_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি । #_পর্ব = ৪১

0
241

#_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি ।
#_পর্ব = ৪১

#পর্ব_টা_ছোট_হবার_জন্য_দুঃখিত।

” সজীব বললো, তারপর? ”

” আমি অনেক ধরনের নাস্তা তৈরী করে রাখবো আর তুমি গেলে সেগুলো সব এক এক করে তোমারই সামনে সাজিয়ে দেবো। তুমি আমার সামনে বসে খাবে আর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখবো। সবগুলো খেতে হবে কিন্তু, একদম নষ্ট করা চলবে না। ”

” তারপর? ”

” নীল শাড়ি, নীল চুড়ি পরে আগামীকাল সারাদিন তোমার সাথে ঘুরবো। চট্টগ্রাম শহরে যতগুলো সুন্দর স্থান আছে সবগুলো স্থান ঘুরে ঘুরে দেখবো। ”

” আর? ”

” সারাদিন তুমি যা বলবে তাই হবে। ওহহ আরেকটা জরুরি কাজ আছে। ”

” কি কাজ? ”

” আমার বাসা থেকে বের হয়ে নাস্তা নিয়ে খালার বাসায় গিয়ে নিজের হাতে তাকে খাইয়ে দেবো। মনে হয় রাগ করবেন তবুও যেভাবেই হোক তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে হবে কারণ তোমাকে চাই। ”

” যদি বকাবকি করে? ”

” বকাঝকা করুক সমস্যা নেই, সেদিন মা-বাবার সামনে দাঁড়িয়ে হয়তো খারাপ লেগেছে কিন্তু খালার বাসায় বসে যা ইচ্ছে বলুক তবুও কিছু বলবো না কারণ আমি তোমাকে চাই। ”

” হঠাৎ এত দরদ প্রকাশ হচ্ছে কেন? ”

” তুমি আমাকে পাগল করেছো তাই! ”

” আগে কি বিশ্বাস হয়নি? ”

” সবসময় ”

” বুঝতে পারছি, এখন তাহলে বাসায় যাও। ”

” ঠিক আছে কাল দেখা হবে। ”

বৃষ্টি রিক্সা নিয়ে বাসায় রওনা দিল, সজীব যতক্ষণ রিক্সা দেখা যায় ততক্ষণ তাকিয়ে রইল। বৃষ্টির দেয়া উপহার নিয়ে মুখের মধ্যে একরাশ হাসি আর মনের মধ্যে অজস্র ভালবাসা নিয়ে হাঁটছে। এতদিন কষ্টের সাথে রাত কাটাতে গিয়ে ঘুমাতে পারে নাই কিন্তু আজকে হয়তো সুখের উল্লাসে মন আনচান করবে। আগামীকাল সত্যি সত্যি যদি বৃষ্টি আর সে ঘুরতে যায় তাহলে কতটা আনন্দ হবে সেটা ভেবে মনটা ভিষণ ভালো লাগছে।

গলির মধ্যে মামুন দাঁড়িয়ে ছিল, বৃষ্টিকে দেখা মাত্রই ডাক দিয়ে দাঁড়াতে বললো। বৃষ্টি দাঁড়িয়ে রইলো তবে মনের মধ্যে একরাশ বিরক্ত আর রানের কনিকা।

” মামুন বললো, কোথায় গেছিলে? ”

” ফ্রি পোর্ট। ”

” ওহহ একা একা? ”

” একা গেছিলাম তবে সেখানে সজীব ছিল। ”

” আমি যতটুকু জানি সজীব এর সাথে তোমাদের রাগারাগি হয়েছে। সজীব এর খালা নাকি আঙ্কেল আন্টিকে বাসায় এসে অপমান করে গেছে? ”

” সে বিষয় টা সমাধান হয়ে গেছে, আর আপনি এসব পারসোনাল কথা কীভাবে জানলেন? ”

” আমি তো এই এলাকার ছেলে তাই এসব ছোটখাট সকল খবর রাখা লাগে নাহলে তো সমস্যা! ”

” সমস্যা কেন? ”

” কিছু না, তা ফ্রি পোর্ট কি জন্য গেলে? ”

” তেমন কিছু না, এমনি দেখা করে আসলাম। ”

” আচ্ছা আগামীকাল সজীব ভাইকে নিয়ে আমাদের বাসায় দাওয়াত রইল। ”

” চেষ্টা করবো। ”

” আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে? ”

” জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। ”

” আচ্ছা যাও তাহলে, ভালো থেকো সবসময়। ”

” দোয়া করবেন। ”

★★

সকাল বেলা মোবাইলের রিংটোনের শব্দে সজীব এর ঘুম ভাঙ্গলো। বালিশ হাতড়ে মোবাইল বের করে রিসিভ করে বৃষ্টির কণ্ঠ শুনতে পেল। চোখের মধ্যে ঘুম ঘুম ভাব, তবুও বললো।

” হ্যালো। ”

” এখনো ঘুমাচ্ছ তুমি? ”

” হ্যাঁ কেন? ”

” জানতাম তুমি ঘুমিয়ে থাকবে তাই কল দিলাম ঘুম থেকে তোলার জন্য, ভাগ্যিস মোবাইল অন করা ছিল নাহলে তো সমস্যা হতো। ”

” সকাল হয়ে গেছে নাকি? ”

” হ্যাঁ তবে এখনো ফজরের নামাজ পড়ার সময় আছে তাই তাড়াতাড়ি অজু করে নামাজ পড়ো। ”

” ওকে ঠিক আছে, জো হুকুম? ”

” নামাজ পড়ে তারপর আর ঘুমাবে না, হাত পায়ের নখ সুন্দর করে কাটবে। তারপর গোসল করবে এবং পাঞ্জাবি পরে আস্তে আস্তে বের হবে। মসজিদে গিয়ে মসজিদের ভিতরে বসার চেষ্টা করবে, শেষ মুহূর্তে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে যেন না শুনি। ”

” হু ”

” হু মানে কি? তাড়াতাড়ি করো। ”

” কলটা কাটো তাহলে! ”

” আচ্ছা ঠিক আছে আল্লাহ হাফেজ। ”

|
|

সজীব গোসল করে প্যান্ট আর পাঞ্জাবি পরে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল, হাটতে হাঁটতে খালার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। বাসায় ঢুকবে কি না সেটা ভাবলো কিছুক্ষণ তারপর আস্তে আস্তে দরজা টোকা দিতে শুরু করলো।

” সজীব এর খালা দরজা খুলে সজীব কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গেল। আস্তে করে বললেন, আয় ভিতরে আয়। ”

” সজীব লক্ষ্য করলো খালার চোখে পানি টলমল করছে মনে যেন কোন একটা কারণে কান্না করছে। সজীব ভিতরে গিয়ে খাটের উপর বসলো, রুমের মধ্যে সেই মেয়েটা নেই। মনে হয় গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে অথবা বাইরে গেছে হতে পারে। ”

” খালা শুধু একটু নুডলস সামনে এনে দিল তারপর বললো, ভাবতে পারিনি তুই আসবি। যদি জানতাম তাহলে অনেক কিছু রান্না করতাম এখন এগুলো খা আমি নাস্তা রান্না করবো আরো। ”

” সজীব একবার ভাবলো নিষেধ করবে কিন্তু আবার ভাবলো যে বৃষ্টি যেহেতু আসবে সেহেতু নাস্তা রান্না করুক তাহলে বৃষ্টি খাক বা না খাক তবুও সামনে তো দিতে পারবে? বৃষ্টি যে তার কাছে আসতে চেয়েছে সেটা সজীব বললো না কারণ হঠাৎ করে যদি বৃষ্টির মতামত পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে? ”

নাস্তা করে রুম থেকে বেরিয়ে সজীব গ্রামের বাড়িতে মায়ের নাম্বারে কল দিল। মাহি রিসিভ করে বললো,

” কেমন আছো ভাইয়া? ”

” আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তোরা সবাই কেমন আছো? ”

” আমারও ভালো আছি, কি করো ভাই? ”

” খালার বাসায় গেছিলাম, নাস্তা করে মসজিদের দিকে রওনা দিলাম নামাজ পড়তে। ”

” আব্বুও মাত্র গোসল করতে গেল আমাদের এখানে নাকি সাড়ে আটটায় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ”

” ওহহ আচ্ছা, আর আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে প্রথম জামাত আটটায় আর দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টা বাজে। ”

” অফিস তো বন্ধ ছিল তাহলে বাড়িতে আসলে না কেন ভাই? ”

” এমনি মনটা খারাপ তাই! ”

” খালাম্মা বাড়িতে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু তুমি আসবে না তাই সেও আসলো না। ”

” ওহহ আচ্ছা। ”

” মায়ের সঙ্গে কথা বলো মা আসছে। ”

” আচ্ছা দে তার কাছে। ”

চলবে…

বিঃদ্রঃ- প্রচুর ব্যস্ততার জন্য খুব ছোট হয়েছে।

লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here