তোকে_ঘিরে❤ #পর্ব_১৪ #ফাবিয়াহ্_মমো🍁

0
723

#তোকে_ঘিরে❤
#পর্ব_১৪
#ফাবিয়াহ্_মমো🍁

আমার প্রাণটা যেনো সাথে নেই পূর্বের নাস্তিক হওয়ার কথা শুনে! এ কি করে সম্ভব! না হতেই পারেনা ও নাস্তিক! ও আল্লাহ্-কে বিশ্বাস করেনা? রাজিব চুপ করে মৃদ্যূ স্পিডে হাত মোচড়ে চলছে। শ্রেয়া এখনো হতভম্ব! কিছু বলার বা বোঝার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে পুরোপুরি বিলুপ্ত! আমি মাথা ঠান্ডা রেখে ভাবতেই ভাবতে চিন্তা করলাম ও যদি নাস্তিক হয় তবে আমার পক্ষে পূর্বের জন্য অনুভূতি রাখা পুরো বোকামি! আমি আমার অনুভূতির জন্য ধর্মত্যাগী তো হতে পারবো না। এটা অসম্ভবের চেয়েও অসম্ভব! পারলে আমি মরতে প্রস্তুত! শ্রেয়া টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে একচুমুকে খেয়ে বলে উঠে,

– ওই নাস্তিককে ভুলে যা! ইমিডিয়েটলি ভুলবি ! মানে এক্ষুনি ভুলবি!
আমি মাথা ঠান্ডা রেখে অভয়বানীতে বললাম,
– আমার পক্ষে একটা এ্যাথিস্টকে নিয়ে বিভোর থাকা পসিবল না শ্রেয়া। আমি ওকে নিয়ে ডুবে থাকার মনোবল পাচ্ছিনা। আমাকে ভুলতেই হবে।
রাজিব চট করে আমাদের কথার মাঝে বলে উঠে,
– পূর্ণ! দ্যান তুই পূর্বকে পাত্তা দিচ্ছিস না?
রাজিবের মুখ থেকে পূর্ণ ডাক শুনলে আমার গা বারুদের মতো দাউদাউ করে উঠে ! এই যে একশোবার বলি আমাকে পূর্ণ ডাকবিনা ! তাও নির্লজ্জের মতো ডাকতেই থাকবে!

– তুই কি দিনদিন স্মৃতিশক্তি হারাচ্ছিস রাজিব? আমি বারবার চিৎকার করে বলার পরও কেন পূর্ণ পূর্ণ করিস?
– আমি তোকে পূর্ণ ডাকলে তোর এতো জ্বলে কেন? আমি কি গালি দিয়েছি?
– তোর সাথে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছাশক্তি আমার নেই! জাস্ট শাট ইউর মাউথ!

রাজিব আমার ইনসাল্ট সহ্য করতে না পেরে আমার বাসা থেকে বিদায়। শ্রেয়াও কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলো ওর বাসায়। রাত যখন নয়টার ঘরে টিকটিক করছে তখন বিছানা ছেড়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে আসন করি সোফায়। মা আধঘন্টা আগে হাসপাতাল থেকে কাজ শেষে এসেছে। টিভিতে স্টার প্লাসের একটা সিরিয়াস দেখছেন খুব মনোযোগ দিয়ে। একটু পর নাটকের ব্রেক দিলে উনি বলে উঠলেন,

– কাল তোর বন্ধুদের আসতে বলবি! বাসায় দাওয়াত।
আমি বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– কিসের দাওয়াত?
– কাল ছেলেপক্ষ আসবে তোকে দেখতে। তোর সঙ্গ দেওয়ার জন্য ওদের ডাকিস।
– ছেলেপক্ষ? মানে? আমাকে? কি বলছো?
– বড় হয়েছিস, বিয়ে করবি, পরের বাড়ি যাবি। এটাই নিয়ম। তোর বাবা কাজের উছিলায় শফিপুর গিয়েছে, কাল অনেক কাজ কিভাবে যে সামলাই? কথা না বারিয়ে রুমে যেয়ে ঘুমা। চোখের নিচে কালি দেখতে চাইনা।
– মা আমি কি বোঝা হয়ে গেছি? এতো তাড়াতাড়ি সব করছো কেন? বাবা আসুক।
– অতো ঢঙের আলাপ করে লাভ নেই বুঝেছিস! তোরা বাপ-বেটি তো ওই বদছেলেটার নামও বলিস না তোহ্ বাসায় কি কুমারী মেয়ে জিইয়ে রাখবো? ঘুমা গিয়ে।

মায়ের রূঢ় ব্যবহার সহ্য করা মুশকিল হলেও সহ্য করে চলছি। একচুয়েলি মেয়ে বলে কথা। মায়ের উপর দিয়ে কথা বলা মানায় না। তার উপর পূর্বের কেস নিয়ে আমি যা যা করেছি তা খুবই লান্ঞ্চনাজনক। এমতাবস্থায় বিয়েতে মত দেওয়া নিয়ে যদি মা জোরও করে আমি পিছপা হবোনা। পূর্বের মতো নাস্তিকের সাথে আমার চিন্তা করার চেয়ে অপরিচিত একটা ছেলেকে বিয়ে করাও শতগুণে ভালো! আচ্ছা? মা আমার সাথে এমন কটাক্ষপূর্ণ আচরন করেন কেন? সবসময় অজানা কারনে আমার সাথেই উনি সবচেয়ে নিকৃষ্ট আচরন করেন। আমি কি উনার পেটে ধরা সন্তান না?আমাকে গালাগাল দিয়ে কথা বলতেও উনি একবার ভাবেন না। কি অদ্ভুত…

সকাল থেকে নতুন একটা শাড়ি পরে হরদমে কাজ করছে মা। বাবার অনুপস্থিতিতে নূরানীর সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন একটা কাজের খালা। আমাকে কটু ভাষায় গালি দিয়ে উনাকে বুয়া ডাকতে বলেছে মা। কিন্তু আমার একটা বাজে স্বভাব, কাজের মানুষকে খালা ছাড়া অন্যকিছু ডাকতে পারিনা। উনারাও মানুষ তাই বলে বুয়া ডাকবো নাকি? আদর, স্নেহ ও শ্রদ্ধার ভক্তিতে তাদের একজন আপন মানুষ মনে করি আমি। শ্রেয়া ও আয়মান আমার খবর শুনেই খুব সকালে এসেছে জলদি। রাজিব নাকি ফোন ধরছেনা। না ধরুক! ওই বদমাইশটার সাথে কথা বলা তো দূর! দুইচোখে দেখতেও ইচ্ছা করছেনা! পূর্ব আমাকে পূর্ণ বলে ডাকে এটা ওকে বোঝানোর পরও কেন পূর্ণ বলে ডাকবে? না আসুক! বিছানায় বসে আয়মান ও শ্রেয়া মায়ের দেয়া ছেলের ছবিগুলা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। ওদের ভাষ্যমতে, এই ছেলেটা দেখতে একদম নাক চ্যাপ্টা চাইনিজ রোগীদের মতো লাগে। মোটকথা ছেলেটা একটুও সুন্দর না। ছবিটা আমিও দেখেছি তবে মায়ের উপর দিয়ে কথা বলার সাহস হয়না। হঠাৎ মা দরজায় দুটো টোকা মেরে ভেতরে ঢুকে আমার দিকে একটা শপিংব্যাগ এগিয়ে বললেন,
– শাড়িটা পরে রেডি হ। ছেলেপক্ষ রওনা দিয়েছে।

আমি হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে বিছানা থেকে নেমে শাড়ি চেক করতেই মা-কে পেছন থেকে বললো আয়মান,
– আন্টি ছেলে কি করে?
মা মাথা ঘুরিয়ে বলে উঠে,
– বিসিএস কোয়ালিফায়ার।

মা একটা হাসি দিয়ে চলে যেতেই আয়মান বলে উঠে,
– এই পোঙ্গার বয়স কম হইলেও বত্রিশ হইবো! হালারে ধইরা লাইত্থাইতে মন চাইতাছে!
শ্রেয়া সে কথায় কান না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,
– আন্টি শাড়ি দিলো? এই তুই তো শাড়ি পরতে পারিস না!!
আয়মান শ্রেয়ার কথা টান মেরে বলে উঠলো,
– ফাটাকেস্ট আইডিয়া দেই! লুঙ্গির মতো দিবি গিট্টু এরপর দিবি কয়েক প্যাঁচ! ব্যস শাড়ি পরা শেষ!
শ্রেয়ার মুখটা এমন কুচকে গেলো হাত উঠিয়ে ধাম করে আয়মানের শক্ত পিঠে থাবড়া মেরে নিজের হাতেই ফু ফু দিতে দিতে বলে উঠলো,

– তোকে মারতে যেয়ে আমি নিজেই ব্যথা পাই! উফ.. আমার হাত!!আম্মু…
আয়মান বিরক্তির সুরে বলে উঠলো,
– নেক্সট টাইম থিকা তোর মুখে নিমপাতার ফিডার ঢুকায়া দিমু! তারপর আম্মু আম্মু করিস বলদা! বুইড়া ছেড়ি এখন বিয়া দিলে তিন বাচ্চা সামলাবি ! এখনো ব্যথা পাইয়া বলোস আম্মু?
– তুই প্রচুর ডিসগাস্টিং আয়মান! আমি বুঝেই পাইনা তোর সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ টিকে কি করে!
– চাপাবাজি করার ইচ্ছা নাই শ্রেয়া! অফ যা!

ওদের এই অহেতুক তর্কাতর্কি দেখতে দেখতে আমি ভাই তেজপাতা!! সিরিয়াসলি স্কুল থেকে কলেজ পযর্ন্ত সব স্যার এই দুটোকে একনামে ঝগড়াটে বলে চিনতো! ভার্সিটিতে টিচার তো নাম দিয়ে ফেলেছে ‘টম এন্ড জেরি’। আমি মোবাইলটা নিয়ে শাড়ি হাতে টুপ করে ওয়াশরুমে ঢুকে পরলাম। টিউটোরিয়াল ভিডিও অবজার্ভ করে ইচ্ছামতো সেইফটিপিন লাগিয়ে শাড়ি পরেছি। আচঁলটা ঠিক করে ওয়াশরুম থেকে যেই বের হবো মোবাইলে মেসেজের টিউন বেজে উঠলো। দরজার সিটকিনিতে হাত দিয়ে অন্যহাতে মেসেজে ক্লিক করতেই সিটকিনির উপর থেকে হাতটা আপনাআপনি পরে গেল। মেসেজের উপর আমার রূহ আটকে গেছে যেনো!

‘Come fast. Building – 12’

আননোন প্রাইভেট নাম্বার থেকে আসা মেসেজটা একবার দুইবার বহুবার পড়লাম কিন্তু মনের ভেতর শান্তি পেলাম না। কে দিয়েছে এই টেক্সট? হু? হঠাৎ দরজায় ধাক্কাধাক্কি করা শুরু করলো আয়মান! আয়মান বাইরে থেকে চেচামেচি করে দরজায় হাতুড়ির মতো ধাক্কাচ্ছে! ‘দরজা খোল! আন্টির কি যেন হয়েছে!! দরজা খোল পূর্ণতা!!’ চটজলদি দরজা খুলে রুমে পা রাখতেই আয়মান অস্থির কন্ঠে বলে উঠলো,

– আন্টি চিৎকার দিয়ে উঠছে পূর্ণতা! শ্রেয়া গেছে!! তুই তাড়াতাড়ি চল!!

‘মায়ের কি যেনো হয়েছে’ শুনে একদৌড়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে মায়ের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলি,
– কি হয়েছে? কি নিয়ে চিৎকার দিয়েছো? চুপ করে আছো কেন মা? মা বলো!!

শ্রেয়া মায়ের পাশে সোফায় বসে মায়ের মাথায় হাত বুলাচ্ছে! মা একদম স্থির হয়ে একধ্যানে তাকিয়ে আছে একদম পলকহীন দৃষ্টিতে! আয়মান পানির গ্লাস নিয়ে মায়ের অন্যপাশে বসে গ্লাস এগিয়ে ধরলে মা ধীরেধীরে গ্লাস হাতে নিয়ে পানি খায়। একটু স্বাভাবিক হলে বলে উঠলো,

– তোর জন্য দেখতে আসা ছেলেটার উপর দূর্বৃত্তের হামলা হয়েছে। ছেলেটার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।

ধ্বক করে অদ্ভুত একটা ব্যথায় গ্রাস হয়ে গেলো শরীর! একটু আগের মেসেজ এবং এখন শোনা এই ঘটনার মধ্যে কাকতলীয় ব্যাপার যে নেই সেটা বোঝা শেষ! আমি শ্রেয়া ও আয়মানের দিকে হতবাকের মতো তাকালে ওরাও ঢোক গিলে হাশপাশ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকায়। কেমন ভয়ানক নিবরতা! হঠাৎ মা আমার দিকে দৃষ্টি রেখে শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো,

– তুই এ ব্যাপারে কিছু জানিস! বল কিছু জানিস!
আমি মায়ের উত্তরের ঝুলিতে কি উত্তর ছুড়ে মারবো নিজেও জানিনা। আমার মাথাসহ সম্পূর্ণ শরীর ঝিমিয়ে উঠছে বারবার! প্রচণ্ড হতবিহ্বল লাগছে নিজেকে!

– মা আমি কি করে জানবো? কিছুই জানিনা। তাছাড়া তুমি তো জানো, দেশে দূর্বৃত্তের উপদ্রব প্রচুর বেড়ে গেছে। রাস্তায় বেরুলেই বিপদ।

মাকে উল্টাসিধা বুঝিয়ে আমরা তিনজন রুমে গিয়ে বসলে শ্রেয়া ফট করে থমথমে গলায় বলে উঠে,
– ওই নাস্তিকটা না তো?
আয়মান ওর ভাবনা দুনিয়ায় ডুব দিবে তার আগেই শ্রেয়ার এই কথা শুনে রেগে গিয়ে বলে,

– হান্ড্রেড পার্শেন্ট সিউর না হয়ে পূর্বকে নাস্তিক বলাটা উচিত না! ওয়ার্ডটা স্কিপ কর!
– তুই আমাকে অলটাইম খোচা মারবিনা আয়মান! যে যেটা তাকে সেটা দ্বারা ডাকবো তোর কি!

– দেখ ভাই! আমি ঠান্ডাজাতের মানুষ তোদের মেয়েদের মতো কাউকাউ করে হুল্লা করার শখ নাই! যেটা বলছি বুঝে বলছি! আর রাজিবের কথায় নাচিস না!

– তুই আমাদের রাজিবকে বিশ্বাস করছিস না? মাই গড! কথাটা আগেই বলতি।

– আমি বিশ্বাস করি কিন্তু অন্ধবিশ্বাস করিনা বইন! হয়তো ও নিউজটা কালেক্ট করতে কোথাও মিস্টেক করছে। তাই বলে একটা মানুষকে এতো বড় অখ্যাত করার তো মানে নাই!

আমি ওদের দুজনের ঝগড়া দেখে জাস্ট অবাক! এমন বিকট পরিস্থিতিতে ওরা বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে ঝগড়া করছে? আমি একধাপ গলা উচিয়ে বললাম,

– গাইজ? তোরা প্লিজ থাম না! আমি এমনেই কোনো কিছু ভাবতে পারছিনা দোস্ত! প্লিজ তোরা থাম!

শ্রেয়া কঠিন কিছু বলতে নিবে আমার কথা শুনে নিজেকে দমিয়ে নেয়। আয়মান আমার দিকে তাকিয়ে আর কিছু বললো না। হঠাৎ আমার ফোনটা আবার মেসেজ টিউনে কেঁপে উঠলো! ওদের তীক্ষ্ণদৃষ্টি এখন আমার ফোনের দিকে। আমার ফোনে নিশ্চিতরূপে কিছু এসেছে যা আমাকে দেখে ওরা বুঝে গেছে। আমি মেসেজ চেক করে বললাম,

– ধুর! আজাইরা কোম্পানির আজাইরা মেসেজ!

শ্রেয়া ও আয়মান আমার মিথ্যা কথায় একটা স্বস্তিদায়ক নিশ্বাস ছাড়লো। ওদেরকে এই মেসেজের ব্যাপারে বলে আর বিপদে ফেলতে চাই না আমি। এমনেই গতবার আয়মান আর রাজিব পিটুনি খেয়েছে। আর না! আমি ওদেরকে বিদায় দিয়ে সব আশঙ্কামুক্ত বুঝিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেই। নিজের মধ্যে অপরিমাণে অস্থিরতা কাজ করছে। মেসেজটা এসেছে এমন,

‘Another chance, please come fast. Or else, something will be definitely wrong.’

‘কি করবো, কি করবো’ ভাবতে ভাবতে মায়ের কাছে টাকা রিচার্জের নাম করে নিচে যাই। হাতে কিছু টাকা, ফোন নিয়ে শাড়িটার আচঁলে পিঠ ঢেকে সামনে এনে আশেপাশে চোখ ঘুরাই। কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তি আজও নেই। আমি যে পাকনামি করে একা একা বেরিয়েছি এতে কি হবে জানিনা! কিন্তু আমি আমার ঝামেলায় আর কাউকে কোনোপ্রকার সমস্যায় ফেলতে চাইনা! বাসার গেট থেকে বেরিয়ে সোজা রাস্তাটা ধরে দশমিনিট হেঁটে ডানে বাক নিলেই ১২নং পরিত্যক্ত বিল্ডিংটা। আমি সে অনুযায়ী বিল্ডিংটার সামনে গিতে দাড়ালে ফোনে আরেকটা মেসেজ মৃদ্যূ টিউন বাজিয়ে আসে,

‘Look around. Car no. *****’

মানে? আশেপাশে একটা গাড়ি থামানো আছে? আমি ফোন থেকে চোখ তুলে ডানে বায়ে দেখতেই ঠিক বামদিকে একটু দূরে রাস্তার কাছে কালো গাড়ি থামানো। গাড়িটার নাম্বারের সাথে ফোনের মেসেজে দেয়া নাম্বারটা আরেকবার চেক করলেই বুঝি এটাই সেই গাড়ি। ফোনের স্কিনে একদম উপরের দিকে টাইম শো করছে 12.30pm.। এই দুপুরের দিকে একা যাওয়াটা ঠিক হবে? শ্রেয়া, আয়মানকে বললে বড্ড বিপদে ফাসবে! মা-কে বললে বিরাট কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে! আর কাকে বলবো? জোরে একটা নিশ্বাস ছেড়ে আচঁলটা আরেকটু টেনে ধীরপ্রকৃতিতে গাড়িটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকটা পদক্ষেপে আমার বুকের ভেতর তালগোলে বুকপুক শব্দ ছন্দঃপ্রকরণ চলছে। ছিটকে বেরিয়ে আসতে চাইছে হৃৎপিন্ডটা! এই বিল্ডিংটা যখন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ছিলো তখন প্রচুর লোক সমাগম হতো। এখন আমার চারপাশে মানুষ বলতে ছোট ছোট টোকাই ছেলেগুলো খেলছে। বিপদের দোয়া জপতে জপতে গাড়িটার দরজার কাছে দাড়ালে ভেতর থেকে বা-দিকের দরজাটা খট করে খুলে একটু ফাঁক হয়ে যায়। কে ভেতরে, কেন এখানে ডেকেছে এইসব প্রশ্নের উত্তরে আমি বাইরে ঠাই দাড়িয়ে থাকলে আমার ফোনে টানা চতুর্থবারের মতো মেসেজ আসে। ‘Enter the car, why’re you standing outside?’ মেসেজটা পড়ে একটু খোলা দরজায় হাত দিয়ে পুরোটা খুলতেই ভেতরে থেকে একজোড়া হাতের ভয়ঙ্কর টানে সিটের উপর ছিটকে পরলাম। ধকধক করে বুলেট ট্রেনের মতো হৃৎপিন্ড ছুটছে। শরীরের সমস্ত লোমস্তর কাটা দিয়ে উঠেছে। কুচকানো চোখ খুলে দেখি পূর্ব সামনে বসে আছেন! উনি নিজের সিটবেল্ট খুলছেন। আমাকে আশ্চর্যভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে উঠলেন,

– আ’ম নট গোস্ট। হোয়াই আর ইউ লুকিং এট মি লাইক দিজ?

পূর্ব ভূতের চেয়ে কম কিছুনা। ভূতের মতো অদ্ভুতুরে কান্ড করার ক্ষমতাবল উনার বেশ আছে। আমায় এখানে চোরের মতো কেন ডেকেছেন সেটাই জানার বিষয়। গাড়ির ভেতরটা এমন যে কাউকে এখানে খুন করে কোপালেও মানুষের একটা চিৎকার ভুলেও বাইরে যাবেনা। হঠাৎ উনি সামনের সিটে বসা কাউকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন,

– প্রাইভেসি চাই।

খট্টাশ করে ড্রাইভিং সিটের দরজা খুলে বেরিয়ে যায় একটা প্রাপ্তবয়স্ক লোক। আমি এখনো উদ্বিগ্ন হয়ে অস্থিরতায় ডুবে স্তব্ধ হয়ে ঢোক গিলছি। ড্রাইভারটা বের হতেই উনি প্রলয়কারী টাইফুনের মতো আমার উপর ঝাঁপিয়ে পরলেন। আমাকে শক্ত করে জাপটে ধরতেই আমার গা বরফ শীতল স্পর্শের মতো ঝিমঝিম করে উঠলো! পুরো শরীরে বয়ে গেল শীতকালীন সিজনের মতো হিমপ্রবাহ। চুলের খোপাগুচ্ছে উনি পাচঁটা আঙ্গুল ঠিক চিরুনির ডাটের মতো ঢুকিয়ে ঘাড়ে রেখেছেন আরেকহাত। অমসৃণ গালের সুক্ষ সূচের ক্ষুদ্র দাড়ি আমার কানের পিষ্ঠে ঘষা খাচ্ছে। উনার বক্ষস্থলে হাড়গোড়ের আড়ালে মাংশল যান্ত্রিক পিন্ডটা খুব হাই লেভেলে রক্ত পাম্প করছে। উনি শীতল কোমল কন্ঠে খুবই অস্ফুট সুরে বলে উঠলেন,

– জড়িয়ে ধরবে না? সেদিনের মতো চলে যাবো?

রি রি করে শব্দযুগলের এক মাদকময় কন্ঠ কানের ছিদ্রপথে প্রবেশ করে ব্রেনকে চোখের অশ্রু ঝরাতে সিগন্যাল দিয়ে দিলো। সেকেন্ডের মধ্যে চোখ ঝাপসা। উনাকে ধরার মতো শক্তি, সার্মথ্য, ক্ষমতা,সক্ষমতা কোনোটাই পাচ্ছিনা। দুহাত খুব কষ্ট করে মুষ্টিবদ্ধ করে খিচ মেরে আছি! উনাকে আমি ধরবো না! উনি কানের কাছে আলতো ঠোঁট লাগিয়ে বলে উঠলেন,

– আমি সত্যি চলে যাবো পূর্ণ? তুমি আমায় ধরবে না?

ধরবো না! উনি একটা নাস্তিক! আমার হাতে একটা ছুড়ি থাকলে উনার পেটে ঢুকিয়ে কঠিন মোচড় মারতাম! বর্তমানে সজোড়ে একটা ধাক্কা মেরে উনাকে ডানদিকের জানালার কাছে সরিয়েছি। উনি চরমাবস্থায় বিষ্ময় হয়ে কপাল কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি দরজা খুলার জন্য হাতের বামদিকে ফিরতেই ডানদিক থেকে টুট টুট করে একটা শব্দ হলো! ডানে ফিরে দেখি উনার হাতে ছোট্ট রিমোট যেটা দিয়ে উনি গাড়ি লক করে ফেলেছেন। আমার দিকে আশ্চর্য কন্ঠেই বলে উঠলেন,

– তুমি আমাকে দেখে খুশি হওয়ার বদলে পালাচ্ছো কেন? কি করেছি আমি?

– আপনি একটা নাস্তিক! আমি আপনাকে ঘৃণা করি! গাড়ির দরজা খুলুন! খুলুন! আমি চলে যাবো!!

উনি ভ্রু তীব্রসীমায় কুচকে হাতের রিমোটটা প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে বললেন,
– কি বললে তুমি?
– আপনি একটা এ্যাথিস্ট! নাস্তিক! ধর্মত্যাগী! আপনাকে আমি দেখতেও চাইনা! খুলে দিন দরজা! আমি খুলতে বলছি!!

উনি মুখের রঙ পাল্টে ভয়ানক গম্ভীর করে ফেললেন! উনার নিরবতা মানেই বিপদ! ঘোর অন্ধকারময় বিপদ! উনি আমার খুব কাছে এসে বললেন,

– আমার কোন জায়গায় লিখা আছে এই নাস্তিকবাদী কথা? প্রমাণ আছে?

উনার প্রবল কন্ঠে কেঁপে উঠে আমি। পুরো ঘটনা যে রাজিবের কাছ থেকে শোনা সেটা উনাকে কিভাবে বলি? বুকে একটু সাহস জুগিয়ে ধীরভাবে পিছিয়ে যেয়ে বললাম,

– আমি জানি, আমি শুনেছি, আপনি…আপনি একটা খারাপ লোক। ধর্ম বিশ্বাস করেন না।
– আমিও তো সেটাই বলছি কোথায় প্রমাণ!

উনি বলতে বলতে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন কিন্তু আমি পিছাতে পিছাতে গাড়ির দরজার সাথে পিঠ লাগিয়ে চিপসে আছি! উনি এতোটাই কাছে এসেছেন যে এখন উনার নিশ্বাস ডিরেক্ট আমার মুখের উপর পরছে। উনি হাত এগিয়ে আমার গলার কাছ দিয়ে ঢুকিয়ে আবার বলে উঠলেন,

– আমার উপর এতো জঘন্য ওয়ার্ডের মিথ্যাচার কে শুনিয়েছে পূর্ণ?

উপর নিচ হচ্ছে শ্বাস প্রশ্বাস! উনার প্রতিটা কথার মায়াজালে ফেসে পথ হারিয়ে ফেলার মতো উপক্রম। তবে আমার কাছে সত্যি কোনো প্রমাণ নেই পূর্ব একজন নাস্তিক। উনার স্পর্শে হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার উপশম! আমি চোখ বন্ধ করে হাতের তালুতে নখ চেপে মুষ্টিমেয় করে আছি। উনি ঠান্ডা গলায় আস্তে করে বললেন,

– আমার ব্যাপারে সম্পূর্ণ বানোয়াট, বেখাপ্পা, বুনিয়াদহীন মিথ্যা বলেছে পূর্ণ। তুমি কার কথা শুনে আমার কাছ থেকে পালাচ্ছো? চোখ খুলো পূর্ণ।

আচ্ছা? রাজিব কি মিথ্যা বলেছে? কাকে বিশ্বাস করবো আমি? রাজিব কেনো পূর্বের ব্যাপারে শুধুশুধু মিথ্যা বলবে? পূর্ব এদিকে নিজের উপর আখ্যায়িত কথাকে মিথ্যা বলছেন অপরদিকে রাজিবের উপর বিশ্বাস না করে পারছিনা। হঠাৎ মনে হলো, আমার মুখের উপর এখন কোনো নিশ্বাস পড়ছেনা। গলার কাছ থেকে হাতটাও সরানো। আমি ঝট করে চোখ খুলে দেখি উনি সিটে বসে চুপচাপ আমার দিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আজ উনাকে ব্যতিক্রম লাগছে যা এতক্ষন আমি ভয়ের কারনে খেয়াল করিনি। উনাকে বেশিরভাগ টাইম টিশার্ট পড়ুয়া দেখেছি আজ উনি কালো শার্ট গায়ে। কালো প্যান্টের সাথে পায়ে ডিপ ব্রাউন কালারের স্নিকার সুজ। জুতার নিচের সোলটা সাদা। হাতে রেডো এডিশনের ব্রাউন ঘড়ি। শার্টের হাত খানিকটা মোটা করে ফোল্ড করা। কল্পপূর্ণের সুন্দর মানুষটা বাস্তবে এভাবে ‘ড্যাম হ্যান্ডসাম’ হয়ে বসে থাকলে ‘খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে’ টাইপ ফিলিং জাগে। উনি চুপ করে যে আছেন এটা কোনোভাবেই ভুলা যাবেনা ভয়াবহের চেয়ে ব্যাপক ভয়ানক বিপদ উনার থেকে পাওয়ার চান্স স্টিল আছে। আমি দুটো ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে বলে উঠলাম,

– আমার বন্ধু রাজিব বলেছে, মানে ইনফরমেশন পেয়েছে আপনি…আপনি একটা…একটা…

– আমি একটা নাস্তিক? আচ্ছা তুমি এখন চারমাসের প্রেগনেন্ট এই কথাটা যদি রাজিব ছড়িয়ে দিতো কেমন হতো?

– কি বলছেন এগুলো!

– আচ্ছা আমি তো নাস্তিক ঠিকনা? তাহলে অবশ্যই আমি আল কোরআনের প্রেক্ষাপট মানবো না, রাইট? দ্যান আমাকে কিছু কোয়েশ্চ্যান করো যেগুলো আমি সিরিয়াসলি পারবো না। বা যেখানে আমি বেখাপ্পা উত্তর দিলে তুমি আমাকে নাস্তিক ভেবে খুশি থেকো। চলবে?
– আচ্ছা।

আমি মনে মনে খুব এক্সাইটেড ফিল করছি। পূর্বকে আস্তিক ও নাস্তিকের ভিড়ে জেরা করবো বলে অদ্ভুত একটা উত্তেজনাপূর্ণ অন্যরকম ফিল কাজ করছে। আমার নানাভাইয়ের একটা কথা মনে পড়েছে। যেখানে নানাভাই বলেছেন আল কোরআনের কোনো এক সূরায় জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে বেশ তথ্য আছে। একজেক্ট কোন আয়াত সেটা আপাতত সেটা মনে পড়ছেনা। সূরা আনআম ছিলো মেবি। বলে রাখি, নানাভাই ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে বেশ পড়াশোনা করেছেন, যেখানে ইসলামকে পড়েছেন খুটিয়ে খুটিয়ে।

– আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন অর্থাৎ কুরআনুল কারীমে বিজ্ঞান সম্পর্কে তথ্য আছেন বলে আপনি কি সেটা মানেন? বিশ্বাস করেন?

কিন্ঞ্চিত হাসির রেখা উনার ঠোঁটে ফুটেছে। হালকা নড়েচড়ে উনি গলা ঝেড়ে শার্টের কলার একবার ঠিক করলেন। খুব জম্পেশ একটা লেকচার দিবেন মেবি! জানার জন্য মনটা উৎসুক হয়ে আছে!!

– আল কোরআন একটা বই হলেও মনুষ্য তৈরি না। ঠিকআছে? প্রমাণ হলো, সূরা আনআমের ৯৬ নং আয়াতে বলা আছে,

(তিনি) প্রভাত উদ্ভাসক। তিনি বানিয়েছেন রাতকে প্রশান্তি এবং সূর্য ও চন্দ্রকে সময় নিরূপক। এটা সর্বজ্ঞ পরাক্রমশালীর নির্ধারণ।

এটা দ্বারা আমরা কি বুঝি? আমরা বুঝি যে প্রভাত ও রাতের মধ্যে সূর্য ও চন্দ্রের অবদান রয়েছে। সূর্য উঠলে বা সূর্যোদয় হলে আমরা একটি আলোকিত দিন দেখতে পাই যেখানে সূর্যের ভেতর হিলিয়ামের সাথে অন্যান্য পর্দাথের বিক্রিয়ার ফলে তেজস্বী কটমট সূর্যের প্রখতা অনুধাবন করি। এই প্রখরতা যত বেশি হয় তত সময় বাড়তে থাকে। যেমন কড়া দাপুটে রৌদ্র মাথার তালু শুকিয়ে দিলে আমরা বুঝি সময় এখন বারোটা থেকে দুইটা। এবার চন্দ্র বা চাদেঁর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভাবা যাক। রাতে চাদঁ উঠে বা উঠবে এটা চিরন্তন সত্য। রাতের বেলা কখনো সূর্য উঠবেনা আবার দিনের আলোতে কখনো চাদঁ দেখা যাবেনা। রাতের আকাশে চাদঁ স্নিগ্ধ চন্দ্রকিরণ ছড়িয়ে দেয়। আই রিপিট, স্নিগ্ধ কিরন! সূর্যের মতো তেজঃপূর্ণ আলো চাদঁ কখনো দেয়না। অর্থাৎ এটা দ্বারা কি বুঝলে? চাদঁ অবশ্যই স্নিগ্ধ, কোমল, প্রশান্তিময় ঠিক না? চলো ৯৬ নং আয়াতে আবার ফিরি, ‘ তিনি বানিয়েছেন রাতকে প্রশান্তি। ‘ এই লাইনে দেখেছো এটাই কিন্তু বলা আছে, রাত হচ্ছে প্রশান্তি! চাদেঁর আলো বা জোৎস্নার আলো যেটাকে বলি সেটা চারপাশে যত জ্যোতি ছড়িয়ে চলবে রাত তত গভীরে বা ঘন হবে। এখন সূর্যের এই প্রখরতা এবং চন্দ্রের এই স্নিগ্ধতা দিয়ে যে আমরা সময়টা পরিমাপ করি সেটা আল্লাহ্ পাক ১৪০০ বছর আগেই পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘সূর্য ও চন্দ্র সময় নিরূপক।’ বিজ্ঞান কয়েক শতাব্দীর সাধনার পরেও এখনো পরিবর্তনশীল । বাট ১৪০০ বছর পূর্বে পৃথিবীতে নাযিল হওয়া কোরআন শরীফ গ্রন্থে আদৌ একটা হরফ পরিবর্তন হয়নি ইভেন সেটা হবেও না। কোরআন শরীফ সাইন্সকে ডিসক্রাইভ করতে পারে, বাট সাইন্স কোরআনকে ডিসক্রাইভ আদৌ করতে পারবেনা। ইটস ম্যাজিক! নট লজিক! এটাই ধর্ম! এটাই বিশ্বাস।

এম আই ক্লিয়ার পূর্ণ?

আমার অবস্থা এখন ফাটা বাশেঁর চিপা গলিতে ফেসে যাওয়ার মতো হাল! উনি আমার সামনে যেই লেকচার উপস্থাপন করলেন তা আমি নিজেও কখনো যাচাই করে নিখুঁতভাবে পড়িনি। উনি এতোক্ষন লম্বা লেকচার দিলেন অথচ গলা আমার শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে! আমি ঢোক গিলে পূর্বকে বললাম,

– আমি পানি খাবো। দিবেন?

উনি আমার কথা শুনে আরেকটুর জন্য ঠোঁটে ঝলমলে হাসিটা আনলেন না। ইশশ…উনি একবার হাসতো! উনার স্মিত হাসিটা যেই ঘায়েল করে আসল হাসিটা দিলে তো পুরোদস্তুর সমেত ঘায়েল করে ফেলবে! উনি সামনের সিটে ঝুঁকে বোতলটা নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে আগের জায়গামতো বসলেন। আমি বোতলের ক্যাপ খুলে তিন ঢোক পানি গিলে নিজেকে একটু শান্ত করলাম। পূর্ব পকেট থেকে রিমোট বের করে এসির পাওয়ার বাড়াতেই বলে উঠলেন,

– এসির মধ্যেও এভাবে ঘামছো…

রিমোটটা পকেটে ঢুকিয়ে ফের দৃষ্টি তাক করলেন আমার দিকে। ভ্রু দুটো উপরে একবার নাচিয়ে বলে উঠলেন,
– বিশ্বাস হয়েছে?

আমি অটলভাবে চুপচাপ তাকিয়ে আছি। উত্তর দিচ্ছিনা। উনি আমার চুপটি দেখে ক্ষীপ্র গলায় বললেন,

– আল্লাহ্ পাকের কসম আমি নাস্তিক না পূর্ণ।

– রাজিব আপনাকে নিয়ে মিথ্যা কেন বললো?
– ওটা আমি কিভাবে বলবো?
– ও তো মিথ্যা বলা পছন্দ করেনা। রাজিব কেন…
– আমি কিন্তু সেদিনের মতো চলে যাবো!

উনি কথাটুকু শেষ করতেই দুহাত মেলে বলে উঠলেন,

– কাম ফাস্ট পূর্ণ! বুকে আসো প্লিজ। জড়িয়ে ধরো!

‘ চলবে ‘

#FABIYAH_MOMO🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here