#শুধু_তোমাকেই_চাই
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব২২
“সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরেছে লিয়া। লিয়া রিকশায় থাকতে অরিন ফোন দিয়ে সবটা বলেছে।লিয়া ভেবেছিলো মিথ্যে বলার জন্য রাজিয়া সুলতানা ওকে আসার সাথে সাথেই প্রশ্ন করবে।লিয়া কোথায় ছিলো?আর মিথ্যে বলেছে কেনো? হেনতেন এত এত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।অথচ এরকম কোনো প্রশ্নই না করে রাজিয়া সুলতানা লিয়ার সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছেন।মনে হচ্ছে উনি কিছুই জানেন না।
মায়ের স্বাভাবিক আচরণে লিয়া অনেকটা আশ্চর্য হয়।আর লিয়া মনে মনে গিল্টি ফিল করছে মিথ্যে বলার জন্য।লিয়া রাজিয়া সুলতানা কে নোটিস করছে।অথচ বুঝতে পারছে না,উনি লিয়া কে সন্দেহ করেছেন কিনা?
সন্ধ্যা থেকেই এসব কিছু ভেবে লিয়া মুখটা মলিন করে রাখে।লিয়ার খুব মন খা’রাপ হতে থাকে।লিয়া বারবার ভাবছে,আমার মোটেও উচিত হয়নি আম্মু কে মিথ্যে বলা। আমার মিথ্যে বলার জন্য আম্মু হার্ট হতে পারে।
রাতে ডিনার করার সময় লিয়া ম্লান গলায় বলে,,”আম্মু আব্বু আসেনি এখনো?”
রাজিয়া সুলতানা স্বাভাবিক ভাবে স্পষ্ট গলায় বলে,,”তোর আব্বুর আজকে নাইট শিফট আছে।তাই আসবে না।”
লিয়া খাবার চিবুতে চিবুতে ছোট করে বলে,,”ওহ্।”
ঘড়ির কাঁটা রাত দশটার ঘর পার হয়েছে।রুমে হালকা সবুজ রঙের ডিম লাইট জ্বলছে।সারা রুম জুড়ে নীরাবতা বিরাজ করছে।রুমটার দেয়াল হালকা সবুজ এর ডিস্টেম্বার করা।সবুজের হালকা ডিম আলোয় পুরো রুমটাই হালকা সবুজের শান্তি ময় নীরাবতা মনে হচ্ছে।দেখলেই মনের ভিতর একটি সুন্দর ইনজয়েবল অনুভূতির পরিবেশের সৃষ্টি হবে।হালকা সবুজ আলোয় রুমের পরিবেশ টা বেশ চমৎকার।তবে লিয়ার মনটা আজ আর চমৎকার নেই। মনের কোণে জমে আছে অপরাধ বোধ।এতদিন মাকে মিথ্যে বলে আসছে।লিয়ার কাছে বিষয়টা সত্যি খুব খা’রাপ লাগছে।লিয়া বিছানায় বসে আছে।খোলা চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে পিঠ জুড়ে।ফ্যানের বাতাসে চুলগুলো এলোমেলো ভাবেই উড়তে থাকে।
রাজিয়া সুলতানা সেই সময় জারিফ আর লিয়াকে একসাথে দেখে।ওখান থেকেই প্রস্থান করেন।লিয়া আর জারিফের সামনে না গিয়ে দ্রুত চলে আসেন।উনি যা বোঝার তা বুঝে নেন।
রাতে সব কিছু গুছিয়ে রেখে রুমে যাওয়ার সময় দেখেন।লিয়ার রুমে হালকা আলো জ্বলে আছে।আর সন্ধ্যা থেকেই উনি লিয়াকে নোটিস করেছে যে,লিয়ার মুখটা মলিন।উনি এক পা দু পা করে লিয়ার রুমের সামনে গিয়ে শান্ত কন্ঠে বলেন,,”লিয়া আসবো?”
লিয়া যেরকম বসে ছিলো ওরকম বসেই মৃদু আওয়াজে বলে,,”হ্যা আম্মু আসো।”
রাজিয়া সুলতানা গিয়ে লিয়ার পাশে বসেন।কোমল গলায় বলে,,”তোর মন খা’রাপ?কোনো কিছু নিয়ে তুই চিন্তিত?”
মায়ের কথা শুনে লিয়া মুখটা তুলে দৃষ্টি সরু করে ভ্রু কুঁচকে মায়ের দিকে তাকায়।রাজিয়া সুলতানা স্মিত হাসে।সবুজ আলোয় মায়ের স্মিত হাসিটা লিয়ার কাছে খুব ভালো লাগে।মা মানেই মমতাময়ী।মা মানেই সকল দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়া।মা মানেই ভালো থাকা।মায়ের স্মিত হাসি লিয়ার মনটাকে কিছুটা হলেও ভালো করতে সক্ষম হয়।
লিয়া কিছু বলার আগেই রাজিয়া সুলতানা শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,,”লিয়া তুই জারিফের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি?”
মায়ের প্রশ্নে লিয়া চমকে উঠে।লিয়া মনে মনে ভাবে আমি স্যারের সাথে ছিলাম আম্মু কিকরে জানলো?এসকল প্রশ্ন কে এক সাইডে রেখে লিয়া মাথাটা নিচু করে অনেস্টলি কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,,”হ্যা আম্মু।”
রাজিয়া সুলতানা শান্ত গলায় বলেন,,
“চিন্তা করিস না।আমি তো সব সময় তোর পাশেই আছি আর ভবিষ্যতেও থাকবো।তোর মলিন মুখ দেখলে আমার ভালো লাগে না।তাছাড়া,আমার ধারণা তুই ভুল করিস নাই।কারণ,জারিফ সৎ চরিত্রের, মেধাবী,মানবীয় গুণাবলীর সমষ্টি যা আমি খুব পছন্দ করি।মা হিসেবে এরকম একজন সৎ পাত্রের হাতে তার কন্যা কে তুলে দিতে আমার মনে হয়, শুধু আমি কেনো?পৃথিবীর সব মা-ই চাইবে।অতএব, মন খা’রাপ করিস না।”
মায়ের মুখে জারিফ সম্পর্কে শোনা প্রতিটি ওয়ার্ড লিয়াকে মুগ্ধ করছিলো।লিয়ার মনে প্রাউড ফিল হতে থাকে।লিয়া ভাবে আসলেই আমি একজন পারফেক্ট ম্যানকেই খুঁজে পেয়েছি।লিয়া রাজিয়া সুলতার কোলের উপর মাথা দিয়ে আনন্দিত কন্ঠে বলে,,”থেংকিউ আম্মু।তুমি আমার গ্রেট আম্মু।”
রাজিয়া সুলতানা লিয়ার চুলের মধ্যে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মৃদু আওয়াজে বলেন,,”জামাই হিসেবে অভ্র কে নয় আমার জারিফকেই পছন্দ।এসবের থেকেও আমার কাছে সব কিছুর আগে তোর প্রায়োরিটি।তুই যাতে ভালো থাকবি,সব সময় আমি সেটাই চাইবো।আর সেটাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।আচ্ছা এখন এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে এবার ঘুমানোর চেষ্টা কর।”
নভেম্বরে মাঝামাঝি সময়ে শীতের আগমন হয়।শীতের প্রকোপ খুব বেশি না হলেও মোটামুটি সারা দেশ জুড়ে ভালই শীত শুরু হয়।সকালে হালকা কুয়াশা, বাজারে শীতের সবজি এসব কিছু জানান দেয় শীতের আগমনের। বিকেলে শীতকালীন সবজি দিয়ে নুডুলস বানাচ্ছেন রাজিয়া সুলতানা।এমন সময় কলিংবেল এর শব্দ হয়।চুলাটা অফ করে যান দরজা খুলতে।দরজা খুলে একজন মধ্যবয়স্ক মহিলা আর সাথে এক কিশোরী কে দেখে অবাক হন। অনেকদিন পরে দেখা হলেও চিন্তে দেরি হয়না একমিনিটও। মিষ্টি হেসে কুশলাদি বিনিময় করে ওনাদেরকে বসতে দিয়ে।লিয়াকে ডাকতে যান।
লিয়া রুমে বসে গল্পের বই পড়ছিলো।রাজিয়া সুলতানা গিয়ে লিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে,,”লিয়া রুপন্তী আসছে।”
মায়ের মুখ থেকে রুপন্তী নামটা শুনে লিয়ার কপালে ভাঁজ পরে।অবাক গলায় লিয়া শুধায়,,”রুপু আসছে? রিয়েলি?”
রুপন্তী লিয়ার স্কুল ফ্রেন্ড।বিদ্যাময়ি গার্লস স্কুলে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হওয়ার পর।লিয়ার প্রথমে ফ্রেন্ডশিপ হয় রুপন্তীর সাথে।ওরা দুজনে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো।দি ক্যাডেট কোচিং এ একসাথে দুজনে ক্লাস করত।একসাথে বসা,একসাথে ঘুরাঘুরি করত ওরা।ওদের দুজনের খুব ভালো ইন্টেমেসি গ্রো করেছিলো। কিন্তু আনফরচুনেটলি রুপন্তী ক্যাডেটে চান্স পায়না।আর লিয়া চান্স পায়।এরপর থেকে দুই বান্ধবীর সাথে দেখা খুব কমই হয়েছে।তবে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়।আর ওদিকে ক্যাডেটে যাওয়ার পর রুমমেট হিসেবে লিয়া ফিহা আর অরিন কে পায়।
লিয়া ড্রয়িংরুমে যেতেই রুপন্তী দৌড়ে এসে লিয়াকে জড়িয়ে ধরে। লিয়া কে ছেড়ে দিয়ে রুপন্তী অভিযোগ এর সুরে বলতে থাকে,,”তুই তো আর আমাকে দেখতে যাবি না।তাই আমিই চলে আসলাম তোকে দেখতে।”
লিয়া হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলে,,”ভালো হয়েছে।তা তোর পরীক্ষা কেমন হয়েছে?কোথায় এডমিশন টেস্ট দিবি?”
লিয়া সোফায় বসা আন্টির সাথে কথা বলে। রুপন্তীর সাথে বিভিন্ন গল্প করতে থাকে।এরমধ্যে রুপন্তী ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে লিয়ার দিকে বাড়িয়ে দেয়।লিয়া কার্ডটা দেখেই বুঝে নেয়,এটা একটা বিয়ের কার্ড।বেশ সুন্দর করে কার্ডটা ডিজাইন করা।লিয়া ইনভাইটেশন কার্ড তাও বিয়ের কার্ড দেখে আশ্চর্য হয়। বিস্ফোরিত নয়নে রুপন্তীর দিকে তাকিয়ে অবাক গলায় শুধায়,,”বিয়ের কার্ড?তোর বিয়ে?বাহবা এত দ্রুতই বিয়ে করে নিচ্ছিস?”
রুপন্তী ছোট ছোট চোখ করে লিয়ার দিকে চেয়ে,দুদিকে মাথা নাড়িয়ে গমগমে কন্ঠে বলে,, উঁহু!আমার বিয়ে নয়। কার্ডটা খুলে দেখ।আমার ভাইয়ার বিয়ে সামনের সপ্তাহে।তুই কিন্তু যাবি। আর,হ্যা বিয়ের দুইদিন আগে অন্তত তুই যাবি।”
লিয়া ছোট করে শ্বাস নিয়ে নিরস গলায় বলে,,”যাক বাবা তোর ভাইয়ার বিয়ে। আমি তো ভেবেছিলাম তোর বিয়ে।”
রুপন্তী ভ্রু কুঁচকে ঠোঁট উল্টে বলে,,”তুই কিন্তু আমার কথার উত্তর এখনো দিসনি।তা কবে যাবি বল?”
রুপন্তীর কথা শুনে লিয়ার নিটোল কপাল বেশ খানিকটা কুঞ্চিত হয়।লিয়া জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বলে,,”আ আসলে
লিয়ার জড়তা টা কোথায় রুপন্তী বুঝে ফেলে।তাই লিয়াকে থামিয়ে দিয়ে চঞ্চল কন্ঠে বলে,,”বুঝতে পারছি।তোকে আর কিছু বলতে হবে না।আমি আন্টিকে বলছি।”
রাজিয়া সুলতানা কে অনেক করে বলার পরে। রাজি হন।তবে বলেন লিয়া রিসেপশনের দিন যাবে।
রুপক ফোন করে ওর সব বন্ধুদের ডেকেছে।সবাইকে বিকেলে শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনের সামনে আসতে বলেছে। পড়ন্ত বিকেলে সবুজ ঘাসের উপর বসে জারিফ,রোহান,আর রুপক গল্প করছিলো।এরমধ্যে রোজ আর তাসনিম একসাথে আসে।রোজ এসে রুপকের পাশে বসে পড়ে, তাসনিম রোজের পাশে। তাসনিম এর থেকে একটু দূরত্বে জারিফ আছে।
সবাই আসার পর রুপক গলা ঝেড়ে বলতে থাকে,,
“দোস্তরা শোন,সেই মহেন্দ্রক্ষণ এসে গিয়েছে। যে যেদিন টার জন্য পঁচিশ বছর ধরে অপেক্ষা করছি।”
রুপকের কথা শুনে রোহান ব্যাকা হেসে ফোরন কে’টে গমগমে স্বরে শুধায়,,
“তা দোস্ত তুই কি পৃথিবীতে আসার পর থেকেই বিয়ে করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিলি?যে বলছিস পঁচিশ ধরেই অপেক্ষা করছিস।”
রুপক মাথা ঝাড়া দিয়ে বলে,,”পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় না থাকলেও, পঁচিশ বছর পর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে জড়িত হতে যাচ্ছি তো।”
জারিফ শান্ত গলায় বলে,,
“তা কবে সেই ক্ষণ?
রুপক রোজ কে ইশারা করতেই,রোজ ব্যাগ থেকে তিনটা কার্ড বের করে রুপকের হাতে দেয়।রুপক হালকা নড়েচড়ে বসে দৃঢ় গলায় বলে,,
“কথাটা আমি মুখে বললেও আমি ব্লাক এন্ড হোয়াইট পছন্দ করি।এইযে কার্ড।সামনের সপ্তাহে আমার আর রোজের শুভ বিবাহ।”
রোহান সাথে সাথে মুচকে হেসে বলে,,”শাদী মোবারক দোস্ত।”
রোহানের কথা শুনে সবাই শব্দ করে হেসে ফেলে।রোহান শার্টের কলারে হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে ভাব নিয়ে বলে,,”যা এর পরে তোদেরকে আরেকটা দাওয়াত খাওয়ার সুযোগ করে দেবো।আমিও ভাবছি এবার বিয়েটা সেরে নিবো।কোন যায়গায় কত দূরে পোস্টিং হয়, আল্লাহ মালুম।তাই ভাবছি একা একা যাতে বোর না হই,সেইজন্য একবারে বিয়ে করে, বউ কে সাথে করে নিয়ে যেয়ে টোনাটুনির মত ছোট সংসার সাজাবো।”
রুপক বলে,,”ভালো কথা তো।তা বসে না থেকে মেয়ে দেখা শুরু করে দে।”
রোহান শিষ বাজিয়ে ভাবলেশহীন ভাবে নির্বিকার ভঙ্গিতে শুধায়,,”মেয়ে দেখাই আছে।এখন শুধু মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব দিবো।আর মেয়ের ফ্যামেলি রাজি হলেই বিয়ের পাট চুকিয়ে ফেলবো।তা এ ব্যাপারে জারিফের হেল্প প্রয়োজন আছে।তা জারিফ হেল্প করবি তো?”
জারিফ কিছু বলার আগেই তাসনিম ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,,”হয়েছে হয়েছে তোর বিয়ের ঘটকালির কথা পড়ে শোনা যাবে।এখন আমাদের সামনে বসা বিয়ের কনে আর বরের দিকে ফোকাস কর।”
তাসনিম কার্ডটা নেড়েচেড়ে দেখে মিষ্টি কন্ঠস্বরে বলে,,
“বাহ্। সুন্দর হয়েছে তো কার্ডটা।”
রুপক স্থির চাহনিতে পাশে বসা রোজের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে,,”কার্ডের ডিজাইন রোজ চুজ করেছে।”
তাসনিম মৃদু আওয়াজে বলে ,,”রোজ তোর কিন্তু চয়েজ টা বেশ সুন্দর।”
রুপক সাথে সাথেই এক্সাইটেড গলায় বলে উঠে,,”সেইজন্য তো আমাকে চুজ করেছে।”
দুপুরে শাওয়ার নিয়ে এসে লিয়া হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুলগুলো শুকাতে থাকে।আজকে রুপন্তীর ভাইয়ের রিসেপশনের দাওয়াতে যাবে লিয়া।জেড ব্লাক এর উপর,এ্যশ কালারের সুতির কাজ করা গর্জিয়াস একটা থ্রি পিচ পড়ে নেয়,বড় বড় স্লিকি স্ট্রেইট চুলগুলো খোলা রাখে, ঠোঁটে পিংক কালারের লিপবাম দেয়।পায়ে জারিফের দেওয়া পায়েল টা পড়ে নেয়।লিয়া ভাবে আজকে থেকে আর কখনো পায়েলটা খুলবে না।সব সময় পড়েই থাকবে।কারন ওর আম্মু যেহেতু জারিফের বিষয়টা জানেই।
লিয়া রেডি হয়ে রাজিয়া সুলতানা কে বলে বের হবে।সেই সময় রাজিয়া সুলতানা লিয়া কে উদ্দেশ্য করে বলে,,”এই লিয়া তোর ড্রাইভার আঙ্কেল তোকে নামিয়ে দিয়ে আসবে।আর তুই আসার আগে তোর আঙ্কেল কে ফোন করিস যেয়ে নিয়ে আসবে,কেমন।”
লিয়া মিষ্টি হেসে বলে,,” ঠিক আছে আম্মু।”
রাজিয়া সুলতানা গম্ভীর কন্ঠে বলে,,”বেশি রাত করিস না কিন্তু। সন্ধ্যার পর পরই চলে আসিস।তোর আব্বু যদিও তোর দাদি বাড়ি আছেন,তারপরেও কিন্তু ফোন করে,তোর কথা জিগ্গেস করবে,তুই ফিরছিস কিনা?জানতে চাইবে।”
লিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,,”ওহ্, আম্মু ঠিক আছে দ্রুতই ফিরবো।এবার হ্যাপি।”
রুপন্তীদের বাসা মহিলা কলেজ রোডে।লিয়া গাড়িতে বসে ভাবে,স্যারের সাথে কথা বলে নেয়। ফেসবুকে লগইন করে জারিফের কাছে মেসেজ দেয়।গোল বৃত্ত টা ভরাট হয়না।লিয়া ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে মনে মনে আওড়ায়,স্যার তো এখন অনলাইনে নেই দেখছি।
কালকে রাতে স্যারকে ফোন দিয়েছিলাম,সেই সময় স্যার বললো ত্রিশালে আছেন ফ্রেন্ডের বিয়েতে গিয়েছেন।এখনো আসেনি না-কি?”
খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে বাড়িটা। বিভিন্ন রকমের টিপটপ জোনাকি বাতি আরো বিভিন্ন রঙের লাইটিং করা হয়েছে।চারিপাশে লোকজন গিজগিজ করছে।লিয়া ভেতরে ঢুকে এদিক সেদিক দৃষ্টি বুলিয়ে রুপন্তী কে খুঁজতে থাকে।প্রায় তিন মিনিট যাবৎ খোঁজার পর লিয়ার দৃষ্টি পড়ে স্টেজে উঠতে যাওয়া রুপন্তীর দিকে।পরনে পিংক কালারের লেহেঙ্গা গর্জিয়াস সেজেছে। রুপন্তী কে দেখে লিয়া এক হাত উঁচু করে মৃদু আওয়াজে ডাকতেই রুপন্তী ঘাড় ঘুরিয়ে লিয়াকে দেখে মিষ্টি হেসে লিয়ার কাছে এগিয়ে গিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে,,”তুই এত লেইট করে আসলি।”
লিয়া কপাল কুঁচকে বলে,,”সরি।”
রুপন্তী হাস্যোজ্জ্বল মুখে আনন্দিত কন্ঠে বলে,,”চল আমার ভাইয়া আর ভাবির সাথে তোর পরিচয় করিয়ে দেবো।”
লিয়ার হাত ধরে স্টেজে উঠতে থাকে।লিয়া সামনে তাকিয়ে দেখে ঠোঁট কামড়ে ধরে বলে,,”এই এই রুপু ওখানে তো অনেক ভিড়।তাই বলছি ভিড়টা কমলে না হয় গিয়ে মিট করে নিবো।”
রুপন্তী ভ্রু যুগল উঁচিয়ে বলে,,”ওখানে আমার ভাইয়া আর ভাবির ফ্রেন্ডরাই আছে।আমি ওনাদেরকে চিনি।তাই বলছি সমস্যা নেই তুই চল।”
লিয়া আর কিছু না বলে স্টেজে উঠে,বর আর বউয়ের আসনের সামনে এগিয়ে যায়।রোজ আসনে বসে ছিলো আর ওর সামনে রুপক সহ দুইটা ছেলে আর একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো। রুপন্তী রুপকের এক হাত ঝাঁকিয়ে গমগমে কন্ঠে বলে,,”ভাইয়া একটু সরো।আমার ফ্রেন্ড কে ভাবির সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো।”
কথাটা শুনে রুপকের পাশে থাকা ব্লাক ব্লেজার পড়িহিত মানবটি সরে দাঁড়ায়। রুপন্তী লিয়ার হাত ধরে আরেকটু সামনে নিয়ে যায়।সরে দাঁড়ানো মানবটির নাকে হঠাৎ করে একটি পরিচিত স্মেল ভেসে আসে।যে স্মেল টা তার খুব পরিচিত। এবং যে স্মেলে তার কঠোর মন মাতাল হয়ে আসে।পরিচিত শ্যামপু করা চুলের স্মেল টা কই থেকে আসছে,সেই উৎস খুঁজতে ঘাড় ঘুরিয়ে বাম পাশে তাকাতেই ভালোবাসার মানুষ টাকে এখানে দেখে অবাক হয়। শুধু অবাক নয় প্রচন্ড রকমের অবাক হয়।কপালে ভাঁজ পড়ে ভ্রু কুঁচকে অস্ফুট স্বরে বলে,,”লিয়া তুমি এখানে?”
লিয়া মাথাটা তুলে গা ঘেঁষে ডান দিকে দাঁড়ানো মানবটির দিকে তাকাতেই আশ্চর্য হয়।হোয়াইট শার্ট এর উপর ব্ল্যাক ব্লেজার , ব্লাক প্যান্ট,পায়ে ব্লাক সু। এই লুকে খুব হ্যান্ডসাম লাগছিলো।এক পলক জারিফকে দেখে নিয়ে লিয়া মনে মনে আওড়ায়,,মাই মোস্ট অফ দ্যা এট্রাকটিভ হিরো।হাস্যজ্জ্বল মুখে ঠোঁট প্রসারিত করে লিয়া কিছু বলতে যাবে,তার আগে দৃষ্টি যায় জারিফের পাশে দাঁড়ানো তাসনিম এর দিকে। তাসনিমও লিয়াকে দেখে অবাক হয়, তার থেকেও বেশি অবাক হয়,জারিফের মুখ থেকে লিয়া নামটি শুনে। তাসনিম বারবার ভাবতে জারিফ লিয়াকে চেনে কীভাবে?”
তাসনিম অবাক গলায় জারিফকে উদ্দেশ্য করে শুধায়,,”জারিফ তুই ওকে চিনিস?”
জারিফ কিছু বলার আগেই রুপক কপাল কুঁচকে বলে,,”জারিফ তুই রুপুর ফ্রেন্ডকে কি করে চিনিস?”
জারিফ প্যান্টের পকেটে দুই হাত গুঁজে স্ট্রেইট দাঁড়িয়ে লিয়ার দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বলে,,”আমি কখন বললাম যে,আমি রুপন্তীর ফ্রেন্ড কে চিনি।আমি রুপন্তীর ফ্রেন্ডকে নয়,আমি আমার স্পেশাল জন কে চিনি।”
লিয়ার সাথে জারিফের বলা স্পেশাল শব্দ টা শুনে তাসনিম এর মনের মধ্যে এই শীতের মৌসুমেও গ্রীষ্মের কালবৈশাখীর ঝড় শুরু হয়।একটা ছেলে একটা মেয়েকে কখন স্পেশাল বলে পরিচয় দেয় তা তাসনিম ভালো করেই জানে।তবুও তাসনিম নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তাসনিম সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রে করতে থাকে,এটা যেনো ওর ভ্রম হয়।নয়তো ও যেনো যা শুনেছে সবটা ভুল শুনেছে।
রোহান মুচকে হেসে গমগমে কন্ঠে শুধায়,,”শা’লা জারিফ তুই ডুবে ডুবে পানি খাচ্ছিস,আর আমাদের কে জানাসনি। তোকে দেখলে পরে তো বোঝা যায়না, অথচ এদিকে।”
রুপক রোহান কে থামিয়ে দিয়ে বলে,,”আচ্ছা গাইস এবার জারিফের মুখ থেকেই ওর স্পেশাল মানুষের পরিচয় জানবো।”
জারিফ স্মিত হেসে লিয়ার দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বলে,,”সি ইজ এনাবুল জান্নাত খাঁন লিয়া।এর থেকেও আমার কাছে ওর বড় পরিচয় সি ইজ মাই হার্ট,সি ইজ মাই সোল।”
সী ইজ মাই হার্ট,সী ইজ মাই সোল।এই বাক্য দুইটি তাসনিম এর কানে বারবার বাজতে থাকে। তাসনিম স্তব্ধ হয়ে যায়।তাসনিমের মাথায় যেনো বাজ পরে।তাসনিমের জন্য শ্বাস নেওয়াটা কষ্টকর হয়ে যায়। বাকশূন্য হয়ে পড়ে তাসনিম।কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে।
এদিকে লিয়া জারিফের মুখ নিঃসৃত বাক্য গুলো শুনে বেশ আনইজি ফিল করতে থাকে।লিয়া ভাবে,এখানে আপু আছে।ইশ!বিষয়টা কেমন লজ্জাকর হয়ে গেলো না।যতই হোক এখানে আমার বড় আপু,আপুকে আমি রেসপেক্ট করি।আপুর সামনে এসব কথা যায়না।
এসব কিছু ভেবে লিয়া অস্বস্তিতে পড়ে।লিয়া ঘামতে শুরু করে।জারিফ লিয়াকে পরখ করে পকেট থেকে রুমাল টা বের করে লিয়ার দিকে বাড়িয়ে দেয়।লিয়া শুকনো ঢুক গিলে নিয়ে,এক হাত দিয়ে রুমালটা নিয়ে,কপালের ঘাম মুছতে থাকে।জারিফ লিয়ার দিকে কিছুটা ঝুঁকে মৃদু আওয়াজে বলে,,”লিয়া,আর ইউ ওকে?এ্যনি প্রবলেম?তোমাকে কেমন জানি ঠিক লাগছে না।”
লিয়া জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বলে,,”ঠিক আছি আমি।”
লিয়া মনে মনে ভাবে,স্যারকে আমার বলা উচিৎ আপুর কথা।
তাসনিম এর কাছে মনে হচ্ছে ওর পায়ের নিচে যেনো মাটি নেই। চারিদিক টা কেমন যেনো ঘুরছে।
অন্ধকার হয়ে আসছে চারিপাশ টা।এতো এতো আলোক উজ্জ্বল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাসনিম এর দুচোখ অন্ধকারে ছেয়ে যেতে থাকে।লিয়া আর জারিফকে পাশাপাশি মেনে নিতে পারছে না। তাসনিম ভাবে,লিয়ার অস্বস্তি জারিফের নজর এড়ায়নি।আর এদিকে আমার অবস্থা মৃ”ত্য সমতুল্য হয়েছে,এটা ওর চোখে পড়ছে না। তাসনিম মনে মনেই তাচ্ছিল্য করে বলে,,আমার দিকে ওর নজর পড়তেই যাবে কেনো?আমি তো ওর স্পেশাল জন নই।এটা তো স্বাভাবিক।তবে এই স্বাভাবিক বিষয়টা আমি কেনো স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছিনা?আমার নিঃশ্বাস আঁটকে আসছে।বুকের ভেতর থাকা যন্ত্রটা অস্বাভাবিক ভাবে সংকোচন প্রসারণ করছে।মনে হচ্ছে আমার হৃদযন্ত্রটা এই বুঝি থেমে যাবে।
রোজের কাছে মনে হচ্ছে ও লিয়াকে এর আগে কোথাও দেখেছে। ঠোঁট কামড়ে ধরে মনে করার চেষ্টা করে। অবশেষে রোজের মনে হয়,আমি তো এই মেয়ের ছবি তাসনিম এর ফোনে দেখেছি।পরক্ষণেই গলা ঝেড়ে রোজ তাসনিম কে উদ্দেশ্য করে বলে,,”এই তাসনিম এইটা তোর কাজিন না?”
তাসনিম যেনো বাকশূন্য হয়ে গিয়েছে ওর মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না। তাসনিম ঘাড় নাড়িয়ে হ্যা সম্মতি দেয়।
রোহান ঠোঁট চেপে বলে,,”বাহ্। জারিফ তো কামাল করে দিলো। তাসনিম এর বোনকেই লাইফ পার্টনার হিসেবে চুজ করে ফেললো।”
লিয়া লজ্জায় মাথা নিচু করে রইল।লিয়া ওখান থেকে চলে আসতে নিলে হঠাৎ ওর হাতে টান পরে,ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখতে পায়,জারিফ ওর হাত ধরে আছে।জারিফ ইশারায় লিয়াকে ওর পাশে থাকতে বলে।
তাসনিম এক হাত দিয়ে সবার আড়ালে চোখের কোণে জমা পানিটুকু আলতোভাবে মুছে নেয়। তাসনিম ভাবে,,এটা কিভাবে হলো?ওদের দুজনের রিলেশনের সুত্রপাত হলো কিভাবে? তাসনিম এর মন বলছে, তাসনিম তুই কিনা শেষমেষ তোর ছোটবোনের কাছে হেরে গেলি। লিয়ার যায়গায় অন্যকেউ হলে কিছুটা হলেও মেনে নেওয়া যেতো।জারিফ তো আর চোখের সামনে কোনোদিন পড়ত না,বা পড়ার সম্ভাবনা এক পার্সেন্ট থাকতো।আর এখন প্রতিনিয়ত জারিফের পাশে লিয়াকে সয্য করতে হবে।চাইলেও ইগনোর করা যাবে না। অবশেষে আমি লিয়ার কাছেই হেরে গেলাম।লিয়াকে আমার পছন্দ করা মানুষটিকেই পছন্দ করতে হলো।এই পৃথিবীতে তো আরো হাজারো মানুষ ছিলো।কেনো বেছে বেছে লিয়াকে আমার পছন্দের মানুষটি কেই পছন্দ করতে হলো?কেনো?এই কেনোর জবাব কি কেউ দিতে পারবে?আজ যদি লিয়া আমার পছন্দের কোনো শাড়ি,গহনা,বা অন্য যা কিছু সম্পদ পছন্দ করতো,আমার তাতে বিন্দু পরিমাণ দুঃখ হতো না।আমি হাসি মুখে মেনে নিতাম। কিন্তু জারিফকে লিয়ার সাথে আমি কোনোমতেই মেনে নিতে পারছিনা।আবার কিয়ৎক্ষন পরেই তাসনিম এর মস্তিষ্ক বলে উঠল,, তাসনিম তুই তোর ছোট বোনকে হিঃসা করছিস।তোর নেচার তো এটা ছিলো না। তাসনিম তাচ্ছিল্য ভাবে মনে মনে বলে,,আসলে লিয়ার ভাগ্যটাই সুপ্রসন্ন।এখানে তো লিয়ার কোনো দোষ নেই।জারিফই বা কেনো আমার ভালোবাসাটা বুঝলো না।আজ প্রায় পাঁচ বছরের মত জারিফের সাথে পরিচিত, এই এত সময়ের মধ্যে আমি জারিফের স্পেশাল হয়ে উঠতে পারিনি। জারিফের নজরে আমি পড়িনি।সবই আমার কপাল।আমার ভাগ্য আমার কাছের মানুষের কাছেই আমাকে হারিয়ে দিলো।
জারিফ লিয়া পাশাপাশি চেয়ারে বসে আছে।জারিফের ফ্রেন্ডরাও বসে বিভিন্ন কথা বলছে। শুধুই নির্বাক হয়ে আছে তাসনিম।আড়চোখে একপাশে বসা জারিফের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাসনিম চোখ বন্ধ করে ভাবে,,”আমার মনে হচ্ছে তোর এত কাছে বসে থেকেও এক আলোক বর্ষ দূরত্বে আছি।আর তোর কাছাকাছি বসে আজকে আমার সুন্দর অনুভূতি হচ্ছে না। অনুভূতিরা ম’রে গিয়েছে।আমার চারিদিকটা বিষাক্ততায় ছেয়ে গিয়েছে।সেই বিষের জন্য প্রতিটি সেকেন্ডে সেকেন্ডে আমি যেনো মৃ’ত্যুর স্বাদ নিচ্ছি।তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে সত্যি কারের মৃত্যুই আমাকে যেনো এই কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারে।
আজকের এই মুহূর্তটা জারিফের কাছে বেশি স্পেশাল মনে হচ্ছে,লিয়াকে পাশে পেয়ে।জারিফ এটা চিন্তাই করতে পারেনি।আজকের এই আনন্দঘন পরিবেশের জন্য এবং আলাদা আনন্দের অনুভূতির জন্য,যে স্বর্গময় মনের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে,যা হাজার চেষ্টা করেও অনেকে হয়ত পাবে না।জারিফের চেহারাটার মাঝে আলোকিত,পুলোকিত ভাব বিরাজ করছে। কিন্তু যতটুকু আনন্দ ফিল করছে,তার কিছুটা অপূর্ণতা থেকে যাচ্ছে।লিয়ার এটিটিউটের জন্য। কারন লিয়া অতটুকু উৎফুল্ল অনুভব করছে না। সেটা লিয়ার ফেসই বলে দিচ্ছে।কারন ওরই বড় বোন এখানে থাকায়।যেটা ওদের নরমাল ফ্যামেলি ট্রেডিশনের বিরুদ্ধে।যা লিয়া নিজেকে গিল্টি ফিল করছে।
যেখানে সবাই আনন্দ উৎফুল্ল করছে ,সেখানে তাসনিম এর কাছে প্রত্যেক টা উৎফুল্ল কাঁটার আঘাতের মত হৃদয়ে বিঁধছে। তাসনিম মনে মনে বলছে,হে আল্লাহ,এই পরিস্থিতিতে আমাকে ফেলানোর আগ দিয়ে,আমাকে তুলে নিলে না কেনো?আমার মনে হচ্ছে,আই আ্যলাইভ উইথ আউট সোল।জারিফ কে পাওয়ার আর কোনো অপশনই আমার রইলো না।আমি এত কাছে থেকেও দূরেই রয়ে গেলাম।জারিফ কোনোদিনও আর হবে না আমার?আমার ভালোবাসটা বুঝলো না। তাসনিম মনে মনে তাচ্ছিল্য করে আওড়আয়,,বুঝলো না কি?বলতে হবে,জানলোই না।আমার ভালোবাসাটা জারিফ জানলোই না।
তুমি আর কখনো কি হবে না আমার।
আমি রয়ে যাব কি? একাই তোমার?(২)
দুচোখেরই সামনে তুমি, তবুও ছুঁতে পারিনা।
কেন তুমি আমার ভালোবাসাটা বুঝলে না?(২)
দুচোখেরই সামনে তুমি, তবুও ছুঁতে পারিনা।
এত কাছে থেকে তুমি আমায় বুঝলে না
তুমি কতটা জুড়ে আছো আমার,
তা জানলে না,তা বুঝলে না।
আমার অনুভূতি গুলো পথের ধুলোর মত
উড়ে যায়,তোমায় ছুঁতে পারেনা
আমার আকুতি গুলো চোখের জলের মত
ভেসে যায়,তোমায় কাছে পায়না
দুচোখেরই সামনে তুমি, তবুও ছুঁতে পারিনা।
কেন তুমি আমার ভালোবাসাটা বুঝলে না?(২)
দুচোখেরই সামনে তুমি, তবুও ছুঁতে পারিনা।
এত কাছে থেকে তুমি আমায় বুঝলে না
তুমি কতটা জুড়ে আছো আমার,
তা জানলে না,তা বুঝলে না।(২)
[চলবে…ইন শা আল্লাহ]
(সরি লেইট করে দেওয়ার জন্য।আজকের পর্ব টা মনে হয় একদম হিজিবিজি হয়েছে?আমার বাচ্চা অসুস্থ আমি নিজেও অসুস্থ। কাল থেকেই প্রচন্ড হেডেক হচ্ছে,এই অবস্থায় গল্প সাজাতে গিয়ে হিমশিমে পড়েছি। তারপরেও লিখলাম। রিচেইক করা হয়নি।ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)