#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-২০
★নূর মাত্রই ক্যাম্পাসে এসেছে। মাঠের কোনায় একটা গাছের নিচে তানির সাথে বসে কথা বলছে।
ওদের থেকে কিছুটা দূরে আদিত্য,আবির আর তাসিরের দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আদিত্য কথা বলার ফাঁকে বারবার নূরের দিকে তাকাচ্ছে।
নূরও আরচোখে আদিত্যের দিকে তাকাচ্ছে।
হঠাৎ কোথাথেকে একটা মেয়ে দৌড়ে এসে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো।
….আদি বেবি আই মিস ইউ সোওওও মাচ্।কেমন আছো তুমি?
হঠাৎ এমন হওয়ায় সবাই হতভম্ব হয়ে গেলো।
নূরের মনের ভেতর যেন ঝড় বয়ে গেলো এসব দেখে। কেমন অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেল।
আদিত্য একবার নূরের দিকে তাকালো তারপর জড়িয়ে ধরা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে চরম বিরক্তি আর রাগ নিয়ে মেয়েটাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে রাগী স্বরে বললো।
….এ্যানি, তোমাকে কতবার বলেছি আমাকে কেউ টাচ করুক সেটা আমার একদম পছন্দ না। আর এসব কি ধরনের নাম বেবি? আমি কি কোনো বাচ্চা নাকি? ডোন্ট কল মি উইথ দ্যাট নেম। এতো বলি তাও বারবার কেন ভুলে যাও তুমি?
….সরি আদি । আসলে অনেক দিন পরে তোমাকে দেখছিতো তাই একটু এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। জানো সুইজারল্যান্ডে যেয়ে তোমাকে আমি অনেক মিস করেছি। তাইতো বাপিকে বলে তাড়াতাড়ি টুর শেষ করে চলে এসেছি।
আবির জোরপূর্বক হাসি দিয়ে বললো।
….কি দরকার ছিল এতো তাড়াহুড়ো করার? বেচারা সুইজারল্যান্ডতো তোমাকে ছাড়া একলা হয়ে গেলো তাইনা?তুমি ওখানেই কেন সেটেল হয়ে গেলে না?বেচারা সুইজারল্যান্ডও খুশি হয়ে যেতো।
তারপর বিড়বিড় করে বললো।
…আর আমাদেরও জান ছুটতো তোমার থেকে।
এ্যানি আবিরের কথাটা নিজের কমপ্লিমেন্টি হিসেবে নিয়ে হেসে দিয়ে বললো।
…আবির তুমিও না, সবসময় শুধু ফান নিয়ে থাকো।
নূর আর তানি ওদের দিকে ভ্রু কুঁচকে চেয়ে সবকিছু দেখছে। ওরা কি বলছে তা শোনা যাচ্ছে না। তবে ওদের ভাবভঙ্গিমায় বোঝা যাচ্ছে যে মেয়েটা ওদের পরিচিত। নূর এ্যানির দিকে খেয়াল করে দেখলো। গায়ে একটা স্লিভলেস টাইট টিশার্ট, যার নিচ দিয়ে পেট দেখা যাচ্ছে। পড়নে একটা টাইট জিন্স। চুলগুলো ছোট ছোট করে কেটে কালার করেছে। মুখে রাজ্যের যতো মেকআপ আছে সব ঢেলে দিয়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা মাত্রাতিরিক্ত মডার্ন।কেমন উনার গায়ে হাত দিয়ে হেসে হেসে কথা বলছে মেয়েটা। কে এই মেয়েটা? আর উনার সাথেই বা কি সম্পর্ক? এসব ভেবে আদিত্যের উপর কেমন যেন রাগ হতে শুরু করে নূরের। নূর আর বসে থাকতে পারে না। তানিকে বলে।
…চল ক্লাসে যাই।
তানি বুঝতে পারছে নূরের এসব দেখে ভালো লাগছে না। তানি নূরকে আরেকটু বাজিয়ে দেখার জন্য বললো।
….ক্লাসতো এখনো দেরি আছে। এখনি যেয়ে কি করবো? বায় দা মেঠোপথ, তুই কি ওই মেয়েটাকে আদিত্য ভাইয়ার সাথে দেখে জেলাস হচ্ছিস?
তানির কথায় নূর একটু থতমত খেয়ে বললো।
… এ এএমন কিছুই না। আমি কেন জেলাস হতে যাবো? উনার লাইফ উনি যার সাথে খুশি তার সাথে মিশতে পারেন। আমি বলার কে?
নূরের কথায় স্পষ্ট রাগ আর অভিমান দেখতে পাচ্ছে তানি। ও মুচকি হেসে বললো।
….আচ্ছা আচ্ছা, রাগছিস কেন চল ক্লাসে যাই।
নূর একপলক আদিত্যের দিকে তাকালো তারপর হনহন করতে করতে ক্লাসে চলে গেলো।
আদিত্য এ্যানিকে বললো।
….এ্যানি আমার ক্লাসে লেট হয়ে যাচ্ছে আমি যাই তোমার সাথে পরে কথা বলবো। বায়।
কথাটা বলেই কোনরকমে ওখান থেকে কেটে পড়লো আদিত্য।
যেতে যেতে তাসির আদিত্যকে বললো।
….তুই কেন শুধু শুধু এই ছাগল মেয়েটাকে সহ্য করিস আমি বুঝি না। আর সবার মতো এটাকেও শায়েস্তা করলেই পারিস।তাহলে আর কখনো তোর সামনে আসবে না।
আদিত্য একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো।
….কারণ শুধু একটাই,এ্যানির বাবা আমার বাবার অনেক ভালো বন্ধু। আমি যদি ওর সাথে রুড বিহেব করি আর সেটা নিয়ে এ্যানির বাবা যদি আমার বাবাকে কিছু বলেন, তখন বাবাকে তার বন্ধুর সামনে ছোট হতে হবে। যেটা আমি কখোনই মানতে পারবো না। এমন না যে আমি কাউকে ভয় পাই।তবে আমি কখনও চাই না আমার জন্য আমার বাবা কারোর কাছে ছোট হোক। তাই এই মেয়েটাকে আমার সহ্য করতে হয়। যদিও আমি যতোটা পারি ওকে এভয়েড করার চেষ্টা করি।বুজেছিস?
….হুম বুঝলাম।
এ্যানি দাঁড়িয়ে থেকে রাগে ফুঁসতে থাকলো। ও ভেবে পায় না আদিত্য সবসময় শুধু ইগনোর কেন করে? কি নেই ওর মাঝে? যেখানে হাজার হাজার ছেলে আমার জন্য পাগল। কিন্তু এই আদিত্যর কোনো ইন্টারেস্টই নেই আমার প্রতি।
তারপর একটা সয়তানি হাসি দিয়ে এ্যানি মনে মনে বললো।তুমি যেখানেই যাওনা কেন, ফিরেতো তোমাকে আমার কাছেই আসতে হবে। তুমি শুধু আমার হবে আর কারোর না।
তারপর এ্যানিও নিজের ক্লাসে চলে যায়।
ক্লাসে ঢুকতেই এ্যানির দুই চামচা লিলি আর মিলি ওকে ঘিরে ধরে বলে।
….ওয়াও এ্যানি, ওয়াট এ সারপ্রাইজ। তুই সুইজারল্যান্ড থেকে কবে আসলি?
এ্যানিও হাসি মুখে বললো।
….কালই এসেছি। কেমন আছিস তোরা?
লিলি আর মিলি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো।
…..আমরাতো ভালোই আছি। তবে তুই মনে হয় বেশিক্ষণ ভালো থাকবি না।
এ্যানি ভ্রু কুঁচকে বললো।
….মানে?কি বলছিস তোরা?
…..হুম ঠিকই বলছি। তুই তো আর জানিস না আজকাল কি চলছে ক্যাম্পাসে?
….. হেয়ালি না করে, জা বলার ঠিক করে বল?
…..তোমার হিরো যে আজকাল কারোর পিছনে লাট্টু হয়ে ঘুরছে। সে খবর কি তোমার আছে?
এ্যানি চমকে উঠে উত্তেজিত হয়ে রাগী কন্ঠে বললো।
….ওয়াট??কি বলছিস তোরা? পাগল হয়ে গেলি নাকি? এটা কখনোই হতে পারেনা।
…..হতে পারে না।অলরেডি হতে চলেছে। আমরা নিজের চোখে দেখেছি। আজকাল আদিত্য একটা মেয়ের সাথে খুব ক্লোজ হয়ে গেছে। রোজ ওই মেয়েটাকে নিজের গাড়িতে করে নিয়ে আসে আবার যাওয়ার সময় একসাথে নিয়ে যায়। ক্যানটিনে একসাথে খাবার খেতেও দেখেছি। শুধু তাই না।আমরা প্রায়ই খেয়াল করেছি। ক্লাস শেষে আদিত্য আর ওই মেয়েটা ভবনের পিছনের সাইটে যায়। ওখান থেকে অনেকক্ষণ পরে বের হয়।আর সেদিনতো সবার সামনেই আদিত্য ওই মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিলো।সবাই দেখেছে।
এসব কথা শুনে এ্যানির মাথা রাগে ফেটে যাচ্ছে। হাত মুঠ করে রাগে কটমট করতে করতে বললো।
…..কে ওই মেয়েটা?কার এতবড়ো সাহস আমার আদিত্যের দিকে হাত বাড়ায়? ওকে আমি শেষ করে ফেলবো। ওর সাহস কি করে হলো আমার আদিত্যের উপর নজর দেওয়ার। চল তোরা এখুনি দেখাবি মেয়েটা কে।
…..এখনতো ক্লাস চলছে প্রফেসর আছে ক্লাসে। ক্লাস শেষ হলে দেখাব তোকে।
এ্যানি মাথা ঝাকালো। মানে ঠিক আছে।
————————————-
নূর ক্লাসে বসে আছে। তবে ওর মাথায় শুধু ওই মেয়েটার ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছে। আচ্ছা ওই মেয়েটা কি উনার গার্লফ্রেন্ড? কথাটা ভাবতেই নূরের বুকের ভেতর চিনচিন ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। দমটা কেমন বন্ধ হয়ে আসছে। চোখ জোড়া কেমন জ্বালাপোড়া করছে। তবে কি আমি আবারও মিথ্যে স্বপ্ন দেখেছি। আচ্ছা মেয়েটা যদি সত্যিই উনার গার্লফ্রেন্ড হয়।তাহলে উনি আমার এতো ল
কেয়ার কেন করেন? রোজ আমার কাছ থেকে চুমু কেন নেন? না না আমি হয়তো একটু বেশিই ভাবছি। নাজেনে উনাকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
হট
হঠাৎ তানির কথায় নূরের ভাবনায় ছেদ পরে।
…..কিরে? কি এতো ভাবছিস? ক্লাস শেষ হয়ে গেছে। চল যাবিনা?
নূর মাথা ঝাকিয়ে বললো।
…হুম? হ্যাঁ চল।
নূর আর তানি বেড়িয়ে এসে ভবনের পিছনের দিকে যেতে নিলো।
এদিকে এ্যানিও লিলি আর মিলিকে নিয়ে বেড়িয়েছে নূরকে খোঁজার জন্য। দূর থেকে নূরকে দেখে লিলি আর মিলি হাত দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে বললো।
…..ওইযে দেখ দুটো মেয়ে হেটে যাচ্ছে। ওদের ভেতর সবুজ জামা পড়া মেয়েটা হলো সেই মেয়ে। এখন মনে হয় ভবনের পিছনেই যাচ্ছে আদিত্যের সাথে দেখা করতে।
ওদের কথামতো এ্যানি নূরের দিকে তাকালো। নূরের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো।
…আর ইউ সিওর? এই মেয়েটা?
…..হুম হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিওর।
এ্যানি তাচ্ছিল্যের সুরে বললো।
….এরকম একটা ক্ষ্যাত মার্কা মেয়ের ভেতর কি দেখলো আদিত্য?
তারপর লিলি মিলির দিকে তাকিয়ে বললো।
…তোরা এখন যা।আমি দেখছি ওকে।
ওরা মাথা ঝাকিয়ে চলে গেলো। আর এ্যানি নূরের পিছু পিছু গেল।
নূর আর তানি ভবনের পেছনে যেতেই আবির এসে তানির হাত ধরে অন্য দিকে নিয়ে গেল। আর নূর এগুলো আদিত্যের কাছে।
এ্যানিও চুপিচুপি নূরের পিছু নিয়ে ওখানে চলে এসেছে।
তাসিরের ফোন আসায় ও একটু সরে গিয়ে ফোনে কথা বলতে লাগলো।
এ্যানি এই ফাঁকে চুপচাপ যেয়ে একটা গাছের পেছনে লুকালো। নূর আর আদিত্য কি করে তা দেখার জন্য।
আদিত্য ব্রেঞ্চের ওপর বসে আছে। নূর যেয়ে চুপচাপ ব্রেঞ্চের কাছে দাঁড়িয়ে রইলো। হঠাৎ আদিত্যের উপর ওর কেন যেন খুব অভিমান হচ্ছে।
আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
…রোজ এসে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকো কেন? বসে পড়লেই পারো।
নূর কিছু না বলে চুপচাপ বসে পরলো।মুখটা গোমড়া করে সামনের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে রইলো।
নূরের দিকে তাকিয়ে আদিত্য ভ্রু কুঁচকে বললো।
…কি হয়েছে? এমন গাল ফুলিয়ে রেখেছো কেন?
নূর সামনের দিকে তাকিয়েই বললো।
…কিছু না।
আদিত্য ভাবছে এর আবার কি হলো? সকালে আসার সময়তো ঠিকই ছিল। হঠাৎ কি হয়ে গেলো? আদিত্য আবারও জিজ্ঞেস করলো।
….ক্লাসে কেউ কিছু বলেছে?
নূরের সোজাসাপটা জবাব।
…না।
একটু থেমে আবার বললো।
….আমার বাসায় যেতে হবে। আমি কি আমার কাজ করে চলে যেতে পারি?
আদিত্যের এবার রাগ উঠতে লাগলো। ও দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
….কি হয়েছে বলবে তুমি? এভাবে কথা বলছো কেন?
নূর এবার হালকা চড়া গলায় বললো।
…বললামতো কিছু হয় নি। বাবার জিজ্ঞেস করছেন কেন?
…..কিছু হয়নি তাহলে এভাবে গাল ফুলিয়ে বসে আছো কেন?
….কারণ আমার আমার গালই এরকম। আমি কি করবো?
এবার আদিত্যের হাসি পেল নূরের এমন কথা শুনে। মেয়েটাকে এভাবেও অনেক কিউট লাগছে। কেমন বাচ্চাদের মতো গাল ফুলিয়ে বসে আছে। আদিত্য বুঝতে পারছে নূর কোনো ব্যাপারে রেগে আছে। কিন্তু এভাবে জিজ্ঞেস করলে কখনো বলবে না। তাই আদিত্য বললো।
….ঠিক আছে তোমার কাজ শেষ করো। তারপর চলো তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসছি।
নূর একটু অভিমানী সুরে বললো।
…লাগবেনা আমি একাই যেতে পারবো।
আদিত্যের আবার রাগ উঠে গেলো। চোয়াল শক্ত করে বললো।
…তোমাকে কি আমি জিজ্ঞেস করেছি তুমি কি পারবে কি পারবেনা। দেখ আমার রাগ বাড়িও না। এখন ভালো মেয়ের মতো চুমুটা দাও।তারপর চলো তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসছি।তারপর আদিত্য চোখ বন্ধ করে নিল।
আদিত্যের ধমকে নূরের অভিমান আরও বেড়ে গেল। নূর রাগী মুডে এমন ভাবে চুমু খেলো। যেন চুমু না চড় দিল। তারপর নূর উঠে গেলো। আদিত্য ভ্রু কুঁচকে ভাবছে এটা কি চুমু ছিল না কি ছিল?আজব, মেয়েটার আজ হঠাৎ হলোটা কি? তারপর আদিত্যও উঠে চলে গেলো।
এতক্ষণ এ্যানি গাছের আড়াল থেকে সবকিছু দেখছিল। ওরা চলে যেতেই এ্যানি বেড়িয়ে আসে। হাত মুঠ করে নিয়ে রাগে ফুসতে ফুঁসতে বললো।
….তুমি এটা একদম ঠিক করোনি আদি। তুমি শুধু আমার আর কারোর না।ওই মেয়েটাকেতো আমি ছাড়বোনা কিছুতেই না। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
——————————–
গাড়িতেও নূর চুপচাপ জানালার দিকে তাকিয়ে বসে আছে। মনে মনে ভাবছে উনাকে কি মেয়েটার কথা জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু আবার যদি কিছু মনে করেন। কিন্তু জিজ্ঞেস না করেও তো শান্তি পাবোনা।এভাবে কতক্ষণ দ্বিধাদ্বন্দিতার পর নূর ভাবলো জিজ্ঞেস করেই ফেলি।নূর আদিত্যের দিকে ঘুরে আমতা আমতা করে বললো।
…মে মে মেয়েটা কে ছিল?
আদিত্য এতক্ষণ সামনের দিকে একধ্যানে তাকিয়ে ড্রাইভ করছিল। হঠাৎ নূরের কথায় হালকা হকচকিয়ে উঠে বললো।
….হুম? সরি তুমি কিছু বললে?
নূর আবারও জিজ্ঞেস করলো।
….মেয়েটা কে ছিল?
আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো।
….কোন মেয়েটা?
….স সসকালে যে মেয়েটা আপনাকে জ জড়িয়ে ধরলো।
আসল ব্যাপারটা বুঝতে এতক্ষণে পেরে আদিত্যের কুঁচকানো ভ্রুটা হঠাৎ টান টান হয়ে গেলো। আদিত্য মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসলো। তারমানে নূর এইজন্য রেগে আছে। কারন এ্যানি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। তারমানে কি নূর জেলাস? কথাটা ভাবতেই আদিত্যের অনেক খুশী লাগছে।তারমানে নূরের মনেও আমাকে নিয়ে ফিলিংস আছে?
আদিত্য মুখটা একটু গম্ভীর করে নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
….কেন বলোতো?
নূর একটু জোরপূর্বক হেসে বললো।
….এ এএমনি আপনার পরিচিত মনে হলো। তাই জিজ্ঞেস করছিলাম আর কি।
আদিত্য বাঁকা হেসে বললো।
….হুম পরিচিত তো বটেই। খুব পরিচিত। সুন্দর না মেয়েটা?
আদিত্যের কথায় নূরের রাগ আরো বেড়ে যাচ্ছে। নূর দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
….হ্যাঁ হ্যাঁ সুন্দর। খুব সুন্দর।
তারপর জানালার দিকে মুখ ঘুরিয়ে ভেংচি কেটে বিড়বিড় করে বললো।
…হুহ্ সুন্দর না ছাই। শেওড়া গাছের পেত্নিও দেখতে ওর থেকে সুন্দর আছে। রাস্তায় পড়ে থাকা পাগলিদের মতো চুল।ফকিন্নিদের মতো ছেড়া ফাটা কাপড়চোপড়। জোকারদের মতো মুখে মেক আপ। সে নাকি আবার দেখতে সুন্দর।
নূর বিড়বিড় করে বললেও সব কথাই আদিত্য শুনতে পাচ্ছে। নূরের এসব আজগুবি কথায় আদিত্যের পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে। মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসি আটকানোর চেষ্টা করছে।
নূরের বাসার গলির সামনে এসে আদিত্য গাড়ি ব্রেক করে। নূর রেগে তাড়াহুড়ো করে নামতে নেয়। আদিত্য হঠাৎ নূরের হাতটা ধরে নিজের কাছে টেনে নেয়। আচমকা টান দেওয়ায় নূর আদিত্যের মুখের কাছে ঝুকে পড়ে। দুজনের মাঝে মাত্র দুই ইঞ্চি দুরত্ব আছে।
হঠাৎ এমন হওয়ায় নূর লজ্জায় পরে যায়। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে।
….ক ককি করছেন? ক ককেও দেখে ফেলবে। ছা ছাড়ুন প্লিজ।
আদিত্য নূরের দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে বললো।
….ওই মেয়েটা আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। তাছাড়া আর কিছুই না।
তারপর আদিত্য নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে লো ভয়েসে বলে।
….জেলাস হবার কিছুই নেই।
আদিত্যের গরম নিঃশ্বাস ঘাড়ে পড়তেই নূরের সারা শরীর অদ্ভুত শিহরণে কেঁপে ওঠে। নূর চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়।
একটু পরে আদিত্য সরে আসে। নূর লজ্জায় মাথা নিচু করে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে।
….এ এএমন কিছুই না। আ আআমি কোনো জে জেলাস না।
আদিত্য বাঁকা হেসে বলে।
….তাই বুঝি?
কথাটা বলেই আদিত্য আবার নূরের কাছে আসতে নেয়।
কিন্তু তার আগেই নূর লাজুক হেসে দরজা খুলে দৌড় দেয়।
আর আদিত্য নূরের যাওয়ার পানে চেয়ে গাড়ির স্টেয়ারিং এর উপর হাত রেখে তার উপর থুতনি রেখে বৃদ্ধা আঙুল কামড়ে হাসতে থাকে।
চলবে……..
(তাড়াহুড়োর জন্য রিচেক করিনি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)