#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_২১
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
আঁখিযুগল ঝাপসা হয়ে আসতে শুরু করল। মনের গহীনে থেকে ডেকে বলছে। এত সহজে বিশ্বাস করিস না মেহেভীন। ধোঁকার জগতে সহজ-সরল হতে নেই। মেহেভীনের মস্তিষ্কে সন্দেহের দানা এসে বাসা বাঁধলো। সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাহিয়ার দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। আচমকা মেহেভীনের মুখশ্রী বিরক্তিতে ভরে উঠল। সে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–আপনার স্বামী আপনাকে এতরাতে একা ছাড়লো? আপনি বাসায় গেলে আপনার স্বামী আপনাকে মা’রবে না। চলুন আমি আপনাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসি। আর আপনার স্বামীর সাথে আমার কিছু বোঝাপড়া আছে। আজকে সেগুলো মিটিয়ে তারপরে আমি বাড়ি আসব। মেহেভীনের কথায় তাহিয়া থতমত খেয়ে গেল। সে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। মেহেভীন এমন কিছু বলতে পারে, তা তাহিয়ার কল্পনার বাহিরে ছিল। প্রাপ্তি যে তাকে বলল মেহেভীন খুব সহজ সরল মেয়ে। তাহিয়াকে নিশ্চুপ হতে দেখে মেহেভীনের সন্দেহ দৃঢ় হলো। সে আরেকটু নিশ্চিত হতে বলল,
–আপনাদের বিয়ের ছবি আছে। থাকলে একটু দেখাবেন? মেহেভীনের কথায় তাহিয়া আশার আলো খুঁজে পেল। সে বিলম্ব করল না। দ্রুত ফোন থেকে একটা ছবি বের করে দেখালো। সেখানে তাহিয়া লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ে আছে। শরীরে বাহারী রকমের অলঙ্কার। দু-হাত ভর্তি মেহেদী পুতুলে মতো লাগছে তাহিয়াকে। যে কেউ দেখলে বলবে নতুন বউ। তার পাশেই শুভ্র পাঞ্জাবি পড়া মুনতাসিম দাঁড়িয়ে আছে। ছবিটা দেখে মেহেভীনের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল। হৃদয় টা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। শরীর পুড়লে দেখা যায়। কিন্তু মন পুড়লে দেখা যায় না কেন? তাহলে মানুষ মানুষকে পোড়ানোর আগে দশবার ভেবে নিতো।
–হতেও পারে আপনি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে বউ সেজে গিয়েছিলেন। আমি আপনাকে এভাবে কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি। আপনি মুনতাসিমকে আমার সামনে নিয়ে এসে প্রমাণ করুন যে সে আপনার স্বামী। তাহিয়া নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না৷ সে রাগান্বিত হয়ে বলল,
–একটা মেয়ে কখনো তার স্বামী সন্তান নিয়ে মিথ্যা কথা বলতে পারে! আজকাল মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু একটা বিবাহিত ছেলের সাথে রঙ্গলীলা করতে খুব মজা লাগে তাই না। আমি বলছি আমি তার অর্ধাঙ্গিনী তার অনাগত সন্তানের মাতা। আমার কথা বিশ্বাস না করে আপনি আমাকে সন্দেহ করছেন?
–আমাকে খোঁচাতে এসে আপনার খুব ভালো লাগছে তাই না। ভেবেছিলেন মেহেভীন কতটা বোকা তাকে যা বোঝানো যায়। সে তাই বুঝবে আমাকে ছোট বাচ্চা মনে হয় আপনার। প্রমাণ ছাড়া একটা কথাও মেহেভীন বিশ্বাস করবে না। আপনি বিয়ের ছবি দেখিয়েছেন। বিয়ের কাবিন দেখাবেন। মুনতাসিমকে আমার সামনে নিয়ে এসে তার মুখে স্বীকার করাবেন। তারপরেই আমি বিশ্বাস করব সে আপনার অর্ধাঙ্গ। ক্রোধে চোয়াল শক্ত হয়ে এল তাহিয়ার। আঁখিযুগল রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। আঁখির জলন্ত আগুন মেহেভীনকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভস্ম করে দিতে ইচ্ছে করছে। মস্তিষ্ক উত্তপ্ত হয়ে টগবগ করছে। সে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
–আপনি কয়টা দিন অপেক্ষা করুন। আমাদের বিয়ের কাগজ আমেরিকাতে আছে। সে তো আর আজকাল ধরে আমার স্বামী নয়। সে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আমার অর্ধাঙ্গ। তাহিয়ার কথায় মেহেভীনের মুখশ্রীতে তাচ্ছিল্যের ফুটে উঠল। তাহিয়া কোনো কথা বলার সুযোগ পেল না। যাবার সময় মেহেভীনকে হুমকি দিয়ে গেল। সে মেহেভীনকে দেখে নিবে। মেহেভীন তাচ্ছিল্যের সুরে জবাব দিল, “অপেক্ষায় থাকলাম।
তাহিয়া চলে যেতেই অজানা ভয়ে ভেতরটা কাবু হয়ে আসছে মেহেভীনের। তাহিয়া যদি সত্যি কথা বলে থাকে আর সেটা যদি প্রমাণ হয়ে যায়। তখন সে কি করবে? ভেতরটা হাহাকার করে উঠছে। অনুভূতি শূন্য হয়ে যাচ্ছে মেহেভীন। মনের গহীন অশান্ত হয়ে উথাল পাথাল করছে। মেহেভীনের হৃদয় শীতল করার জন্য মুনতাসিমের একটা কলই যথেষ্ট ছিল। সে কক্ষে এসে দেখলো মুনতাসিম ফোন দিয়েছে। কেন জানি মেহেভীনের ভিষণ রাগ হলো। সে নিজের মধ্যে কথা দমিয়ে না রেখে বলল,
–আপনি কি বিবাহিত মন্ত্রী সাহেব?
–এটা আপনি আজ জানলেন ম্যাডাম। আমি শুধু বিবাহিতই না চার সন্তানের বাপ আমি। ভিডিও কল দিব? দেখবেন আমার বউ বাচ্চাকে ভিষণ সুন্দর। একটা বাচ্চাকে আপনার ঘাড়ে তুলে দিব। আরেকটাকে আপনার মাথায়। তৃতীয় জনকে কোলে তুলে দিব। চতুর্থজনকে পায়ের সাথে গড়াগড়ি করতে লাগিয়ে দিব। আপনি চাইলে আমি আরো কয়টা বাচ্চা নিয়ে আপনার গলায় ঝুলিয়ে দিতে পারব। মেহেভীন মুনতাসিমকে অবাক করে দিয়ে বলল,
–ভিডিও কল দিন দেখব আমি। মেহেভীনের কথায় মুনতাসিম হতভম্ব হয়ে গেল। বিস্ময় কণ্ঠে আবার প্রশ্ন করল৷ মেহেভীনের উত্তর একই রইল। মুনতাসিম উঠে বসলো তারপর কিছুটা ব্যঙ্গ করে বলল,
–এভাবে নিজের ভূতের মতো রুপ দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাতে চান ম্যাডাম। যান গিয়ে ভালো করে আগে মেকআপ করে আসুন। তারপর না হয় ভিডিও কলে আসবেন।
–আমি কোনো বিশ্ব সুন্দরী নই বা নায়িকাও নই। কাজেই আমার মেকআপ করার প্রয়োজন নেই। আপনি দিতে পারবেন না বললেই হয়। কথা গুলো বলেই মেহেভীন কল কেটে দিল। সাথে সাথে মুনতাসিম ভিডিও কল দিল মেহেভীন কেটে দিল। কেটে দিতেই আবার কল আসলো। মেহেভীন ধরল মুনতাসিমের মুখের দিকে তাকাতেই মেহেভীনের সমস্ত রাগ হাওয়ার সাথে মিলিয়ে গেল। আচমকা অধরের কোণে হাসির রেখা দেখা গেল। অনুভূতিরা আনন্দে মেতে উঠল। মুনতাসিম গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–বলুন মহারাণী আপনার কি জানার আছে। আমাকে আর কি কি করতে হবে? মেহেভীন নিস্তব্ধ হয়ে গেল। অকারণে প্রচুর হাসি পাচ্ছে তার। সে নিজেকে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। তবে হাসি আজ তার সাথে বেইমানী করছে। এমন সিরিয়াস মুহুর্তে হাসি আসার বাজে ব্যাপারটা মেহেভীনকে অসহ্য করে দিচ্ছে। সে হাসি চেপে না রাখতে পেরে সমস্ত মুখশ্রী এক হাতে আড়াল করে নিল। বুকের মধ্যে তার ধুকপুক করছে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করছে। মেহেভীনের কান্ড দেখে মুনতাসিম শব্দ করে হেসে উঠল। মুনতাসিনের হাসোজ্জল মুখশ্রী হৃদয়ের গহীনে প্রশান্তির দোল খেলে গেল। মেহেভীন ভেতর থেকে অদ্ভুত এক শান্তি অনুভব করছে। মানুষটার সাথে কথা বললে মনেই হয় না। মানুষটা তাকে ঠকাতে পারে। মৃত্যুর মতো যেন সত্যি হয় মেহেভীনের মনের কথা। সারাজীবন বেঁচে থাকব। এমন আশা নিয়ে বলা কথা গুলো মিথ্যা হয়ে যাক তাহিয়ার কথা। মানুষটা তার একান্তই ব্যক্তিগত। সে তার ব্যক্তিগত চাঁদের পাশে অন্য একটা তারা কেও সহ্য করতে পারবে না। মুনতাসিম মেহেভীনের সাথে কথা বলে রেখে দিল। তখনই তাইয়ান আসলো মুনতাসিমের কক্ষে। তাইয়ানকে ভিষণ বিধস্ত দেখাচ্ছে। মুনতাসিম তাইয়ানের মুখ দেখলেই তার মন পড়ে ফেলতে পারে। মুনতাসিব সবকিছু বুঝে-ও নিশ্চুপ রইল। তাইয়ান মলিন কণ্ঠে বলল,
–আপনি সাবধানে থাকবেন স্যার। আপনার বিরুদ্ধে গভীর ভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আপনার পরিবারের ওপরেও আঘাত আসতে পারে। আপনি বাড়ির চারপাশে গার্ডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিম হালকা হাসলো। সে কি ভয়ংকর হাসি। তাইয়ান এই হাসির মানে জানে। মুনতাসিম শীতল মস্তিষ্কের লোক। সে ঠান্ডা মাথায় তাইয়ানের মনের কথা বুঝে গেল। তাইয়ানের ভেতরটা যন্ত্রনায় ছটফট করছে। তার ভেতরটা তীর দিয়ে কেউ ছিদ্র করে দিয়েছে। সেই মৃ’ত্যু যন্ত্রনা বুকে নিয়ে সে মুনতাসিমের থেকে সত্য কথাটা আড়াল করে গেল। মুনতাসিম তাচ্ছিল্য করে বলল,
–তুমি আমাকে ছোট বাচ্চা মনে করেছ তাইয়ান? আমি তোমার বোকা বোকা করে শুনে ভিষণ অবাক হচ্ছি! তোমার মতো সহজ সরল ছেলে আমার ব্যক্তিগত বডিগার্ড হলো কিভাবে সেটাই চিন্তা করছি? শত্রু, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ,এসব পুরোনো হয়ে গিয়েছে। নতুন কিছু থাকলে বলতে পারো। আমার যদি শত্রু না থাকে, তাহলে আমার মন্ত্রী হওয়া টাই বৃথা।
–জাফর সাহেব খুব শক্ত হাতে মাঠে নেমেছে। আপনার কাছের লোকই আপনার আড়ালে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। আপনি কাছের মানুষদের থেকে দুরত্ব বজায় রাখবেন।
–সেই মানুষ টাকে তুমি চিনো তাইয়ান? মুনতাসিমের শান্ত কণ্ঠে বলা কথা গুলো তাইয়ানে কলিজা কেঁপে উঠল। সে জানে মনুতাসিম না জেনে কোনো কথা বলে না। তবে কি সে তার কথা জেনে গেল। সে যে মানুষটা কে ভিষণ ভালোবাসে। ভালোবাসার মানুষের শত অপরাধ সে ক্ষমা করতে প্রস্তুত। কিন্তু মুনতাসিমের ক্ষতি সে সহ্য করতে পারবে না। সে তার প্রেয়সীকে বলবে সে যেন এমনটা না করে। বুকের মধ্যে অশান্ত নদীর মতো উথাল পাথাল করছে। সে মুনতাসিমের সামনে আর কিছুক্ষণ থাকলে ধরা পড়ে যাবে। সে ভয়ার্ত কণ্ঠে মুনতাসিমের থেকে অনুমতি নিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল। মুনতাসিম তাইয়ানের দিকে তাকিয়ে, একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
প্রভাতের আলোয় চারদিক ঝলমল করছে। রৌদ্রের মিষ্টি কিরণ এসে মেহেভীনের মুখশ্রীতে আঁচড়ে পড়ছে। চারদিক সোনালী আলোয় মুখরিত হয়ে উঠেছে। সবুজ বর্ণের ধানের গাছ গুলো ধানসহ সোনালী বর্ণের রুপ নিয়েছে। মেহেভীন হালকা করে ধান গুলোকে ছুঁয়ে দিল। তাদের এলাকাটা তার ভিষণ ভালো লাগে। না শহর না গ্রাম দু’টোর মাঝামাঝি মনে হয় তার তাছে। শহরের মতো যানবাহন চলাচল করে। দোকানপাটের অভাব নেই। আবার থেকে থেকে একটু করে ফাঁকা জায়গায় আবাদ করা৷ এই জমির মালিক গুলো ভবিষ্যতে এখানে বাড়ি তুলবে। সেজন্য জমি কিনে রেখে দিয়েছেন। ফাঁকা থাকলে কাজে লাগবে না। সেজন্য আবাদ করে প্রতিবছর। সাথে পরিবেশকে করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর কর। মেহেভীনের বাবা হাতে ডিম আর সয়াবিন তেল নিয়ে আসছিল। মেয়েকে ধানের জমির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মনোমুগ্ধকর হাসি উপহার দিলেন তিনি। মেয়ের কাছে এসে মেয়ের কাঁধে হাত রেখে বাসার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলেন। মেহেভীন বাবার আদুরে হাতকে উপেক্ষা করতে পারল না। সে-ও প্রাকৃতিক সুন্দর্যকে উপভোগ করাকে বিদায় জানিয়ে বাবার সাথে ছুটলো।
–মেহেভীন বিয়ের সম্পর্কে কিছু ভাবলি?
–আমি আরিয়ান ভাইকে বিয়ে করতে পারব না আব্বু।
–কেন?
–তুমি এত তাড়াতাড়ি সবকিছু ভুলে গেলে! তুমি কিভাবে এমন নিকৃষ্ট মানুষের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করতে পারো? আমি তোমার বিবেকের তারিফ করছি।
–আমি জানি আরিয়ান জঘন্যতম অপরাধ করেছে। তার জন্য সে অনুতপ্ত। আমার কাছে প্রতিদিন মাফ চায়। আমাদের বিপদে এগিয়ে আসে। আমাকে কেউ কিছু বললে আরিয়ান আমার ঢাল হয়ে দাঁড়ায়।
–আর তোমার মেয়েকে অজ্ঞান করে বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল। তার বেলায় কিছু না। একটু সেবাযত্ন করেছে তার সাত গুন মাফ! তুমি একজন বাবা হয়ে কিভাবে পারলে আরিয়ান ভাইয়ের মতো মানুষের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করতে! আমাকে এতটা মানসিক চাপ দিও না আব্বু। প্রাপ্তি আপুর কথা মতো সত্যিই তোমাদের মুখ দেখতে চাইব না। তোমার ভাইয়ের ছেলের তোমার মায়া লাগতে পারে। সে আমার কেউ না। আমার তার প্রতি কোনো মায়া কাজ করে না। আমি তাকে ঘৃণা করি। যে ছেলে সামান্য টাকার লোভে আমাকে বিক্রি করে দিতে পারে। সেই ছেলে বিয়ের পরে নিজের বউকে টাকার বিনিময়ে অন্য পুরুষের ঘরে পাঠাবে না। তার কোনো নিশ্চয়তা আছে আব্বু।
–মুখ সামলে কথা বল মেহেভীন। আমি তোর বাবা ভুলে যাচ্ছিস তুই। আরিয়ান একটা অপরাধ করে ফেলছে। সে অপরাধবোধে ভুগছে। আমাদের উচিৎ তাকে ক্ষমা করে দেওয়া৷ আমার বিশ্বাস আরিয়ান এমন কিছুই করবে না।
–তোমার নিজের ছেলে নেই। তাই ভাইয়ের ছেলের প্রতি তুমি অন্ধ বিশ্বাসে ডুবে গিয়েছ। তোমার ভুলের মাশুল আমি আমার জীবন দিয়ে দিতে পারব না৷ একবার বিয়ে ঠিক করেছিলে কাপুরুষের সাথে। আরেকবার ঠিক করলে লোভী ছেলের সাথে। যে টাকা পেলে নিজের বউয়ের অন্য পুরুষের ঘরে পাঠাতে দু’বার ভাববে না। কথা গুলো শেষ হবার সাথে সাথে ফরিদ রহমান মেয়ের গালে ক’ষে থা’প্প’ড় বসিয়ে দিলেন। মেহেভীন বিস্ময় নয়নে বাবার দিকে দৃষ্টিপাত করছে আছে। মনের অজান্তেই বাবা নামক মানুষটার জন্য মনের মধ্যে ঘৃণা তৈরি হলো। সব সময় তার সিদ্ধান্তই কেন তাকে মেনে নিতে হবে। তার কি নিজস্ব কোনো মতামত নেই। মেহেভীন অশ্রুসিক্ত নয়নে বাবার দিকে তাকিয়ে নিজের কক্ষে চলে গেল। যাবার আগে ঘৃণা ভরা দৃষ্টি দিতে ভুলল না।
চলবে…..
[নোট:আমি ভিষণ বাজে ভাবে রাইটিং ব্লকে পড়েছি। তিন দিন ধরে এক পর্ব লিখেছি। কালকে জোড় করে লিখতে চেয়েছিলাম। ৭৮০ শব্দ লিখার পর আর পারিনি। রাইটিং ব্লক আর পারিবারিক সমস্যার জন্য। এই নিয়ে আমাকে অনেকে অনেক কথা শোনাইছেন। আমার ছ্যাচরামির জন্য আমার গল্প পড়েন না। আমার নাটক দেখতে দেখতে বিরক্ত। এত নাটক উনি জানেন আমরা লাইক কমেন্ট করি আমাদের মূল্য নেই! আমি শুধু অবাক হয়ে গেলাম আপনাদের ব্যবহার দেখে। আমি রাইটিং ব্লকে না পড়লে ঠিকিই গল্প দিতাম একদিন পরপর। আমার ভেতর থেকে যদি শব্দ না আসে। তাহলে আমি কিভাবে লিখব আপনারা বলে যাবেন। আপনারা প্রতিদিন গল্প আশা করছেন সমস্যা নেই। আমাকে যা-তা বলে কথা শোনাবেন সমস্যা নেই। কিন্তু আমি এক হাজার লাইক আশা করলেই আমার নাটক, ছ্যাচরামি শুরু হয়ে যায়। আমার ছ্যাচরামির জন্য গল্প পড়েন না। তাহলে আমার পেজে আপনি কি করেন ভাই। উত্তর টা দিয়ে যাবেন।
নোট ২:আমি ভিষণ বাজে ভাবে পারিবারিক সমস্যার মধ্যে আছি। দৈনন্দিন জীবনের এত অশান্তির মধ্যে একটু শান্তির জন্য গল্প লেখতে আসিলাম। সেখানে শান্তি আর পেলাম কই। আমার আপু বাসায় আসছে। সারাক্ষণ তার কাছে ফোন রাখে। কানের কাছে বকবক করে। আচ্ছা আপনার কানের কাছে কেউ বকবক করলে আপনি আপনার নির্দিষ্ট কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন? উত্তর টা দিয়ে যাবেন।
নোট ৩:আমি ভিষণ বাজে ভাবে মানসিক চাপে আছি। মাথা কাজ করে না আমার। কি লিখেছি নিজেও জানিনা। ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে অন্যের পরিস্থিতি কখনো বিচার করতে যাবেন না। আমি কথা গুলো বলতে চেয়েছিলাম না। আপনাদের ব্যবহারে বলতে বাধ্য হলাম। আর একটা কথা বেশি অধৈর্য হলে গল্প শেষ হলে পড়বেন। যাদের ভালো লাগবে না। তারা ইগনোর করবেন। আমি আপনাদের জোড় করে গল্প পড়াই না। যে আপনারা একটা পর্বেই সম্পূর্ণ গল্পের বিচার করে দিবেন। সম্পূর্ণ গল্প পড়বেন বিচার না হয় তারপর করবেন। আর বেশি কিছু বলতে চাইনা। বেশি বেশি রেসপন্স করবেন। যেন রাইটিং ব্লক কাটিয়ে উঠতে পারি।
নোট ৪:গল্পটা নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা আছে। কিন্তু আপনাদের রেসপন্স দেখে মনোবল হারিয়ে ফেলছি। হয়তো বা এই গল্পটাও এলোমেলো ভাবে শেষ করে দিতে পারি৷ আপনারা হয়তো জানেন না। গল্প লেখার আগ্রহ প্রথমে যেমন থাকে রেসপন্স কমে গেলে লেখার আগ্রহ সময়ের সাথে হারিয়ে যায়। সবাই রেসপন্স করবেন লেখার আগ্রহ বাড়িতে তুলতে সাহায্য করবেন। ১০০০ হাজার রেসপন্স হলে পরবর্তী পর্ব কালকে পাবেন ইনশাআল্লাহ।]