#প্রিয়াঙ্গন
#পার্ট_৩৮
জাওয়াদ জামী জামী
পরদিন দুপুরে ওরা বড় ফুপু আর সৃজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে।
কুহু আগে বেশ কয়েকবার ঢাকায় এসেছে। বেড়াতে এসেছে মাত্র তিনবার। তবে বাবাকে নিয়ে বেশি আসা হয়েছে। কয়টা বছর বাবাকো নিয়ে কতইনা টানাহ্যাঁচড়া করতে হয়েছে। এ হসপিটাল থেকে ঐ হসপিটাল করতে হয়েছে। সবকিছুই ও আর ওর মা সামলেছে। সেই দুঃসময়ে বড় ফুপু ছাড়া কেউই ওদের পাশে ছিলনা। শেষ পর্যন্ত বাবাও বাঁচলোনা। দুই ভাইবোনকে এতিম করে বাবা চলে গেল। আর মা তো ওদেরকে অনাথই করে গেল। ওর এমন একটা দিনও কাটেনা যেদিন বাবা-মা’ কে মনে পরেনা। সৃজনকে বুঝতে না দিয়ে গোপনে চোখের পানি ঝরায়। কখনোই কাউকে দেখতে দেয়না ওর গোপন বেদনা। কিন্তু আজ কিছুতেই চোখের পানি গোপন করতে পারলনা। সেই দুর্বিসহ দিনগুলি, আর বাবা-মা’ র কথা মনে হতেই ও হু হু করে কেঁদে উঠল।
আচমকা কুহুকে কাঁদতে দেখে তাহমিদ ভড়কে যায়। ও একহাতে কুহুকে আগলে নেয়। সেই সাথে মাথায় চিন্তার ঝড় বইছে। ও কি কোনভাবে কুহুকে কষ্ট দিয়েছে!
” বউ, তুমি কাঁদছ কেন? তোমার কি কষ্ট হচ্ছে? কি হয়েছে আমাকে বল। আমি কি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি? ” তাহমিদ ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করল।
তাহমিদকে এভাবে উদগ্রীব হতে দেখে কুহু ঝটপট চোখের পানি মুছে নেয়। ও যে স্থান, কাল ভুলে গিয়ে এভাবে কাঁদছিল ভাবতেই অপ্রস্তুত হয়ে গেছে।
” বাবা-মা’ র কথা মনে হচ্ছিল। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাকে নিয়ে অনেকবার ঢাকা এসেছি। আমি আর মা কত কষ্ট করেছি জানেন? কোথায় যাব, কোথায় কি করব, কিছুই জানতামনা। কতজনকে যে জিজ্ঞেস করেছি, কতজনের হাতেপায়ে ধরেছি। সেসব কথাই মনে হচ্ছিল। ” কুহু তখনো ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
তাহমিদ কুহুর কথার কি প্রত্তুত্যর করবে! কিছু কষ্টের কোন শান্তনা হয়না। বরং শান্তনাতেই সেই কষ্ট আরও বাড়ে। এই মেয়েটা সব হারিয়ে কিভাবে যে বেঁচে আছে, সেটা ভাবলেই হাঁসফাঁস শুরু হয় ওর। মনোবল কত দৃঢ় হলে এই পরিস্থিতিতে কোন মেয়ে নিজে লেখাপড়া চালিয়ে ভাইকেও পড়াতে পারে, সেটা কুহুকে না দেখলে কিছুতেই বিশ্বাস করতনা।
ওরা সন্ধ্যার পর পরই বাসায় পৌঁছে যায়। সিএনজি থেকে নেমে কুহু অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাসাদসম বাড়ির দিকে। এই বাড়ির ছেলে ওর স্বামী! কুহু অবাক হয়ে একবার তাহমিদের দিকে তাকায়, পরক্ষণেই আবার বাড়ির দিকে তাকায়। ওর সারাদিনের ক্লান্তি ততক্ষণে উধাও হয়েছে। তার বদলে চোখমুখে ফুটে উঠেছে প্রশ্নের রেখা।
” এভাবে আমার দিকে কি দেখছ! আমাকে কি আগে কখনো দেখনি? ” কুহুর তাকানোতে তাহমিদ অপ্রভিত হয়ে জিজ্ঞেস করল।
” আপনি এই বাড়ির ছেলে! এত ধনী পরিবারের ছেলে হয়ে আমাকে বিয়ে করলেন কেন? ”
কুহুর প্রশ্নে তাহমিদ বিরক্ত হয়। ও কিছু না বলে কুহুর হাত ধরে গেইট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকল।
দারোয়ান তাহমিদের সাথে একটা মেয়েকে দেখে বোধহয় একটু অবাকই হয়েছে। তাহমিদও সেটা বুঝতে পেরে হাসল।
” চাচা, এই যে আপনার বউমা। প্রতিদিন বিয়ে কর, বিয়ে কর বলে আমার কানের পোকা নাড়িয়ে দিতেননা? তাই বিয়েটা করেই ফেললাম। এবার অন্তত আপনার মুখে প্রতিদিন বিয়ের কথা শুনতে হবেনা। ভালো করেছিনা? ”
” খুব ভালো করেছ, বাবা। দোয়া করি তোমরা সুখী হও। এবার আমার চিন্তা একটু কমল। তোমাকে শাসন করার জন্য কেউতো এসেছ। আমাদের কথা তো তুমি শুনতেই চাওনা। ”
কুহু এগিয়ে গিয়ে দারোয়ান চাচাকে সালাম দেয়।
” চাচা, রাশেদ কুরাইশি কি বাসায় আছে? সকাল থেকে তার মন মেজাজ ঠিক আছে তো? ”
” সকালে যখন স্যার বেরিয়ে যায়, তখন তাকে হাসিখুশিই দেখেছি। সন্ধ্যায় যখন বাসায় আসল তখনও ভালোই ছিল। তবে হঠাৎ করেই ছেলের বউকে দেখে সেটা তুমি আমি কেউই যেহেতু জানিনা, সেহেতু যেকোন পরিস্থিতিতে তুমি চুপচাপ থাকবে, কেমন? এবার ভেতরে যাও। ”
দারোয়ান চাচা হেসে জবাব দিল।
তাহমিদ কুহুর হাত ধরে সামনে এগিয়ে যায়।
” দারোয়ান চাচা আপনাকে বোধহয় খুব ভালোবাসে? ”
” হুম। সে আমার সব অপরাধের দোসর বলতে পার। ”
” কিহ্! আপনি অপরাধী নাকি? ”
” এই যে রাত-বিরেতে বাসায় আসলে সে ঘুম থেকে উঠে গেইট খুলে দেয়। মাঝেমাঝে আমার রুমের বেলকনির সামনে বড় মই রাখে, আমার ভেতরে যাওয়ার সুবিদার্থে। এবং এটা বছরের পর বছর ধরে করে আসছে। এখানে মূল অপরাধী আমি, আর সে আমার দোসর। অন্তত আমার কাছে এমনই মনে হয়। ”
কথা বলতে বলতে ওরা বাসার দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশাল কাঠের দরজায় রাজকীয় নকশা আঁকা রয়েছে। দরজার একপাশে বড় করে লিখা আছে ‘ আশ্রয় ‘। কুহু লক্ষ্য করল, তাহমিদ একটু দম নিয়ে কলিংবেলে আঙুল ছোঁয়াল।
এতক্ষণে কুহুর হাতের তালু ঘামতে শুরু করেছে। ওর ভিষণ ভয় হচ্ছে। ভেতরে না জানি ওর জন্য কি অপেক্ষা করছে।
বেশ খানিকক্ষণ পর খুলে যায় বিশাল দরজার খানিকটা অংশ। ভেতরে দাঁড়িয়ে আছে একজন মাঝ বয়সী নারী। যার মুখের আদল অনেকটাই রাজিয়া খালার সাথে মিলে যাচ্ছে। রাজিয়া খালার মত তার মুখেও মমতার ছাপ দেখতে পাচ্ছে কুহু।
” তাহমিদ, তুমি আসছ আব্বা! আস ভেতরে আস। তুমি আসবে সেটা কিন্তু জানাওনি। ”
তাহমিদ কুহুর হাত ধরে ভেতরে প্রবেশ করল।
ভেতরে পা রাখতেই কুহুর মাথায় চক্কর দিয়ে উঠল। ও বিশাল ড্রয়িংরুমের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। ডুপ্লেক্স বাড়ির ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে বড়সর ঝাড়বাতি। বাসার ভেতরে পা রাখলেই যেটা সবার নজরে পরবে। ভিষন সাজানো-গোছানো ড্রয়িংরুম। নানান এ্যাক্টিক জিনিসপত্র শোভা পাচ্ছে ড্রয়িংরুম জুড়ে।
” কেমন আছো, ফুপু? আমি ব্যাস্ত ছিলাম। তাই তোমাকে ফোন দিইনি। ”
ভদ্রমহিলার এবার নজর যায় কুহুর দিকে। তাহমিদ মেয়েটার হাত নিজের হাতের মুঠোয় ধরে রেখেছে দেখে তিনি একটু ভ্রুকুটি করলেন।
” আমি ভালো আছি, আব্বা। এই মেয়েটিকে তো চিনলামনা। তোমার পরিচিত? ”
” ও তোমার আব্বার বউ। দেখতো পছন্দ হয় কিনা। ফুপু তোমার ভাই কোথায়? তাকে দেখছিনা যে। ”
এবার ভদ্রমহিলা বড়সড় ধাক্কা খেলেন। তিনি চোখ বড় করে তাহমিদের দিকে তাকালেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেননা, তাহমিদ বিয়ে করেছে।
” তুমি সত্যিই বিয়ে করেছ! বাসায় কাউকে না জানিয়েই তুমি বিয়ে করেছ? রাশেদ শুনলে কি হবে বুঝতে পারছ? আব্বা, তুমি না এস্তোনিয়া গিয়েছিলে? সেখান থেকেই বউ নিয়ে এসেছ! ”
” আমি এস্তোনিয়া থেকে পাঁচদিন আগেই ফিরেছি। এই কয়দিন রাজশাহী ছিলাম। আর সেখান থেকেই বউ নিয়ে এসেছি। এবার বল তোমার ভাই কোথায়? ”
” রাশেদ, লাইব্রেরীতে আছে। ওকে ডাকব? ”
” দরকার নেই। তুমি বরং আমার বউকে দেখ। ভালো করে দেখে বল, তোমার আব্বার বউ কেমন হয়েছে। ”
কুহু ভদ্রমহিলাকে সালাম দিলে তিনি কুহুকে জড়িয়ে ধরলেন।
” কে এসেছে, শাহানা আপা? কার সাথে কথা বলছ? ”
হঠাৎই গুরুগম্ভীর আওয়াজ শুনে কুহু চমকে উঠে। ও মাথা নিচু করে রেখেছে। তাই দেখতে পাচ্ছেনা কে কথা বলল।
” তাহমিদ এসেছে, রাশেদ। ওর সাথেই কথা বলছি। ” মৃদুস্বরে বললেন শাহানা আক্তার।
” তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তা তোমার ভাতিজার সাথে কে এসেছে? নতুন বলে মনে হচ্ছে। ”
” এদিকে এস। তোমার বউমাকে দেখে যাও। তার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দিই। আমার ভাতিজা বড় হয়ে গেছে। সে বিয়ে করেছে। তুমি শ্বশুর হয়ে গেলে। ”
” হোয়াট? সে বিয়ে করেছে! কিন্তু আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি? ওর এতবড় সাহস! ”
এবার কুহুর ভয় হচ্ছে। ও মাথা তুলে তাকায় তাহমিদের দিকে। কিন্তু তাহমিদকে ভাবলেশহীন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভড়কে যায়।
” আহ, রাশেদ, উত্তেজিত হচ্ছ কেন? নতুন বউ বাড়িতে এসেছে। ওকে প্রথমদিনই ভয় পাইয়ে দিওনা। এদিকে এস। ” শাহানা আক্তার আবারও মৃদু গলায় বললেন। কুহু বুঝতে পারছে তিনিও বোধহয় ভয় পাচ্ছেন।
” শাহানা আপা, আপনার এমন দ্বিচারিতা নীতি বিরক্ত লাগে। আপনি রাশেদকেও হাতে রাখেন আবার ঐ ছেলেকেও হাতে রাখেন। আপনি দুইদিক থেকেই ফায়দা লুটতে চান। ” কোথায় থেকে ডেইজি কুরাইশি এসে ফোঁড়ন কাটল।
ডেইজি কুরাইশির কথা শোনামাত্রই শাহানা আক্তার মাথা নিচু করলেন।
” এই মেয়ে, তোমার বাসা কোথায়? কোথায় থেকে এস এর গলায় ঝুলে পরেছ? যেই দেখছ কুরাইশি বাড়ির ছেলে, তখনই টুপ করে ঝুলে পরেছ? দেখে তো মনে হচ্ছেনা কোন ভালো বাড়ির মেয়ে। ” ডেইজি কুরাইশি কুহুর সামনে এসে নাক সিটকিয়ে বলল।
” আপনি ভুলে যাবেননা, কার সম্পর্কে কথা বলছেন। ও আমার স্ত্রী। আর আমার স্ত্রী’র সম্পর্কে কিছু বলতে হলে অবশ্যই ভেবেচিন্তে বলবেন। এই প্রথমবার এবং শেষবার আপনাকে সাবধান করে দিলাম। ” তাহমিদের গলা শুনে কুহু চমকে যায়। তাহমিদকে এমনভাবে কথা বলতে ও আগে কখনোই শোনেনি।
” হোয়াট ননসেন্স, তুমি আমাকে জ্ঞান দিচ্ছ? তুমি বাসায় যে কাউকে ধরে এনে বউ বলে পরিচয় দেবে, আর আমি মেনে নেব? মনে রেখ এটা আমার বাড়ি। এখানে আমার ইচ্ছাতেই সব হয় এবং হবে। ”
” ওহ্ এতদিন জানতাম এটা রাশেদ কুরাইশির বাড়ি। তাহলে বোধহয় ভুল জানতাম। তো মিষ্টার কুরাইশি, বাড়িটা কি আপনার শ্বশুরের টাকায় বানানো হয়েছে? এখন কি এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে যেতে হবে? ”
” তাহমিদ, তুমি চুপ করবে? একেতো হুট করে বিয়ে করে এনেছ, তারওপর এভাবে চোটপাটও করছ! তোমার বাবা এখনও বেঁচে আছে। তাকে না জানিয়ে বিয়ে করে তুমি কি ঠিক করেছ? আর তোমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনও বা কেমন, তারা পাত্রপক্ষের সাথে কথা না বলেই মেয়েকে বিয়ে দিল! ”
” বিয়ে করব আমি, বউ দরকার আমার, এখানে আপনার কাজ কি? শ্বশুর বাড়ির লোকজন দেখবে জামাই কি করে। জামাইয়ের বাবা কি করে সেটা জেনে তারা কি করবে? ”
এদের কথা শুনে কুহুর মনে হচ্ছে সে যেন অকুল পাথারে হাবুডুবু খাচ্ছে। বাবা, মা, ছেলে কেউই কারও চাইতে কম যায়না, সেকথা ও হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে।
রাশেদ কুরাইশি বুঝলেন, ছেলের সাথে কথা বললেই কথা আরও বাড়বে। তাই তিনি তাহমিদকে কিছুই বললেননা। তিনি এগিয়ে এলেন কুহুর দিকে।
” এই মেয়ে, তোমার বাড়ি কোথায়? ”
” নাটোর। ”
” বাবা কি করে? কয় ভাইবোন তোমরা? ” ধমকে উঠলেন রাশেদ কুরাইশি।
” বাবা হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। আমরা একভাই এক বোন। ”
” শিক্ষক ছিলেন! এখন আর শিক্ষকতা করেননা? ” রাশেদ কুরাইশি এবার যেন থমকালেন।
” বাবা বেঁচে নেই। ”
” ওহ্। তোমার ভাই কি করে? আর তোমার মা? সে কি জব করে? ”
” আমার ভাই ক্লাস ফাইভে পড়ে। মা-ও বেঁচে নেই। ”
কুহুর কথা শুনে রাশেদ কুরাইশির মন খারাপ হয়ে যায়। তিনি কুহুকে কঠিন কিছু কথা শোনাতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু ওর বাবা-মা বেঁচে নেই শুনেই তিনি থেমে গেলেন। এই বয়সে মেয়েটা বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়েছে ভেবেই তার বুক ভারি হয়ে আসে।
” তুমি কি পড়াশোনা কিছু জানো? ”
” এবার অনার্সে ভর্তি হয়েছি। ”
” কোন কলেজে? কোন সাবজেক্ট? ”
” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে। ”
এবার রাশেদ কুরাইশি যেন সন্তুষ্ট হলেন।
” আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই, আমার বউ ভর্তি পরীক্ষায় টপ স্কোর করেছিল। এবং এইচএসসিতেও জেলায় টপার হয়েছিল। আর ওর নাম কুহু। যদি ডাকতে ইচ্ছে করে তবে নাম ধরে ডাকবেন। এই মেয়ে কোন ডাক নয়। ”
” শাহানা আপা, তুমি ওদের নাস্তার ব্যবস্থা কর। তোমার ভাতিজার সাথে কথা বলা মানে নিজের সম্মান নষ্ট করা। আর আমি সেটা করতে চাইনা।”
” ফুপু, আমি খাবার অর্ডার দিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। তুমি কষ্ট করে কিছু করতে যেওনা। ” তাহমিদ কুহুকে নিয়ে ওপরে যেতে যেতে বলল।
” ঢং দেখে গা জ্বা’ লা করে। থাকবে এই বাড়িতেই, কিন্তু এই বাড়ির খাবার গলায় দিতে চায়না। সব লোক দেখানো অভিনয়। ” ডেইজি কুরাইশির কথা শোনামাত্র দাঁড়িয়ে যায় তাহমিদ।
” আমি কি করব আর না করব, সেটা নিশ্চয়ই আপনার কাছ থেকে শুনে করবনা। এই বাড়িতে যতটুকু আপনার অধিকার আছে, তার থেকে বেশি অধিকার আমার আছে। নেহাৎই আমি অধিকার খাটাতে যাইনা। আমি অধিকার খাটালে আপনার চাপার জোর এতটা থাকতনা। এরপর থেকে কিছু বলার আগে দুইবার চিন্তা করবেন। আরেকটা কথা, ফুপু তার ভাইয়ের বাড়িতে থাকে। তার ভাইয়ের খায়। আপনার কিংবা আপনার বাবার খায়না সে। তাই তাকেও কথা বলার সময় হিসেব করে বলবেন। জানেনতো পঁচা শামুকেও পা কাটে? ”
তাহমিদ আর সেখানে দাঁড়ায়না। কুহুকে নিয়ে ওপরে চলে যায়।
চলবে…..