#শুধু_তোমায়_ভালোবেসে
#পর্ব_০৩
#সাদিয়া_রহমান_হাফসা
____________________
এ দাগ যেন আদনানের মনে বিন্দু বিন্দু জমে থাকা তীব্র ক্ষোভকে ক্রমান্বয়ে আরও ভয়ানক করে তুললো। চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস টেনে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। আরাধনা চলে যেতে নিলেই আদনান পিছু ডেকে বলে,
– আরাধনা!
থামলো আরাধনা। আদনান বিনাবাক্যে কয়েক কদম এগিয়ে দুজনের মাঝের দূরত্ব কমিয়ে দাড়ায়। নূরী বেগম কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। অতঃপর আদনান নিজের গায়ে জড়ানো চাদরটা ভালো করে আরাধনার গায়ে জড়িয়ে দিলো। হবু স্ত্রীর বিস্ময়ে ভরা ডাগরডাগর চোখের দিকে চেয়ে দৃঢ় আওয়াজে বললো,
– যাও, দ্রুত পরিষ্কার হয়ে পোশাক পাল্টে এসো। আমি অপেক্ষা করছি।
ভালো-মন্দ কোনো কিছু না বলেই আরাধনা যেভাবে এসেছিলো ঠিক সেভাবেই চলে যায়। পকেটে দুইহাত গুঁজে আরাধনার চলে যাওয়ার পথে চেয়ে রইলো আদনান। মেয়েটা কি কথাও বলতে পারে না নাকি! এই মেয়ের কণ্ঠস্বর পর্যন্ত শোনা হয়নি তার। কথা বলা তো দূর একটাবার চোখ তুলে তাকালো না অবধি! কেন? হবু স্বামীর প্রতি লজ্জা নাকি অচেনা মানুষের প্রতি ভয়? আদনানের গভীর ভাবনায় ভাটা পড়ে কারো ডাকে।
– কিরে নেতা! সাতসকালে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কোন স্বপ্নে হারালি?
হাসি ফুটে ওঠে আদনানের ঠোঁটে। পেছন ফিরে হাসিমুখে দুই হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে ছোটবেলার বন্ধু প্লাস একমাত্র ফুপাতো ভাইকে। পিঠে হালকা চাপড় মেরে আদনান জিজ্ঞেস করলো,
– কেমন আছিস?
– আলহামদুলিল্লাহ ভাই। তোর কি হালচাল?
– আলহামদুলিল্লাহ চলছে।
– রৌদ্র ভাই! (খুশিতে আত্মহারা হয়ে)
নাতিকে দেখা মাত্রই এক প্রকার দৌড়ে এলো নূরী বেগম। রৌদ্র এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে তাকে।
– কেমন আছো দাদি?
– ভালো ভালো। তুমি কেমন আছো ভাই?
দু’হাতে রৌদ্রের মুখখানা ধরে নূরী বেগম উৎকুন্ঠা হয়ে বললেন,
– চোখ-মুখ কেমন শুকায়ে গেছে! ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করিস না তাই না? কেমনে করবি! বাড়ির বাইরের খাবারে কি আর মন ভরে? নাহ্, এবার তোর একটা বিয়ে দেওয়া দরকার।
রৌদ্র হেসে শয়তানি করে বললো,
– আরে আরে দাদী দম তো ছাড়ো! আজই আসলাম আর আজই নিজের সতিন আনতে চাইছো? তোমার সামনে অন্য আরেকটা মেয়ে আমায় আদর সোহাগ করলে সেটা তুমি সহ্য করতে পারবে তো?
নূরী বেগম মাথা নেড়ে বললেন,
– সহ্য কি করা যায় ভাই! তা-ও সহ্য করতে হইবো।
– আচ্ছা ঠিক আছে। এসব কথা পড়ে হবে। আগে বলো আরু কই?
|
|
– ও হাসিনা ও নীলাম পারী। কার গেয়ি কেছি জাদুকা..
– ওওও আম্মু গো! মেরে ফেললো গো! আমার কোমর ভেঙে দিছে গো! তোমার মেয়ে সোজা হয়ে দাড়াতে পারছে না গো! তাই আজকের এক্সামও দিতে পারবে না গো। আমি আজ কোনো ফাঁকি দেইনি গো! ওওওও!!
– সরি মিস! আ’ম এক্সট্রিমলি সরি। একচুয়্যলি..
– আবে রাখ তোর সরি..একি! আপনি! এখানেও চলে এসেছেন? সেদিন মারতে পারেননি বলে আজ আবার আমার পিছু নিয়ে ভার্সিটি অবধি চলে এসেছেন!? কি সাংঘাতিক বেডা! (মুখে হাত দিয়ে)
কায়নাতকে দেখে আফসান হতাশ হয়ে বললো,
– আবার তুমি!? ওহ খোদাআআ! রহম করো আমার ওপর রহম করো প্লিজ! (দুই হাত আকাশে তুলে)
আফসানের মুখটা ফাটা বেলুনের মতো হয়ে গেছে। বোনের আবদার রক্ষার্থেই ভার্সিটি এসেছিলো বোনকে পিক করতে। তেমন কোনো কাজ না থাকায় আধা ঘন্টা আগেই চলে এসেছে। গাড়ির ভেতরে বসেই অপেক্ষা করছিলো কিন্তু বাইরে সুন্দরী মেয়েদের আনাগোনা শুরু হতেই তার ভিতরের দ্য মহান প্রেমিক সত্তা লাফিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। গান গাইতে গাইতে ব্যাক সাইড মিররে তাকিয়ে মাঞ্জা মেরে খুব স্টাইল নিয়ে দরজা খুলে বেরোতে গিয়েই ঘটিয়ে দেয় দুর্ঘটনা। বড় ভাই আদনানের মতে যা সে রোজ-ই ঘটায়। গাড়ির দরজায় বাড়ি খেয়ে উপুর হয়ে রাস্তায় বসে পড়ে যায় একটা মেয়ে। তাকে তুলে উঠাতে গিয়েই বড়সড় বিষম খায় আফসান। কেননা মেয়েটি আর কেউ না সয়ং কায়নাত, যে গতকালকেও তার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল।
– ঐ বেডা? কি ভাবেন হা? মরি নাই বলে কি এখন মারার নতুন প্ল্যান খুঁজতেছেন? (তুড়ি বাজিয়ে)
– হেই ইউ! মিস কাউয়াঠুঁটি! আ’ম নোট তোমার মতো আজাইরা পাবলিক। আই হ্যাভ অনেক কাজ, বিশাল বিশাল দায়িত্ব। এভরি-ডে আধা টাইম নিজের পেশেন্টদের কিভাবে সুস্থ রাখবো সেই চিন্তা করি বাকি আধা টাইম ফ্যামিলি নিয়ে থাকি। আর এভরি নাইট বউয়ের অভাবে বিরহের মোয়ে মোয়ে শুনি। তোমারে নিয়া ভাবার এই আফসান সাখাওয়াতের হ্যাভ নো সময়। আর ইউ বুঝতে পারছো?
কায়নাত হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে। আফসান ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– কি ব্যাপার? কা কা করছো না কেন?
কায়নাত আফসানের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
– আপনি কি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করে গরুর ডাক্তার হয়েছেন ডাক্তার সাহেব!?
আফসান তার দুইহাত বাড়িয়ে দিলো। উদ্দেশ্য কায়নাতের গ/লা চেপে ধরা। কিন্তু কায়নাত চোখ বড়বড় করে তাকাতেই হাত সরিয়ে নিয়ে হেঁসে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
– লিসেন আমার অপ্রিয় কাউয়াঠুঁটি! তেল ওয়ালা মাথায় তেল দিতে হয় না। জানি আমি হটশট একটা ছেলে। তাই বলে কি তুমি বারবার আমাকেই জ্বালাতে চলে আসবে? তার চেয়ে বরং এসো তোমার হাত ছিলে গেছে একটু মলম লাগিয়ে দিই।
কায়নাত কোমরে হাত রেখে চোখ রাঙিয়ে বললো,
– বেডা ভাঁওতাবাজ! আমার সাথে ভাঁওতাবাজি!
– ঐ কাওয়া! মুখ সামলে কথা বলবা।(জোরে চেঁচিয়ে)
– চুপ বেডা! একে তো চুরি তারউপর সিনা জুড়ি? (দ্বিগুন চেঁচিয়ে)
•
এদিকে কোনোমতে ক্লাস শেষ করেই বেরিয়ে আসে রাইদাহ। বাড়িতে সে এখন কোনোমতেই ফিরবে না। আদনানকে কল দিয়েছিল তাকে ভার্সিটি থেকে পিক করার জন্যে কিন্তু পরে জানতে পারে সে তার ফুপ্পির বাড়ি আছে, ফিরতে দেরি হবে। তাই আফসানকে কল করে আসতে বলে। দুই ভাই-বোন মিলে আজকে হবু ভাবীকে দেখতে তাদের ভাইয়ের শশুরবাড়ি যাবে। পার্কিং প্লেসে এসেই রাইদাহ-র চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। এর কারণ তার ভাই আর বেস্ট ফ্রেন্ড একজন আরেকজনকে ধোলাই দিচ্ছে। যেকোনো সময়-ই এদের চুলোচুলি শুরু হয়ে যেতে পারে। রাইদাহ চশমাটা ঠিক করে দৌড়ে ওদের দুইজনের মাঝখানে হাত উঁচু করে দাঁড়িয়ে বলে,
– ব্রো ভয় পাস না আমি চলে আসছি। এই কায়নাত চুপ কর! আমার ভাইয়ের সাথে কি শুরু করছিস এগ্লা?
বোনকে দেখে আফসান ফোঁসফোঁস করে পকেট থেকে চিরুনি বের করে চুল আঁচড়াতে শুরু করে। ওদিকে কায়নাত এখনো চেঁচিয়েই যাচ্ছে।
– আপনাকে আমি পুলিশে দেবো। দশবার না পাঁচবার না দুই দুই বার আপনি আমায় খু/ন করতে চেয়েছেন! খু/নি! দিনদুপুরে গাড়ি দিয়ে হামলা করে!
রাইদাহ বিরক্ত হয়ে ঝাড়া দিয়ে বললো,
– বইন তুই থামবি?
– সর এইখান থেকে। ফাজিল মাইয়া। ভাইয়ের চামচা বদের হাড্ডি! বান্ধবী নামের কলঙ্ক তুই। তোর সাথে ব্রেকআপ!
ফুঁ দিয়ে সামনের চুল সরিয়ে খটাখট শব্দ করে চলে যায় কায়নাত। রাইদাহ ওদিকে পাত্তা না দিয়ে চশমা ঠিক করে বললো,
– ব্রো ঠিক আছিস? হাঁপাচ্ছিস কেন?
আফসান গাড়িতে হেলান দিয়ে বুক চেপে ধরে বোনের দিকে ফিরে কাঁদোকাঁদো মুখ করে সুর তুলে বললো,
– কারণ দিল মে মেরে হে দারদে ডিস্কো! দারদে ডিস্কো! দারদে ডিস্কোওও!
|
|
জানালার স্বচ্ছ থাই গ্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আরাধনা। পড়নে আদনানের গায়ের কালো চাদর। যেই লোকটা একটু আগেই জানালো যে সে নোংরা, অপরিচ্ছন্নতা পছন্দ করে না সে-ই আবার তার নিজের গায়ে জোড়ানো চাদর আরাধনার অপরিষ্কার গায়ে জড়িয়ে দিলো! কেন? ঠান্ডা লাগবে বলে? আরাধনার ঠান্ডা লাগলে ওনার কি আসে যায়? কই বাবা আর দাদীর তো কিছু যায় আসে না। মায়ের চিন্তা হতো। শীতের সময় মাও একইভাবে নিজের গায়ের সোয়েটার আর চাদর আরাধনাকে পড়িয়ে দিতো। তাহলে কি এগুলো সে মায়ের থেকে শিখেছে? আরাধনা লক্ষ্য করে এই চাদর ওকে সুন্দরের শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। ভাবনায় মত্ত আরাধনা কি মনে করে যেন চাদরটা নাকের কাছে এনে ধরে। একটা মিষ্টি গন্ধ আসছে চাদর থেকে।
– কিরে আরু? আমি চলে এসেছি তো! কোথায় তুই? (জোরে)
ভাইয়ের ডাক শুনে জলদি ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে নেয় আরাধনা। কিন্তু পরক্ষণেই কিছু মনে পড়তে থেমে যায় চলার গতি। উল্টো পথে হেঁটে পুনরায় নিজের ঘরে ফিরে এসে দরজার ছিটকিনি এঁটে দিয়ে আদনানের দেওয়া ব্যাগগুলো খুলে দেখতে যায়। আবার ভেসে আসে ভাইয়ের হাঁক-ডাক। অগত্যা হাতের নাগালে থাকা ব্যাগটা নিয়েই চলে যায় বাড়ির পেছনের ছোট্ট পুকুরপাড়ে। পুকুরের ঠান্ডা হিমশীতল জলে বুক অবধি নেমেই এক ডুব দেয়। ডুব দিয়ে ওঠার পর তার শরীর থেকে সাদা ধোঁয়া বেরিয়ে আসে, ঠান্ডায় সারাদেহে কম্পন ধরে। সেদিকে তোয়াক্কা না করে আরো কয়েকবার ডুব দিয়ে নিজেকে পরিষ্কার করে উঠে আসে পাড়ে।
•
পুকুরপাড়ের পাশে বাঁশের বেড়ায় ঘেরা ঘরটায় প্রবেশ করে পোশাক বদলানোর জন্যে। ব্যাগ খুলতেই হাতে চলে আসে মেরুন রঙের একটা সুন্দর শাড়ি। আরাধনা শাড়িটা হাতে নিয়ে কয়েক পলক তাকিয়ে থাকে। তার মা-ও শাড়ি পড়তো, কি সুন্দর লাগতো মাকে! মাঝেমাঝে সেও মায়ের শাড়ি পড়ে সারা ঘর জুড়ে ঘুড়তো, মা পড়িয়ে দিতো। আরাধনার চোখ জোড়া চিকচিক হয়ে ওঠে। কতদিন মাকে দেখে না! মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোয় না কতরাত! মা চলে যাওয়ার পর কেউ তাকে চুলে তেল দিয়ে দেয় না, যত্ন করে না, মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়ায় না, কেউ খাইয়ে দেয় না। আর কেউ ভালো না বাসলেও মায়ের আদরের দুলালি ছিলো আরাধনা। প্রতিবেলা মা নিজ হাতে খাইয়ে দিতো আর এখন তো দু-বেলা পেটপুরে খেতেও দেয় না কেউ। মায়ের স্মৃতিচারণ করতে করতেই আরাধনা শাড়ি পড়া সম্পূর্ণ করে। ঘরে এসে আদনানের চাদরটা আবার নিজের গায়ে জড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। অগত্যা চাদরের দুই আঁচল বুকে চেপে ধরেই বাইরে বেরিয়ে আসে।
•
ওদিকে আদনান আর রৌদ্র বাইরের উঠোনে বেতের মোড়ায় বসে চা আড্ডা দিচ্ছিলো। রৌদ্রের কল আসায় সে বাগানের দিকে চলে গেলো। ওমন সময় আদনানের নজর আঁটকে যায় তার নিকট এগিয়ে আসা শাড়ি পরিহিতা এক পূর্নাঙ্গ নারীর পানে। যার লম্বা আঁচলখানা মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। কিন্তু নারীর সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেই নারী ব্যস্ত দুই হাতে আদনানের চাদর নিজের সাথে মিশিয়ে রাখতে। এ যেন অন্যরকম এক অদ্ভুত সৌন্দর্য। সহসা উঠে দাঁড়ায় আদনান। ততক্ষণে আরাধনা তার অতি নিকটে চলে এসেছে। আদনান কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে চেয়ে আছে। যে কিছুক্ষণ আগে অবধি ছিলো অতি-সাধারণ এক নারী, এক পলকে সে নারী-ই তার অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। কথায় আছে না শাড়িতেই নারী! কোনো এক সময় এই একই অবস্থায় হয়তো হুমায়ূন আহমেদও পড়েছিলো। নিজের প্রেয়সীর দিকে চেয়ে থেকেই হয়তো সে লিখেছে,
❝মাঝে মাঝে শাড়ি পরা ভালো। শাড়ির যে ক্ষমতা আছে পৃথিবীর অন্য কোনো পোশাকের এই ক্ষমতা নেই। শাড়ি একটি মেয়ের পার্সোনালিটি বদলে দিতে পারে।❞
আসলেই তাই। সামান্য একটা শাড়ি সাধারণ আরাধনাকে যেন তুড়ি বাজিয়ে অপ্সরা করে সাজিয়ে এনেছে আদনানের সামনে। শীতের শীতল মৃদু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে চারিপাশ দিয়ে। বাতাসের ধাক্কায় গাছ থেকে শুকনো পাতা ঝড়ে পড়ছে মাটিতে। ঠান্ডা হাওয়ায় কেঁপে উঠছে তরুণী। এ কম্পনেও যেন আলাদা সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে। আদনানের চোখের গভীর দৃষ্টি তরুণীর সেই কম্পনে লুকায়িত সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় মুগ্ধ হচ্ছে বারেবার। এর মাঝেই সেখানে রৌদ্র চলে আসে। বোনকে এই রূপে দেখে রৌদ্রের চোখ ছলছল হয়ে ওঠে। আরাধনার মাথায় হাত রেখে রৌদ্র ধরা গলায় বললো,
– মাশা-আল্লাহ! আমার ছোট্ট আরুটাকে আজ একদম মায়ের মতো লাগছে।
ঘোর ভাঙে আদনানের। এতক্ষণে আদনানের নজরে এলো আরাধনা নিজেও তার দিকে চেয়ে আছে। এ দৃষ্টির মানে বুঝতে পারছে না আদনান। অবশ্য বোঝার চেষ্টাও করছে না। আরাধনার চোখের দিকে চেয়ে আদনান বললো,
– তুমি বরং অগোছালো-ই থাকো, আমি না হয় তোমায় নিজের হাতে গুছিয়ে নেব! তুমি গুড়ো মাটি হয়ো, আমি তোমাকে মনের মতো গড়ে নেব। যদি গোছাতে না পারি, যদি গড়তে ব্যর্থ হই তবে নিজেকে ভেঙেচুড়ে তোমার রঙে সাজাবো, তোমার মাঝে হারাবো, তোমাতে হবো বিলীন #শুধু_তোমায়_ভালোবেসে!
আরাধনার চোখের পলক পড়ছে না। সে এখনও আদনানের চোখে চেয়ে আছে। তবে কি ও আদনানের বলা কথা শুনতে পেয়েছে? কেমন করে শুনবে এ কথা শোনার সাধ্য তো শুধু সৃষ্টিকর্তা আর আদনানের মনের। তাহলে? শুষ্ক ঢোক গিলে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে আদনান আবার নিজের মনকে বলে,
– ওদিকে আর তাকাস না আদি। অঘটন ঘটে যাবে। তোরই বউ বিয়ের পর রাতদিন তাকিয়ে থাকিস। এখন তাকানো যাবে না। একদমই নাহ্। অঘটন ঘটে যাবে!
চলবে..
অপেক্ষা করুন আগামী পর্বের জন্য, আর পেজে লাইক ফলো দিয়ে কমেন্ট করে রাখেন বাকি পর্ব পোস্ট করেই কমেন্ট বক্সে দিয়ে দেবো লিংক।
#শুধু_তোমায়_ভালোবেসে