_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি । #_পর্ব = ১৫

0
355

#_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি ।
#_পর্ব = ১৫

– সজীব এর সমস্ত রাগ গিয়ে পরছে ওই মেয়েটির উপর তবে বৃষ্টির উপরও পরছে কিন্তু মেয়ে জাতির সাথে পাঙ্গা নেবার ক্ষমতা কার আছে ? বাসের পিছনে প্রচুর ধাক্কায় তাই হেলতে দুলতে আবার সজীব নিজের সিটে গিয়ে বসলো ।

— মিতু বললো , কে কল করেছে ?

— বৃষ্টি !

— বৃষ্টি কে ? গার্লফ্রেন্ড ?

— হুম তবে একতরফা ভালবাসা , আমি তাকে প্রচুর ভালবাসি কিন্তু সে ভালবাসে না ।

— কেন ? আপনি হাইব্রিড প্রজাতির উন্নত মানের ঘাড়ত্যাড়া তাই ?

— তুমি কি সবসময় ফাজলামো করো ? সরি আপনি !

— সিনেমা আর বাস্তবে সব যায়গাতে ছেলেরা এই একটা পদ্ধতি ব্যবহার করে ।

— কোনটা ?

— প্রথমে ইচ্ছে করে তুমি বলবে তারপর সরি বলে নেকামি করবে ।

— দেখুন আমি বৃষ্টির সাথে কথা বলে এসেছি তাই মুখের মধ্যে চলে এসেছে ।

— বারেহহ পরিবর্তন করতে হবে না আমিও সেই সিনেমার মতো আপনাকে তুমি করে বলার অধিকার দিলাম ।

— দরকার নেই আমার , আপনি প্লিজ চুপচাপ বসে থাকুন তো ।

— ইচ্ছে তো করে কিন্তু পারবো না ।

— আপনি যখন পিছনে গিয়ে ফোনে কথা বলছেন তখন আমি ব্যাগ থেকে বোতল বের করে হাফ লিটার পানি খেয়ে ফেলছি ।

— তো কি হইছে ?

— এখন পানি পেটের মধ্যে গিয়ে আবার চাপ দিচ্ছে সেটাই সমস্যা ।

— মেজাজ খারাপ করবেন না প্লিজ ! এখন কোন ভাবে সম্ভব না তাই সহ্য করতে হবে ।

— আমার দোষ নাকি ? আমি কি আসতে বলছি নাকি ? আর এগুলো কি আটকে রাখার জিনিস ?

— আচ্ছা একটা অপরিচিত ছেলের সাথে এমন কথা বলতে লজ্জা করে না ?

— এসব বিষয় লজ্জা করলে নিজের কষ্ট হবে আর তাছাড়া আপনি তো আমাকে চিনেন না তাই আর কখনো যেহেতু দেখা হবে না তাহলে সমস্যা কি ? আপনি তো আর আমার পরিচিত নন যে পরবর্তী তে এগুলো বলে খ্যাপাবেন । আর তাছাড়া আপনি হচ্ছেন ভালো একজন মানুষ তাই সমস্যা নেই ।

— একটু আগে বললেন আমার জন্য নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন না কারণ যদি গায়ে হাত দেই । তাহলে একটা আবার ভালো বলছেন কেন ?

— এগুলো বলা আর গায়ে হাত দেওয়া কি একই জিনিস নাকি ?

— তা ঠিক পার্থক্য আছে ।

— আর কতক্ষণ পরে গাড়ি থামাবে ?

— ফেনি মহীপাল গিয়ে হয়তো দাঁড়াবে তার আগে আর সম্ভবনা নেই ।

— আর কতদুর মহীপাল ?

— সে প্রায় আধা ঘণ্টা লাগবে ?

— কপাল ।

— চুপচাপ বসে থাকুন নাহলে কিন্তু …

— নাহলে কি ?

— আমার মাথা ।

— হুম মাথা মোটা ।

— ধুররর ।

— হিহিহি ।

★★
★★

আজকে বৃষ্টি অফিস ছুটি হইছিল ছয়টা বাজে তাই সে বাসায় যেতে যেতে পথে দাঁড়িয়ে কল দিছিল । কিন্তু সজীব এর সাথে রাগ করে মোবাইল বন্ধ করে এখন নিজেই গজগজ করছে । মরিয়ম ও তার সাথে আজকে ছুটি পেয়েছে আর তাই দুই বান্ধবী একসাথে হাঁটতে হাঁটতে ইপিজেড মোড়ে এসে পড়ে ।
বৃষ্টি তখন মরিয়ম এর কাছ থেকে আরো ৫০০ টাকা ধার নিয়ে বাসায় চলে যায় ।

— যখন চলে আসছিল তখন মরিয়ম বলেছিল , “সজীব ভাইকে প্রথম দেখে বুঝতে পারছি যে সে কতটা ভালবাসে তোকে ! তাই বন্ধু হয়ে একটা পরামর্শ দিচ্ছি জীবনে সুখ দুঃখ কষ্ট সবকিছু থাকবেই । আর সেই সবকিছুর মাঝেও আবার সংসার নামক মায়াকে প্রশ্রয় দিতে হবে । নাহলে জীবন থেকে কি যেন একটা নাই নাই মনে হবে সবসময় । ”

— তখন বৃষ্টি বললো , ” আমি সত্যি সত্যি যদি কোনদিন বিয়ে করে কারো সন্তানের জননী হতে চাই , তাহলে সন্তানের পিতা সজীবকেই বানাবো । তবে সজীব অনেক কষ্ট সহ্য করতে পারে তাই আমি হয়তো তাকে বারবার দুরে ঠেলে দিতে চাই । কারণ হচ্ছে আমি জানি সে আমাকে ছেড়ে যাবে না তাই হারানোর ভয় লাগে না । ছোট্ট একটা শিশুকে যখন তুই আকাশে তুলে মারবি তখন সে হাসতে থাকবে কারণ সে জানে যে মাটিতে পরার আগেই তাকে তুই ধরবি ৷ এটা হচ্ছে তোর প্রতি সে বাচ্চার বিশ্বাস । ”

— তবুও তোর উচিত সজীব ভাইকে একসেপ্ট করে তার ভালবাসার মাঝে হারিয়ে যাওয়া । সারাদিন ক্লান্ত হয়ে অফিস যখন ছুটি হবে তখন তোরা দুজন পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকবি । তার দিকে তাকিয়ে থাকবি কিছুক্ষণ কারণ সারারাত আর তাকে দেখতে পাবি না । তাকে ছেড়ে বাসায় যেতে ইচ্ছে করবে না কারণ মানুষের ইচ্ছে গুলো বড্ড অবাধ্য সবসময় ঘোলাটে সকল কাজ করতে ইচ্ছে করে ।

— আজকে তাহলে গেলাম মরিয়ম ? আরেকদিন এ বিষয় ভালো করে কথা হবে ।

— ঠিক আছে যাহহ আর যেটা বললাম সেটা মাথায় রেখে চিন্তা করিস বৃষ্টি ।

— ঠিক আছে ।

|
|

বাসায় গিয়ে বৃষ্টি রান্না শুরু করলো , আজকে হঠাৎ এত তাড়াতাড়ি গ্যাস এসেছে ব্যাপার টা অদ্ভুত । তবে ভালোই হয়েছে যে তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে একটু বসতে পারবে । রান্না শুরু করার আগেই মোবাইল চালু করেছে তবে সজীব কে কল করেনি ৷ সজীব তাকে পরবর্তীতে আবার কল দিয়ে চেষ্টা করে কিনা সেটা দেখার জন্য । কিন্তু ঘন্টা খানিকের মধ্যে যখন একবারও কল আসেনি তখন রাগে কষ্টে বৃষ্টি চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো । তার ধারণা সজীব ওই মেয়েকে নিয়ে সত্যি সত্যি বিজি আছে তাই তার কথা মনে পরছে না । খুব তুচ্ছ কারনে মেয়েরা কান্না করতে পারে , ছোট্ট একটা ব্যবহৃত জিনিস হারিয়ে গেলে সেটা নিয়েও তারা কান্না করে । তবে ছেলেরা এই বিষয় একদম উল্টো কারণ তারা সহজে কান্না করতে পারে না ।

বৃষ্টি বাধ্য হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে সজীব কে কল দিল , আশ্চর্য সজীব কল রিসিভ করছে না । টানা ৯ বার কল দিলো কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না দেখে বৃষ্টির চোখ দিয়ে আবার পানি এলো । কোনরকমে রান্না শেষ করে রুমের মধ্যে এসে বাবার পাশে বসে রইল বৃষ্টি । বৃষ্টির বাবা মেয়ের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল যে কিছু একটা হয়েছে নাহলে তো বৃষ্টির মুড এমন হবে না ।

— বৃষ্টির বাবা বললো , কিরে মা কি হইছে ? মন খারাপ করে বসে আছিস কেন ?

— কিছু না বাবা !

— মিথ্যা বলিস কেন ? সত্যটা বল নিজেকে হালকা মনে হবে ।

— একজনকে কল দিচ্ছি কিন্তু রিসিভ করে না ।

— কে রিসিভ করে না ?

— তোমার গুনধর ছাত্র জনাব সজীব সাহেব ।

— হাহাহা হাহাহা , বাসের ভিতরে হয়তো ঘুমিয়ে পরেছে পরে জেগে উঠে দেখতে পেয়ে ঠিকই কল দেবে দেখিস ।

— দেবে না , পাশে নাকি একটা মেয়ে বসেছে তাই বাসের ভিতরে উঠেই তাকে নিয়ে বিজি । আমাকে একটা কলও করেনি আমি ছয়টা বাজে একবার কল দিছিলাম তার আর সে কল করেনি । এখন অনেক বার কল দিচ্ছি রিসিভ করে না শালা কতবড় ফাজিল চিন্তা করো বাবা ।

— হা হা হা , তুই তো ওকে পছন্দ করিসনা তাহলে এত জেলাস হচ্ছে কেন ?

— পছন্দ করি না ঠিক আছে তাই বলে বাসের মধ্যে বসে আরেকজনের সাথে কথা বলতে গিয়ে আমাকে ভুলে যাবে ?

— বললাম তো হয়তো ঘুমিয়ে পরেছে তুই এক কাজ কর রান্না করা তো শেষ এখন ঠান্ডা মাথায় গিয়ে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে বস ভালো লাগবে ।

— ঠিক আছে যাচ্ছি তবে তোমার ছাত্র এবার চট্টগ্রাম আসলে তার খবর আছে ।

— সে তখন দেখা যাবে ।

— হুম দেখতে পারবে , এ কথা বলেই বৃষ্টি কাপড় চোপড় নিয়ে গোসল করতে গেল ।

★★
★★

ফেনি মহীপাল এসে ফলের মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে , এখানে ” দিদার পরিবহন ” এর হেড অফিস তাই এখানে গাড়ি চেকিং হবে । সুপারভাইজার বা ড্রাইভার মিলে টিকিটের বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যেন নিজেদের পকেট ভারি করতে না পারে তাই এমন ব্যবস্থা ।

— মিতু বললো , আমার এক বোতল পানি লাগবে যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে । আর আশেপাশে যদি একটা ওয়াশরুমের সন্ধান পাওয়া যেত তাহলে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হবো আমি ৷

— সজীব মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে সামনে ফেসবুক আইডি লগইন করা । সে কানে শুনতে পেয়েছে ঠিকই কিন্তু কোন জবাব দিল না কারণ মেয়েদের বেশি আশকারা দিলে মাথায় চড়ে বসে ।

— কি বললাম শুনতে পাননি ?

— হ্যাঁ পেয়েছি ।

— আপনি চাননা আমি এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মেয়ে হই ?

— নাহহ চাই না ।

— কেন হিংসা হচ্ছে ?

— জ্বি না , তোমাকে সুখী করতে হলে আমাকে সেই সুখ অনুসন্ধান করতে হবে যেটা আমি পারবো না , আর পারলেও করবো না ।

— তা করবেন কেন ? আমি কি বৃষ্টি নাকি ? মনে হয় পৃথিবীতে বৃষ্টি ছাড়া আর কোন মেয়ে নেই । তাদের মনে হয় কোন সুবিধা অসুবিধা হতে পারে না কারণ পৃথিবীটা উনি বৃষ্টি বৃষ্টি করে রেখেছে ।

— সজীব শুধু বললো , হুম ।

— মিতু আরো মিনিট পাঁচেক চুপ করে থেকে আবার বললো , আপনি এমন কেন ? আমাকে একটু কেয়ার করুন তাহলে আমি আপনার আর বৃষ্টির জন্য দোয়া করবো ।

— কোন দরকার নেই আর বাস এখনই ছেড়ে দেবে নিচে নেমে খুঁজতে খুঁজতে সময় শেষ হয়ে যাবে । পরে দেব আর কোয়েল মল্লিকের * মন মানে না * সিনেমার মতো বাস ফেল করতে হবে ।

— আপনি বকবক করতে করতে তো সময় নষ্ট করলেন মনে রাখবেন আমি আপনাকে মাফ করলেও আল্লাহ মাফ করবে না ।

— একটা আশার কথা বলবো ?

— কি ?

— নোয়াখালী চৌমুহনী গিয়ে গাড়ি একটা পাবলিক টয়লেটের কাছে দাঁড়াবে । যদি কুমিল্লা ঢাকা হয়ে যেত তাহলে কুমিল্লা হোটেলে দাঁড়াতো কিন্তু যেহেতু শরিয়তপুর হয়ে যাবে তাই চৌমুহনী গিয়ে সবাই যাত্রা বিরতি করবে ১০ মিনিট ।

— কতক্ষণ লাগবে ?

— দেড় ঘন্টার মতো ।

— লও ল্যাঠা ।

— কার ?

— মানে ?

— কার ঠ্যালা নেবো ?

— উঁহু ।

★★

নোয়াখালী চৌমুহনী যখন বাস থামলো তখন মিতু ঘুমিয়ে আছে । সজীব প্রথমে দুবার ডাক দিল কিন্তু মিতুর সাড়া না পেয়ে শরীর ধরে ধাক্কা দিল আর অমনি জেগে উঠলো মিতু ।

— কি ব্যাপার আপনি আমার গায়ে হাত দিয়েছেন কেন ? আমি আগেই জানতাম যে ঘুমিয়ে গেলে আপনি সুযোগ নিবেন । তখন তো এমন ভাব করলেন যে মনে হয় আপনি সাধু সন্ন্যাসী হয়ে গেছেন এখন নিজের চরিত্রের প্রমাণ পেলেন তো ?

— দেখো গাড়ি নোয়াখালী চৌমুহনী এসে গেছে তাই তোমাকে ডাকছি তুমি সাড়া দিচ্ছিলে না তাই ধাক্কা দিতে হয়েছে ।

— ওহহ আচ্ছা তাহলে চলুন তাড়াতাড়ি ।

— হ্যাঁ চলুন ।

সজীব এর কাছে হাতের ব্যাগ দিয়ে মিতু ওয়াশরুমে গেছে , সজীব তখন বৃষ্টির কথা মনে করে একটা কল দিতে চাইলো । পকেট থেকে বাটন মোবাইল বের করে দেখে বৃষ্টির নাম্বার থেকে অসংখ্য বার কল এসেছে । বড় মোবাইল দিয়ে ফেসবুক চালাতে গিয়ে ছোট মোবাইল পকেটে পরে ছিল ।

— সজীব তাড়াতাড়ি নাম্বার ডায়াল করে কলব্যাক করলো আর অমনি সাথে সাথে রিসিভ হয়ে গেল । মনে হয় বৃষ্টি মোবাইল হাতে নিয়ে বসে ছিল বললো ,
কোই তুমি ? তুমি ঠিক আছো তো ? এতবার করে কল দিচ্ছি ধরছো না কেন ? সন্ধ্যা বেলা রাগ করে বকা দিছি তাই তুমিও রাগ করছো তাই না ?

— সজীব বললো , না বৃষ্টি আসলে মোবাইল পকেটে ছিল তাই টের পাইনি । আর তোমার রাগ আমি কখনো করতে পারবো না , তুমি শত বকা দিলেও রাগ আসবে না । পিছনে কখনো আসেনি আর সামনে ভবিষ্যতে কখনো আসবে না ।

— কি করো ? কতদূর গেছো ?

— নোয়াখালী চৌমুহনী এসে যাত্রা বিরতি দিয়েছে ।

— খেয়েছ কিছু ?

— নাহহ বৃষ্টি , আসলে মিতু ওয়াশরুমে গেছে তো তাই ওর হাতের ব্যাগ নিয়ে আমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি । ও বের হলে তারপর কিছু খেয়ে নেবো ।

– কি বললে তুমি ? ওই মেয়ে ওয়াশরুমে আর তুমি তারজন্য বাইরে দাঁড়িয়ে আছো ? এই কথা বলার জন্য তুমি ফোন করছো আমাকে ?

— সজীব মনে মনে ভাবলাে ধুর সত্যি কথা বলে তো বিপদ হয়ে গেল । সে বললো , দেখ বৃষ্টি মেয়েটা একা মানুষ তাই একটু সাহায্য করছি ।

— বাসের ভিতরে তুমি ছাড়া আর কেউ নাই ?

— সে তো আমার পাশের সিটের মেয়ে তাই আমার সাথে পরিচিত ।

— তুই ওই মেয়ে নিয়ে থাক আর দরকার হলে তার সাথে তুইও ওয়াশরুমে যা , আমার কাছে আর কল দিবি না আর আমিও কল দেবো না ।

— বৃষ্টি শোনো ।

— চোপ একদম চুপ ।

★★
★★

চাঁদপুরের ফেরিঘাটে এসে অনেক গুলো বাস ট্রাক এর পিছনে পরে গেল দিদার পরিবহন । ঘড়িতে তখন সময় রাত একটা বেজে কুড়ি মিনিট চারিদিকে যদিও লোকজনের আনাগোনা তবুও রাতের নিস্তব্ধ পরিবেশ । মিতু সজীব এর ডান কাঁধে মাথা রেখে ডান সজীব এর ডান হাতটা দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে । সজীব আগে ৩/৪ বার আস্তে আস্তে ছাড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার সেই একইভাবে জড়িয়ে ধরে । সজীব এর চোখের সামনে বৃষ্টির রাগান্বিত মুখটা ভেসে আছে কিন্তু সে বৃষ্টিকে বেশি রাগতে দেখে নাই । শুধু মাত্র গতকাল মাছের বাজারে মাছের টাকা দিতে চেয়ে চোখের গরম দেখছিল । বৃষ্টি তখন কল কেটে দেবার পরে সজীব বারবার কল দিচ্ছে কিন্তু নাম্বার বন্ধ । তাই বাধ্য হয়ে বারবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে জানালা দিয়ে অন্ধকার পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে আছে । তার পাশে মিতু তার কাঁধে মাথা রেখে হাত জড়িয়ে ধরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে । এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে যেন মনে হয় তারা কতদিনের চেনা ।

|
|

মাত্র দুটো ফেরি দিয়ে এত বেশি পরিমাণ গাড়ি পারাপার করতে গিয়ে প্রচুর জ্যাম পরে গেল । কিন্তু কারোর কিছু করার নেই , কাঁচপুরের ওখানে বেশি জ্যাম থাকার জন্য চট্টগ্রাম থেকে খুলনা বাগেরহাটের বাস গুলো এই রুটে এসেছে কিন্তু যেই লাউ সেই কদু এখানে আবার জ্যাম ।

সজীবদের পরিবহন ফেরিতে ওঠার সুযোগ পেল বেলা সাড়ে এগারোটার পরে । বাসের ভিতরে সকল যাত্রী অধৈর্য হয়ে গেছে কিন্তু কেউ কিন্তু কিছু করতে পারবে না । শুধু আফসোস এমন সুন্দর একটা দেশে জন্ম নিয়েও কত কত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।

ফেরিতে ওঠার পরে সজীব বাস থেকে নেমে নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে । নদীর দুকূল ছাপিয়ে বালুচর আর সেই চরের মাঝে সবুজ ঘাস আর কাশফুলের ডাটা । মাঝে মাঝে দু একটা গরু বিচরণ করতে দেখা যাচ্ছে , কেউ কেউ জাল দিয়ে মাছ ধরছে । চরের মাঝে আবার ঘরও দেখা যাচ্ছে ফাঁকা ফাঁকা তাই হঠাৎ করে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “পদ্মা নদীর মাঝি” উপন্যাসের কথা মনে পরে গেল ।

নদী পার হতে এক ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগলো তারপরেই ফেরি শরিয়তপুরের আলুর বাজার ঘাটে এসে ভিড়লো । একটা একটা করে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে ফেরি থেকে নেমে যাচ্ছে । দিদার পরিবহন স্টার্ট দিয়ে দিল সজীব দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে পরলাে । গাড়িতে উঠে নিজের সিটে না গিয়ে ড্রাইভার আর সুপারভাইজারের পাশে সামনে ইঞ্জিন কভারে বসে গল্প শুরু করলো । কথা হচ্ছে ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে নিয়ে কারণ পরের বছর রাশিয়ার আয়োজন করা হবে ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ এর আসর ।

প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গল্প করে সজীব নিজের সিটের কাছে গেল । কিন্তু হায় হায় মিতু গেল কোথায় ? পিছনে গিয়ে সবগুলো সিট ভালো করে খুঁজেও মিতুকে বাসের ভিতরে পাওয়া গেল না । সামনে এসে সুপারভাইজারকে বলা হলো তিনি যাত্রী গুনে দেখেন একজন কম আছে । সিটের কাছে গিয়ে দেখে মিতুর ব্যাগ ঠিকই আছে সবকিছু পরে আছে কিন্তু মিতু নাই ।

সজীব তখন ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বললো , গাড়ি থামলে সজীব মিতুর ব্যাগ আর মালপত্র নিয়ে নামতে চাইলো । কিন্তু ড্রাইভার আর সুপারভাইজার সেটা মানতে রাজি হল না । কারণ তারা সজীব কে চিনেন না তাই সজীব এর কাছে ওগুলো দিয়ে দেবার পরে সজীব যদি ওগুলো নিয়ে পালিয়ে যায় ? তাহলে তো কিছু করার থাকবে না ।

— সুপারভাইজার বললো , দেখুন ভাই আপনি তাকে খুজতে যাবেন তাতে আমাদের সমস্যা নেই । কিন্তু তার ব্যাগ আর বক্সের মালামাল আমরা আপনার কাছে দিতে পারবো না । এগুলো আমরা আমাদের পিরোজপুর কাউন্টার অফিসে জমা রাখবো । যদি আপনি তাকে খুঁজে পান তাহলে তাকে বলবেন সেখান থেকে সংগ্রহ করতে । আর যদি নাও পান তবুও সে যে আমাদের কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করবে সেটা আমরা জানি । তাই আপনি চাইলে আপনার ব্যাগ নিয়ে নেমে যেতে পারেন আর তাছাড়া যাত্রী সবাই কে না গুনে গাড়ি ছেড়ে আসাটা আমার ভুল হয়েছে তারজন্য আমি আন্তরিক দুঃখিত । আর আমি গাড়ি আবার ঘুরিয়ে নিয়ে ঘাটে গিয়ে তাকে আনতে পারতাম । কিন্তু ভাই এমনিতেই আমাদের দেরি হয়ে গেছে যাত্রী সবাই অধৈর্য হয়ে গেছে । আমাদের আবার আজকে নতুন ট্রিপ নিয়ে চট্টগ্রাম ফিরতে হবে ।

— সজীব বললো , ঠিক আছে ভাই আপনার ফোন নাম্বারটা আমাকে দেন । ওই মেয়ের সাথে দেখা হলে আমরা আপনাকে কল দেবো । আর তার বাড়ির কাউকে বলবো তারা যেন পিরোজপুর বাস স্টেশন অপেক্ষা করে । ওই মেয়ে যদি কথা বলে তাহলে তো নিশ্চয়ই সমস্যা হবে না ?

— সে যদি উপস্থিত না থাকে তাহলে ব্যাগের দু একটা যাচাই করে দিয়ে দেবো ।

— আচ্ছা ঠিক আছে ধন্যবাদ ভাই ।

|
|

সজীব গাড়ি থেকে নেমে গেল আর গাড়ি সজীব আর মিতুকে রেখে শুধু মিতুর ব্যাগ নিয়ে চলে গেল । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দুপুর দুইটার কাছাকাছি বেজে গেছে । একটা ছোট্ট পিতা আপে করে সজীব আবার ঘাটের দিকে রওনা দিল ।

— ঘাটে পৌঁছে কিছুক্ষণ এদিক সেদিক খোঁজাখুঁজি করে একটা কদম ফুল গাছের নিচে দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেল ৷ আস্তে আস্তে পাশে গিয়ে বললো , আর কয়েক লিটার পানি খাবে ?

— মিতু পিছনে ফিরে দেখে সজীব দাঁড়িয়ে আছে মুহুর্তের মধ্যে কালো মুখটা হাসিতে ভরে গেল । সে বললো , আমি সত্যি বুঝতে পারিনি যে গাড়ি আমাকে রেখে চলে যাবে ৷ যখন দেখলাম ফেরি ঘাটের কাছে চলে এসেছে তখন ভাবলাম ফ্রেশ হয়ে আসি৷ কারণ আর তো কোথাও গাড়ি দাঁড়াবে না । কিন্তু ভিতরে গিয়ে একটা ঝামেলা হয়ে গেছে ছিটকিনি জ্যাম লেগে গেল । বহু টানাটানি করতে করতে যখন খুললো তখন বেরিয়ে দেখি ফেরি ফাঁকা পরে আছে ।

— খুব ভালো হয়েছে এখন চলো তাড়াতাড়ি নতুন বাস ধরে ফিরতে হবে ।

— মানে কি ? আমাদের বাস কোথায় ?

— সেই বাস এতক্ষণ নিশ্চয়ই শরিয়তপুর জেলা সদর পেরিয়ে গেছে ।

— তাহলে আমার ব্যাগ আর বক্সের মালামাল ?

— আমি চেয়েছিলাম কিন্তু আমার কাছে দিল না ।

— কেন কেন কেন ? তারা জানেনা আপনি আমার পাশের সিটের যাত্রী ?

— জানলে লাভ কি ? তুমি নিজেই আমাকে বিশ্বাস করো না তাহলে তারা বিশ্বাস করবে কেন ? যদি আমি নিয়ে পালিয়ে যাই ?

— তাই তো , আপনাকে বিশ্বাস করা মোটেই ঠিক হবে না ।

— তুমিও ?

— নয়তো কি ? আচ্ছা আমি ওগুলো কিভাবে ফেরত পাবো ?

— তোমার বাড়ির কাউকে ফোন করে বলো যে তারা যেন পিরোজপুর বাস স্টেশন অপেক্ষা করে । আর সুপারভাইজারের নাম্বার রেখে দিছি তিনি সবকিছু ঠিক ভাবে বুঝিয়ে দেবেন ।

— বাহহ বুদ্ধিজীবীদের মতো কাজ করেছেন , তাই বলি আপনার মাথা এত মোটা কেন ?

— মানে কি ?

— কিছু না রাগ করেন কেন ?

— হিহিহি হাসলাম খুশী ? এবার চলো ।

— চলুন ।

|
|

ওখান থেকে ওরা প্রথম এলো শরিয়তপুর সদর তারপর সেখান থেকে মাদারীপুর শহরে এসে খুলনার বাসে উঠলো । বাস চলতে শুরু করলো আর ওরা দুজন ক্লান্ত হয়ে বসে আছে । সজীব মাঝে মাঝে বৃষ্টির নাম্বারে কল দিচ্ছে কিন্তু নাম্বার বন্ধ । সারাদিন এর মধ্যে একবারও খোলা পায়নি ।

গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন যখন আসলো তখন মাগরিবের আজান দিয়ে দিল । আরো একটা রাত সামনে চলে এল কিন্তু গন্তব্য এখনো অনেক দুর । সজীব এর চিন্তা ছিল যে এই বাসের মধ্যে করে কাটাখালি নোয়াপাড়া নেমে সেখান থেকে বাগেরহাট যাবে । কিন্তু মিতু যেহেতু নাযিরপুর যাবে তাই তার জন্য সমস্যা হয়ে গেল । হঠাৎ করে মাথায় এল যে গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া মোড় থেকে ঢুকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা হয়ে ওখান থেকে নাযিরপুর যাওয়া যায় । তাই সজীব মনে মনে ঘোনাপাড়া নেমে যাবার সিদ্ধান্ত নিল ।

সুপারভাইজারকে কল দিয়ে মিতুর বাড়ির লোক পিরোজপুর গিয়ে মালামাল নিয়ে এসেছে বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে । ওরা যদি গাড়ির ভিতর থাকত তাহলে ওরাও তখন পিরোজপুর থাকতো । কিন্তু কপাল খারাপ তাই মিতুর মালা চলে গেছে কিন্তু মালের মালিক যেতে পারে নাই ।

ঘোনাপাড়া নেমে তারা ইজিবাইকে করে টুঙ্গিপাড়া গেল । তারপর সেখানে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু আর কোন গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না । মিনিট পনের পরে ঢাকা থেকে একটা দোলা পরিবহনের গাড়ি আসলো তারা নাযিরপির হয়ে পিরোজপুর যাবে । সজীব তখন চট করে মিতুকে নিয়ে সেই বাসে উঠে পরলো । মিতু বাড়িতে কল দিল তাই মিতুর ছোট মামা মিতুকে নেবার জন্য ইজিবাইক নিয়ে নাযিরপুর এসে দাঁড়িয়ে আছে ।

— হঠাৎ করে মিতু বললো , আর কিছুক্ষণ পরেই নাযিরপুর চলে আসবে আমি সেখানেই নেমে যাবো । আপনার সাথে হয়তো এ জীবনে আর কখনো দেখা হবে না তাই না ?

— সজীব দেখলো শেষের কথা গুলো বলতে গিয়ে মিতুর কণ্ঠ কেঁপে উঠল । কথাটা বলে সে জানলা দিয়ে বাহিরে অন্ধকারে তাকিয়ে রইলো । সজীব বললো , মানুষের জীবন টা এমনই মিতু , চলার পথে আমাদের কত মানুষের সাথে পরিচয় হয় । কিন্তু দুদিন পর আবার তারা স্মৃতি হয়ে যায় তবুও এসব স্মৃতি জন্ম হয় আবার নতুন স্মৃতির মাঝে হারিয়ে যায় ।

— আজ দুদিন হয়ে গেল কিন্তু আমি এখনো কিন্তু আপনার নাম জানিনা ।

— আমার নাম সজীব ।

— আপনি আবার চট্টগ্রাম যাবেন কবে ?

— ৮/১০ দিনের মধ্যে ৷

— আপনার মোবাইল নাম্বারটা দিবেন ? আমিও এক সপ্তাহের ছুটিতে এসেছি তারপর আবার চলে যাবো তখন যেই শহরে পরিচয় সেই শহরে আবার দেখা হবে আমাদের ।

— যদি ভাগ্যে থাকে তাহলে এমনিতেই দেখা হবে প্রথম দেখাতেই মোবাইল নাম্বার নেবার দরকার নেই কারণ বৃষ্টির সাথে আমার প্রথম দেখা ২০১১ সালে । আর দ্বিতীয় দেখা গতবছর ২০১৬ সালে তাই ভাগ্যে থাকলে অবশ্যি দেখা হবে ।

— আপনি মানুষটা অনেক ভালো , আপনার সেই বৃষ্টি আপনাকে পেয়ে অনেক সুখী হবে । আচ্ছা একটা কথা বলবো রাখবেন ?

— চেষ্টা করবো , বলো কি কথা ?

— নাযিরপুর থেকে আমাদের বাসা মাত্র ৩০ মিনিটের পথ । রাত তো প্রায় নয়টার বেশি বেজে গেছে তাই আজকে রাতটা আমার সাথে আমাদের বাড়িতে যাবেন ? আগামীকাল সকালে পিরোজপুর চলে যাবেন , রাখবেন কথা টা ?

— আমার বাসা পিরোজপুর না আমাদের বাগেরহাট জেলা আর মোড়েলগঞ্জ থানা । কিন্তু পিরোজপুর থেকে জিয়ানগর উপজেলা হয়ে গেলে খুব কাছে হয় তাই এই পথে যাত্রা করি ।

— তাহলে তো এখন আর অনুরোধ করবো না এখন রীতিমতো জোর করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবো বুঝতে পারছেন ?

— কেন কেন কেন ?

— পিরোজপুর থেকে এত রাতে আবার কোন যানবাহন না পেয়ে বিপদ হবে তাই আজকে আমার সাথে যেতে হবে ।

— আজব তো , আমি ছেলে মানুষ আমার সমস্যা হবে না ।

— হচ্ছে না সরি মাফ করবেন ।

গাড়ি নাযিরপুর এসে দাঁড়াল , সজীব মিতুকে নামার জন্য অনুরোধ করেছে কিন্তু মিতু সজীব কে রেখে নামবে না । বাসের ভিতরে আরো যাত্রী আছে তাই বেশি উপহাসের সম্মুখীন না হয়ে সজীব নেমে গেল মিতুর সাথে । দোলা পরিবহনের বাস দুলতে দুলতে নাযিরপুর থেকে পিরোজপুরের দিকে চলে গেল ।

— মিতু তার মামার নাম্বারে কল দিল , মিতুর মামা ২ মিনিটের মধ্যে ওদে সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো , কিরে মিতু কি রহমের আছো মা ? মোগো সবাইর কতা তো ভুইল্লাই গেছো ।

— আলহামদুলিল্লাহ মামা তুমি কেমন আছো ?

— আলহামদুলিল্লাহ ভালো , জামাই বাবাজি তুমি কেমন আছো ? আইতে একচের অসুবিধা হইয়া গেচে হেইয়া না ?

— জামাই বাবাজি বলার সাথে সাথে সজীব আর মিতু দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো । মিতু বললো , জামাই বাবাজি মানে কি মামা ?

— মামা বললো , আর পলাইয়া লাভ নাই রে ভাগ্নী বাড়ি যহন নলইয়া আইছো হেপরও অস্বীকার হরো কেন ? বিয়ালে পিরোজপুর দিয়া মালপত্র আনার সময় যখন সুপারভাইজারের কাছে হোনলাম তুই এটটা স্মার্ট পোলার লগে লগে আইতে আছো হেইসময়ই বুজ্জি মোগো জামাই লগে আইচে । বাড়িতে হগোলডি তোমাগো লইগগা বইয়া রইচে তততুরি লও ।

— সজীব আর মিতু এখনো দুজন দুজনের দিকে বারবার তাকাচ্ছে । দুজনেই মনে মনে কি ভাবছে জানিনা তবে আমি লেখক মনে মনে ভাবলাম , হায়রে সালাম , রফিক , সফিক , বরকত তোমরা এত সুন্দর ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছো ?

চলবে…..

আপনারা সবাই আলোচনা সমালোচনা স্বাধীনভাবে করবেন । আমি আলোচিত কমেন্টের রিপ্লাই করতে চেষ্টা করবো সবসময় । গল্পটা যাদের কাছে ভালো লাগে তারা বলবেন এবং যাদের কাছে বিরক্ত লাগে তারাও বলবেন ৷ ধন্যবাদ ।

লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here