#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৩৩||
৬৫।
উৎসব মুখর ক্যাম্পাসে অনেকেই ব্যস্ত রং খেলায়। আর তাই বাতাবরণে ছড়িয়ে পড়েছে রঙিন হাওয়া। সেই রঙিন হাওয়ায় প্রবেশ করলো একজন অতিথি। পুষ্পের দৃষ্টি সেই অতিথির দিকে পড়তেই সে লাবীবের হাত ধরে তাকে টেনে নিয়ে গেলো মানুষটির সামনে, আর বলল,
“ওয়েলকাম ব্রাদার।”
উজ্জ্বল তার চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে একনজর পুরো ক্যাম্পাসে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলল,
“তোদের ক্যাম্পাসটা তো ভারী সুন্দর!”
পুষ্প বলল, “হ্যাঁ।”
এরপর সে লাবীবের দিকে তাকিয়ে বলল,
“লাবীব, এ হচ্ছে আমার কাজিন ব্রাদার।”
উজ্জ্বল লাবীবের দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বলল,
“হাই, আমি উজ্জ্বল।”
লাবীব উজ্জ্বলের সাথে হাত মিলিয়ে বলল,
“আমি লাবীব।”
উজ্জ্বল এবার লাবীবের বাকি পরিচয় জানার জন্য ভ্রূ কুঁচকে পুষ্পের দিকে তাকালো। পুষ্প বলল,
“লাবীব আমার ফ্রেন্ড। আমরা একই স্কুলে পড়েছি। আর এখন একই ভার্সিটিতে।”
“হুম, ভালো।”
উজ্জ্বল এবার এদিক-ওদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজতে লাগলো। হঠাৎ তার চোখ আটকে গেলো আহিকে দেখে। এতোক্ষণ সে আহিকেই খুঁজছিল। আহির স্নিগ্ধ অভিব্যক্তি ও প্রাকৃতিক ভূষণ ভীড়ের মধ্যে তাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে। পুষ্প উজ্জ্বলের চোখ অনুসরণ করে পেছন ফিরে তাকিয়ে মৃদু হাসলো। এরপর গলা ছেড়ে আহিকে ডাকলো। আহি পুষ্পের কন্ঠ শুনে তাদের দিকেই এগিয়ে এলো। তার সাথে রাদও ছিল।
উজ্জ্বলকে দেখেই আহি সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“আরেহ আপনি? কেমন আছেন?”
উজ্জ্বল মুচকি হেসে বলল,
“ভালো আছি। তোমাকেও বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। অনেক পরিবর্তন হয়েছে তোমার।”
“যেমন!”
“যেমন, এই মুহূর্তে তোমাকে বেশ প্রফুল্ল লাগছে। সিলেটের হাওয়ায় হয়তো বিষাদ ছিল।”
আহি হেসে রাদের দিকে তাকালো। এরপর বলল,
“তা না, তবে ভাবলাম এই চমৎকার দিনগুলো কি বিষন্নতার কারণে হারিয়ে ফেলবো?”
উজ্জ্বল এবার রাদের দিকে তাকালো। পুষ্প বলল,
“রাদ আহির বেস্টফ্রেন্ড।”
উজ্জ্বল হাত এগিয়ে দিয়ে বলল,
“নাইস টু মিট ইউ।”
রাদও হাত এগিয়ে দিলো। মোটামুটি পরিচয় পর্ব শেষে পুষ্প আর লাবীব উজ্জ্বলকে মেলা ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য নিয়ে যেতে যাবে, তখনই উজ্জ্বল বলল,
“তুই যা। আমি নিজেই ঘুরে দেখি।”
পুষ্প লাবীবকে নিয়ে চলে যেতেই উজ্জ্বল আহির পাশে এসে দাঁড়ালো। আহি জিজ্ঞেস করলো,
“চট্টগ্রামে কখন এসেছেন?”
“কয়েকদিন হচ্ছে। এবার দেড় মাসের ছুটি নিয়ে এসেছি। একদম ইদের পর সিলেটে ফিরবো।”
“বেশ তো।”
“এবার কিন্তু আমাকে চট্টগ্রাম ঘুরে দেখানোর দায়িত্ব তোমার!”
আহি উজ্জ্বলের কথায় হালকা হাসলো। এদিকে রাদ একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। উজ্জ্বল আর আহির কথোপকথনে বেশ বোঝা যাচ্ছে, তাদের আগেও ভালো কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু আহি একবারও উজ্জ্বলের ব্যাপারে রাদকে কিছু জানায় নি। বেশ অভিমান হলো রাদের। সে হনহনিয়ে অন্যদিকে চলে গেলো। রাদকে চলে যেতে দেখে আহি ভ্রূ কুঁচকে সেদিকে তাকিয়ে রইলো। উজ্জ্বল তার মনোযোগ আকর্ষণ করতেই আহি আবার দৃষ্টি সরিয়ে উজ্জ্বলের দিকে তাকালো। এরপর টুকটাক কথা বলতে বলতেই আহি উজ্জ্বলকে তাদের ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখালো।
(***)
বাসায় ঢুকতেই মিসেস লাবণির মুখোমুখি হলো আহি। লাবণিকে সজ্জিত পোশাকে দেখে আহি ভ্রূ কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“কোথাও যাওয়া হচ্ছে?”
লাবণি হালকা হেসে বলল,
“তুমি এই প্রশ্ন আমাকে করছো?”
আহি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে লাবণির দিকে তাকালো। এরই মধ্যে রিজওয়ান কবির তৈরি হয়ে নিচে নামলেন। সাথে মোজাম্মেল চাচাও দু’টি লাগেজ নিয়ে দু’তলা থেকে নেমে বাইরে চলে গেলেন। রিজওয়ান কবির আহিকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“ক্যাম্পাসে ভালোই তো মজা করেছো। যাও এবার ফ্রেশ হয়ে তৈরী হয়ে নাও। সন্ধ্যায় আমাদের ফ্লাইট।”
আহি অবাক কন্ঠে বলল,
“আমাদের ফ্লাইট? কোথায় যাচ্ছি আমরা?”
লাবণি বলল,
“আহি, তুমি কি অ্যামনেশিয়াতে ভুগছো? তোমার আর তাজওয়ারের এনগেজমেন্ট আমেরিকায় হবে। ভুলে গেছো না-কি? আজই আমরা রওনা দিচ্ছি।”
আহি বাবার কাছে এসে বলল,
“বাবা প্লিজ। আমি এখনো এসবের জন্য প্রস্তুত নই। আমাকে একটুবসময় দাও। আমি মাস্টার্সটা শেষ করি। এরপর আমি নিজের জন্য কিছু করতে চাই।”
রিজওয়ান কবির ভাবলেশহীন সুরে বললেন,
“তোমাকে মাস্টার্স শেষ করতে কেউ নিষেধ করে নি। আর নিজের জন্য তোমাকে কিছুই করতে হবে না। তোমার কাছে সব নিজে এসেই ধরা দিচ্ছে। তাজওয়ারকে বিয়ে করলে তুমি তোমার সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।”
“স্বপ্ন পূরণের জন্য একটা রেপিস্টের সাথে তুমি আমার বিয়ে দেবে?”
“এসব মিথ্যে খবর তুমি কোথা থেকে পাও, আহি? আর এখন এসবের সময় নেই। যাও তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে এসো।”
কথাটি বলেই রিজওয়ান কবির বেরিয়ে পড়লেন। আহি লাবণির দিকে হতাশ চোখে তাকালো। লাবণি আহির হাতে হাত রেখে বলল,
“কাম অন বেবি গার্ল, তোমার এই সো কল্ড শাড়িটা খুলে, সুনেহরাহ তোমার জন্য যেই ড্রেস সিলেক্ট করে দিয়েছে, ওটা পরে ঝটপট চলে এসো। আর তোমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নিয়ে নিও। বাকি এনগেজমেন্টের শপিং তো তাজওয়ার করে ফেলেছে।”
আহি লাবণির হাত এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে হনহনিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। ঘরে এসেই খোঁপায় আটকানো মালাটা টেনে খুলে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে দিলো আহি। কয়েক মিনিট ঘরে পায়চারি করে ফোন হাতে নিয়ে রাদকে কল করলো। কল যাচ্ছে, অথচ রাদ ধরছে না। আহি কল দিয়েই যাচ্ছে। হঠাৎ মিসেস লাবণি পেছন থেকে এসে আহির ফোনটা নিয়ে নিলেন। আহি ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আমার ফোন কেন নিয়েছেন?”
লাবণি বাঁকা হেসে বলল,
“বাংলাদেশ না ফেরা পর্যন্ত এই ফোনটা তুমি আর পাবে না।”
“আপনি কিন্তু অতিরিক্ত করছেন। আমার লাইফে ইন্টা’রফেয়া’র করার আপনার কোনো অধিকার নেই। তবুও আপনি বারবার আমাকে বিরক্ত করছেন। আমি জানি, আপনিই বাবার মাথায় আমার আর তাজওয়ারের বিয়ের ভূত ঢুকিয়ে দিয়েছেন।”
লাবণি হাসলো। সেকেন্ড খানিক হেসে বলল,
“আহি, তোমার বাবাই তোমাকে নিলাম করছে, তুমি আমাকে এর মধ্যে কেন জড়াচ্ছো? ভুলে যেও না, তোমার আর তাজওয়ারের বিয়ে হলেই তোমার বাবা খানদের বিজনেসে নিজেকে যুক্ত করতে পারবে। তাছাড়া সামনে ইলেকশন। তোমার বাবাও এমপি পদে দাঁড়াচ্ছেন। এই মুহূর্তে খানদের সাহায্য খুব দরকার। ছোট খানকে খুশি করতে পারলেই তো তোমার বাবার উন্নতি। নিজের বাবার উন্নতি কি সহ্য হবে না তোমার?”
“আমি মানুষ। কোনো পণ্য নই। ওই বাড়িটা আমার জন্য নিরাপদ নয়। তাজওয়ারের বড় ভাই একটা দুষ্ট চরিত্রের লোক। ওদের বাসাটার একদম হ-য-ব-র-ল অবস্থা। দোয়েল ভাবির ব্যাপারে কি কিছু জানেন না? তার নিজের স্বামী তাকে বাধ্য করেছে তার বন্ধুদের সাথে থাকার জন্য৷ সেখানে আমার সেইফটির দায়িত্ব কে নেবে?”
“সরওয়ার খান আর তাজওয়ার খানের মধ্যে তুলনা করো না, আহি। আর দোয়েল তার যোগ্যতা অনুসারে যথেষ্ট পেয়েছে। ভিখারিনী এখন রাজরানীর মতো থাকছে। এতো কিছু পাওয়ার পর সে যদি স্বামীর কথায় একটু আধটু স্বামীর বন্ধুদের সন্তুষ্ট করে, সেখানে তো আমি ভুল কিছু দেখছি না।”
আহি কানে হাত দিয়ে চিৎকার করে বলল,
“ফর গড সেইক, লিভ মি এলৌন।”
লাবণি আহির ফোনটা বন্ধ করে দিয়ে রুমের বাইরে এসে বলল,
“পাঁচ মিনিটের মধ্যে তৈরী হয়ে নিচে নামবে। নয়তো তাজওয়ারকে ফোন করে এখানে আসতে বলবো। আর এরপর এয়ারপোর্টে তার সাথেই যেও। তার সাথে তো অন্তত শক্তির জোরে পারবে না।”
লাবণি চলে যেতেই আহি ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো। আর বুকে হাত রেখে বলল,
“আল্লাহ, তুমি আমার ভাগ্যে আর কতো ঝামেলা লিখে রেখেছো। আমি আর এসব মানসিক অত্যাচার নিতে পারছি না।”
(***)
বিমানবন্দরের সামনে গাড়ি থামলো। আহি মলিন মুখে নেমে এলো গাড়ি থেকে৷ এদিকে তাজওয়ার গ্লাসের বাইরে আহিকে দেখে মুচকি হাসলো। লাল রঙের ফ্রকে বেশ আকর্ষণীয় লাগছে আহিকে। কিন্তু মুখে কোনো সাজসজ্জা নেই। আর এই সাজ বিহীন মলিন মুখখানা তাজওয়ারকে মুহূর্তেই ঘায়েল করে ফেললো। আহি বিমান বন্দরে ঢুকতেই তাজওয়ার তার দিকে হাত এগিয়ে দিলো। আর আহি সেই হাতটি এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে আঙ্গুল তাক করে বলল,
“আমার থেকে দূরে থেকো।”
তাজওয়ার আহির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলল,
“তুমি আমার সম্পদ। আমি যখন ইচ্ছে তোমার কাছে আসবো। এর জন্য আমার তোমার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
“সম্পদের মালিকানা না পাওয়া অবধি অনুমতি নেওয়া শিখো। দেখা যাবে, যাকে তুমি এখন নিজের ভাবছো, তাকে স্পর্শ করার আগেই সে হারিয়ে গেছে।”
তাজওয়ার আহির পাশে হাঁটতে হাঁটতে বলল,
“তাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য আমি সব সীমালঙ্ঘন করতে প্রস্তুত৷ আর একবার যদি আমি সীমা ছাড়িয়ে যাই, তাহলে আমাকে আবদ্ধ ক্ষেত্রে আনা সহজ হবে না। আমার সম্পর্কে তোমার আরো বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত।”
আহি দৃঢ় হাসি হেসে বলল,
“আত্মবিশ্বাস রাখা ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত রাখাটা বিপদজনক।”
(***)
বিমানে আহি আর তাজওয়ার পাশাপাশি সিটে বসেছে। আর তাজওয়ার আহির হাত ধরে আছে। যতোক্ষণ তাজওয়ার তার পাশে বসেছিল, আহি নিজের হাতটি তাজওয়ারের হাতের মুঠো থেকে ছাড়াতে পারি নি। এমনকি ওয়াশরুমেও তাজওয়ার আহির পিছু পিছু গেলো। তাজওয়ারকে আসতে দেখে আহি দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“তোমাকে আমি আমার বডিগার্ড হিসেবে রাখি নি।”
তাজওয়ার বাঁকা হেসে বলল,
“তোমার দেহ পাহারা দেওয়ার জন্য আমি তোমার সাথে যাচ্ছি না। আমি জানি, তোমার দেহের পাহারা তুমি নিজেই করতে জানবে। আমি তো তোমার ওয়ার্নিংটা মাথায় রেখে তোমার সাথে সাথে আছি। মনে নেই, তুমি কি বলেছিলে? স্পর্শ করার আগেই হারিয়ে যাবে। আমিও দেখতে চাই, আমার চোখের সামনে থেকে তুমি কীভাবে হারাও।”
(***)
আমেরিকায় পৌঁছানোর দু’দিন পর আহি আর তাজওয়ারের এনগেজমেন্টের প্রস্তুতি শুরু হলো। এদিকে অভিমান করে বসে থাকা রাদ সেদিন ইচ্ছে করেই আহির কল ধরে নি। আর আজ দু’দিন আহির কোনো খোঁজ না পেয়ে সে অস্থির। আহির ফোন বন্ধ। সোশ্যাল একাউন্টগুলোতেও আহি এক্টিভ নেই। ক্লাসেও আসে না। এমনকি পুষ্প, লাবীব কারো সাথেই আহির যোগাযোগ হয় নি৷ চিন্তায় পাগলপ্রায় রাদ আহিকে খুঁজতে খুঁজতে তার বাসায় চলে গেলো। সেখানে গিয়ে দেখলো গেটে তালা ঝুলানো। বাইরে দারোয়ান দাঁড়ানো শুধু। তারা রাদের প্রশ্নের কোনো উত্তরই ঠিকভাবে দিচ্ছে না। এদিকে রাদের এই অবস্থা দেখে পুষ্প হতাশ হয়ে পদ্মকে সব জানালো। পদ্মের সাথে তো অনেক দিন কথা হয় নি আহির। সেও ঠিকভাবে কিছু জানাতে পারলো না।
পদ্ম বিকেলে বসে বসে আহির কথায় ভাবছিল, তখন আফিফ তার পাশে বসে জিজ্ঞেস করলো,
“এমন ব্যাকুল ভাবে কি ভাবছো?”
আফিফের প্রশ্নে পদ্ম চিন্তিত কন্ঠে বললো,
“দু’দিন ধরে আহির কোনো খোঁজ নেই৷ ওর বাসায় না-কি তালা দেওয়া।”
আফিফ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
“তুমি জানো না আহি কোথায়?”
“না। আপনি এভাবে জিজ্ঞেস করলেন যে! আপনি জানেন ও কোথায়?”
“হুম, আমি তো তাজওয়ার খানের এসিস্ট্যান্ট। আমি তো জানবোই। ওরা আমেরিকায় গেছে। আহি আর তাজওয়ার খানের এনগেজমেন্ট।”
“আর আপনি এটা আমাকে জানালেন না?”
“তুমি জানো না, এটা তো আমি জানতাম না৷ আমি ভেবেছি, আহি তোমাদের জানিয়েছে।”
পদ্ম পুষ্পের নম্বরে ডায়াল করতে করতে বলল,
“মেয়েটা এতো চাপা স্বভাবের কেন? নিজের এনগেজমেন্টের ব্যাপারেও জানালো না।”
এরপর পদ্ম ফোন করে পুষ্পকে আহির খবর জানালো। পুষ্পও দেরী না করে রাদকে কল করে জানিয়ে দিলো। রাদ এই কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। সে জানতো এই মাসেই আহির এনগেজমেন্ট হওয়ার কথা। কিন্তু এভাবে হুট করে আহিকে নিয়ে যাবে, তা কল্পনা করে নি রাদ। এখন তারা যদি এনগেজমেন্টের পাশাপাশি আক্দও করিয়ে দেয়? এই মুহূর্তে নিজের উপর রাগ হচ্ছে রাদের। সে রাগে ফোনটা মেঝেতে ছুঁড়ে মারলো। আহিকে উজ্জ্বলের সাথে কথা বলতে দেখেই অভিমান করেছিল রাদ। যেই অভিমান সম্পর্কে আহি কিছুই বুঝতে পারে নি। বুঝতে না পারাটাই স্বাভাবিক। সে তো আর জানে না যে রাদ তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আর তার এই ন্যাকামো অভিমান দেখাতে গিয়ে যে সে আহির গুরুত্বপূর্ণ কল মিস করে ফেলেছে, সেটার জন্যই এখন আফসোস হচ্ছে তার। এই মুহূর্তে আহির দেশে ফেরার অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই।
চলবে-