শুধু_তোমাকেই_চাই #শারমিন_হোসেন #পর্ব১৬

0
596

#শুধু_তোমাকেই_চাই
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব১৬

“ছেলেটা কে?তুমি যার সাথে বসে এতক্ষণ গল্প করলে তার কথা বলছি।”

কথাটি কানে যেতেই লিয়া চমকে উঠে।ঘাড় ঘুরিয়ে পিছন দিক হয়ে একজন ক্লাস মেট কে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।লিয়া বিড়বিড় করে বলে,,এতো আমাকে পুরাই আ্যটাক করিয়ে ছাড়ছিলো আরেকটু হলেই।আমি ভেবেছিলাম কোনো মিস টিস নয়তো।আমাকে আর স্যারকে একসাথে দেখে সন্দেহ করেনি তো।আর একবার সন্দেহ করলে সোজা গার্ডিয়ান ডেকে রিপোর্ট দিতো।

মেয়েটি খটখট শব্দ করতে করতে লিয়ার কাছে গিয়ে বলে,,”কি হলো চুপ করে আছো যে।না মানে আগে কখনো আসতে দেখেনি।আর তোমার সাথে তো শুধু আন্টি আঙ্কেল ই দেখা করতে আসে তাই বলছি আরকি।”

মেয়েটির কথা শুনে লিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়। চোখে মুখে স্পষ্ট বিরক্ত ভাবটা ফুটে উঠলেও মুখে সেটা প্রকাশ করে না লিয়া।অরিন রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে।তখন লিয়া অরিনকে থামিয়ে দিয়ে বলে,,”আমার টিচার হোন। আমাকে কিছু নোটস দিতে আসছিলেন।”

লিয়ার কথাটা মেয়েটা কতটুকু বিশ্বাস করেছে।সেটা মেয়টার ফেস দেখে বোঝা যাচ্ছে না।টিচার শুনে মেয়েটার ভ্রু যুগল খানিকটা কুঞ্চিত হয়।অবাক গলায় ঠোঁট উল্টে মেয়েটি বলে,,”ওহ্,তাই।আসলে ইয়াং ম্যান তো তাই অন্যকিছু ভেবেছিলাম।থাকো আসি বলে মেয়েটি গটগট করে চলে যায়।

অরিন লিয়ার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,”তুই ওর কথার উত্তর কেনো দিলি,আমি বুঝলাম না। এক কথায় বলে দিলেই হতো।যেই হোক না কেনো তোমার শুনে কাজ টা কি?”

লিয়া যেতে যেতে বলে,,”বাদ দে এসব।”

অরিন ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বলে,,”ঐ শাকচুন্নী কে দেখলেই আমার মেজাজ খা’রাপ হয়।দেখেছিস ওর কথার ধরন,কথা বলে একদম ভাঁজ করে করে।আর হাঁটার স্টাইল দেখেছিস?কিরকম হিলে ঝড় তুলে সাপের মতো এঁকে বেঁকে চলে। ওকে দেখলে আমার মনে হয় আইটেম সং এ ডান্স করতে করতে চলছে।”

অরিনের কথা শুনে লিয়া আর ফিহা শব্দ করে হেসে দেয়।

অরিন পায়ের উপর পা তুলে তখনকার তোলা পিক গুলো দেখছিলো,আর বলছিলো,,ওয়াও লিয়া সত্যি তোর মাস্টার মশাই দেখতে খুবই সুন্দর।তোর সাথে দারুণ মানিয়েছে।”

অরিনের কথা শুনে দৃষ্টি সরু করে অরিনের দিকে তাকিয়ে লিয়া শান্ত গলায় বলে,,”পিক গুলো আমার হটস আ্যপে সেন্ট করে দে।তারপর তোর ফোন থেকে পিক গুলো রিমুভ কর কেমন।”

অরিন বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে অবাক গলায় বলে,,”রিমুভ করতে যাবো কোন দুঃখে শুনি।আর তুই না বললেও পিক গুলো তোর কাছে পাঠিয়ে দিতাম।আর দিতাম কি,অলরেডি দিয়েছি।ফোনটা চেক করে দেখ।”

লিয়া এক হাত দিয়ে মশা তাড়ানোর ভঙ্গিতে মুখের সামনে নাড়িয়ে বলে,,”তোর ফোন থেকে পিক গুলো রিমুভ করতে এইজন্য বলছি।কারন তুই তো আবার চোখ দিয়ে গিলে খেতে পারিস।”

অরিন জিহ্বায় কামুড় দিয়ে বলে,,”তওবা তওবা এটা কি বলছিস তুই।যতই হোক উনি আমার জিজু লাগে।তাই এতোটা বাজে নজর আমার না,হুহ।মাস্টার মশাই তো অলরেডি তোর জন্য বুকড হয়েছে।আমার রুচি এতো খা’রাপ নয় যে সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিসের উপর নজর দিবো।”

লিয়া ঠোঁট চেপে হেসে বলে,,”হুম।ভালো বলেছিস তোদের সহ বাকিদের জন্য সেকেন্ড হ্যান্ড বাট আমার জন্য ফাস্ট হ্যান্ড বা ইনটেক।”

অরিন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে অসহায় ফেস করে দুঃখি দুঃখি গলায় বলে,,”তোদের দুজনকে দেখে আজকে আমার এক্স এর কথা খুব মনে পড়ছে।”

লিয়া আর ফিহা আশ্চর্যিত চোখে ড্যাবড্যাব করে অরিনের দিকে তাকিয়ে গমগমে স্বরে বলে,,”এই তোর এক্স আছে।কই আগে তো কোনোদিন বলিসনি।কবে প্রেম করেছিলি? আর ব্রেকআপ ই বা হলো কিভাবে?”

অরিন খিলখিলিয়ে হেসে গড়গড় করে বলতে থাকে,,”রিলেক্স রিলেক্স,তোরা টেনশন নিস না।সব বলছি ওয়েট। ক্লাস নাইনে থাকতে আমাদের বাসার সামনের ফ্লাট এর এক ছেলে আমাকে প্রপোজ করেছিলো।সম বয়সী ছিলাম।তাই দুজনে তুই তোকারি করেই বলতাম। প্রোপোজ করার সাথে সাথেই আমি একসেপট করে নেই প্রোপোজাল। তিন দিনের মাথায় ব্রেকআপ হয়ে যায়।”

লিয়া হতাশ গলায় বলে,,”মাত্র তিনদিনেই ব্রেকআপ।তা কিজন্য ব্রেকআপ টা হলো শুনি?”

ফিহা আড়চোখে তাকিয়ে মৃদু আওয়াজে বলে,,”তিনদিন পর্যন্ত সম্পর্ক টা গিয়েছিলো এইতো আমার কাছে বেশি মনে হচ্ছে।কারন কোনো সুস্থ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ ওর সাথে এক ঘন্টার বেশি থাকতে পারবেনা।”

“ঐ ফিহা তোকে দেখিয়ে দেবো,হু।আমার ভবিষ্যৎ বর আমার জন্য কতটা পা’গল হয়।আর এক ঘন্টা কেনো ইহকাল সহ পরকালেও আমাকে পাওয়ার জন্য তার প্রতিটি মোনাজাতে আমি থাকব,হুম।”

লিয়া এক্সাইটেড হয়ে বলে,,”সে থাকিস কোনো সমস্যা নেই।এবার বল কিজন্য ব্রেকআপ হয়েছিলো।”

“পড়ন্ত বিকেল,আকাশ টা ঝলমলে ছিলো। আমাদের দুজনের মনটাও ঐ নীল আকাশের মতই ঝলমলে ছিলো। ছাদের রেলিং ঘেঁষে আমি আর নব্য কথিত প্রেমিক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলাম।তখন সে বলেছিলো,আমি শাহজাহান আর তুই আমার মমতাজ।তার কথা শুনে আমি ভ্রু কুঁচকে বলি,তাহলে প্রমাণ দে।তুই যে শাহজাহান এটার প্রমাণ দে।সে বলে কিভাবে?আমি উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলি, শাহজাহান যেমন মমতাজ এর জন্য তাজমহল বানিয়ে সারা পৃথিবীতে ভালোবাসা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।ঠিক তেমনি আমার জন্য একটা তাজমহল বানিয়ে নিজেকে শাহজাহান দাবি কর।আমার কথা শুনে সে বলেছিলো,আগে তুই ম’র।তার এই কথা শুনে আমি সেন্টি খেয়ে বসি। আমি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলি,,হোয়াট? ম’রবো কেনো?তখন সে বলে,না ম’রলে আমি তাজমহল বানাবো কিভাবে।মমতাজ ম’রার পরেই না শাহজাহান তাজমহল বানিয়ে ছিলো।তুই ম’/র তারপর না হয় আমি তোর জন্য স্মৃতি সৌধ টা বানাবো,কি বলিস?তারপর আমি রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলি,তোর সাথে আমার ব্রেকআপ।তুই এখনই আমার মৃ’ত্যু কামনা করিস।আর যাইহোক তোর সাথে রিলেশন রাখা পসিবেল নয়।ব্যাস আমার হয়েও না হওয়া প্রেম টা তিন দিনেই ওখানেই মাটি চাপা দিয়ে চলে আসি।এরপর ঐ ছেলেকে দেখলে একশ গজ দূর দিয়ে হাটতাম।আর তারপর ছয়মাস খানেক পর ওরা বদলি হয়ে যায়।আর কোনো খোঁজখবর ও জানিনা।”

ব্রেকআপ এর কাহিনী শুনে লিয়ার কিছুটা হাসি আবার কিছুটা দুঃখও পাচ্ছে।লিয়া বুঝতে পারছে না কোনটা শো করবে।আপাতত হাসি টা কে চেপে রেখে বলে,,”তুই তাকে এখনো মিস করিস।”

অরিন শব্দ করে হেসে বলে,,”আমি তো ফান করেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলাম।আর ফান করেই সেই ফানময় রিলেশন টার ইতি টেনেছিলাম।তাই মিস করার কোনো প্রশ্নই আসে না।আর বিয়ের আগে এসব রিলেশন টিলেশনে আমি বিশ্বাস করি না সোজা বিয়ে করে নিবো।তারপর সুন্দর মিষ্টি একটা রিলেশন তৈরি করব।”

রাত নয়টা বাজে।লিয়া পড়ছিলো,সেই সময় আন্নাউন নম্বর থেকে কল আসে।কল রিসিভ করে ফোনের ওপাশ থেকে পুরুষালী অপরিচিত কন্ঠ স্বর শুনে লিয়ার নিটোল কপাল খানিকটা কুঞ্চিত হয়।অবাক হয়ে মৃদু আওয়াজে বলে,,”কে বলছেন?”

ফোনের ওপাশ থেকে বেশ শান্ত গলায় বলে,,”আপনি মিস এনাবুল জান্নাত খাঁন লিয়া আ’ম আই রাইট? ”

লিয়া জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বলে,,”জি।বাট আপনি কে?সরি আমি বুঝতে পারছিনা। কাইন্ডলি আপনার পরিচয়টা যদি বলতেন।”

“অফকোর্স।পরিচিত হওয়ার জন্যই ফোন দিয়েছি।আমি হিরোন দেশের রাজকুমার আর আপনি চন্দন দ্বীপের রাজকুমারী।এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন রাজকুমার রাজকুমারীর কি হতে পারে?”

পুরুষালী গলার এরকম রসাত্মকময় কথা শুনে লিয়া অবাক হয় সাথে চোখে মুখে বিস্ময় খেলে যায়। কথাগুলো লিয়ার মাথার উপর দিয়ে যায়।লিয়া তাজ্জব বনে যায়। কিয়ৎক্ষন ভাবে লিয়া,লোকটা আমার নাম বললো, নিশ্চয় আমাকে চেনে।তাই বে’য়াদবি করে কিছু বলা যাবে না।ফোনের ওপাশের ব্যক্তি কে হতে পারে তা ভেবে না পেয়ে লিয়া হালকা কেশে বলে,,

“আপনার মাথা ঠিক আছে তো? আপনি এসব কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।”

ওপাশ থেকে গড়গড় করে বলতে থাকে,,”ওয়েট ম্যাডাম ওয়েট।এতো হাইপার হওয়ার কিছু নেই।পরিচয় নিশ্চয় দেবো।তবে আগে বলবো আপনি গেইজ করুন।আমি আপনার একজন ওয়েল উয়িশার।তো আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তিটা কে হতে পারে একটু ভেবে বলুন তো দেখি।”

লিয়া অনেক ভাবতে থাকে কে হতে পারে।বাট গলার স্বর আর কথা শুনে গেইজ করতে পারছে না। প্রায় টু মিনিট নীরবতা চলে।নীরাবতা ভেঙ্গে ওপাশের ব্যক্তি গলার স্বর খাদে নামিয়ে বলতে থাকে,,”বুঝতে পারছি ম্যাডাম আপনার মনে আমি নেই।তাই আপনি আমাকে চিনতে পারছেন না। আচ্ছা চিনতে পারেননি সেটা বেপার না।তার আগে বলুন আপনার পড়াশোনার কি খবর?কোনো অসুবিধা আছে কিনা?

“আমার কোনো সমস্যা নেই।বাট আপনি কে?”

“আমি এক আশিক।আমার আবেদনের ফাইল আপনার অফিসে জমা দেওয়া হয়েছিলো। আপনার কথা শুনে বুঝতে পারছি আপনি ফাইলটা ওপেন করেননি এখনো।তো এখন কথা হচ্ছে ফাইলটা ওপেন করে আমার আবেদনটা মঞ্জুর করতে আমাকে কি কি করতে হবে।আমার আবেদন অনুমোদন করতে গিয়ে যা যা করা লাগলে আমি তাই ই করবো।এবার বলুন, আপনার কি চাই,হিরের নেকলেস,ম্যারসিডিস বা ক্যারোলা গাড়ি, ফ্লাট যা বলবেন আমি সাথে সাথেই তাই করবো।”

লিয়া কথাগুলো শুনে চরম আশ্চর্যান্বিত হয়।আর ভাবে লোকটা নিশ্চয় নে’শা টেশা করেছে আর নইলে মেন্টাল হবে।তাছাড়া কেউ এরকম বলে নাকি?এই কথাগুলো মনের ভিতরেই রাখে,মুখে আর বলে না।লিয়া কঠোরতা বজায় রেখে বলে,,”আশ্চর্য আপনি আমাকে এসব বলছেন কেনো?আমি বুঝতে পারছি না।আর কিসের ফাইল কি?আমার পড়াশোনাই তো এখনো শেষ হয়নি।আর অফিস আসলো কই থেকে?”

লিয়ার কথা শেষ হতে না হতেই ওপাশ থেকে বেশ ভদ্রভাবে নরম গলায় বলে,,” ম্যাডাম আপনার
কাছে এরকম আবেদন ফাইল আসতেই পারে যেহেতু আপনি সুন্দরী প্লাস ইউনিক।ইউ আর ইউনিক।সো এটা কোনো ব্যাপার না। আপনার চেম্বারে হাজারো ফাইল জমা থাকতেই পারে।তবে কার ফাইল কি হলো না হলো সেটাতে আমার হেডেক নেই।আমি ব্যাস্ত আমার নিজের ফাইল নিয়ে।কিভাবে পাশ করানো যায়।আর আপনার কি চাই?”

“আমার কি চাই না চাই।সেটা আপনার শোনার কোনো প্রয়োজন আছে কি?”

“অবশ্যই আছে।কারণ আপনার কি দরকার আছে নেই। আপনার হাল হাকিকত না শুনলে আমি তো পরকালে দায়ী থাকবো।”

এই লোকের কথা শুনে লিয়ার মাথা খা’রাপ হয়ে যাচ্ছে।আর কোনো প্রকারের সঙ্গা ছাড়াই একে পা’গল উপাধি দিতে ইচ্ছে করছে লিয়ার।কিছু কথা শুনে রাগ আবার কিছু কথা শুনে হাঁসি পাচ্ছে।তবে আপাতত রাগ আর হাসি দুটোকেই বেশ কন্ট্রোলে রাখছে লিয়া। গম্ভীর মুখাবয়ব করে অস্ফুট স্বরে লিয়া বলে,,এই রাজকুমারের আবার পরোকালের ভয়ও আছে দেখছি।তারপর গলা ঝেড়ে বলে,,”আমি তো অনেক গল্প উপন্যাস পড়েছি।সেখানে বেশিরভাগই দেখেছি, রাজকুমার রা ইহকাল নিয়েই মেতে থাকে।তাদের তো পরকালের ভ’য় কমই থাকে।তা আপনি রাজকুমারের মুখে পরকালের কথা শুনে একটু বেশিই অবাক হলাম।এতো ভনিতা বাদ দিয়ে পরিচয় টা দিন আর না হলে আমি এখনই ফোন রাখছি।”

দ্রুত ওপাশ থেকে বলে,,”মিস লিয়া মোটেও আমি ফান করছি না।সত্যি আমি আপনার জন্য দিওয়ানা হয়েছি।আর আপনাকে পাওয়ার জন্য আমি মরিয়া হয়েও উঠেছি। সেইজন্য আগ পিছ না ভেবে হুট করে আপনাকে পাওয়ার জন্য এপ্লিকেশন করি।ব্যাড লাক এপ্লিকেশনটা এখনো লাল ফিতায় বাঁধা পড়ে আছে।আপনি কি করবেন সেটা আপনার ব্যাপার।তবে আপনাকে ছাড়া আমার বাঁচা খুবই মুশকিল।আপনাকে আমি জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চাই।আমার শ্বশুর মশাই আইমিন আপনার বাবা আমাকে নিরাশ করেননি।আমাকে আশার আলো দিয়েছেন।এখন সেই আশার আলোকে প্রস্ফুটিত করতে আপনার সাহায্য প্রয়োজন।আই হেভ হাই হোপ টু ইউ। কথাগুলো যদিও আমি রসিকতার ছলে বলেছি,বাট আপনি বিষয়টা সিরিয়াসলি নিয়েন।”

এতক্ষণে লিয়ার কাছে সবটা পরিষ্কার ফোনের ওপাশের ব্যক্তি টা কে।লিয়ার বুঝতে বাকি থাকে না যে,এটা অভ্র ছাড়া অন্য কেউ নয়।লিয়া দ্রুত বলতে থাকে,,”আমি রাখছি।”

অভ্র কে দ্বিতীয় কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে লিয়া সাথে সাথে ফোন কে’টে দেয়।লিয়ার খুব রাগ হচ্ছে।লিয়ার কাছ থেকে সব কথা শুনে ফিহা নিঃশব্দে হাসছে আর অরিন বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে হাসছে।অরিনের হাসির শব্দে লিয়ার রাগের পারদ টা তরতর করে বাড়তে থাকে।লিয়া ভাবতে থাকে লোকটা ওর ফোন নম্বর যোগাড় করেছে কোথা থেকে।লিয়া অনেক সময় ধরে ভেবে নিয়ে রাজিয়া সুলতানার কাছে ফোন করে। ফোন রিসিভ করে রাজিয়া সুলতানা কোমল গলায় শুধায়,,”লিয়া কেমন আছিস? খাওয়া দাওয়া করেছিস?”

লিয়া কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে।কোনো রকমের ভনিতা ছাড়াই সোজাসুজি স্পষ্টভাবে বলে,,”আম্মু মিস্টার অভ্র আমার কন্ট্রাক্ট নম্বর পেলো কিভাবে?তুমি এ ব্যাপারে কিছু জানো?”

রাজিয়া সুলতানা শান্ত গলায় বলে,,”কেনো? অভ্র ফোন করেছিলো?তোর আব্বুর সাথে না-কি যোগাযোগ করে মাঝে মাঝেই।তোর আব্বুর থেকেই নিয়েছে হয়তো।”

লিয়া চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে কয়েকবার শ্বাস নিয়ে করুণ গলায় বলে,,”আমি তোমার কথা শুনে আশ্চর্য না হয়ে পারছি না।চেনা নাই জানা নেই একটা লোককে আমার পার্সোনাল কন্টাক্ট নম্বর দিয়ে দিলো,স্ট্রেইন্জ।”

“তুই এভাবে বলছিস কেনো?তোর কি করে মনে হলো? তোর আব্বু যার তার কাছে তোর ফোন নম্বর দিবে।আমি শিয়র জানিনা নম্বর তোর আব্বুই দিয়েছে কিনা।
তবে আমি যতটুকু জানি,তোর আব্বু নিজেও খোঁজ নিয়ে দেখেছে।ছেলেটার ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো,ফ্যামেলি স্ট্যাটাস ভালো। সর্বপরি ছেলেটার কথা বার্তা শুনে নাকি যথেষ্ট শান্ত ভদ্র মনে হয়েছে।কেনো ফোন দিয়ে আজে বাজে কিছু বলেছে কি?”

অভ্র এর গুনের কথা শুনে লিয়ার ধৈর্য্যর বাঁধ ভে’ঙে যেতে থাকে।লিয়া কোনো কিছু না ভেবে স্পষ্টভাবে বলে,,”আমি ওতোশত জানিনা।এই ছেলে যেনো নেক্সট আমাকে ফোন করে বি’রক্ত না করে।আজকে ফাইভ মিনিটস কথা বলেই আমার মাথা খা’রাপ করে দিয়েছে। ফারদার আমাকে কল দিলে,আমি কিন্তু সোজাসুজি ওকে ব্লক লিস্টে রেখে দিবো।এখন পর্যন্ত আমার ব্লক লিস্ট ক্লিয়ার আছে।একে দিয়েই মনে হয় শুভ উদ্বোধন করতে হবে।”

রাজিয়া সুলতানা মেয়ের কথা শুনে কি রিয়াকশন করবে,বুঝতে পারছেন না। কিয়ৎক্ষণ ভেবে নিয়ে স্থির দৃষ্টিতে শান্ত গলায় বলে,,”তুই এসব কথা বাদ দিয়ে পড়ালেখায় মনোযোগ দে।”

লিয়া অসহায় ফেস করে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,,”আম্মু তুমি বুঝতে পারছো না।আজকে ফোন কল করেছে।কালকে মিট করতে চাইবে।”

“লিয়া তুই এসব চিন্তা মাথা থেকে ছেড়ে ফেল। মানলাম তোর আব্বু ওদেরকে সরাসরি না করেনি।তার মানে এই নয়যে ফোন দিয়ে কথা বলবে, মিট করতে চাইবে।এসব আমি এলাউ করবো না।আর আমার মনে হয় তোর আব্বু নিজেও এই ব্যাপারে আমাকে সাপোর্ট করবে।আর লিয়া তোর আব্বুর মুখ থেকে অভ্র সম্পর্কে শুনে,আমার অভ্র সম্পর্কে একটা ভালো পজেটিভ দিক তৈরি হয়েছিলো।

মায়ের মুখে অভ্র সম্পর্কে পজেটিভ কথাটা শুনে লিয়ার ইচ্ছে করছে হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে।লিয়া নিজেকে শক্ত করে ধরা গলায় বলে,,”আমি জানতাম এরকমটা হবে।তুমি নিজেও পাল্টি খাবে।এখনই আব্বুর সুরে কথা বলছো ,পরে কি হবে সেটা আমি আর ভাবতে পারছিনা।কোথায় আজকে চিলমুডে থাকার কথা সেখানে মাথা ভর্তি টেনশন।”

রাজিয়া সুলতানা গলা খাঁকারি দিয়ে বলেন,,”আরে আমার পুরো কথাটা আগে শোন।আমি বলছি যে, পজেটিভ ধারণা জন্মে ছিলো।তাই বলে এখনই ফোন দিয়ে বিরক্ত করা এটা আমার কাছে মোটেও ঠিক মনে হচ্ছে না।আর আমি একটু আগেও বলছি, এখন আবার বলছি,তুই মাথা থেকে এসব কিছু ঝেড়ে ফেল।এসব নিয়ে ভাবার সময় এখনো আসেনি।তোর পড়াশুনা কমপ্লিট কর, ততদিনে পর্যন্ত ছেলেটা যদি ওয়েট করেই থাকে।সত্যি যদি তোর জন্য ওয়েট করে,তাহলে নাহয় সেই সময় দেখা যাবে।আর যেহেতু তোর আব্বু নিজেও ওনাদেরকে না করেননি।তখন না হয় এসব নিয়ে ভেবে চিন্তে দেখা যাবে।”

লিয়া চোখ বন্ধ করে ছোট করে শ্বাস নিয়ে কাঁদো কাঁদো ফেস করে অসহায় গলায় বলে,,”ওহ্! আম্মু তুমি বুঝতে কেনো পারছো না।এখন বা যখনই হোক না কেনো এখানে দেখার কোনো বিষয় নেই।এখানে সমস্যা আরেক জায়গায়।”

লিয়ার শেষের কথা শুনে রাজিয়া সুলতানা অবাক হন।অবাকের সুরেই বলেন,,”মানে?লিয়া তুই কি বলতে চাইছিস? খোলাখুলি ভাবে বলে।অন্য জায়গায় সমস্যা মানে।”

লিয়া এবার বিপদে পড়ে যায়।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।লিয়া ভাবে,এখনই কি করে জারিফের কথা বলি।না থাক অন্য কিছু বলে বিষয়টা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি।লিয়া শুকনো ঢোক গিলে নিয়ে বলে,,”নাহ্, আম্মু আমি বলছিলাম যে,আমি এখনই বিয়ে করতে চাচ্ছি না।মূল পয়েন্ট এইটাই।”

রাজিয়া সুলতানা নরম কন্ঠে বলে,,”এখনই তোকে বিয়ে দেওয়ার কথা কে বলছে।তুই অনার্স এ না উঠা অব্দি কখনোই তোর আব্বু বিয়ে দিবে না।তাই বলছি শুধু শুধু রিয়াক্ট না করে মন দিয়ে পড়াশোনা কর। সামনে পরীক্ষা তাই এখন উল্টা পাল্টা ভেবে পড়াশোনায় অমনোযোগী হোস-না প্লিজ।”

লিয়া আর কথা না বাড়িয়ে শান্ত গলায় বলে,,”ঠিক আছে।আমি রাখছি।”

ফোনটা বিছানার উপর রেখে ধপ করে বিছানায় বসে,একহাত কপালে দিয়ে অস্ফুট স্বরে বলে,,”ভেবেছিলাম আজ সকল দুশ্চিন্তা মুক্ত লম্বা একটা শান্তির ঘুম দেবো।আমার শান্তির ঘুমটা অভ্র নামক উজবুক টা মাটি করে দিলো।সারারাতে দুচোখের পাতা আজ বুঝি আর এক হবে না।

কে’টে গিয়েছে আরো দুই সপ্তাহের বেশি।লিয়া ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা শেষ করে কালকে বাসায় এসেছে।এ কয়দিনে জারিফের সাথে লিয়ার হাতে গোনা পাঁচ থেকে ছয় বার কথা হয়েছে ফোনে।

সাদা কাশফুল,শিউলি,আলো ছায়ার খেলা দিনভর,এই সব কিছু বার্তা বাহক হিসেবে আসে শরৎকালের।শরৎকাল কে বলা হয় শুভ্রতার প্রতীক।শরৎকালের স্নিগ্ধতা এক কথায় মনোমুগ্ধকর।শরৎকাল এর আগমন সত্যিই অন্যরকম। ঝকঝকে তকতকে কাঁচের মত স্বচ্ছ আকাশ তার মাঝে সাদা পেঁজা তুলোর মত মেঘমালা।এক কথায় অসাধারণ দৃশ্য। কাশফুলের রাশি অপরুপ শোভা বর্ধন করে শরৎকে। কাশফুলের এই অপরুপ সৌন্দর্য পুলকিত করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।লিউলি ফুলের মন মাতানো গন্ধে পরিবেশটা আরো পুলকিত হয়ে উঠে।শরৎকাল এর আকাশে বৃষ্টি শেষে দেখা মিলে সাত রং এর রংধনু কে।আকাশের বুকে ভেসে উঠে রংধনু। প্রকৃতির এই অপরুপ যেনো প্রতিনিয়ত প্রিয় মানুষটার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।সুন্দর একটা সকাল। সূর্য মামা তার আলো চারিদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।সকালের এক চিলতে রোদ ব্যালকনিতে এসে পড়ছে।ঘড়ির কাঁটা সাতটার ঘর ছুঁই ছুঁই।ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ধোঁয়া উঠা কফির মগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে লিয়া।আর আলতোভাবে মাঝে মাঝে ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে।ফোন টা হাতে নিয়ে জারিফের কাছে কল দেয়।

জারিফ ঘুমাচ্ছিলো।ফোনের শব্দ হওয়ায় একহাত দিয়ে বালিশের পাশ থেকে ফোনটা খুঁজে নিয়ে,চোখের পাতা টেনে তুলে লিয়ার কল দেখে স্মিত হেসে রিসিভ করে ঘুমুঘুম কন্ঠে বলে,,”হ্যা বলো?আজ হঠাৎ এতো সকাল সকাল ফোন দিলে যে।”

লিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,,”সারারাত আমি ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। থেকে থেকেই ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে।ভেবেছি এই বুঝি রাত শেষ হয়ে ভোরের আলো ফুটলো ।আর দিন হলেই আপনার সাথে দেখা হবে সেই এক্সাইটেড এ আমার ঠিকঠাক ঘুম হয়নি।আর এদিকে আপনি নিশ্চিতে এখনো এতবেলা অব্দি ঘুমাচ্ছেন।”

জারিফ লিয়ার কথা শুনে নিঃশব্দে হেসে বলে,,”পরীক্ষা শেষ হয়েছে,এতোদিন তো পড়াশোনা নিয়ে পেশারে ছিলে তাই আজকের রাতটা অন্তত চিলমুডে ঘুম দিয়ে পার করতে পারতে,আমাকে নিয়ে একটু কম ভেবে।”

“আচ্ছা বাদ দেন আপনার ঠেস দেওয়া কথা।এবার বলুন কখন দেখা করছেন?”

জারিফ উঠে বসে সময় দেখে নিয়ে ফাইভ সেকেন্ড ভেবে বলে,,”আমি আপাতত সব সময়ই ফ্রি আছি।তাই তুমি বলো সময়টা।”

লিয়া কিছুক্ষণ ঠোঁট কামড়ে ধরে ভেবে বলে,,”বাইরে যাওয়ার জন্য তো আম্মুর থেকে পারমিশন নিতে হবে। সম্ভবত বিকেল ছাড়া হবে না। আচ্ছা এবার জায়গার নাম সিলেক্ট আপনি করুন।”

“গাঙ্গিনাপাড়ের কফিশপে।”
“উঁহু। এরচেয়ে বরং ভালো হয়, সার্কিট হাউসের পাশে যে পার্ক আছে ঐটায়।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
“বাই।”

বিকেলের দিকে রাজিয়া সুলতানা কিচেনে ছিলেন।মেয়ে অনেকদিন পর বাসায় আসছে সেই জন্য এটা সেটা রান্না করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।এক পা দু পা করে লিয়া কিচেনে গিয়ে কেবিনেট এর উপর বসে মৃদু কন্ঠে বলে,,”আম্মু বলছিলাম কি আমার কিছু শপিং করা লাগবে।”

রাজিয়া সুলতানা কাজ করতে করতেই বলে,,”আচ্ছা ঠিক আছে।কালকে যাবো,আজকে হবে না।”

লিয়া যেনো এই কথাটিরই অপেক্ষা করছিলো। কাংখিত কথাটা শুনতে পেয়ে লিয়ার চোখ মুখ খুশিতে চকচক করতে থাকে।এরপর লিয়া আসল উদ্দেশ্য টা পূরণ করার জন্য দ্বিতীয় স্টেপে যায়।লিয়া জিহ্বা দিয়ে ঢুক গিলে নিয়ে বলে,,”আম্মু বলছিলাম যে,সমস্যা নেই তুমি কাজ করো।আমি অরিন কে ডেকে নিয়ে ওর সাথে যাচ্ছি।”

লিয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে লিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,”লিয়া খুব জরুরী যে আজকেই যেতে হবে।না তুই তো একা কখনো শপিং এ যাওয়ার কথা বলিস না।আমার সাথেই তো সব সময় যাস তাই বলছি।”

লিয়া শুকনো ঢুক গিলে নিয়ে হালকা হাসার চেষ্টা করে বলে,,”সত্যি বলতে অনেকদিন ঘোরাঘুরিও হয়না তো, এখন একটু ঘুরতে ইচ্ছে হচ্ছিলো।তাই ভাবলাম কিছু কিনে আনি আর ঘুরেও আসি।”

“আচ্ছা ঠিক আছে,তবে সন্ধ্যার আগেই যেনো চলে আসা হয়।”

“থেংকিউ আম্মু।”

লিয়া রুমে গিয়ে রেডি হয়ে নেয়।কলাপাতা কালারের উপর মিষ্টি কালারের ফুলের একটা সুতি থ্রি পিচ পড়ে নেয়। চুলগুলো খোলা রাখে, ঠোঁটে মিষ্টি কালারের লিপবাম দেয়।বাসা থেকে বের হওয়ার সময় জারিফের কাছে ছোট্ট করে মেসেজ দেয়।

সার্কিট হাউসের পাশের পার্ক টায় গিয়ে দেখে নিরিবিলি একপাশে একটু ফাঁকা জায়গায় বসে জারিফ ফোন স্ক্রল করছে। পড়নে কফি কালারের টিশার্ট আর অফ হোয়াইট কালারের গ্যাভার্ডিং।লিয়া ধীর পায়ে হেঁটে নিঃশব্দে গিয়ে দূরত্ব রেখে জারিফের পাশে বসে।জারিফ ফোন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে লিয়ার দিকে তাকিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে,,”বাসায় কি বলে আসছো?”

লিয়া জারিফের এরকম প্রশ্নে বিরক্ত বোধ করে।কারণ মিথ্যে বলে আসছে,এখন সেই মিথ্যে টা আবার নাকি জারিফের কাছে বলতে হবে। লিয়া প্রশ্ন টা এড়িয়ে গিয়ে বলে,,”আপনি কখন আসছেন?”

জারিফ ফোন স্ক্রল করতে করতে বলে,,”এইতো ফাইভ মিনিটস হবে হয়তো।তা তোমার পরীক্ষা কেমন হয়েছে?”

লিয়া এক কথায় বলে,,”ভালো।”

জারিফ ফোন স্ক্রল করতে থাকে,লিয়া আড়চোখে জারিফকে দেখতে থাকে। কিছুক্ষণ দু’জনের মধ্যে নীরাবতা চলে। নীরাবতা ভেঙ্গে লিয়া বলে,,”আপনি কি কিছু বলবেন?না ফোনেই মুখ গুজে থাকবেন।এই ফোনেই যদি মুখ ডুবিয়ে থাকেন,তাহলে দেখা করতে আসছেন কেনো, অদ্ভুত।”

লিয়ার কথা শুনে জারিফ মুচকে হেসে লিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,”আসলে তোমার দিকে তাকালে নিষিদ্ধ কিছু ইচ্ছে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে,তাই নিজেকে কন্ট্রোল করার জন্য ফোনটা খুব উপকার করছে।”

লিয়া অস্ফুট স্বরে বলে,,”তাহলে না এসে বরং ডোর লক করে দিয়ে রুমেই ঘুমিয়ে থাকতেন।”

জারিফ সফট ভয়েজে বলে,,”শুধু ডোর কেনো উইন্ডোও লকড করে রুমে থাকতাম যদি পাশে তুমি থাকতে।”

জারিফের কথা শুনে লিয়া মাথা নিচু করে ফেলে।তারপর ঠোঁট কামড়ে ধরে মৃদু কন্ঠে বলে,,”মাস্টার মশাই তো দেখছি স্লেইমলেস কথা বলা শুরু করে দিয়েছে।”

জারিফ ফোনটা পকেটে পুরে।লিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,”এরকম করে বলোনা, প্লিজ।তোমার মুখ থেকে এই মাস্টার মশাই কথাটা শুনলে আমার কাছে মনে হয়,আমার নিজের বয়সটা একলাফে দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।”

জারিফের কথা শুনে লিয়া ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসে।তারপর গমগমে কন্ঠে বলে,,”এই আপনার বয়স কতো বলুন তো?”
“টুয়েন্টি ফোর সামথিং।”

লিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,,”আমার থেকে আপনি গুণে গুণে সাত বছরের বড়।”

জারিফ কিছুটা ভাব নিয়ে বলে,,”পারফেক্ট ম্যাচ।তোমার বর হওয়ার জন্য একদম পারফেক্ট।কি বলো তুমি?”

লিয়াও ভাব নিয়ে বলে,,”আই নো। পারফেক্ট হতেই হতো,কারণ এনাবুল জান্নাত খাঁন লিয়া নিজে চুজ করেছে।

[চলবে…ইন শা আল্লাহ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here