#এলোকেশী_সে
#মাহমুদা_লিজা
পর্বঃ২২
এই অবেলায় হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক উপস্থিত নেই। ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে আর্জেন্ট ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফি করানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্যাশ কাউন্টারে পেমেন্ট করে অনিমা ছুটলো তাদের নির্দেশ করা কক্ষে। রিসিপট জমা দেয়ার পর পরই রুবাবাকে নিয়ে যাওয়া হলো ভেতরে।
খানিক বাদে রুবাবাকে বের করে আনা হলো, সাথে আনা হলো ফলাফল। ল্যাব সহকারী তোড়াকে জানাল এক্ষুনি রিপোর্টটা কর্তব্যরত চিকিৎসককে দেখাতে। মেরুন জমিনে আঁকা পদ্মফুলের চিত্রায়ণ তার দৌড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে যেন। আলগা হওয়া খোঁপার বাঁধন ততক্ষণে খুলে গেছে। ঝরঝরে কেশরাশি ছড়িয়ে পড়ল পিঠ বেয়ে। কোমর পেরিয়ে নেমে আসা চুলগুলো তার দৌড়ের তোড়ে উঠতে শুরু করেছে।
ডাক্তারের হাতে জমা করা রিপোর্ট দেখে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকে কল করতে। ইমার্জেন্সি ডাক পড়েছে একজন বিশেষজ্ঞের। মিনিট দশেকের ভেতর পৌঁছে যাবেন তিনি। ততক্ষণে ইমার্জেন্সি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে রুবাবার। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসলে হয়ত উপদেশ দিতেন প্রয়োজনমতো। প্রতিটি ক্ষণ যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সেখানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। একজন নার্স এসে তোড়ার হাতে কাগজ ধরিয়ে দিল। তাতে লেখা -” ৩০০মি.গ্রা.
ইকোসপিরিন, ৩০০ মি. গ্রা. ক্লোপিডেগ্রেল, ২০ মি. গ্রা. এ্যট্রোভাষ্টেটিন, ২০ মি. গ্রা. প্যান্টোপ্রাজল।”
দৌড়ে হাসপাতালের ফার্মেসীর সামনে আসতেই দেখা হলো অয়নের সাথে। চোখের জল মুছে ফার্মেসীর লোকটার হাতে কাগজটা জমা দিল তোড়া। অয়ন এসে পাশে দাঁড়াতেই বিষণ্ন চিত্তে সে বলল -“সব শেষ হয়ে গেল।”
নিজের হাতটা তোড়ার মাথায় রেখে অয়ন বলল -“টেনশন নিসনা, কিছু হবেনা ছোট মা’র।”
বিল মিটিয়ে ঔষধগুলো নিয়ে ছুট লাগালো তোড়া। শাড়ির আঁচলটা মেঝেতে লুটিয়ে ধূলোভর্তি হয়ে গেল। সে খেয়াল নেই তার। তাড়াহুড়োতে জুতোও আনেনি মেয়েটা। খানিক দূর যেতেই অয়ন এসে থামিয়ে দিলো তাকে। ঔষধের প্যাকেটটা হাত থেকে নিয়ে শক্ত আদেশ দিল -“বস চুপ করে, আমি আছি। এসব আমি দেখে নেব।”
শুকনো চোখমুখে নির্বাক, হতাশ চাহনি নিয়ে তাকাল তোড়া। ধপ করে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল মেঝেতে। পা’জোড়া টলছে যেন। আশেপাশের মানুষগুলোর করুণার দৃষ্টি মেয়েটার ওপর। নিজেকে প্রবোধ দিল তোরা, তাকে দাঁড়াতে হবে। শক্ত পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে ইমার্জেন্সি লেখা কক্ষটার সামনে গেল। সাদা পোশাকে বের হওয়া নার্সকে জিজ্ঞেস করল ডাক্তার এসেছে কিনা। প্রত্যোত্তরে নেতিবাচক জবাব এল। তখনি নিজের মেজাজের নিয়ন্ত্রণ হারালো মেয়েটা। চিৎকার করে বলতে লাগল -“তামাশা করছেন? একজন মানুষ মরে যাচ্ছে আর আপনাদের ডাক্তার এখনো এলো না কেন? কেমন সেবক উনি? এতটা হেয়ালি কেন একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য? এইতো বললেন দশ মিনিট লাগবে, অলরেডি বিশ মিনিট ওভার।”
আমতা আমতা করে নার্স জানাল -“আসলে ওনার আজ ডিউটি নেই তো, তাই উনি আসতে চাচ্ছেন না। আমরা আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করেছি, উনি পাঁচ মিনিটের মধ্যে এসে যাবেন।”
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে আওয়াজ করল তোড়া -“আরো আগে জানান নি কেন? আপনারা সবাই মিলে ধোঁয়াশায় রেখেছেন কেন আমাকে? আমার মায়ের কষ্ট হচ্ছে আর আপনারা ড্রামা ক্রিয়েট করছেন?”
অয়ন বারবার তোড়াকে শান্ত হতে বলল। ফের চিৎকার করার আগেই হাতে কারো শক্ত টান পড়ল। ঘাড় ঘুরিয়ে কাঁপা স্বরে বলল -“আপনি এসেছেন মাস্টার মশাই! ওর আমার আম্মুকে মেরে ফেলবে।”
অহন ডানহাতটা স্ত্রীর পেছন থেকে নিয়ে তার হাতে রেখে দূরত্ব কমিয়ে নিল হালকা টানে। নিচু আওয়াজে বলল -“শান্ত হও, উত্তেজিত না হয়ে স্হির হও। ছোট মায়ের কিছু হবে না।”
উৎসুক, উদ্বিগ্ন, উদভ্রান্তের মত চেয়ে রইল তোড়া। আজকের কোন দুঃসংবাদে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা যে তারই হবে। দরজা আগলে বাচ্চাদের মত দাঁড়িয়ে রইল। এক টুকরো আশা নিয়ে বুক বেঁধে আছে। এই যাত্রায় বেঁচে যাক মা। প্রাণ দিয়ে আগলে নিবে। হন্তদন্ত পায়ে তখনই ইমার্জেন্সির সামনে এসে থামলো প্রফেসর রাশেদ তালুকদার। গমগমে আওয়াজে বলল -“সরে দাঁড়াও মেয়ে।”
কারো আওয়াজ শুনে একপাশে সরে গেল তোড়া। ঝড়ের গতিতে ভেতরে প্রবেশ করে ফের দরজা ভিড়িয়ে দিলো লোকটা। অহন উঠে এসে টেনে নিয়ে নিজের পাশে বসালো তোড়াকে। তারা দু’ভাই এসেই মহিলাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। না চাইলেও চলে যেতে হয়েছে তাদের। অহনের কড়া নির্দেশ, হাসপাতালে ভিড় করা যাবেনা।
অয়ন সরে গিয়ে স্পেস দিলো তাদের। ভগ্ন হৃদয় মেয়েটার একজোড়া ভরসার হাত দরকার, বিশ্বস্ত একটা পুরুষ্টু বুক দরকার, যাতে ঝাপিয়ে পড়ে মন খুলে কাঁদতে পারবে সে।
আলতো করে স্ত্রীর হাতটা ধরে অহন বলল -“তুমি এতটা ভেঙে পড়লে চলবে না তো, তুমি না স্ট্রং গার্ল! তুমি তো ছোট মায়ের ভরসা, সেখানে তুমি হাল ছেড়ে দিচ্ছো কেন?”
সবার সামনে কঠিন খোলসে আচ্ছাদিত মেয়েটা এই একটা মানুষের নিকট ভিষণ কোমলমতি। মানুষটার কাঁধে কপাল ঠেকিয়ে হু হু করে কেঁদে উঠল মেয়েটা। ফোঁপানো কন্ঠেই বলল -“আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মাস্টার মশাই, আমার বুকটা ভেঙে যাচ্ছে। আমার প্রাণের বিনিময়ে যদি আম্মু ভালো হয়ে যেত!”
তোড়ার শেষোক্ত বাক্যে কেঁপে উঠল অহন। স্ত্রীর পিঠের ওপর হাত দিয়ে শক্ত করে নিজের সাথে আগলে নিয়ে বলল -“বাজে কথা বলবে না একদম। বলছি তো কিছু হবে না।”
চোখ মুছে ঠিক হয়ে বসল তোড়া। এতক্ষণের জমানো কষ্টটা উগড়ে দিয়ে কিছুটা শান্ত হলো যেন। তার খেয়াল হলো সে হিজাব ছাড়া বসে আছে। তড়িঘড়ি করে এলোচুলে হাত খোঁপা করে আঁচল টেনে মাথাটা ঢেকে নিলো। পায়ের জ্বলুনিতে নিচের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল সে জুতো ছারা এসেছে।
*************
মজুমদার বাড়ির দরজায় অচেনা আগন্তুক। কলিংবেলের শব্দে দরজা খুলে দিয়েছিল কলি। সামনে দাঁড়ানো অপরিচিত মানুষটা রুবাবার খোঁজ করছে। কলি উঁচু আওয়াজে ডাকল অনিমাকে।
ত্রস্ত পায়ে ছুটে এলো অনিমা। দরজার সামনে দাঁড়ানো আগন্তুককে দেখে চমকে উঠলেন তিনি। এত বছর পর এই দুর্দিনে মানুষটার আগমনে তিনি রীতিমতো ভীত। অস্ফুটস্বরে অনিমা শুধালো -“আপনি?”
অপরপাশের মানুষটা হাসির ভান করে বলল -“আপা কোথায়? একটু ডেকে বলেন আমি এসেছি। ও আমাকে আসতে বলেছে। আমার সাথে যাবে বলল। এতদিনে সুবুদ্ধি হয়েছে তার।”
অনিমা কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল -“ভেতরে আসো ভাই।”
দু’পাশে ঘাড় নাড়িয়ে মানুষটা বলল -“উহু, ভেতরে যাবোনা আপা। আমার আপাকে খবর দিন, আমি এখানেই অপেক্ষা করছি।”
কলি আগামাথা না বুঝে ফিসফিস করে অনিমাকে শুধালো -“এটা কে বড় ভাবী?”
গলা খাদে নামিয়ে অনিমা জবাব দিল -“রামীম খান, রুবার ছোট ভাই।”
চমকে উঠলো কলি। চোখ বড়বড় করে শুধালো -এখন কি হবে ভাবী?”
অনিমা চিন্তিত বদনে উশখুশ করতে লাগল। রামীম ফের তাগাদা দিলো বোনকে ডেকে দেয়ার জন্য। অনিমা আমতা আমতা করে বলল -“ও বাসায় নেই ভাই।”
হাস্যোজ্বল আদলটা মলিন করে রামীম শুধালো -“কোথায় গেছে? সকালে বারবার বলল শরীর খুব খারাপ, বুকে ব্যাথা করছে। আমি যেন তাড়াতাড়ি এসে তাকে নিয়ে যাই।”
কথাটা শোনামাত্রই ফুপিয়ে উঠলো অনিমা আর কলি। কলি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল -“ছোট ভাবী হাসপাতালে।”
চোখজোড়া বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করল রামীম। নিচুস্বরে হাসপাতালের ঠিকানা জানতে চাইলো। অনিমা ঠিকানা দিতেই ফের প্রশ্ন ছুড়লো নিজাম মজুমদার কোথায়? অনিমা ফিরতি জবাব দিল।
দ্রুত পদে প্রস্হান করল রামীম। যাওয়ার আগে বলে গেল -“আন্টিকে সালাম জানাবেন, ওনাকে বলবেন আমি এসেছি। আপা বাসায় থাকলে ওনার সাথে দেখা করতাম।”
কলি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে অনিমাকে বলল -“আন্টি কে?”
অনিমা মিনমিন করে বলল -“আম্মার কথা বলছে। রুবার সব খবরাখবর ওর বাপের বাড়ির লোকেরা আম্মার কাছে জানত।”
কলি চোখ বড় করে ফেলল বিস্ময়ে। আহাম্মকের মত জিজ্ঞেস করল -“মানে আম্মার সাথে ওনাদের যোগাযোগ হতো? ওরা সব খবর পেত?”
অনিমা সায় জানাল। হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে বলল -“রুবা নিষেধ না করলে ওরা প্রায়ই আসত। রুবা নিষেধ করার পরও লুকিয়ে আসত ওকে এক নজর দেখার জন্য। খুব আদর করে ওরা রুবাকে।”
কলি এবার আর নিজেকে সামলাতে পারল না। বড় জা’কে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল। অনিমাও কাঁদল। এতটা অবহেলা পেয়ে মানুষটা আজ মরতে বসেছে, সুখটা অপার্থিব রয়ে গেল তার।
******************
ইমার্জেন্সি লেখা কক্ষটার হাতলওয়ালা ভারী দরজাটা খুলে বেরিয়ে এলো ডাক্তার রাশেদ তালুকদার। ভরাট কন্ঠে শুধালো – “তোড়া কে?”
তোড়া এক প্রকার ছুটে সামনে এলো। দৃঢ় স্বরে বলল -“আমি।”
রাশেদ তালুকদার একধ্যানে চেয়ে রইলেন। অবিকল মায়ের মত হয়েছে মেয়েটা বরং মায়ের চেয়ে বেশি সুন্দর। এই মেয়েটার জন্যই নিজের জীবনটাকে নষ্ট করেছে সাদা বেডে নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকা ঐ রমণীটা। গম্ভীর স্বরে ডাক্তার জানালেন -“তোমার মা’কে একবার দেখবে না?”
উপরে নিচে মাথা দুলিয়ে তোড়া বলল -“আমি বারবার দেখতে চেয়েছি, কেউ ঢুকতে দিচ্ছে না।”
হাত বাড়িয়ে রাশেদ তালুকদার বললেন -“এসো আমার সাথে।”
অহনও এলো তাদের পিছু পিছু।
সাদা শক্ত বেডটার পাশে এসে দাঁড়াল তোড়া। নির্বাক, মলিন চাহনি নিয়ে তাকালো রুবাবা। হাসার চেষ্টা করল। রাশেদ তালুকদার বলল -“আপনার মেয়েকে কিছু বলবেন?”
রুবাবা হাত বাড়িয়ে মেয়েকে ডাকল। তোড়া এগিয়ে গিয়ে মায়ের বুকে মাথা রাখতেই কড়া নিষেধাজ্ঞা জানাল ডাক্তার। মায়ের মুখের কাছে মাথা আনতেই নীরবে অশ্রু বিসর্জন দিল রুবাবা। সে যেন ক্রমেই তার শক্তি হারাচ্ছে। তার নড়াচড়া করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে যেন।
ক্ষণিকের সাক্ষাৎ শেষে আবারও তোড়াকে কক্ষের বাহিরে যাওয়ার আদেশ দিলো ডাক্তার। নিজেও বেরিয়ে এসে সাফ সাফ জানিয়ে দিলো -“হয়ত এটাই শেষ দেখা হতে পারে। রোগীর প্রধান রক্তনালীতে রক্তপ্রবাহ ধীরে ধীরে কমে আসছে এবং হার্টবিটও কমে আসছে। যেকোনো খবরের জন্য প্রস্তুতি রাখুন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব, উপরওয়ালার উপর সবটা। ওনার অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে, প্রস্তুতি রাখুন। নিজেদের মনকে প্রস্তুত করুন।”
ডাক্তারের উচ্চারিত একেকটা শব্দ বিষবাণ হয়ে বিঁধল তোড়ার বুকে। খামচে ধরল অহনের হাত। ডাক্তার চলে গেল নিজ গন্তব্যে।
সন্ধ্যে ছয়টা বেজে আটত্রিশ মিনিট। ঘনিয়ে আসছে আঁধার, সেই সাথে ধেয়ে আসছে তুমুল ঝড়। ও.টি. থেকে বেরিয়ে এলেন রাশেদ তালুকদার। সহজাত ভাষায় মেডিকেল রীতি অনুসারে ঘোষণা দিলেন -“আমাদের হাতে কিছুই রইলো না। অপারেশন টেবিলেই ফের অ্যাটাক হয় মিসেসে রুবাবা খানের। অচেতন অবস্থায়ই উনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। কোন মেসেজ নেই আপনাদের জন্য। অতিরিক্ত স্নায়বিক চাপে উনি পরপর তিনবার অ্যাটাক করেছেন। ওনার সমস্ত রক্তনালীই রক্ত বহন বন্ধ করে দিয়েছে শেষ এ্যাটাকের পর মুহূর্তে, লাইফ সাপোর্টে নেয়ার সময়টুকুও দেয়া হয়নি।”
ডাক্তারের কাছে কথাগুলো দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হলেও তোড়ার কাছে ছিল দুনিয়া চুরমার হওয়ার আয়োজন। নির্বাক চাহনির মেয়েটাকে ততক্ষণে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরেছিল অহন। তার চোখ বেয়ে জল গড়িয়েছে অনেক আগেই। অয়ন বা’পাশ থেকে ভাইকে আঁকড়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। নাঈম মজুমদার এসেছিলেন। ছোট বোনের মত আগলে রাখা রুবাবার মৃত্যু সংবাদে তিনিও টাল সামলাতে না পেরে বসে পড়লেন চেয়ারে। রামীমের রক্তবর্ণ ধারণ করা নয়নজোড়ায় জল গড়ালো। ধারালো, শাণিত কন্ঠে রামীম বলল -“কতক্ষণ লাগবে ডিসচার্জ করতে?”
ডাক্তার আনুষ্ঠানিকতার কথা জানিয়ে বিদায় নিলেন। অহনের পকেটে থাকা ফোনটা ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠছে। ঐ দুঃসংবাদ জানানোর ধৃষ্টতা তার হয়নি যে। নাঈম মজুমদার অবশ্য স্ত্রীকে খবর জানিয়েছেন মুঠোফোনে। মজুমদার বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হলেও তোড়ার নির্বিকার চাহনি। মেয়েটা যেন কথা বলতে ভুলে গেছে।
চলবে………
(অহনের উপস্থিতি বাদ দিলে সত্যি ঘটনার সম্পূর্ণ অংশটুকু উদ্ধৃত করেছি। ঠিক এমনটাই হয়েছিল বাস্তবে। অক্ষরে অক্ষরে লিখেছি, চেষ্টা করেছি। মাঝেমধ্যে একটুখানি কল্পনা মিলিয়েছি অহন আর অয়নের চরিত্র টেনে।)