ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞 #লেখিকা-Mehruma Nurr #পর্ব-২৫

0
1050

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-২৫

★ সবাই বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছে সাইকেলিং করার জন্য। একটু পরে কিছু লোক এসে ছয়টা ব্রান্ড নিও সাইকেল দিয়ে গেল। নূরের সাথে বাকি সবাইও অনেক এক্সাইটেড সাইকেল দেখে তানি আর সানা দৌড়ে যেয়ে নিজেদের সাইকেল সিলেক্ট করে নিল। আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…তুমিও যাও তোমার সাইকেল সিলেক্ট করো।

নূর মুচকি হেসে মাথা ঝাকিয়ে সাইকেলের কাছে গেল। ওর অনেক আনন্দ লাগছে। আজ অনেকদিন পরে সাইকেল চালাবে।

এক এক করে সবাই যার যার সাইকেল সিলেক্ট করে নিল। আদিত্য সবার উদ্দেশ্যে বললো।
…ওঁকে দেন। লেটস স্টার্ট দা রেস। ওয়ান, টু, থ্রি বলেই সবাই সাইকেলিং শুরু করে দিল।

সবাই খুব হাসি খুশি ভাবেই সাইকেলিং করছে। ফার্মহাউসের আশেপাশের এলাকা সবই আদিত্যদের। তাই এইদিকে বাইরের মানুষ তেমন আসে না। চারিদিকে শুধু নানারকমের গাছগাছালিতে ঘেরা। মাঝখান দিয়ে রাস্তা। খুব সুন্দর নির্জন আর নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশ। এমন একটা জায়গায় সময় কাটাতে নূরের খুব ভালো লাগছে। ওর কখনো বাড়ি আর স্কুল ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। এই প্রথম এত সুন্দর একটা জায়গায় এসে নূরের মনটা ভরে উঠছে। ইচ্ছে করছে এখানেই সারা জীবন থেকে যেতে।

সাইকেলিং করতে করতে ওরা অনেকটা দূরে চলে এসেছে। আদিত্য বলে উঠলো।
….আর বেশি দূর যাওয়া যাবে না। নাহলে ফিরতে দেরি হয়ে যাবে।
কিছুটা দূরে রাস্তার মাঝে থাকা স্পিড ব্রেকার দেখিয়ে বললো।
…ওইযে স্পিড ব্রেকারটা দেখছো ওইখানে যে আগে পৌঁছাবে সেই উইনার হবে। তারপর আমরা ওখান থেকেই ব্যাক করবো।

আদিত্যের কথামতো সবাই ফাস্ট হওয়ার জন্য যে যার আগে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তানি আবিরের সাথে পেরে উঠছে না। তাই মনে মনে দুষ্টু বুদ্ধি পাকালো।আবিরের দিকে তাকিয়ে ন্যাকামির স্বরে বললো।
…আবিইইর শোনোওওনা।

তানির এমন মধুর ডাকে আবির দাঁত কেলিয়ে বললো।
…হ্যাঁ হ্যাঁ বলোনা, কিউটি।

আবির তানির দিকে তাকাতেই তানি নিজের ঠোঁট দুটো চোখাঁ করে চুমু দেখালো।
আবির বেচারা শক খেয়ে ওখানেই থেমে গেল সাইকেল নিয়ে। আর তানি দুষ্টু হেসে আবিরের আগে চলে গেলো। আবির দাড়িয়ে বোকা বনে গেল।

তানির এসব কাজ দেখে সানার মাথায়ও একই বুদ্ধি আসলো।সানা তাসিরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…তাসির ভাইয়া।

সানার ডাকে তাসির সানার দিকে তাকিয়ে বললো।
…হ্যা বলো

তাসির তাকাতেই সানা দুষ্টু হেসে একটা চোখ মেরে দিলো।
সানার এহেন কাজে তাসির বড়সড় একটা শক খেয়ে সাইকেলের ব্যালেন্স না রাখতে পেরে সাইকেল নিয়ে পরে গেল।
আর সানা হাসতে হাসতে তাসিরের আগে চলে গেলো।

আদিত্য ইচ্ছা করেই সাইকেল স্লো চালাচ্ছে। যাতে নূর আগে যায়।
এখন সামনে শুধু মেয়েরা আছে। নূর সবার আগে। এবং শেষমেশ নূরই জিতে যায়। নূর সাইকেল থামিয়ে বলে উঠলো।
…ইয়েএএএ আমি জিতে গেছি।

তানি আর সানা এসে হাসি মুখে নূরকে জড়িয়ে ধরে বললো।
…কংগ্রাচুলেশন ইয়ার। তুই জিতে গেছিস।
নূরও হেসে দিয়ে বললো।
…থ্যাংক্স।

আদিত্য সাইকেল থামিয়ে, ঠোঁটে তৃপ্তির হাসি নিয়ে নূরের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নূরকে এমন হাসি খুশি আর প্রাণ চঞ্চল দেখে আদিত্যের মনটাও খুশিতে ভরে উঠছে। নূরের খুশির
জন্যই তো ও এসব করেছে। নূরের ডাইরিতে আদিত্য পড়েছিলো যে নূরের সাইকেল চালানো খুব পছন্দ। তাইতো এই সাইকেলিং এর ব্যবস্থা করেছে আদিত্য ।
তোমার মুখের এই হাসির জন্য আমি সব করতে রাজি নূরপাখি।

একটু পরে সবাই আবার ব্যাক করলো। কিছুদূর আসতেই হঠাৎ নূরের সাইকেলের নিচে লোহা জাতীয় কিছু একটা পরায়, নূরের সাইকেলের টায়ার পানচার হয়ে যায়। নূর একটু ঘাবড়ে যেয়ে সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে পরে।

নূরের দাঁড়িয়ে পরা দেখে আদিত্য ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো।
…কি হয়েছে দাঁড়িয়ে পরলে কেন?

নূর অসহায় মুখ করে বললো।
… কি জানি? হঠাৎ কিভাবে যেন সাইকেলের টায়ার পানচার হয়ে গেলো?

আদিত্য নিজের সাইকেল থেকে নেমে নূরের সাইকেলের কাছে গেল। নিচে বসে চেক করে দেখলো, সত্যিই টায়ার পানচার হয়ে গেছে। আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে একটু চিন্তার সুরে বললো।
…হুম। টায়ারতো সত্যিই পানচার হয়ে গেছে।

নূর আদিত্যের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বললো ।
…তাহলে আমি এখন যাবো কি করে?

আদিত্য কিছু একটা ভেবে বললো।
… এক কাজ করো।এটা এখানেই ছেড়ে দেও। আর তুমি আমার সাথে আমার সাইকেলে চলো।

নূর একটু ইতস্তত ভাবে বললো।
…আ আ আপনার সাথে?

…হ্যাঁ। তাছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই।বাকিরা তো সবাই অনেকক্ষানি এগিয়ে গেছে । তোমার কি আমার সাথে যেতে সমস্যা হবে?

নূর মাথা নিচু করে ঝাকালো। মানে না, সমস্যা হবে না।

আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
…তাহলে চলো।

নূর বললো।
….তাহলে এই সাইকেলটার কি হবে?

…চিন্তা করোনা আমার লোকেরা এসে নিয়ে যাবে। এখন চলো।

নূর মাথা ঝাকিয়ে আদিত্যের সাথে ওর সাইকেলের কাছে গেল। আদিত্য বললো।
…তুমি সামনে বসো।

আদিত্যের কথামতো নূর দুই পা একপাশে ঝুলিয়ে দুই হাত দিয়ে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরে সামনে উঠে বসলো। নূর বসার পর আদিত্যও নূরের পেছনে সিটে উঠে বসলো। তারপর নূরের দুই পাশ দিয়ে দুই হাত নিয়ে হ্যান্ডেল ধরে চালাতে শুরু করলো।
আদিত্যের এতো কাছে থাকায় নূরের ভেতরে লজ্জা আর ভালো লাগা মিশ্রিত এক অদ্ভুত অনূভুতি হচ্ছে। বুকের ভেতর জোরে জোরে ধুকধুক করছে। নূর মনে মনে ভাবছে আচ্ছা, আমারতো ইচ্ছা ছিল আমার স্বপ্নের রাজকুমারের সাথে এভাবে একসাথে সাইকেলে ঘুরবো। তাহলে কি উনিই আমার সেই স্বপ্নের রাজকুমার? সেই সাদা ঘোড়ায় চড়া রাজকুমার? কথাটা ভাবতেই নূরের চোখ মুখ খুশিতে চকচক করে উঠলো। নিচের ঠোঁট কামড়ে লাজুক হাসলো।

নূরকে এতো কাছে পেয়ে আদিত্য আবারও নূরের মোহে ডুবে যাচ্ছে। নূরের শরীর থেকে আসা সেই মিষ্টি ঘ্রাণটা আদিত্যকে আরো বিমোহিত করে দিচ্ছে। বাতাসের কারণে নূরের সামনের কিছু চুল উড়ে ওড়নার বাইরে বেড়িয়ে আসছে। আর সেটা আদিত্যের মুখে বাড়ি খাচ্ছে। আদিত্য আবেসে চোখ বন্ধ করে নূরের চুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে। আদিত্য ক্রমশ নূরের নেশায় আসক্ত হয়ে পরছে। ধীরে ধীরে নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছে। আদিত্যের ইচ্ছে করছে সময়টাকে এখানেই থামিয়ে দিতে। এভাবেই নূরের সাথে জনম জনম ধরে একসাথে থাকতে।
——————————————

একটু পরে সবাই আবার ফার্মহাউসে ফিরে আসে। ভেতরে ঢুকে সবাই সোফায় বসে পরে।সাইকেলিং করে সবাই হালকা টায়ার্ড হয়ে গেছে। আদিত্য সবার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো।
…লাঞ্চে সবাই কে কি খাবে বলো।আমি অর্ডার দিয়ে দিচ্ছি। এটা যেহেতু শহর থেকে কিছুটা দূরে। তাই খাবার আসতে সময় লাগবে। এইজন্য একটু আগেই অর্ডার করতে হবে।

আবির বাঁকা হেসে মনে মনে ভাবলো। তখন আমাদের সাথে চিটিং করেছিলে নাহ? এখন দেখাচ্ছি মজা । আবির তাসিরের দিকে চোখ টিপ দিয়ে বুঝালো ব্যাপারটা। তারপর আদিত্যের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো।
…ভাই এতগুলো মেয়ে মানুষ থাকতে আমরা বাইরের থেকে কেন খাবার অর্ডার করবো। ওদের বলো ওড়াই রান্না করবে। কিচেনেতো সবকিছু আছেই।

তাসিরও আবিরের ইশারা বুঝতে পেরে ওর সাথে তাল মিলিয়ে বললো।
… হ্যাঁ আদি ও ঠিকই বলেছে। সবসময় বাইরের খাবার ভালো লাগে না। মেয়েদের বললে ওরা নিশ্চয় না করবেনা? বাঁকা হেসে আরচোখে সানার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো তাসির।

সানা আর তানি রাগী চোখে আবির আর তাসিরের দিকে তাকালো। ওরা ভালোই বুঝতে পারছে যে এরা বদলা নেওয়ার জন্যই এসব করছে।

আবির একটু ধমকের সুরে বললো।
….কি বলছিস এসব?ওরা এখানকার মেহমান। আর ওদের দিয়ে আমি কাজ করাবো? এটা কেমন কথা।

আবির বললো।
…মেহমান কোথায়? এরাতো সব নিজেদেরই লোক। একটা আমার বোন।একটা আমার হবু বউ। আর একটা আমার ভাব,,,আই মিন আমার হবু শালিকা। এখানেতো সব আমরা
আমরাই তাইনা?
তারপর তানির দিকে তাকিয়ে আবার বললো।
….আমিওতো দেখতে চাই। ভবিষ্যতে আমার কপালে কেমন খাবার জুটবে?

তানি চোখ গরম করে তাকালো আবিরের দিকে।

সানাও রাগ দেখিয়ে বললো।
…ভাইয়া আমি রান্না করতে পারিনা সেটা তুই জানিস না?

এতক্ষণে নূর বলে উঠলো।
….সমস্যা নেই। আপনারা বলুন কি খাবেন? আমি রান্না করে দিচ্ছি।

আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…না না তোমার কষ্ট করতে হবে না। ওদের কথা বাদ দেও । আমি খাবার অর্ডার করে দিচ্ছি।

…আমার কোনো সমস্যা হবে না। আপনারা শুধু বলুন কি খাবেন?

তানি বলে উঠলো।
… হ্যাঁ ভাইয়া নূর অনেক ভালো রান্না করতে পারে। স্পেশালি ওর বিরিয়ানি রান্নাটা সেই মজা হয়।

আবির উৎসাহ নিয়ে বললো।
…ব্যাচ তাহলে তো আর কথায় নেই। এখন তো নূরের হাতের বিরিয়ানি না খেলে চলবেই না।

সবার চাপাচাপিতে আদিত্যও আর না করতে পারে না। আদিত্য সানার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো।
…ঠিক আছে। তবে নূরকে তোরা সবাই হেল্প করবি।

নূর বললো।
…তার দরকার নেই। আমাকে শুধু কোথায় কি আছে তা দেখিয়ে দিলেই চলবে।

আদিত্য বললো।
…ঠিক আছে চলো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।

তারপর ওরা দুজন কিচেনে গেল। আদিত্য নূরকে সবকিছু দেখিয়ে দিচ্ছে। নূর রান্না শুরু করলে আদিত্য ওকে টুকটাক হেল্প করছে।

তানি আবিরের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে ওখান থেকে উঠে গেলো।
আবির মনে মনে ভাবলো, আজ তোর খবর আছে ভাই। শুধু শুধু কেন খ্যাপাতে গেলি? এখন বোঝ ঠেলা? আবিরও উঠে গেলো তানির পিছে ওর রাগ ভাঙানোর জন্য।

সানা তাকিয়ে তাকিয়ে আদিত্য আর নূরকে দেখছে।
তাসির সানার দিকে তাকিয়ে বললো।
…কি দেখছো এভাবে?

তাসিরের কথায় সানা তাসিরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো।
… নূর আর ভাইয়াকে দেখছি। ভাইয়াকে আমি এর আগে এতো হাসি খুশি প্রাণবন্ত কখনো দেখিনি। ওদের একসাথে কতো সুন্দর মানিয়েছে তাইনা?

তাসির মুচকি হেসে বললো।
…হুম।

…নূর আপু কতো সুন্দর দেখতে। ইশশ আমিও যদি ওরকম সুন্দর হোতাম।

সানার কথা শুনে তাসির ভ্রু কুঁচকে আনমনেই বলে উঠলো ।
…কে বলেছে তুমি সুন্দর না? তুমিও অনেক সুন্দর।

সানা তাচ্ছিল্যের সুরে বললো।
…কিজে বলেননা? আমি আর সুন্দর? আমার মত শ্যামলা চেহারার নাক বোচা মেয়েকে আপনার সুন্দর মনে হয়?

তাসির নিজের অজান্তেই বলে উঠলো।
… শুধু ফর্সা মেয়েরাই সুন্দর হয় না। শ্যামলা মেয়েরা দেখতে আরো বেশি সুন্দর হয়। তাদের চেহারায় আলাদা একটা মায়া থাকে। আর তোমাকে এই বুচি নাকে আরো বেশি কিউট লাগে তাকি জানো? নিজেকে কখনো কারোর থেকে ছোট মনে করবে না। আমার চোখেতো তুমি দুনিয়ায় সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।

তাসিরের কথায় সানা সন্দেহের নজরে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

তাসিরের এতক্ষণে হুঁশ আসে ও কি বলে ফেলেছে। শিট্ আবেগের বসে এসব কি বলে ফেললাম। এখন যদি সানা সব বুঝতে পারে তখন? এসব ভেবে তাসির আমতা আমতা করে বললো।
…আমি একটু বাইরে থেকে আসছি। বলেই তাসির তড়িঘড়ি করে ওখান থেকে উঠে গেলো।

তাসির চলে যেতেই সানা বাঁকা হেসে মনে মনে বললো।
…তারমানে আমার সন্দেহই ঠিক ছিল। আপনার উপর আমার আগে থেকেই সন্দেহ ছিল। আপনি যখন আমার দিকে তাকাতেন। তখন আপনার চাহনিতে আমি অন্য কিছু দেখতে পেতাম। আপনার চোখ অন্য কিছু বলতো। যেটা আমি বুঝতে পারতাম। কিন্তু আমি শিওর ছিলাম না।তবে আজ আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর হয়ে গেছ যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন। ছেলেটা একটু বোরিং,তবে ব্যাপার না চলবে। তো মিষ্টার তাসির, তৈরি হয়ে যান আমার জালওয়া দেখার জন্য। এসব ভেবেই সানা রহস্যময় হাসি দিল।

একটু পরে আবির এসে তাসির আর আদিত্যকে ডাকতে লাগলো।

তাসির এসে বললো।
…কি হয়েছে এভাবে চিল্লাছিস কেন?

…ইয়ার আর কতক্ষণ বসে থাকবো। আমরা পুলে কখন নামবো?

ওদের কথার মাঝে আদিত্য চলে এলো।আদিত্যকে দেখে আবির দুষ্টু হেসে বললো।
…কি ব্যাপার আজ কি কিচেনে বিনামূল্যে চাওল বিতরণ করছে নাকি, যে তুই ওখান থেকে সরছিসিই না।

আদিত্য দাঁত কিড়মিড় করে বললো।
…সাট আপ ইডিয়ট।

আবিরের কথায় তাসির একটু হাসলো। তারপর আদিত্যর দিকে তাকিয়ে সিরিয়াস হয়ে বললো।
…বায়দা ওয়ে আজতো ভালো সুযোগ আছে। নূরকে তোর মনের কথাটা বলে দে।

আদিত্য বললো।
… না আজ না। আমি চাই নূর আমার সাথে আরেকটু ফ্রী হোক। তাই আজকের দিনটা ও ইনজয় করুক। আমার সাথে সময় কাটাক।এভাবে ও আমার সাথে ফ্রী হয়ে যাবে। ভাবছি পরশু দিন নবীন বরন উৎসব আছে। ওইদিনই ওকে বলবো সবকিছু।

তাসির মুচকি হেসে বললো।
…ঠিক আছে তুই যা ভালো মনে করিস। এখন চল এই আবিরের বাতিক আগে পুরোন করি।

আদিত্য হেসে উঠে বললো।
…হুম চল।

তারপর ওরা তিনজন সুইমিং পুলের দিকে গেল।

নূর রান্না শেষ করে বেড়িয়ে আসতেই সানা ওকে ধরে উৎসাহ নিয়ে বললো।
…নূর আপু চলো আমরা ছাদ থেকে ঘুরে আসি। ছাদ থেকে চারিদিকে অনেক কিছু দেখা যায়। অনেক সুন্দর লাগে।

নূর মুচকি হেসে বললো।
…ঠিক আছে চলো।

নূর তানি আর সানা ছাদে উঠে গেলো। নূর মুগ্ধ হয়ে চারিদিকে দেখতে লাগলো। জায়গাটা সত্যিই অপূর্ব।যতো দেখি ততই ভালো লাগে। ছাদের চারিদিকে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ ওরা নিচে সুইমিং পুলের দিকে তাকালো।

ছেলেরা তিনজনই থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট আর হাতা কাটা টিশার্ট পরেছে । একটু পরে আবির যেয়ে সাউন্ড বক্সে গান প্লে করলো।

♬ ♬ জিনেকে হে চারদিন
হোওও ও ও ও ও ও
বাকিহে বেকার দিন
৷ হোওও ও ও ও ও ও
যায়ে যায়ে, যায়ে যায়ে
এক বার যো যায়ে
জওয়ানি ফির না আয়ে
হে হে জওয়ানি ফির না আয়ে♬

গানের তালে আবির আর তাসির তোয়ালে দুই পায়ের মাঝে নিয়ে সালমান খানের স্টেপ করছে আর উড়াধুড়া ডান্স করছে।

ওরা তিনজন ছাদের ওপর থেকে এসব দেখে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here