#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_৩৫
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
মনের সাড়া মস্তিষ্কের পিছুটান এ কেমন লড়াই! জীর্ণ ক্ষত হৃদে বাস্তবতার যুদ্ধে আমি ভিষণ অসহায়। বিষাদে ছেয়ে গিয়েছে মনের আনাচে-কানাচেতে। রিয়াদ চৌধুরী রজনীর মধ্যে প্রহরে ভিষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে খবর কর্ণকুহরে আসতেই সমস্ত মন মস্তিষ্ক তিক্ত হয়ে উঠল। অপরাধবোধ ভেতর টা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। সে বাবার কাছে মুখশ্রী দেখাবে কি করে? কালকের কথা স্মরন করতেই বুকটা হুঁ হুঁ করে উঠল। সে বাবাকে কখনোই আঘাত করতে চায়নি। বাবার অসহায়ত্ব মাখা মুখশ্রী আঁখিযুগলের সামনে বারবার ভেসে উঠছে। ভেতরে অসহনীয় জ্বালাপোড়া করছে। সে মনস্থির করে নিল বাবাকে কষ্ট নিয়ে নিজের সুখ চাইবে না। সবাই তো পূর্ণতা খোঁজে সে না হাহাকার খুঁজে নিবে। মুনতাসিম নিজেকে শক্ত করে নিল। এতটা শক্ত হয়ে নিল যেন বাহির থেকে বোঝা না যায়। এই মানুষ টাই ভেতর থেকে একদম চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মুনতাসিম তার বাবার কক্ষে এসে বসলো। রিয়াদ চৌধুরী হাতে তখনও স্যালাইন চলছে। বাবাকে এমন অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখে যন্ত্রনা দ্বিগুণ বেড়ে গেল। অস্বাভাবিক ভাবে ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। মুনতাসিম গম্ভীর দৃষ্টিতে সাহেলা চৌধুরীর দিকে দৃষ্টিপাত করল। সাহেলা চৌধুরী বিলম্ব করল না মুখশ্রীতে আঁধার নিয়ে এসে কক্ষ ত্যাগ করল। রিয়াদ চৌধুরী ললাটের ওপরে এক হাতে রেখে স্থির হয়ে থাকা সিলিং ফ্যানের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছেন। মুনতাসিম মলিন গলায় বলল,
–স্যরি আব্বা আমি আপনাকে আঘাত করতে চাইনি। আপনি তো জানেন রাগের মাথায় আমি নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকি না। আপনি ছোট বেলা থেকে আমার কত-শত ভুল মাফ করে দিয়েছেন। শেষ বারের মতো আমাকে মাফ করা যায় না আব্বা। আপনাকে দুঃখ দিয়ে যে আমি শান্তি পাচ্ছি না। প্রতিটি মুহুর্তে জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাচ্ছি। আপনি চিন্তা করে নিজের ক্ষতি করবেন না। এই ধরনীর বুকে আপন বলতে আমার আপনিই আছেন। আপনার কিছু হয়ে গেলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাব আব্বা। আমাকে শাস্তি দিন মা’রু’ন তবুও নিজেকে কষ্ট দিবেন না। আপনার কষ্ট আমাকে ভিষণ বাজে ভাবে পোড়ায়। আপনাকে কষ্ট দিয়ে সুখ কিনতে চাইনা আব্বা। আমি শুধু চাই আপনি ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন। আপনার ভালো থাকার জন্য যা করতে বলবেন। আমি সবকিছু কিছু করতে রাজি আছি। আপনি শুধু আমাকে ক্ষমা করে দিন। রিয়াদ চৌধুরী আগের ন্যায় স্থির হয়ে আছেন। গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–মেহেভীনকে ভুলে যেতে হবে। যদি পারো তবেই আমায় আব্বা ডেকো, না হলে তোমার মুখে যেন আব্বা ডাক না শুনি।
–ভুলে যাব আব্বা খুব শীঘ্রই ভুলে যাব। আর কখনো আপনার কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়াব না। তবুও আপনি চিন্তা করে নিজেকে অসুস্থ করে ফেলবেন না৷ কথা গুলো বলার সময় মুনতাসিমের মনে হলো কেউ তার ভেতরটা রক্তাক্ত করে দিয়ে যাচ্ছে । ভালোবাসায় এতটা যন্ত্রনা কেন? ভালোবাসার মানুষকে ভুলে যেতে হবে কথা গুলো বলতেও যে দম বন্ধ হয়ে আসছে। বুকের বা পাশে চিনচিন করে ব্যথা করছে। হাহাকার বয়ে যাচ্ছে মনের শহরের অলিতে-গলিতে। ভাগ্যে যদি না-ই বা থাকবে তবে দেখা হয়েছিল কেন তার সাথে! মৃত মানুষ হারানোর চেয়ে জীবিত মানুষ হারানোর যন্ত্রণা বেশি। সে যে বলল মেহেভীনকে ভুলে যাবে। মেহেভীনকে কি ভোলা তার জন্য এতটাই সহজ হবে? তার অস্তিত্বের সাথে মিশে গিয়েছে মেহেভীন। নিজের অস্তিত্বকে ভুলে যাওয়া যায়! বুকভাঙা আর্তনাদ নিয়ে বাবার কক্ষ ত্যাগ করল মুনতাসিম। যে বাবা সারাজীবন দুঃখ কিনে তাকে সুখ দিয়েছে। সেই বাবাকে কষ্ট দিয়ে সে সারাজীবন কিভাবে সুখী হবে? এক জীবনে সব পেয়ে গেলে আক্ষেপ করবে কি নিয়ে? সে না হয় প্রিয় মানুষকে না পাওয়ার আক্ষেপ করে জীবন পার করে দিবে।
মুনতাসিম চলে যেতেই সাহেলা চৌধুরী রাগান্বিত হয়ে কক্ষে প্রবেশ করল। মুখশ্রীতে তার বিরক্তি ফুটে উঠেছে। সে রাগান্বিত হয়ে বলল,
–এটা আপনি কি করলেন? আপনি ছেলেটার ভালো চাইতে গিয়ে খারাপ করে ফেলছেন। আপনি শুধু নিজের ভালোর কথাই ভেবে গেলেন। বাবা হয়েও ছেলের মনের খবর টা রাখলেন না। এভাবে নিজ হাতে ছেলেকে শেষ করে দিচ্ছেন। দু’দিন পরে ছেলের লা’শ সামনে দিয়ে অশ্রু বিসর্জন দিতে হবে। সাহেলার কথায় অন্তর আত্মা কেঁপে উঠল রিয়াদ চৌধুরী। ক্রোধে চোয়াল শক্ত হয়ে এল তার। সে রাগান্বিত হয়ে সাহেলা বলে হুংকার ছাড়ল। সাহেলা তেজী কন্ঠে বলল,
–আপনার ছেলের এক কথায় আপনার সব মুখের কথা হারিয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালা দারুন একটা জিনিস তৈরি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কথায় থাকে না আমরা থাকতে মূল্য বুঝি না। কিন্তু হারিয়ে গেলে সেটা খুঁজি তখন বুঝে ও লাভ হয় না। কারন ততক্ষণে মানুষটা চিরতরে আমাদের জীবন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। আমি তার সৎ মা হয়ে বলছি মুনতাসিম একটা জিনিয়াস। যাকে আল্লাহ নিখুঁত ভাবে তৈরি করেছে। যার মনে না আছে হিংসা আর আছে প্রতিশোধের নেশা। সে এমনটা একটা মানুষ যাকে দেখলে রাস্তার ধুলাবালি গুলোও তাকে ভালোবেসে ফেলে। তার ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে প্রকৃতিও তাকে সন্মান জানায়। সে আপনাকে দ্বিতীয় বিয়ের খোঁটা দিয়েছে। এতেই আপনার বাবার ভালোবাসা উবে গেল। একটা বার ভাবলেন না যে ছেলের মা মারা গিয়েছে। সেই ছেলেকে সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার জন্য কিছু সময় দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। ছেলে বড় হচ্ছিল নিজেই সংসারে মায়ের অভাবটা বুঝে যেত। কিন্তু আপনি তাকে সময় দেননি। তার মা মারা যাবার পরপরই আমাকে করেছেন বিয়ে! একটা বার ভাবলেন না আমি আপনার সন্তানকে আদৌও ভালোবাসব কি না। যে মেয়ের নিজের সন্তান হয়নি। সেই মেয়ে কিভাবে অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান মনে করে ভালোবাসবে? মুনতাসিমই বা নতুন মানুষকে কিভাবে গ্রহণ করবে। মেহেভীনের কথা বলছেন। প্রাচীন কাল থেকে মেয়েদের বদনাম একটু বেশিই। যে মেয়েটা আপনার ছেলের জন্য নিজের জন্মদাতা পিতার কাছে র’ক্ষি’তা উপাধি পেল। জেনেশুনে বিবাহিত পুরুষের ঘর ভাঙে আরো কত-শত আঘাত পেল তার বাবার কাছে থেকে। দোষ না করে-ও দোষী হয়েছে মেয়েটা। কিন্তু যার জন্য আপনার ছেলেকে মেয়েটা এতটা কষ্ট দিল। সেই তাহিয়ার কোনো বিচার আপনি করলেন না! পারিবারিক সমস্যাটা না খুব গোপন একটা অসুখ। সেই অসুখে যারা পড়েছে তারা জানে মৃত্যু কতটা সহজ তাদের কাছে। একদিকে পারিবারিক সমস্যা আরেক দিকে প্রিয় মানুষের প্রতারণা। মেয়েটা ভেতর থেকে ভেঙেচুরে গিয়েছিল। সহ্য ক্ষমতা কমে গিয়েছিল দু’টো পরিস্থিতি একসাথে নিতে পারেনি। যার ফল স্বরূপ জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করে ফেলল। সে ছেলে হলে সাতগুন মাফ হয়ে যেত কিন্তু সে মেয়ে তার ক্ষমা নেই মানে কোনো ক্ষমা নেই। ভাববেন না আমি মুনতাসিমকে ভালোবেসে কথা গুলো বলেছি। আমি একজন মা আর মেয়ে হয়ে কথা গুলো বললাম। আজ মুনতাসিমের জায়গায় আমার ছেলে-মেয়ে থাকলে আমি যুদ্ধ করে শুরু করে দিতাম। সে আমার ছেলে নয় বলেই মুখে কথা গুলো বললাম। আর একটা মেয়ে সমাজের কাছে কতটা বিষাক্ত সেটা তুলে ধরলাম। আপনার ছেলেকে কষ্ট দিয়ে মেয়েটা যে ভালো আছে। এমনটা কিন্তু নয় আপনার ছেলের থেকে দশগুন মেয়েটা পুড়ছে। আপনার হাতে যদি সময় থাকে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। কথা গুলো বলে থামলেন সাহেলা চৌধুরী। রিয়াদ চৌধুরী তখনো নিরুত্তর রইল। সাহেলা চৌধুরী কথা গুলো যেন কর্ণগোচর করেননি। সাহেলা চৌধুরী বিরক্ত হয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলন। রিয়াদ চৌধুরী বুক ভারি করা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
শব্দরা আজ বাক্য হারিয়েছে। সুখরা হারিয়ে দুঃখে পরিনত হয়েছে। কথা বলার মেয়েটা চুপ থাকা শিখে গিয়েছে। হাসি গুলো আজ মলিনতায় ঢেকে গিয়েছে। ছন্দরা আজ সুর হারিয়েছে। চার দেওয়ালের আবদ্ধ কক্ষে বসে আছে মেহেভীন। এই প্রথম বাড়ি আসলো কিন্তু বাড়িতে বাবা নেই। বাবা ছাড়া পুরো বাড়িটা খাঁ খাঁ করছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে তার জীবন টা তো এমন হবার কথা ছিল না। তবে জীবন কেন তাকে বিষাদের মোড়ে নিয়ে এসে দাঁড়া করালো! মেয়ের নিরবতা রাইমা বেগমকে ভিষণ কষ্ট দিচ্ছে। সে মেহেভীনের মাথায় তেল দিয়ে খাবার নিয়ে আসতে গিয়েছে। শান্ত নদীর ন্যায় মেয়েটা তার শান্ত হয়ে গিয়েছে। কথায় কথায় আর ঝগড়া করছে না। মুখে মুখে তর্ক করছে না কথা বলা মানুষ যখন চুপ হয়ে যায়। তখন সহ্য ক্ষমতা ভেতর থেকে ক্ষয় হয়ে আসে। মেহেভীনের অবস্থা দেখে রাইমা বেগম ভেতর থেকে শক্তি হারাচ্ছে। মেহেভীনের সামনে এক লোকমা খাবার মুখের সামনে ধরে বলল,
–মুনতাসিম এসেছিল। এবার মেহেভীন মলিন দৃষ্টিতে মায়ের দিকে দৃষ্টিপাত করল। রাইমা বেগম শান্ত কণ্ঠে বলল,
–তোকে বিয়ে করতে চায়। আমি বলেছি তাকে আমার পছন্দ সে পরিবার নিয়ে আসলে তবেই বিয়ে দিব। আমি কি ভুল কিছু বলে ফেলছি মেহেভীন?
–আমি এখন বিয়ে করতে চাই না মা। আমার একটু সময়ের প্রয়োজন। দিন দিন তুমি এতটা পাষাণ হয়ে যাচ্ছে কিভাবে? এই সময়ে বিয়ের কথা চিন্তা করলে!
–সবাই যদি ভেঙে পড়ে শক্তি যোগাবে কে? মায়েদের নিজের কথা ভাবার সময় নেই। তারা শুধু চায় তাদের সন্তান কিভাবে ভালো থাকবে। আজ তোর বাবা চলে গিয়েছে। কাল যদি আমি চলে যাই তখন তোর কি হবে? আমি কার ভরসায় তোকে রেখে যাব? এই দুনিয়া ভিষণ নিষ্ঠুর রে মেহেভীন। একজন শক্ত পুরুষ ছাড়া মেয়েরা বরাবরই অসহায় কথাটা তিক্ত হলে-ও বাস্তব সত্য।
–বাবার খু’নি কে সামনে না আসা পর্যন্ত বিয়ে করব না। আমাকে এতটুকু সময় দাও। তোমাকে ছাড়া নিঃস্ব হয়ে যাব। পাষাণের মতো কথা বলা বন্ধ করো মা। তোমার মেয়ে এতটাও দুর্বল নয় সে নিজের টা নিজে ঠিক করে খেতে পারবে। রাইমা বেগম কিছু বলার আগেই রহমান আর আরিয়ান প্রবেশ করল কক্ষের মধ্যে। মেহেভীনকে দেখে চমৎকার হাসি উপহার দিলেন। রহমান হাসোজ্জল মুখশ্রী করে বলল,
–খাওয়ার সময় এসে বিরক্ত করলাম?
–আপনারা নিজের মানুষ খাওয়ার সময় কি আর অসময়েই কি যখন ইচ্ছে তখন আসবেন। রাইমা বেগমের কথায় হাসলেন রহমান। সে কোমল কণ্ঠে বলল,
–মেহেভীন রাতে এসেছে?
–জি, থানা থেকে কোনো খবর পেলেন ভাই?
–না কোনো খবর পাইনি। তারা একটা খন্ড ও উদ্ধার করতে পারেনি। কথা গুলো কর্ণকুহরে আসতেই মা-মেয়ের মুখশ্রী মলিন হয়ে আসলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রহমান বলল,
–যে কথা বলতে আসলাম। ফরিদের শেষ ইচ্ছে ছিল মেহেভীনের সাথে আরিয়ানের বিয়ে দিবে। এখন তোমাদের বাসায় একটা ছেলের প্রয়োজন আছে। নিজের বাসায় ছেলে রেখে বাহিরে যাওয়ার চিন্তা করছ না নিশ্চই। তুমি অনুমতি দিলে ঘরোয়া ভাবে বিয়ের কাজটা শেষ করে রাখতে পারি। কেসের তদন্ত শেষ হলে তুলে নেওয়ার অনুষ্ঠান করব। রাইমা বেগম জ্বলে উঠলেন। রাগান্বিত হয়ে বলল,
–আপনার ছেলে আমার মেয়েকে বেচে দিতে চেয়েছিল। জেনেশুনে এমন ছেলের সাথে আমি আমার মেয়ের বিয়ে কখনোই দিব না। আপনার ছেলে স্বার্থের জন্য বিয়ের পরে আমার মেয়েকে বেচে দিতে দু’বারও ভাববে না। এমন নিকৃষ্ট ছেলের হাতে আমি আমার মেয়ে দিব না। আপনি না ভালো মানুষ ভিষণ ধর্ম ভিরু মানুষ। আপনি কোন বিবেকে এমন কথা বলতে পারলেন!
–আমি ভালো মানুষ জন্যই তোমাদের এখানে রেখেছি। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে তোমাদের উচ্ছেদ করে দিতো। মেহেভীন রাগান্বিত হয়ে বলল,
–আপনারা এমন ভাবে কথা বলছেন। যেন আমাদের উচ্ছেদ করে দেওয়া খুব সহজ কাজ! আপনি বলবেন আর আমরা আপনাদের ভয়ে পালিয়ে যাব!
–বেশি কথা বলিস না মেহেভীন ফলাফল খারাপ হয়ে যাবে।
–আপনি কি ফলাফল খারাপ করবেন। আপনার ভালো মানুষির মুখোশ টেনে ছিঁড়ব আমি। আরিয়ান রাগান্বিত হয়ে মেহেভীনকে থা’প্প’ড় দিতে যাবে। তখনই মেহেভীন আরিয়ানের পু’রু’ষা’ঙ্গে লাথি মারে। এই জা’নো’য়া’রটা এই অঙ্গের জন্যই নিজেকে শক্তিশালী মনে করে। সেই শক্তি টাই যদি না থাকে, তাহলে কিভাবে শক্তির অপর প্রয়োগ করবে। আরিয়াম ব্যথায় কুঁকড়িয়ে উঠল। আগের থেকে দ্বিগুন ভয়ংকর হয়ে এগিয়ে আসতে চাইলে, রহমান ছেলেকে থামিয়ে দেয়। রাগান্বিত হয়ে বলে,
–ভালো কথায় সমাধানে আসতে চেয়েছিলাম। আরিয়ানের গায়ে হাত তুলে কাজটা ঠিক করলি না। আমি তোদের ছাড় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন ব্যাপার টা তোরা ঘোলাটে করে ফেলছিস। আমার জমির সম্পূর্ণ ভাগ আমি নিব। তোদের মা-মেয়েকে ভাতের সাথে বি’ষ দিয়ে মে’রে দিব। কেউ টেরও পাবে না। সাধারণ মৃত্যু বলে চালিয়ে দিব জানিস তো সমাজের মানুষ আমায় কতটা ভালোবাসে। রাইমা বেগম রহমানের মুখশ্রীতে এক দলা থুতু নিক্ষেপ করল। ঘৃণায় পুরো শরীর রি রি করছে। রহমান রাগান্বিত হয়ে রাইমা বেগমের চুলে মুঠি শক্ত করে ধরলেন। রাইমা বেগম ব্যথায় কুঁকড়িয়ে উঠলেন। মেহেভীনের ভেতরে অদ্ভুত ভাবে শক্তি কাজ করতে শুরু করল৷ সে ঘরের কোণে রাখা বাঁশটা নিয়ে এসে রহমানের হাতে পরপর চারটা বাড়ি মা’র’লো। রহমান ব্যথায় হাত সরিয়ে নিল। মেহেভীন রাগান্বিত হয়ে বলল,
–তোরা যাবি নাকি তোদের দু’টোকে এখানেই পুঁ’তে ফেলব। মানুষ ডাকব ডেকে তোদের ভালো মানুষের মুখোশ খুলব। বাবা নেই বলে যা ইচ্ছে খুশি করবি? আর আমরা অসহায় নারীর মতো সবকিছু মুখ বুঁজে সহ্য করে নিব। আমাদের এতটা দুর্বল ভাবার কিছু নেই। আমাদের জমি আমরা কত ফকিরকে দান করেছি। তোর মতো ফকিরকেও না কিছুটা জমি দান করব। এতে আমার জমি কবে যাবে না আমাদের আয়য়ের বরকত আল্লাহ তায়ালা নিজে বাড়িয়ে দিবেন। আরিয়ান রাগান্বিত হয়ে মেহেভীন গলা চেপে ধরলো। রাইমা বেগম আরিযানকে প্রহার করতে যাবে। তখনই রহমান রাইমা বেগমের মুখ চেপে ধরলো।
চলবে…..
(আমি তো সামনের দিকে আগাতেই চাইছি। গল্প টা না আগলে কি করব। আস্তে আস্তে লিখতে দিন তাড়াহুড়ো করলে গল্পটা নষ্ট করে ফেলতে পারি। আগে ১৫০০ শব্দ হলেই পোস্ট করতাম। এখন তা বাড়িয়ে ২০০-৩০০ শব্দ বেশি লেখি যেন গল্পটা সামনের দিয়ে আগায়। ভাবি এই পর্বে শেষ করব আরো দু’টো পর্ব বেশি হয়ে যায়। কেমন হয়েছে সবাই জানাবেন। সবাই রেসপন্স করবেন। শব্দসংখ্যা:১৮৯৬)