#অন্যরকম_প্রেমানূভুতি
#অস্মিতা_রোদৌসি
#part______07
রিদ ভাইয়া তোমার কদিন পর বিয়ে আর তুমি কিনা বলছো তুমি এই বিয়ে করতে পারবেনা।আবার বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো???আর কত নোংরা রূপের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে তুমি হ্যাঁ??কখনো বলছো ভালোবাসি কখনো বলছো তোকে বিয়ে করতে পারবোনা।কখনো বলছে তুমি এই বিয়ে করতে পারবোনা।আবার এখন আমাকে বিয়ে করতে চাইছো??বলছো ভালোবাসো আমায়?? এসব কি হ্যাঁ কি?? আমাকে পাবনা মেন্টাল হসপিটালে পাঠানোর ধান্দা আছে নাকি তোমার?? নাকি আমাকে
সুখে থাকতে দিতে চাইছোনা তুমি??? রেগে গজগজ করে কথাগুলো বললাম আমি।ম
____ কুল ডাউন মেঘু কুল ডাউন!!
____ প্লিজ ডোস্ট কল মি মেঘু???
____ ওকে ওকে।বাট মেঘা তুই যেসব আমার ব্যাপারে ভাবছিস তা একেবারেই নয়।তুই আমাকে ভুল বুঝছিস।
___ লিসেন?তোমাকে আগে ভুল বুঝতাম কিন্তু এখন ঠিক তাই বুঝি।
____ মেঘা প্লিজজজ এমন করিস না প্লিজজজজজ!
বলেই খপ করে আমার হাত চেপে ধরে বললো রিদ ভাইয়া।
___রিদ ভাইয়া হাত ছারো আমার…
___ মেঘলা আমি তোকে ভালোবাসি
এবার এক ঝটকা মেরে রিদ ভাইয়ার হাত ছেরে ছাদ থেকে নেমে পড়লাম।
এই রিদ ভাইয়া আর কতো যে অভিনয় জানে আল্লাহ ওই জানে।
ছাদে উঠেছিলাম ভেজা কাপড় মেলে দিতে হঠাৎ সামনে এসে দাড়ায় রিদ ভাইয়া।
( তারপরের অংশ উপরে দেওয়া আছে।)_____
রুমে গিয়ে একায় একায় বকবক করছি তখনহ রুমে ডুকলো আমার পেয়ারের আম্মু।
____ মেঘলা তারাতারি রেডি হ আজ তোর নানুবাসা যাবো।
___ তাই আম্মু। আচ্ছা আমি রেডি হচ্ছি।মিয়িকে গিয়ে বলো রেডি হতে।
___ নীলা আসছে।ওই ও আমাদের সাথে যাবে।
___ ওকে আম্মু।
আম্মু চলে গেলো… আমি গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে আলমারি থেকে একটা লাল কালারের লং থ্রিপিস বের করলাম পরার জন্য।এরপর ধুকলাম ওয়াশরুমে।
ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আয়নার সামনে গিয়ে চুলগুলো আঁচড়াতে লাগলাম।তখনি ফোনের রিংটন বেজে উঠলো।একটু এগিয়ে বিছানার উপর থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম নীলা কল দিচ্ছে।
____ আসসালামু আলাইকুম??
___ওলাইকুম আসসালাম..কিরে রেডি হসনি এখনো?
____হুম রেডি হচ্ছি।তুই রেডি হয়েছিস??
___হুম অনেক আগেই রেডি হয়ে বসে আছি।
____ কিরে তোর মতলব কি হ্যাঁ?? আমার নানাকে পোটানোর মতলব করছিস নাকি?? বললাম আমি।কিন্তু আফসোস তিনি তো বেঁচে নেই।
___দূর তুই যে কি বলিস না।আচ্ছা রাখ তুই বলেই ফোনটা কেটে দিলো নীলা।
___ আমি মুচকি হাসলাম কারণ সে রাগ করেছে।
এরপর রেডি হয়ে নিচে গেলাম।
নীচে মিঠি,আম্মু,বড় আম্মু,মুহিত ভাইয়া,টিয়া,বসে আছে তাও আমার অপেক্ষায়।আমাকে দেখতে পেয়েই সবাই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। আব্বু বড় আব্বু রিদ ভাই ব্যাবসার কাজে ব্যাস্ত তাই যেতে পারবেনা।
____ কিরে মেঘলা সাজতে তোর এতক্ষণ লাগে??এত সাজার কি প্রয়োজন হ্যাঁ???বললো ভাইয়া।
___ ভাইয়া আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি সেজেছি??
____ তা নয়তো কি??? পেত্নির নানি একটা।
____আমি পেত্নি নাহ তোর বউ পেত্নি তোর শালি পেত্নি তোর শালা প্রেত ভূত হুহ কিছুটা রেগে বললাম আমি।
এই তোদের বকবক বন্ধ করে আয়।বলেই সবাই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মাইক্রোতে বসার উদ্দেশ্য পা বাঁড়ালো।
মাইক্রোতে উঠে বসলাম তাও ভাইয়া পাশে।কিছুদূর যেতেই নীলাকে রাস্তার মোড়ে দেখতে পেলাম।
নীলা হেঁসে আমার পাশে বসলো।নীলাকে আজ নীল পরি লাগছে।নীল কালারের একটা লং থ্রীপিস মেচিং ওড়না আর হোয়াইট কালারের প্লাজু।ফর্সা শরীরে নীল কালারটা বেশ মানিয়েছে।।কানে স্টোনের একজোড়া দুল চোখে কাজল আর ঠোঁট হালকা পিংক কালারের লিমবাম।আর চুলগুলো ঝুটি করা।আমি মেয়ে হয়েই নীলার উপর বেশ বড়ো সরো একটা ক্রাশ খেলাম।
নীলা সবার সাথে কথা বলছে আর হাসাহাসি করছে।
হঠাৎ চোখ গেলো আমার পাশে বসা মুহিত ভাইয়ার উপর।ভাইয়া একধান্দায় নীলার দিকে তাকিয়ে আছে তা দেখে আমি মুচকি হাসলাম।আমি জানি মুহিত ভাইয়া নীলাকে বেশ পছন্দ করে।
হঠাৎ একটা গান বেঁজে উঠলো মাইক্রোরের বক্সে___
তেরি মেরি গাল্লায় হোগে মাশহুর…
কারনা কাভিতো মুঝে নাজরোসে দূর
কিথে চালিয়ে তু, কিথে চালিয়ে তু, কিথে চালিয়ে
জানদায়ে দিলয়ে তু জানে দিয়া তু
তেরে বিনা মেনারায়ু মেরে বিনা তু
কিনে চালিয়ে তু,কিথে চালিয়ে তু,কিথে চালিয়ে
👉বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নেবেন…..
গানটা শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। মনে পড়ে গেলো বিগবস খ্যাত সেহনাজ গিল আর সিদ্ধর্ত্থ শুক্লার কথা। ইশ দুজন দুজনকে পাগলের মতো ভালোবাসতো।বিশেষ করে সেহনাজ গিল।ওনিতো সিদ্ধার্থ শুক্লা বলতে পাগল ছিলো।এমন ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ আমি এর আগে কোনো জুটির মধ্যে দেখিনি। হঠাৎ সেদিন সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুর সংবাদ শুনে মিনিট দুয়েক থমকে গিয়ে ছিলাম।মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে সিদ্ধার্থের মা আর সেহনাজের কি হবে!!!???এখনো তাদের কথা খুব মনে পড়ে খুব।
এসব ভাবছি হঠাৎ নীলার কথায় ভাবনার জগৎ থেকে বেড়োলাম।
___ মেঘলা তোকে আজ লাল ড্রেসে লাল পরি লাগছে।
আমার ভাই আজ হার্টঅ্যাটাক না করে। কানে কানে বললো নিলাম।
___দূর চুপ থাক পেত্নি।আমাকে পরি নয় তোকে পরি লাগছে।নিল ড্রেসে নিল পরি।
____ এহ আর পাম মারিস না বইন।
____ নীলা পেত্নিইইইইই তুই জানি আমি মিথ্যা বলিনা।
____ ভালো হয়ে যাও মেঘলা ভালো হয়ে যাও। বিয়ের পর কিন্তু এই পেত্নির অডার মতো চলতে হবে।আফটারঅল আমি তোমার হবু ননদীনি। দুষ্ট হেসে বললো নীলা….
____ হুহ আমি না তুই আমার অডার মেনে চলবি।দেখিস
____ আমার এই কথায় নীলা খিলখিল করে হাসতে লাগলো।আর আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।আমি তো হাসির মতো কিছুই বলিনি।তাহলে এই পেত্নিটা হাসিতেছে কেন??
দীর্ঘ দেড় ঘন্টা পর বানু বাসায় পৌঁছালাম।
বাসায় পৌঁছে সবাই আমাকে ঘিরে ধরলো এটা ওটা বলে লজ্জা দিতে লাগলো।তোর হবু হাজবেন্ড কেমন রে?দেখতে মাশাল্লাহ সেই,তুই এই বিয়েতে খুশিতো?তোর হবু বর কেমন কেয়ারিং,বিয়েতে সাজগোজের প্লান কি???ইত্যাদি। মাথাটা পুরো ভনভন করতে লাগলো।
সবার প্রশ্ন এড়িয়ে নীলাকে নিয়ে উপরে গেলাম ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
ফ্রেশ হয়ে নীচে আসলাম।সব কাজিন মিলে আড্ডা দিচ্ছি ডয়িংরুমে।
নীলাকে সবাই কম বেশি চিনলেও আমার বড় মামার ছেলে রুহান ভাইয়া চিনেন না।কারণ তিনি কিছুদিন হলো আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন পড়ালেখা শেষ করে।রিহান ভাইয়া আমার ছোটবেলার ক্রাশ ছিলেন।দেখ হ্যান্ডসাম খুব।কথাবার্তা চলন ফিরণ সব দিক দিয়ে তিনি বেস্ট।
____ কিরে মেঘলা ওনি কে?? চিনলাম না তো?
বললো রুহান ভাইয়া।
___ আমার বান্ধবী নীলা আর হবু ননদ।হেঁসে বললাম আমি।যদিও ননদ মানি না বান্ধবী ছারা।
____ ওহ আচ্ছা। তো মিস নীলা কেমন আছেন???
___ আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া।আপনি??হেসে বললো নীলা।
____, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালোই। তো কিসে পড়েন আপনি??
___ আমি মেঘনার সাথে এক ক্লাসে পরি। আপনি??
___ আমি আমেরিকা থেকে পড়া লেখা শেষ করে দেশে ফিরলাম সবে কয়েকদিন হলো।
___ওহ আচ্ছা।
____ আচ্ছা তোমার বাসায় কেকের আছেন??
____ বাবা,ভাইয়া,আর আমি
____, কেন আপনার মা নেই??
____ নাহ ৫ বছর আগে তিনি গত হয়েছেন।অসস্থি নিয়ে বললো নীলা।
___ সরি সরি মিস নীলা।আমার এমন প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি।
____ ইটস ওকে ভাইয়া।
____ তো তোমায় একটা প্রশ্ন করতে পারি??
___ হুম বলুন?
___ তোমার বয়ফ্রেড নেই?ডোন্ট মাইন্ড
____ নাহ আমি পিওর সিঙ্গেল হেসে বললো নীলা।
_____ নীলার এমন উওরে বেশ খুশি হলো রিহান।কেন খুশি হলো তা রিহান নিজেই জানে না।নীলার হাসি দেখে রিহানের বুকটা ধক করে উঠলো।তার মন একটাই কথাতো বলছে____ এত সুন্দর স্নিগ্ধ হাসি আগে কোনো মেয়ের দেখেনি।
এদিকে আরেকজন নীলা আর রিহানের কথা বার্তা হাসাহাসি দেখে জ্বলে পুড়ে খাক হচ্ছে। হাতদুটো শক্ত করে মুঠ করে নিয়ে দাঁতে দাত চেপে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে আর বলছে____ জান তোমার এর মূল্য চোকাতেই হবে।তোমাকে এর মূল চোকাতেন হবে।
]________
এদিকে অভ্র অফিস থেকে ফিরে দেখলো নীলা নেই।হঠাৎ মনে পড়ে গেলো নীলা তো মেঘার নানু বাসায়।
বাড়িটা কেমন যেন খালি খালি লাগছে।নীলা ছাড়া বাড়িটা কেমন যেন শুনশান হয়ে পড়ে থাকে।
নীলাকে খুব ভালোবাসে অভ্র।মায়ের পরে তার হৃদয়ে নীলার জায়গা।মা নেই কিন্তু তার ছোট বোন টা মায়ের অভাব পূরণ করছে।মায়ের মতো তাকে শাসন করে ভালোবাসে,আবার অভিমান করে।
এসব ভাবতে ভাবতে রুমে গেলো অভ্র।রুমে গিয়ে আগে ওয়াশরুমে ধুকলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য।
________
ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে চোখ পড়লো দেয়ালে টাংগানো মেঘার ছবির উপর আনমনে মুচকি হেসে দিলো অভ্র।
তুমি আমার শুভ্রপরি।তুই আমার এই রুক্ষ হৃদয়কে পূনোরোজ্জিবিত করেছো।আমার সেই কালো অতিতকে তোমার জন্য হলেও কিছুটা ভুলতে পেরেছি।তোমাকে দেখেই বুঝতে পেড়েছি সব মেয়ে এক নয়।
_____চলবে…
[সরি গল্প রিচেইক করিনি।আর দুইদিন ধরে একটা সমস্যায় ছিলাম তাই গল্প দিতে পারিনি তারজন্য সরি।]