#শুধু_তোমাকেই_চাই
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব২৬
“রৌদ্রজ্জ্বল একটি সুন্দর সকাল।শীতের সকালের রোদ একটু বেশিই মিষ্টি হয়। কুয়াশা ভেদ করা মিষ্টি রোদ টা উপভোগ করতেও দারুন লাগে।জানালার সফেদ পর্দা ভেদ করে এক ফালি মিষ্টি রোদ রুমে প্রবেশ করে।মৃদু বাতাসে সফেদ পর্দার সাথে মনে হচ্ছে লুকোচুরি খেলছে রোদ।এই সুন্দর উপভোগ্য সকালটা আজকে আর লিয়ার কাছে ভালো লাগছে না।সুন্দর ঝলমলে সকালটা যেনো লিয়ার ভাগ্যকাশে কালো মেঘে ছেয়ে যায়।লিয়া ভাবতেই পারছে না কিছুক্ষণ আগে নিজ কর্ণগোচর হওয়া কথাগুলো। কথাগুলো শোনার পর লিয়া আর ডায়নিং এ না গিয়ে সোজা ওর রুমে চলে আসে। কান্না গুলো গলায় দলা পাকিয়ে আসছে।বুকের ভেতর উথাল পাতাল ঢেউ শুরু হয়েছে।লিয়ার মাথা হ্যাং হয়ে আসছে।কি করবে বুঝতে পারছে না?তবে লিয়ার মন মস্তিষ্ক এক সাথে বলে উঠছে জারিফ ছাড়া অন্যর নামে রিং ও কখনোই পড়তে পারবে না। ইম্পসিবল।কখনোই লিয়ার দ্বারা এটা সম্ভব নয়।অন্য কারো সাথে এনগেজমেন্ট লিয়া ভাবতেও পারছে না। শ্রাবণের বর্ষণের মত লিয়ার দুচোখে অশ্রু বর্ষণ হতে থাকে।কিছুক্ষণ কেঁদে, বিভিন্ন কিছু চিন্তা ভাবনা করে লিয়া নিজেকে স্থির করে জারিফের কাছে ফোন করবে।
ঘড়ির কাঁটায় সকাল আটটা পঞ্চাশ বাজে।জারিফ মাত্রই ডিসি অফিসের মেইন ফটক দিয়ে ঢুকতে যাবে এমন সময় ফোনে কল আসে।ফোন রিসিভ করে জারিফ ব্যস্ত গলায় বলে,,”লিয়া আমি তোমাকে পরে ফোন করছি কেমন। আমাকে জয়েনিং দিয়ে একটা মিটিং এ এ্যটেইন্ড করতে হবে।”
লিয়া রুদ্ধ শ্বাস নিয়ে ভেজা গলায় বলে,,”আমার আপনার সাথে জরুরী কথা আছে।”
জারিফ হাতে থাকা রিচ ওয়াচে সময় দেখে নিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,,”আচ্ছা বলো। একটু ফাস্ট বলো।”
লিয়া নিরস গলায় বলে,,”আজকে অভ্র এর বাবা মা আসবে সন্ধ্যায়।”
লিয়ার কথার মাঝেই জারিফ কপাল কুঁচকে বলে,,”ডোন্ট ওয়ারি।আই শ্যাল মেক দ্যা বেস্ট ইউজ অফ এ্যনি অপরচুনিটি।লিয়া তুমি একটু ওদিকটা ম্যানেজ করো, প্লিজ।আমি ডিসি স্যারের কাছে ইমার্জেন্সি ছুটির আ্যপ্লিকেশন করবো।আমি দু এক দিনের মধ্যেই চলে আসবো।আপাতত তুমি এখন ওদিকটা সামলে নাও।”
লিয়া উদ্বিগ্ন হয়ে বলে,,”আপনি আমার পুরো কথা টা আগে শুনুন।”
“লিয়া আমি তোমার সাথে মিটিং শেষে কথা বলছি।এখন রাখছি।”
বলে জারিফ ফোন কে’টে দেয়।নয়টার সময় মিটিং থাকায় জারিফ কিছুটা চিন্তিত।এদিকে নয়টা বাজতে চললো।
লিয়া আবার ফোন দেয়।জারিফ রিসিভ করে দ্রুত বলে,,”আমি বলছি তো একটু পরে ব্যাক করছি।”
জারিফের কথাটা শুনে লিয়া আহত হয়।লিয়া পাতলা ঠোঁট নেড়ে অস্থির কন্ঠে বলে,,”আপনি বুঝতে পারছেন না।আমি কিযে কষ্টের মধ্যে আছি।তা আপনাকে বলে বোঝাতে পারবো না।”
জারিফ ছোট করে শ্বাস নিয়ে ভরাট গলায় বলে,,”আমি নিজেও ভালো নেই লিয়া।তুমি আমার দিকটা একটু ভাবো। প্রথম দিন নিজেকে খুব ভালোভাবে প্রেজেন্ট করবো, সেই নিয়ে কত ভাবনা ছিলো আমার। কিন্তু এখন আমার কাছে এসব কিছু তুচ্ছ মনে হচ্ছে।বাট আমি পারছিনা এখান থেকে এসব রেখে চলে যেতে,আর না পারছি ভালোভাবে থাকতে। প্লিজ,জান মিটিং শেষ হলেই আমি ব্যাক করবো।”
লিয়া অভিমানী সুরে বলে,,”ঠিক আছে।আপনি আমাকে ইম্পর্ট্যান্স না দিয়ে আপনার কাজ কে ইম্পর্ট্যান্স দিলেন তো।এরপর যদি আমাকে হারান তারজন্য কিন্তু আমি দায়ী থাকবো না,। সেইজন্য শুধু আপনি দায়ী থাকবেন।আমাকে হারালে,আপনি নিজে আফসোস করবেন কোনো একদিন।আজ নিজে ইচ্ছায়,আমাকে ছাড়লেন তো।”
জারিফ লিয়ার কথা শুনে বুঝতে পারে,লিয়া অভিমান করে এসব বলছে।জারিফ ফোঁস করে নিঃশ্বাস নিয়ে শান্ত গলায় বলে,,”তোমাকে ছাড়ার সাহস আমার নেই।আর না কখনো এই সাহস আমি স্বইচ্ছায় করবো বা বেঁচে থাকতে।তবে এখন বাস্তবতার কাছে আমাকে কিছুটা হলেও হার মানতে হচ্ছে।আমি সত্যি এখন নিরুপায়।আর চাকরি হলো আমার স্ট্যাটাস আর আমার স্ট্যাটাস মানেই তুমি বা তোমাকে পাওয়া।
আই প্রমিজ ওয়ান আওয়ার পরে আমি তোমার সাথে কথা বলছি।ওয়েট,ট্রাস্ট মি,দ্যা ইন্ড উইল বি বিউটিফুল,ইন শা আল্লাহ।”
লিয়া আর কিছু না বলে ফোন কে’টে দেয়।লিয়ার মনে অভিমান জমে।
ওদিকে জারিফ কারো সাথে ফোনে কথা বলে।শেষ কথায় বলে,এখনই যেতে হবে,আর যে করেই হোক সব কিছু ঠিক রাখতে হবে।জারিফ মিটিং এ যায় তবে ফিফটিন মিনিটস লেইট করে। ডিসি স্যার সহ উপস্থিত সকলেই বিষয়টা একটু দৃষ্টি কটু ভাবে দেখে। প্রথম দিন তারপরে লেইট বিষয়টা নিয়ে তো কেউ কেউ আড়ালে হাসি ঠাট্টা করছে।
রাজিয়া সুলতানা লিয়ার রুমে এসে দেখেন,লিয়া কান্না করছে।লিয়ার সামনে দাঁড়াতেই,লিয়া মাথা তুলে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে ভেজা গলায় বলে,,”আম্মু আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি,আমি কিন্তু কিছুতেই রিং টিং পড়তে পারবো না।”
রাজিয়া সুলতানা হাত দিয়ে লিয়ার গাল বেয়ে পড়া পানিটুকু মুছে দিয়ে মুখাবয়বে দুশ্চিন্তার ছাপ নিয়ে গম্ভীর গলায় বলেন,,”আমি আছি তো।আমি কিছু করে আপাতত রিং পড়ানো এসব আটকাবো।তুই টেনশন করিস না।ওনারা আসছেন,এসে ঘুরে যাবেন বাকিটা আমি সামলে নেবো।”
কিয়ৎক্ষন থেমে রাজিয়া সুলতানা শান্ত স্বরে বলেন,,”জারিফকে কি কিছু বলেছিস?”
লিয়া নিভু নিভু স্বরে বলে,,”স্যারকে পুরোটা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে ওনারা আসবেন সেই কথা।আর এখানে স্যার ই বা কি করবেন?উনি তো যা করার কালকে করেছেন,বাবা মাকে পাঠিয়েছেন।
থেমে আবার আবেগী গলায় বলে,,”এখন তো তোমাদের উচিত স্যারের বাসায় যাওয়া,মানে হ্যা সম্মতি দেওয়া। কিন্তু আব্বু তো আর সেটা করছে না।”
শেষের কথাটা লিয়া হতাশ হয়ে বলে।রাজিয়া সুলতানা ঠোঁট প্রসারিত করে বলেন,,”আসলে তোর আব্বু যেহেতু অভ্রের বাবার কাছে ওয়ার্ড দিয়ে দিয়েছিলো, সেইজন্য পরিস্থিতি টা আজ তোদের দুজনের অনুকূলে না থেকে প্রতিকূলে চলে গিয়েছে।তোর আব্বু কমিটমেন্ট ভাঙ্গতে নারাজ।তবে আমার মনে হয় কিছু সময় হলে,তোর আব্বু নিজেও বুঝতে পারবে যে, এখানে কমিটমেন্ট এর থেকে বেশি বড় তোর আর জারিফের জানাশোনা।তুই চিন্তা করিস না যে করেই হোক না কেনো আমি রিং পড়াতে নিষেধ করবো।”
এনামুল খাঁন অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।এমন সময় রাজিয়া সুলতানা এসে মৃদু আওয়াজে বলেন,,
“লিয়া তো রিং পড়ানোর কথা শুনে খুব কান্নাকাটি করছে। লিয়া কিছুতেই রাজি হচ্ছে না।তুমি কি মেয়েকে জোর করবে?”
এনামুল খাঁন কপাল কুঁচকে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবেন,,মেয়েকে তো আমি জোর করতে পারি না।তবে মেয়ের এই আবেগ কাটানোর জন্য তো কিছু করতে পারি।আমার মনে হয়,জারিফের সাথে কোনো যোগাযোগ না থাকলে লিয়া এই আবেগ থেকে সহজেই বেরিয়ে আসবে।আর লিয়া এখনো প্রতিনিয়ত জারিফের সাথে যোগাযোগ রাখছে।
এসব ভেবে নিয়ে স্ত্রীর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে এনামুল খাঁন লিয়ার রুমের দিকে যান। পিছন পিছন রাজিয়া সুলতানাও যান।দরজার দাড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে এনামুল খাঁন গলা খাঁকারি দিয়ে গম্ভীরভাবে বলেন,,”লিয়া।”
লিয়া বিছানায় বসা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে মৃদু আওয়াজে বলে,,”হ্যা আব্বু আসো।”
এনামুল খাঁন ভিতরে গিয়ে গম্ভীর গলায় বলেন,,”লিয়া তুমি তোমার আম্মুর কাছে তোমার ফোন দিয়ে দাও।”
লিয়া কোনো কথা না বলে ফোন টা রাজিয়া সুলতানার হাতে দিয়ে দেয়। লিয়া বুঝতে পারে,যাতে করে জারিফের সাথে কোনো প্রকারের যোগাযোগ না রাখতে পারে সেই ব্যবস্থা।
এনামুল খাঁন আর কোনো বাক্য ব্যয় না করে রুম থেকে প্রস্থান করেন। উনি ভাবেন,সময় গেলে লিয়া অভ্র কে মেনে নিবে।আর এসব মোহ টোহ আপনা আপনি কে’টে যাবে।
জারিফের বিভিন্ন টেনশন হচ্ছে ঠিক মতো মন দিতে পারছে না মিটিং এ।মাঝে মাঝেই আ্যবসেন্ট মাইন্ড হয়ে যাচ্ছে। মাথায় একটাই চিন্তা যে করেই হোক ছুটি নিয়ে ইমার্জেন্সি ময়মনসিংহে যাওয়া।জারিফের চিন্তার মধ্যেই ডিসি স্যার জারিফ কে উদ্দেশ্য করে বলেন,আপনি মিস্টার আয়মান জারিফ, আপনার দায়িত্ব থাকবে স্মাগলিং এর কেসটার সঠিক তদন্ত করা। বেনাপোল সীমান্তে স্মাগলিং চলছে।সঠিক তদন্তের অভাবে দোষীকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না।আমি চাই আগামী সাত দিনের মধ্যে আপনি এই কেসটার সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি করবেন।
জারিফ অস্ফুট স্বরে বলে,,”ইয়েস স্যার।”
মিটিং শেষে জারিফ ওর অফিস কক্ষে এসে চেয়ারে বসে গভীর চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।এদিকে বাড়ি যাওয়ার কোনো উপায়ই থাকলো না।তার উপরে একটা বড় দায়িত্ব পড়লো।চাকরি আর দেশের স্বার্থে কাজটা ওকে করতেই হবে।ওদিকে লিয়ার নম্বরে কল দিতেই, মেয়েলি মিষ্টি ভয়েজ ভেসে আসছে, দুঃখিত আপনি যে নম্বরে ডায়াল করেছেন তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পরে ট্রাই করুন।
আধা ঘন্টা যাবৎ জারিফ লিয়ার কাছে কল দিচ্ছে,বাট উক্ত ভয়েজই আসছে।জারিফ মনে মনে ভাবে লিয়া হয়ত অভিমান করেই ফোন বন্ধ রেখেছে।এদিকে চাকরি ফেলে জারিফ চলে যেতে পারছে না।কারন বাস্তবতা বড় কঠিন আর নিষ্ঠুর হয়।চাকরি ফেলে যাওয়ার কথা ভাবতেই চোখের সামনে ভেসে আসে, অসুস্থ মায়ের মায়াময় মুখ,কয়দিন পর রিট্রায়ার্ড করবে সংসারের ঘানি টেনে আসা বাবার মুখ, ছোট বোনের হাস্যোজ্জ্বল প্রাণবন্ত মুখ।জারিফকে তাদের জন্য কিছু করতে হবে।মা,বাবা,বোনকে ভালো রাখার দায়িত্ব জারিফের উপর।এসব ভেবে জারিফ দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করে চেয়ারে গা এলিয়ে দেয়।চোখ বন্ধ করতেই লিয়ার ইন্নোসেন্ট মায়াবী ফেস ভেসে আসে।জারিফ অস্ফুট স্বরে ঠোঁট আওড়িয়ে বলে,,”অভিমান করো না লিয়া,আমি যত দ্রুত সম্ভব আসার ট্রাই করবো।এবার আর তোমাকে রেখে আসবো না,আমার সাথে রাখার ব্যবস্থা করেই আমার কাছে রাখবো তোমাকে।তুমি আমার প্রেম নও, তুমি আমার মায়ায় জড়ানো ভালোবাসা।যা কিছু আমার জন্য জরুরী,তার থেকেও বেশী জরুরী তুমি।আই ওয়ান্ট আ লট,বাট নীড অনলি ইউ।লিয়া প্লিজ ফোনটা ওপেন করো।
যদিও জারিফের উপর লিয়ার কিছুটা অভিমান জমেছে, তারপরেও জারিফের সাথে কথা বলতে না পেরে লিয়ার কষ্টটা দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।লিয়ার নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। সৃষ্টি কর্তার কাছে বারবার প্রে করছে,সব কিছু আগের মত হয়ে যাওয়ার জন্য।
সন্ধ্যার পর অভ্রর বাবা-মা আসে।কয়েক রকমের মিষ্টান্ন, ফলমূল,ইলিশ মাছ নিয়ে আসেন।ড্রয়িংরুমে অভ্রর বাবা মা, জান্নাত বেগম আর এনামুল খাঁন বসে কথা বার্তা বলছেন। অভ্রর মায়ের গলায়,হাতে অলংকারে ভরপুর ।হাতে হিরের আংটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেশ সৌখিন মহিলা। বলাবাহুল্য দেখতে,শুনতে কথা বার্তায় বেশ স্মার্ট। রাজিয়া সুলতানা সৌজন্যতার খ্যাতিরে কুশলাদি বিনিময় করেন। অভ্রর মা লিয়ার কথা বলতেই, এনামুল খাঁন ইশারা করে রাজিয়া সুলতানা কে লিয়াকে এখানে আনতে বলেন।
রাজিয়া সুলতানা গিয়ে ম্লান গলায় বলেন,,”লিয়া সৌজন্যতার খ্যাতিরে তোকে তো একবার ওখানে যেতে হবে।”
কথাটা শুনে লিয়া কপাল কুঁচকে মায়ের দিকে শান্ত চাহনি নিক্ষেপ করে দৃঢ় গলায় বলে,,”অসম্ভব ।আমি কিছুতেই ওখানে যেতে পারবো না। সৌজন্যেতার খ্যাতিরে কখনো জেনে শুনে বি’ষ পান করা যায় না।আর আমার কাছে ওখানে যাওয়া ফর্মালিটিজ মেইনটেইন করা মৃ”ত্যু সমতুল্য-ই।”
রাজিয়া সুলতানা হতাশ গলায় বলেন,,”এভাবে বলিস না।আমি তোকে কথা দিচ্ছি তুই যাবি কুশলাদি বিনিময় করে দেন চলে আসবি এর বেশি কিছু নয়।”
লিয়া অসহায় ফেস করে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,,”আম্মু তুমি এরকম বলো না,প্লিজ।ঠিক আর দুই দিন পর তুমিও আব্বুর মত বলবে, সৌজন্যতার খ্যাতিরে বিয়েটা করেনে।”
রাজিয়া সুলতানা নির্বিকার ভাবে লিয়ার দিকে চেয়ে অস্ফুট স্বরে বলে,,”লিয়া,এসব কেনো বলছিস তা আমি বুঝতে পারছি।তবে আমার উপর বিশ্বাস রাখ।”
লিয়া অসহায় ফেস করে করুণ গলায় বলে,,”তুমি বুঝতে পারছো না আমার মনের অবস্থা।”
রাজিয়া সুলতানা ভ্রু কুঁচকে গম্ভীরভাবে বলেন,,”লিয়া আমার থেকে তোকে কেউ বেশি বুঝবে না।আমি তোকে বুঝি বলেই কথাটা বলছি। ভদ্রতার খ্যাতিরে একজনের সাথে সৌজন্যতা রক্ষা করতে সমস্যা কোথায়?আর আমি বলছি তো, এনগেজ করতে আমি দেবনা।সেটা যেভাবেই হোক না কেন।আটকানোর দায়িত্ব আমার।”
লিয়া আর বাক্য ব্যয় না করে মুখটা মলিন করেই মায়ের সাথে যায়।লিয়া গিয়ে মাথা নিচু করে মৃদু আওয়াজে সালাম দেয়।
অভ্রর মা লিয়াকে দেখে মিষ্টি হেসে উত্তেজিত কন্ঠে বলে,,ওয়াও! এরকম একটা মেয়েই আমি খুঁজছিলাম।আমার প্রাসাদে এরকম একটা মিষ্টি মেয়েকে চাচ্ছিলাম। আমার প্রাসাদে শো পিস হিসেবে রাখবো তোমাকে।মামনি আমার পাশে আসো।”
কথাটা বলে ইশারায় লিয়াকে উনার পাশে বসতে বলে। লিয়া চোখে মুখে বিরক্ত নিয়ে ইতস্তত বোধ করতে থাকে।তখন ভদ্র মহিলা উঠে গিয়ে লিয়ার হাত ধরে ওনার পাশে বসান।লিয়া কার্টেসি রক্ষার্থে চুপচাপ বসে থাকে।
অভ্রর মা হালকা হেসে মৃদু কন্ঠে লিয়াকে শুধালেন,,
“মামনি পরীক্ষা কেমন হয়েছে?আর পরীক্ষা এটা কোনো বিষয় নয়,আমাদের যথেষ্ট সম্পদ আছে।তুমি তো চাকরি বাকরি করবে না।তাই এটা কোনো ব্যাপার ই নয়।”
লিয়া কথাটা শুনে বোকা বনে যায়। ভদ্র মহিলাটি চোখে মুখে উৎসুকতা নিয়ে লিয়াকে পরখ করতে থাকে।কিছু একটা ভেবে মুখে গম্ভীরতার ছাপ নিয়ে স্পষ্ট গলায় বলেন,,”মামনি তোমার কি কোনো কারনে মন খা’রাপ?”না মানে তোমার মুখটা কেমন যেনো মলিন লাগছে।”
অভ্রর বাবা গলা খাঁকারি দিয়ে বলেন,,”ছোট মানুষ বিয়ের কথাবার্তা চলছে তাই হয়তো মন খা’রাপ করছে।তবে মামনি তুমি মন খা’রাপ করো না।আমরা তোমাকে নিজের মেয়ের মতই দেখবো।আমরা পুত্র বধূ হিসেবে নয় তোমাকে আমাদের মেয়ে হিসেবে দেখবো।”
কথাটা শুনে এনামুল খাঁন মুগ্ধ হন।উনি মনে মনে ভাবেন,আমি হয়তো কোনো ভুল করছিনা।আমার ধারনা এই পরিবারেই আমার মেয়ে সব থেকে বেশি হ্যাপি থাকবে।
অভ্রর বাবা আবার গমগমে স্বরে বলেন,,”আমার রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি।আমার বাড়িতে থাকলে যে কারোরই মন ভালো থাকবে,আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।আমার অত বড় বাড়িতে সব সময় আপনার মেয়ে হেসে খেলে বেড়াবে।আপনি দেখে নিয়েন ভাই।মামনির যখন যা ইচ্ছে হবে অর্ডার করার সাথে সাথেই সার্ভেন্টরা মূহূর্তেই হাজির করবে।যখন শপিং করতে মন চাইবে কোনো সমস্যা নেই অভ্র নিয়ে যাবে। শপিং, রেস্টুরেন্টে যাওয়া, ঘুরাঘুরি সব কিছু প্রাণ খুলে করবে কোনো বাঁধা নিষেধ থাকবে না।আর আমার স্ত্রী নিজেও খুব সৌখিন, শপিং করা আমার স্ত্রীর প্যাশন।আর বেশিরভাগ মেয়েরাই তো শপিং, ঘুরাঘুরি এসব করতে পছন্দ করে। তাই বলছি আমাদের কাছে থাকলে মন খা’রাপ করার কোনো স্কোপ-ই থাকবে না।”
এরমধ্যে রাজিয়া সুলতানা নাস্তা নিয়ে আসেন। অভ্রর মা শান্ত গলায় বলেন,,”ভাবী আপনি এত ব্যস্ত হবেন না। অভ্রের কাছ থেকে লিয়ার কথা শুনে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো,তাই আসা।আর এসে এখন আপনাদের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে,খুব ভালো লাগছে।”
এনামুল খাঁন হালকা কেশে বলেন,,”অভ্র কেমন আছে?
অভ্রর বাবা একটু নড়েচড়ে বসে গম্ভীর কন্ঠে বলেন,,
“অভ্র তো আমেরিকাতে বায়িং অর্ডার আনার জন্য কালকের ফ্লাইটে যাবে।”
এনামুল খাঁন ছোট করে বলেন,,”ওহ্।”
অভ্রর মা উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন,,”তো আপনারা চাইলে আজকে রিং পড়িয়ে রাখি।আর আমার হবু বৌমার মুখ দেখে আমাকে তো কিছু দিতেই হবে।আমি সেই ভাবেই এসেছি।”
কথাটা বলে ব্যাগ খুলে একটা রিং বক্স বের করতেই হিরের আংটি মৃদু আলো ছড়াতে থাকে।আর ওদিকে কথাটা শোনার সাথে সাথে লিয়ার বুকের ভেতর ছ্যাত করে উঠে।লিয়া মাথা তুলে ওর আম্মুর দিকে তাকায়।রাজিয়া সুলতানা লিয়ার দিকে তাকিয়ে ইশারায় লিয়াকে আশ্বাস দিয়ে চুপ থাকতে বলে।
রাজিয়া সুলতানা স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে বেশ ভদ্র গলায় বলেন,,”আসলে ভাবী আমি বলছি যে এত তাড়াহুড়ার কি আছে?না মানে সামনে তো লিয়ার এডমিশন।লিয়ার ইচ্ছে মেডিকেলে পড়ার।লিয়া পড়াশোনা নিয়ে বেশ চাপের মধ্যে আছে।এই সময় এসব কিছুর প্রভাব লিয়ার পড়াশোনার উপর পড়তে পারে।তাই আমি বলছি যে,এসব বিষয় নিয়ে পরে আলোচনা সাপেক্ষে আগানো যাবে।”
অভ্রর মা বাবা নিশ্চুপ রয়। এনামুল খাঁন মনে মনে ভাবেন,,লিয়ার আম্মু যে খুব বিচক্ষণতার সাথে বিষয়টা ক্যান্সেল করতে চাচ্ছে তা আমি নিজেও বুঝতে পারছি।তবে লিয়াও যেহেতু রাজি হচ্ছে না,এই মুহূর্তে জোর করে কিছু করা ঠিক হবে না।মেয়ে হয়তো আমার কথা মেনে নিলো, কিন্তু আমার উপর অভিমান করে থাকতে পারে,সারা জীবন আমার উপরে ওর মনে ক্ষোভ থাকতে পারে।তাই এই মুহূর্তে মেয়েকে ফোর্স করা ঠিক হবে না।তবে ও যেহেতু ছোট ওর ভালো মন্দ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বয়স এখনো হয়নি।তাই আমার উচিত মেয়েকে সময় দেওয়া,সঠিক বুঝটা আসার জন্য।এই সঠিক বুঝ আসার জন্য আমাকে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।আর অনুকূল পরিবেশ টা এখানে থাকলে কখনো হবে না।মেয়ের এই অল্প বয়সের আবেগ,মোহ কাটানোর জন্য আমাকে দ্রুত এখান থেকে চলে যেতে হবে।পরিবেশ টা চেঞ্জ করা জরুরী।
অভ্রর বাবা মাথা ঝেড়ে শান্ত গলায় বলেন,,”আরে ভাবি পড়া শোনা করবে সমস্যা কোথায়?আমরা আমাদের বাড়ির বউকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবো।”
এনামুল খাঁন গলা ঝেড়ে বলতে থাকেন,,”আসলে ভাইজান আমিও বলছি যে,আপনাদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। আপনারা আসবেন আমরাও যাবো, এইভাবে চলতে থাকুক।লিয়ার ভর্তি শেষে আমরা না হয় আগাবো।”
লিয়া ওর আব্বুর হঠাৎ বলা কথাটায় একটু অবাক হয়।তারপরেও মনে একটু স্বস্তি পায়। জান্নাত বেগম লিয়াকে উদ্দেশ্য করে রুমে যেতে বলতেই।লিয়া দ্রুত ওখান থেকে প্রস্থান করে রুমে যায়।লিয়া প্রথমে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে মহান রবের কাছে।তারপরে মায়ের উপরে সন্তুষ্ট হয়।লিয়া মনে মনে ভাবে, আম্মু যদি সাহস করে, আব্বুর সামনে ওনাদেরকে কথাগুলো না বলতো।তাহলে এনগেজমেন্টটা ক্যান্সেল হতো না।দম বন্ধকর পরিস্থিতি থেকে লিয়া আপাতত বের হতে পেরে কিছুটা খুশি।লিয়া ভাবে,যাক সময় পাওয়া গেলো তো।এখন বাকিটা স্যার হ্যান্ডেল করবে।স্যার এসে সবকিছু ঠিক করবে।
রাতে ডিনার করে অভ্রর বাবা মা চলে যায়।
রাত বারোটা বাজতে চললো জারিফের দুচোখে ঘুম নেই।লিয়ার সাথে কথা বলতে না পেরে অনেক টেনশন হচ্ছে।ফোনের লক স্ক্রিনে থাকা লিয়ার ছবিটার দিকে তাকিয়ে জারিফ মনে মনে আওড়ায়,, প্লিজ লিয়া অভিমান করে থেকো না।আমি জানিনা সুখ কি?তবে তোমার নিষ্পাপ মুখটা দেখলে আমার মন আনন্দে ভরে উঠে।তোমার ভয়েজ শুনলে আমার মধ্যে এক আকাশ সমান ভালোলাগা কাজ করে।আমার মন খা’রাপের মেডিসিন তুমি।তোমার সাথে কথা না বললে,আমার নিজেকে এলোমেলো লাগে।আমার নিজের কাছে মনে হচ্ছে,আমি বেঁচে আছি,তবে আমার জীবন কই?
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে দাঁড়িয়ে,হাস্যজ্জ্বল মুখে,কপালের উপর কিছু চুল পড়ে আছে।ফোনে থাকা এমন একটা ছবির দিকে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জারিফ। জয়নুল আবেদীন পার্কে গিয়ে সেদিন অনেকগুলো ছবি তুলে ছিলো, তারমধ্যে একটা।জারিফ একদৃষ্টে ছবির দিকে চেয়ে অস্ফুট স্বরে বলে,দূরে আছো তো কি হয়েছে?প্রতিটা মুহূর্তে আমি তো তোমাকেই অনুভব করি।আর তোমাকেই বড্ড ভালোবাসি,আই মিস ইউ জান।তুমি আমার জীবনে না আসলে আমি জানতাম না যে,আমি কাউকে এতটা ভালোবাসতে পারি।আই ওয়ান্ট অনলি ইউ।
সূর্য অস্ত যাওয়া মানে দিন শেষ নয়।নতুন দিনের সূচনা। জীবনে দুঃখ কষ্ট আসবেই। দুঃখ না থাকলে হয়তো সুখের কোনো অনুভূতি থাকতো না।জীবন বড়ই রঙ্গমঞ্চ কাকে কখন কোথায় নিয়ে দাঁড়ায় করায় তা কেউ বলতে পারে না।ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে তাসনিম দুই হাত বুকে গুঁজে।গায়ের উপর হালকা কারুকার্য করা পাতলা শাল জড়ানো।নীরবতা কতটা সুন্দর সেটা বোঝা যায় মধ্য রাতের চারিদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজ করা পরিবেশ টা দেখলে। অন্ধকারে নিস্তব্ধতা বিরাজ করা পরিবেশটা তাসনিমের কাছে ভালো লাগছে। তাসনিম মনে মনে ভাবে,ইশ!কতই না ভালো হতো যদি স্মৃতি শক্তি টা হারিয়ে যেতো।মুছে যেতো যদি কিছু স্মৃতি তবে বেঁচে থাকাটা আমার জন্য বড়ই সহজ হতো,এতটা কষ্ট পেতে হতো না।আর আমি আমার কষ্টটা কারো কাছে শেয়ারও করতে পারছি না।আমি যার মায়ায় আবদ্ধ,সে অন্যকারো মায়ায় আটকানো।চাইলেই পারছিনা মায়া থেকে বেড়িয়ে আসতে।এমন একজন কে ভালোবেসে ফেলেছি,যাকে চাওয়াটা অন্যায় আর ভুলে যাওয়াটাও অসম্ভব। তবে যে করেই হোক এই অসম্ভব কে আমাকে সম্ভব করতে হবে।
তাসনিম আফসোসের সুরে বিড়বিড় করে বলে,, উফ্!যদি কল্পনা গুলো বাস্তব হতো তাহলে বদলে যেতো হাজারো জীবনের গল্প।তবে কল্পনা শুধু গল্প উপন্যাসেই মানায়, বাস্তব জীবনে নয়। আর আমাকে মানতে হবে বাস্তবতা কখনো সুন্দর হয়না।আর সুন্দর গল্পেও বাস্তবতা থাকে না।এই পৃথিবীতে চাওয়ার ভাগ্য সবারই থাকলেও,পাওয়ার ভাগ্য সবার থাকে না।আমার ভাগ্যাকাশেও সে নেই।জীবনের সব চাওয়া পূরণ হতে হবে এমন নয়,কিছু ব্যাথা হাসিমুখে মেনে নিতেও হয়।
অন্যকারো প্রতি অভিযোগ রাখার চেয়ে,নিজেকে বদলে নেওয়াই বেটার হবে।”
বিছানায় শুয়ে লিয়া এপাশ ওপাশ করতে থাকে।কিছুতেই দুচোখে ঘুম আসছে না। প্রচন্ড জারিফের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে।ফোন তো সেই সকালেই আম্মুর কাছ থেকে আব্বু নিয়ে নিয়েছে। মনের মধ্যে প্রচন্ড অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে।লিয়া উঠে ব্যালকনিতে গিয়ে দুই হাত বুকে গুঁজে দাঁড়িয়ে অন্ধকারে দৃষ্টি দিয়ে জারিফের কথা স্মরণ করতে থাকে।লিয়া অস্ফুট স্বরে বলে, মিস্টার আয়মান জারিফ আপনাকে খুব করে মনে পড়ছে। ইচ্ছে করছে আপনি যেখানে আছেন সেখানে গিয়ে জড়িয়ে ধরি বলি, আপনাকে ছাড়া থাকতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আপনার সাথে কথা বলতে না পারায় আমার দম আটকে আসছে।আমার চোখের পলকে পলকে আপনাকে অনুভব করছি।আপনিও কি একই ভাবে আমাকে অনুভব করছেন? সব কিছু থাকা সত্ত্বেও মনে হচ্ছে কিছুই যেনো নেই।আমি আপনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।আমি প্রতিনিয়ত ভাবছি,আপনি হুট করে এসে আমাকে চমকে দেবেন।আমার চোখের কোণের জমানো জল মুছে দিয়ে, আপনার প্রশস্ত বুকে আমাকে জড়িয়ে নিবেন।তবে আপনি জানেন কি?অপেক্ষার সময় যেনো কাটতেই চাইছে না, প্রতিটা সেকেন্ড যেনো বছরের সমান মনে হচ্ছে আমার কাছে।কেনো যে আমাদের দুজনের জন্য এমন একটা বাজে সময় এলো?খুব জরুরী ছিলো কি এই খা’রাপ সময় আসার?এখন মনে হচ্ছে ঘড়ির কাঁটায় কিজন্য ফুল না থেকে কাঁটা থাকে।কিছু কিছু সময় কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে।যেই সময়টার মধ্য দিয়ে আমি যাচ্ছি।আপনাকে ছাড়া আমার কিছুই ভালো লাগছে না,নিজেকে শুণ্য লাগছে।বড্ড একলা লাগছে।
লিয়ার দুচোখে পানি টলমল করতে থাকে।লিয়া অস্ফুট স্বরে বিড়বিড় করে গায়,,তুমি চোখের আড়াল হলে, খুঁজে ম’রে এই মন।তুমি ছাড়া লাগে না ভালো,একলা এই জীবন।
[চলবে…ইন শা আল্লাহ]
(গল্প টা পঁচিশ পর্বের মধ্যেই শেষ করতে চেয়েছিলাম।বাট হলো না 🥺আবার ডিসেম্বার মাস চলে আসছে।আমার বাড়ি যাওয়ার দিন ঘনিয়ে আসছে।তাই আমি কিছুটা টেনস।কজ বাড়ি গেলে লিখতে পারবো না।এর পর থেকে একটু দ্রুতই আগায়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ সবাইকে।)