খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_০৪ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
724

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_০৪
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

বিষন্ন মন ছন্নছাড়া রাত বিষাদের ছোঁয়ায় আসক্ত শরীর। ক্লান্ত দেহটা ধীর গতিতে ব্যাগের মধ্যে সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছাচ্ছে। চারদিকে পিনপতন নীরবতা। বাহিরে থেকে গাড়ির কোলাহল কর্ণকুহরে ভেসে আসছে৷ মেহেভীন আজকে অফিসে ছুটি নিতে গিয়েছিল। কালকে নিজ জন্ম ভূমিতে যাবে। রুপা মেহেভীনের বিষাদগ্রস্ত মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে কোনো বাক্য উচ্চারন করতে পারছে না। সে সবকিছু নিরবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। মেহেভীন নিজের মুঠোফোনটা হাতে তুলে নিল। ফোন হাতে নিতেই মায়ের নাম্বারটা জ্বল জ্বল করে উঠলো। বুকের ভেতরটা ভারি হয়ে আসছে মেভেভীনের। আচমকা দম বন্ধ হয়ে আসার ব্যাপার টা মেহেভীন ভিষণ ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে। আজকে সে মাকে ফোন দিবে কালকে বাসায় যাবে। সে কথা জানানোর জন্য অফিসে ছুটি নিতে গিয়েছিল মেহেভীন। মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে তো আর ঘরে বসে থাকা যায় না৷ মায়ের নাম্বারে কল যাচ্ছে। মেহেভীনের হৃদস্পন্দনের গতিবেগ তড়িৎ গতিতে ছুটে চলেছে। ভেতরে দারুন অস্থিরতা কাজ করছে।

–হ্যালো কে বলছেন?

–মা আমি মেহেভীন।

–মেহেভীন! তুই এতদিন কোথায় ছিলি? আমাদের খোঁজ খবর নিসনি কেন? তোকে কত খুঁজেছি। আমরা কি খুব বেশি অন্যায় করে ফেলছি। যে তুই আমাদের এত বড় শাস্তি দিচ্ছিস। তুই তোর স্বামী সহ বাসায় চলে আয় মা। আমি তোদের মেনে নিব। এভাবে আর বাবা-মায়ের ওপরে রাগ করে দূরে সরে থাকিস না। তোর চিন্তায় তোর বাবা আর আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি রে মা। রাইমা বেগম মেয়ের কল পেয়ে যেন উন্মাদ হয় গিয়েছে। মেহেভীনকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে না। মেহেভীন বিস্মিত হয়ে মায়ের কথা শুনছে। সে বিয়ে করেছে! অথচ সে নিজেই জানেনা। তার মা কি সবকিছু নিজের মন মতো বানিয়ে নিয়েছে। সে পালিয়ে এসে বিয়ে করে সংসার করছে। মেহেভীন শান্ত কণ্ঠে বলল,

–আম্মু তুমি উত্তেজিত হবে না। তুমি উত্তেজিত হয়ে গেলে এখনই অসুস্থ হয়ে পড়বে। তখন আমার সাথে কিভাবে কথা বলবে। সে কথা কি একবারও ভেবে দেখেছ? আমি তোমার সব কথা শোনার জন্যই তোমার কাছে এসেছি। তাহলে এত তাড়াহুড়ো কিসের। মেহেভীনের কথায় শীতল হলো মায়ের হৃদয়। শান্ত নদীর মতো স্থীর হয়ে গেল রাইমা বেগম। মেহেভীন আবদারের সুরে বলল,

–মা আমি কালে বাসায় আসি। কতদিন হয়ে তোমাদের দেখি না। তোমাদের ভিষণ দেখতে ইচ্ছে করছে। আমি তোমাদের বাসায় গেলে, আমাকে তোমাদের ঘরে তুলে নিবে। নাকি ছুরে রাস্তায় ফেলে দিবে।

–এসব তুই কি বলছিস মেহেভীন। নিজের সন্তানকে কেউ কোনোদিন রাস্তায় ফেলে দিতে পারে। আজকে বুঝবি না। একটা সন্তান তার বাবা-মায়ের কাছে কি? যেদিন মা হবি সেদিন বুঝতে পারবি।

–আমি যে অন্যায় করেছি মা। তোমাদের সন্মান নষ্ট করেছি। আমার কি ক্ষমা হবে। আমাকে আবার আগের মতো ভালোবাসবে তো।

–আমি মনে করি আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। আমাদের থেকে ভালো পরিকল্পনা কারী আল্লাহ। আমরা যা হারিয়েছি। তার থেকে দ্বিগুন আমাদের ফিরিয়ে দিবেন। প্রাপ্তির কাছে কত করে বলেছি। তোর সাথে কথা বলিয়ে দিতে প্রাপ্তি একদিনও কথা বলিয়ে দেয়নি। তুই নাকি আমাদের মুখ দেখতে চাস না। আমরা যেন তোকে না খোঁজার চেষ্টা করি। এবার বুঝতে পারছিস আমার ব্যাথাটা কোথায়। মায়ের কথায় মেহেভীন আশ্চর্যের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল!

–আম্মু আমি এসব কিছু বলনি। প্রাপ্তি আপু আমাকে বলেছে তোমরা আমার মুখ দেখতে চাও না। আমি বাসায় গেলে আমাকে ত্যাজ্য কন্যা করে দিবে। আমি তোমাদের হারাতে চাইনি আম্মু। সেজন্য এতদিন তোমাদের থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছি। মেহেভীনের কথা শেষ হবার সাথে সাথে পরিবেশটা নিস্তব্ধ হয়ে গেল। মা-ও মেয়ের চারপাশে যেন নিস্তব্ধ রাজত্ব করছে। দু’জনের বুঝতে বেগ পেতে হলো সমস্যাটা কোথায়। নিরবতা ভেঙে রাইমা বেগম গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–তোর সাথে এমন হবার দরকার ছিল। না হলে জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারতি না। মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি। বাবা-মায়ের থেকে যেমন চাচাতো বোনকে বেশি আপন ভাবতে গিয়েছিল। সে তোকে তোর ভালোবাসার উপকার দিয়েছিল। তা এখনই সব শুনবি নাকি বাসায় আসবি সেটা বল আগে।

–আম্মু রাগ করছ কেন?

–রাগ করব না তো কি আদর করব। বাড়ি আগে আয় আগে পাজি মেয়ে একটা।

–সে আমাকে যা খুশি করার কর। কিন্তু আমাকে দূরে সরিয়ে দিও না আম্মু। তোমাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। ছোট বেলা থেকে এত কষ্ট করে মানুষ করেছ। আমার সাফল্যে অর্জনের পর তোমরা সুখ করবে না। তাহলে কে সুখ করবে আম্মু?

–তোর সাফল্য মানে?

–তোমাদের জন্য সারপ্রাইজ আছে।

–কালকে কখন আসবি?

–আজকে রাতে যাব আম্মু। সকালে পৌঁছে যাব। আব্বুর কি অবস্থা আম্মু। আব্বু কি আমার ওপরে খুব রেগে আছে। আমাকে যদি বাসা থেকে বের করে দেয়।

–তোর কি আমাদের এত খারাপ বাবা-মা বলে মনে হয়। তুই না জানিয়ে বিয়ে করেছিস। সেজন্য তোর বাবা রাগ করে আছে। তুই সামনে আসলে সব রাগ হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।

–তুমি একটু বুঝিয়ে বলো আব্বুকে, আব্বু যেন আমার ওপরে রাগ না করে থাকে। রাইমা বেগম আর মেহেভীন দীর্ঘ সময় নিয়ে কথা বলল। বহুদিন পরে মেয়ের সাথে কথা বলে রাইমা বেগমের বুকটা প্রশান্তিতে ভরে গেল। কালকে তার মেয়ে আসুক। প্রাপ্তির বাবাকে ডেকে প্রাপ্তির সব কুকীর্তি কথা জানাবে। মেহেভীন রুপাকে ডেকে বাসায় যেতে বলল। কয়টা দিন মেয়েটা বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নিক। সে রাতেই চলে যাবে। সে একটু মুক্ত পাখির ন্যায় চারদিকে উড়ে বেড়াতে চায়। তাই নিজের গাড়ি থাকা সত্বেও বাসের টিকিট কেটেছে সে। রাত বারোটায় গাড়ি। বাসায় যেতে যেতে প্রভাতের আলো ফুটে যাবে। বাসায় তালা লাগিয়ে এক ঘন্টা আগেই প্রাপ্তি বেড়িয়ে পড়লো।

শহরের পরিবেশ টা গ্রামের বিপরীত চিত্র। গ্রামের পরিবেশ রাত গভীর হবার সাথে সাথে মরুভূমিতে পরিনত হয়। আর শহরের অলিতে-গলিতে রাতভর গাড়ি চলাচল করে। মানুষ নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত থাকে। সোডিয়ামের হলুদ আলোয় পুরো শহর আলোকিত হয়ে থাকে। মেহেভীন বাসে উঠে বসলো। জানালার কাছে বসতে তার ভিষণ ভালোলাগে। কিন্তু ভাগ্য বসত তার সীট জানালার কাছে পড়েনি। তবুও সে জানালার কাছে গিয়ে বসলো। তার পাশের জনের সাথে কথা বলে ম্যানেজ করে নিতে হবে। মেহেভীন রাস্তার মানুষজন দেখতে ব্যস্ত তখনই কেউ বলে উঠলো,

–কাউকে না জানিয়ে তার সীটে বসতে হয় না। এটা আপনি জানেন না ম্যাডাম।

–আপনি এখানে।

–ভয় পাবেন না আজকে কিছু চাইতে আসিনি।

–সে কথা বলেছি আমি৷ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

–আমাদের বাসায় একটু ঝামেলা হয়েছে। আব্বু ফোন করে বাসায় যেতে বলছে। আপনি আমার সীটে বসে আছেন। সরে আসুন। আমি সেখানে বসব।

–আপনি আমার সীটে বসুন। আমার জানালার কাছে বসতে ভালো লাগে।

–সব জায়গায় ক্ষমতার প্রয়োগ করবেন না ম্যাডাম।

–আশ্চর্য! আমি কখন ক্ষমতার প্রয়োগ দেখালাম। আচ্ছা বেশ উঠে যাচ্ছি। আপনি বসুন আপনার জায়গায়। মেহেভীনকে রেগে যেতে দেখে মুনতাসিম বুকে হাত রেখে বলল,

–সর্বনাশ! এভাবে কেউ রেগে যায়। আপনি রেগে যাবেন না ম্যাডাম। আমার ক্রোধের আগুনে আমি শেষ হবে যাব।

–আপনি আমার সাথে ফ্লাট করছেন।

–আপনি কি ফ্লাট করার জিনিস ম্যাডাম। আমার এত সাহস আছে। আপনার সাথে কথা বলতে পারছি। আমার পাশে বসতে পারব। এটাই আমার ভাগ্য। কথা গুলো বলেই মুনতাসিম কাঁধ থেকে ব্যাগ রেখে বসলো।

গাড়ি চলতে শুরু করেছে। মেহেভীনের ছোট ছোট কেশ গুলো মেহেভীনকে বিরক্ত করে যাচ্ছে। মেহেভীন গাড়ির জানালার নিচে চিবুক ঠেকিয়ে রাতের সুন্দর্য উপভোগ করছে। রাতের শীতল হাওয়া মেহেভীনের মুখশ্রী স্পর্শ করে যাচ্ছে। তা দেখে মুনতাসিমের ভিষণ ঈর্ষা হচ্ছে। ইশ সে যদি এভাবে তাকে ছুঁয়ে দেখতে পারত। সে বুঝতে পারছে না। মেয়েটা সামনে আসলেই তার সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। মেয়েটা সামনে আসলে তার ক্রোধ, অহংকার, আত্মসম্মান সবকিছু কোথায় জানি হারিয়ে যায়। আজ ভিষণ করে বাবার কথা মনে পড়ছে। ধরনীর বুকে চলার পর এমন একজন মানুষ আসবে। যার কাছে তোমার ক্রোধ, অহংকার, আত্মসম্মান কিছুই থাকবে না। সবকিছু লুটে নিয়ে যাবে মানুষটা। তোমাকে করে তুলবে বেহায়া। সবকিছুর পরেও তুমি মানুষটাকে চাইবে। মানুষটাকে দেখার জন্য পাগলামি করবে। মানুষটার কণ্ঠস্বর শোনার জন্য ছটফট করবে। মানুষটার শূন্যতা তোমার ভেতরটাকে অস্থিরতায় কাঁপিয়ে তুলবে। যাকে ছাড়া তোমার নিজেকে শূন্য মনে হবে। অর্থহীন মনে হবে। এমন একটা সময় আসবে তুমিও পরিবর্তন হবে। তুমিও কারো বাধ্য হয়ে যাবে। তবে কি বাবার কথা সত্যি হয়ে যাবে। কথা ভাবতেই ভেতর থেকে ক্রোধ নিয়ে আসার চেষ্টা করল মুনতাসিম। নাহ আজ তার ক্রোধ তার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে কিছুতেই ধরা দিতে চাইছে না। ভেতর থেকে অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। অনুভূতিরা আনন্দ মেতে উঠেছে। মনের শহরে আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছে। মনের অলিতে-গলিতে মিছিল করে বলছে। তোমাকে ভালোবাসার যুদ্ধে হারিয়ে দিব মুনতাসিম ফুয়াদ। তোমার ছন্নছাড়া জীবন গুছিয়ে দিব। কারো ভালোবাসার চাদের মুড়িয়ে দিব। সেদিন আর বেশি দেরি নেই। একা থাকার সব অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিব। মুনতাসিমের ভাবনার মাঝেই অনুভব করল। একটা মাথা তার কাঁধ দখল করে নিয়েছে। মুহুর্তের মাঝে মুনতাসিম নিজের কাঁধের দিকে দৃষ্টিপাত করল। এই তো সেই চেহারা যে চেহারা দেখে তার মনের দারুন সর্বনাশ হয়েছিল। কি আছে এই চেহারার মধ্যে যা তাকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দিয়েছে। এতগুলো বছরে যা কেউ করতে পারলো না। তা এই মেয়েটা কয়েক দিনে করে দেখালো। মুনতাসিম অনুভব করল মেহেভীন তার কাঁধে মাথা রাখায় তার ভিষণ আনন্দ লাগছে। অদ্ভুত এক অনুভূতি শরীরে বয়ে যাচ্ছে। মুনতাসিম নড়াচড়া করল না চুপ করে বসে আছে। যেন মেহেভীনের নিদ্রা না ভেঙে যায়।

চারিদিকে প্রভাতের আলো ফুটে গিয়েছে। গাড়ি এসে নিজ গন্তব্যে থেমে গিয়েছে। মুনতাসিম সারারাত ঘুমোয়নি। সে ঘুমালে যদি মেহেভীনের ঘুম ভেঙে যায়। অদ্ভুত একটা টান তৈরী হয়ে গিয়েছে মেয়েটার প্রতি। মেহেভীন সজাগ হবার আগেই খুব সাবধানে মুনতাসিম তাড়াহুড়ো করে গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল। আস্তে আস্তে সব যাত্রী নামতে শুরু করেছে। মেহেভীন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। একজন বৃদ্ধা মহিলা মেহেভীনকে সজাগ করে দিয়ে গেল। মেহেভীনের আঁখিযুগল মেলতেই আঁখি জোড়া বড় বড় হয়ে গেল। রজনী কিভাবে পার হয়ে গেল সে টেরই পাইনি। পাশে তাকিয়ে দেখলো মুনতাসিম নেই। আচমকা মেহেভীনের একটু মন খারাপ হলো। সে মন খারাপকে দূরে সরিয়ে দিয়ে বাস থেকে নেমে পড়লো। মনের মধ্যে ভালো লাগার শিহরণ বয়ে গেল। কতদিন পর নিজের জন্ম স্থানে আসলো। সবকিছু বদলে গিয়েছে। মেহেভীন হাঁটতে শুরু করল সামনেই তাঁদের বাসা পাঁচ মিনিটের রাস্তা। সে ভাবলো হেঁটে চলে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। চারদিকে সবুজ ধানক্ষেত আর মাঝখানে পিচ ঢালাই করা রাস্তা। দেখলেই মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। মেহেভীন যত বাসার দিকে অগ্রসর হচ্ছে ততই পুরো শরীর কাঁপছে। ভেতরটা ভয়ে কাবু হয়ে আসছে। তার বাবা যদি তাকে ফিরিয়ে দেয়। তাহলে সে কি করবে? ভালোবাসার মানুষের অবহেলা সে সহ্য করতে পারবে না। এসব ভাবতে ভাবতেই বাসার কাছে চলে আসলো। দরজার কলিং বেলে চাপ দিল মেহেভীন। ভেতরে দারুন অস্থিরতা কাজ করছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। তার বাবা যদি এসে দরজা খুলে দেয়। তখন সে কি করবে ভাবতেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসলো।

চলবে…..

পরের পর্বটি সবার আগে পড়তে পেইজটি ফলো করে সাথে থাকুন👉 গল্পের ভান্ডার

আরো সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হতে ভুলবেন না👉 লেখক-লেখিকার গল্পের ভান্ডার�

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here