তোর_পরশে_প্রেম #নুসাইবা_ইভানা #পর্ব -১৮(স্পেশাল পর্ব)

0
748

#তোর_পরশে_প্রেম
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -১৮(স্পেশাল পর্ব)

সেই কখন থেকে ড্রাইভ করছো? যাচ্ছি কোথায় আমরা?
“এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো?
‘আপনি উত্তম কুমার নন আর আমি ও সুচিত্রা সেন নই তাই এটা স্বপ্নের দেশ না।
‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা হৃদয়ের সুখের দোলা। নিজেকে আমি ভুলতে পারি তোমাকে যাবে না ভোলা।

” সমস্যা কি তোমার কথায় কথায় গান গাইছো?
‘মায়াবী চোখে কি মায়া যেনো গোধুলির আবির মাখা.. কি নেশা ছড়ালে কি মায়ায় জড়ালে।
‘তোমার শিল্প সংস্কৃতি থামাও।
‘রাঙা বউ শুনছো নি গো রাঙ বউ শুনছোনি
‘তুমি গান না থামালে আমি গাড়ি থেকে নেমে যাবে।
‘মন তোকে দিলাম এই মন তোকে দিলাম। দিশেহারা মনে ব্যাথা সুখ পেতে… দিয়েছিত আমি এই বুক পেতে।
‘ তুমি সবাইকে ব্যাথা দাও তোমাকে কেউ ব্যাথা দিতে পারে নাকি?
‘ছুঁয়ে দে আঙ্গুল ভেঙে যাবে ভুল ভিজে যাবে গা…..
‘কি ভুল গান গাইছো!
“কন্যা রে ক্যান রে তোর রুপের জাদু মন ভোলে।
‘সমস্যা কি তোমার?
‘বন্ধে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে….

‘পুতুল জোড়ে চিৎকার করে বলে,এই কা-কা বন্ধ না করলে আমাকে নামিয়ে দাও।
‘তুমি বললে তাই না বললে নাই। ফ্রীতে গান শোনাচ্ছিলাম ভালো লাগলো না!
‘ফ্রী জিনিস আমার পছন্দ না।
‘হ বাঙালি ফ্রীতে পেলে হীরকেও তুচ্ছ মনে করে।আমি সাধারণ একজন মানুষ।
‘ভুল বললে,বাঙালি ফ্রীতে পেলে আলকাতরাও ড্রাম ভরে নেয়,ড্রাম না থাকলে দামি ড্রেসে করে নেয়।পরে যখন বুঝতে পারে আলকাতরার চক্করে তার দামী ড্রেস নষ্ট হলো, তখন আফসোস করে।তাই ফ্রীতে নিয়ে আফসোস করতে চাইছি না।
‘জানিস আমার কি ইচ্ছে করছে?
‘কি?
পরশ গাড়ী সাইড করেই পুতুলের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।মিনিট দুয়েক পরে ছেড়ে দিয়ে বলে, এই কালার লিপস্টিক লাগাবি না। যদি লাগাস এভাবে আমার পেটে যাবে।
‘পুতুল মনে, মনে বলছে,তোকে আমি টিকটিকির পায়েস আর তেলাপোকার স্যাুপ খাওয়াবো। একবার শুধু সুযোগ পাই।
‘নিজের হ্যাসবেন্ডকে গালি দিতে নেই হানি।
‘হ্যাসবেন্ড না ছাই, বিয়ের খবর নাই হ্যাসবেন্ড। শা’লা লুচ্চা কথায় কথায় চুমু খায়!
‘হ্যাসবেন্ডকে শা’লা বলতে নেই। শা’লা বললেই চুমু থেরাপি চলবে।
‘পুতুল সাথে সাথে নিজের ঠোঁট হাত দিয়ে ঢেকো নিলো।
‘পরশ মুচকি হেসে ড্রাইভিংয়ে মনযোগ দিলো।

🌿হাইওয়ের পাশে একটা রেস্টুরেন্টে সামনে এসে গাড়ি থামলো। পরশ, পুতুল গাড়ী থেকে নেমে রেস্টুরেন্টের ভেতরে গেলো।
পরশ পুতুলের জন্য চেয়ার টেনে দিয়ে নিজেও একটা চেয়ার টেনে বসে পরলো।
বসার সাথে সাথে দু’জন ওয়েটার খাবার সার্ভ করতে লাগলো।
পুতুল অবাক হয়ে বলে,আমরা তো কিছু অর্ডার করলাম না তাহলে এরা এসব কেন দিয়ে যাচ্ছে?
‘আজকে প্রশ্ন করার দিন না। আজকে তোর আর আমার ফাস্ট ডেট। একের পর এক সারপ্রাইজ।
‘তোমার সাথে ডেট মানে?ফাস্ট ডেট তো দূর তোমার সাথে সেকেন্ড ডেটও করবো না।
‘বউ রাগ না করলে রোমান্স করে মজা নেই বুঝলি?
এই যে তুই রাগ করেছিস তোর নাক ফুলে গেছে, গাল ফুলে গেছে এবার আমি টুকুস করে কামড় দিবো।
‘তোমার লজ্জা করে না এসব বলতে?
‘এতো,বছর বিবাহিত ব্যাচেলার থাকার পর বউ কাছে পেয়ে যে পুরুষ লজ্জা পাবে, লজ্জা ও তাকে লজ্জা পাবে।
‘আমি তোমার বউ না বোন কতবার বলবো।।
পরশ টুকুস করে পুতুলের গালেক একটা কিস করে সরে এসে বলে,এরপর বোন উচ্চারণ করলে ডীপ লিপ কিস করবো।
‘ছিহহহ তোমার কোন লজ্জা শরম নেই?
‘পুরুষ যদি বউয়ের সাথে লজ্জা, শরম দেখায় তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আর বৃদ্ধি পাবে না।
‘আমরা এখানে কেন এসেছি?
‘হানিমুন করতে করবি চল।রেস্টুরেন্টে খেতে আসে খাবার সামনে রেখে জিজ্ঞেস করছিস কেন এসেছি?
‘পুতুল খাবার খাওয়া শুরু করলো।
পরশ কিছু সময় পুতুলের খাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,তুমি এতো অবুঝ কেন?এই পরশ যে তোমার পরশ পাওয়ার জন্য বেকুল হয়ে যাচ্ছে তুমি কি তা বোঝ না?

‘পরশের কথা শ্রবণ মাত্রই পুতুলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেলো। পুতুল বা’হাতে নিজের ওড়না মুঠ করে ধরল।

‘পরশ কাচ্চি নিয়ে নিজ হাতে পুতুলের মুখে তুলে দিলো। পুতুল কিছু না বলে তা মুখে তুলে নিলো। দু’লোকমা খাওয়ার পর পরশ বলে,তুই তো বেশ সেয়ানা!
‘পুতুল একটু অবাক হয়ে বলে, মানে?
‘আমার হাতে খাচ্ছিস অথচ আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিস না বাহহহ।
‘পুতুল বলে,তুমি আকাশের চেয়ে দ্রুত রঙ বদল করো!
‘আকাশটা আবার কে?
‘কচুর বাপে।
‘তাহলে আমাদের ভবিষ্যত সন্তানের নাম কচু! এতো সুন্দর নাম থাকত কচু রাখতে কেন হবে কচুর মা?

পুতুল দ্রুত উঠে হাত পরিস্কার করলো।
পরশো পুতুলের পিছু পিছু আসলো,এই পেত্নী দাঁড়া। ক্লাইম্যাক্স এখনো বাকি বলেই, শীষ বাজালো।
সামনে তাকিয়ে দেখে শাওন।
পুতুল শাওনের সামনে যেয়ে বলে,তুই আমাক মিথ্যে কেন বলেছিস? মিথ্যে বলে আমার পরিবার থেকে আমাকে দূরে রেখে তোর কি লাভ হলো?এই ভাবে বন্ধুত্বের প্রতিদিন দিলি!
‘আমার কথাটা শোন, ওই অডিও ক্লিপ আমাকে তোর কাজিন জুলিয়া আপু দিয়েছিল আর সব কথাও সেই শিখিয়ে দিয়েছিল।আর সে জানতো তুই কোথায় আছিস।
‘আপু এসব করতে বললো আর তুই করলি?
‘এর বিনিময়ে সে আমাকে আইফোন কিনে দিয়েছে। তখন তো অতো বোঝার বয়স ছিলো না। তারপর যখন মনে হলো তোকে সত্যিটা বলা উচিৎ তখন নীরব ভাইয়ার জন্য আর বলতে পারিনি।
‘আচ্ছা বন্ধু সম্পর্কটা কি এতোটাই ঠুনকো যে একটা আইফোনের কাছে বিক্রি হয়ে গেলো!
‘প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে।
‘পুতুল বের হয়ে চলে এসে গাড়ীতে বসলো। পরশ বসেই ড্রাইভার শুরু করে দিলো৷ তারপর বলল,সরি তোকে ভুল বোঝার জন্য, সরি তোর সাথে বাজে বিহেভিয়ার করার জন্য, সরি তোকে কষ্ট দেয়ার জন্য, সরি আমার কারণে এতো কিছু সহ্য করার জন্য।
‘কত সরি বলবে? তোমার সরির আচার বানিয়ে খাবো নাকি আশ্চর্য?
‘সারাজীবন সরি বলবো আর তুই সরির আচার করে খেয়ে ফেলবি ব্যাস।

‘চার ঘন্টার জার্নির পর সাভারের গোলাপ গ্রামে এসে পৌঁছালো পুতুল আর পরশ। পুতুল তো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। পুতুল আশ্চর্য হয়ে বলে সত্যি আমরা গোলাপ গ্রাম এসেছি?
‘শোন সামনে আগানোর জন্য একটা শর্ত আছে?
‘পুতুল ভ্রু কুঁচকে পরশের দিকে তাকায়।
‘গাড়ীর পেছনের সিটে একটা প্যাকেট আছে তুই গাড়ীতে যেয়ে সেটা পরে আয়।
‘পুতুল মানা করলো না৷ দ্রুত গাড়ীতে যেয়ে দেখে রেড আর বাসন্তী কালারের একটা গাউন৷ পুতুল দ্রুত সেটা পরে বের হলো।

‘পুতুল দু’হাতে গাউন উঁচু করে ধরে সামনে এগিয়ে আসছিলো।পরশ পেছন থেকে হালকা করে পুতুলের চুলে টান দেয়।পুতুল দাঁড়িয়ে পিছু ঘুরবে।
‘পরশ সামনে এসে বলে,এক মিনিট বলেই নিজের হাতে থাকা তাজা গোলাপের ক্রাউন পুতুলের মাথায় পরিয়ে দিয়ে বলে,একদম আমার রুপকথার পরী।
‘পুতুল খুশী হয়ে বলে মোবাইল দাও সেল্ফি তুলবো।
‘সেল্ফি কেন জান? আমাদের প্রতিটা মূহুর্ত ক্যামেরা বন্দী হচ্ছে সো নো টেনশন।

পুতুল মনে মনে বলে,এখন তোমাকে কিছু বলবো না বাছা ধন।এখন আমি,উপভোগ করবো।ইশশ কত ইচ্ছে ছিলো এতো এতো গোলাপ সামনে থেকে দেখার।
‘পরশ পুতুলের হাতের ভাজে নিজের হাত গুঁজে নিয়ো বলে,এই যে ভাবুক রানী তুমি ভেবেই দিন পার করবে নাকি সামনে পা ‘ বাড়াবে!
‘পুতুল হাঁটা শুরু করলো।
পরশ পুতুলের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,শত গোলাপের রুপকে হার মানাবে আমার সদ্য ফোটা এই ব্যাক্তিগত গোলাপ।কাঁটা মুক্ত স্নিগ্ধ, সুন্দর আর মোহময়ী এই গোলাপের মাধুর্যে আমি যে নেশাগ্রস্ত হয়ে পরেছি!

#চলবে
@ফলোয়ার
গল্পের লিংক (গল্পের রিভিউ)
2.0
Md Ismail Hossen 2.0
MD Ismail Hossen
সম্পুর্ন গল্পের লিংক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here