#_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি ।
#_পর্ব = ২৯
রাস্তায় অনেক মানুষের অফিসে যাওয়ার চলাচল তাই সজীব পিছনে ফিরে বৃষ্টির চোখের আড়াল হতে চেষ্টা করলো । কারণ বৃষ্টি আর মামুনকে সে দেখে ফেলেছে সেটা যদি বৃষ্টি বুঝতে পারে তাহলে সে লজ্জা পাবে । বৃষ্টির মতো একটা সুন্দরী মেয়েকে সে লজ্জা দিতে পারবে না , কারণ সে তাকে অনেক বেশি ভালবাসে । তবে মাঝে মাঝে সুন্দরী তরুণীদের লজ্জা দেয়া উচিৎ কারন তাতে করে তরুণী লজ্জায় লাল হয়ে যাবে আর তার সেই চেহারা তখন হবে পুরুষের নেশার কারণ ।
কিন্তু একটা এই মুহূর্ত লজ্জায় লাল করার মুহূর্ত না তাই সজীব পিছনে ফিরে হাঁটা শুরু করলো । রাস্তা দিয়ে মানুষ পারাপার হচ্ছে , ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আর মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না । তাদের মুখের বাঁশি বাজতে বাজতে ক্লান্ত কিন্তু যানযট চলছে চলে এবং চলবে । সজীব তাদের সাথে সাথে রাস্তা পার হয়ে গেল কারণ রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি ছিল না । তাছাড়া তার খালার বাসা রাস্তার পশ্চিম সাইডে তাই এখন না হলেও সজীবকে বন্দরটিলা গিয়ে রাস্তা পার হতে হবে । সুতরাং আজকে নাহয় পরিস্থিতিতে পরে ফ্রি পোর্টেই রাস্তা পার হয়ে গেল ।
রাস্তা পার হয়ে তার চোখ গেল বে-শপিং সেন্টার এর সামনে খোলা যায়গা হান্নানের চায়ের দোকানে । বৃষ্টিদের অফিসে যখন ২৮ দিন ডিউটি করেছে তখন প্রতিদিন সজীব এইখানে দাঁড়িয়ে শুধু বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে থাকতো । বৃষ্টি এসে রাস্তা পার হয়ে সজীব এর সাথে এখান থেকে একসাথেই দুজনে অফিসে যেতো । সবসময় বৃষ্টি দেরি করে আসতো আর সজীব এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খেতো আর অপেক্ষা করতো ।
সজীব আজকেও হান্নানকে চায়ের কথা বলে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো । হান্নান জিজ্ঞেস করলো , সজীব ভাই ৬/৭ দিন যাবত আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না , কারণ কি ভাই ? নাকি অন্য দোকানে গিয়ে চা নাস্তা করেন ?
” সজীব উত্তর দেবার আগে পিছন থেকে কেউ যেন সজীব এর কাঁধে হাত রাখলেন । সজীব পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টি দাঁড়িয়ে আছে । সজীব কে বললো , চা খাচ্ছো ?
” হ্যাঁ , তুমি খাবে ? ”
” হুম খাবো তাড়াতাড়ি দিতে বলো । ”
” সজীব আরেক কাপ চায়ের কথা বলে নিজের কাপ হাতে নিয়ে চারিদিকে বিভিন্ন মানুষের আনাগোনা দেখতে লাগলো । তখন নীরবতা ভঙ্গ করে বৃষ্টি বললো , মামুনকে দেখে রাগ করেছো ? ”
” সজীব বললো , কোই না তো । ”
” তাহলে আমাকে দেখে কথা না বলেই চলে আসলে কেন ? ”
” কারো জীবনের সুখের মুহূর্তে আমি সজীব কোন দুঃখের মেঘ হতে চাই না । তাই আমার জন্য কারো কোন সমস্যা হোক সেটা চাই না বলে নিজের কথা গুলো জমিয়ে রেখে দিলাম । ”
” বড্ড অভিমান করে আছো আমার উপর ? ”
” কি লাভ হবে তাতে ? নিজেই নিজের অভিমান ভঙ্গ করতে হবে । ”
” ব্যাগ নিয়ে কোথায় গিয়েছিলে ? তিনদিন ধরে কোন খবর নেই তোমার । মোবাইলে কল দিয়ে আর কখনো বলো না যে আমি কেমন আছি । ”
” খুলনা থেকে ফিরলাম মাত্র । ”
” কেন কেন কেন ? ”
” আসল অপরাধী ধরা পরেছে তাই আমাকে কেস থেকে অব্যাহতী দেয়া হয়েছে । তাই আনুষ্ঠানিক কাজগুলো সারার জন্য আর কোর্টে হাজিরা দিতে গেছিলাম । ”
” আলহামদুলিল্লাহ , কিন্তু আগে বলোনি কেন ? ”
” জানিনা , মন খারাপ তাই হতে পারে । ”
” মামুনের সাথে এক রিক্সার মধ্যে কেন আসলাম জানতে চাইবে না ? ”
” কৌতুহল নেই তাই জিজ্ঞেস করলাম না । ”
” কিন্তু ভুল বুঝে আছো সেটা কি ঠিক ? ”
” সঠিক টা কি ? ”
” বাবা হাসপাতালে ! ”
” মানে ? ”
” পরশু বিকেলে বাবা হঠাৎ করে প্রচুর অসুস্থ হয়ে গেছে তাই তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । আমি তো অফিসে ছিলাম আর মা একা একা কি করবে ? তাই মামুনকে ডেকে নিয়ে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো । ”
” তুমি তো আমাকে কল করো নি ! ”
” তুমি নিজেই তো মানঅভিমান করে আস্তে আস্তে দুরে সরে যাচ্ছো তাই আর বিরক্ত করিনি । ”
” বাহহহ অভিমানে চুপটি করে এতটা দুরে ঠেলে দেও যে বাবার অসুস্থতার কথা বলতে চাওনা । অভিমান করেছি সেটাই চোখে পরলো কিন্তু সেই অভিমানের কারণটা চোখে পরলো না , আফসোস । ”
” হাসপাতালে বাবার কাছে মা থাকে আর বাসায় আমি আর ছোট্ট বোন । সকাল বেলা আমি বাসা থেকে বেরিয়ে গলিতে এসে দেখি মামুন দাঁড়িয়ে আছে । আমাকে বললেন যে সে নাকি হাসপাতালে যাবে তাই ফ্রী পোর্ট আসবে । পরে বললো তাহলে চলো দুজনে একটা রিক্সা করে চলে যা-ই । তখন আমি আর কিছু বলিনি কারণ বাবার জন্য কারণ ছাড়া যিনি এতকিছু করছেন তাকে কি বলবো ? ”
” ওহহ আচ্ছা , ভালোই তো । আচ্ছা হাসপাতালে গেলে কোন যায়গা যাবো ? ”
” তৃতীয় তলায় পুরুষদের সাইডে বেডে আছে । ”
” আচ্ছা ঠিক আছে আমি তাহলে এখনই আগে হাসপাতালে যাচ্ছি । ”
” যেতে পারো তবে বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে গেলেও কোন সমস্যা নেই । আরেকটা কথা , তৃতীয় তলায় কিন্তু মহিলাদের গাইনী বেড আছে সেখানে গিয়ে আবার পিটুনি খেও না । হিহিহি । ”
” বাহহ আজও হাসিটা কত সুন্দর । ”
” আমি অফিসে গেলাম , ভালো থেকো সবসময় । ”
” চেষ্টা করবো তবে নিশ্চিত নেই । ”
★★
★★
হাসপাতালের নিচতলায় এসেই মামুনের সাথে দেখা হয়ে গেল তাই সজীব কে আর খোজাখুজি করতে হলো না । সজীব অবশ্য প্রথমে দেখতে পায়নি তবে মামুন সজীবকে দেখেই ডাক দিল । তারপর সজীব কে তার স্যার এর রুমে নিয়ে গেল । হাসপাতাল মানে হচ্ছে অসুস্থ সকল মানুষের ছড়াছড়ি , হাসপাতালে আসলে বোঝা যায় পৃথিবীতে নিজের চেয়ে কত অসহায় মানুষ কষ্ট করে বেঁচে আছে । পৃথিবীর এই এত এত অসুস্থ মানুষের মধ্যে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখা যায় আল্লাহ কতটা সুখে রেখেছে । কিন্তু তবুও আমরা সামান্য একটু বিপদ আসলেই আল্লাহর ভরসা থেকে নিরাশ হয়ে যাই ।
অথচ আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে বলেন , বলেছেন , ” ঈমানদার মুসলমানসকল তোমরা বিপদ এর সময় ধৈর্য হারা হয়ে যেও না মনে রেখো আল্লাহর সাহায্য খুবই নিকটে । তাই সবাই ধৈর্য ধারণ করো কারণ নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলের সঙ্গেই থাকেন । ”
সজীব মামুনের সাথে সাথে স্যারের বেডের কাছে গেল , বৃষ্টির মা শাড়ির আচলটা ঠিক করে দিয়ে অদুরে দাঁড়িয়ে রইলো । সজীব তার স্যার এর মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করলাে , ” কেমন আছেন স্যার ?
” স্যার বললো , এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি কেমন আছো ? আর বৃষ্টি বললো তোমার নাকি খবর পাওয়া যাচ্ছে না ? স্যার সেদিন আপনার কাছ থেকে বেরিয়ে রাস্তায় আসার পরে খুলনা থেকে উকিল সাহেব কল করেছিলো । জরুরি ভাবে খুলনা যেতে বললো কারণ মামলার আসল অপরাধী সবাই ধরা পরেছে স্যার । আমি এখন আলহামদুলিল্লাহ মুক্ত , তাই সেদিন খুলনা চলে গেলাম আর একটু বেশি তাড়াহুড়ো ছিল তাই যোগাযোগ করা হয়নি । ”
” আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে , আলহামদুলিল্লাহ কোন সমস্যা নেই । মামুন ছিল তাই আমার কখনো মনেই হয় নাই যে আমার কোন বড় ছেলে নাই । মামুন বাবা সবকিছুই করেছে তাছাড়া ও স্থানীয় ছেলে তাই পরিচিত হিসাবে একটু সুবিধা আছে । আর তোমার মামলার সমস্যা শেষ হয়ে গেছে এটাতো একটা বড় আনন্দের খবর । বাস থেকে নেমেই সরাসরি এখানে চলে আসছো তাই না ? ”
” মামুন বললো , সজীব সাহেব ডাক্তার বলেছেন যে আঙ্কেলকে আজ বিকেলে রিলিজ করা হবে । মনে হয় আমরা বিকেলেই তাকে নিয়ে বাসায় পৌঁছাতে পারবো । ”
” সজীব বললো , আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো । ”
” স্যার বললো , মামলা যেহেতু শেষ তাই কলেজে গিয়ে একটু খবর নিতে যদি পরবর্তী সুযোগ পাওয়া যায় । ”
” স্যার আমি কলেজে গেছিলাম আর এ বিষয় নিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কথা হয়েছে । তিনি বলেন যে এক বছর লস দিয়ে নাকি আমাকে পরবর্তী ব্যাচে পরীক্ষা দেবার সুযোগ দেবে । ”
” বাহহ দারুণ চমৎকার , আমার কথা কিছু বলেছে প্রিন্সিপাল স্যার ? ”
” সজীব মুখ নিচু করে বললো , না স্যার আপনার বিষয় কথা হয়নি । ”
” আসলে একটা কথা কি সজীব , মানুষ যখন হঠাৎ করে চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যায় তখন আর তাকে কেউ মনে রাখে না । ”
” মামুন বেডের কাছে ছিল না এমন সময় একটা নার্স এসে সজীব হাতে একটা স্লিপ দিয়ে বললো , নিচে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে এই টেস্ট করিয়ে নেবেন । টেস্টের রেজাল্ট দেখে আপনাদের রোগী বিকেলে রিলিজ করা হবে । ”
” সজীব স্লিপ নিয়ে নিচে যাচ্ছিল তখন স্যার বললো , তোমাকে যেতে হবে না সজীব ৷ মামুন এলে ও গিয়ে টাকা দিয়ে প্যাথলজি ল্যাবে জমা দিয়ে আসবে । ”
সজীব দেখলো মামুন মোটামুটি তাদের কাছে প্রিয় হয়ে গেছে , সে স্লিপ রেখে দিয়ে পাশে বসে রইলো । কিছুক্ষণ পরে বললো ” স্যার আমি তাহলে এখন আসি , দুপুরে খেয়ে সকাল সকাল চলে আসবো । ”
” স্যার বললো , শুধু শুধু কষ্ট করতে হবে না বরং সন্ধ্যা বেলা অথবা আগামীকাল সকালে বাসায় এসো তখন কথা হবে । হাসপাতাল থেকে আমরা বিকেলে চলে যাবো মামুন তো আছেই , নাহলে তুমি থাকতে । ”
” সজীব একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো , ঠিক আছে স্যার ভালো থাকবেন সবসময় । ”
★★
সারারাত ভ্রমণের জন্য সজীব এর মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে মোবাইল বন্ধ হয়ে গেছে । খালার বাসার চাবি সজীব এর সাথে আছে তাই খালার বাসায় গিয়ে মোবাইল চার্জে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে গেল । ঘুমের আগে অনেক চিন্তা মাথার মধ্যে আসে কিন্তু কিছু করার নেই জীবন তো এমনই ।
পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে উঠে মোবাইল অন করলো সজীব , মনটা খুবই খারাপ লাগে । কি করা যায় কি করা যায় ভাবতে ভাবতে মিতুর নাম্বার বের করে কল দিলো । মিতুও বিগত দিনগুলোতে একবারও কল দিয়ে কথা বলার দরকার মনে করে নাই । তার সাথে কথা বলে চাকরির বিষয় আলাপ করা দরকার আর তাছাড়া মামলার বিষয়টা তাকে জাননো উচিত । শুনলে নিশ্চয়ই খুশি হবে ।
” হ্যালো মিতু , কেমন আছো তুমি ? ”
” ভালো আছি তুমি কেমন আছো ? ”
” আলহামদুলিল্লাহ ভালো , আজকে কি সম্পুর্ণ তুমি করে বলবে ? নাকি আবার মাঝখানে খিচুড়ি রান্নার জন্য আপনি শব্দটা স্থান পাবে ? ”
” চেষ্টা করবো সম্পুর্ণ তুমি রাখার জন্য , আর যদি মনের ভুলে খিচুড়ি হয়ে যায় তাহলে সজীব যেন চুপচাপ সহ্য করে । ”
” আচ্ছা ঠিক আছে , কি করো ? ”
” অফিস থেকে মাত্র বের হলাম , তুমি কি করো ? ”
” ঘুম থেকে উঠলাম মাত্র , আচ্ছা ফ্রি পোর্ট আসবো দেখা করবে ? ”
” সত্যি বলছো তুমি ? ”
” এখানে মিথ্যার কি হইছে ? ”
” কিছু না তাহলে আসো আমি মোড়ে গিয়ে অপেক্ষা করবো তোমার জন্য । ”
” আচ্ছা । ”
★★
★★
সজীব আর মিতু পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে , মিতুর বাসা ব্যারিস্টার কলেজের গলিতে তাই সেদিকেই যাচ্ছে তারা । হঠাৎ করে সজীব বললো ” ৪/৫ দিন ধরে কোন খবর নেই ঘটনা কি ? কল দিয়ে তো খবর নিতে পারত ! ”
” মিতু বললো , সত্যি বলতে আমার মোবাইলে টাকা নেই আর বাড়িতে গিয়ে হাতের টাকা পয়সা সবই তো শেষ হয়ে গেছে । কারো কাছ থেকে ধার করে নিতে ইচ্ছে করে না বলে আর ফ্লেক্সিলড করি নাই ৷ তবে আগামীকাল বেতন পেলে অবশ্যই কল করতাম কারণ আমিও যে একটা মানুষের কন্ঠ ভিষণ মিস করতাম । ”
” কাল বেতন দিলে আমার চাকরি হবে ?”
” ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ তোমাকে তো বলা হয়নি , আমাদের অফিসে কথা বলেছি আমি । জিএম স্যারের একটা রিপোর্টার লাগবে , অবশ্য আইডি কার্ডে তোমার পদবী থাকবে ‘হেলপার ‘ । কিন্তু তোমার কাজ হচ্ছে প্রতি ঘন্টায় সবগুলো লাইন থেকে কত পিস করে বডি বের হচ্ছে সেটা লিখে নিয়ে জিএম স্যারকে দেখাতে হবে । ”
” আর ? ”
” আর কিছু না , শুধু ঘন্টা শেষ হলো ১০/১৫ মিনিট এর মধ্যে সবগুলো লাইনের প্রডাকশন লিখে নিয়ে জিএম স্যারকে দেখিয়ে তোমার কাজ শেষ । বাকি ৪৫ মিনিট ঘুরবে আবার ঘন্টা শেষ হলো প্রডাকশন লিখে আনবে । ”
” বাহহ দারুণ চমৎকার । ”
” বেতন যদিও কম কিন্তু কাজে শান্তি পাবে , আর আমার একটু লাভ হবে । ”
” তোমার লাভ কিসের ? ”
” ১৫ মিনিটের মধ্যে কাজ করে তুমি আমার সাথে গিয়ে গল্প করবে । ”
” ওরে বাটপার , কিন্তু আমি যদি তোমার সাথে গল্প না করে অন্য সুন্দরী মেয়ের সাথে গল্প করি ? ”
” হিহিহিহি লাভ নেই জনাব , তা হপ্পে নুহহ । ”
” কিনুহহহহ ? ”
” আমি যার সাথে চাকরির বিষয় কথা বলছি তাকে বলেছি যে আমার স্বামীর চাকরি দরকার । তাই তুমি অফিসে গেলে সবাই জেনে যাবে এটা মিতুর কেনা মাল , সুতরাং ইহা বিক্রয় যোগ্য নহে ? ”
” লে হালুয়া , তোমার বাড়িতে গিয়ে স্বামী হতে হবে আবার অফিসে গিয়ে স্বামী হতে হবে । আমাকে কি মনে হয় জানতে পারি মেডাম ? ”
” এত সুন্দর জিনিস যেন কেউ নজর দিতে না পারে তাই আগে থেকে সাবধানতা অবলম্বন । ”
” আমি যদি চাকরি না করি ? ”
” কিছু করার নেই , সেটা তোমার ইচ্ছে । ”
” আচ্ছা ঠিক আছে চাকরি করবো , কিন্তু আমার এসব নাটক একদম ভালো লাগে না মিতু । ”
” সমস্যা নেই বাদ দাও এসব কথা , চলো আমার বাসায় যাবে ? ”
” তোমার বাসা মানে ? ”
” আরে ধুর আমি যে বাসায় থাকি সেই বাসার কথা বলছি আমি । ”
” ওহহ আচ্ছা কিন্তু গেলে নুডলস রান্না করে খেতে দিতে হবে , রাজি আছো ? ”
” ঠিক আছে দেবো । ”
” তোমার বাসায় নুডলস আর ডিম আছে ? ”
” না নেই , কিন্তু কিনে নেবো । ”
” তোমার কাছে নাকি টাকা নেই তাহলে কিনবে কি দিয়ে ? ”
” দোকান থেকে বাকি নেবো । ”
” তুমি তো বললে যে টাকা ধার করা তোমার পছন্দ নয় তাহলে ? ”
” টাকা ধার করা আর দোকান থেকে বাকি কেনা এক জিনিস নয় জনাব সজীব । দোকানদারের হচ্ছে ব্যাবসা করা তাই সে ব্যাবসার জন্য আমাদের বাকি দেবে কারণ আমরা চাকরিজিবী । কিন্তু টাকা ধার দেওয়া কোন ব্যাবসা নয় বুঝতে পারছেন জনাব ? ”
” আজ্ঞে সম্পুর্ন বুঝতে পারছি । ”
সজীব পকেট কাপিয়ে তার মোবাইল বেজে উঠলো , মোবাইল বের করে দেখে বৃষ্টির নাম্বার থেকে কল এসেছে । রিসিভ না করে কল কেটে দিয়ে সজীব বললো ” হ্যাঁ বলো বৃষ্টি । ”
” কোই তুমি ? ”
” আমি একটু মিতুর সাথে দেখা করতে এসেছি । ”
” মানে কি ? কোথায় ? ”
” রাস্তা দিয়ে হাঁটছি আমরা । ”
” ফ্রী পোর্ট কখন আসবে ? ”
” জানিনা , কারণ এখন মিতুর সাথে তার বাসায় যাবো তারপর বের হবো । ”
চলবে….
লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)