#তোকেই_ভালোবাসি
#লেখিকা:#আমেনা_আক্তার_আখি
#পর্বঃ২২
“সমস্যা কি তোর?এভাবে ঘরের মধ্যে একা একা কি করছিস?”
“তোমার সমস্যা কি?এভাবে একটা মেয়ের রুমে মানা করা সত্বেও ঢুকে পড়েছো?”
ইয়াশে মিথিলার দিকে এক কদম আগায়;মিথিলার দিকে ঝুকে বলে,, “আমার বউয়ের ঘরে আমি ঢুকেছি তোর কোনো সমস্যা?”
মিথিলা রেগে বলে,,”এটা আমার রুম তোমার বউয়ের না,তোমার বউয়ের রুম তো,,”
“আমার বউয়ের রুম তো পরে কী?”
“জানিনা আমি তোমার বউয়ের রুম কোথায়?কিন্তু এটা আমার রুম তোমার বউয়ের না যাও এখান থেকে!”
ইয়াশ বিছানার উপর আয়েশ করে বসে বলে,, “যাবো না আমি কি করবি তুই?”
মিথিলা ইয়াশের পানে তাকিয়ে ওর দিকে তেড়ে যায়।ইয়াশের সামনে গিয়ে ওর হাত টেনে ধরে উঠানোর চেষ্টা করে!উঠাতে না পেরে রেগে চিল্লিয়ে বলল,
“মহিষ কোথাকার যাবে এখান থেকে?তোমার ওই নীলার কাছে যাও,আমার কাছে কেন এসেছো?”
ইয়াশ এবার ভ্রু কুচকায়। ভ্রু গুটিয়ে বলল,, “নীলার কাছে যাবো কেন?নীলা কি আমার বউ নাকি?”
“সব জেনে না জানার ভান কিভাবে করো বলো তো?”
ইয়াশ মিথিলাকে টেনে ওর পাশে বসিয়ে দেয়।মিথিলার দিকে ঘুরে বলে,, “দেখ মিথিলা,,”
ইয়াশের সম্পূর্ন কথা শেষ হওয়ার আগে মিথিলা মুখ ঘুরিয়ে নেয়।ইয়াশ সেদিকে তাকিয়ে নীরব থাকে কিছুক্ষণ।কিছুক্ষণ যেতে মিথিলার হাত ধরে ওর দিকে ঘুরায়।
“দেখ নীলা সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে এটা আমি জানতাম না?কালকে তো,,যাক সেসব বাদ দে।আমি কাকে ভালোবাসি সেটা বল?”
মিথিলা ইয়াশের থেকে হাত ছাড়িয়ে বলে,,”তুমি কাকে ভালোবাসো আমি কিভাবে জানবো?”
“আচ্ছা না জানলি।তবে একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে রাখ,ইয়াশ কখনো মিথিলা ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না।কারণ,,”
“কারণ মিথিলা ইয়াশকে ভালোবাসে,কিন্তু ইয়াশ মিথিলাকে ভালোবাসেনা।মিথিলা ভালোবাসে জন্য ইয়াশ মিথিলাকে বিয়ে করবে।এটাই তো?”
মিথিলার পকপক শুনে ইয়াশ মৃদু হাসে।মিথিলাকে ওর কাছে এনে কোমড় আকড়ে ধরে।কানের কাছে মুখ নিয় ফিসফিস কন্ঠে বলে,, “ইয়াশও কিন্তু মিথিলাকে ভালোবাসে!ভীষণ ভালোবেসে।এখন মিথিলা যদি ইয়াশকে এভাবে ইগনোর করে তাকে পাত্তা না দেয় তাহলে কিন্তু ইয়াশ অনেক রেগে যাবে।আর ইয়াশ রেগে গেলে কিন্তু মিথিলার জন্য ভালো হবেনা বলে দিলাম।”
ইয়াশ কথাগুলো বলে মিথিলাকে ছেড়ে উঠে দাড়ায়।শক্ত কন্ঠে বলে,, “আমি যাওয়ার পর সে ছাদে না গেলে কিন্তু অনেক খারাপ হয়ে যাবে।একদম তুলকালাম বেধে যাবে বলে দিলাম।তাই তাড়াতাড়ি যেন ছাদে চলে আসে সে।”
ইয়াশ এ বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।ইয়াশ বেরিয়ে যেতে।মিথিলা সেদিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটে।তার সব কথা যেন মিথিলার শুনে চলতে হবে।নীলার সাথে তো বিয়ে ঠিক করছে ওকে বিয়ে করে নিলেই তো হয়।আমার কাছে কেন আসতে হবে,হুহ্!
—————————————–
ইয়াশ নিচে যাওয়ার পর থেকে আকাশ ইফার পিছু লেগেছে।ইফা যেখানে যাচ্ছে ও ধুপধাপ পা ফেলে সেদিকে যাচ্ছে।ইফা অনেকবার বারণ কথা সত্বেও সে ইফার পিছু ছাড়ছে না।আকাশ এবার ইফার চুল হালকা টেনে ধরতে ইফা রেগে গিয়ে বলে,
“দেখুন ভাইয়া শেষবার বলছি এবার আমাকে বিরক্ত করলে কিন্তু,ছোট চাচ্চু, ছোটমা, ভাইয়া সবাইকে বলে দিব?”
আকাশ ইফার কথা শুনে সোজা হয়ে দাড়ায়।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,, “বল তাতে আমার কি?এতে বরং আমার লাভ।যা তুই এখনি বল।বলবি আকাশ আমাকে ভালোবাসে আর আমাকে বিয়ে করতে চায়।”
আকাশের শেষের কথাটা শুনে ইফা আরো রেগে যায়।আকাশের দিকে এগিয়ে আঙুল উঠিয়ে বলে,,
“দেখুন এসব ভালোবাসা বাদ দেন!আমার বয়ফ্রেন্ড আছে।”
আকাশ ইফার কথা শুনে জোরে হেসে দেয়।যেনো কোনো জোক্স শুনলো।আকাশের হাসি দেখে ইফা কপাল কুঁচকায়।আকাশ হাসি থামিয়ে বলে,, “মানে সিরিয়াসলি,তুই বলবি তোর বয়ফ্রেন্ড আছে আর আমি বিশ্বাস করে নিবো।”
“আরে আমার সত্যি,,”
ইফার পুরো কথা শেষ না করতে মাঝখানে আসিফ এসে বলে,, “এই ভাইয়া,ইন্দুর তোমাদের দুজনকে মিহু আপু ডাকছে। হলুদ দিবে না তোমরা।”
“এই তোকে বলছি না আমাকে ইন্দুর না বলতে?পটলু কোথাকার!”
“তুমি তো ইন্দুর।হা হা হা!”
“আসিফ তুই যা আমরা আসছি।”
আসিফ চলে যেতে,আকাশ ইফার দিকে তাকায়।আকাশকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ইফা ওকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।আকাশ ইফার যাওয়ার পানে তাকিয়ে পিছন থেকে কিছু বলতে নিয়েও বলে না।
———————————————
মিহুকে একে একে সবাই হলুদ লাগাচ্ছে।প্রথমে মিনহাজ হক,তিতি হক,মিহুর মেজো মা,ছোট মা,মেজো বাচ্চু ছোট চাচ্চু।মিথিলা খালা বড়রা সবাই হলুদ লাগান।পরে বিচ্চুবাহিনীর পালা আসতে সবাই হৈ হৈ করে মিহুকে হলুদ লাগাতে যায়।প্রথমে ছোট থেকে হলুদ লাগানো শুরু করে।মিহুর খালাতো বোনদের লাগানো শেষ হতে।রায়না আসে মিহুকে হলুদ লাগাতে।রায়না লাগিয়ে যেতে নিলয় আর নীলা মিহুকে হলুদ লাগিয়ে দিয়ে যায়।ইফার পালা আসতে আকাশও ইফার সাথে সাথে যায় মিহুকে হলুদ লাগাতে।ইফা এটা দেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভ্রু গুটায়। দুজন মিহির কাছে গিয়ে মিলুকে হলুদ লাগিয়ে মিষ্টি খাইয়ে দেয়।মিহুকে টাকা দিয়ে দুজনে আবার উঠে আসে।ইফা আকাশের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বলে,,
“আপনি আমা সাথে হলুদ লাগালেন কেন?”
“ইচ্ছে হয়েছে তাই লাগিয়েছি!”
ইফা এবার থেকে যায়।আকাশের দিকে ঘুরে বলে,, “দেখুন আমি সত্যি বলছি আমার বয়ফ্রেন্ড আছে।”
আকাশ একই ভঙ্গিমায় বলে,, “দেখ আমিও সত্যি বলছি আমি তোকে ভালোবাসি।”
“ভালোবাসতেই পারেন বোন হিসেবে।”
“না আমি তোকে বউ ভেবে ভালোবাসি।”
ইফা দাত চেপে বলে,, “বলছি তো আমার প্রেমিক আছে, আর বিয়ে হলে ওর সাখেই হবে।আপনি আমার পিছু ছাড়বেন।অসহ্যকর!”
“তোর পিছু তো আমি ছাড়বো না।আর তুই বউ হবি তবে আমার।মাথায় ঢুকিয়ে নে ভালো করে।”
“কচু,বউ বানানো কি এত সহজ নাকি?”
আকাশ এবার বাকা হেসে বলে,, “সহজ না হলেও সহজ বানাবো।দরকার পড়লে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো।”
“আপনি উঠিয়ে নিয়ে গেলে বুঝি আমিও ড্যাংড্যাং করে বিয়ে করে নিবো।”
“সেটা পরে দেখা যাবে,
মিথিলা আর ইয়াশের পালা আসতে মিহু চিৎকার দেয়।মিহুর চিৎকার শুনে সবাই ওর দিকে তাকায়।
চলবে,, ইন শা আল্লাহ,,,
[রি-চেইক করিনি।কালকে ঠিক করে নিব।ভুলত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ।কিছু সমস্যার কারণে গল্প দিতে পারতেছি না।কালকে দেওয়ার চেষ্টা করব।]