#এলোকেশী_সে
#মাহমুদা_লিজা
পর্বসংখ্যাঃ১৫
কলেজের পোশাকে পুরোদস্তুর তৈরী হয়েই খাবার ঘরে এলো তোড়া। বাড়ির সবাই উপস্থিত সেখানে। কাননের সাথে চোখাচোখি হতেই একগাল হেসে রান্নাঘরে ঢুকল। তার হাসিটা দেখেই জ্বলে উঠল কানন। তার ফর্সা আদলটা লালচে হয়ে উঠল ক্রোধে।
চায়ের কাপটা হাতে করে বসার ঘরে এসে সোফায় বসে সবে চায়ে চুমুক দিলো তোড়া, তখনই নজর গেল তুষারের দিকে। কেমন মুখচোরা হয়ে বসে আছে সোফায়। আঁড়চোখে তুষারকে পর্যবেক্ষণ করছে সে। কানন বারবার ডাকছে নাস্তা খাওয়ার জন্য কিন্তু সে মুখ ভার করে আছে।
তড়িঘড়ি করে নাস্তার টেবিল ছেড়ে বসার ঘরে আসতেই ছেলেকে বসে থাকতে দেখে নিজাম মজুমদার। ছেলেকে প্রশ্ন করার আগেই ছেলেটা বাবার পাশে এসে বলল -“রেজাল্ট দিয়েছে বাবা, দুই সাবজেক্টে ফেইল এসেছে। গার্ডিয়ান নিয়ে না গেলে ক্লাসে ঢুকতে দিবে না। চলো না বাবা।”
ছেলের কথা শুনেই নিজাম মজুমদার রাগে ফুঁসে উঠলেন। কর্কশ স্বরে জানতে চাইলেন ফেল কেন এসেছে, কোন সুবিধার কমতি রেখেছিলেন তিনি। তোড় আনমনে চায়ে চুমুক দিয়েই যাচ্ছিল। সে দেখতে চায় আজ নিজাম মজুমদার ঠিক কি করেন। এদিকে বাবার কথা শুনে তুষার অসহায় চাহনি নিয়ে বলল -“আর হবে না বাবা, তুমি না গেলে ক্লাসে বসতে দিবে না।”
রাগে গজগজ করতে করতে তিনি সম্মতি জানালেন -“চলো।”
তোড়ার ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্যের হাসিটার আগমন হলো না চাইতেও। কতশত বার প্যারেন্টস মিটিং এ শত অনুনয় করেও বাবাকে পাশে পায়নি, তখন তার বড়বাবা অভিভাবক হয়ে যেত, কখনো মাকে নিয়ে যেত। আর আজ! তোড়া অবাক হলো তার মোটেও কষ্ট হচ্ছে না। এবার যারপরনাই সন্তুষ্ট মেয়েটা। তাহলে নিজের সত্তাকে দৃঢ় করতে পেরেছে!
চায়ের কাপে দৃষ্টি রেখেই ভাবনায় ডুবেছিল মেয়েটা, ঘোর ভাঙল মায়ের ডাকে। সহাস্যে মায়ের দিকে চেয়ে বলল -“চিনি ছাড়া চা খাবে আম্মু। ওয়েট মনে হচ্ছে বাড়িয়েছো খানিকটা।”
রুবাবা নিজের দিকে একবার তাকাল। মনে হলো শরীরের বর্ণটাও মলিন হয়েছে কিছুটা। নিজের দিকে এবার মনোযোগ দিতে হবে। সময় হারায় না, প্রতিটা ক্ষণকে সঠিক ব্যবহার করলে শেষ সময়েও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। মায়ের অভিব্যক্তি আঁচ করল তোড়া। চায়ের কাপটা নিয়ে আবার রান্নাঘরের দিকে এগোলো। অনুকে দেখতে পেয়ে ঠোঁট টিপে হেসে বলল -“অনু ভাবী, আপনি কি কলেজে যাবেন?”
তোড়ার আচমকা খুনসুটিটুকু হজম হলো না অয়নের। খাবার রেখে বিস্ময় নিয়ে দেখছে তাকে। অনুতো রীতিমতো ভ্রু কুঁচকে নিল, সবার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল যেকোনো মুহূর্তে হো হো শব্দের লয় উঠবে। মুখে ঢুকানো রুটির টুকরোটা চিবোনোর অবস্থায় নেই অহন। মুখে হাত দিয়ে বসে আছে সে, না পারছে হাসতে, না পারছে রুটিটুকু গিলতে। তার সম্বিত ফিরল তোড়ার ‘আহ’ শব্দে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল অয়ন তার কানে টেনে ধরেছে। ওদিকে পরশ থার্ড আম্পায়ারের মত চিৎকার করে -“ওয়াও, গ্রেট শট। হোয়াট এ মারভেইলাস ফাইট! ক্যারি অন, ক্যারি অন।”
বড়রা সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছেনা। ওদিকে অনু দাঁত কেলিয়ে হাসছে। অনিমার মনটা কোন প্রান্তে গেছে কে জানে! খুব সাধ ছিল এই কোমলমতিকে ছোট ছেলের বউ করার। ততদিনে মেয়েটা আরেকটু পরিপক্ব হতো। কে জানত সকল আশায় অঙ্কুরেই বিনষ্ট হবে! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রান্নাঘরে চলে গেলেন চোখের জল লুকাতে। মায়ের প্রস্হানের পর মুহূর্তেই চেয়ার ছাড়ল অহন। এক ঝটকায় অয়নের হাত সরিয়ে দিল। গমগমে আওয়াজে শুধালো -“বড় ভাইয়ের বউকে ভাবী ডাকবে না তো কি খালা ডাকবে?”
এবার আর হাসি দমাতে পারল না কলি। হাসতে হাসতে পারলে গড়াগড়ি দিত সে। অয়নের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে তোড়া দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার ছলে বলল -“কত কি দেখব, বউয়ের বয়স চব্বিশ ঘন্টা হওয়ার আগেই ভাই পর হয়ে গেল। কলি কাল ঘোর কলি কাল।”
ব্যাগটা কাঁধে চড়িয়ে ঘর ছেড়ে বের হওয়ার আগে আরেকবার মা’কে বলে বেরোল তোড়া। সদর দরজা পেরিয়ে বাড়ির ফটকে আসতেই অহনের ডাকে পিছনে ঘুরল। বাইক ছাড়া এই প্রথম অহনকে বের হতে দেখে অবাক হলো। তার পাশাপাশি এসে অহন বলল -” আজ হেঁটেই যাই, তোমার কলেজের পরই তো আমার কলেজ।”
তোড়া নিজের মত করেই হাঁটতে লাগল। পাশাপাশি হাঁটছে অহনও। নীরবতা ভেঙে তোড়া শুধাল -“আচ্ছা শারীরিক দূরত্ব কি মানসিক দূরত্বও বাড়ায়?”
অহন ছোট্ট করে জবাব দিল -“উহু।”
তোড়া রাস্তায় চলতে চলতে আশেপাশে দেখল। সাঁইসাঁই করে চলে যাওয়া গাড়িগুলো দেখে শুভ্র এপ্রোনটার পকেটে হাত রেখে বলল -” আমি যদি দূরে কোথাও চলে যাই তবে বিস্মৃত হবো না নিশ্চয়ই!”
অহন মৃদু হেসে বলল -“বেফাঁস কথাবার্তা বলো না। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায় তবে আমি নেব না। দূরে যাওয়ার আগে যদি সুতোয় বাঁধা পড়ো!”
তোড়া আনমনে বলল -“জ্যেঠীমা বা বড়বাবা যদি আপত্তি রাখে? কিংবা আম্মু যদি আমায় নিয়ে মজুমদার বাড়ি ছেড়ে আসে!”
কথাটা বলে অহনের পানে চাইল তোড়া। ছাই রঙা ফরমাল শার্টের সাথে কৃষ্ণ কাল প্যান্টের কম্বিনেশনটা অসুন্দর মনে হলো না তোড়ার। মানুষটাকেও মোহনীয় লাগছে। হয়ত কখনো ওভাবে দেখেনি কারণ মানুষটা সবসময়ই সুদর্শন। নিজের দৃষ্টি ঘুরিয়ে আনমনে বলল -“সব বিচ্ছেদ মেনে নেয়া যায় না মাস্টার মশাই। দৈহিক বিয়োগও সাদরে আমন্ত্রিত হয় যে।”
নির্বাক তরুণের স্নায়ুতে তখন ব্যাপক আলোড়ন। এলোকেশীর হৃদয়ে হারানোর ভয় কাজ করে! তাহলে কেন মন উজাড় করে ভালবাসা প্রকাশ করে না!
ভাবনার করিডোর পেরিয়ে এসে জবাব দিল অহন -“মিছিমিছি ভয় পাচ্ছ তোড়ারাণী, কাঁটার শক্ত বেড়ি কি ফুলের ছোঁয়া থেকে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে?”
আর কোন কথা হলো না তাদের। দুজনের গন্তব্যে পৌঁছল দু’জনেই। তোড়া পকেট হাতড়ে দেখল খামটা আছে কি না! হু, সহি সালামতে যত্ন করে রাখা খামটা ফের পৌঁছে যাবে সেই ঠিকানায়।
________
ক্লান্ত দেহে বাড়ি এলো তোড়া। গ্লাসভর্তি শরবত এনে তার দিকে বাড়িয়ে দিল অনিমা। স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিল মেয়েটার গায়ে। নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে শ্রান্ত মেয়েটার ঘাম মুছে দিয়ে বলল -“ইস, কি অবস্থা ঘেমে!”
তাকে ফ্রেশ হতে বলে নিজে দৌড়ে গেল ডাইনিং টেবিলের কাছে। আজকাল মেয়েটাকে বেশ মনে ধরেছে। ছোট ছেলেটা নাহয় আশা ভঙ্গ করেছে বড়টাকে বুঝিয়ে বললে সে নিশ্চয়ই মায়ের আশায় জল ঢালবে না। কিন্তু সাহস তো কুলোয় না। পাছে সংসারে অশান্তি হয়, অনাহুত ঝঞ্জাট আসে, সেই ভয়ে নিজের মনেই চাপিয়ে রেখেছেন সাধটুকু। আজ স্হির করেছেন মনের অভিপ্রায়টুকু স্বামীকে জানাবেন, প্রয়োজনে করজোড়ে মিনতি জানাবেন আবদারটুকু রাখতে। জ্যেঠীমা হয়ে নয় শুধু মা হয়ে থাকতে চান তিনি। ছেলেটাকে সময় করে নিজের বায়নাটুকু জানাবেন।
সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই দরজায় কারো তুমুল ধাক্কার শব্দ শুনতে পেল তোড়া। এক প্রকার ছুটে এসে দরজার ছিটকিনি টেনে নিচে নামাতেই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল জনা সাতেক মানুষ। তোড়া রীতিমতো একপাশে ছিটকে পড়ল। শক্ত হয়ে উঠে দাঁড়াতেই দেখল পুলিশের উর্দিওয়ালা মানুষও দেখা যাচ্ছে। মানুষগুলো হম্বিতম্বি শুরু করেছে -“অনু কোথায়? কোথায় লুকিয়ে রেখেছে ওরা অনুকে। অনু, এই অনু।”
পুরো বাড়িতে তখন মেয়েরা বাদে কোন পুরুষ মানুষ ছিলোনা। ভয়ে আড়ষ্ট সবাই। ঘরে বসেই বড় ভাইয়ের গলার স্বর শুনে কাঁপতে শুরু করল অনু। কাঁপা কাঁপা হাতে ডায়াল করল অয়নের নাম্বারে। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই সবটা বলল সে। উপর থেকেই শুনতে পাচ্ছে বড় ভাইয়ের হুংকার।
অনিমা, কলি, রুবাবা, মেহেরজান সবাই পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। তোড়া তখনো দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। আদিবের একেকট হুংকারে যখন সবাই কেঁপে উঠছে তখন তোড়া সামনে এসে বলল -“কারা আপনারা? অযথা চেচামেচি করার কি হেতু?”
তোড়ার প্রশ্নে দমল আদিব। কিশোরী মেয়েটাকে একনজর দেখতেই থমকাল আহির। ভাইয়ের হাত ধরে বলল -“শান্ত হয়ে কথা বল, ভাইয়া। আমি বলছি ওদের।”
আহির মোলায়েম স্বরে বলল -“আমরা অনুর ভাই, অয়ন ওকে তুলে এনেছে। আমরা নিয়ে যেতে এসেছি।”
আহিরের কমনীয়তা শুনে গর্জে উঠলো আদিব -“কিসের এত মিনমিন করছিস, আমার বোনকে বের করতে বল। নয়লে পুলিশের ডান্ডার বাড়ি একটাও মাটিতে পড়বে না।”
আদিবের গর্জনে এবার তোড়াও ক্রুদ্ধ স্বরে বলল -“ডান্ডার ঠান্ডা গরম কেলানি শুধু আমাদের জন্য নয়, আপনাদের পিঠেও পড়তে পারে। মিছে অভিযোগে পুলিশ নিশ্চয়ই আপনাদের কোলে তুলে নাচবে না!”
আহির চমকে উঠল তোড়ার যশস্বীতা দেখে। ভাইকে থামতে বলে ঈষৎ হেসে বলল -“প্লিজ ডোন্ট অ্যাংরি। আপনারা অনুকে এনে দিন আমাদের হাতে আমরা চলে যাব।”
ছোট ভাইয়ের কঢা শুনে ফের চেচিয়ে উঠল আদিব -“চলে যাব মানে? ঐ বদমাশটাকে জেলে না ঢুকিয়ে কোথাও যাবো না। কত বড় আস্পর্ধা!”
দ্বিগুণ তেজে তোড়াও জ্বলে উঠল। গলার স্বর শৃঙ্গে চড়িয়ে বলল -“এটা আপনার ভাষণের মঞ্চ নয় যে মিষ্টির আশায় মানুষ বসে বসে অযৌক্তিক কথাও হজম করবে। ভদ্র ভাষায় কথা বলুন।”
তোড়ার কথায় অপমান বোধ করল আদিব। রক্তচক্ষু নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলল -“তুমি আমায় চেনো না মেয়ে…. ”
কথাটুকু শেষ হবার আগেই অন্য কেউ বলল -“সাতশ কোটি মানুষের পৃথিবীতে সবাইকে চিনতে হয়না।”
তোড়া কাত হয়ে অহনকে দেখল। তার পিছু পিছু অয়নও এগিয়ে আসছে।
অয়নকে দেখেই আদিব তেড়ে গেল। আহিরও পিছু ছুটলো। আদিব হাত বাড়িয়ে অয়নের কলার ধরার আগেই শুনতে পেল -“খবরদার ভাইয়া, একদম ওর গায়ে হাত দিবে না।”
বোনের গলার আওয়াজ শুনে পেছনে ঘুরল আদিব। আকাশ নীল রঙা জামদানীতে পুরোদস্তুর বউ বউ লাগছে। ততক্ষণে পুলিশের লোকগুলো অয়নের হাতজোড়া চেপে ধরেছে।
অনু দৌড়ে এসে স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে বলল -“আমি স্বেচ্ছায় এসেছি ওর সাথে। কেন এমন করছো ভাইয়া? কি লাভ আমাদের আলাদা করে? আমি ভালো আছি ওর সাথে।”
একটানে ভাইকে সরিয়ে নিজের পেছনে নিয়ে অহন বলল -“আর কিছু শোনার আছে আপনাদের?”
আদিব সজোরে অহনকে ধাক্কা দিয়ে বলল -“তোকেও জেলে ঢুকাবো বেশি বাড়াবাড়ি করলে।”
অহন দু পা পিছিয়ে গেল ধাক্কা খেয়ে, এগিয়ে এসে দু’হাতে আদিবের কলার চেপে ধরতেই নজর গেল অনুর অসহায় আদলে। নিজের ক্রোধকে সংবরণ করে অহন বলল -“বাড়াবাড়ি করবেন না।”
আহির পেছন থেকে আদিবকে টেনে ধরে বলল -“ভাইয়া প্লিজ, সমঝোতায় এসে কথা বল। অযথা ঝামেলা করিস না। অনুর বয়ানটাই এখানে মেইন।”
আদিব থামল না। দ্বিতীয় ধাক্কা দিল অহনকে। অহন আর এবার নিজেকে আঁটকে রাখতে পারল না। এগিয়ে এসে আদিবকে ঘুষি মারার আগেই তোড়া এসে দাঁড়াল তাদের মাঝে। অনুর দিকে তাকিয়ে জোর গলায় বলল -“তোর ভাইকে সাবধান করে দে অনু, উনি আরেকবার যেন এই ধৃষ্টতা না দেখায়। জ্যেঠীমা কষ্ট পাচ্ছেন।”
অনু অয়নকে ছেড়ে দৌড়ে এসে ভাইয়ের পা ধরে বলল -“এমন করিস না ভাইয়া। তুই বরং আমায় মেরে ফেল কিন্তু ওকে ছাড়তে বলিস না। ওর দোষ নেই, আমি নিজে পালিয়ে এসেছি।”
বোনের অশ্রুসিক্ত নয়নজোড়া দেখে শীতল স্বরে আদিব বলল -“তোর কষ্ট হয়নি আমাদের ছেড়ে আসতে? এই একটা ছেলের জন্য আমাদের এত বছরের ভালবাসা উপেক্ষা করলি? আমরা তোকে ভালোবাসিনি? কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দিয়েছিলাম?”
অনু মাথা নিচু করে ওভাবেই বসে রইল। তার জন্য তার ভাসুরের গায়ে হাত উঠাল তারই বড় ভাই। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। তোড়া না আসলে হয়ত ভাইও মার খেত।
অনুর নীরবতা দেখে অহন বলল এবার -“একটা সময় আপনারা ঠিক ওকে মানবেন, সব ভুলে বোনকে আগলেও নিবেন কিন্তু অয়নকে হারালে ও নিশ্চয়ই ফিরে পেতো না। একটা সময় সব ঠিক হয় কিন্তু নিজের ভালবাসার মানুষটা হারালে তাকে ফেরত না পেয়ে কি কেউ ভালো থাকে?”
তোড়ার দিকে এক নজর তাকাল অহন। ভালবাসার মানুষকে এই ছোট্ট মেয়েটাও আগলে নিতে জানে তা ভেবে মুচকি হাসল সে।
আহির মুগ্ধ হয়ে দেখছে তোড়াকে। মেয়েটা না এলে একচোট তুমুল মারপিট হয়ে যেত। অহনকে সে চিনে। শিক্ষকের পেশায় থাকলেও হাত চলে বখাটেদের মত। মারের বদলে লাথি দিয়ে বসে ছেলেটা। কলেজে একবার দেখেছিল কিভাবে বেধড়ক পিটিয়েছিল মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা ছেলেগুলোকে।
আদিব কিছুটা শান্ত হলো। তবুও অয়নের দিকে তাকিয়ে বলল -“তোর জন্য আজ সব ঘটেছে।”
কথাটা শুনেই অয়ন হেসে দিল। আদিবের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে বলল -“এতদিকে নজর না দিয়ে নিজের সংসারে মনোযোগ দিলে এতদিনে দুই বাচ্চার বাবা হতেন। কি পাওয়ার দেখিয়ে চলেন অথচ কাজের কাজ কিছুই করতে পারেন না।”
অয়নের কথায় ফিক করে হেসে দিল আহির। ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কাঁধ উচিয়ে ইশারা করল মান সম্মান গেল।
তোড়া ঠোঁট কামড়ে হাসি আটকালো, অনু মাথা নুইয়ে হাসতে লাগল। অহন পুলিশকে ইশারা করল চলে যেতে, পরে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছে সে।
চলবে………