাজ আছে। আজ আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। আব্বুর সাথে সকালে ঝগড়া করে বের হয়ে ছিলাম। কিছু সময় মায়ের কবর স্থানে আর কিছু সময় আশ্রমে পার করেছি। যতটুকু সময় ছিল নিজের কথা ভাবিনি। আপনার জন্য ভেতরটা ভিষণ পুড়ছিল। তাই ছুটে এলাম আপনার কাছে। আমার মায়ের পরে পৃথিবীতে আপনি-ই একমাত্র নারী যার কাছে আমার শান্তি মিলে। মুনতাসিম হাত ধুয়ে এসে বিনাবাক্যে খেতে বসলো। সারাদিন পেটে কিছু পরেনি। চুপচাপ খেতে লাগলো। মেহেভীন মুনতাসিমের পাশে বসে আছে। মেহেভীনের অভিমানী মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে মুনতাসিমের ভিষণ মায়া হলো। ভেতরে অসহনীয় যন্ত্রনা করছে। আজকের পর থেকে এই মেয়ে টাকে সে কিছুতেই কষ্ট দিবে না৷ খাওয়া শেষ হয়ে গেল মেহেভীন প্লেট গুলো নিয়ে যেতে যেতে বলল,

–তৈরি হয়ে নিচে আসুন আপনার জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে। কথা গুলো বলেই মেহেভীন চলে গেল। মুনতাসিমের শরীর ভিষণ ক্লান্ত লাগছে। সে আরাম করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রেয়সীর আবদারে সব আরাম চুকে গেল। ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। মেহেভীন কালো রঙের সালোয়ার কামিজ পড়েছে। আচমকা কাজল দিয়ে আঁখিযুগল রাঙাতে ইচ্ছে করল। কাজল প্রতিটি মেয়ের আঁখির সুন্দর্য অদ্ভুত ভাবে বাড়িয়ে তুলে। কাজল কালো আঁখিযুগলের মায়ায় মেহেভীন নিজেই মুগ্ধ হয়েছে শতবার। সে সাজতে খুব একটা পছন্দ করে না। কালো রঙের ব্যাগটা হাতে নিয়ে ছুটল নিচে। মেহেভীন গাড়ি বের করতে বলেছিল। বাহিরে এসে দেখল মুনতাসিম আগেই গাড়িতে উঠে বসে আছে। মেহেভীন গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়ি চলার সাথে সাথে আগে পিছে আরো কতগুলো গাড়ি তাদের গাড়িটাকে আড়াল করে রাখলো। মেহেভীন সেগুলোকে দেখেও আড়াল করে গেল। মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে বলল,

–আজকে আমাকে আপনি পুরো শহর ঘুরাবেন। ফুল কিনে দিবেন। কাঁচের চুড়ি কিনে দিবেন। পাশে বসে ফুচকা খাওয়াবেন। ফুটপাতের রাস্তা ধরে আমার সাথে কিছুক্ষণ হাঁটবেন। আমার কথা মতো না চললে কালকে আপনাকে যেতে দিব না। মুনতাসিম মুগ্ধ হলো মেহেভীনের প্রতি, মেয়েটা ভিষণ রাগী। কিন্তু তার চাহিদা খুবই স্বল্প। এমন মন মানসিকতার মেয়ে সে খুব কমই দেখেছে। কাজল কালো আঁখিযুগলের দিকে তাকিয়ে হৃদয়ের ঘরে উথাল পাথাল শুরু হয়ে গিয়েছে। বিষন্নতাকে গ্রাস করে নিয়েছে এক টুকরো সুখ। অনুভূতিরা আনন্দে মেতে উঠেছে। চারদিকে সুখ সুখ আমেজ লেগে গিয়েছে। না চাইতেও বেহায়া আঁখিযুগল আঁড়চোখে প্রেয়সীকে দেখে যাচ্ছে। গাড়ি এসে থামলো নিজ গন্তব্যে মেহেভীন গাড়ি থেকে নামলো। মুক্ত পাখি ন্যায় এদিক-সেদিক ছুটছে। মেহেভীন ফুলের দোকানের সামনে গেল। মেহেভীন বলার আগেই মুনতাসিম বলল,

–একটা মাথার ক্রাউন দিবেন। একটা গাজরা দিবেন। আর চারটা গোলাপ ফুল আর দু’টো রজনীগন্ধা ফুল দিবেন। ফুল মানেই নারীর ভালোবাসা। একটা নারী নিজেকে যতটা ভালোবাসে ঠিক ততটাই ফুলকে ভালোবাসে। ফুলের দোকানে আসতেই মেহেভীনের আঁখিযুগল চকমক করছে। তা চোখ এড়ায়নি মুনতাসিমের এত অশান্তির মাঝে-ও সে ভিষণ শান্তি অনুভব করছে। মন বারবার বলছে যে করেই হোক এই মেয়েকে তার লাগবে। মুনতাসিম গাজরা হাতে নিয়ে মেহেভীনের দিকে এগিয়ে দিল। মেহেভীন সেটা না নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল। গাজরাটা সে মুনতাসিমের হাতে পড়তে চায়। সন্ধ্যার কথা স্মরন হতেই মুনতাসিমের ভেতরে জড়তা কাজ করছে। মুনতাসিমকে চিন্তিত দেখে সে অভয় দিল। মুনতাসিম জড়তা নিয়েই মেহেভীনকে গাজরা পড়িয়ে দিল। একটু পরে ক্রাউন তৈরি হয়ে গেলে সেটাও মুনতাসিমের হাতেই পড়লো৷ মুনতাসিম গোলাপ আর রজনীগন্ধা মেহেভীনের হাতে দিয়ে টাকা পরিশোধ করে দিল। এই সুন্দর মুহুর্তকে তাইয়ান আড়াল থেকে ক্যামেরা বন্দী করে নিল। দু’জনের কেউ টেরই পেল না।

দু’জন পাশপাশি হাঁটছে সামনেই চুড়ির দোকান। চুড়ির দোকানে গিয়ে দু’জনের ঝগড়া লেগে গেল। মেহেভীনের প্রিয় রঙ কালো। আর মুনতাসিমের প্রিয় রঙ শুভ্র। সে কালো রঙের চুড়ি নিতে চায়। আর মুনতাসিম তাকে শুভ্র রঙের চুড়ি কিনে দিতে চায়। মেহেভীন রাগান্বিত হয়ে বলল,

–আপনার প্রিয় রঙ কি?

–শুভ্র।

–সেজন্য সব সময় সাদা গরুর মতো শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি পড়ে থাকেন।

–আপনার প্রিয় রঙ কি?

–কালো।

–সেজন্য সব সময় কালো কালো কথা বলেন। আমি বলেছি আপনি শুভ্র রঙের চুড়ি পড়বেন। তারমানে শুভ্র রঙের চুড়ি আপনাকে পড়তেই হবে।

–আমার কালো পছন্দ আমি কালোই পড়ব। অবশেষে দু’জনের পছন্দ মতো সাদা-কালো মিশিয়ে চুড়ি পড়লো মেহেভীন। দু’জনের মুখশ্রীতে স্নিগ্ধ হাসি পাশাপাশি হাঁটছে দু’জন। সামনে ফুচকার দোকান নজরে আসতেই মুনতাসিম মেহেভীনকে নিয়ে সেখানে গেল। মুনতাসিমের গুরুত্বপূর্ণ ফোন আসায় মেহেভীনকে বসিয়ে দিয়ে একটু দূর গেল মুনতাসিম। ফোনের ওপাশে থেকে বিপদের সংকেত দিয়ে গেল। যে করেই হোক পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। সে থাকতে কারো সাহস হবে না তার পরিবারের দিকে নজর দেওয়ার। তবুও সাবধানের মা’র নেই। সে ফোন রেখে মেহেভীনের কাছে আসলো। মনটা মুহুর্তের মধ্যে বিষাদে পরিণত হয়ে গেল। মলিন মুখশ্রী করে চুপ করে মেহেভীনের পাশে বসলো। মেহেভীন একটা ফুচকা মুনতাসিমের দিকে এগিয়ে দিল।

–এসব আমি খাই না আপনি খান। আমাকে বাসায় ফিরতে হবে। আপনাকে বাসায় দিয়ে আমি চলে যাব। মুনতাসিমের যাওয়ার কথা শুনেই মেহেভীনের মন খারাপ হয়ে গেল। ভেতরটা শূন্যতায় খাঁ খাঁ করে উঠল। গলা দিয়ে খাবার নামচে চাইছে না। সে খাবে না বলে ফুচকা রেখে উঠে দাঁড়ালো। মেহেভীনের মন খারাপ হয়ে যেতে দেখে, ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। সে মেহেভীনকে বসতে বলল। একটা ফুচকা নিয়ে খেল সে। তবুও মেহেভীনের মন ঠিল হলো না। বাধ্য হয়ে মেহেভীনের সাথে হাঁটা ধরলো। হঠাৎ করে মেহেভীনের চরণ দু’টি থেমে গেল। আশেপাশে এত মানুষ থাকা সত্বেও সে ভয়ে কাবু হয়ে আসছে। শরীর থরথর করে কাঁপছে। সে ভয় পেতে চাইছে না। মনে সাহস নিয়ে আসতে চাইছে। তবুও ভেতরটা তার সাথে বেইমানি করছে। ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়ালো সে। পুরোনো কালো অতীতকে সে আঁখিযুগলের সামনে দেখতে পাচ্ছে। মেহেভীনকে ভয় পেতে দেখে মনতাসিম বলল,

–কি হয়েছে আপনার এমন করছেন কেন?

–ও আমাকে মেরে ফেলবে। চলুন এখানে থেকে সে দেখার আগেই আড়ালে চলে যাই। মেহেভীনের বোকা বোকা কথায় হতভম্ব হয়ে গেল মুনতাসিম। যে মেয়েটা বুকে এতটা সাহস নিয়ে চলাফেরা করে। সেই মেয়েটা ভয় পাচ্ছে! কিসের জন্য সে এতটা ভয় পাচ্ছে। প্রতিটি কঠিন মানুষেরও একটি করে দুর্বল জায়গা থাকে। তবে কি মেহেভীনেরও কোনো গল্প লুকিয়ে আছে। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করল মুনতাসিম। মেয়েটা ঘেমে একাকার হয়ে গিয়েছে। মেহেভীনের এমন অবস্থা দেখে ভেতরটা অস্থির হয়ে উঠেছে মুনতাসিমের। সে মেহেভীনকে নিয়ে বাসার দিকে অগ্রসর হলো।

চলবে…..

(১০০০ হাজার রেসপন্স হলে পরবর্তী পর্ব কালকে পাবেন। আমি ভিষণ অসুস্থ সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here