#দোলনচাঁপার_সুবাস
#পর্বঃ১৪
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা
আজ সকাল থেকেই বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে দোলার। নিশীথের সাথে দেখা করে সবকিছু ক্লিয়ার করবে বলে ভার্সিটির পরে টিউশনির মেয়েটাকেও আজ সকালে পড়িয়েছে। ফলস্বরূপ, সকাল থেকে টিউশন, ভার্সিটির ক্লাস এসব করার পর দোলা এখন ক্লান্ত। আকাশেও আজকে কাঠফাটা রোদ! ওর মেরুন রঙের জামাটাও ভিজে জবজবে হয়েছে ঘামে। ওড়নার উল্টোপিঠে কপালের ঘাম মুছে ঘড়ি দেখে নিলো দোলা। মিনিট পাঁচেক পর ক্লাস শেষ হবে। তারপর নিশীথের সাথে দেখা। সে কি ঠিকঠাক নিজের অবস্থা বুঝাতে পারবে ওকে? লোকটা বুঝবে তো? নাকি আবারও চিরচেনা স্বভাবমত বেকে বসবে? চিন্তিত মনে ভাবতে থাকে মেয়েটা। এরই ফাঁকে চোখের পলকে পেরিয়ে যায় সময়!
ভার্সিটির গেট থেকে খানিকটা দূরে নেভিব্লু রঙের টিশার্ট পড়ে চোখে কালো সানগ্লাস লাগিয়ে এই রোদের মধ্যেই দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে নিশীথ। থেকে থেকে একটু পরপর রুমালে নাকের ডগার উপর লেগে থাকা মুক্তোর দানার মতো ঘাম মুছে চলেছে। রোদের প্রতাপে ওর ফর্সাটে চেহারায় স্পষ্ট লালচে ভাব দৃশ্যমান হয়েছে। বলাবাহুল্য, নিশীথ ছোটকাল থেকেই গরম সহ্য করতে পারেনা। সারাজীবন এসির বাতাসে বড় হওয়া, এসি গাড়িতে টইটই করে ঘুরে বেড়ানো ছেলেটা গরম সহ্য করতে পারবেনা এটাই স্বাভাবিক! কিন্তু তবুও আজ সে মুখ বুজে গরম সহ্য করে দাঁড়িয়ে আছে, দোলা কি বলবে এ নিয়ে কাল থেকে অনেক চিন্তাভাবনা করেছে। যার দরুন এক্সাইটমেন্টের চোটে ছাতাটাও আনতে মনে নেই তার! অথচ তার আশায় গুড়েবালি দিতে প্রস্তুত রমনীটা বেশ ধীরকদমে তার দিকে এগিয়ে আসছে।
ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের বিদায় দিয়ে এদিক-সেদিক ফিরতেই কিছুদূর দাঁড়িয়ে থাকা লম্বাটে নিশীথকে খুজে পেতে দেরি হলোনা দোলার। ওকে দেখামাত্রই পা দুটো নিজ থেকে নড়বড়ে অনুভূত হলো মেয়েটার। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে দোলা জানেনা! সে তো সাহস করেই নিশীথকে ডেকেছে এবং কি কি বলবে সবটা এতক্ষণ মনে মনে ভেবেও রেখেছে। তবে কেন এত সংকোচ আর কিসেরই বা দ্বিধা? দোলা জবাব খুজে পায়না। এদিকে নিশীথ দোলার এহেন আচরণে খানিকটা বিরক্ত হলো। একেতো ওর জন্য এভাবে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে কখন থেকে, আবার এখন সেই মেয়ে কিনা ওকে দেখেও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এক জায়গায়? এগিয়ে ওর কাছে আসছেনা পর্যন্ত! কি আশ্চর্য!
দোলার ভাবনায় ছেদ পড়ে যখন নিশীথ ওর নাম ধরে ডাকে। চোখ তুলে তাকাতেই হাতের ইশারায় ওকে নিজের কাছে ডাকলো ছেলেটা। তা দেখে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে যথাসম্ভব দ্রুতপায়ে এগিয়ে যায় ওর কাছে। দোলাকে আসতে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ছেলেটা। ও কাছে আসতেই বলে,
—চলো আগে কোথাও গিয়ে এসির মধ্যে বসি। গরমে সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছি রোদের মধ্যে!
নাকমুখ কুচকে বলে নিশীথ। ওর কথায় মনোযোগী দৃষ্টিতে ওকে পর্যবেক্ষণ করে দোলা। চোখেমুখে ঘাম চিকচিক করছে, মুখমণ্ডল জুড়ে লালাভ বর্ণ স্পষ্ট বলে দিচ্ছে ওর করুণ দশা। নিশীথের এরুপ অবস্থা দেখে আনমনেই দোলার মায়া হলো খানিকটা। ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে দিয়ে বললো,
—ছাতা আনলেই তো পারতেন। রোদের মধ্যে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন ছিলোনা!
যদিও নিশীথের কাছে রুমাল ছিলো, কিন্তু দোলা নিজ থেকে টিস্যু বের করে দিবে এটা সে আশা করেনি। এ যেন মেঘ না চাইতেই জলের মতোন ওর কাছে! তাইতো বামহাতের রুমালটা খুব যতনে আড়াল করে পেছন পকেটে পুরে ফেললো দোলার অগোচরেই। হাত বাড়িয়ে টিস্যুটা নিয়ে মুখমন্ডল মুছে আলতো করে হাসলো। ম্লান হেসে বললো,
—তুমি প্রথমবার ডাকলে তাও হঠাৎ করে এভাবে। কি করবো না করবো মাথাতেই আসেনি। শুধু ছুটে চলে এসেছি তোমার কথা রাখতে!
ওর কথায় দোলা বিষাদময় শ্বাস ছাড়লো। ভাবলো ধীরেসুস্থে ওকে সব বুঝাবে। তাই স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,
—এখান থেকে মিনিট পাঁচেক দূরে একটা ক্যাফে আছে। আপনার যেহেতু এখানে অস্বস্তি লাগছে, ওখানে বসেই কথা বলি কেমন?
দোলাকে এত স্বাভাবিকভাবে এসব বলতে শুনে নিশীথ মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় মাথা নাড়ে। দু চোখে স্বপ্ন নিয়ে ওর পিছু পিছু হেটে চললো ক্যাফের উদ্দেশ্যে!
_____________________
এসির নিচে বসে আইস ল্যাটেতে চুমুক দিয়ে শরীর হিম করে তৃপ্তির সহিত দোলাকে আপাদমস্তক বিশ্লেষণ করছে নিশীথ। ওর সামনে বসা মেয়েটা না কোনোকিছু খাচ্ছে, না কোনো কথা বলছে। এভাবে থাকলে হবে? কিসের এত ভয় ওর? আর কেন-ই বা এত নার্ভাসনেস তার? নিশীথ বুঝতে পারছেনা। তবুও দোলাকে আশ্বাস দিতে সে নরম স্বরে বললো,
—এত নার্ভাস কেন তুমি? কি এমন বলবে যার জন্য ডেকেছো? রিল্যাক্স হয়ে বলো!
দোলা আনমনে ঠোঁট কামড়ায়। দুই হাত ওড়নায় মোচড়ামুচড়ি করে। এর মাঝেই বিড়বিড়িয়ে আওড়ায়,
—আ-আমার থেকে দূরে থাকুন, নিশীথ ভাই!
নিশীথ কেবল কফিতে চুমুক বসিয়েছিলো, দোলার কথা কর্ণগোচর হতেই ও বিষম খায়। যেন হজম করতে পারছেনা ব্যাপারটা এভাবে তাকিয়ে রয়। এদিকে নিশীথ বিষম খাওয়ায় দোলা চমকে যায়। ওকে কাশতে দেখে নিজ জায়গা থেকে উঠবে কি উঠবেনা ভাবার মাঝেই ছেলেটা নিজেকে সামলে নেয়। ধাতস্থ হবার পর নিশীথের এতক্ষণকার ফুরফুরে চেহারায় আধারসম মেঘ দেখা যায়। মুখখানা অত্যন্ত গম্ভীর করে বজ্রকণ্ঠে প্রশ্ন করে,
—এটা বলার জন্য আমায় ডেকেছিলে?
ওর গম্ভীর মুখশ্রী ও থমথমে গলায় দোলা ভয় পায়। সে আন্দাজ করেছিলো নিশীথ যদি ওকে পছন্দ করে তবে ওর কথা শুনার পর হয়তো এরকমই কোনো রিয়েকশন দিবে এবং তার ধারণা সঠিক প্রমাণিত হতে দেখে নিজ মনে সে বড়সড় এক ঢোক গিলে! অতঃপর মুখ নিচু করে উপরনিচ মাথা নাড়ে। রাগে নিশীথ এর চোখমুখ দপদপ করে। সে অনুভব করে এতক্ষণ এসির নিচে শীতল হওয়া শরীরটা রাগের উত্তাপে আবারো গরম হতে শুরু করেছে!
তবু দোলার সাহস দেখে মনে মনে সে অবাক না হয়ে পারেনা! এ মেয়ে দেখি তার অনুমানের চেয়েও বেশি স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড! কিভাবে ওকে ডেকে এনে ওর থেকে দূরে থাকার কথা বলে দিলো! তাও নিশীথ মনের কথা বলবার আগেই! ওর দোলনচাঁপা তো দেখি ভীষণ স্মার্ট। নিশীথ মনে মনে ভাবে!
খানিকবাদে আনমনে কিছু একটার হিসেব কষে নিশীথের ওষ্ঠদ্বয় বেকে যায়, তাদের আড়ালে সূক্ষ্ম হাসির রেখা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু মাথা নত করে রাখায় সে হাসি দোলার দৃষ্টিগোচর হয়না!
খানিকবাদে নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে, পুরুষালি কঠিন সত্তাকে দমন করে, অত্যন্ত নরম সুরে নিশীথের কণ্ঠে সেই চেনা নাম উচ্চারণ হতে শুনা যায়।
“দোলনচাঁপা?”
দোলা বিস্ময়ের সহিত মাথা তুলে যায়। এ মুহুর্তে একটু আগের কথা শুনেও নিশীথ যে ওকে এভাবে এত মায়াভরা কণ্ঠে ডাকবে তা সে ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করেনি! সে ভেবেছিলো নিশীথ হয়তো রাগ দেখাবে, কিন্তু এখন তো তেমন কিছুই ঘটলোনা! তবে এই ছেলের মনে চলছেটা কি? দোলা ভেবে পেলোনা! ওর ভাবনার মাঝেই নিশীথ আরেকবার ডেকে উঠায় নিজেকে সামলে দোলা অস্পষ্ট ভাবে জবাব দেয়,
—বলুন?
নিশীথ কিছু বলার আগে একটু থামে। যেন কি কি বলবে তার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেভাবেই খানিকবাদে পুনরায় বলতে আরম্ভ করে,
—তুমি কেন আমায় দূরে থাকতে বলছো?
এ প্রশ্ন দোলা আশা না করায় উদ্ভ্রান্তের ন্যায় শুধায়,
—মানে?
নিশীথ বক্র হাসে। ঠোঁট বাকিয়ে বলে,
—আমি কবে তোমার কাছে গিয়েছি যে দূরে থাকতে বলছো? এমন কিছু কখনো হয়েছে কি আমাদের মধ্যে?
এবার দোলা আশ্চর্যের সপ্তম আকাশে পৌঁছে যায়! বলছে কি এই লোক! কবে কাছে এসেছে মানে? সেদিন রাতের কথা কি ভুলে গেছে নাকি? দোলা ইতস্তত করে বলে,
—না মানে, বলছিলাম যে…
—হ্যা, বলো। কি বলছিলে? আমি বুঝিনি তোমার কথা। স্পষ্ট করে বলো কবেকার কথা বলছো! কি করেছি আমি?
দোলা মনে মনে বেশ চটে যায়। ছেলেটা যে ইচ্ছে করে ওকে জব্দ করার জন্য এমন প্রশ্ন করেছে বুঝতে বাকি রয়না আর! ফলস্বরূপ, আরও কিছুক্ষণ এভাবেই ইতস্তততা চলতে থাকে ওর। কেননা, ওই ঘটনার কথা মুখে বলার মতো নির্লজ্জ সে নয়। এটা হয়তো নিশীথ বুঝেছে এবং সেটারই ফায়দা নিচ্ছে! দোলা মনে মনে ফুসে।
এদিকে নিশীথ একধ্যানে দোলার রিয়েকশন দেখছিলো শুধু এতক্ষণ! মেয়েটা যে ওর প্রশ্নে কি ভীষণ লজ্জাটাই না পেয়েছে তা সে ভালোই উপলব্ধি করতে পারছে। তবু বেশিক্ষণ এ পরিস্থিতি থাকলোনা। কেননা দোলা এবার চোখমুখ শক্ত করে স্পষ্ট কণ্ঠে বললো,
—বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। তাই আমি জানি আপনি ঠিকি বুঝেছেন আমি কিসের কথা বলছি এবং কেন বলছি। কিন্তু আপনি যেরকম ভাবছেন আমি ওরকম মেয়ে নয়। তাই প্লিজ আমার সাথে কোনোকিছু করার চিন্তাভাবনা করবেন না। আমি অনুরোধ করছি! প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুন!
এবার নিশীথ সিরিয়াস ভাবে তাকায়। শান্তভাবে কিছুক্ষণ দোলার দিকে তাকিয়ে যথাসম্ভব ঠান্ডা গলায় জবাব দেয়,
—যদি বলি তোমার থেকে দূরে থাকবোনা তবে?
ওর প্রশ্নে দোলা থতমত খায়। আমতা আমতা করে কিছু বলবে তার আগেই নিশীথ বলে,
—যেহেতু তুমি সব বুঝেছোই এবং আমায় ডেকেছো এ বিষয়ে কথা বলার জন্য, তবে তাই সই। কিন্তু আমার কথাও আজকে মন দিয়ে শুনে রাখো, আমি তোমার পিছু ছাড়ছিনা, দোলনচাঁপা। এত সহজে তো কখনোই নয়! এতে যদি তোমার আপত্তি থাকে, তবুও আমার কিছু করাই নেই। আমি তোমার সব কথা মানতে রাজি, শুধু এটা নয়।
নিশীথের কণ্ঠে দৃঢ় প্রত্যয়। ওর মনের না বলা অনুভুতিগুলো পরিপূর্ণ শব্দ ছাড়াই ওর প্রতিটি বাক্যে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলো দোলাকে। যে বাক্যগুলো কিছুটা হলেও কারাঘাত করলো দোলার অন্তরে। মেয়েটা ফোস করে একটা শ্বাস ছাড়লো! সে যা ভেবেছিলো, তাই হচ্ছে। নিশীথ এত সহজে দমে যাওয়ার পাত্র নয় এবং এ কথাটা স্পষ্ট ভাবে আজকে বুঝিয়েও দিলো ওকে। এখন সে কি করবে? দোলা তবু বুঝদারের ন্যায় বলতে চায়,
—আপনি শুধু নিজের অনুভুতিগুলো বুঝছেন, নিশীথ ভাই। কিন্তু আমারটা? আমার কথা কি একবারো ভেবে দেখেছেন?
নিশীথ ভ্রু কুচকায়। তীর্যক কণ্ঠে প্রশ্ন করে,
—তুমি অন্য কাউকে পছন্দ করো?
দোলা বিরক্ত হয়। ছেলেদের মনে কি শুধু এটাই চলে? দাতে দাত চেপে সে জবাব দেয়,
—না। আমি কাউকে পছন্দ করিনা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি এখনো এসবের জন্য প্রস্তুত। আর এভাবে তো একদমই নয়! আমি…
ওকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে নিশীথ বলে বসে,
—তবে কি তুমি বুড়িবয়সে প্রেম করবে? কাম’অন দোলনচাঁপা, এখনই তো সময় ভালোবাসার!
—কিন্তু এটাকে ভালোবাসা বলেনা, নিশীথ ভাই।
দোলা কাঠকাঠ কণ্ঠে জবাব দেয়। নিশীথ থেমে যায়। জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে থাকার মাঝেই দোলা হঠাৎ প্রশ্ন করে বসে,
—আপনি আমায় চিনেন কতদিন হলো? কতটুকুই বা চিনেন? কেবল সপ্তাহখানেক দেখেছেন, ভালো লেগে গেছে এটাকে কি প্রেম বলে? আপনি কি আদৌ আমায় ভালোবাসেন? আমার বিশ্বাস হয়না!
এবার দোলার প্রশ্নের বাণ সঠিক নিশানায় গিয়ে লাগে। নিশীথ হঠাৎ করেই চুপ হয়ে যায়। যে প্রশ্নের জবাব ওর কাছে নেই দোলা ঠিক এমনই এক প্রশ্ন করে বসেছে আজ। ওর ভাবনার মাঝেই দোলা আবারো বলে,
—আপনি আমায় প্রথম দেখে পছন্দ করেছেন, সেটাকে ক্ষণিকের আবেগ বা মোহ বলে। এই মোহের বশে সম্পর্ক স্থাপন করলে সেটা কতদিন টিকবে বলে আপনার মনে হয়? যেখানে আপনি আমার সম্পর্কে ঠিকমতো কিছু জানেন না, আর না-ই আমি আপনার সম্পর্কে ঠিকমতো কিছু জানি সেখানে ভালোবাসার উৎপত্তি হবে কোথা থেকে? এভাবে আর যা-ই হোক, ভালোবাসা হয়না। তাই সময় থাকতেই এসব থেকে দূরে সরে যান প্লিজ। আমার জীবনে এমনিতেই অনেক ঝামেলা আছে, আর অন্যকিছুতে জড়াতে চাইনা।
দোলার কথা শেষ হওয়ার মাঝেই ওর ফোনে কল চলে আসে। মায়ের ফোন দেখে রিসিভ করতেই উনি কিছু জরুরি কাজের তাগিদ দেন। ফলস্বরূপ কল কেটে নিশীথের উদ্দেশ্যে দোলা বলে,
—মা ডাকছে। আমার এক্ষুনি আর্জেন্ট যেতে হবে। আপনি একটু আমার কথা ভেবে দেখবেন, কেমন? আসি তবে!
নিশীথ আস্তে করে মাথা নাড়তেই দোলা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়। হুড়মুড়িয়ে ক্যাফে থেকে বেরিয়ে যায়। পেছনে ফেলে যায় এক উদাসীন নিশীথকে। যে এতক্ষণ চুপচাপ থাকলেও মনে মনে দোলার প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজছিলো। প্রস্থানরত দোলার প্রতিচ্ছবির দিক চেয়ে ওর মুখ ফুটে বেরোয়,
—আমি জানিনা এটাকে ভালোবাসা বলে নাকি মোহ বলে, প্রেয়সী। কিন্তু এটা অবশ্যই জানি, এই অল্প ক’দিনেই তুমি আমার জন্য বড্ড প্রয়োজনীয় হয়ে গেছো। আমার জীবনে আর কিছু চাই কিংবা না চাই, একগুচ্ছ শুভ্র দোলনচাঁপার সুবাস আমি চাই।
#চলবে
রাগ করবেন না, বড় পর্ব দিয়েছি। একটু থেমে থেমে লিখতে হয়েছে তাই সময় বেশি লেগেছে। তাই কস্ট করে হলেও গঠনমূলক মন্তব্য করে যাবেন সবাই 🤍