#অন্যরকম_তুমিময়_হৃদয়াঙ্গণ
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_২৬ (শাস্তি)
দাহাব এহসান এর হাতের মধ্যে ফোস্কা পড়ে গিয়েছে। চোখের অক্ষিপল্লব ছিঁলে দেওয়া হয়েছে। ঘুমের জন্য ছটফটানি হচ্ছে তার শরীরে। কিন্তু কেউ নেই তাকে মুক্তি দেওয়ার। আকস্মিক খেয়াল করে দেখল ফোস্কা পড়া হাতের উপর বিষধর সাপ উঠে এসেছে। সে আশপাশ চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগল কেউ আছে কিনা! বাহিরে থাকা বাতির কারণে রুমটা-র মধ্যে ঝাপসা আলো আসছে। সাপটি দাহাব এর পুরো হাতকে পেঁচিয়ে ফেলে। যার কারণে আতংকে চিৎকার করতে লাগলেন। কিন্তু কেউ চিৎকার শোনার মত নেই। অপরদিকে, অন্ধকার রুমের বাহির থেকে নাদিম পৈশাচিক দৃষ্টিতে দাহাবের মত ন’র’পশুর মৃত্যু উপভোগ করছে। খেলাটা তখনও শেষ হলে পারতো কিন্তু আফরাজ তার বিবিজান-এর উপর হওয়া নির্যাতনের শোধ তোলবে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)যার কারণে নাদিম সঙ্গে সঙ্গে মে’রে ফেলল না। অন্তিম পরিক্রমা আফরাজ এর হাতে রেখে দিলো। নাদিম হাতঘড়ি চেক করল। ফজরের সময় হচ্ছে। গার্ডসের দিকে তাকিয়ে বলে,
“শোন সবাই ঐ কু’ত্তার দিকে নজর রাখবি। ভুলেও যাতে না মরে। ভেতরে গিয়ে পানি খাওয়ে চলে আসবি। খাবারের দানাও যেনো তার পেটে না যায়।”
গার্ডস একসাথে ‘ইয়েস বস’ বলে গার্ন নিয়ে পাহারা দেওয়া আরম্ভ করে। নাদিম তার গার্ডস এর দিকে আড়পল্লক চেয়ে চলে গেল।
___
আকস্মিক চোখের উপর বিন্দু বিন্দু পানির পড়ায় ঘুম উবে গেল আফরাজ এর। সূর্যের কারণে সদ্য গোসল সেরে আসা রমণীকে দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল তার। নেশাগ্রস্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। নাজীবা গুনগুন করে চুল মুছে চেয়ারে বসল। ড্রেসিং-টেবিলের পাশ থেকে হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে চুল শোকা-তে লাগল। আফরাজ বুকের উপর হাত ভাঁজ করে চেয়ে রইল তার অর্ধাঙ্গিণী-র দিকে। তখনও স্বামীকে খেয়াল করেনি নাজীবা। হিতে শাড়ির আঁচল ভাঁজ করার জন্য সেফটিপিন খুলে নেয়। এতে তার আঁচল বুক থেকে সরে ফ্লোরের উপর গড়িয়ে পড়ে। ঢোক গিলে নাজীবা চোরা-চোখে বিছানার দিকে তাকায়। ওমাহ্? বান্দা তো কবেই উঠে পড়েছে আর কেমনে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। ভেবেই লজ্জায় বুকের উপর তোয়ালে চেপে ধরে। উম্মাদী দৃষ্টিতে বিবিজান-কে দেখতে থেকে পরণে শর্ট ট্রাউজার আর ঢিলাঢালা শার্ট পরে নেয় আফরাজ। সন্তপর্ণে বিবিজান এর নিকটে গিয়ে দাঁড়ায়। নাজীবা চোখের পলক অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেয়। বিবিজান এর ফর্সা পিঠে পানির বিন্দুকণা দেখে মুখ ঝুঁকে আনল। ওষ্ঠদ্বয় কাছে নিয়ে গেল। লেহন করে পানি-গুলো চু’ষে নেয়। শিহরণে নাজীবা বসে থাকতে পারল না। চট করে দাঁড়িয়ে আঁচলটা বুকে জড়িয়ে নেয়। আফরাজ দেখে হা হয়ে গেল। বিরক্তির গলায় আওড়ায়।
“নেশা দেখিয়ে পালিয়ে যাচ্ছো কেন বিবিজান হুম? একে তো রাতে ঘুমাতে দাওনি। তার উপর সকাল সকাল চুলের পানি ছিটকে ঘুম ভেঙ্গে দিলে। এসবের শোধ তুলব। কাছে আসো।”
“এই একদম কথা উল্টা পাল্টা বলবেন না। আমি কবে আপনাকে ঘুমাতে দিলাম না হুম? আপনি নিজে করে এখন সব আমার উপরে দোষ চাপাচ্ছেন। বলি এত রোমান্স আসছে কোথার থেকে হুম?”
“প্রেমিক পুরুষের মন তার স্ত্রীর জন্য খোলা বইয়ের মত। অবশ্য তুমি যদি এভাবে আঁচল ফেলে সিডিউস করার চেষ্টা করো তাহলে আমি পাগল হবোই তাই না? আর বলি কি শোনো! আমি তোমার জামাই এসব থার্ড ক্লাস কাজ না করে ডাইরেক্ট এসে বলবে জামাই আমার আদর লাগবে। আইম অলওয়েজ রেডি টু মেইক ইউ এ হেপি ওয়াইফ। জামাইকে সিডিউস না করে কোলের উপর এসে বসে যাবা। বাকি কাজ আমার ডোন্ট ওয়ারি মাই গার্ল।”
বেশরমের মত স্বামীকে বকতে দেখে নাজীবা নীরবতা পালন করতে লাগল। সেই বা কি বলবে তার জামাই যে যে কথা বলেছে মনে তো হয় না সে তাকে রেহাই দিবে। বুদ্ধি এঁটে আফরাজ এর নিকটে গেল। তার হাতে পিন দিয়ে বলে,
“আমার আঁচলে পিন লাগিয়ে দিন। তাহলেই আমি আপনাকে মনিং কিস দেবো।”
আফরাজ খুশিতে আপ্লুত হলো। পিন করে দিয়ে ‘হয়ছে’ বলে। পরক্ষণে কাজল হাতে ধরিয়ে বলে,
“এবার কাজল লাগিয়ে দিন তো।”
বিবিজান এর কথামত সে চুমু খাওয়ার লোভে একের পর এক সাজ সাজিয়ে দেয়। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)আয়নায় নাজীবা নিজেকে দেখে ব্লাশিং হলো। আফরাজ এর দিকে তাকিয়ে বলে,
“এই জামাই যাও এবার ফ্রেশ হয়ে সোজা নাস্তার টেবিলে চলে আসুন।”
সে মাথা নেড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। আয়নায় নিজেকে দেখে বোকার মত বলে,
“কি রে বিবিজান আবারো আমাকে বকা বানালো? মন তো চাইছে কোলে নিয়ে আছাড় দেওয়ার। আমারে দিয়ে নিজের সাজ পূরণ করলো অথচ আমাকেই বকশিশ দিলো না। অন্যায় হলো-রে। বকশিশ তো নেবোই।”
নিজেরমত বকতে থেকে গোসল সেরে বের হলো আফরাজ। শীতে কাঁপতে থেকে চুল শুকিয়ে নেয়। বিছানার উপর কাপড় রেডি করা দেখে খোশমনে কাপড় পরে নিল। রেডি হয়ে রুম থেকে বের হলো। সামনে আকবর-কে গোমড়ামুখো দেখে তার কাছে গেলো। বন্ধু-কে দেখে আকবর অসহায়ের সহিতে বলে,
“বন্ধু ও বন্ধু তুই অপরাধী-রে। আমার কষ্টে ভরা ভালোবাসা দেহ্ ফিরাইয়া দেহ্। আমাকে তুই বন্ধুর লিস্ট থেকে বাতিল করে দিলি। মনে থাকবে। আজকাল খুব ঐ নাদিম্মার সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি চলছে কি হুম? আমাকে কি বন্ধু মনে হয় না? ঐ ব্যাটার লগে তোর এতো কি হুম? যেমনে ইগনোর মা’রতেছিস, মনে হয় না আর আমার লগে চলাফেরা করবি। এখন তো বড়লোক্সী বন্ধু পাইলা আমি আর কি করুম এইহানে? আজই চলে যাবো।”
মুখ ভেটকিয়ে আফরাজ এর পাশ কেটে চলে গেল। সে হাসল তার বন্ধুর জেলাসি দেখে। কিন্তু কোথাও না কোথাও তার মনে একটা প্রশ্নের উঁকি দেয়। নাজীবার ছোটবেলায় কি কোনোরূপ বান্ধবী ছিল না? ভার্সিটি-তেও কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখলাম না। ব্যাপার কি? আফরাজ সময় ব্যয় না করে নাস্তার টেবিলে চলে আসল। নাজীবা সবাই-কে নাস্তা পরিবেশন করছে। দাদি শ্বাশুড়ি-র চেয়ার খালি দেখে ভ্রু কুঁচকে স্বামীর দিকে তাকায়। স্বামীর প্লেটে পরোটা,সবজি ভাজি দিয়ে আমতা আমতা করে বলে,
“আমি কি দাদি-কে নিয়ে আসতে পারব? না মানে সবাই খেতে শুরু করেছে আমি নাহয় দাদিকে নিয়ে আসি। ঐদিনের পর থেকে আর কথা বা দেখাও হলো না। খুব মনে পড়ছে আমি কি যেতে পারি?”
নাজীবা নম্রতার সহিতে কথাগুলো বললেও চেয়ারে বসা সদস্যদের মধ্যে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া দেখা গেল। আকবর আর কুসুমা নড়েচড়ে বসল। মিসেস ফেরদৌসী করুণ দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকান। মেয়েটা অসময়ে কথাগুলো বলেছে। না জানে তিনি কিরূপ আচরণ করে উঠেন? ঢোক গিলে স্বামীর জ্যাকেটের হাতা চেপে ধরলেন মিসেস ফেরদৌসী। জনাব ইসমাইল মুচকি হাসলেন। স্ত্রীর দিকে নম্রতা দেখিয়ে বউমা-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,
“বউমা সেই কষ্ট আর করতে না দেওয়ার জন্যেই তোমার দাদি শ্বাশুড়ি পৃথিবী ত্যাগ করেছেন। হয়ত তিনি জানতেন তাঁর শরীর নানান ব্যাধিক্রমায় নেতিয়ে পড়বে। তাইত কিছুটি না বলে চলে গেলেন আম্মা। তুমি বসো না বউমা। আফরাজ এটা কেমন ব্যবহার? বউমা কে সামলাও।”
স্তদ্ধ দৃষ্টিতে শ্বশুরের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে স্বামীর দিকে তাকাল নাজীবা। মুখ খুলতে নিলে আফরাজ চট করে বিবিজান-কে টেনে বসিয়ে দেয়। মুখে এক টুকরো পরোটা চুবিয়ে দেয়। নাজীবা পরিবেশের শান্ততার জন্য নীরবে খেতে লাগল। আফরাজ নিজেও খেয়ে নেয়। কেননা বিবিজান-কে রুমের মধ্যে নিয়ে স্বাভাবিক করতে হবে। নাহয় সে নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করবে। শেষ টুকরো খাওয়াতে নিলে নাজীবা খেতে অস্বীকৃতি দিল। বসা থেকে উঠে রান্নাঘরে চলে যায়। সবাই এখন চা খেতে চাইবে। সেই বাহানায় রান্নাঘরে গিয়ে মুখ চেপে কাঁদতে লাগল। তার কারণে দাদি-কে জীবন দিতে হলো। বুঝতে পেরেছে এই কাজটা দাহাব এহসান এর ছিল। তৎক্ষণাৎ তার মনে এক প্রশ্নের হাতছানি দেয়। চায়ের কেটলি নামিয়ে মগে চিনি-দুধ মিশিয়ে ভাবনায় পড়ে গেল। আনমনে বলে উঠে,
“সে রাতে কি হয়ে ছিল? আমিও বা কেমনে আফরাজ এর কাছে এলাম? আফরাজকেও তো স্বাভাবিক দেখে অবাক হচ্ছি। আল্লাহ জানেন এ পরিবারের সঙ্গে কতকিছু হয়ে গেল। আর সবার মূল্যে আমি দোষী। আমি যদি আফরাজ এর জীবনে না থাকতাম, তবে হয়ত আফরাজ তার দাদির আদরের সোহাগ নিতে পারতো।”
হঠাৎ গরম কিছুর স্পর্শে মৃদু চিৎকার করে উঠল নাজীবা। ধ্যান ভেঙ্গে মগের দিকে খেয়াল করে দেখল, গরম চায়ের পানি তার হাতে ছিটকে পড়েছে। কিন্তু তার হাতের চেয়ে অন্য কারো হাতের উপর মাত্রাতিরিক্ত পড়েছে। হাতের মালিককে দেখে চমকে গেল। আফরাজ হাস্যজ্জ্বল দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষটা কি পাগল নাকি ভেবে পেল না নাজীবা। তড়িঘড়ি কেটলি রেখে স্বামীর হাত বেসিনের সামনে এনে কল ছেড়ে দিল। ঠান্ডা পানির স্পর্শে আফরাজ এর হাতের লালাচে ভাব কিছুটা কমেছে। রাগান্বিত নজরে তার দিকে তাকিয়ে বলে,
“আপনার কি আক্কেল জ্ঞান নেই? এত গরম পানির নিচে নিজের হাত কেনো রাখছেন হুম? আমার হুঁশ না আসলে তো আপনার হাতের চামড়াও ছিঁলে যেতো।”
“বিবিজান তখন ভাবনায় মগ্ন নিজেও ভাবলাম আক্কেলজ্ঞান কে গু’লিবিদ্ধ করে হাতটা এগিয়ে রাখি। দেখা যাক কতটা পানি গরম হলো? যদি কম গরম হতো তখন তোমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি-র বকা খেতে হতো। তার চেয়ে বরং আমি আমার বিবিজান-কে বাঁচিয়ে নিলাম। এত সুন্দরী বিবিজান থাকলে এই এক সমস্যা স্বামীর মন অন্যদিকে যেতেই পারে না। এই মেয়ে এই গরম লালাচে জায়গায় একটু চুমু এঁকে দাও না। দেখবে ফুঁস করে ব্যথা উবে গেলো।”
আফরাজ এর কথা শুনে মুচকি হেসে ওষ্ঠদ্বয় তার হাতে ছুঁয়ে দেয়। কারো কাশির শব্দে দু’জন আলাদা সরে গেলো। কুসুমা ভাবী-কে দেখে চোখজোড়া বড় হয়ে গেল তাদের। সে হেসে বলে,
“বলছিলাম কি আপনাদের রোমান্সের ঠেলায় চা খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে।”
“আ আ ভাবী আমি আনছি তুমি যাও বসো গিয়ে। এই শরীরে হাঁটাচলা সাবধানে করতে হবে।”
“হুম হুম শেষ কথাটা তুমিও মেনে চলবা বুঝলে?”
মিটমিটে হাসল কুসুমা। আফরাজ মাথা চুলকে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে যায়। নাজীবা লজ্জায় না পারতে জলদি চা বানিয়ে পুনরায় গরম করে টেবিলের কাছে নিয়ে এলো। কুসুমার এ অবস্থায় চা খেতে মন চাইছে না বলে রুমে বিশ্রাম করতে গেল।
____
“কি গো দাদাজান? কেমন অনুভূতি হচ্ছে আপনার? ফিলিং নাইচ রাইট? আই নো আমার মতো শত্রু আপনি হাজারের মধ্যে খুঁজলেও পাবেন না। সাপটা আপনার আদর যত্ন করছে তো? একমিনিট কিছু খাননাই? ইশ আপনার তো পেটে র’ক্ত ছাড়া আর কিছু যায় না মনে হয় রাইট?”
আফরাজ অফিসের নাম করে আকবর কে নিয়ে দাহাবের সেই গুলিস্তানে চলে আসে। যেখানে তার বিবিজান-কে বন্দীদশায় রেখে ছিল। এখন সেখানে বন্দীদশায় নিজের জীবনের শেষ সময় গুনছেন দাহাব এহসান। আকবর ভাবীর শক্রর এরূপ অবস্থা দেখে বমি করার মত অবস্থা প্রায়। তৎক্ষণাৎ রুম থেকে পালিয়ে যায়। সে মুহূর্তে নাদিম প্রবেশ করে। আফরাজ কে দেখে হেসে বলে,
“কাম শেষ করে হাত সাফ করে ফেলতে এসেছিস নাকি?”
“নোপ এতসহজে মৃত্যু কাম্য নয় এই জা’নো’য়া’র-এর। এর শাস্তি না আমি,না তুই দিবি। দিবে শুধু তোর বোন। অনেক তো সহ্য করেছে। তারও কিছু পাওনা অবশ্য আছে। যে শাস্তি আমার দেওয়ার কথা ছিল সেটা আমি আগেই বাস্তবায়ন করে ফেলেছি। যে যে অঙ্গ দিয়ে আমার বিবিজান-এর দিকে কুদৃষ্টি দিয়ে ছিল সবটা উপ্রে ফেলেছি। বাকিটুকু তোর বোন সাফসুতরো করে দেবে। এমনেই তোর বোন সংসারী হয়ে উঠেছে বটে।”
দাহাব কাতর গলায় ‘পানি পানি’ করে তৃষ্ণার্ত চোখে চাইল। আফরাজ বাঁকা হেসে গার্ডসের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে। তারা গরম র’ক্ত জল এনেছে। দাহাবের মুখ খুলে সবটা ঢেলে দেয়। বেচারার গরম র’ক্ত জলে গলার অংশটুকু জ্বলছে যাচ্ছে। নাদিম পৈশাচিক তৃপ্তিতা অনুভব করল। আফরাজ দেখে মনে মনে খুশির হাসল। সময়ের প্রতিক্রমায় তারাও চলে গেলো।
অফিসে বসে বিবিজান এর কথা ভাবতে থেকে চেয়ারে মাথা হেলিয়ে দিলো।
সে-রাতে দাহাবের ভাড়াটে লোকদের প্রতিঘাত করার পরপরই যখন নাজীবার দর্শন পেল। চোখজোড়া ছানাবড়া হয়ে যায়। তার পরীর এই কি হাল? শাড়ির ব্লাউজ ছিঁড়ে পড়েছে, আঁচলের অংশটুকুও কোথাও নেই। পেট-পিঠের জায়গায় মা’ই’রের দাগ। হাতের বাহু আর কবজিতে সিগারেট এর ছাইয়ের দাগ। তার মধ্যে বিবিজান ঘুমে নাকি অজ্ঞান সেটাও বোঝার জ্ঞান রইল না আফরাজ এর। ক্ষোভে রুমের মধ্যে পাহারা দেওয়া লোকদের গু’লিবিদ্ধ করে ফেলে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)নাজিমের সহায়তায় হাসপাতালে এনে প্রথমে চিকিৎসার আওতায় নেয় নাজীবা-কে। নাদিমকে খেয়াল রাখতে বলে দাহাব-কে ধরার উদ্দেশ্যে হিংস্র চাহনি নিয়ে বেরিয়ে যায় সে। ভাগ্য সহায় থাকায় রাস্তার মাথায় আসতেই দাহাবের গাড়ির সাথে আফরাজ এর গাড়ির টক্কর লাগে। দাহাব তাকে দেখেই ঘাবড়ে তার ভাড়াটে লোক-কে গাড়ি ঘোরাতে বলে। কিন্তু সময় সাথ দিল না তার। আফরাজ গু’লি করে দেয় ড্রাইভার-কে। দাহাব এর কলার ধরে তার ঘাড়ে অজ্ঞানের ইন’জেক’শন চুবিয়ে দেয়। একে তো নাজীবার আহত করা হাত নিয়ে সে ফিরছিল। পরক্ষণে আফরাজ এর আক্রমণে হুঁশ হারিয়ে ফেলল। সেই তখন গুলিস্তানে নিয়ে আসে। নাদিম কে আসতে বলে সে চলে গেল নাজীবার কাছে। নাদিম বুঝতে পেরেছিল তার ক্ষোভের অর্ধ প্রকাশ ঘটানোর সুযোগ হাতে পেয়েছে সে। বিধেয় কোনো দিকবেদিক না ভেবে লা’থি মে’রে লাঠি হাতে নেয়। দাহাব এর পেট-পিঠের অংশে লাগাতার বা’রি দিতে থাকে। ততক্ষণ যতক্ষণ সে ক্লান্ত হয়নি। তার হাতব্যথা উঠতেই থেমে যায়। হাঁপাতে থাকে। মাটির অংশ দাহাবের র’ক্তে মেখে গেছে। নাদিম পুনরায় আঘাত করতে গেলে আফরাজ কল দিয়ে বারণ করে দেয়। তার কথায় দাহাব কে বন্দি করে রাখা হলো।
ভাবনার ইতি ঘটল আকস্মিক ফোনের আওয়াজে।
ভ্রু কুঁচকে ফোন হাতে নেয়। ‘মিসেস হিয়া’ নামটা দেখে অবাক হলো না। স্বামীর লা’শ বোধহয় পেয়েছেন তিনি। কল দিয়ে ফালতু আলাপ করবে ভেবে কল’টি রিসিভ করল না।
চলবে……