#শুধু_তোমাকেই_চাই
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব৩২
“গ্রীষ্মের দাবদাহ চলছে।দুপুর হতে না হতেই সূর্যের প্রখরতা বেশি থাকায় পৃথিবী যেনো হাঁপিয়ে উঠছে। সাথে সকল প্রাণীকুলও অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে গরমে।কলেজের মেইন গেট দিয়ে বের হয়ে পিচঢালা রাস্তার একপাশে ব্যাগ কাঁধে দাঁড়িয়ে আছে লিয়া।কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে।এক আঙ্গুল দিয়ে কপালের ঘর্মাক্ত পানি টুকু মুছে ফেলার বৃথা চেষ্টা করে লিয়া। বেলা এগারোটা হবে হয়তো।আজ দুই সপ্তাহের বেশি হবে ক্লাস শুরু হয়েছে।তবে লিয়া প্রথম সপ্তাহে কলেজে আসেনি। আজ কে দিয়ে চারদিন হবে ক্লাস করা। মাইক্রো ইকোনমিক্স আজকে প্রথম ক্লাস ছিলো। প্রথম ক্লাস টা করতেই লিয়ার শরীর খা’রাপ লাগতে থাকে। প্রচন্ড হেডেক আর অস্থির লাগছিলো গরমে।পুরো পিরিয়ড এর সময় ধরেই লিয়া হাঁসফাঁস করছিলো। অবশেষে ক্লাস টা শেষ হতেই সিদ্ধান্ত নেয় বাসায় ফিরবে বাকি ক্লাস না করেই। ড্রাইভারের আসার কথা বারোটার পর।এদিকে অসুস্থ বোধ করায় লিয়া অতটা সময় ওয়েট না করে সিনএজি করেই চাওয়ার কথা ভাবে।মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অবশেষে সিএনজির দেখা মিলে।সিএনজি চালক কে উদ্দেশ্য করে লিয়া বলে,,”ক্যান্টনমেন্ট যাবেন?”
চালকটি ঘাড় নাড়িয়ে হ্যা সম্মতি দিতেই লিয়া উঠে বসে। কাঁধ থেকে ব্যাগ টা নামিয়ে কোলের উপর রাখে।হাইওয়ে দিয়ে সিএনজি যাচ্ছে।ঢাকাগামী সহ দূরপাল্লার বড় বড় গাড়ি শা শা শব্দে ছুটে চলছে। বিভিন্ন গাড়ির শব্দে লিয়ার মাথাটা আরো বেশি ধরে আসছে।
জারিফ অফিসে ওর কক্ষে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে ছিলো।এমন সময় ওর পার্সোনাল এ্যসিস্ট্যান্ট কম্পিউটার অপারেটর রাইমা দরজার সামনে এসে কোমল গলায় বলে,,”মে আই কাম ইন স্যার?”
জারিফ সোজা হয়ে বসে শান্ত কন্ঠে বলে,,”ইয়েস।”
মিষ্টি কালারের থ্রি পিস পরনে। ঠোঁটে গাঢ় করে লাল লিপস্টিক দেওয়া, কাঁধ সমান চুলগুলো ঝুঁটি করে বাঁধা। লম্বা চওড়া, ফর্সা দেখলেই যে কেউ এক বাক্যে সুন্দরী বলতে বাধ্য হবে।হিলে খটখট আওয়াজ করে ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ঝুলিয়ে ভেতরে আসতে থাকে।একটা ফাইল টেবিলের উপর জারিফের সামনে রেখে বলে,,”স্যার,চিঠি প্রস্তুত করা কমপ্লিট।”
জারিফ ফাইলটা ওপেন করে চোখ বুলাতে থাকে।আর রাইমা আড়চোখে জারিফ কে দেখতে থাকে।আজ তিনমাসের বেশি হবে জারিফ কে দেখছে।যত দিন যাচ্ছে ততই জারিফের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।এই যে জারিফ কপাল কুঁচকে দৃষ্টি সরু করে ফাইলটা দেখছে।রাইমার কাছে মনে হচ্ছে স্যারের সব কিছুতেই স্মার্টনেস কাজ করে।রাইমা একদৃষ্টে মুগ্ধ নয়নে জারিফকে পরখ করছে।তবে আজ নতুন নয়।লুকিয়ে লুকিয়ে জারিফকে দেখা ওর হ্যাবিটে পরিণত হয়েছে।রাইমা দিনকে দিন জারিফের উপর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ছে।রাইমা দেখতে কথা বার্তায় ওভার স্মার্ট। লুকিং বিউটিফুল।যেকোনো পুরুষকে এট্রাক্টিভ করার মতো লুক।রাইমা জারিফের দিকে তাকিয়ে ছোট করে শ্বাস নিয়ে মনে মনে আওড়ায়,,কত ছেলেই প্রপোজাল দেয়।ইভেন এর আগের এক স্যার ছিলেন তিনি তো সোজা বিয়ের প্রপোজাল দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি তাদেরকে পাত্তা দেয়নি।অথচ আপনাকে ইমপ্রেস করার জন্য কত কিছু করি।আপনি মনে হয় সেসব বুঝেনই না।
রাইমার এসব ভাবনার মাঝেই জারিফ হালকা কেশে গম্ভীর গলায় বলে,,”ঠিক আছে,মিস রাইমা। আপনি এখন আসতে পারেন।”
জারিফের কথাটা কর্ণগোচর হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছাতেই রাইমা কিঞ্চিত বিরক্ত হয়। বিড়বিড় করে বলে,কোথায় একটু মিষ্টি করে বসতে বলবে তা না করে শুধু একটা বাক্যই ইউজ করে আপনি এবার আসতে পারেন।স্যারের ডিকশনারিতে এই কয়টা শব্দ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ আর আমার জন্য নেই।
জারিফ রাইমার হাবভাব দেখে প্রচন্ড বি’রক্ত হয়।এই মেয়ে কাজের অজুহাত দিয়ে হুটহাট জারিফের রুমে চলে আসে।জারিফের পাশের রুমে রাইমা বসে।আর পদাধিকার বলে জারিফের রুমে আসতে বাঁধা নিষেধ নেই।এইজন্য জারিফ চাইলেও সহজে কিছুই বলতে পারে না। অফিসিয়াল চিঠিপত্র,সিডিউল ,মডিউল তৈরি করার দায়িত্ব রাইমার।
রাইমা শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সামনে বসা মানবের দিকে।তবে এই কয়মাসে রাইমা ভালো করেই বুঝতে পেরেছে।এই মানবটি তার প্রতি কখনো মুগ্ধ চাহনি দেওয়া তো দূরের কথা ভালো করে মুখের দিকে দৃষ্টিপাত-ই করে না।জারিফ সব সময় স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলে রাইমার সাথে।রাইমা চলে আসতে যাবে এমন সময় জারিফের মোবাইলের স্ক্রিনে আলো জ্বলে উঠে মেসেজ আসার জন্য। মোবাইল টা টেবিলের উপর ছিলো। মোবাইলের স্ক্রিনে আলো জ্বলতেই লক স্ক্রীনে হাস্যোজ্জ্বল মুখে এক রমণীর পিক দেখে তিরতির করে রাইমার রাগের পারদ টা বাড়তে থাকে। শুধু ছবিই নয় লক স্ক্রীনে ইংলিশে আরো লেখা মাই সোল লিয়া।এই নিয়ে আরো দুইবার একইভাবে লিয়ার ছবিটা দেখেছে রাইমা।রাইমা লিয়ার ছবিটা দেখেই মনে মনে লিয়া কে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে।রাইমা বেশ বুঝতে পারে স্ক্রিনের রমনী স্যারের বিশেষ কেউ। স্যার তো আনম্যারিড। নিশ্চয় গার্লফ্রেন্ড হবে।রাইমা জারিফের কক্ষ থেকে বের হয় আর ভাবে,,এতো ইমপ্রেস করা সত্বেও আমার প্রতি কোনো ফিলিংস না আসার পেছনে এই ফোনের ছবি ওয়ালী মেয়েটা দায়ী।তবে আমাকে থেমে থাকলে হবে না।স্যারকে পেতে হলে যা করার আমি তাই করবো।কথায় আছে না,একবার না পারিলে দেখ শতবার।তাই চেষ্টা করতে তো কোনো দোষ নেই।
কিচেনে রান্না করতে ব্যস্ত ছিলেন রাজিয়া সুলতানা।এমন সময় কলিংবেলের শব্দ হওয়ায় চুলাটা লো-তে দিয়ে দরজা খুলতে যান।দরজা খুলে দেখেন ক্লান্ত মুখশ্রীতে দাঁড়িয়ে আছে লিয়া। লিয়া কে দেখে কপাল কুঁচকে বলেন,,”কি হয়েছে লিয়া ? তোকে এত ক্লান্ত দেখাচ্ছে কেনো?আর আজ এত আগেই চলে আসলি যে।”
লিয়া ভিতরে যেতে যেতে ক্লান্ত স্বরে বলে,,”শরীরটা খা’রাপ লাগছিলো। তাই সব ক্লাস শেষ না করেই চলে আসছি।”
রাজিয়া সুলতানা চিন্তিত হয়ে শুধালেন,,”তা ড্রাইভার তো মনে হয় এখনো যায়নি।তুই একাই চলে আসছিস?”
“হুম ।আমি সিনএজি করে আসছি।”
“আচ্ছা ভালো করেছিস।তবে নতুন যায়গা আসতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো?”
“নাহ্।”
কথাটা শেষ করেই লিয়া সোজা ওর রুমে চলে যায়।ব্যাগটা নামিয়ে রেখে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে ভিজতে থাকে।
ঘন্টা খানেক পর,,
অফিস থেকে হন্তদন্ত হয়ে বাসায় ফেরেন এনামুল খাঁন।এসেই চিন্তিত কন্ঠে রাজিয়া সুলতানা কে শুধায়,,
“ড্রাইভার ফোন করে বললো,লিয়ার জন্য কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।ইভেন ভিতরে গিয়েও লিয়াকে খুঁজেছে বাট পাচ্ছে না।লিয়া
এনামুল খাঁন এর কথার মাঝেই রাজিয়া সুলতানা শান্ত গলায় বলেন,,”লিয়া বাসায় চলে আসছে।ওর শরীর খা’রাপ লাগছিলো তাই একটা ক্লাস করেই চলে এসেছে।”
এনামুল খাঁন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন,,”আচ্ছা ঠিক আছে।তবে নতুন যায়গা ওতো ভালো করে কোনো কিছু চেনে জানে না।কোনো অসুবিধা হয়নি তো?”
রাজিয়া সুলতানা জবাবে বলেন,,”আসছে তো।আর একা না এসেই কি করতো।ওর মাথা ব্যাথা করছিলো।সেই অবস্থায় ড্রাইভারের জন্য এই গরমের মধ্যে আরো দেড় দুই ঘন্টা বসে থাকলে অসুস্থতা বাড়তো।”
এনামুল খাঁন মুখাবয়ব গম্ভীর করেই বলেন,,”হেডেক কি আছেই? এখন লিয়া কেমন ফিল করছে।”
“পেইন কিলার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।”
কিয়ৎক্ষন কিছু ভেবে রাজিয়া সুলতানা বেশ নরম স্বরে বলেন,,”সেদিন একবার লিয়া এক ঘন্টা হবে ড্রাইভার এর জন্য বসে ছিলো।একটা ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও হবে না শুনে সবাই চলে যায়।আর একটু ভেবে দেখ এটা একদিন দুইদিন এর ব্যাপার না। এখন থেকে রোজকার বিষয় এটা।কোন দিন কোন ক্লাস হবে না।এটা তো কেউ বলতে পারবে না।আবার হুটহাট অসুস্থতার কথাও বলা যায়না।এসব কিছু এখন একটা বড় সমস্যা হয়েই দাঁড়িয়েছে।”
বেশ মনোযোগ সহকারে নিজ স্ত্রীর মুখ নিঃসৃত প্রত্যেক টা বাক্য শ্রবণ করলেন।রাজিয়া সুলতানা ঠিক কিসের ইঙ্গিত দিলেন তা বেশ বুঝতে পারলেন।এনামুল খাঁন কথা গুলো রিলাইজড করে বুঝলেন,কথাটা ভুল বলেনি।আর এখনকার সময়ে কখন কোন বিপদ হয় কেউ জানে না। মোবাইল সাথে থাকলে তাও সব দিক দিয়েই বিপদে হেল্প পাওয়ার সুযোগ থাকে। স্ত্রীর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা রুমে চলে যান।তবে বিষয়টা ওনাকে খুব ভাবাচ্ছিলো।
সন্ধ্যার পরে লিয়া এক হাতে কফির মগ নিয়ে রুমে বসে ছিলো।এমন সময় রাজিয়া সুলতানা এসে লিয়ার পাশে বসেন।লিয়া আলতো করে কফির মগে ঠোঁট ছোঁয়ায়। ভ্রু যুগল কুঁচকে ইশারায় বোঝায়,”কিছু বলবে আম্মু?”
রাজিয়া সুলতানা লিয়ার দিকে ডান হাতটা বাড়িয়ে দেন।মায়ের হাতে নিজের ফোনটা দেখে লিয়া অবাক হয়। বিস্ময়কর চাহনিতে চেয়ে নির্বাক হয়ে থাকে।রাজিয়া সুলতানা স্মিত হেসে বলেন,,”তোর আব্বু দিয়েছে।তুই আজ অসুস্থ হয়ে একা একা চলে আসছিস। এটা শুনে তোর আব্বুর খুব খা’রাপ লাগছে। অসুস্থতার জন্য যদি রাস্তায় সেন্সলেস হয়ে পড়তিস তখন কি হতো।এসব ভেবে তোর আব্বু নিজেকে খাঁটো মনে করছিলো। অবশেষে নিজে থেকেই মোবাইল টা আমাকে দিয়ে বললো তোকে দিতে।”
লিয়া এক হাতে ফোনটা নিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে বলে,,”আর কিছু বলেনি?না মানে আব্বুর ভাষ্যমতে আমি যেনো ফোনের মিসইউজ না করি।সেসব বলেনি?”
রাজিয়া সুলতানা শব্দহীন হেসে বলেন,,”তা আর বলতে হয়। আচ্ছা তুই এখন এত সব ভাবা বাদ দিয়ে রেস্ট নে কেমন।”
কথাটা বলে আর দেরি না করে রাজিয়া সুলতানা উঠে চলে যান।লিয়া মনে মনে বলে,, আব্বু ফোন দিলেও নিশ্চিত একগাদা নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেই দিয়েছে। আম্মু আমাকে সেসব বলবে না জন্যই কথাটা এড়িয়ে চলে গেলো। ফোন অন করে হোম স্ক্রিনে লিয়া আর জারিফের কাপল পিকের দিকে দৃষ্টি দিয়ে লিয়ার দুচোখের কোল ভিজে যায়।লিয়ার মনটা বারবার চাইছে,স্যারের কাছে একবার কল দিয়ে দেখি।আবার মস্তিষ্ক বলছে আব্বুর নিষেধ আছে।আবার স্যার নিজেও তো কিছুই করছে না। এতদিনে স্যার একবারো কি আমার খোঁজ পায়নি?না পাওয়ার কোনো চেষ্টাই করেনি?স্যার যদি পারে ভুলে থাকতে তবে আমি কেনো পারবো না।কল লিস্টে গিয়ে কলের উপর চাপ দিতে গিয়ে মস্তিষ্কের কথাগুলো মনের উপর প্রভাব বিস্তার করতেই পরক্ষনেই লিয়া আঙ্গুল টা সরিয়ে নেয়।এক আঙ্গুল দিয়ে সাইডের বাটনে চাপ দিয়ে পাওয়ার অফ করে রাখে।
পরের দিন,,
বেসিক ম্যাথ ক্লাস টা শেষে ছিলো। ক্লাস শেষ করে কিছু নোটস করতে লিয়ার বেশ দেরি হয়।পেন আর খাতাটা ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে। ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে আর ফোনটা বের করে ড্রাইভারকে কল দেয়। দোতলায় ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্ট।ড্রাইভার জানায় পনের মিনিটের মধ্যেই চলে আসবে।লিয়া নিচে নেমে বড় আমগাছের নিচে পাকা করা বসার স্থানে বসে অপেক্ষা করতে থাকে। রৌদ্রজ্জ্বল সুন্দর একটি দিন।ফোনে সময় দেখে লিয়া একটা পঁয়ত্রিশ বাজে।রোদ থাকলেও আজকে সাথে বাতাস থাকায় অতটা গরম লাগছে না।বাতাসে কপালের উপর কিছু চুল বারবার আসতে থাকে।লিয়া বিরক্ত হয়ে বারবার কানের পাশে চুল গুঁজছে। চুলগুলো গুজতে গিয়ে জারিফের কথা মনে পড়ে।জারিফের পাশে থাকাকালীন সময় এরকম হলে জারিফ মাঝে মাঝেই ঠোঁট গোল করে ফু দিয়ে চুলগুলো সরিয়ে দিতো। স্মৃতি গুলো মনে হতেই আনমনে লিয়া হেসে ফেলে।তবে হাসিটা স্থায়ী হয় না জারিফের শুণ্যতা মনটাকে বিষাদে পরিণত করে ফেলে মূহূর্তেই।লিয়া ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে সময় কাটানোর জন্য ফোনটা ওপেন করে।ফোন ওপেন করতেই মনটা উসখুস করতে থাকে জারিফের কাছে কল দেওয়ার জন্য।লিয়ার খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে জারিফের ভয়েজ টা শুনতে। খুব জানতে ইচ্ছে করছে জারিফ কেমন আছে। যোগাযোগ ছাড়া সত্যি কি জারিফ ভালো আছে। লিয়ার মন বলছে,ভালো থাকার কথা নয়।আমার মতো স্যারও হয়তো কষ্টেই আছে।অবশেষে নিষেধ,দ্বিধা দ্বন্দ্ব দূরে ঠেলে লিয়া মনের ইচ্ছে টাকে প্রাধান্য দিতে জারিফের কাছে কল দিয়ে বসে।
জারিফ লাঞ্চ করতে গিয়েছে। ভুলবশত ফোনটা টেবিলের উপর রেখেই চলে গিয়েছে।একটা চিঠি হাতে রাইমা জারিফের কক্ষে আসতে গিয়ে দেখে। জারিফ চেয়ারে নেই।অথচ ফোনটা বাজছে।রাইমা ঠোঁট উল্টে ভাবে স্যার ওয়াশরুমে যায়নি তো?পরক্ষনে মনে হয় লাঞ্চ করতে গিয়েছে হয়তো। এক পা দু করে ভেতরে এগিয়ে এসে হাতের চিঠিটা টেবিলের উপর নামিয়ে রাখে।রাইমার দৃষ্টি জারিফের ফোনে নিবদ্ধ হয়।ফোনের স্ক্রিনে ইংলিশে লিয়া নামটি জ্বলজ্বল করছে।রাইমা মনে মনে আওড়ায়,তারমানে এ হয়তো ফোনের স্ক্রিনে থাকা ছবিওয়ালী লিয়াই হবে।রাইমা মনে মনে কিছু ভেবে ডেভিল হাসে।আর ফোনটা রিসিভ করে।
কলটা রিসিভ হতেই ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে লিয়ার দুচোখ ছলছল করতে থাকে। কান্না গুলো গলাতে আটকে আসছে।গলাটা শুকিয়ে আসছে।লিয়া নির্বাক হয়ে থাকে। মনের মধ্যে কিছুটা সুখানুভূতি হচ্ছে অনেক দিন পর প্রিয় মানুষটার স্বর শুনতে পারবে ভেবে।
ফোনের এপাশে রাইমা কোনো আওয়াজ না পেয়ে মৃদু কন্ঠে সালাম দিয়ে বলে “হ্যালো কে বলছেন?”
কাংখিত ভয়েজ না শুনতে পেয়ে।তার যায়গায় অন্য কোনো মেয়ের ভয়েজ শুনে লিয়ার কপাল কুঁচকে যায়।লিয়া আশ্চর্যান্বিত হয়ে ভাবে,স্যারের ফোন তো সব সময় স্যারই রিসিভ করে। বাসায় থাকলেও তো স্যারের বোনেরা কখনো রিসিভ করেনি।স্যারকে খুব সম্মান করে ওনার ছোট বোনরা।না বলে কখনো স্যারের জিনিসে হাত দেয়না।এটা স্যারই বলেছিলো।জারিফের লক স্ক্রীনে লিয়ার ছবি দেখে লিয়া নিজেই জারিফকে প্রশ্ন করেছিলো,যদি আপনার বাসার কেউ ছবিটা দেখে তখন,কি বলবেন শুনি।জারিফ তখন এই কথাটা বলেছিলো।সাথে আরো বলেছিলো,আর দেখলেও সমস্যা নেই। ইটস্ ডাজ নট মেটার।এসব ভেবে লিয়া ছোট করে শ্বাস নিয়ে বিড়বিড় করে বলে,তাহলে ফোনের ওপাশের মেয়েলি স্বরের মানবীটি কে?হু ইজ সী?
রাইমা ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে এখনো লাইনে আছে।অথচ কোনো টু শব্দ নেই।রাইমা পুনরায় বলে,,
“হ্যালো।হ্যালো।শুনতে পাচ্ছেন?”
লিয়ার গলাটা শুকিয়ে আসছে। হার্টবিট ফাস্ট হতে থাকে। জিহ্বা দিয়ে শুকনো পাতলা ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে নিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,,”আপনি কে? মিস্টার আয়মান জারিফ কোথায়?”
লিয়ার কথা শুনে রাইমা মুখে ক্রুর হাসি নিয়ে বেশ চিকন স্বরে বলে,,”উনি বিজি আছেন।”
লিয়ার প্রচন্ড রাগ হতে থাকে।যতই বিজি থাকুক না কেনো,তাই বলে ফোনটা অন্যজনকে দিয়ে রিসিভ করাবে, আশ্চর্য।আর মেয়েটিই বা কে? জারিফের ফোনই ধরেছে কোন অধিকারে ?এটা ভাবতেই লিয়ার রাগটা আকাশসম হয়।লিয়ার মনে হচ্ছে মেয়েটিকে কড়া করে কয়েক কথা শুনিয়ে দিতে। অবশেষে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।লিয়া দাঁতে দাঁত পিষে বলেই ফেলে,,”আয়মান জারিফ কে বলুন এনাবুল জান্নাত খাঁন লিয়া ফোন করেছে।আর আপনি কে?”
রাইমা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে গোলাপী ওষ্ঠ নেড়ে বলতে থাকে,,”যার নাম্বারে আপনি ফোন করেছেন।আমি যদি রিসিভ করে থাকি।তবে কোন সম্পর্কের অধিকারে এটা হতে পারে। আপনার নিশ্চয় বুঝতে দেরি হবে না।নাকি আরো খোলাসা করে আমার পরিচয় টা দিতে হবে।আই হোপ ইউ রিলাইজ আমি আয়মান জারিফের কে হতে পারি। নিশ্চয় একান্তই স্পেশাল কেউ তো বটেই।”
কথাটা বোধগম্য হওয়ার সাথে সাথেই লিয়ার সত্যি মাথাটা ঘুরে যায়।হাত থেকে ফোনটা পড়ে যেতে নিলে বাম হাত দিয়ে কোনো মতে ফোনটা ধরে ফেলে লিয়া।চারিদিক রৌদ্রজ্জ্বল আলোকিত পরিবেশ টা সেকেন্ডর মধ্যেই অন্ধকারে পরিণত হয় লিয়ার কাছে।লিয়া দুই হাত দিয়ে মুখটা চেপে ধরে নিজেকে স্বাভাবিক করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়।লিয়া অস্পষ্ট স্বরে বলে,,যেটুকু আবছা আলো ছিলো।মনে হচ্ছে অন্ধকার দ্রুত বেগে এসে আবছা আলোকে ঢেকে দিচ্ছে।আর আমার পুরো পৃথিবী কে অন্ধকারে মুড়ে দিচ্ছে।এতদিন রা’গ ক্ষোভে আমি শুধু মনে মনেই এমনি ভাবতাম। আপনি হয়তো আমার থেকে বেটার কাউকে পেয়ে গিয়েছেন।আমি এটা মন থেকে বলতাম না।এটা জাস্ট আমার অভিমান করে বলা কথা ছিলো।তবে আজকে নিজ কানে যা শুনলাম তারপরেও কিকরে আপনার উপর বিশ্বাস রাখি?এখন তো আপনাকে আমার একজন প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক মনে হচ্ছে।আমার কাছে মিথ্যে ভালোবাসার অভিনয় করেছিলেন।মিথ্যে ভালোবাসার কমিটমেন্ট ছিলো আপনার। আপনি চিট করেছেন আমার সাথে।আমি কোনোদিন ও আপনাকে ক্ষমা করতে পারবোনা।
জারিফ ওর অফিস রুমে ঢুকতে গিয়ে টেবিলের সামনে রাইমাকে দেখে কপাল কুঁচকে বলে,,”মিস রাইমা আপনি?”
রাইমা সন্তর্পণে নিঃশব্দে মোবাইল টা টেবিলে নামিয়ে রেখে পিছন হয়ে জারিফের দিকে ঘুরে জোর করে হাসার চেষ্টা করে।তারপর চিঠিটা দেখিয়ে মৃদু আওয়াজে বলে,,”চিঠিটা দিতে আসছিলাম।”
জারিফ ভেতরে এসে চেয়ারে বসে বলে,,”ইটস্ ওকে।আসতে পারেন।”
কথাটা শেষ করে জারিফ ওর ফোনটা হাতে নেয়।এমন সময় রাইমা ভাবে,স্যার যদি কল লিস্ট দেখে তাহলে তো আমার সমস্যা হবে।আমি কেনো কল রিসিভ করেছি।আর ঐ মেয়ে যদি স্যারকে বলে,আমি এসব বলেছি। তাহলে তো ভালোর থেকে আরো খা’রাপই হবে। আমার উপর স্যার দূর্বল হওয়া তো দূরের কথা আরো স্যারের রোষানলে পড়বো।আমার প্রতি ব্যাড ধারনা হয়ে যাবে। ওহ্ নো।কিছুতেই এটা হতে দেওয়া যাবে না।রাইমা নিজেকে তটস্থ করে শুকনো ঢোক গিলে নিয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে,,”স্যার বলছিলাম যে।”
জারিফ দৃষ্টি সরু করে তাকিয়ে গম্ভীরভাবে বলে,,”কী?”
রাইমা হালকা হাসার চেষ্টা করে গমগমে স্বরে বলে,,”আমার মোবাইলে চার্জ না থাকায় পাওয়ার অফ হয়ে গিয়েছে।আর আমার বাসায় একটা জরুরী কল করার ছিলো।তাই বলছি
রাইমার কথা বুঝতে জারিফের দুই সেকেন্ড সময় লাগে।রাইমার কথার মাঝেই জারিফ ওর ফোনের লক খুলে রাইমার দিকে বাড়িয়ে দেয়।রাইমা ডান হাতটা দিয়ে ফোনটা নিয়ে একটু দূরত্বে গিয়ে প্রথমে কল লিস্ট থেকে লিয়ার কল দেওয়া হিস্ট্রি ডিলেট করে।তারপর ওর মায়ের নম্বরে কল দিয়ে, আজগুবি কয়েক কথা বলে ফোন রেখে দেয়।হিস্ট্রি মুছে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রাইমা।তারপর জারিফের কাছে ফোনটা দিয়ে দ্রুত প্রস্থান করতে নেয়।
এমন সময় জারিফ শক্ত গলায় বলে,,”ওয়ান মিনিট মিস রাইমা।”
জারিফের কথাটা শ্রবণ করার সাথে সাথেই রাইমার গলা শুকিয়ে আসে।এসির মধ্যে থেকেও টেনশনে হাত পায়ের তালু ঘামতে থাকে।রাইমা ভাবে,স্যার কিছু টের পায়নি তো।এসব ভেবে ফাঁকা ঢুক গিলে নেয়।
জারিফ গম্ভীর মুখাবয়ব করে বেশ শান্ত গলায় বলে,,
“আই থিংক দ্যাট সাম টাইম ইউ কাম আননেসেসারি।সো ইউ সুড রিলাইজ ইট।”
যখন তখন জারিফের রুমে চলে আসা এটা মোটেও পছন্দ করে না জারিফ। অবশেষে জারিফ আজকে সেটা মুখে প্রকাশ করে ফেললো।অবশ্য জারিফ অনেক আগে থেকেই ওর বিহেভ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছে।এই মেয়ে বুঝেছে কিনা? আল্লাহ মালুম।জারিফের কথাটা কর্ণপাত হতেই রাইমার মুখটা থমথমে হয়ে যায়।রাইমা আর কোনো বাক্য ব্যয় না করে বের হতে থাকে আর মনে মনে আওড়ায়,,স্যার আমিও আপনার থেকে কম না। আমিও দেখে নিবো।মুখের উপর আজ কথাটা না বললেও পারতেন।
লিয়া গাড়িতে বসে হাতের উল্টো পাশ দিয়ে গাল বেয়ে পড়া পানিটুকু মুছে নেয়।ফোনটা হাতে নিয়ে এক এক করে সব জায়গা থেকে জারিফকে ব্লক করে দেয়।গ্যালারিতে গিয়ে জারিফের সাথে তোলা সব ছবি ডিলেট করতে থাকে।পার্মানেন্ট ডিলেট করার জন্য ট্রাশে যায়।ট্রাশে গিয়ে হাত কাঁপতে থাকে।মনটা কিছুতেই সায় দিচ্ছে না।লিয়া মনে মনে আওড়ায়,আপনি প্রতারণা করতে পারেন।আপনি সব কিছু ভুলে যেতে পারেন।আপনি আমার যায়গাটা অন্যকাউকে দিতে পারেন।তবুও আমি পারবো না। কোনোদিন পারব না আপনার যায়গাটা অন্য কাউকে দিতে।ডিলেট এ চাপ না দিয়ে লিয়া রিস্টোর এ চাপ দেয়।ছবিগুলো রিস্টোর করে বলে,ঠিক এইভাবেই আপনাকে কোনোদিন আমার মন থেকে মুছে ফেলতে পারবো না।আমি চাইলেও সম্ভব নয়।কিছুতেই সম্ভব নয়।আমার কিশোরী বয়সের প্রথম ভালোলাগা আর ভালোবাসা আপনি,ভুলতে পারবোনা আপনাকে কোনোদিন।
লিয়া বাসায় গিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার অন করে ভিজতে থাকে। ঝিরিঝিরি পানির সাথে দুচোখ থেকে ঝরে পড়া পানি মিশে একাকার হয়ে যায়। প্রায় আধাঘণ্টা খানেক ভিজে শরীরটা কাঁপুনি দিয়ে উঠে।আধা ঘন্টার বেশি সময় পর ওয়াশরুম থেকে বের হয় লিয়া।এরমধ্যে দরজার দাড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে রাহবার ডাকতে থাকে।এক হাতে টাওয়েল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে লিয়া এগিয়ে যায়। রাহবার লিয়ার শ্বেত শুভ্র মুখশ্রীর দিকে চেয়ে অস্ফুট স্বরে বলে,,”আ্যই আপু তোকে এরকম দেখাচ্ছে কেনো? চোখগুলো খুব লাল দেখাচ্ছে আর মুখটা একদম রক্ত শুণ্য ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে।”
লিয়া জোর করে হাসার চেষ্টা করে বলে,,”কই ঠিকই আছি তো।গোসল করে আসলাম তো।বেশি করে পানি নিয়েছি তাই হয়তো।”
“আম্মু খাবার খেতে ডাকছে তোকে।”
“ভাই তুই আম্মু কে বল।আমি পরে খেয়ে নিবো কেমন।”
রাহবার মুখটা মলিন করে চলে যায়।লিয়া অস্পষ্ট স্বরে বলে,,আমার কষ্ট গুলো চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবো।কাউকে কখনো বুঝতে দেবনা,আমি সত্যিই ভালো নেই। বন্ধ ঘরে কান্না গুলোকে বদ্ধ করেই রাখবো।দরজাটা হাসি মুখেই খুলবো।এই শহরে সবারই কম বেশি দুঃখ আছে।কেউ কেউ হাসির মাধ্যমেও দুঃখ টাকে আড়াল করে।আমিও নাহয় তাই করবো।
ব্যালকনিতে রাখা ইজি চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে লিয়া। চারিদিকে পিনপন নীরাবতা।রাত সাড়ে এগারোটার বেশি বাজে।লিয়া বিড়বিড় করে বলে,জীবনটা কেমন যেনো হয়ে গিয়েছে।না পারি সব ভুলে থাকতে।না পারছি সব ছেড়ে ছুড়ে পৃথিবী থেকে চলে যেতে।আর না পারছি সব কষ্ট সয্য করে বেঁচে থাকতে।ইসস!এক মাত্র মৃ”ত্যুই পারে এই দুর্বিষহ জীবন থেকে আমাকে বের করতে।আপনাকে ভুলে থাকবো কিকরে?চোখ বন্ধ করলেই আপনার ফেসটা ভেসে উঠে।ব্যাথা কখনো কাউকে দেখানো যায়না আর বোঝানোও যায়না।হোক সেটা শরীরের বা মনের।যার ব্যাথা সে ছাড়া অন্য কেউ অনুভব করতে পারে না।কি যে কষ্টের মধ্যে আছি কাউকে বলে বোঝানো যাবে না।
লিয়ার মনটা বলে উঠে,একটা মেয়ে ফোন ধরে যা বললো।সবটা বিশ্বাস করে নেওয়া ঠিক হবে কি?মেয়েটা মিথ্যেও বলতে পারে তো।আর স্যারকে দেখে আমার কখনো তো মনে হয়নি স্যার প্লে বয়।আমার মনটা কেনো জানি বারবার বলছে,আর যাইহোক স্যারের চরিত্র কখনো এরকম হতেই পারে না।মানছি মেয়েটা যা বলেছে তা সত্যি না।তবে কেনো স্যার আমার কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি?আজ তিন মাস পার হয়ে গিয়েছে। অথচ স্যারের কোনো খোঁজখবর নেই।যেখানে আমার ঠিকানা পাওয়া কোনো ব্যাপারই না।তবে কি আমি মেয়েটার বলা কথাগুলো বিশ্বাস করবো?আপনি অন্যকাউকে বেছে নিয়েছেন?
লিয়া দুই চোখ বন্ধ করে কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে থাকে।
Ab jaane han, yeh pyaar kya hai
Dard-e jigar, muskil bada hai
Sunta nahin, kehna koi bhi
Dil bekhobar, zid pe adaa hai
Haare haare haare, hum dil se haare
Har aaina, toota lage hai
Such bhi hamein, joota lage hai
Jaane kaha, hum aa gaya Hain
Sara jahan, roota lage hai
Kya dard dil ne diya, kya habein
Haare haare haare, hum dil se haare.
জারিফ ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দুই হাত টাউজারের পকেটে গুঁজে হতাশ চাহনিতে দূর আকাশে থাকা চাঁদের দিকে তাকিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলে,,হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও বারবার তোমার কথায়ই মনে হয়।কারন তুমি যে মিশে আছো আমার নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে।পরিস্থিতির সাথে লড়াই করা যায়। কিন্তু ভাগ্যের সাথে নয়।কারন ভাগ্য এক আজব জিনিস।কাউকে সব দেয় আবার কারো থেকে সব কেড়ে নেয়।তুমি আমার হওনি তাই বলে কি তোমায় ভালোবাসা যাবে না। চাঁদের মত ধরা ছোঁয়ার বাহিরে তুমি থাকলেও,আমি তোমায় ভালোবেসে যাবো আজীবন।
[চলবে…ইন শা আল্লাহ]