খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_০৭ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
683

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_০৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

মানুষ যেখানে থেকে পালিয়ে বাঁচতে চায়। বাস্তবতা তার সামনেই তাকে দাঁড় করিয়ে দেয়। প্রাপ্তি এখন সেই বাস্তবতার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে। হৃদস্পন্দনের গতিবেগ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছে। ভেতরটা ভয়ে কাবু হয়ে আসছে। মস্তিস্ক শূন্য হয়ে পড়েছে। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। তবুও একটু আশার আলো দেখল প্রাপ্তি। চায়ের ট্রে টা টেবিলে রেখে মেহেভীনকে আলিঙ্গন করল। নিখুঁত দারুন অভিনয়ের সুরে বলল,

–মেহেভীন বোন আমার কেমন আছিস? তুই কবে এসেছিস? তুই যে এখানে আসবি আমাকে জানাসনি তো! আগে জানলে তোর জন্য ভালো মন্দ রান্না করে রাখতাম। চাচি নিশ্চয়ই তোকে সবকিছু বলেছে। আমি ইচ্ছে করে তোর থেকে সবকিছু আড়াল করে গিয়েছি। আমি কখনো চাইনি তুই এসব চিন্তা মাথায় নিয়ে, তোর লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়িস। তোর জন্য আমি আমার জীবনটা নষ্ট করেছি। তবুও তোকে এতটুকু চিন্তা মাথায় তুলতে দেইনি। আমাকে তুই ভুল বুঝিস না বোন।

–আমি তোমাকে কিছু বলেছি আপু! কথায় আছে না চোরের মন পুলিশ পুলিশ।

–তুই কি আমাকে অপমান করছিস?

–তোমার অপমান আছে আপু।

–তোকে কেউ দেখার আগে তুই এই বাসা থেকে বের হয়ে যা। তোকে কেউ দেখলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে। তুই সেদিন পালিয়ে গিয়েছিলি। সেজন্য সবাই তোর ওপরে রেগে আছে।

–কোথায় ডাকো সবাইকে, আমি আজকে সবার রাগ দেখতে এসেছি। মেহেভীনের কথায় ক্রোধে ললাটের রগ গুলো ফুলে উঠছে প্রাপ্তির। এই মেয়ে এতটা ধুরন্ধর হলো কিভাবে! প্রাপ্তি শক্ত হাতে মেহেভীনকে ধরতে চাইলে, মেহেভীন দূরে সরে আসলো। কিছুটা গা-ছাড়া ভাব নিয়ে বলল,

–তুমি রান্না ঘর থেকে এসেছ। তোমার এই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে একদম স্পর্শ করবে না। আগে হাতটা ভালো করে ক্লিন করে আসো। তারপরে না হয় আমাকে স্পর্শ করার মতো দুঃসাহস দেখাবে। মেহেভীনের কথা শেষ হবার সাথে সাথে আমান চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হয়। মেহেভীনকে দেখে অদ্ভুত ভাবে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছেন। মেয়েটা আগের থেকে দিগুণ সুন্দর্যের অধিকারীনি হয়ে গিয়েছে। মেয়েটার মুখশ্রীতে অদ্ভুত এক মায়া লেগে থাকে সব সময়। এই মায়াভরা মুখশ্রী দেখেই মেহেভীনকে পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু তার অপদার্থ ছেলে সেটা আয়ত্ত করতে পারল না। চাঁদের সাথে অমাবস্যার রাতের তুলনা দিল। মেহেভীন কিছুটা ভীরু দৃষ্টিতে আমান চৌধুরীর দিকে তাকালো। ভেতরে ধীর গতিতে কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশটা শীতল হয়ে উঠেছে। আস্তে আস্তে সবাই নিজ কক্ষ থেকে বের হয়ে, ড্রয়িং রুমে আসতে শুরু করেছে। মেহেভীন দমে গেল না। সে ধীর পায়ে আমান চৌধুরীর দিকে এগিয়ে গেল। কিছুটা ভাবলেশহীন ভাবে সালাম দিয়ে বলল,

–কেমন আছেন আংকেল? অনেক দিন পর আপনার সাথে দেখা। শরীর স্বাস্থ্য ভালো আছো তো। আপনাদের বাসার সবাই কোথায়? এবার সবাইকে ডাকুন। আপনাদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে এসেছি। একজন ও যেন বাদ না থাকে। আমার সবাইকে এক সাথে চাই মানে, সবাইকে একসাথে চাই। মেহেভীনের কথা শেষ হবার সাথে সাথে মাশরাফির মা সাহেলা চৌধুরী বললেন,

–এই তুমি সেই মেয়েটা না। যার সাথে আয়মানের বিয়ে হবার কথা ছিল। কিন্তু তুমি বিয়ে না করে পালিয়ে গিয়েছিল!

–একটা কা’পু’রু’ষ’কে বিয়ে করার থেকে, পালিয়ে যাওয়া ঢের ভালো।

–সাবধানে কথা বল মেয়ে! আমাদের বাসায় এসে, আবার আমার সাথেই বাজে ব্যবহার করা!

–আমি তো আপনার সাথে আগে কথা বলতে যাইনি আন্টি। আমি এখানে আপনার সাথেও কথা বলতে আসিনি। আপনি পুরোনো কথা টেনে আমাকে অপমান করার চেষ্টা করছেন। কেউ আমাকে অপমান করার চেষ্টা করলে, তাকে আমি এক চুল পরিমাণ ছাড় দিব না। সে যদি হয় আমার নিজের মায়ের পেটের বোন সে-ও ছাড় পাবে না।

–আয়মান সঠিক কাজ করেছে। তোমার মতো বেয়াদব মেয়েকে বিয়ে করলে, আয়মানের জীবনটা জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যেত। সাহেলার ব্যবহার দেখে রিয়াদ চৌধুরী বজ্রকণ্ঠে সাহেলাকে ধমক দিল। স্বামীর ধমকে চুপসে যায় সাহেলা। রাগান্বিত হয়ে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। মেহেভীন সাহেলার দৃষ্টি উপেক্ষা করে, সামনের দিকে এগিয়ে গেল। মুনতাসিমের দেরি হয়ে যাচ্ছে। তবুও গভীর আগ্রহ নিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে। তখনই তাইয়ান এসে মুনতাসিমের পাশে এসে নিজের স্থান দখল করল। মুনতাসিমের কর্ণের কাছে এসে ফিসফিস করে বলল,

–স্যার আপনার হৃদয় হরণ হয়ে গিয়েছে। মেহেভীন নামক রমনী আপনার হৃদয় হরণ করেছে। না হলে আপনার মতো নিষ্ঠুর মানুষের মনে, সাধারন এক রমনীকে দেখে, আপনার হৃদয়ের গহীনে এতটা ঝড় উঠে, আপনার ভেতরটা যে উথাল পাথাল হয়ে যাচ্ছে। আপনার অশান্ত বুকটাকে কে প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুলবে। এই মেয়েকে আমি চিনি। এই মেয়ের সাথে আয়মান স্যারের বিয়ে হবার কথা ছিল। আয়মান স্যার কি একটা ভুল করল। পূর্নিমার চাঁদকে ঘরে তুলে সমস্ত ঘর আলোকিত করা বাদ দিয়ে, অমাবশ্যার রাতকে ঘরে তুলে ঘরকে করেছে আঁধার। আয়মান স্যার একদিন বহু পস্তাবে। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিম রক্তিম চোখে তাইয়ানের দিকে দৃষ্টিপাত করে। তাইয়ান তার ব্যক্তি বডিগার্ড সব সময় বেশি কথা বলে, আর উপহার স্বরূপ মনুতাসিমের ব’কা শুনতে হয়। ছেলেটা ভিষণ ভালো। সব সময় মুনতাসিমের সাথে আঠার মতো লেগে থাকে। মুনতাসিমের বিপদে সবার আগে সে এগিয়ে আসে। মুনতাসিম চোয়াল শক্ত করে বলল,

–তুমি এখানে থেকে যাবে নাকি মা’থাটা দেহ থেকে আলাদা করে দিব। মুনতাসিমকে দেখে সে ভিষণ ভয় পায়। মুনতাসিম একবার রেগে গেলে, তার সামনে কোনো বাক্য আসে না ভেতর থেকে। নিঃশব্দে তাইয়ান চলে গেল। তাইয়ান চলে যেতেই মুনতাসিন অদ্ভুত ভাবে হেসে উঠলো। কি স্নিগ্ধ সেই হাসি! প্রতিটি নারীর হৃদয়ে ঝড় তোলার জন্য এমন এক মনোমুগ্ধকর হাসিই যথেষ্ট। ” আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। সেদিন আয়মান তোমাকে বিয়ে না করে, আমার অনেক বড় উপকার করেছে মেহেভীন। কারন তুমি যে অন্য কারো ভাগ্যে লিখা আছ। তুমি আয়মানের হও সেটা বিধাতাও চাইনি। তোমাকে আমার হতেই হবে। তোমাকে পাবার জন্য যদি আমাকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যেতে হয়। তাহলে আমি সেখানেই চলে যাব। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে, তোমাকে আমার নামে লিখিত ভাবে দলিল করে যাব। আমি ছাড়া যেন কেউ তোমায় স্পর্শ করতে না পারে। তোমার পাশে অন্য কেউ থাকবে। কথাটা কল্পনা করলেই, আমার হৃদয়ের গহীনে ভীষণ ব্যথা করে। তুমি কি সেটা উপলব্ধি করতে পারো। আমার অশান্ত হৃদয়কে শান্ত করার জন্য হলে-ও তোমাকে আমার চাই মেহেভীন। কথা গুলো ভাবতেই বুকটা হাহাকারে ভরে গেল। ভালোবাসা মানুষকে এতটা ভালোবাসার পরেও, বলতে না পারার যে ব্যাপারটা। তার মতো বাজে অনুভূতি দু’টো নেই। বুকের ভেতরটায় অসহনীয় যন্ত্রনা করছে। মনটা ভিষণ ভাবে জ্বলছে। হারিয়ে ফেলার ভয় সব সময় কাবু করে রাখে। অনুভূতিরা নেতিয়ে যায়। আনন্দরা মেতে উঠতে ভুলে যায়। তুমি আমার হলে পৃথিবীর সমস্ত সুখ, আনন্দ, অনুভুতি, আবেগ সবাই আমার হবে মেহেভীন। আমি হয়ে উঠব ছোট বাচ্চা ন্যায় করব শিশুসুলভ আচরণ। কথা গুলো ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো।

চারদিকে পিনপতন নীরবতা সবাই গভীর আগ্রহে মেহেভীনে দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। প্রাপ্তির সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসছে। এক ঝাঁক ভয় এসে মনের মধ্যে হানা দিয়েছে। ভয়ে জড়সড় হয়ে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। আয়মান এতক্ষণ ছিল না। সবে মাত্র বাসার মধ্যে প্রবেশ করেছে। মেহেভীনকে দেখে তার আঁখিযুগল স্থির হয়ে যায়। পুতুলের ন্যায় কি সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটাকে। সেদিন রাতের আলোয় ভালোভাবে দেখতে পাইনি সে। মেহেভীনদের বাসা তাদের বাসার থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেক ছোট৷ তাদের বাসার মধ্যে চারদিকে রশ্মি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। মেহেভীনদের বাসায় তেমন আলো ছিল না। মুগ্ধ নয়নে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। মেহেভীন ভুল করেও আয়মানের দিকে নজর দেইনি। সে আমান চৌধুরীর কাছে গিয়ে বলল,

–এড বড় বাড়ি আপনাদের এলাকায় নাম ডাকও বেশ ভালো। তা বউয়ের হাত খরচ দিতে পারেন না নাকি। আপনার বাড়ির বউ যে অন্যের মেয়ের টাকা মেরে খায়। সে খবর কি রাখেন। মেহেভীনের কথায় আমান চৌধুরী বিস্মিত হয়ে যায়। সে বিস্ময় নয়নে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। সে কিছু কঠিন কণ্ঠে জবাব দিল,

–এসব তুমি কি বলছ! তোমার মাথা ঠিক আছে। আমাদেরকে তোমার কি মনে হয়! আমরা অন্যের টাকা মেরে খাই। আমাদের বাড়ির প্রতিটি ছেলে প্রতিষ্ঠিত। আমি আর আমার ভাই ব্যবসা করি। আমাদের কোনো দিকে কমতি নেই। তাহলে আমরা কেন তোমার টাকা মেরে খাব। তখনই আয়মান বলে উঠলো।

–এক হাতে কোনোদিন তালি বাজে না মেহেভীন। তুমি প্রাপ্তির কাছে টাকা পাঠিয়েছো কেন? প্রাপ্তি তোমার কাজের লোক নাকি যে তুমি প্রতি মাসে টাকা পাঠাবে। সেগুলো তোমার বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দিবে। তুমি কেমন মেয়ে নিজের বাবা-মায়ের হাতে টাকা তুলে না দিয়ে, নিজের চাচাতো বোনের হাতে তুলে দাও। তুমি শেয়ালের কাছে মুরগী বাগি দিবে। আর শেয়াল মুরগী টা খেয়ে ফেললেই দোষ। আয়মানের কথায় জ্বলে উঠলো মেহেভীন রাগান্বিত হয়ে বলল,

–যার স্বভাব গিরগিটির মতো রঙ বদলানো। তার থেকে এসব ছাড়া বেশি কিছু আশা করা যায় না৷ আমি না হয় বাবা-মায়ের সুসন্তান হতে পারিনি। কিন্তু আপনি-ও একজন আদর্শ স্বামী হয়ে উঠতে পারেনি। আপনি তো একদম চোর স্বামী হয়েছেন। বউ অন্যের টাকা চুরি করে মেরে দিচ্ছে। আপনিও সেই টাকায় মজা লুটছেন। পরিস্থিতি আমাদের এমন জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেয়। অনেক সময় সহজ কিছুও কঠিন হয়ে যায়। আপনার মতো কাপুরুষের সাথে আমার বাবা বিয়ে ঠিক করেছিল। সেদিন আমি বাবা-মায়ের সন্মানের কথা চিন্তা না করে, আমার স্বপ্ন পূরন করতে চলে গিয়েছিলাম। একটা বার ভেবে দেখেছেন? আমি কোন মুখ নিয়ে বাবার সামনে আসতাম। আপনার বউ টাকা নিয়েই থেমে থাকেনি। আমার নামে বাবা-মায়ের কাছে নানারকমের মিথ্যা কথা বলেছে। আবার আমার কাছে বাবা-মায়ের নামে মিথ্যা বলেছে। আমি মানছি আমি খারাপ। আপনার বউ না হয় ভালো ছিল। সে চাইলই পারতো আমাকে আর বাবা-মাকে এক করে দিতে। সে দেয়নি। কেন দেয়নি জানেন সে আমার থেকে আর টাকা লুফে নিতে পারবে না। আপনি আর প্রাপ্তি আপু দু’জন দু’জনকে ভালোবাসতেন। দু’জন বুদ্ধি করে বিয়ে করলেন। মাঝখানে থেকে আমার বাবা-মায়ের সন্মান আর আমার জীবনটা কেন নষ্ট করলেন। আমি বাসায় এসেছি একদিন হয়নি। মানুষ আমায় নিয়ে কটু কথা শোনাচ্ছে। আমাকে আঁড়চোখে দেখছে। আমার যে সন্মান নষ্ট হয়েছে। সেগুলো ফিরিয়ে দিতে পারবেন। বউকে চুরি করার শিক্ষা দিচ্ছেন। সে তো আমার বোন ছিল৷ আমি তাকে ভিষণ ভালোবাসতাম। ভরসা আর বিশ্বাস থেকেই তাকে টাকা পাঠাতাম৷ এমনি এমনি পাঠালে আব্বু আম্মু টাকা গুলো ঠিক পাঠিয়ে দিত। সে এভাবে আমার সরলতার সুযোগ নিল! আজকে আপুকে জবাব দিতেই হবে। কেনো সে আমার সাথে এমন করল। আমার প্রশ্নের জবাব না দিলে, সবকিছু চূর্ণবিচূর্ণ করে দিব। জানের পরোয়া মেহেভীন করে না। আজকে আপনার বউকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। বেইমানি করার অপরাধে আপনার বউকে এমন শান্তি দেওয়া উচিৎ। তা দেখে যেন শহরের প্রতিটি অলিগলি কেঁপে ওঠে। মেহেভীনের কথায় পুরো পরিবেশ স্তব্ধ হয়ে গেল। এ যেন নিরতার মেলা বসেছে। প্রাপ্তি সুযোগ বুঝে পালাতে চাইল।

চলবে…..

পরের পর্বটি সবার আগে পড়তে পেইজটি ফলো করে সাথে থাকুন👉 গল্পের ভান্ডার

আরো সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হতে ভুলবেন না👉 লেখক-লেখিকার গল্পের ভান্ডার�

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here