কাজল_কালো_ভ্রমর #পর্ব১৯ #Raiha_Zubair_Ripte

0
334

#কাজল_কালো_ভ্রমর
#পর্ব১৯
#Raiha_Zubair_Ripte

তোমাদের একটা কথা জানিয়ে রাখি আমি আয়ুশের বিয়ে ঠিক করে ফেলছি,মেয়েটা কে আমার ভিষণ পছন্দ হয়েছে বিয়ের তারিখ ও ঠিক করে এসেছি। আমি চাই আয়ুশ সেই মেয়েকেই বিয়ে করবে।

টিপু খানের কথাটা কর্ণকুহর হতেই খাবার খাওয়া থামিয়ে বউয়ের দিকে চেয়ে রয়,আর আয়ুশ কথা টা শোনা মাত্রই খাবার গলায় আঁটকে যায়।

তড়িঘড়ি করে পানিটা খেয়ে আরুশি বেগম কে শুধায়,,

_ এসব তুমি কি বলছো মা,আমার বিয়ে ঠিক করছো তাও আবার আমাকেই না জানিয়ে,আমি কি তোমাকে বলছি আমি আমার বিয়ে দাও।

_ ওমা তুই এভাবে রাগ করছিস কেনো,আমি তো ভেবেছিলাম তুই আমার কথাটা শুনে খুশি হবি। তুই না সাদিয়াকে ভালোবাসিস আমি তো ওর বাসায় গিয়ে একদম বিয়ের ডেট ফিক্সড করে এসেছি,ভালো হয়েছে না!

আয়ুশ খাবার রেখে হাত ধুয়ে বলে,,

_ তুমি এটা কি বলছো,তুমি সাদিয়ার বাসায় কেনো গেছো ওয়েট ওয়েট তুমি সাদিয়ার ব্যাপার জানলে কিভাবে আর ওর এড্রেসই বা পেলে কই।

_ কোথায় আর পাবো মিহিকা আর সামিরা বলেছে,তোর কিন্তু চয়েস আছে বলতে হবে মেয়েটা কি কিউট একদম পরির মতো। আমার কিন্তু বেশ লেগেছে সাদিয়াকে। আমি তো ওকেই আমার ছেলের বউ করবো, এই আয়ুশের বাবা শুনো আজ সন্ধ্যার দিকে কিন্তু সাদিয়াদের বাসায় যাবো তুমি আর আমি তুমি মেয়েটাকে দেখলে যা খুশি হবে না একদম পুতুল।

টিপু খান খাবার খেয়ে হাত ধুয়ে উঠে বলে,,

_ তুমি যেহেতু বলেছো তাহলে তো মানতেই হবে,আমি আজই যাবো ছেলের বউ দেখতে।

কথাটা বলেই চলে গেলো উপরে টিপু খান। আরুশি বেগম খাবার গুলো ঢেকে রুমে চলে গেলো স্বামীর সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে।

আয়ুশ অসহায়ের মতে বসে রইলো ডাইনিং টেবিলে, আরশিয়া বাসায় এসে দেখে আয়ুশ ভ্যাবলাকান্তর মতো বসে বসে কিছু একটা ভাবছে আয়ুশ। আরশিয়া হাতে থাকা পার্স টা টেবিলের উপর রেখে আয়ুশের সামনে চেয়ার টেনে বসে।

_ কি রে ভাইয়া এভাবে কিভাবছিস।

আরশিয়ার কথা শুনে ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে আয়ুশ। অসহায় ফেস নিয়ে আরশিয়াকে সব বলে।

আরশিয়া সব শুনে হেঁসে কুটিকুটি হয়,কিছুতেই হাসি থামাতে পারছে না।

আরশিয়ার হাসি দেখে আয়ুশ আরশিয়ার মাথায় গাট্টা মারে।

_ কি হলো তুই এভাবে পাগলের মতো হাসছিস কেনো,প্রবলেম সল্ভ করে দে।

আরশিয়া কোনো রকমে হাসি থামিয়ে বলে,,

_ অতি চালাকের গলায় দড়ি,এবার করো বিয়ে সাদিয়া নামের মেয়েটা কে, আম্মু দারুন একটা কাজ করেছে,আম্মু আমার কাছে একটা ট্রিট পাওনা রইলো।

কথাটা বলেই আরশিয়া টেবিল থেকে ব্যাগ টা নিয়ে চলে যায় রুমে,আয়ুশ আরশিয়ার কথাটা মানে বুঝতে মিনিট খানেক সময় লেগে যায়।

_________________________

কলেজ ছুটি হয়েছে প্রায় মিনিট দশেকের মতো,মিহিকা আর রাফিয়া হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছে। রাফিয়া অনেকক্ষণ ধরে ফোঁসফোঁস করছে কিছু একটা বলার জন্য, মিহিকা সেটা বুঝতে পেরে হাঁটা থামিয়ে ওভারব্রিজের পাশে থাকা বেঞ্চ টাতে বসে রাফিয়াও গিয়ে বসে পড়ে মিহিকার পাশে।

মিহিকা রাফিয়ার হাতটা ধরে বলে,,

_ তুমি কি কিছু বলবা রাফিয়া,নিরদ্বিধায় বলতে পারো সে কথা আমায়।

মিহিকার কথা শুনে মিহিকাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে রাফিয়া, রাফিয়ার কান্না দেখে ভরকে যায় মিহিকা। রাফিয়ার পিঠে হাত রেখে শুধায়,,,

_ কি হলো কাঁদছো কেনো তুমি, আমায় বলো তো দেখি।

রাফিয়া মিহিকা কে ছেড়ে সোজা হয়ে বসে বলে,,

_ মিহিকা তোমার আয়ুশ ভাইয়ের কি সত্যি বিয়ে ঠিল হয়ে গেছে।

_ হ্যাঁ সেদিন মিথ্যা বললেও আজ সত্যি বলছি ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তা তুমি কাঁদলে কেনো।

_ মিহিকা তোমার ভাই তো আমার ক্রাশ ছিলো,ক্রাশের বিয়ে তাও অন্য কারোর সাথে সেটা মানবো কিভাবে।

রাফিয়ার কথা শুনে মিহিকা হাসবে না কাঁদবে সেটাই বুঝতে পারে না।

_ তা তুমি আমার ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে কাঁদছিলে বোকা মেয়ে এটার জন্য কেউ কাঁদে। আমার ভাইকে কি ভালোবাসতে নাকি তুমি।

_ ভালোবাসি নাকি জানি না কিন্তু তোমার ভাই কতো হ্যান্ডসাম আমি প্রথম দেখায় ক্রাশ খেয়েছি।

_ সবে তো কলেজে উঠলে সামনে তো আরো হ্যান্ডসাম ছেলের দেখা পাবে,প্যারা নিয়ো না আমার ভাইয়ের থেকে দ্বিগুণ হ্যান্ডসাম ছেলে খুঁজে দিবো,তাকে দেখলে তুমি আমার ভাইয়ের কথা ভুলেই যাবা।

_ তুমি অনেক ভালো মিহিকা জানো তো।

মিহিকা গালে হাত দিয়ে বলে,,

_ ওমা তুমি আজ জানলে নাকি,অবশ্য আগে জানতে কিভাবে আগে তো তুমি পাড়তে শুধু অপমান করতে।

_ সেসবের জন্য সত্যি লজ্জিত আমি,তোমার সাথে কিন্তু প্রথম মিথ্যা মিথ্যা ফ্রেন্ডশিপ করেছিলাম,কিন্তু তোমার সাথে তোমার মতো করে মিশতে মিশতে তোমার মধ্যে থাকা গুন গুলো আমার ভালো লাগছে। তার উপর তো আমরা আত্মীয় হতে যাচ্ছি, আত্মীয়দের মধ্যে হিংসা পুষে রাখতে নেই।

_ উহু শুধু আত্মীয় না যে কোনো মানুষের প্রতিই হিংসা পুষে রাখা ঠিক না বুঝলে,তুমি যে তোমার ভুল বুঝতে পারলে এটাই অনেক,আর আয়ুশ ভাইকে নিয়ে আর মাথা ঘামিয়ো না। চলো এখন বাসায় যাই।

আহিল অফিস সেরে বাসায় ফিরছিলো আজ পার্সোনাল কিছু কাজ থাকায় আগে ভাগেই চলে আসে অফিস থেকে,গাড়ি চালানোর এক পর্যায়ে সামনে ভালোমতো খেয়াল করতেই দেখে মিহিকা আর আশিয়া হেঁটে হেঁটে ফিরছে। আহিল গাড়িটা নিয়ে সোজা ওদের সামনে দাঁড় করায়।

মিহিকা সামনে কোনো গাড়ি আসায় গাড়ির দিকে চেয়ে দেখে আহিল।

আহিল গাড়ি থেকে বের হয়ে বলে,,

_ আরে মিহিকা,রাফিয়া যে তোমরা হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছো কেনো।

রাফিয়া আহিল কে দেখে বলে,,

_ আহিল ব্রো আসলে গাড়ি এখনো আসে নি তাই হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম।

_ তা তুমি এদিক দিয়ে যাচ্ছো কেনো তোমার বাড়ি তো উল্টা রাস্তায়।

_ হ্যাঁ আমি তো ওদের বাড়ি যাচ্ছিলাম অভি ভাইয়া তো সামিরা আপুর সাথে ও বাসায় তাই যাচ্ছিলাম।

_ ওহ তা চলো তোমাদের ড্রপ করে দেই,যদি মিস মিহিকার কোনো সমস্যা না থাকে তবে।

_ আরে ব্রো ওর কি সমস্যা থাকবে,হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যাথা হয়ে গেলো,এই মিহিকা তাড়াতাড়ি উঠো গাড়িতে।

কথাটা বলেই রাফিয়া মিহিকাকে নিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে।

আহিল নিচের ঠোঁট কামড়ে গাড়িতে বসে পড়ে। আহিল গাড়ি চালাতে শুরু করলে রাফিয়া বলে উঠে,,

_ হ্যাঁ গো আহিল ব্রো অভি ভাইয়া তো বিয়ে করে ফেলবে সামনে তার বিয়ে,তোমার বিয়ে কবে খাবো বলোতো।

রাফিয়ার কথা শুনে হতচকিত হয়ে যায় মিহিকা। আহিল খানিক হেঁসে বলে,,

_ হ্যাঁ খুব শীগ্রই বিয়ে করবো,ভাবছি মেয়েটাকে দেখতে যাবো তার পর বিয়ের ডেট ফিক্সড করবে।

_ তার মানে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে ব্রো।

আহিল বা হাত দিয়ে চুলগুলো টেনে ধরে বলে,

_ উহু সে আমার গার্লফ্রেন্ড না,আর না তার সাথে আমার প্রণয় ঘটেছে। তার প্রতি আমার অনুভূতি নিয়ে আমি নিজেই দ্বিধায় ছিলাম,ভেবেছি এটা শুধু ভালো লাগে কিন্তু বুঝতে পারি নি অজান্তেই এটা ভালোবাসা হয়ে যাবে।

_ মেয়েটি কি জানে ব্রো তুমি তাকে ভালোবাসে?

_ না আমি বলি নি,জানি বললে মেয়েটি সেটা নেগেটিভ মাইন্ডে নিবে। সোজা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবো যাতে মানা করতে না পারে। তার সাথে প্রেম রিলেশন করতে চাই না।

_ তোমার মতো সুদর্শন ছেলেকে না করতেই পারবে না দেখে নিয়ো।

_ সত্যি, মিস মিহিকা আমার মতো ছেলেকে কি কোনো মেয়ের পক্ষে রিজেক্ট করা সম্ভব?

আহিলের করা প্রশ্নে চমকে উঠে মিহিকা। কিছুটা ঠেস মেরে জবাব দেয়,,

_ আপনাকে কেনো রিজেক্ট করবে না,সবাই কি আর আপনাকে পছন্দ করতে যাবে না-কি।

_ তার মানে বলতে চাচ্ছেন তাকে বললে সে আপনার মতোই আমায় রিজেক্ট করবে।

_ আমহ কখন রিজেক্ট করলাম,আমি জাস্ট বললাম সবার তো আপনাকে পছন্দ হবে না।

_ কেনো আপনার আমাকে পছন্দ না?

_ মানে?

_ মানে হলো এই, আমাকে কি আপনার পছন্দ হয় না।

_ পছন্দ হবে না কেনো হয়।

_ সত্যি!

_ না মিথ্যা বলছি, আপনায় আমার একটু ও ভালো লাগে না,আপনি অতিরিক্ত ফর্সা, তার উপর মুখে চাপ দাঁড়ি নেই,একটা সুদর্শন ছেলে তো সেই,যার মুখে চাপ দাঁড়ি আছে,যে দেখতো কালো ও না আবার মাত্রাতিরিক্ত ফর্সা ও না।

_ ওয়েট তুমি আমার এতো কিছু নজরে রাখো বাহ! কে বলছে আমার চাপ দাঁড়ি নেই। দাঁড়ি রাখলেই হয়ে যাবে,আর এখন কি রোদে পুড়ে পুড়ে গায়ের রং শ্যামলা করবো?

_ আমি কি সেটা করতে বলছি না-কি, আমার কথা আমি বলছি,আপনার গার্লফ্রেন্ড সরি যাকে পছন্দ করেন তার হয়তো আপনার এই রূপই পছন্দ হতে পারে।

_ না হয়তো করবে না এই রূপ পছন্দ সে অনেক খুঁত খুতে।

_ ওহ আচ্ছা।

কথাটা বলেই চুপ হয়ে যায় মিহিকা। মিহিকার চুপ হওয়া দেখে আহিল খানিক হেঁসে উঠে।

রাফিয়া কিছু একটা আন্দাজ করে আহিলের কথার হাবভাব দেখে।

আহিল মিহিকাদের বাড়ির সামনে এনে গাড়ি থামায়,মিহিকা গাড়ি থেকে বের হয়ে আহিল কে ভেতরে আসতে বললে আহিল না করে বলে অন্য একদিন আসবে।

মিহিকা আর জোর না করে রাফিয়াকে নিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। রাফিয়াকে সোফায় বসিয়ে চাচিকে শরবত দিতে বলে রুমে চলে যায় মিহিকা,ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রাফিয়া বসে আছে এখনো সোফাতে।

_ এই রাফিয়া এখনো এখানে বসে আছো কেনো চলো আমার রুমে।

এর মাঝেই অভি আর সামিরা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে। রাফিয়াকে দেখে অভি বলে,,

_ কি রে তুই এখানে যে।

_ সামিরা আপুকে দেখতে এসেছি। তুমি তো আসোই আমি ও চলে আসলাম।

আরো টুকটাক কথাবার্তা বলে দুপুরের খাবার খেয়ে চলে যায় অভি আর রাফিয়া।

_______________________

আরশিয়া চলে আসে শশুর বাড়ি,বাড়ি এসে দেখে সাহিল বাসায় নেই,শাশুড়ীর কাছে জিজ্ঞেস করলে জানায়,,সাহিল নতুন জব নিয়েছে।

কথাটা শুনে অনেক খুশি হয় সাহিল তাহলে আস্তে আস্তে সংসারী হয়ে উঠবে কথাটা ভেবেই আনন্দ পায়।

কিন্তু সেই আনন্দ টা ক্ষনস্থায়ী হলো না। রাতে সাহিল অফিস সেরে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় আসলে রুমের ভেতর আরশিয়া কে দেখে রেগে যায়।

আরশিয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিলো। হঠাৎ হাতে টান লাগায় মাথা ঘুরিয়ে দেখে সাহিল।

সাহিল কে দেখে আনন্দিত হয়ে জড়িয়ে ধরতে গেলে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় সাহিল।

কিঞ্চিত পিছিয়ে যায় আরশিয়া। সাহিল হুংকার দিয়ে বলে,,

_ এ বাড়িতে এসেছো কেনো তুমি যাও তোমার নাগরের সাথে গিয়ে ফষ্টি”নষ্টি করো গিয়ে। আমার রুমে এসেছো কেনো।

আরশিয়া সাহিলের কোনো কথার মানেই বুঝে না, ভ্যাবলাকান্তের মতো চেয়ে বলে,,

_ এসব তুমি কও বলছো সাহিল আমার নাগর কে আর আমি ফষ্টি*নষ্টি করবো মানে?

_ ন্যাকা সাজছো তুমি, আম ভুল কিছু বলি নি ক্যাফে তে কি আমি ভুল দেখেছি ঐ ছেলেটা তোমার প্রেমিক না! ঐ ছেলেটার সাথে যখন তোমার সম্পর্ক ছিলোই তাহলে ছেলেটা কেনো তোমায় বিয়ে করতে বললে আমায়।

_ কিসব উল্টাপাল্টা কথা বলছো কো ছেলে আর কোন ক্যাফ… ওয়েট তুমি কি কাল বিকেলে নীলা ক্যাফের কথা বলছো।

_ হ্যাঁ আমি সেটার কথাই বলছি।

_ আরে আমার সাথে ছিলো ও তো সজিব, বিদেশ চলে যাবে তাই দেখা করলাম।

_ সাথে প্রমিক ও তো।

_ ও আমার প্রেমিক না।

_ মিথ্যা বলো না,ছেলেটা নিজের মুখে আমায় বলছে ফোন করে,তার সাথে তোমার তিন বছরের সম্পর্ক,সে কি মিথ্যা বলছে।

_ অবশ্যই মিথ্যা বলছে তোমার বিশ্বাস না হলে চলো আমি বিশ্বাস করাচ্ছি।

কথাটা বলেই সাহিল কে টেনে সজিবের বাসায় নিয়ে যায়।

সজিব সোফায় বসে একহাতে সিগারেট ফুঁকছিলো আরেক হাত দিয়ে গ্লাসে ম*দ ঢালছিলো, এতো রাতে আরশিয়া কে নিজের বাসায় দেখে অবাক হয় সজিব।

সোফা থেকে উঠে আরশিয়ার সামনে দাঁড়ায়, আরশিয়ার রীতিমতে সারা শরীর রাগে কাঁপছে টি-টেবিলে থাকা মদের গ্লাসটা নিয়ে সোজা কোনো কথা না বলে সজিবের মুখ বরাবর ফিক্কা মারে।

মূহুর্তেই সজিব রেগে যায়, তেড়ে এসে আরশিয়ার হাত মুচড়ে ধরে। ব্যাথায় আহ করে উঠে আরশিয়া।

_ তোর সাহস তো কম না আমার বাড়িতে এসেই আমার গায়ে মদ ফেক্কা মারিস।

_ তুই তোর আর আমার নামে সাহিলেট কাছে কি বলছিস,তোর আর আমার সম্পর্ক তিন বছরের,তুই আমার প্রেমিক!

_ বাহ জেনেও গেছিস। আমি তো জাস্ট বোকা সাহিল টাকে বলেছি তোর আর আমার সম্পর্কের বয়স তিন বছরের,সেটা বন্ধুত্বের এখন সাহিল যদি সেটাকে প্রেমের সম্পর্ক বুঝে নেয় সেটা কি আমার দোষ।

_ তুই বলিশ নি তুই আমার প্রেমিক।

_ হ্যাঁ বলেছি আগুনে একটু ঘি ঢালার জন্য। ঐ বোকা সহিল নিজেকে ভালো প্রমান করতে চাইছল,ওকে দিয়েই আমি আমার লক্ষে পৌঁছাতে পারতাম কিন্তু বোকাটা আমার সব প্ল্যান ভেস্তে দিলো।

আরশিয়া সজিবের হাতে কামড় দিয়ে পাশে থাকা খেলার স্টাম্প দিয়ে সজিবের পায়ে বাড়ি মারে।

_ তোর সাহস কম না তুই সাহিলরে আমার নামে উল্টাপাল্টা বলিস,তোরে একবার বলছিলাম না আমার সংসারের ব্যাপারে কথা বলতে না,ওয়ার্নিং ও দিছিলাম মানিস নাই তুই, আমার সংসার ভাঙার জন্য উঠে পড়ে লেগেছি আজ তোরে তো আমি….

বলেই পা দিয়ে উল্টাপাল্টা লাথি দেওয়া শুরু করলো সাথে তো আছেই স্টাম্পের বাড়ি।

সাহিল এতোক্ষণ বাহিরে দাঁড়িয়ে আরশিয়ার কার্যকলাপ দেখছিলো। আরশিয়ার এমন পাগলামে দেখে সাহিল দৌড়ে ভেতরে এসে আরশিয়াকে থামায়।

সাহিলকে দেখে সজিব আতঙ্কিত হয়ে যায়,বরশিয়ার সাহিলের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে,,

_ দেখলে তো ওর চাল টা এর জন্যই তোমায় বাহিরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম,এর সাহস কতো ও আমার সাথে গেম খেলেতে নামে,তোর মতো সজিব রে নাকে দাড়ি দিয়ে ঘোরানোর মতো বুদ্ধি সাহস দুটোই আমার মধ্যে আছে,কালকের ভেতর যদি তোরে আমি বিদেশে তোর বাপ মায়ের কাছে তোরে না যাইতে দেখছি তাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন,কথাটা মাথায় রাখিস,এখন কেবল পা টা ন্যাংড়া করে দিলাম এর পর পা দিয়ে হাঁটতে যেনো না পারিস তার ব্যাবস্থা করে যাবো। চলো সাহিল।

কথা গুলো বলে সাহিলের হাত ধরে চলে যায় আরশিয়া। আর সজিব ব্যাথার কারনে চিল্লিয়ে উঠে।

#চলবে

( ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, হ্যাপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here