অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী বিংশ পর্ব

0
452

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

বিংশ পর্ব

“তোমাদের দেখা হলো কোথায়?”

বাসায় মৃত্তিকা ও ইমতিয়াজ একত্রে আসায় কিছুটা অবাক হয়েই প্রশ্ন করলেন শাফিন সাহেব।

ইমতিয়াজ স্বাভাবিকভাবে জবাব দিলো,
“বাসার কাছেই উনাকে হাঁটতে দেখলাম। তারপর আসা আরকি।”

শাফিন সাহেব হাসলেন। বলেন,
“একা একা ভালো লাগে না ওর। (একটু থেমে) আচ্ছা, তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।”
“জি।”

ইমতিয়াজ তানজিমের রুমে গেল। পকেট থেকে ফোন বের করে টেবিলের উপর রেখে তানজিমকে বলে,
“কেমন আছো?”
“ভালো।”

তানজিম খাটে বসে বই পড়ছিল। একটু আগে শাফিন সাহেব আর ইমতিয়াজের মধ্যে হওয়া কথাগুলো সে শুনেছে। উঠে এসে বলল,
“মিউকোপুর সাথে তোমার কোথায় দেখা হয়েছে ভাইয়া?”

ইমতিয়াজ চোখ কুঁচকে বলল,
“বাসার কাছে।”
“সত্যি বলছো?”

ইমতিয়াজ জবাব না দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। এখানে থাকলে তানজিম একের পর এক প্রশ্ন করেই যাবে।

কিছুক্ষণ পর শাফিন সাহেব আর লুৎফর রহমানের সাথে কথা বলতে বসে ইমতিয়াজ। এসব কথা বা কাজে তানজিম বেশ বি°র°ক্ত। বিয়ে ভে°ঙেছে এটা নিয়ে এতো আলোচনার কোনো দরকার নেই।

মৃত্তিকা মাথা নুইয়ে রুমে চলে যায়। প্রচন্ডভাবে মাথা য°ন্ত্র°ণা করছে, হয়তো মাই°গ্রে°নের সমস্যা। আপাতত সে নিরবতা চায়।

বারান্দায় গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। যতক্ষণ তুমি চিৎকার করে নিজের মনের কথা বলতে না পারো, ততক্ষণ এক আল্লাহ্ ছাড়া কেউ তোমার অবস্থা বুঝবে না। এটাই বাস্তবতা, যা মৃত্তিকার ক্ষেত্রে হচ্ছে।
______________________________________

রাত ১১ টা, আহনাফ ঢাকা যাবে বলেও যায়নি। এব্যাপারে সারাহ্-র সাথে কোনো কথাও হয়নি। যেহেতু কাল শুক্রবার তাই বেশ আঁট গাঁট বেঁধে সিরিজ দেখতে বসেছে সারাহ্। আজ ঘুমানোর তাড়া নেই।

আহনাফ ওকে এখানে দেখে গেলেও ডাকে না। কালকের কথায় আহনাফ যে বেশ চুপচাপ আছে।

আহনাফ কফি বানাচ্ছে। দুইটা কাপে কফি এনে একটা সারাহ্-র সামনে দিয়ে নিজে পাশে বসে পড়লো। ইউটিউবে কোনো একটা টার্কিশ সিরিজ দেখছে সে। আহনাফ এসব সহজে দেখে না, তবুও পাশে বসে আছে। সোফার সাথে হেলান দিয়ে দুজনেই ফ্লোরে বসেছে। রুমে একটা অল্প আলোর বাতি জ্ব°লজ্ব°ল করছে।

“ঐশী?”

আহনাফের নরম ডাকে সারাহ্ ওর দিকে তাকালো। আহনাফ বলল,
“এতো চুপচাপ আছো, আগের মতো কথা বলো।”

সারাহ্ আবারো টিভির দিকে তাকায়, সাথে কফির কাপে চুমুক দেয়। মুখে বলে,
“কফি ভালো হয়েছে।”

আহনাফ তাকিয়ে আছে ওর চেহারার দিকে। সারাহ্ খেয়াল করেও কিছু বলে না। আহনাফ সারাহ্-র কপালের চুলগুলো সরিয়ে দিতে দিতে বলে,
“ঐশী, ঢাকায় যেতে চাচ্ছিলাম।”
“তো যেতে পারতেন। আমি তো নিষেধ করিনি।”
“তোমাকে একা রেখে যাবো?”
“আমি বাচ্চা নই।”

আহনাফ হেসে বলল,
“বাচ্চাদের মতোই রাগ করে বসে আছো।”
“অকারণে রাগ করিনি।”
“আমি জানি যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু…”

আহনাফের কথার মাঝেই সারাহ্ বলল,
“এসব নিয়ে আর কথা না বলি।”

আহনাফ কিছু বলে না। সারাহ্ টিভি বন্ধ করে আহনাফের দিকে ফিরে বলে,
“আপনার সময় লাগবে, সময় নিন। তবে অযথা আমাকে ব্যবহার করবেন না।”
“আমি তোমাকে ব্যবহার করিনি। কখনোই না।”

আহনাফের ফিসফিসানিতে সারাহ্ সরে যেতে নিলে আহনাফ ওকে বাহুডোরে আগলে নিলো। আহনাফের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে সারাহ্। দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহনাফকে, কেন যেন এখন রাগ করতে ইচ্ছা করলো না। অদ্ভুত আকর্ষণ আর অ°ব্যক্ত অনুভূতি দুজনের মাঝেই কাজ করছে। দুটো দ্বীপ একই স্থানে চলে এসেছে। ভালোবাসা মিলেমিশে এক হয়ে গেছে।
______________________________________

ফজরের আযান দিচ্ছে। সারাহ্ চোখ খুলে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বুঝলো সে শয়নকক্ষে বিছানার উপর আছে। ড্রইংরুম থেকে এখানে কখন এসেছে তা ওর মনে নেই। আহনাফ পাশেই ঘুমিয়ে আছে, তার একহাত সারাহ্-র উপর। সারাহ্ উঠে বসে ওর দিকে তাকায়।

আহনাফের হাতটা ধরে সে। ঘন লোমের বলিষ্ঠ পুরুষের হাত, বাবার পর প্রথম এই পুরুষের হাতের স্পর্শ পেয়েছিল। সারাহ্ ওর হাতের উলটো পিঠে চুম্বন করে উঠে যায়। যতই দায়িত্ব, কর্তব্য বলুক না কেন আহনাফ এখনো ওকে পুরোপুরি আপন করতে পারেনি।

ঘুমের ঘোরে আহনাফ বুঝতে পারে না কোনো এক রমনী তার শক্ত হাতে নরম ওষ্ঠোধর ছুয়ে গেছে।

ফ্রেশ হয়ে ওযু করে এসে সারাহ্ কর্কশ গলায় আহনাফকে ডাকে,
“প্রতিদিন ডাকাডাকি লাগে কেন? নিজে থেকে উঠতে পারেন না?”

আহনাফ চোখ খুলে কান চুলকে বলল,
“একটু মিষ্টি করেও তো ডাকতে পারো।”

সারাহ্ কিছু না বলে নামাজের হিজাবটা বাঁধতে লাগলো। আহনাফ উঠে বসে বলে,
“তোমাকে যে আমি ড্রইংরুম থেকে কোলে করে নিয়ে এলাম, তখন তো আমি ফেলে দিয়ে আসতে পারতাম।”

সারাহ্ ফিরে এসে বলল,
“আমি আনতে বলেছিলাম?”
“না আনলে বলতে আনিনি কেন?”

সারাহ্ কিছু না বলে হিজাবটা বাঁধতে থাকে। আহনাফ উঠে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বলল,
“লোকে ঠিকই বলে মেয়েদের মন বোঝা সহজ নয় আর বউ হলে তো কথাই নেই।”
______________________________________

সকাল এগারোটা, বাসায় চলে এসেছে শাফিন ও মৃত্তিকা। মৃত্তিকাকে বাসায় রেখে বাইরে গেছেন শাফিন সাহেব। নিজের একটা বড় গ্রোসারি শপ আছে উনার। সেখানে এলেন এখন।

দোকানের প্রবেশের গেইট দুটির মধ্যে একটি বন্ধ থাকায় কর্মচারীকে বলেন,
“কি ব্যাপার গেইট বন্ধ কেন?”

কর্মচারী উমার কিছু জিনিসপত্র গোছাচ্ছিল। শাফিন সাহেব রেগে গিয়ে বলেন,
“কথা কি কানে যাচ্ছে না?”
“সব যাচ্ছে, এখন তুমি চুপ করো।”

উমার একটা ছু°ড়ি দিয়ে শাফিন সাহেবের বুকের ডানপাশে ঢু°কিয়ে দিলেন। পেছন থেকে কেউ একজন উনার পায়ে আর কাঁধে ছু°ড়ি চালালেন। শাফিন সাহেব প্র°তি°রো°ধ করতে গিয়েও ব্যর্থ হলেন। ফ্লোরে পড়ে গিয়ে চোখ বন্ধ হওয়ার আগে কেবল উমারের বুকে কাউকে ছু°ড়ি চালাতে দেখলেন।

বেশ খানিকক্ষণ পর সুরভির নাম্বারে কল এলো। কোনো এক ক্রেতা দোকানে এসে এসব দেখে পুলিশকে খবর দেয় আর উনারা সুরভিকে জানায়।

সুরভি বাবার এ অবস্থার কথা শুনে মৃত্তিকাকে নিয়ে ছুটে এলো দোকানে। শাফিন সাহেবকে ততক্ষণে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে।

ওরা আবারো গেল স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে শাফিন সাহেবের দেখা পেলেও এখানে উনাকে রাখা হলো না, অবস্থা খারাপ বলে পাঠানো হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সুরভির মা দেলোয়ারা কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছেন। শাফিনের মতো মানুষকে কেউ কেন মা°রার চেষ্টা করবে?

খবর পেয়ে লুৎফর রহমান আর ইমতিয়াজ হাসপাতালে ছুটে এসেছে। মমতাজ বেগমকে এখনো এ ব্যাপারে জানানো হয়নি। সুরভি নিজেও ক্রমাগত কান্না করে যাচ্ছে। শাফিন সাহেবকে কিছুক্ষণ আগেই আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে।

মৃত্তিকার বারবার মনে হচ্ছে এসবের জন্যও ওর বাবা দায়ী। ওর বাবা বলেছিল ওকে একা করে দিবে। এভাবেই কি একা করবে উনি?

দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলো, তারপর হলো সন্ধ্যা। এই পরিবারটুকু সুখের মুখ আর দেখলো না। শাফিন সাহেবের অবস্থা অপরিবর্তিত। উমার মা°রা গেছে, কে বা কারা এ কাজ করেছে তা চেনা যায়নি। সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল আর উমার নিজেই তা বন্ধ করেছে।

মাগরিবের নামাজের পর মৃত্তিকা সুরভিকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়। অসুস্থ সুরভি যেতে না চাইলেও একটু জোর করেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় মৃত্তিকা।

সিএনজি নিয়ে চলে আসে বাসায়। সুরভি লিফটে করে আগে আগে উপরে চলে গেল। মৃত্তিকা ভাড়া মিটিয়ে বাসায় ঢুকার সময় শরীফ এসে পেছন থেকে ডাকলো,
“মিউকো, কোথায় গিয়েছিলে?”

মৃত্তিকা কপাল কুঁচকে ফিরে তাকালো। রাগটা আবারো মাথাচা°ড়া দিয়ে উঠলো। শরীফের দিকে এগিয়ে এসে বলল,
“মামাকে আপনি মা°রার চেষ্টা করেছেন কেন? এভাবে একা করবেন আমাকে?”

শরীফ হাসলো। বলল,
“তোমার মামা এমনিতেও তোমাকে একা করতে চাচ্ছে। আমার তাকে মা°রার প্রয়োজন নেই।”

শরীফ চলে যাওয়ার সময় আবারো ফিরে এসে বলে,
“শাফিন কি বাঁচবে নাকি শেষ?”
বলেই বামহাত ডান থেকে বামদিকে নাড়লো।

মৃত্তিকা উত্তর না দিয়ে ভিতরে চলে গেল। ওর জন্যই যদি সবার এ অবস্থা হয় তবে ওর ইতালি গিয়ে একা থাকাই ভালো। যা যা হবে সব একা সহ্য করে নেয়া উচিত। আবেগ-অনুভূতিকে কবরস্থ করে দেয়া দরকার। শাফিন সাহেব সুস্থ হলেই ইতালি চলে যাবে সে, এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।
______________________________________

সারাহ্ রাতের রান্না করছে। আহনাফ সাহায্য করতে আসলেও সারাহ্ ওকে পাত্তা দেয়নি। পাত্তা না পেয়ে সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

“ঐশী, রাতে তোমাকে সুন্দর লাগছিল।”

সারাহ্ রাগি চোখ তাকালে আহনাফ ওকে আরো রাগানোর জন্য বলে,
“কিভাবে এসে বুকে পড়েছিলে? তারপর আবার আমাকে বলছিলে আদর করো না ফয়েজ।”

সারাহ্ জোরে খু°ন্তিটা ফেলে বলল,
“মোটেও না। এতোটা অ°সভ্য আমি নই।”
“আরে তারচেয়েও বেশি। ঘুমালে মনে হয় ম°রে পড়ে আছো। এতোগুলো কিস করলাম উঠলেই না।”

আহনাফ এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বলে,
“দুই চারটা কা°ম°ড়ও দিয়েছি।”
“ছি, কি ভাষা?”

সারাহ্ নাক ছি°ট°কানি দেয়। আহনাফ হাসতে হাসতে চলে যায়। মাঝে মাঝে মিথ্যা বলে সারাহ্-কে রাগাতে ভালোই লাগে।

আহনাফ আবারো এসে বলে,
“তুমি মেবি নে°শাটে°শা করো, কি নে°শা°ক্ত একটা কন্ঠ ছিল।”
বলেই বামচোখ টিপে চলে যায়।

“ছি।”
সারাহ্ রাগে ধুপধাপ করে কাজ করছে।

আহনাফ তো হেসে কুটিকুটি। শান্ত মেয়েটা ওকে অভদ্র বানিয়েছে। এতোটা ঠোঁট°কা°টা কোনোকালেই সে ছিল না। অথচ এখন লাজ-লজ্জা সব গঙ্গায় ভা°সিয়েছে।

আহনাফ ডাইনিং থেকে চেঁচিয়ে বলল,
“ঐশী, তুমি কিন্তু…”

সারাহ্ ধ°ম°ক দিয়ে বলে,
“আর একটা কথা বললে একদম গরম পানি ঢেলে দিবো।”

আহনাফ হো হো করে হেসে উঠে। সারাহ্ কাজ করতে করতে ভাবে,
“আমি কি সত্যিই এসব করেছি? আমার তো ঘুম এতো গভীর না, তবে ড্রইংরুম থেকে বেডরুমে গেলাম কখন টের পাইনি কেন?”

সারাহ্ শান্তভাবে হেঁটে আসে। আহনাফকে বলে,
“শুনুন।”

আহনাফ ভ্রূ উঁচিয়ে বলে,
“অসমাপ্ত কথাটা শুনতে চাচ্ছো?”
“না।”
সারাহ্ ধ°মক দেয়।

ধীরে ধীরে সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
“আমি সত্যি এসব বলেছি?”

আহনাফের হাসির তো°প বাড়লো। উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“ভাউ।”
“মজা না সিরিয়াস।”

আহনাফ ওর কাছে যায়। সারাহ্ একটু নিচু হয়। আহনাফ বলল,
“কেমিস্ট্রি ম্যাডাম আমার সাথে উনিশ-বিশ কিছু করে নাই।”
বলে ঠোঁট বাঁ°কিয়ে উড়ন্ত চুম্বন দেখিয়ে রুমে চলে যায়।

সারাহ্ প্রতিদিন এই লোকের পরিবর্তন লক্ষ্য করছে। প্রথমদিনের সাথে পার্থক্য আছে, দিন যত যাচ্ছে আহনাফের মনের কোণে ততবেশি স্থান পাচ্ছে সে।
______________________________________

একমাস পর,
কিছুটা সুস্থ অবস্থায় বাসায় আছেন শাফিন সাহেব। তবে এখনো একা একা ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। নিজের কাজগুলো করতেও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে তার। মৃত্তিকা আর দেলোয়ারার সাহায্যে চলাচল করেন উনি।

আজ উনাকে দেখতে বাসায় এসেছে ইমতিয়াজ। উনি অসুস্থ হওয়ার পর প্রায়ই উনাকে দেখতে আসে ইমতিয়াজ।

মৃত্তিকা আর সুরভি দুপুরের রান্না করছে। দেলোয়ারা এসে বললেন,
“মিউকো, ইমতিয়াজকে নাস্তা দিয়ে আসো।”

মৃত্তিকা মাথা নেড়ে বলল,
“ঠিক আছে, মামানী।”

সুরভি ট্রেতে নাস্তা সাজিয়ে দিলো। মৃত্তিকা ট্রে নিয়ে ড্রইংরুমে ইমতিয়াজের সামনে রাখে। একটা চায়ের কাপ তুলে পাশে সোফায় বসা শাফিন সাহেবের হাতে দেয়।

ইমতিয়াজ ওকে জিজ্ঞাসা করে,
“কেমন আছেন মৃত্তিকা?”
“ভালো।”

ছোট করে উত্তর দিয়ে মৃত্তিকা ভিতরে চলে আসে, আড়চোখে একবার ইমতিয়াজকে দেখলেও পূর্ণদৃষ্টি দেয়া হয় না। আবারো গিয়ে রান্নার কাজে হাত লাগায়। দেলোয়ারা ড্রইংরুমে চলে যাওয়ার পর সুরভি বলে,
“ইমতিয়াজ ভাইয়াকে দেখলে তুমি এমন লজ্জা পাও কেন?”

মৃত্তিকা চমকে মাথানিচু করে। সুরভি ওর রকমবহর দুটোই দেখেছে। মৃত্তিকা বলে,
“কই? এমন কিছু না।”
“আমি অন্ধ বা বোকা নই।”

মৃত্তিকা সুরভির দিকে তাকায়। সুরভি বলে,
“ভালো টালো লাগে নাকি ভালোবাসা?”

মৃত্তিকার কাঁধে আলতো ধা°ক্কা দেয় সুরভি, মুখে থাকে মিষ্টি একটা হাসি। মৃত্তিকা হেসে বলে,
“আরে না, ওই এমনিই।”
“আমার সাথে কিসের শরম? বলো না।”
“না আপু, তেমন কিছু না।”

মৃত্তিকা কাজে মন দেয়। সুরভিও আর কথা বাড়ায় না। মৃত্তিকার নজর, ভাব বুঝতে পারে সুরভি।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here